“ফেমাস_বর🙈(বিবাহ পর্ব) পার্ট_২৬

#ফেমাস_বর🙈(বিবাহ পর্ব)
#পার্ট_২৬
#লেখিকা_রামিসা_মালিয়াত_তমা

এই যে মিস্টার জমিদার থুরি মিস্টার আদনান হাসিব,আপনার কী ঘুম থেকে উঠার টাইম হয়েছে?আর কতো ঘুমাবেন?আপনার অফিস নেই আজকে?

আদনানের কানের কাছে গিয়ে আস্তে করে কথাটা বলল তমা।

আদনান ঘুমের ঘোরে কিছু একটা বলল।কিন্তু কী বলল সেটা তমা বুঝতে পারলনা।

তমা-কিছু কানে গেসে আপনার?এই মিস্টার জমিদার উপস,,,(বারবার কী ভুল করতেসি)মনে মনে!
ইয়ে মিস্টার আদনান হাসিব!

এবার আদনান কিছুই বলল না।যেভাবে ঘুমাচ্ছিল সেভাবেই ঘুমাতে লাগল।

তমা-উঠবিনা তাইনা?উঠবিনা?দাঁড়া,আমার নামও মিস তমা….(মনে মনে)

বলতে বলতে থেমে গেলো তমা।তার খেয়াল হলো যে সে তো এখন মিসেস।কাল অবধি তমা মিস ছিলো!কিন্তু আজকে সে মিসেস হয়ে গেল।ভাগ্য যে কখন কার সাথে কী খেলবে তা কেউ জানেনা!

তমা-আমার নামও মিসেস তমা হাসিব।সোজা কথায় না উঠলে কীভাবে উঠাতে হয় তাও আমার খুব ভালো করে জানা আছে।(মনে মনে)

যেই ভাবা সেই কাজ।তমা এক দৌড়ে বাথরুমের থেকে এক মগ পানি নিয়ে রুমে আসলো।

তমা-এখনো আগের মতো শুয়ে আছে দেখা যায়।যাক ভালোই হলো।এখন তাহলে ঠান্ডা পানির ঝটকা লাগুক।ওয়ান,টু,থ্রি……..(মনে মনে)

ঝপাস!

পানি ঢেলে দিয়ে তমা নিজের চোখ ধরে ফেলল।সে ভেবেছিল যে আদনান হয়তো চিৎকার দিয়ে উঠে বসবে।অনেকক্ষণ এভাবে চোখ বুঝে রইল তমা।কিন্তু কোনো সাড়া-শব্দ না পেয়ে তমা আস্তে আস্তে চোখ খুলল।চোখ খুলে তো তমা থ!

তমা-একি?এতো কাঁথার নিচে কোলবালিশ!মিস্টার জমিদার কই?আরেহ!(অবাক হয়ে,মনে মনে)

আউচচচচচচচচচচচ!

চিৎকার দিয়ে বিছানায় পরে গেল তমা।ভয়ে চোখ-মুখ প্রায় খিঁচে ফেলল।তারপর আস্তে আস্তে চোখ-মুখ স্বাভাবিক করে যেই চোখ খুলল প্রায় সাথে সাথে বলল,

তমা-এটা কী হলো?

আদনান-তোমাকে বোকা বানানো হলো।আর কী হবে?(হাসতে হাসতে বলল)

তমা তো রাগে ফুসফুস করছে।আর এদিকে আদনান নিজের মতো হেসেই চলেছে তো হেসেই চলেছে।

আদনান-ডোন্ট ফরগেট তমু,তুমি কার সাথে টেক্কা দিতে আসছিলা।আমার গায়ে পানি দিবা তাইনা?ভিজিয়ে দিবা আমাকে?হাহাহাহাহা

তমা আদনানের কথা শুনে একদম বোকা বনে গেলো।

তমা-তারমানে মিস্টার জমিদার বুঝে গেসিলো যে আমি এমন কিছু করবো।আল্লাহ!কীয়ের লগে বিয়া দিলা!(মনে মনে)
এখন আল্লাহর রস্তে উঠবেন আমার উপর থেকে।আপনার মতো হাতি আমার মতো মেয়ের গায়ের উপর এমনে পরলে তো দুইদিনেই আমার জান শেষ হয়ে যাবে।উঠেন আমার উপর থেকে!উঠেন!

আদনান-উঠবোনা।কী করবা?

তমা-আরেহ,আজব।আমি নিচে যাবো তো।আম্মুকে হেল্প করতে হবে।সরেন!আর….

আদনান-আর?শুনো,নতুন বউকে না এভাবে বিয়ের প্রথম দিনই কেউ সাত সকালে উঠায়না বুঝলা?

তমা-উফ,কারে কী বুঝাই আল্লাহ!(মনে মনে)
সে যাই হোক না কেন,আপনি কী আমার উপর থেকে উঠবেন কিনা বলেন।নাইলে কিন্তু…

আদনান-নাইলে কিন্তু কী,জান আমার?

তমা-কিছুনা।উঠেন না প্লিজ!প্লিজ উঠেন!

আদনান হাসতে হাসতে তমার গলায় একটা কামড় দিয়ে দিলো!

তমা-এটা কী করলেন?

আদনান-কেন জান?লাভ বাইট দিলাম!দেখ না চোখে?আর তাছাড়া আমার সাথে টেক্কা দেওয়ার শাস্তিও এটা!

তমা-আপনি…(রাগে গজগজ করতে লাগল)

আদনান-কী?(মজা নিয়ে বলল)

তমা-এখন আমি বের হবো কীভাবে?সবাই আমাকে দেখলে কী ভাব্বে?

আদনান-কী ভাব্বে?তুমি নতুন বউ,তো তোমাকে নতুন বউ ছাড়া আর কী ভাবতে পারে?( মজা নিয়ে বলল)

তমা কিছু না বলে বিছানায় বসে পরল।

আদনান তমার কান্ড দেখে ওকে আরো রাগিয়ে দেওয়ার জন্য বলল,

আদনান-আচ্ছা জান,শাওয়ার টা নিয়ে আসি।তারপর দুইজন একসাথে নিচে যাবো!

তমা-শাওয়ারের গুষ্টি কিলাই!(মনে মনে)

আদনান শাওয়ার নিতে চলে গেলো।আর তমা বসে বসে রাগে গজগজ করতে লাগল আর ভাবতে লাগল যে এখন কী করে নিচে নামবে।নিচে গেলেই তো সবাই তাকে জিজ্ঞাসা করবে যে গলায় এটা কীসের দাগ।আর আদনান লাভ বাইট টাও গিয়েছে এমন জায়গায় যেটা শাড়ীর আচঁল দিয়ে ঢাকারও কোনো সুযোগ নেই।

তমা-এখন যে কী করি আমি……আইডিয়াাাাাা!(চিৎকার গিয়ে বলল)

তমার চিৎকার শুনে আদনান তারাতারি ওয়াশরুমে থেকে বের হয়ে আসলো।

আদনান- কী হইসে?কী হইসে?(ভয় পেয়ে বলল)

তমা আদনানকে দেখে কেমন যেন হয়ে গেলো।কারণ আদনান একটা ট্রাওজার আর গেন্জি পরা।আর তার মাথা থেকে টপটপ করে পানি পরছে।

তমার আর কোনো দিকেই হুস নেই।সে একনজরে তাকিয়ে আছে আদনানের দিকে!এতোদিন তমার নেশায় মজতো আদনান,আর আজ আদনানের নেশায় তমা মজেছে।

আদনান তমার কাছে এসে তমার সারা শরীর দেখতে লাগলো যে কোথাও আবার ব্যথা পেলো কিনা!

আদনান-কী হলো?এভাবে চিৎকার দিলা কেন?

তমা কিছু বলল না।

আদনান তমাকে এখনো চুপ করে থাকতে দেখে তমার গালে ঠাস করে একটা কিস করে দিলো।

তমার সাথেসাথে হুস আসলো।

তমা-এটা কী হলো?

আদনান-কী হলো?

তমা-কিছুনা।সরেন।

আদনান-তা আগে বলো তো তুমি চিৎকার দিসিলা কেন?

তমা-আমি?কই?আমি..(তমা মনে পরল যে সে কেন চিৎকার দিয়েছিল)
ইয়ে না মানে,এমনি!

আদনান-এমনি কেউ এভাবে চিৎকার দেয়?অসভ্য একটা।আমাকে তো ভয় পাওয়ায় দিসিশ!

তমা আর কিছু না বলে উঠে গেল।আলমারি থেকে কামিজ বের করে যেই ওয়াশরুমে যেতে নিলো সাথে সাথে আদনান এসে পথ আটকিয়ে দাঁড়িয়ে বলল,

আদনান-এটা কী করছ?

তমা-কেনো?শাড়ী চেন্জ করে কামিজ পরবো!কামিজ পরলে তো আপনার ঐ আকাম থুরি আমার গলা কেউ দেখতে পারবেনা।তাই আ…

আদনান তমাকে থামিয়ে দিয়ে ওর হাত থেকে কামিজটা ছোঁ মেরে নিয়ে নিলো।

তমা-এটা কী করলেন?দেন আমার কামিজ।দেন!

আদনান-তমা তুই বোধহয় ভুলে গেছিস যে এ বাড়ির একটা নীতি আছে যে বিয়ের প্রথম ৭ দিন নতুন বউদের শাড়ী পড়তে হয়।তবে কেউ যদি চায় ৭ দিনের পরও আরো সময় পরতে পারে।তবে ৭ দিন মেন্ডেটরি!

এটা শুনেছেন তমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পরল।

তমা-নেহিিিি্্্্!

কান্না কান্না ভাব করে মাটিতে বসে পরল।

আর আদনান তমার কান্ড দেখে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খেতে লাগল।

আদনান-আব তেরা কেয়া হোগা কালিয়া?থুরি তমু?(হাসতে হাসতে বলল)

চলবে,,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here