প্রেমের রঙ পর্ব -১৯

#প্রেমের_রঙ
#পর্ব_১৯
#মোহনা_হক

‘ইজহান পুষ্প কে তার গাড়ি দিয়ে ইচ্ছেমতো ঘুরিয়েছে। এখন পুষ্পের কোনো রাগ নেই ইজহানের প্রতি। বরং ইজহান যদি গ্রামে আসে তাহলে সবচেয়ে বেশি পুষ্প খুশি হয়।’
‘দেখতে দেখতে পদ্মের পরীক্ষাও শেষ হয়ে গেলো। আজ সে আবারও ঢাকা শহরে দ্বিতীয় বারের মতো পা রাখবে। এ যেনো এক অদ্ভুত অনূভুতি। প্রথম বার যেমন লেগেছিলো এবারও ঠিক ওরকমই লাগছে। পদ্ম তার ব্যাগ গোছাচ্ছে আর মুচকি মুচকি হাসছে। পদ্মের হাসি দেখে পুষ্পের রাগ হলো ভীষণ। পদ্ম চলে যাবে দেখে সে মন খারাপ করে বসে আছে আর এইদিকে পদ্ম হেসেই যাচ্ছে। এক প্রকার রাগ হয়ে পুষ্প পদ্মের সাথে কথা বলছে না। রুবিনা খাতুনের ও মনটা খারাপ হয়ে আছে তার মেয়ে এতোদিন ছিলো আজ চলে যাবে।’

‘পদ্ম এবারও গ্রাম থেকে আসার সময় কান্না করেছে। যেটা দেখে ইজহান খুব বিরক্ত হয়েছে। এখনও গাড়িতে বসে ক্রমাগত চোখের পানি ফেলছে।’

“তোমার আসলে সমস্যা কি বলো তো?”

‘পদ্ম ইজহানের দিকে তাকালো।’
“কোন সমস্যার কথা বলছেন?”

“এই যে তুমি গ্রামে যাওয়ার সময় কাঁদো আবার আসার সময়ও ঠিক একই কাজ করো, সেটাই জিগ্যেস করছি তোমার সমস্যাটা আসলে কোন জায়গায়?”

‘পদ্ম মুখ ফিরিয়ে নিলো। সমস্যা মানে কি সে জানে না? গ্রাম থেকে চলে আসার পর যে তার কষ্ট হচ্ছে। সব সময় উল্টো পাল্টা কথা শুধু।’

“কথা বলছো না কেনো?”

“কি বলবো আমি?”

“যদি বলতেই না পারো তাহলে কাঁদবে না। মেয়ে মানুষ যে এতো কাঁদতে পারে তোমাকে না দেখলে জানতামই না। যদি আর একবার কাঁদো তাহলে তোমাকে এখানেই রেখে আমি চলে যাবো।”

‘পদ্ম কিছু বললো না। মাথাটা হেলিয়ে দিলো সিটে। চোখ জ্বলছে। একটু ঘুমালে ভালো হতো। পদ্ম ঘুমিয় গেলো। অনেক্ক্ষণ পদ্মের পাশ থেকে কোনো সাড়াশব্দ আসছে না বলে ইজহান পদ্মের দিকে তাকালো। পদ্ম ঘুমাচ্ছে দেখে ইজহান মনে মনে বললো ‘সারাদিন কাঁদবে আর ঘুমাবে এই কাজ তার।’

‘ইজহান পদ্মকে নিয়ে শেখ ভিলায় আসলো। এখানে কিন্তু আজ থাকবে না হঠাৎ ইজহানের মন চাচ্ছিলো তার মা বাবার সাথে পদ্মের দেখা করানোর দরকার আছে। তারউপর ইজনিয়া বলেছিলো পদ্মের পরীক্ষা শেষ হলে পদ্মকে নিয়ে সর্বপ্রথম যেনো এখানেই আসে।’

‘পদ্ম ইজহানের আগে তড়িঘড়ি করে বাসার ক্রলিং চাপ দিলো। ইজনিয়া দরজা খুললো। পদ্মকে দেখে সুন্দর করে হাসি দিলো।’

“কেমন আছো ভাবি?”

“ভালো আছি আপু। তুমি কেমন আছো?”

“আমিও ভালো আছি।”

‘তাদের দু’জনের আলাপে ইজহান আসলো। তার মেজাজটা চটে গিয়েছে। দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আবার কিসের কথা? ভিতরে গিয়েও তো বলতে পারে।’

“ইজনিয়া সর সামনে থেকে। তুই যেভাবে দাঁড়িয়ে আছিস মনেহচ্ছে আমাদের ভিতরে ঢুকতে দিবি না। আর এখানে দাঁড়িয়ে কিসের কথা?”

‘ইজনিয়া সরে আসলো। ইজহান দ্রুত পায়ে উঠে উপরে উঠে নিজের রুমে চলে গেলো। পদ্ম ইজনিয়ার সাথে কথা কথা বলতে মুনিরা শেখের কাছে যাচ্ছে।’

‘মুনিরা শেখ পদ্মকে জড়িয়ে ধরলো।’
“কেমন আছো পদ্ম?”

“ভালো আছি মা। আপনি কেমন আছেন? বাবা কি বাসায় নেই?”

‘মুনিরা শেখ হাসলো।’
“আমিও ভালো আছি। না সে কি আর বাসায় থাকে বলো? আচ্ছা তুমি এতো দূর থেকে এসেছো ফ্রেশ হতে যাও। পরে নাহয় কথা বলা যাবে।”

‘পদ্ম রুমে আসলো। ইজহান রেডি হচ্ছে হয়তো কোথাও যাবে।’

“কোথাও যাচ্ছেন?”

“হু। একটু বাহিরে যাচ্ছি।”

“কেনো?”

“সেটা আপাতত আপনার না জানলেও চলবে ম্যাডাম। যান গিয়ে আগে ফ্রেশ হোন।”

‘পদ্ম ফ্রেশ হতে চলে গেলো। এই লোকের সাথে কথা বলাই বেকার। আসল কথা তো বলবে না জানা আছে পদ্মের।’
‘পদ্ম এসে দেখে ইজহান এখনো বসে আছে।’

“যাননি এখনো?”

‘ইজহান পদ্মের দিকে তাকালো।’
“যাবো। তুমি আসার জন্য ওয়েট করছিলাম।”

“ওহ।”

‘ইজহান উঠে পদ্মকে ভিজা চুলে হাত রাখলো।’
“আসছি আমি। তুমি সাবধানে থেকো।”

‘পদ্ম মাথা নাড়লো। ইজহান চলে গিয়েছে। পদ্ম ইজনিয়ার রুমে আসলো। কারণ একা একা রুমে ভালো লাগছে না। একা কি থাকা যায় নাকি?’

‘পদ্ম ইজনিয়ার রুমে সামনে দাঁড়ালো।’
“আপু আসবো?”

‘ইজনিয়া এতক্ষণ বই পড়ছিলো। পদ্মের ডাকে মাথা তুলে তাকালো।’

“ওহ ভাবি তুমি?”

“জ্বী আপু।”

“আরে আসো আসো বাহিরে দাঁড়িয়ে আছো কেনো।”

‘পদ্ম ইজনিয়ার সোজাসুজি বসলো।’

“বই পড়ছিলে আপু?”

‘ইজনিয়া হেসে উত্তর দিলো।’
“হুম। নিজের মেইন সাবজেক্ট গুলো পড়ে শেষ করতে পারি না, কিন্তু এই উপন্যাসের বই ছাড়াও আবার থাকতে পারি না। অভ্যাস হয়ে গিয়েছে।”

“আপু তুমি না মেডিক্যালে পড়ছো? তুমিও কি তার মতো ডাক্তার হবে?”

“হুম ভাইয়ের বোন যদি ভাইয়ের মতো না হই তাহলে তো আর মান সম্মান থাকবে না। তবে ভাইয়ার মতো এতো ভালো স্টুডেন্ট না আবার খারাপ ও না।”

“ওহ আচ্ছা আপু ওনি কি অনেক ভালো স্টুডেন্ট ছিলেন?”

“হ্যাঁ ভাইয়া তো মেডিসিন স্পেশালিষ্ট। যারা মেডিসিন স্পেশালিষ্ট তারা সব রোগের ঔষধ দিতে পারে।”

“আচ্ছা যারা এমনি ডাক্তার তারা কি সব রোগের ঔষধ দিতে পারে না?”

“যে যেটা নিয়ে পড়াশোনা করে মানে যার এসসিপিএস যেটা সে সেই বিষয়েরই ডক্টর। বুঝেছো?”

“ওহ তাহলে ইজহান ভাইয়া তো অনেক ভালো স্টুডেন্ট। তুমি তো তাও মেডিক্যালে পড়ছো। আমি তো সেটাও পারবো না। মাথায় নেই কিছু।”

‘ইজনিয়া হাসছে পদ্মের কথা শুনে।’

“তুমিও তাহলে ভাইয়াকে ভাইয়া ডাকা শুরু করেছো?”

‘পদ্ম মুচকি মুচকি হাসছে। ইজহানকে একবার ভাইয়া বললে কি যে শান্তি লাগতো তার। ইশ একদিন সে ভাইয়া বলেই ছাড়বে। আচ্ছা পদ্ম যখন ভাইয়া বলবে তখন ইজহানের চেহেরাটা ঠিক কেমন দেখতে হবে? নিশ্চয়ই ইজহান রেগে যাবে পদ্মের কথা। ইজহানকে রাগানোর একমাত্র উপায় পেয়ে গিয়েছে।’
‘অনেকক্ষন ইজনিয়া আর পদ্ম কথা বললো। এক সময় পদ্মের ঘুম চলে এসেছে। পদ্ম ইজনিয়ার রুমেই ঘুমিয়ে গেলো।’

‘পদ্মের ঘুম ভাঙ্গলো যখন একটু আধটু সন্ধ্যা হয়ে এসেছে তখন। বাসায় অনেক মানুষের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। পদ্ম তড়িঘড়ি করে ঘুম থেকে উঠলো। ইজনিয়া নেই রুমে। ইজনিয়ার রুমের পাশ দিয়ে একটা বাচ্চা ছেলে দৌড় দিয়ে যাচ্ছে। পদ্ম চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে এই ছেলে আবার কোথায় থেকে এসেছে। কখনো এ বাসায় দেখেনি এই বাচ্চা কে। পদ্ম হড়বড় করে উঠে ছেলেটা কে ধরলো।’

“তুমি কে? এখানে এসেছো কিভাবে?”

‘বাচ্চাটা ভয় পেলো পদ্মকে দেখে।’
“ছালো আমালে।”

‘পদ্ম আরও বাচ্চাটার হাত চেপে ধরে বললো-‘
“আগে বলো এখানে কিভাবে এসেছো? কার সাথে এসেছো? তোমাকে আগে আমি দেখিনি কেনো?”

‘বাচ্চাটা পদ্মের হাতে খুব জোরে কামড় বসালো। পদ্ম মুখ খিঁচে আছে। ছোট হলে কি হবে দাঁতের যে পাওয়ার। পদ্মের হাতে একদম দাগ বসে গেলো। পদ্ম যেহেতু ফর্সা বেশি তাই সাথে সাথে জায়গাটা লাল হয়ে গেলো।’

“কামড় দিচ্ছো দাও তাও ছাড়বো না তোমাকে।”

‘বাচ্চাটা পদ্মকে ছেড়ে দিলো।’
“আমাল মাম্মালের মালির বাসায় এসেছি।”

‘বাচ্চাটার কথা পদ্মের বোধগম্য হলো না। কি যে বলছে এই ছেলে। এ দেখি কথাও বলতে পারে না। আমাল সামাল কি বলছে।’

“বাবারে কিসব বলছো তোমাকে ধরে রেখে লাভ নেই। যাও দৌড় দাও।”

‘পদ্ম বেসিনে এসে মুখ ধুচ্ছিল। বাচ্চাটার দেওয়া কামড় দেখছে। কি ভয়ংকর ছেলে। একবারে কামড়ে লাল করে দিয়েছে। খুবই পাজি ছেলে একদম।’

‘পদ্ম রুম থেকে বের হয়ে সে রীতিমত অবাক হয়ে আছে। সোফায় কিছু মহিলা বসে আছে। পদ্ম এখনো বুঝলো না এরা কিভাবে এসেছে এখানে আর কেনোই বা এসেছে।’
‘পদ্ম রান্নাঘরে আসলো। মুনিরা শেখ রান্না করছে। তার পাশে দু’জন মহিলা দাঁড়িয়ে আছে। পদ্ম মুনিরা শেখের কাছে একদম ঘেঁষে দাঁড়ালো।’

‘মুনিরা শেখ পদ্মের দিকে তাকালো। পদ্মের হাত ধরে নিয়ে তার পাশে দাঁড়া করালো।’

“এই যে পদ্ম ইজহানের বউ। ও এতোক্ষণ ঘুমে ছিলো তাই তোমরা দেখতে পাওনি। পদ্ম ওনারা আমাদের খুব ঘনিষ্ঠ মানুষ হয়। একজন তোমার খালা শ্বাশুড়ি আরেকজন মামি শ্বাশুড়ি।”

‘পদ্ম হেসে তাদের সালাম দিলো। তাদের সাথে কথা বললো। মুনিরা শেখ একজন কে বললো-‘

“তুমি একটু এদিকটা দেখো। আমি পদ্মকে নিয়ে রুমে যাচ্ছি।”

‘অতঃপর মুনিরা শেখ পদ্মকে নিয়ে তার রুমে আসলো। একটা সুন্দর কালো কাতান শাড়ি বের করে দিলো পদ্মকে।’

“এটা পড়ে নিও বুঝেছো অনেক মানুষ আসছে আরও আসবে। তাড়াতাড়ি পড়ে নিচে আসো।”

‘পদ্ম শাড়িটার দিকে তাকালো। কেনো শাড়ি পড়বে?”

“মা শাড়ি পড়বো কেনো?”

“আজ ইজহানের জন্মদিন। পরশুদিন রাতে ইজহান শাড়িটা আমার কাছে এনে দিয়েছে আর বলেছে ওর জন্মদিনের দিন যেনো তুমি এটা পড়ো।”

‘পদ্ম অবাক হয়ে গিয়েছে। আজ ইজহানের জন্মদিন অথচ ইজহান একবারও তাকে বলেনি? এতোটাই পর ভাবে ইজহান। তার প্রতি প্রচুর অভিমান জন্মালো পদ্মের ক্ষুদ্র মনে।’

“ওনার জন্মদিন?”

“হ্যাঁ। আচ্ছা তুমি শাড়ি পড়ে রেডি হয়ে নিচে এসো। ইজহান কিছুক্ষণ পর চলে আসবে। সাথে ওর হসপিটালের অনেক লোকজন ও আসবে। আমি নিচে যাই অনেক কাজ পড়ে রয়েছে। ”

‘পদ্ম বসে রইলো। ইজহান একবার বলতেই পারতো তার আজ জন্মদিন। একবারও বলেনি। আজ আসুক একটু কথা বলবে না। দিন দিন বেশি বাজে হচ্ছে লোকটা। পদ্মের মনে শুধু একটাই দুঃখ কেনো ইজহান তাকে কিছু বললো না। সব মানুষ জানে অথচ তার বউকেই বলেনি। আবার বলে ভালোবাসি। একটু বাসে না যদি ভালোই বাসতো তাহলে ঠিকই বলতো। পদ্ম রাগে শাড়িটা নিচে ফেলে দিলো। বেশ কিছু সময় বাদে শাড়িটা নিয়ে ইজহানের রুমে আসলো। যেহেতু মুনিরা শেখ বলেছেন শাড়ি পড়তে তাই অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও শাড়ি পড়লো। আর তার সেই জাতীয় সাজ চুলে খোঁপা করা, চোখে কাজল দেওয়া, আর ঠোঁটে একটু লিপস্টিক দিলো। পদ্ম আয়নায় দেখে নিজেকে নিজেই বলছে ‘না খারাপ লাগছে না তো ভালোই লাগছে।’ কালো শাড়িতেও মানিয়েছে তাকে।’

‘ইজহান বাসায় আসলো। পদ্মের সাথে অনেকবার চোখাচোখি হয়েছিলো। কিন্তু পদ্মকে যতোবারই ইশারা করে তার কাছে যেতে পদ্ম ততবারই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। যতোই হোক আজকে ইজহানের সাথে একটাও কথা বলবে না। ভালো কথা বললেও সে আজ গলবে না। পাথরের ন্যায় শক্ত হয়ে থাকবে।’
‘পদ্ম সবার সাথে হেসে হেসে কথা বলছে শুধু ইজহানের সাথেই বলছে না। এরকম কাহিনী বুঝছে না সে। ইজহান কেক কাটবে এখন তার আত্মীয় স্বজন সবাই দাঁড়িয়ে আছে তার পাশে কিন্তু তার বউ একদম দূরে দাঁড়িয়ে আছে।’

‘ইজহান পদ্মের সামনে এসে দাঁড়ালো। পদ্ম মুখটা ফিরিয়ে নিলো।’

“মান অভিমান পরে করো এখন চলো। তোমাকে ছাড়া আমি কেক কাটবো না।”

‘পদ্মকে জোর করে ইজহান তার পাশে দাঁড়া করালো। পদ্ম বেশি অভদ্রতা দেখায়নি কারণ সবাই কি না কি ভাববে।’

‘সবাই আস্তে আস্তে বাসায় চলে গেলো। রাত একটা বেজে গিয়েছে সব শেষ হতে। তাই ইজহান আর পদ্মকে নিয়ে তার ফ্ল্যাটে গেলো না। এখানেই থেকে গেলো। ইজহান বসে বসে ওয়েট করছে কখন পদ্ম আসবে। সব কাজ শেষ করে পদ্মের আসতে অনেক সময় লেগে গেলো।’

‘পদ্ম রুমেই এসেই ধুপ করে ওয়াশরুমে ঢুকে গেলো। শাড়িটা চেঞ্জ করে আসলো। ইজহান আড়চোখে পদ্মকে দেখছে। ম্যাডাম যে হারে রেগে আছেন এর রাগ ভাঙ্গানো এতো সহজ হবে বলে মনে হয় না।’

“পদ্ম এখানে আসো।”

‘পদ্ম যেনো কথাটা শুনেও শুনলো না। গলা থেকে স্বর্ণের চেইনটা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে খুলছে।’
‘পদ্ম উত্তর দিচ্ছে না দেখে আবারও বললো-‘

“পদ্মফুল আমার একমাত্র বউ এখানে আসো।”

‘এবারও পদ্মের কোনো হেলদোল নেই। আগে থেকেই ইজহান এক কথা দু’বার রিপিট করা পছন্দ করে না। কিন্তু পদ্ম তো শুনছেই না। ইজহান এবার ধমক দিলো।’

“পদ্ম এখানে আসো। যদি এই মুহুর্তে তুমি আমার সামনে না আসো তাহলে আমি রুম থেকে বের হয়ে যাবো। সারারাত বাড়ি ফিরবো না। ইজহান কে আর কখনো দেখতে পারবে না তুমি।”

‘পদ্মের মনটা ধক করে উঠলো। তার সব রাগ, দুঃখ বিসর্জন দিয়ে ইজহানের সামনে দাঁড়ালো।’

‘ইজহান পদ্মের চিবুক ধরে প্রশ্ন করলো।’

“এতক্ষণ যে ডেকেছি আসোনি কেনো?”

“কেনো আসবো বলুন? আজ যে আপনার জন্মদিন আমাকে বলেছেন? আমার মায়ের কাছে শুনতে হয়েছে। আপনি বললে কি খুব বেশি ক্ষতি হয়ে যেতো? আমি তো আপনার কেউ না আমাকে কেনো বলবেন?”

‘ইজহান শব্দ করে হাসলো। পদ্ম ইজহানের দিকে তাকাচ্ছে আবার চোখটা সরিয়ে ফেলছে। নিশ্চয়ই এখন এই লোকের হাসি দেখলে তার রাগটা নিমিষেই উধাও হয়ে যাবে।’

“এইজন্য আমার পদ্মফুল রেগে আছে?”

‘ইজহানের চোখ হঠাৎ পদ্মের হাতে পড়লো। পদ্মের হাত এক জায়গা লাল হয়ে আছে। কেনো? দেখে তো মনে হচ্ছে কেউ কামড়ে দিয়েছে। মুহুর্তেই ইজহানের মেজাজটা চটে গেলো। পদ্মের বাহুতে হাত দিলো।’

“তোমার হাতে কে কামড় দিয়েছে? আমি তো দেইনি? আমার আগে কে কামড় দিয়েছে তোমাকে? আর তুমি সেই দাগ নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছো? কতো বড় সাহস তোমার!”

#চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here