“ফেমাস_বর🙈(বিবাহ পর্ব) পার্ট_১৮

#ফেমাস_বর🙈(বিবাহ পর্ব)
#পার্ট_১৮
#লেখিকা_রামিসা_মালিয়াত_তমা

আদনান নিজের মতো করে ঘরের মধ্যে পাইচারি করেই যাচ্ছে আর ভাবছে কী করে তার তমুকে সে নিজের করে নিবে।

আদনান-কী করা যায়?এই তমুটা যে ঘাড়ত্যারা কী যে করি!

আদনান রুমের মধ্যে পায়চারি করেই যাচ্ছে!

অন্যদিকে তমা আদনানের ঘরে উঁকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করছে যে আদনান করছে টা কী!তমার খুবই নার্ভাস লাগছে।এই মূহুর্তগুলোতে তমার খুবই নার্ভাস লাগে।কোনোমতে নিজের মনে সাহস জুগিয়ে তমা ভিতরে ঢুকল।

তমা ভিতরে ঢুকে দেখলো আদনান উল্টো ঘুরে দাঁড়িয়ে আছে।

তমা-এহেম,এহেম।(একটু কাশি দিলো)

আদনান তো একটু শব্দ শুনেই বুঝতে পারল যে এটা তমার ভয়েজ!তবুও আদনান না চেনার ভান করে একটু ভাব নিয়ে বলল,

আদনান-কে?(পেছনে ঘুরে থেকেই)

তমা একটু অবাক হলো।আদনান তো তমার পায়ের পাতার শব্দতেও বুঝতে পারে যে এটা তার তমু।আর আজ কিনা…

তমা-আমি তমা।

আদনান পিছন থেকে সামনে ঘুরল।

আদনান-ওহ!তা কী মনে করে আমার কাছে এলি?ওহ,ওয়েট ওয়েট।আ’ম রিয়েলি সরি।আমার সব কথার জবাব দিতে তো তুই বাধ্য নোশ।এক্সট্রেমলি সরি!

তমা এবার আরো অবাক হলো।আদনান তার সাথে কিনা এভাবে কথা বলছে?এভাবে?

তমা-আপনি এভাবে কথা বলছেন কেন?(কষ্টদায়ক কন্ঠে)

আদনান-এভাবে কথা তোর সাথে আমার আরো অনেক আগে থেকে বলা উচিত ছিলো।যাগ্গে,কেন এসেছিস সেটা বলতে চাইলে বল,নাহলে আমি রুম থেকে বের হলাম।

তমা-আ’ম রিয়েলি সরি!(মাথা নিচু করে বলল)

আদনান-হাহ!এখন সরি বলে কোনো লাভ নেই।তোকে তখনও আমি নিষেধ করেছিলাম,কিন্তু তুই শুনিসনি।তো এখন সরি বলে লাভ কী বল?

তমা-আমি আপনাকেই বিয়ে করব!(লজ্জ্বাজড়িত কন্ঠে)

আদনান কথাটা শুনে মনে মনে অনেক স্বস্তি পেল।কিন্তু তাও সে তা প্রকাশ করলো না।উল্টে এটিটিউড নিয়ে বলল,

আদনান-হাহ!সবকিছু এতো ইজি না মিস তমা কাবির। সবকিছু এতো ইজি না।একদিন এসে তুমি বলবা বিয়ে করব,আরেকদিন বলবা করবোনা।আমার জীবনটা তো কোনো খেলান না তাইনা?যে যখন যা ইচ্ছে হবে তুমি তাই করবা!লিসেন,টাইম ইজ ওভার।আমি তোকে আর বিয়ে করছিনা।এখন আমার বিয়ে হবে ডেড এর এক ফ্রেন্ডের মেয়ের সাথে।তুই আমার ফ্যামিলির মান-সম্মান,আচ্ছা ছাড়!আমার ফ্যামিলির কথা নাহয় বাদই দে!তোর ফ্যামিলির মান-সম্মানের কথা একটাবারও ভেবেছিস?ভাবিসনি!একটিবারও আমার কথা শুনতে চেয়েছিস?চাসনি।নিজে যা ভেবেছিস তাই করে গেছিস।আর যখন ভুল বুঝতে পেরেছিস তখন এসে সরি বলছিস!বাট,ইটস অলরেডি লেইট।

তমা সবকিছু শুনে স্তব্ধ হয়ে গেছে।সে তো চিনেনা এই আদনানকে!

তমা-আপনি এসব কী বলতেসেন?সামান্য ভুলই নাহয় করেছি,কিন্তু তাই বলে?তাই বলে এভাবে বলবেন?

আদনান-এটা মোটেও সামান্য ভুল নয় তমু!আর তাছাড়া,তুই তো আমাকে বিয়ে করবিনা!সো তোর এতো লাগছে কেন?আমার যাকে ইচ্ছা হয়,আমি তাকে বিয়ে করবো!

তমা এবার আর নিজেকে শক্ত রাখতে পারলনা!কেদে ফেলল!

আদনান তো এই সুযোগের অপেক্ষাতেই ছিল।

আদনান-এখন কেঁদে আর লাভ কী বল?সব ঠিক হয়ে আছে।এখন তোর ওই চোখের পানি কিছুতেই কিছু করতে পারবেনা।

তমা তো কিছু বলতেই পারছেনা।কেঁদেই চলেছে তো কেঁদেই!

এবার আদনান তমার সামনে গিয়ে হাঁটু গেড়ে বসল!আর বলল,

আদনান-আমি তো ডাবল স্ট্যান্ডার্ড নিয়ে চলি!আমি তো তোকে ঠকিয়েছি!তাহলে এখন আবার আমার যখন বিয়ে হয়ে যাচ্ছে তখন তুই কাঁদছিস কেন?বল কাঁদছিস কেন?

তমা কিছু না বলে কেঁদেই যাচ্ছে।

আদনান আর কিছু না ভেবে তমাকে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরল।

তমাও আদনানকে জাপটে জড়িয়ে ধরল।

আদনান-আর কখনো এমন করবিনা!সো আমার বাচ্চার মা,বি রেডি ফর মাই উডবি ওয়াইফ!

তমা একটু অবাক হলো।

তমা-আপনার না বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে?

আদনান কিছু না বলে মিটিমিটি হাসতে থাকল।

তমা-কী হইলো?বলেন?

আদনান-আরেহ,বিয়ে ত আমার ঠিক হয়ে আছে!কিন্তু সেটা তোর সাথে!

তমা-কিন্তু আপনি যে একটু আগে বললেন?

আদনান-কী বললাম?(মজা নিয়ে বলল)

তমা-এই যে বললেন আপনার বিয়ে মামার কোন ফ্রেন্ডের মেয়ের সাথে?

আদনান-বললাম বুঝি?আচ্ছা,সেটা ভুলে যা।ওটা এমনিই বলেছিলাম।তোর এক্সপ্রেশন দেখার জন্য!(মজা নিয়ে বলল)

তমা-কী?(রেগে গিয়ে বলল)

আদনান-বউ আমার খেপসে,পালাই আমি।

এই বলে আদনানের ঘরের চারদিকের ঘুরতে লাগল!আর তমাও আদনানকে ধরার জন্য দৌড়াতে লাগল।

তমা-দাঁড়ান,দাঁড়ান আদনান ভাই!একবার আপনাকে ধরি তারপর দেখেন কী করি!

আদনান কোনো কারণে থেমে গেল।আর তমার সামনে এসে বলল,

আদনান-কী বললি তুই আমাকে?

তমা-বললাম যে আপনি দাঁড়ান,আপনাকে আমি ধরবো!

আদনান-তার পরে কী বললি?ভাই বললি যে?

তমা কিছু বলতে নিয়েও থেমে গেল!

তমা-এই রে খাইলাম বাঁশ!ধুত্তর(মনে মনে)

আদনান চোখ গরম করে তমার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে রইল!তারপর বলল,

আদনান-নেক্সট টাইম যদি এই ভুল আবার হয় তো তোর অবস্হাও আমি খারাপ করে দিব!

তমা-ওকে।(ঢোক দিলে বলল)

তমা আদনানের হাতে কিল-ঘুঁষি মেরে বলতে লাগল,

তমা-আপনি এমন কেন হ্যাঁ?বলেন এমন কেন?সবসময় কেন এমন করেন?

বলতে বলতে মারতে লাগল!

আর আদনান তমার মার দেখে হাসতে হাসতে বলল,

আদনান-তোর এই নরম দুই হাত দিয়ে আমাকে যে মারছিস,আমার ব্যাথার বদলে আরাম লাগছে রে তমু!

তমা আদনানকে মারা বন্ধ করে দিল।আর রুম থেকে চলে যেতে নিল!

কিন্তু আদনান পিছন থেকে তমার হাত ধরে ফেলল!আর বলল,

আদনান-এই যে জানপাখি,কই পালাচ্ছিস হ্যাঁ?দাঁড়া।ঘরে যখন এসেছিস,তখন এমনি এমনি কী করে ছেড়ে দেই বলতো?(তমার দিকে এগোতে এগোতে বলল)

তমা বুঝল যে অবস্হা বেশি সুবিধার নয়।আদনান নিশ্চয়ই দুষ্টুমি করার সুযোগ করছে।

তমা আদনানের এগোনো দেখে পিছাতে লাগল।কিন্তু একটা সময় দেওয়ালের সাথে পিঠ লেগে গেল।

আদনান তমাকে দেয়ালের সাথে লাগিয়ে তমার গলায় মুখ গুঁজে দিল।

তমা তো ভয়ে শেষ।

কিন্তু আদনানের কোনো হুস-জ্ঞানই নেই।সে আছে তার তমুর নেশায়।

তমা কী করবে বুঝতে পারছেনা।আদনানকে না পারছে বাঁধা দিতে আর না পারছে নিজে সরে যেতে!

কিছুক্ষন পর আদনান তমাকে এমনিতেই ছেড়ে দিল।তমার গলা একদম টকটকে লাল হয়ে গেছে!

তমা লজ্জ্বায় লাল হয়ে গেল।তাই আদনান ছেড়ে দেওয়ার সাথে সাথে তমা এক দৌড়ে বের হয়ে গেল ঘর থেকে।

আর আদনান তমার কান্ড দেখে মুচকি মুচকি হাসতে লাগল।

এদিকে এক জোড়া শকুনের চোখ তাদেরকে প্রথম থেকেই লক্ষ্য রেখেছে!

দাঁড়াও জান্টুস!এবার তো তোমাদের মিলন ঘটে গেল কিন্তু এরপর কী হবে তা তোমরা নিজেরাও জানোনা!

চলবে,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here