“ফেমাস_বর🙈(বিবাহ পর্ব) পার্ট_২৫

#ফেমাস_বর🙈(বিবাহ পর্ব)
#পার্ট_২৫
#লেখিকা_রামিসা_মালিয়াত_তমা

নাহ,নাহ,নাহ!২০,০০০ মানে ২০,০০০!এক পয়সাও কম হবেনা।

কথাটা বলে উঠল অরিত্রি!

আদনান-অরু,তুই আমার আপন চাচাতো বোন হয়ে আমার সাথে এমন বাটপারিটা করতেসিশ?

অরিত্রি একটা ডেভিল স্মাইল দিলো।

আবরার-ওই পেত্নি,তুই ২০,০০০ টাকা জীবনে কোনোদিন চোখে দেখসিশ?২০,০০০ টাকা।এহ,কী শখ!২০/৩০ টাকা হইলেও বুঝতাম,আর সেদিকে সে বলে কিনা ২০,০০০ টাকা।

অরিত্রি-ঐ কিপ্টুস,একদম কথা বলবিনা তুই।১০/২০ টাকা নাহ?ফকিন্নিগিরি কমায় কর।ভাইজান,তুই টাকা দিবি কিনা বল?না দিলে কিন্তু…

অরিত্রি দরজা বন্ধ করতে নিলো।গতিক সুবিধার না দেখে আদনান বলতে লাগল,

আদনান-আচ্ছা,আচ্ছা।দিচ্ছি দিচ্ছি।বাট একটু যদি

অরিত্রি দরজা আবার বন্ধ করতে নিলে আদনান এবার শুরশুর করে ২০,০০০ টাকা বের করে দিলো।

আদনান-নে বইনা।

অরিত্রি হাতে টাকা নিয়ে টাকা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখতে লাগলো।

অরিত্রি-হুম,ঠিক আছে।এবার তুমি ভেতরে যেতে পারো।

এই বলে আদনানকে মিষ্টি,শরবত খাইয়ে রিবন কাটিয়ে ভিতরে ঢোকানো হলো।

ভিতরে,
প্রথমে আদনানের থেকে জবাব নেওয়া হলো।

কাজী-মিস্টার ও মিসেস কাবিরের ছোট মেয়ে তমা কাবিরের সাথে মিস্টার এন্ড মিসেস হাসিবের বড় ছেলে আদনান হাসিবের সাথে……….রাজি থাকলে বলেন “কবুল”

আদনান তো সাথে সাথেই বলে দিলো,
কবুল❤️কবুল❤️কবুল❤️

এবার আসলো তমার পালা।

কাজী-মিস্টার ও মিসেস কাবিরের ছোট মেয়ে তমা কাবিরের সাথে মিস্টার এন্ড মিসেস হাসিবের বড় ছেলে আদনান হাসিবের সাথে……….রাজি থাকলে বলেন “কবুল”

তমা কিছুক্ষন চুপ করে রইলো।কনে কে চুপ করে থাকতে দেখে কাজী বলল,

কাজী-কী হলো মা?রাজি থাকলে বলেন কবুল?

তমাও এবার বলে দিলো।
কবুল❤️কবুল❤️কবুল❤️

সবাই-আলহামদুলিল্লাহ!

(যাক,অবশেষে হয়ে গেল তমা ও আদনানের শুভ বিবাহ)

রাত্রিবেলা
অরিত্রি-আরে,ফুলগুলো ভালো করে লাগা খাটের উপরে।কী করতেসিশ কী?

আবরারকে বলল কথাটা।

আবরার মই দিয়ে খাটের উপরে ফুল লাগাচ্ছিলো।কিন্তু অরিত্রির কথা শুনে আবরার রেগে গেল।রেগে গিয়ে মই থেকে নিতে নেমে অরিত্রির হাতে ফুলগুলো ধরিয়ে দিয়ে বলল,

আবরার-নে তুই লাগা।লাগা তুইই লাগা।আমি তো পারতেসিনা তো তুমি লাগা।দেখি কতো পারিস।

অরিত্রি- চ্যানেলেও করতেসিশ নাকি তুই আমাকে হ্যাঁ?চ্যলেন্জ করতেসিশ?

আবরার-হ্যাঁ করতেসি।পারলে করে দেখা,যদি সেই মুরদ থাকে।

অরিত্রি-আচ্ছা,ওকে।করে দেখাচ্ছ এখনি!

এই বলে অরিত্রি মই দিয়ে উপরে উঠে সুন্দর করে খাটের উপরটা সাজালো।সাজানো হয়ে গেলে উপর থেকে নামতে নামতে বলতে লাগল,

অরিত্রি-কীরে?পারলাম তো করতে!এখন কী বল…

কথা শেষ করার আগেই অরিত্রি পা ফস্কে নিচে পরে যেতে নিলো।অবস্হা সুবিধার না বুঝে আবরার তারাতার অরিত্রিকে ধরার জন্য যেই সামনে এমনি অরিত্রি আবরারকে নিয়ে বিছানার উপর পরে গেল।আবরারের বুকের উপর অরিত্রি।

আবরার আজকে এই প্রথমবার অরিত্রিকে এতো কাছ থেকে দেখছে,এতো কাছ থেকে অনুভব করছে।আবরার যেন অরিত্রির মোহতে পরে যাচ্ছে।

আবরার-আরে ঐ মুটকি,উঠবি আমার উপর থেকে নাকি।উফ!

অরিত্রি তারাতারি উঠে গেলো উপর থেকে।আর কোনো কথা না বলে চুপচাপ কাজ করতে লাগল।

কিছুক্ষনের মধ্যেই তারা পুরো ঘরটা সাজিয়ে ফেলল।এর মাঝে তারা কেউ কারোর সাথে কোনো কথা অবধি বলেনি।

অরিত্রি ঘর সাজানো শেষ করে যেই ঘর থেকে বের হতে নিবে তখনই আবরার পিছন থেকে বলল,

আবরার-অরু?

অরিত্রি পিছন থেকেই বলল,

অরিত্রি-কী?

আবরার-আজকে তোকে অনেক সুন্দর লাগতেসে!

অরিত্রি আবরারের কথা শুনে একটু লজ্জ্বা পেল।তাই কিছু আর বললনা।

আবরার কিছুক্ষন চুপ থেকে বলল,

আবরার-আসলে পেত্নি লাগতেসে।(অট্টহাসি হেসে)

অরিত্রি-কী বললি?আমাকে পেত্নি লাগতেসে?দাঁড়া!

এই বলে অরিত্রি আবরারকে ধরতে লাগল।

আবরার-পেত্নি খেপসে রে!পালাই!

এই বলে আবরারও দৌড়াতে লাগলো।অরিত্রি আবরারের পিছে দৌড় দিলো।

অন্যদিকে

তমা-উফ,এই বালের মেকাপ আর কতক্ষন নিয়ে যে বসে থাকতে হবে এক আল্লাহ-খোদা জানেন।(মনে মনে)

তমা আশেপাশে তুরিন/অরিত্রিকে খুঁজতে লাগলো।

তমাকে এমন উশখুশ করতে দেখে আদনান পাশ থেকে তমাকে জিজ্ঞাসা করল,

আদনান-কী গো প্রিয়তমা?আমিতো পাশে!তো আপনি কাকে খুঁজেন ?

তমা-ওরে মারে,আমার জামাই এতো রুমেন্ডিক থুরি রোমেন্টিক হইলো কবে?(মনে মনে)
যারে-ই খুঁজি না কেন,আপনার কী?

আদনান-আমার কী সেটা তো তুমি বুঝবানা জানপাখি!বুঝলে জিজ্ঞাসা করতেনা।

তমা-হইসে আপনার পিরিতির আলাপ বন্ধ করেন।আশেপাশে মানুষ আছে।

আদনান-আরে আমি কী পরের বউরে আদর করতেসি নাকি পরের বউয়ের সাথে পিরিতির আলাপ শুরু করছি?

তমা-পরের বউই তো!

আদনান শেরওয়ানির হাতা উঠাতে উঠাতে বলল,

আদনান-কী বললা?

তমা-ইয়ে মানে হ্যাঁ।পরের বউই তো।দেখলেন না কাজী বললেন যে আমি হাসিবের বউ হইসি।কিনেতু আপনি তে আদনান।বাট আমি তো আদনানের বউ হইনি।(মজা নিয়ে বলল)

আদনান হুট করে হেসে দিলো।

আদনান-বুঝেছি মিসেস পকপক কুইন।(তমার গাল টেনে বলল)

তমার গাল ট্যানার পর আদনান হঠাৎ নিজের হাত দেখলো।

আদনান-ইইউ!!!এইটা কী লাগসে আমার হাতে?

তমা আদনানের কথা শুনে ওর হাতের দিকে তাকালো।তারপর হুট করে হেসে দিয়ে আদনানের দিকে তাকিয়ে বলল,

তমা-আরো আমার গাল ধরেন।চড়া মেকাপ করা আজকে আমার মুখে।আর আপনি আমার মুখ ধরাতে আপনার হাতে ফাউন্ডেশন উঠে আসছে।(হাসতে হাসতে বলল)

আদনান তারাতারি একটা টিস্যু নিয়ে হাতটা মুছে নিলো।

আর আদনানের কান্ড দেখে তমা হাসতে হাসতে শেষ।

কিছুক্ষন পর তুরিন আর আবরার এসে তমা আর আদনানকে তাদের বাসর ঘরে ঢুকিয়ে দিলো।অরিত্রি যদিও বলেছিল বাসর ঘরে ঢুকতে নিলেও টাকা গিয়ে ঢুকতে হবে,তবে গেইট ধরার সময় ওতোগুলা টাকা পেয়েছে দেখে আর কিছু বলেনি।

(এখন অনেকেই বসতে পারেন যে বাসর ঘরে তো মেয়েকে আগে ঢুকিয়ে পরে ছেলেকে ঢোকানো হয়।কিন্তু আমার গল্পে আমি সেটা করবনা)

বাসর ঘরে ঢোকার সাথে সাথে আদনান ঝাপ দিয়ে বিছানায় শুয়ে পরল।

তমা-এটা কী হলো?

আদনান-কী হলো?

তমা-কী হলো মানে?আপনি এভাবে বিছানায় শুয়ে পরলেন কেন?

আদনান-তো কী করবো বউ আমার?

তমা-কেমন বেরসিক,আল্লাহ!বিৎের আগে তো এমন ছিলনা।ইভেন একটু আগেও তো পিরিতি একদম উতলায় পরতেসিলো।আর এখন কিনা বলে কী করবো?এই মানুষটা যে কখন কী করে,কখন কোন মুজে থাকে এক আল্লাহ জানে আর এক এই ব্যাডা জানে!ধুর(মনে মনে)
নাহ,কী আর করবেন।কিছু তো করার নাই।ঘুমান।ঘুমায় যান।কী আর করবেন!(অভিমানের সুরে বলল)

আদনান বুঝল যে তমা কথাগুলো অভিমানের সুরে বলেছে।

তাই আদনান উঠে গিয়ে তমাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরো।

আদনান-বুঝছি।আমার বাবুইপাখি মন খারাপ হয়েছে।জান আমার,তোমাকে ভালোবাসার কোনো সময়-অসময় নেই আমার কাছে।তবে এখন যে তুমি শুধুই আমার গো।কাই তোমাকে এখন ভালোবাসার কোনো তাড়াহুড়োই নেই আমার।(নেশাভরা কন্ঠে তমার গলায় মুখ গুঁজে দিয়ে বলল)

তমা লজ্জ্বায় লাল হয়ে যাচ্ছে।কিন্তু আদনানের সেদিকে কোনো খেয়াল নেই।সে তমাকে পিছন থেকে আদর করেই যাচ্ছে।আজ যে আদনান মেতে উঠেছে তমার নেশায়।

চলবে,,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here