বড্ড ভালোবাসি পর্ব ১৫+১৬

গল্প :- বড্ড ভালোবাসি
পর্ব :- ১৫ এবং ১৬
Writer :- Labiba Islam Roja
:
:
:
ওয়াশরুম থেকে বেড়িয়ে তিশাকে বলছিলাম বাড়ি যাব।কিন্তু এখন সে যাবে না।জোর করে আমাকে আটকে দিল।সবাই মিলে গল্প করছিলাম সাথে শাওন ও ছিল।এমন সময় কেউ একজন ঝরের গতিতে এসে আমার গালে ঠাসস থাপ্পর বসিয়ে দিল।এত জোরে থাপ্পর আমার জিবনেও আমি খাই নাই।।মাথা ঘুরছে গালটা ব্যাথায় ফেটে যাচ্ছে হয়তো লাল হয়ে গেছে।চোঁখ থেকে পানি পরছে।ইচ্ছা করছে চিৎকার করে কাঁদতে কিন্তু পারছি না।
.
এমন ঘটনায় আমরা সবাই হতবাক।কে করল এমন একটা কাজ।নিচের দিকে তাকিয়ে মনে যা আসে তাই বলা শুরু করলাম……
.
কোন ছাগল রে আমায় মারল আমার গাল কি তোর বাপের রেজিস্ট্রি করা সম্পওি যে তুই থাপ্পর মেরে দিলি।তোর কোন পাঁকা ধানে আমি মই দিয়েছি গন্ডার এনাকন্ডা নাইজেরিয়ান উলু বিড়াল তোর কোনো দিনও বিয়ে হবে না।গালে হাত দিয়ে নিজের মনে কথাগুলো বলেই যাচ্ছি।হঠাৎ রাক্ষসের গলা শুনতে পেলাম।কান দিয়ে কোনো কথা ঢুকছে না।কেউ কিছু বলছে আমি শুনার চেষ্টা করছি কিন্তু প্রথম না শুনতে পেলেও এখন পারছি।
.
এই একদম চুপপ! যা ভালো করে সামলাতে পার না তা পরো কেন?নাকি ছেলেদের নিজের শরীর দেখিয়ে তৃপ্তি পাও কোনটা? সেদিন তো খুব বড় বড় কথা বলছিলে তাহলে আজ তোমার শাড়ির এ অবস্থা কেন?
.
এক নাগারে রাক্ষস টা কথাগুলো বলল।রাক্ষসের কথা শুনে আমি নিজের দিকে তাকিয়ে দেখলাম শাড়িটা একটু সরে গেছে। তাই তাড়াতাড়ি ঠিক করে নিলাম।আগে যতটা না থাপ্পরের জন্য ব্যাথা পাচ্ছিলাম এখন আর সেটা ফিল হচ্ছে না।এখন উনার বলা কথাগুলোই বেশি ব্যাথা দিচ্ছে।কি করে পারল কথাগুলো বলতে।
.
শাওনঃদেখুন ভাইয়া আপনি একটু বেশি বাড়াবাড়ি করছেন?মানছি ওর শাড়িটা হয়তো ঠিকঠাক ছিল না কিন্তু আপনার এভাবে সবার সামনে ওর গায়ে হাত তোলা উচিৎ হয়নি।ওর মুখের দিকে তাকিয়ে দেখুন গাল পুরো লাল হয়ে গেছে মনে হচ্ছে এক্ষুণি রক্ত গড়িয়ে পরবে।
.
শাওনের কথায় ওর দিকে তাকালাম ফর্সা হওয়ায় পাঁচ আঙুলের দাগ বসে গেছে।ওর মুখের অবস্থা দেখে আমার ভিতরটা দুমরে মুচরে যাচ্ছে। নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে না পেরে একি করলাম আমি।তবুও শাওনকে ধমক দিয়ে বললাম তুমি চুপ কর কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল আমি দেখে নিব।তোমার মাথা না ঘামালেও চলবে!!
.
তিশা আর অর্ণা মিলে আমাকে সামলাচ্ছে।রাক্ষস রাগে গজ গজ করছে।রাগে চোঁখ মুখ লাল হয়ে গেছে দেখেই বোঝা যাচ্ছে খুব রেগে আছে।কিন্তু এতটা রেগে থাকার কারণ খুঁজে পাচ্ছি না।
.
এনাফ রিহান ভাইয়া আপনি অনেক কিছু বলে ফেলেছেন।আমি আপনাকে রেসপেক্ট করি তার মানে এই না যে আপনি আমাকে যা ইচ্ছা তাই বলতে পারেন।যা হয়েছে তা আমার ইচ্ছাকৃত নয় হ্যাঁ মানছি আমি একটু সচেতন হলে এমনটা হতো না তাই বলে আপনি আমাকে….ছিহ।আপনি আমাকে এতটা সস্তা মনে করেন যে আমি নি….আমার মুখে আনতেও বাধছে। কেন আমার সাথে এমন করেন কি করেছি আমি।আজকে আপনি আমার সাথে যা করলেন তার জন্য আমি আপনাকে কোনো দিনও ক্ষমা করব না কোনদিনও না।কাঁদতে কাঁদতে দৌড়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে গেলাম।
.
রিহানঃরোজ শোন আই’এম সরি।রোজজজ কথাগুলো রোজের কান পর্যন্ত পৌছেছে কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে।মুহূর্তেই বুঝতে পারছি কাজটা ঠিক করিনি।ওকে অনেক বেশি হার্ট করে ফেলেছি একদম উচিৎ হয়নি।কেন রোজ তুমি আমাকে এত রাগিয়ে দাও।কেন শাওনের সাথে কথা বল তুমি কি বুঝ না আমি তোমার সাথে অন্য কাউকে সহ্য করতে পারি না।
.
.
এক ঘন্টা যাবত পার্কে বসে আছি।মন খারাপ থাকলে এখানে আসলে অনেকটা হালকা লাগে।পার্কটা বাড়ির পাশেই।এই অবস্থায় বাড়ি গিয়ে কি বলব বুঝতে পারছি না তাই বাড়িতে না গিয়ে এখানে বসে আছি আর ভাবছি মানুষ রাতারাতি কি করে এভাবে রং বদলাতে পারে।আমি যে এতটা অপমান আর সহ্য করতে পারছি না।কেন আমার সাথেই এসব অনাকাঙিত ঘটনা ঘটে কিছুতেই মিলাতে পারছি না।আমাকে ভালো নাই বাসতে পারেন।কিন্তু আমি তো বাসি আর আমি আমার ভালোবাসার দাবি নিয়ে তো তার কাছে কখনও দাঁড়াইনি এমনকি উনি কেন কাউকেই বুঝতে দেই না আমি উনার প্রতি উইক তাহলে কেন এমন করেন আমার সাথে।এসব ভাবছি আর চোঁখ থেকে নোনা জল ঝরছে তো ঝরছেই থামার কোনো নামই নেই।হঠাৎ বুঝলাম পাশে কেউ বসে আছে কিন্তু তাকে দেখার বিন্দু মাএ ইচ্ছাও আমার নেই তাই ওদিকে না তাকিয়েই বসে আছি।
.
.
তিশাঃরোজ তুই এখানে আর আমরা তোকে সেই কখন থেকে খুঁজছি।বাড়িতে কল দিয়ে জানতে পারলাম বাড়ি ফিরিস নি।হঠাৎ এই জায়গাটার কথা মনে হল আর সত্যি সত্যি পেয়ে গেলাম।প্লিজ দোস্ত আর কাঁদিস না।
.
ওই মাইয়া তুই যাবি এখান থেকে নাকি লাথি দিয়া পাশের পঁচা ডোবায় ফেলে দিমু।নিশ্চয় তুই এখন শান্তি পাইছিস।আজ যদি না আসতাম তাহলে এমন কিছু হত না।যা এখন ওই রাক্ষস টার সাথে গিয়ে নাগিন ডান্স দে হারামি।
.
সরি দোস্ত সত্যি আজ আমার জন্য তোকে সাফার করতে হল।(করুন কন্ঠে)বিশ্বাস কর যদি জানতাম এমন টা হবে তাহলে কখনও তোকে জোর করতাম না।আর কাঁদিস না চোঁখ মুখ লাল হয়ে গেছে এবার থাম।নে পানি খা(পানির বোতল এগিয়ে দিয়ে)।আমি জানিনা রিহান ভাইয়া তোর সাথে এমন বিহেভ কেন করে।তবে এখন কিছুটা আঁচ করতে পারছি।
.
.
আমিও বুঝতে পারছি না(পানি খেতে খেতে) কই আর কারো সাথে তো এমন করে না তাহলে আমার সাথেই কেন?যত কড়াকড়ি আর অপমান(তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে) সেটা তো না করতে পারলে বোধ হয় পেটের ভাতই হজম হয় না।
.
হুম সেটাই তো দু বছর ধরে উনাকে দেখছি কিন্তু এমন বিহেভিয়ার কারো সাথে করতে দেখি নি।আচ্ছা বাদ দে এবার বাড়ি চল আংকেল আন্টি চিন্তা করবেন।
.
.
বাড়িতে এসে মা- বাবা ভাইয়া একে একে সবাইকে অনেক প্রশ্নের উওর দিতে হয়েছে।রাক্ষস টার জন্য সবাইকে মিথ্যাও বলতে হয়েছে।যেই থাপ্পরটা রাক্ষস বসিয়েছে সেটা তিশার নাম করে চালাতে হয়েছে।আর আম্মু এতে তিশার উপর বেশ বিরক্ত।
.
.
অনেক্ষণ ধরে শাওয়ারের নিচে দাড়িয়ে আছি আর ঘটনাগুলো নিয়ে ভাবছি।কেন এমন হচ্ছে আমার সাথে।পৃথিবীতে কি আর কেউ ছিল না বেচে বেচে আমার সাথেই হতে হল।কলেজ থেকে ফিরেই না খেয়ে দরজা লক করে দিয়েছি। সবাই ভাবছে তিশার সাথে ঝগড়া আর মারামারির জন্য মনটা খারাপ তাই আম্মু খাওয়ার জন্য কয়েকবার ডাকলেও পরে আর ডাকেনি।ফ্রেশ হয়ে বিছানায় এসে গা এলিয়ে দিয়েছি বড্ড ক্লান্ত লাগছে।প্রচুর পরিমান কান্নার জন্য চোঁখ মুখ ফুলে গেছে কখন যে ঘুমিয়ে পরেছি নিজেও জানিনা।
.
.
রাএে ভাইয়ার ডাকে ঘুম ভাঙলো ডিনারের জন্য ডাকছে।তাই খেয়ে এসে আবার ঘুমিয়ে পরলাম।মাঝে রাতে মুখে তরল জাতীয় কিছু পরায় ঘুম ভেঙে যায়।ঘুমু ঘুমু চোঁখে তাকিয়ে কাউকে দেখলাম কিন্তু মুখটা অস্পষ্ট।আমি কিছু বুঝে উঠার আগে আবার নিমিষেই মিলিয়ে গেল…..
.
.
#Part :- 16
:
:
চোঁখ ঢলতে ঢলতে এক লাফ দিয়ে উঠে বসলাম।চারদিক তাকিয়ে কিছু দেখতে পেলাম না।তাহলে হয়ত আমার মনে ভুল ভেবে শুতে যাব তখনি গালে হাত দিতেই দেখলাম পানি লেগে আছে।এমন ঘটনায় ভীষন অবাক হলাম।কে হতে পারে হয়ত ভাইয়া বা আম্মু ।যাক গে ভেবে লাভ নেই ঘুমিয়ে পড়ি।কিন্তু ঘুম আর আজ আসবে না।আসবেই বা কি করে গালে প্রচন্ড ব্যাথা আছে এখনও। পৃথিবীর সব কিছু সহ্য করা যায় কিন্তু অকারণে অপমান সহ্য করা যায় না।অজান্তেই চোঁখের কোণে পানি এসে গেছে।ভোরের দিকে চোঁখ লেগে গেল।
.
.
অন্যদিকে রিহানও ঘুমাতে পারছে না। রাগে ওর গায়ে হাত তুললেও এখন রোজের থেকে বেশি কষ্ট পাচ্ছে সে।কি করে ক্ষমা চাইবে এই ভাবনায় বিভোর।বার বার চোঁখের সামনে রোজের সেই অশ্রুসিক্ত চোঁখ দুটো ভাসছে আর রোজের কথাগুলো কানে আসছে। নিজেকে বড্ড অপরাধী মনে হচ্ছে।এরকম না করলেও তো পারতো।এবার রোজ আমার থেকে দূরে চলে যাবে না তো।না না আমি পারব না ওকে ছাড়া থাকতে।এসব ভাবতে ভাবতে একটা নির্ঘুম রাত কেটে গেল রিহানের।
.
.
আজ তিনদিন ধরে কলেজ যাই না।প্রয়োজন ছাড়া রুম থেকে বের হই না।কারো সাথে কথাও বলি না।তিশাও কল দিয়ে কলেজ যাবার কথা বলছিল কিন্তু ওকে সেই রকমের একটা ধমক দিয়ে বলেছি যেদিন আমি কলেজ যাব সেদিন নিজে ওকে কল দেব।আর তিশা বেচারিও আমাদের বাসায়ও আসতে পারছে না লজ্জায় কারন সবাই জানে ও ই সেদিন আমায় থাপ্পড় দিয়েছিল তাই আসতেও পারছে না।
.
.
রাতে না খেয়ে রুমে বসে আছি।ভাইয়া অফিস থেকে ফিরে রুমে নক করছে।দরজা খুলে দেখি ভাইয়া খাবার নিয়ে দাড়িয়ে আছে।
.
ভাইয়া আমি খাব না তুমি চলে যাও।
.
কেন খাবি না? কিছু কি হয়েছে আমার পরীটার?
.
কই কিছু হয় নি তো।এমনি ভালো লাগছে না।
.
সেদিন হাসি মুখে দুজনে কলেজ গেলি।সেখানে গিয়ে তোদের মধ্যে কি এমন হল যে তোরা মারামারিও করলি।কি হয়েছে রে পরী বল আমাকে
.
কিছু হয়নি ভাইয়া। তুমি যাও খেয়ে রেস্ট নাও।সারাদিন কত কাজ করে এসেছ নিশ্চয় খুব টায়ার্ড।
.
হুম ক্ষুদায় আমার পেট জ্বলে যাচ্ছে।চেয়েছিলাম খেয়ে খুব তারাতারি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ব তা আর হলো না।।শোন পেট আজকে আমার পরীর মন খারাপ ও খাবে না তাই তোমারও খাওয়া হবে না। যাও না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ো।
.
ভাইয়া আমি খাব না বলে তুমি খাবে না এটা কি ধরনের কথা।তুমি খেয়ে নাও।
.
তোকে ছাড়া কি আমি কখনও খেয়েছি।আচ্ছা ঠিক আছে কি আর করার তুই তো আমাকে একটুও ভালোবাসিস না। তাই না খাইয়ে মারতে চাস ওকে যাচ্ছি।এরকম হিটলার বোন আমি জিবনেও দেখিনি(দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে)যেতে যেতে।
.
না রাক্ষস টার জন্য ভাইয়াকে কেন কষ্ট দেব।আমি জানি ভাইয়া খিদে সহ্য করতে পারে না।আর আমি কিনা তাকে আমার জন্য না খাইয়ে রাখব।আর ঠিকই তো সারাদিন কত খাটাখাটুনি করে বাড়ি এসেছ এখন খেয়ে একটু রেস্ট নিবে আর আমি কিনা ভাইয়াকে কষ্ট দিচ্ছি। ভাইয়া আমি খাব কিন্তু একটা শর্ত আছে….
.
জিজ্ঞাসা দৃষ্টিতে তাকিয়ে কি?
.
আজকে আমি তোমাকে খাইয়ে দেব।(হেসে)
.
অহহ এই কথা আমি ভাবলাম কি না কি বলবি।ঠিক আছে হা এবার দে ক্ষুদায় পেটে ইঁদুর দৌড়াচ্ছে।ভাই-বোন মিলে একে অপরকে খাইয়ে দিচ্ছি। খাওয়া শেষে সবাই মিলে কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে যে যার রুমে চলে গেলাম।
.
.
পরেরদিন
.
ভাইয়াকে কিছুতেই বিয়ের জন্য রাজি করাতে পারছি না। কি করি ভেবেই পাচ্ছি না হঠাৎ মাথায় একটা দুষ্টু বুদ্ধি এল।যেই ভাবা সেই কাজ। আমি আম্মু আর আব্বু মিলে প্ল্যান করলাম।এবার শুধু সাকসেসফুল হওয়ার অপেক্ষায়।
.
খাবার টেবিলে বসে আছি আর এমন ভাব দেখাচ্ছি যেন ক্ষিদায় মরে যাচ্ছি।ভাইয়া আব্বুও এসে হাজির কিন্তু খাবার আসার নাম গন্ধও নেই।ভাইয়া মা কে খাবার আনতে বললে মা সবাইকে খাবারের প্লেট, জগ,গ্লাস সব এনে দিল।কিন্তু খাবার দিল না।ভাইয়া অবাক হয়ে মা কে জিজ্ঞেস করল খাবার কোথায়?খাবার ছাড়া প্লেট দিয়ে কি করব?প্লেট খাব নাকি
.
মা তো কথাটা শুনেই রণচন্ডীর রূপ ধারণ করলেন।খাবার আজ রান্না হয়নি তাই প্লেট খেয়েই পেট ভরো তোমরা।আমাকে কি তোমাদের কাজের মেয়ে মনে হয়।সারাদিন কত কাজ করতে হয় তার উপর রান্না বান্না আমিও তো মানুষ নাকি আমার বাপের বাড়ি থাকতে এক গ্লাস পানি ঢেলেও খাইনি আর এখন এই বয়সেও হিসেল ঢেলতে হয়।কি কপাল আমার ছেলেটা একটুও মায়ের কথা ভাবে না।(কেঁদে কেটে বন্যা ভাসিয়ে)।
.
আমি গিয়ে মাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছি।আর ভাইয়া মায়ের এ অবস্থা দেখে বাকহীন শ্রোতার মত বসে আছে।ব্যাপারটায় আমার বেশ মজা লাগছে।ও আম্মু আর কেঁদো না কি করবে বল তোমার ছেলে যদি তোমার কষ্ট না বুঝে তাহলে কি আর করার।বাদ দাও আমি তো আছি তোমার সব কাজ আমি করব।আমি তো তোমার ছেলের মত হৃদয়হীন পাষান নই।সত্যি তুমি আর কত করবে।বাবাও যোগ দিলেন (দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে) কেঁদো না রাহাতের মা সবই আমাদের কপাল।
.
ভাইয়াঃ হচ্ছে টা কি।আমার সাথে নাটক কর না আমি তোমাদের নাটকে ভুলছি না।রোজ এর মাস্টার মাইন্ড নিশ্চয় তুই।
.
নাটকের কি আছে মা যা বলছে সবই তো ঠিক।তুমি একদম পাষান হয়ে গেছো।বুঝি না ভেবেছ তোমার বউয়ের কষ্ট হবে বলে বাড়িতে আনতে দিচ্ছ না।
.
তবে রে আমার দিকে তেড়ে এসে আমি দৌড়ে রুমে চলে গেলাম।ধুর প্ল্যানটা এভাবে মাঠে মারা গেল!
.
ছাদে বসে আকাশের চাঁদ দেখছি।সবাই খাওয়ার জন্য ডাকছে খাব না বলে ছাদে বসে আছি। আজ সবকিছুই বিষাদময় লাগছে।চাঁদটাকেও সহ্য হচ্ছে না কিন্তু অন্য সময় এই চাঁদকে দেখে ঘন্টার পর ঘন্টা কাটিয়ে দিতে পারতাম।
.
কি রে রোজ কি হয়েছে তোর?সারাদিন এত চুপচাপ থাকিস কেন আর খাবি না কেন?
.
.
ভাইয়ার কথায় ধ্যান ভাংলো।কিছু হয়নি এমনি ভালো লাগছে না আর খেতেও ইচ্ছা করছে না।
.
তোর কি হয়েছে বল না।কলেজে সব ঠিক আছে নাকি কোনো প্রবলেম হয়েছে।তোর মুখের হাসিটা বিলীন হয়ে যাচ্ছে। চুপচাপ একদম ভালো লাগে না।
.
না ভাইয়া সব ঠিক আছে এমনি কলেজ যাই না তেমন ইম্পরট্যান্ট ক্লাস নেই।ভাইয়া আমার একটা কথা রাখবে।
.
তোর কোন কথাটা আমি রাখি না। এমন কখনও হয়েছে তুই আমার কাছে কিছু আবদার করেছিস আর সেটা পাস নি।
.
তাহলে আগে প্রমিস কর।তারপর বলব!
.
ভ্রু কুঁচকে হঠাৎ প্রমিস করাচ্ছিস? তোর মতলব কি বল তো।কি এমন চাইবি
.
এত প্রশ্ন করো না! তুমি প্রমিস করবে কি না.
.
ওকে প্রমিস।এবার বল কি চাস।
.
তুমি কিন্তু প্রমিস ভাংতে পারবে না।ভাইয়া দাওনা আমাকে একটা ভাবি এনে।যদি তুমি আমাকে আগের মত হাসি খুশি দেখতে চাও তাহলে আমাকে ভাবি এনে দিতেই হবে।আর না হলে যাও আমার কিচ্ছু লাগবে না।আমি এমনই ভালো আছি।(মুখ গোমরা করে)
.
তাহলে সত্যি তুই আগের মত হয়ে যাবি তো।।ঠিক আছে তুই যা চাস তাই হবে আর কোনো প্রবলেম নাই(দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে)।কিন্তু প্লিজ পরী তুই এভাবে চুপচাপ থাকিস না।আমার বড্ড কষ্ট হয়।
.
ইয়াহু সত্যি তুমি রাজি।আমার তো বিশ্বাসই হচ্ছে না।ভাইয়া একটা চিমটি কাটবে।আমার এমন লাফালাফি দেখে ভাইয়া খিল খিল করে হাসছে।আমিও খুশিতে নাচতে শুরু করে দিয়েছি।যাই খবরটা বাবাকে দিতে হবে…..
.
.
কনে পক্ষের বাড়ির ড্রয়িংরুমে বসে আছি।বাড়িটা বিশাল বড় চারিদিক সাজানো গুজানো।হবেই বা না কেন বিখ্যাত ইন্ডাস্ট্রিয়াল আরাফাত চৌধুরীর বাড়ি এটা।কিছুক্ষণের মধ্যে কনেকে আমাদের সামনে আনা হবে। অনেক খোঁজে একটা নম্র ভদ্র মেয়ের খোঁজ পাওয়া গেছে।ভাইয়া আসতে চায়নি একরকম জোর করেই নিয়ে এসেছি।এরইমধ্যে কনে উপস্থিত।কনেকে দেখে আমার চোঁখ বেরিয়ে আসার উপক্রম……
.
.
চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here