জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিনে অপ্রত্যাশিত এক ঘটনা ঘটে গেলো আমার জীবনে। কখনো ভাবিনি এই বাড়িতে ছোট হতে মেয়ের মতো বড় হয়ে আজ এ বাড়ির বউ হয়ে যাবো। কখনো দুঃস্বপ্নেও হয়তো ভাবিনি আজ প্রোজ্জ্বল ভাইয়ের বউ হয়ে উনারই রুমে স্থান হবে আমার। এই যে সকালেও তো সব ঠিকঠাক ছিলো। কি সুন্দর বউ সেজে বসে ছিলাম আমি। কিন্তু বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো অকস্মাৎ অভ্র ভাইয়ের সেই ম্যাসেজটা আমার শ্বাস প্রশ্বাস, হৃৎস্পন্দন সব থমকে দিলো। মুহূর্তেই আমার চিন্তাশক্তি শূন্য হয়ে গেলো। কিছুতেই বিশ্বাস হতে চাইলো না অভ্র ভাই আমাকে এমন ম্যাসেজ দিয়েছেন। আমি বারবার ম্যাসেজটা পড়লাম। কিন্তু যতই পড়ি না কেনো, উনার এমনভাবে আ’ঘা”ত দেওয়া কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারলাম না। আমি অভ্র ভাইকে ফোন দিলাম। আশ্চর্যজনক ব্যাপার, উনার ফোন বন্ধ পেলাম। আমার ভেতরে তখন হুট করেই অস্থিরতা বাড়তে শুরু হলো। গলা শুকিয়ে এলো। তবুও মনে সাহস নিয়ে দশবার চেষ্টা করলাম উনাকে কল করার। কিন্তু ফলাফল শূন্য।
এদিকে আমার এ অবস্থা দেখে প্রোজ্জ্বল ভাই এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করেছিলেন,
” কি হলো চন্দ্রিমা? তোর চেহারা এমন দেখাচ্ছে কেনো? ফোনে কি দেখলি? আর কাকেই বা এতোবার কল করছিলি?”
আমি প্রোজ্জ্বল ভাইয়ের কোনো প্রশ্নের জবাব দিলাম না। ফ্যালফ্যাল চাহনিতে উনার দিকে চেয়ে রইলাম কিছুক্ষণ। অতঃপর উনার কাছে ফোন দিতেই উনি অভ্র ভাইয়ের দেওয়া ম্যাসেজটা পড়লেন। আমার মতো উনিও আশ্চর্যান্বিত হলেন। নিষ্পলক চাহনিতে আমার দিকে চেয়ে রইলেন কিছুক্ষণ। স্বাভাবিকভাবেই উনিও এমনটা বিশ্বাস করতে পারছেন না। এজন্য তখনই অভ্র ভাইয়ের ফোনে কল দিলেন। কিন্তু প্রোজ্জ্বল ভাইও অভ্র ভাইয়ের ফোন বন্ধ পেলেন। উনি সাথে সাথে ছুটে গেলেন অভ্র ভাইদের বাড়ি। সেখানে কি হলো জানা নেই। তবে আধ ঘণ্টা পর থেকে যখন বিয়ে বাড়ির লোকমুখে গুঞ্জন শুনলাম তখন এটুকু জানতে পারলাম অভ্র ভাই বাড়িতেও নেই এবং অনেকেই বলছে বিয়ে রেখে উনি পালিয়ে গিয়েছেন। স্বভাবতই ভিড়ভাট্টাপূর্ণ বিয়ে বাড়ি মুহূর্তেই আলোচনা আসরে পরিণত হলো। লোকমুখে শুনলাম আমার ও অভ্র ভাইয়ের ব”দ’নাম। একদল লোক আমাকে দো’ষী বলছে তো আরেকদল লোক অভ্র ভাইকে দো’ষী বলছে। আবার কেউ কেউ আমাদের দুজনকে নানানভাবে দো’ষী সাব্যস্ত করছে।
কিছু না করেও দো’ষী হওয়ায় নিজেকে সবচেয়ে অসহায় মনে হলো। আর সবচেয়ে বেশি অসহায় মনে হলো অভ্র ভাইয়ের এভাবে মাঝপথে ছেড়ে যাওয়াটা। আমি কখনো কল্পনাও করিনি উনি এভাবে বিয়ের স্বপ্ন দেখিয়ে গন্তব্যে নিয়ে যাওয়ার বদলে রাস্তায় একা ফেলে যাবেন। এজন্যই কি উনি আমাকে ভালোবাসার কথা স্বীকার করেছিলেন? কিসের শ’ত্রু”তা ছিলো আমার সাথে? এই ছিলো উনার ভালোবাসা? নাকি এতোদিন আমার সাথে ভালোবাসার নাটক করলেন? উনি যে বলেছিলেন চার বছর যাবত আমাকে উনি ভালোবাসেন সেসব কি তবে মিথ্যে ছিলো? ছিলো বোধহয়। উনাকে বিশ্বাস করাটাই যে আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল সিদ্ধান্ত ছিলো তা উপলব্ধি করতে পারলাম। এক মাসে আমাকে ধীরেধীরে নিজের প্রতি দূর্বল করে মাঝেপথে ফেলে ধোঁ’কা দেওয়াটাই বোধহয় উনার উদ্দেশ্য ছিলো। কিন্তু এই উদ্দেশ্যের পিছনের কারণ কি তা জানা নেই।
আমি তখন দরজা বন্ধ করে কাঁদলাম। কিন্তু কিছুক্ষণ কাঁদার পরেই আমার চোখের পানি শুকিয়ে গেলো। আমি স্তব্ধ দৃষ্টিতে আমার হাতের মেহেদির দিকে চেয়ে রইলাম। কি সুন্দর গাঢ় রঙ হয়েছে মেহেদিতে! মেহেদির ডিজাইনের মাঝে কি দারুণভাবে অভ্র ভাইয়ের নামটা ফুটে উঠেছে। আফসোস, এ নামটা আমার হাতেই রয়ে গেলো শুধু। এ নামটা আমার জীবনের সাথে আর জুড়ে গেলো না। আমায় অসহায় করে দিয়ে গেলো। আমি তখন হাত থেকে অভ্র ভাইয়ের নাম মুছে ফেলার অনেক চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু চেষ্টাটা সফল হয়নি। কারণ এ মেহেদির দাগ যে উঠবার নয়। ঠিক তখনই রা’গে দুঃখে মন বলছিলো ‘অভ্র’ লেখা অংশটুকুই হাত থেকে কে’টে ফেলি। প্রচণ্ড সাহস নিয়ে সে কাজ করতে আমি উঠে দাঁড়াইও। কিন্তু তখনই আমার দরজায় ক’ড়া’ঘা’ত পরে। প্রথমে আমি খুলবো না বলে মনস্থির করলেও ধীরেধীরে সে কড়াঘাতের শব্দ বাড়তে থাকে। ওপাশ হতে প্রথমে প্রত্যাশা আপু ও পরে নানুর কণ্ঠ শুনতে পাই৷
তীব্র অনিচ্ছা সত্ত্বেও দরজা খুলি তখন। আর সে দরজা খোলাটাই তখন আমার জীবনের কাল হয়ে যায়। কারণ তারা দুজনে প্রোজ্জ্বল ভাইয়ের সাথে আমার বিয়ের ব্যাপারে আমার মত নিতে এসেছিলো। হঠাৎ এমন দুঃখের অথৈ সাগরে ডুবে এমন একটা সংবাদ মোটেও আশানুরূপ ছিলো না আমার জন্য। আমি হ্যাঁ বা না কিছুই বলি না তখন। কিন্তু পরে প্রত্যাশা আপু, নানু ও মামা মিলে আমাকে এমনভাবে নিজেদের কথার জালে ফাঁ’সি’য়ে ফেললেন যে আমার তখন হ্যাঁ বলা ছাড়া আর উপায় রইলো না। একমাত্র মামার সম্মানের কথা চিন্তা করে আমাকে রাজি হতে হয়েছিলো।
তার কিছুক্ষণ পরেই সম্পূর্ণ অমতে ও ভগ্নহৃদয় নিয়ে বিয়েতে কবুল বললাম আমি। ওদিকে প্রোজ্জ্বল ভাইও কবুল বললেন। কি অদ্ভুত না? একজনের সাথে বিয়ে হতে গিয়েও বিয়ে হলো অন্যজনের সাথে। এই দিনটা দেখার জন্য আমি এ বিয়েতে রাজি হয়েছিলাম? মনে হলো, আমায় নিয়ে যেনো পুতুল খেলা হচ্ছে। যেখানে আমার মতামতের উপর্যুক্ত কোনো দাম নেই। সবসময় কেনো আমাকে অপরের কথা চিন্তা করতে হবে? কেনো আমি নিজেকে নিয়ে ভাবতে পারবো না? এ বুঝি এতিম হওয়ার ফল?
আমি তখন থেকে কান্না করতে ভুলে গেলাম। সাথে কিছু মানুষের রঙ বদলে যেতেও দেখলাম। অনামিকা ও খোদেজা মামি আমার সাথে একটুও কথা বললেন না। আমার কবুল বলার সময় তারা আমার রুমেই ছিলেন। হয়তো দেখছিলেন, তার ছেলের বউ কিভাবে অন্যের ঘরের বউ হয়ে যায়। আর সবচেয়ে আশ্চর্যজনক ব্যবহার উপহার দিলেন মামি। যাকে আমি মা হিসেবে এতোদিন গন্য করতাম সেই মানুষটা একবারও আমার পাশে এসে বসলেন না। আমায় আদর করলেন না। বরং একরাশ ঘৃ’ণাযুক্ত চাহনিতে আমার দিকে চেয়ে রইলেন। তখন উনার এমন চাহনির কারণ খুঁজে না পেলেও পরে ঠিকই আমি এই আন্দাজ করলাম যে, উনি আমাকে নিজের ছেলের বউ হিসেবে মানতে পারেননি। কারণ উনি একমাত্র শারমিন আপুকেই প্রোজ্জ্বল ভাইয়ের স্ত্রী হিসেবে মেনেছেন। এর মাঝে হঠাৎ আমি এক কালবৈশাখী ঝড়ের ন্যায় এসে সব লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে গেলাম। অনুমান করলাম, মামি আমাকে এ ঘটনায় মস্ত বড় এক অ’প”রা ‘ধী হিসেবে গন্য করে নিয়েছেন। এমতাবস্থায় উনার ক্ষমা কি আদৌ আমার ভাগ্যে জুটবে? নাকি বাকি জীবনের জন্য এমন ঘৃ’ণা জুটবে?
বিয়ের শাড়ি, গহনা খুলে হাতমুখ ভালোভাবে ধুয়ে মেকআপ উঠালাম। অতঃপর একটা থ্রিপিস পরে বেরিয়ে আসলাম ওয়াশরুম থেকে। এখন বোধহয় রাত দশটা বাজে। বাইরে তুমুল বর্ষণ হচ্ছে। মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। আমি তোয়ালে রেখে বারান্দায় চলে গেলাম। চারপাশ পুরোপুরি অন্ধকার। হঠাৎ বিদ্যুৎ চমকানোয় মাঝে মাঝে আলোকিত হয়ে উঠছে চারপাশ।
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে শ্রাবণের বর্ষণ দেখছি। কি তুমুল বর্ষণ সে! এ বছর প্রথম বোধহয় এতোটা ঝড়ো ঝড়ো বৃষ্টি দেখছি। ইচ্ছা ছিলো এমন বৃষ্টিতে মন খুলে ভিজবো আমি। এরপর যখন অভ্র ভাইয়ের সাথে বিয়ে ঠিক হয় তখন একদিন খুব বৃষ্টি হয়েছিলো। মনে মনে ঠিক করেছিলাম বিয়ের পর অভ্র ভাইকে নিয়ে ভিজবো একদিন। শ্রাবণের এ তুমুল বারিধারায় ভিজবো আমি। আহা কি দারুণ কল্পনা! কিন্তু এ দারুণ সুখকর কল্পনা ভেঙে যেতে সময় লাগলো না। সুখকর শ্রাবণধারা আজ জীবনে বিরহ ব্যতিত কিছুই আনলো না।
হঠাৎ দরজা খুলার শব্দে পিছনে ফিরে চাইলাম। প্রোজ্জ্বল ভাই রুমে ঢুকছেন। উনাকে দেখেই আমার বুকটা ধক্ করে উঠলো। কারণ আজ আমার সামনে যে প্রোজ্জ্বল ভাই দাঁড়িয়ে আছেন সে আমার মামাতো ভাই নয় বরং স্বামী। অভ্র ভাইয়ের বদলে প্রোজ্জ্বল ভাইকে এভাবে স্বামী হিসেবে কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না আমি। আচ্ছা প্রোজ্জ্বল ভাই আমাকে বিয়ে করলেন কেনো? উনি তো মামা আর নানুকে বলে এ বিয়ে ভাঙতে পারতেন। তাহলে উনি এমন করলেন না কেনো? নাকি ইচ্ছা করেই আমার উপর কোনো ধরণের প্র’তি’শো’ধ নিতে এমন করেছেন উনি?
আমি বারান্দা হতে রুমে গিয়ে সরাসরি প্রোজ্জ্বল ভাইয়ের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। উনি ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে হাত ঘড়ি খুলছিলেন। আমার দিকে তাকাতেই আমি তীব্র আ’ক্রো’শে বললাম,
” আপনি এ বিয়ে কেনো আটকালেন না প্রোজ্জ্বল ভাই? আপনি তো চাইলেই না বলতে পারতেন তাই না? তাহলে এমন করলেন কেনো আমার সাথে?”
প্রোজ্জ্বল ভাই ঘড়ি ড্রেসিং টেবিলে রেখে দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। অতঃপর আমার দিকে চেয়ে ঠাণ্ডা স্বরে বললেন,
” চন্দ্রিমা, এখন আমার বিন্দুমাত্র কথা বলার ইচ্ছা নেই। তুই ঘুমিয়ে পড়। আর আমাকেও ঘুমাতে দে। প্রচণ্ড মাথা ব্যাথা করছে। ”
এই বলে উনি চলে যেতে চাইলেন। কিন্তু আমি উনার বাহু ধরে উনাকে আমার মুখোমুখি দাঁড় করালাম। বললাম,
” এতো কিছুর পরেও আপনার চোখে ঘুম আসে কি করে? আগে আপনি আমার সব প্রশ্নের জবাব দিবেন এরপর ঘুমাতে যাবেন। এর আগে না।”
” এখন তোর হুকুম মেনে চলবো আমি? যেসব প্রশ্নের জবাব দেওয়ার প্রয়োজন এখন নেই সেসব জবাব আমি দিবো না। আমার মাথা গরম করিস না চন্দ্রিমা। মন মেজাজ কিছুই ঠিক নেই। ”
” কেনো ঠিক নেই শুনি? কারণটা বলুন আমায়। আমিও জানতে চাই।
দুই বন্ধু মিলে এভাবে আমার জীবনটা নষ্ট করলেন কেনো? কই আপনারা তো কখনোও এমন ছিলেন না। সবসময় আমায় আগলে রাখতেন, আমার খেয়াল রাখতেন। তাহলে আজ কি হলো? আজ এমন কেনো করলেন আমার সাথে? দুই বন্ধু মিলে কোনো কিছুর প্র’তি’শো’ধ নিতে চাচ্ছেন আমার উপর? এক বন্ধু এসে আ’ঘা’ত করবে আরেক বন্ধু ভালো সেজে সে আ’ঘা’তে মলম লাগাবে। কি দারুণ গেম! ”
এবার প্রোজ্জ্বল ভাই এক ঝটকায় আমার হাত সরিয়ে নিলেন নিজের বাহু হতে। প্রচণ্ড রাগে ক্ষুব্ধ হয়ে বললেন,
” অভ্র যা করেছে তাতে আমায় টেনে আনছিস কোন যুক্তিতে? ও এসব কি কারণে করেছে তা আমি জানি? আমাকে কালপ্রিট বানাচ্ছিস কেনো? লাইফটা কি তোর একার নষ্ট হয়েছে? আমার হয়নি? আর এতোই যখন অভ্রকে ভালোবাসতি তাহলে আমাকে বিয়ে করলি কেনো?”
” আমি মামার আর নানুর কথায় রাজি হয়েছি। তাদের মত আর সম্মান আমার কাছে অনেক কিছু।”
” তোর কাছে যেমন তোর মামার সম্মান বড় তেমনি আমার কাছে আমার বাবার সম্মান বড়। আমার কোনো ইচ্ছা ছিলো না তোকে বিয়ে করার। চাইলে দাদি আর আপুর কাছে শুনতে পারিস। আমি তোকে কখনোই বিয়ে করতে চাইনি। এমন পরিস্থিতির স্বীকার না হলে অন্যের বউকে নিজের বউ করার বিন্দুমাত্র রুচিবোধ ছিলো না আমার। ”
” তাহলে কি দো’ষটা আমার উপর দিতে চাইছেন আপনি? এমন হলে আপনি এক্ষুণি আমাকে ডি’ভো’র্স দিন। আমাকে এ সম্পর্ক থেকে মুক্ত করে দিন প্রোজ্জ্বল ভাই। আমার পক্ষে আপনার সাথে সংসার করা সম্ভব নয়। আমি চলে যেতে চাই এ বাড়ি থেকে। সবচেয়ে ভালো হয় আমার ম’রে যাওয়া। আমি ম’রে যেতে চাই। চলে যেতে যাই আমার বাবা মা আর ভাইয়ার কাছে। এ নিষ্ঠুর দুনিয়ায় এতিম হয়ে আর থাকতে চাই না। আমি এতিম বলে, আমার পাশে দাঁড়ানোর মতো কেউ নেই বলেই এমন করছেন আমার সাথে তাই না? আজ সবার হাতের পুতুল আমি। সবাই নিজের সুবিধামতো ব্যবহার করছে আমাকে। এতিম হয়ে যে এ দুনিয়ায় টিকে থাকা মুশকিল আজ তা টের পেলাম। ”
#বিরহ_শ্রাবণ(দ্বিতীয় খণ্ড)
#পর্ব_২২
#লেখিকা_সারা_মেহেক
#