প্রিয় পরিণতি পর্ব ২

গল্প: প্রিয় পরিনতি!
পর্ব: ০২!
লেখক: তানভীর তুহিন!

সেই নবীনবরনের কেটে গেছে প্রায় চার বছর। কিন্তু সে দিনটা আজও আবিদের একদম স্পষ্ট মনে আছে। সেদিনের সেই সকাল, সেই সারা বেলা, সেই পুরোদিনটা!

তারিখটা ছিলো জানুয়ারির ২ তারিখ। আবিদের ইঞ্জিনিয়ারিং এর শেষবছর। সেমিষ্টার ফাইনাল পরীক্ষা দিয়ে বিন্দাস লাইফ কাটাচ্ছিলো আবিদ। পরীক্ষার প্যারার জন্য গার্লফ্রেন্ডকে সময় দিতে পারছিলো না গার্লফ্রেন্ডও সহ্য না করে ব্রেকাপ করে দেয়। আবিদ ভালোভাবে পরীক্ষা দিয়ে। প্যারামুক্ত বিন্দাস লাইফ কাটাচ্ছে। ৩১ ডিসেম্বর সারারাত বন্ধুদের সাথে নিউ ইয়ার সেলিব্রেশন করে ঘুমাচ্ছিলো আবির। বিকাল ৩ টার দিকে ঘুম থেকে উঠে খেয়ে দেয়ে বের হয়ে যায়। আবার রাত ১২ টায় আসে। আবিদের বাবা-মা কিছুই বলে না কারন ইঞ্জিনিয়ারিং তো শেষই এবার নিজের মতো একটু সময় কাটাক। রেজাল্ট দিলেই তো আবার চাকরি নিয়ে দৌড়-ঝাপ। বছরের প্রথম দিনের বেশি সময়টাই আবিদের কেটে যায় ঘুমিয়ে। এবার শুরু হয় আবিদের জীবনের সেই স্মরণীয় দিন।

জানুয়ারির ২ তারিখ সকাল প্রায় ৯ টা বাজে। আবিদের ঘুম ভাঙলো বিরক্তিকর ফোনের আওয়াজে। ঘুম জড়ানো চোখে ফোনের দিকে তাকাতেই দেখলো স্ক্রিনে লেখা “পেত্নির বাচ্চা” মানে তামান্না। আবিদ ফোনটা কানের কাছে নিয়ে বললো,
– ” হ্যালো!”
– ” এই তুই কলেজে আসস নাই কেনো এখনো?”
– ” এই সকালবেলা কলেজে যাবো কেনো?”
– ” আজ নবীনবরন তো আর্লি আয় না রে ভাই! ”
– ” তামান্না, এই জন্যই বলি। আঙ্কেলের টাকাগুলা উড়াইয়া এইভাবে গাজা খাইস না। আমরা আর কয়দিন পরে বিদায় নিবো। আমাদের নবীনবরন তো আরো চার বছর আগেই হয়ে গেছে! ”
– ” তোর এই গাজার জবাব আমি ইয়াবা দিয়ে দিবো খালি কলেজে আয় তুই। আরে ব্যাডা নবীনবরন তো নতুন ব্যাচের। প্রিন্সিপাল আমাদের আসতে বলছিলো আমরাতো এমনিতেই অবসর তাই যাতে নবীনবরন এর বিভিন্ন দায়িত্বগুলো আমরা পালন করি তারজন্য আরকি। প্রধান দায়িত্ব তো তোর। ডায়েসে সভাপতিত্ব করবি। আর তুই হারামাজাদা এখনও ঘুমাচ্ছিস?”

আবির চোখ ডলতে ডলতে উঠে বসলো!

– ” সত্যি বলতেসি, আমায় কেউ ই বলে নাই! ”
– ” আচ্ছা ভাই এখন আর দেরি করিস না। প্লিয ঝলদি আয়। আর হ্যা শোন তোর সাদা পাঞ্জাবিটা পড়ে তার উপরে চকলেট কালারের কটিটা পড়ে আসিস।অন্যকিছু ট্রাই করিস না তোর চয়েজ ভালো না। ঝলদি আসিস আমি কিন্তু আর তোকে ফোন দিবো না নেক্সট কল সোজা তোর যমের কাছে দিবো! “বলেই ফোন কেটে দিলো তামান্না। এতোক্ষন আবিদ যার হ্যাপা পোহাচ্ছিলো সেটা আবিদের বেষ্টফ্রেন্ড “তামান্না”। আসলে তামান্নার বাবা আর আবিদের বাবা বেষ্টফ্রেন্ড সেই সুবাদে ওদের বন্ডিংটাও বেশ মিষ্টি। আর তামান্না যাকে আবিদের যম বললো সে হলো আবিদের বাবা “রাশেদ তালুকদার” জেলার ম্যাজিস্ট্রেট।

আবিদ তাড়াহুড়ো করে রেডি হয়ে কলেজে চলে যায়!

সবাই কলেজের অডিটোরিয়ামএ বসা। আবিদ ব্যাকস্টেজে যেতেই “তামান্না” এসে ঘুষি দেওয়া শুরু করে আবিরকে।
– ” আমি গাজা খাই বাপের টাকায়? হারামাজাদা!”
– ” আরে ভাই বাদ দে না এসব কোনো কিছু দে আমি ওখানে দাড়ায়ে কী বলবো?”
– ” সব ডায়েসে রেখে দিসি। আমি থাকতে তোর কোনো প্রব্লেম হইসে আজ পর্যন্ত? ”
– ” আমার লাইফে সবচেয়ে বড় প্রব্লেম তো তুই ই!”

কথাটা বলে শেষ করার আগেই আবিদ আরো কয়েকখানা কিল-ঘুষি খেয়ে ফেললো!

আবিদ ডায়েসে দাঁড়িয়ে একে প্রিন্সিপাল, মেয়র, চেয়ারম্যান, কমিটি হেড এদের স্টেজে আসন গ্রহন করার জন্য এনাউন্স করছে। তারপরে নাম আসে আবিদের অনুপ্রেরনা, আবিদের আদর্শের নাম। আবিদ মুচকি হেসে একটু উদ্যামের সাথে এনাউন্স করে, ” please come to the stage Mister Rashed Talukder! ” আবিদের বাবার চেয়ারটা আবিদের ডায়েসের পাশেই। আবিদের বাবা এসে চেয়ারে বসতেই আবিদ ডায়েস থেকে মুখ সরিয়ে নিয়ে বাবার কানে-কানে বলে ” কলেজের মেয়ে কী সব আজ তুমিই পটিয়ে ফেলবা?” ছেলের এমন উদ্ভট মন্তব্য আর রসিকতায় কিছুটা অপ্রস্তুত বোধ করে রাশেদ তালুকদার!

সমস্ত অনুষ্ঠান শেষে আবিদ মাঠে দাঁড়িয়ে আছে। পাশে তামান্না দাঁড়িয়ে আইস্ক্রিম খাচ্ছে। তখনই দেখতে পায় ডার্ক নেভি-ব্লু কালারের শাড়ি পড়ে একটা মেয়ে ফোনে কথা বলতে বলতে হাটছে। চুলগুলো হালকাভাবে উরছে, আর কথাবলার মাঝে মাঝে হালকা করে হাসি দিচ্ছে। মেয়েটা আসলে পায়চারি করে কথা বলছিলো। আবিদ যেনো হারিয়ে ফেলেছে নিজেকে। আবিদ কোনোদিন কোনো মেয়েকে প্রথম দেখাতেই এতোটা পছন্দ করতে পারে নী। আবিদের পছন্দের রঙটা গায়ে জড়িয়ে মেয়েটা আবিদের মনে নিজেকে জড়িয়ে নিয়েছে। আবিদ তামান্নাকে দেখিয়ে বললো।

– ” মেয়েটা কেমন রে? ”
– ” তামান্না আইস্ক্রিম খাওয়া ছেড়ে বললো।মামা এই প্রথম তোর কোনো পছন্দের তারিফ করতে হচ্ছে।দাড়া আমি মেয়ের ইনফো নিয়ে আসতেসি! ”
– ” আজই ইনফো নেওয়া ঠিক হবে? ”

একথা বলার আগেই তামান্না গিয়ে কথা বলা শুরু করে দিলো!

– ” হাই আমি তামান্না! ”
– ” হ্যালো আমি তামান্ন! ”
– ” নিউ ব্যাচ তো তুমি? ”
– ” জ্বি হ্যা! ”
– ” আমি ফাইনাল দিয়েছি এবার! ”
– ” ওহ আচ্ছা! ”

তামান্নার একদম ভনিতা করার অভ্যাস নাই। তাই একদম ডিরেক্টলি বলা শুরু করলো!

– ” ঐ যে দেখছো সাদা পাঞ্জাবি আর চকলেট কালারের কটি পড়া একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। ওর নাম “আবিদ তালুকদার” আমাদের ব্যাচের টপার।ম্যাজিস্ট্রেট রাশেদ তালুকদার এর ছেলে। আমি ওর বেষ্টফ্রেন্ড তামান্না। ও এই অবধি তিনটা রিলেশনশিপ করছে। সবগুলো রিলেশনশিপ এ যাবার পরে আমায় বলছে।তাই একটাও টিকে নাই। একমাত্র এইটা রিলেশনশিপ এর প্রথমে বলছে ওর তোমাকে খুব পছন্দ হইছে। এবার তোমার নাম্বার দাও! ”

মেঘ পুরোই আহাম্মক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ঠিক কী উত্তর দিবে বুঝতেই পারছে না। নিজেকে কিছুটা স্বাভাবিক রেখে বললো।

– ” আসলে আপু আমার খুব অস্বস্তি হচ্ছে! ”
– ” কেনো? বয়ফ্রেন্ড আছে নাকি তোমার? ”
– ” না সিঙ্গেলই!”
– ” তাহলে নাম্বার দাও,সমস্যা কোথায়? তোমার ইচ্ছা না থাকলে তোমায় বিরক্ত করবে না সে দায়িত্ব আমার! ”
– ” দেখুন আপু। আপনি আমার সিনিয়র, ঠিক কী বলা উচিত আমি বুঝতেসি না। কিন্তু একটা মানুষকে আমি চিনি না জানি না তাকে কীভাবে নাম্বার দেই বলুন। কাইন্ডলি মাইন্ড করবেন না। কিন্তু আপনার এই স্ট্রেইট ফরোয়ার্ডনেস আমার ভালো লেগছে! ”
– ” আরে চেনা-জানার বিষয়? ওয়েট! ” বলেই তামান্না চেচিয়ে আবিদকে ডাক দিলো। আবিইইদ এই আবিইদ এদিকে আয়!

আবিদ পড়লো মাইনকা চিপায়। এই মেয়েরে পাঠাইলো ডিটেইলস জানার জন্য এই মেয়ে এখন আমারেই ডাক দিচ্ছে!
আবিদ ঠিক লজ্বা পাবে, ভয় পাবে, খুশি হবে না রাগ হবে বুঝতে পারবে না। কিন্তু মেঘের সামনে যতই আগাচ্ছিলো ততই হৃদস্পন্দন বাড়ছিলো। একথা সত্য এর আগে এরকম অনুভুতি আবিদের কখন কোনো মেয়ের জন্যই হয় নী। আবিদ মেঘের দিকে না তাকিয়েই তামান্নাকে তুতলিয়ে তুতলিয়ে বলছে।

– ” কীরে ডাকছিস কেনো?”
– ” আমি ওরে বলে দিছি যে তুই ওরে পছন্দ করিস!”

আবিদ পারছেনা এখন একটা বড় গর্ত করে সেখানে তামান্নাকে পুতে দিয়ে নিজে পুতে যেতে। নিজেকে যথাসম্ভব স্থির আর স্বাভাবিক রেখে আবিদ মেঘের দিকে তাকালো। এই প্রথম কাছ থেকে মেঘকে দেখছে আবিদ। সৃদস্পন্দন,ভালোলাগা,শরীরে ঠান্ডা-গরম মিশ্র তাপ চলাচল করা। এক অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করছে আবিদের। একবার অসহায় দৃষ্টিতে তামান্নার দিকে তাকালো আবিদ। তাকাতেই তামান্না বললো,” আরে আবুল হাই বল না এগুলাও কী বলে দিবো নাকি?”

আবিদের এই আনাড়িপনা দেখে মেঘ মিটি-মিটি হাসছিলো। এর আগে বহু ছেলে প্রোপোজ করেছে মেঘকে সবার প্রোপোজই বিরক্ত হয়েছে মেঘ। আর ছেলেদের প্রোপোজ করা নিয়ে একটা থিউরিও সে আয়ত্ত করে নিয়েছে। আর সেই থিউরি অনুযায়ি স্পষ্ট আবিদ আনাড়িপনা করছে।

আবিদ একটা বড় শ্বাস নিয়ে মেঘের চোখের দিকে তাকিয়ে বললো!

– ” হাই, আমি আবিদ তালুকদার! ”

কথাটা বলার সাথে সাথেই আবিদের মনে হলো সে যেনো ফিজিক্স এর ভাইবার উত্তর দিলো মাত্র। এতোটা রিলিফ লাগছে আবিদের।মেঘ নিজের মিটি-মিটি হাসি আর খানিক ভালোলাগাটা লুকিয়ে স্বাভাবিকভাবে বললো!

– ” হ্যালো, আমি আদনিন রহমান মেঘ! ”

মেঘ নামটা শোনার সাথে সাথেই আবিদের শরীরে যেনো একটা প্রবাহ বয়ে গেলো। আবিদের মুখ থেকে বেড়িয়েই গেলো,” তোমার নামটা কিন্তু আসলেই খুব সুন্দর! “। মেঘও র‍্যাপিডলি উত্তর দিলো, ” হুম সবাই ই বলে আমার নাম নাকি সুন্দর!”

আবিদের বলতে তো অনেক কিছুই ইচ্ছে করছিলো। আবিদের তো ইচ্ছে করছিলো মেঘের বারবার সামনে আসা চুলগুলো কানের পেছনে গুজে দিতে কিন্তু আবিদ কথা বলার সাহসই পাচ্ছে না। আবিদের চুপথাকা দেখে মেঘই বললো।

– ” আচ্ছা আপনি আমায় পছন্দ করেন? ”

এবার আবিদ কিছুটা সাহস পেলো। আবিদ নিজে মনে মনে আওড়াতে থাকলো। ছিঃ আবিদ, তুই এভাবে লজ্বা পাচ্ছিস কেনো? একটু কথাই তো বলবি বলে ফেল না। আবিদ নির্দিধ্বায় মেঘকে বলে,” হ্যা তোমায় খুব পছন্দ আমার! ”
– ” আচ্ছা, আপনার মনে হয় আপনি প্রোপোজ করলে আমি রাজি হয়ে যাবো? ”
মেঘ মনে মনে ঠিক করে নিয়েছে যদি হ্যা বলে তাহলে এখানেই শেষ। আর সুযোগই দেবে না সে। কিন্তু আবিদ মেঘকে অবাক করে দিয়ে বললো, ” যদি এই কয়েক মুহুর্তের কনভারসেশনে তুমি আমার প্রোপোজে হ্যা বলে দাও তাহলে সেটা ভালোবাসা না এট্রাকশন। একটা মেয়ের একটা ছেলেকে পছন্দ হতে কিছুটা টাইম লাগে, ছেলেটার সমন্ধ্যে বিষদ জানতে হয় তারপর পছন্দের ব্যাপার আসে। মুলকথা হলো একটা মেয়ের ভালোবাসা পেতে হলে ইম্প্রেস করতে হয় একটা ছেলেকে। কিন্তু আমি এ পর্যন্ত তোমাকে ইম্প্রেস করার মতো কিছুই করি নী। তাই অবশ্যই আমি প্রোপোজ করলে তুমি না বলবে! ” কথাগুলো বলেই আবিদ কিছুটা থামলো।

মেঘের মনের কাজতো সেরে গেছে। মেঘের মাথা আর মনের মধ্যে খালি ঘুরছে ছেলেটা কি সুন্দর মনের কথা পড়তে পারে, কি সুন্দর গুছিয়ে কথা বলতে পারে আর সবচেয়ে বড় কথা হলো ছেলেটা তো আমার থিউরিই ভুল প্রমান করে দিয়েছে।

আবিদ আবার বলা শুরু করলো। আমি তোমায় ইম্প্রেস করার জন্য সুযোগ চাচ্ছি শুধু, যদি তোমার ইচ্ছে বা তোমার দিক থেকে কিছু থাকে আরকি। আমি মেয়েদের যথেষ্ট সম্মান করি। আর আমি কোনো রোডসাইড রোমিও না যে তুমি না বলার পরেও তোমায় বিরক্ত করবো। তাই তোমার দিক থেকে অল্পকিছুও যদি থেকে থাকে তাহলে আমরা নাম্বার এক্সচেঞ্জ করতে পারি!!

মেঘের মনের মধ্যে তো হাতুড়ি দিয়ে ইট ভাঙা শুরু হয়ে গেছে। এর আগে কেউ এভাবে গুছিয়ে প্রোপোজই করে নাই মেঘকে তাই হতো মেঘ আজ অবধি সিঙ্গেল। মেঘ বললো, ” আপনার কথাগুলো যুক্তিসংগত। কিন্তু আমি তো হুট করেই কোনো উত্তর দিতে পারবো না। তাই কিছুদিন সময় আপনি নিজেও নিন আমায়ও দিন। আপনিও আমাকে জানুন আমিও আপনাকে জানি। তারপর নাহয় স্বিদ্ধান্ত নিবো!” কথাগুলো বলে মেঘ একটু থেমে যায়। মেঘ ভাবছে তার নিজেরও তো আবিদের স্বমন্ধে জানতে হবে। তাছাড়া মেঘ চায়না জীবনের প্রথম প্রেম কোনো ভুল মানুষের জন্য সৃষ্টি হোক। আমরা নাম্বার এক্সচেঞ্জ করতেই পারি আমার কোনো সমস্যা নেই তাতে!!

আবিদ তো পারছেনা খুশিতে ফোনের নাম্বার হয়েই মেঘের কাছে চলে যায়। আবিদ নিজের নাম্বারটা মেঘকে দেয়। কিন্তু মেঘ নাম্বার না দিয়েই বলে আমিই আপনাকে ফোন দিয়ে নিবো।আমার একটু তামান্না আপুর সাথে কথা ছিলো যদি আপনি একটু যেতেন আরকি। আবিদ একটু মুচকি হেসে বললো ” তোমার ফোনটা যত তাড়াতাড়ি আসবে। আমি তত বেশি খুশি হবো! “। মেঘ উত্তর একটু মুচকি হাসি ফিরিয়ে দিলো আর কিছুই বললো না। আবিদ ওখান থেকে যেতেই মেঘ তামান্নাকে বলা শুরু করলো!

– ” আপু আমার তোমার হেল্প লাগবে! ”
– ” হুম আপু বলো! ”
– ” আসলে আপু তুমি যেমন স্পষ্টভাষী আমিও ঠিক তেমন।এর আগে আমায় বহু ছেলে প্রোপোজ করেছে কিন্তু আমার কারো জন্যই ভালোলাগা তৈরী হয় নাই। বরং আমি বিরক্তবোধ করছি। কিন্তু এই প্রথম ওনার জন্য ভালোলাগা তৈরী হয়েছে। আমি এ অবধি একটা রিলেশনশিপ এ ও যাই নাই। আমি চাই না আমার জীবনে প্রথম প্রেম হিসেবে কোনো ভুল মানুষ আসুক। তাই ওনার স্বমন্ধে সব ভালো আর খারাপটা তোমায়ই বলতে হবে! ”
– ” আরে এই সামান্য ব্যাপার, তুমি কলেজের যেকোনো পুরোনো ব্যাচ এর থেকে আবিদের স্বমন্ধে জানতে পারবা। এমনকি কলেজের টিচার্সদের থেকেও জানতে পারো। আবিদের খারাপ অভ্যাস বলতে আবিদ সিগারেট খায়, আবিদের শর্ট টেম্পার একদম মাত্রাতিরিক্ত, আর আবিদের ধৈর্য্য নেই বললেই চলে। এসব ছাড়া আবিদের কোনো খারাপ দিকই নেই! ”
– ” আচ্ছা আপু থ্যাংকস এ লট। আমি ফোনে কথা বলে নিবো ওনার সাথে। তোমার নাম্বারটা দাও!”

মেঘ তামান্নার নাম্বার নেবার পর তামান্নাকে বললো, ” আপু প্লিজ ওনাকে বইলো না যে আমি তোমার থেকে এসব জিজ্ঞেস করছি!”
– ” আচ্ছা নিশ্চিন্তে থাকো আমি বলবো না। আবির এসব জিজ্ঞেস করবে না। আর যদি করে তাহলে সত্যিই তোমার প্রেমে ডুবে গেছে!” বলেই হেসে উঠলো তামান্না সাথে মেঘও হেসে উঠলো!

মেঘ চলে গেলো। তামান্না এখন আবিদের সাথে হাটছে ক্যাফেতে গিয়ে বসবে তাই। আবিদ ক্যাফেতে বসেই জিজ্ঞেস করলো, ” কীরে কী বললো মেঘ? ”

– ” যা বলছে বলছে। তোরে বলা যাবে না শুধু আমি এককথায় বলবো তোর গ্রিন সিগনাল আছে মাম্মা।গো এহেড! ”

আবিদের খুশি যেনো বাধ মানছেনা!!

ক্যাফে থেকে বের হয়ে আবিদ তামান্নার সাথে তামান্নার বাসায় চলে গেলো। সেখানে লাঞ্চ করে নিলো। ধরতে গেলে তামান্নার বাসা আবিদের জন্য ২য় বাসা কোনো ফর্মালিটিই নেই সেখানে। তামান্নার বাবা-মা আবিদকে নিজের ছেলের মতই দেখে। সারা বিকাল আবিদ আর তামান্না ছাদে বসে অপেক্ষা করলো মেঘের ফোনের জন্য তারপর। কিন্তু মেঘ ফোন করলো না। সন্ধ্যায় আবিদ বাসায় চলে এলো।

রাত প্রায় ৮ টা বাজে তখন মেঘ ফোন করলো।

চলবে!
#thetanvirtuhin

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here