বিষাক্ত প্রেমের অনুভূতি পর্ব ১| সাইকো রোমান্টিক গল্প

বিষাক্ত প্রেমের অনুভূতি

উর্মি প্রেমা (সাজিয়ানা মুনীর)

সূচনা পর্ব

কাঁচা হলুদ লেহেঙ্গাটা লাল টকটকে রক্তে ভিজে ।মাথায় বেলি ফুল গুলো কালচে হয়ে নেতিয়ে পরেছে।হলুদের উৎসব মুখর পরিবেশটা মুহূর্তেই মৃত্যুশোক সভায় পরিণত হয়ে গেল।চারদিক থেকে হু হু কান্না ভেসে আসছে।সেহের পাথর চোখে হবু স্বামী আদনানের গলা কাটা লাশটাকে দেখছে।শরীর অনুভূতি শূন্য হয়ে গেছে। কেউ যেন তার শরীরের সব শক্তি চুষে নিয়েছে।অতি শোকে পাথর হয়ে গেছে সে। এইতো রাতটা পোহালেই আদনানের সাথে নতুন জীবন শুরু করার কথা ছিলো।কিন্তু এক রাতের মাঝে কি থেকে কি হয়ে গেল । তারপর সব এলোমেলো।আদনানকে ভালো না বাসলেও বিষণ সম্মান করতো ।মায়ার বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলো।পারিবারিক ভাবে বিয়েটা হচ্ছিলো ,কথা ছিলো বিয়ের পর তার ছোট এক সংসার হবে,বুক ফুলিয়ে বলতে পারবে এটা আমার পরিবার। একান্তই আমার। কিন্তু সবকিছু নিমিষেই শেষ হয়ে গেল ।কিছুক্ষণ পূর্বে পাশের এক জঙ্গল থেকে পুলিশ আদনানের গলা কাটা লাশটা উদ্ধার করেছে।পুরো শরীর ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে আছে।শরীর জুড়ে বিভিন্ন ক্ষতের চিহ্ন ।দেখে বুঝা যাচ্ছে খুনি খুব হিংস্রতার সাথে খুন করেছে।কে বা কারা করেছে পুলিশের এই নিয়ে কোন তথ্য মিলেনি।তাদের তদন্ত চলছে।লাশটাকে পোস্টমর্টেমের জন্য নেওয়া হলো।
সেহের নিজের শক্তিহীন শরীর নিয়ে টলতে টলতে কোনরকম নিজের রুমে পর্যন্ত পৌছালো।দরজা বন্ধ করে ধপ করে নিচে বসে পরলো।স্থির চোখ দুটো থেকে টপটপ পানি পরছে।পুলিশ কোন প্রমাণ না পেলেও সেহের জানে এই খুন কে করেছে।বাদামী চোখওয়ালা সেই রাক্ষসটাই আদনানকে খুন করেছে।হুট করে সেহেরের ফোনের মেসেজ টোন বেজে উঠে।সেহের কাঁপাকাঁপা হাতে ফোনটা হাতে নেয়। মেসেজ ওপেন করে,

” তোমাকে পাওয়ার স্বপ্ন দেখেছে,মৃত্যু তো তার হওয়ারই ছিলো। কি ভেবেছিলে, লুকিয়ে বিয়ে করে নিবে! আর আমি টের পাবো না?আমার অজান্তেই আমার থেকে মুক্তি পেয়ে যাবে। সবকিছু এতোটা সহজ?
চব্বিশ ঘন্টা তোমার উপর আমার চোখ রয়েছে। তোমার প্রত্যেক একটিভিটির উপর আমার নজর।তোমার কাছে যে আসবে তাকে এভাবেই শেষ হতে হবে।তুমি আমার ,শুধুই আমার ”

এতোটুকু পড়ে সেহের ভয়ে চিৎকার করে উঠে। ফোন ফ্লোরে ছুঁড়ে মারে।ফোনটা সাথে সাথে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে ফ্লোরে ছড়িয়ে পরে।

“কে আপনি? কেন? কেন আমার সাথে এমন করছেন? আমি মুক্তি চাই ,আমাকে মুক্তি দিন!” সেহের নিজের ঘরের জিনিসপত্র ভাঙ্গ- চূর করছে চিৎকার করে কান্না ভরা বিলাপ করছে।পাগল পাগল মনে হচ্ছে।নিজেকে আগুনে পোড়াতে পারলে ভালো হতো।অন্তত এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেত। আজ তার জন্য একজন নিষ্পাপ প্রাণ হারিয়েছে।ঘরের সবকিছু ভেঙে চূড়ে, একসময় ক্লান্ত হয়ে মাটিতে বসে পরে।হাত পা কেটে রক্ত বের হচ্ছে। সে দিকে সেহেরের খেয়াল নেই। বুক ফাটিয়ে কান্না করছে। এমন সময়ই পুরো বাড়ী অন্ধকারে ডেকে যায়।লোডশেডিং হয়েছে।হঠাৎ অন্ধকার রুমে কারো থমথমে পায়ের শব্দ শুনা যায়।সেহের থেমে যায় ভীতু চোখে আশেপাশে তাকায়।কিছু দেখা যাচ্ছেনা ,চারদিক ঘুটঘুটে অন্ধকার । শব্দটা আস্তে আস্তে তার দিকে এগিয়ে আসছে। সেহের ভয়ে দেয়ালের সাথে মিশে যায়। হাঁটুতে মুখ গুজে গুটিসুটি মেরে বসে আছে ।শরীর থরথর কাঁপছে । এমন সময়ই পাশ থেকে কেউ তার কাঁধে হাত রাখে । সেহের আচমকা ভয়ে কেঁপে উঠে।কানের কাছে কারো শীতল আওয়াজ ভেসে উঠে”সেহেরররর”
সেহের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে মাথা ঘুরিয়ে পাশে ফিরে তাকায়। তারপর …..তারপর

বিকট চিৎকার করে সেহের জেগে উঠে।ভীতিকর চোখ দুটো জলে ছলছল করছে। বড় বড় শ্বাস নিচ্ছে আর ফেলছে।ব্যাগ থেকে পানির বোতলটা বের করে পুরোটা পানি ঢকঢক করে গিলে নেয়।আবারো সেই ভয়ানক স্বপ্ন,সেই কালো রাত । হঠাৎ কিভাবে যে চোখজোড়া লেগে এসেছিলো ,বুঝতে পারেনি । বেশ সময় নিয়ে সেহের নিজেকে শান্ত করে। আশেপাশে তাকাতেই দেখে।ট্রেনের মানুষজন তার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে ,কেউ বা ঘুম ঘুম চোখে বিরক্তির দৃষ্টিতে। হয়তো পাগল ভাবছে! সেহেরর বিষণ লজ্জা লাগলো, জোর পূর্বক মুখে হাসির রেখা টেনে মোটা ফ্রেমের চশমাটা ঠিক ভাবে চোখে লাগিয়ে নেয়।জানালার দিকে চোখ ফিরায়।আষাঢ় মাসের দ্বিতীয় দিন। গত রাতে ঘন বর্ষণ হয়েছে। জানালা এখনো বৃষ্টির পানিতে ভিজে। হয়তো খানিক পূর্বেই বৃষ্টি থেমেছে।আকাশ একদম সচ্ছ কাঁচের মত পরিষ্কার। বাহিরের শীতল বিশুদ্ধ হাওয়া ছুঁয়ে যাচ্ছে। ফযরের আযান শেষ হয়েছে অনেক সময়। মাত্র ভোরের আলো ফুটছে।সেহের ঘড়িটা দেখে নিলো। ছয়টা বাজতে এখনো পনের মিনিট বাকি।বুক ফুলিয়ে হতাশা ভরা শ্বাস ফেলল।ঢাকা পৌছাতে এখনো দেড় ঘন্টার পথ।গত রাতে চিটাগাং থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে।বসে থাকতে থাকতে তার কোমরের হাঁড় বেঁকে এসেছে।
সেহের জানালায় মাথা ঠেকিয়ে বৃষ্টিস্নাত শীতল হাওয়ার আবেশে চোখ বুঝে নিলো।অজানা এক ভয়ের তাড়নায় আজ নিজের জন্মস্থান ছেড়ে তাকে ঢাকায় পারি জমাতে হচ্ছে।এক সময়কার ভালোবাসার শহর চিটাগাং আজ তার জন্য বিষাদময় স্মৃতি।এই শহর তার প্রিয়জনদের কেড়ে নিয়েছে।যেই শহরের গলি গুলো প্রিয়জনের কষ্টে ভরা আর্তনাদ গুন গুন করছে,সেই শহরে কি করে বাস করবে?
পণ করেছে এই পথের পানে দ্বিতীয়বার ফিরে চাইবেনা।
সৌন্দর্য ,ভালোবাসা মানুষের জন্য আশীর্বাদ হলেও সেহেরের জন্য তা অভিশাপ । অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো না।হোক তা ঘৃণা বা ভালোবাসা !
সেহেরের সৌন্দর্যে কারণে প্রেমিকের অভাব না হলেও ,পরিবারীক ভালোবাসার কমতি ছিলো সর্বদাই। ছোট থেকে কখনো মাম্মা’স ডল পাপা’স প্রিন্সেস হয়ে উঠা হয়নি।বাবা মায়ের পূর্ন ভালোবাসা তার নসিবে মিলেনি।জন্মের পর বাবা অনেক আশা নিয়ে তার নাম দিয়েছিলো ‘সেহের’ যার অর্থ ‘সুন্দর সকাল’।প্রত্যাশা রেখেছিলো মেয়ে তাদের বৈবাহিক জীবনের কোলাহল অশান্তি নিধন করবে। মেঘ কালো অন্ধকার কাটিয়ে নতুন ভোরের আলো ছড়াবে । কিন্তু ঘটলো ব্যতিক্রর।সেহেরের জন্মের পর তাদের মধ্যেকার ঝঁঝাট আরো বাড়লো। রেষারেষি দিন দিন চরমে পৌছালো। ঝগড়াফ্যাসাদ দৈনন্দিন জীবনে রুটিনবাঁধা যোগ হলো।সেহেরের বয়স যখন দুবছর তার বাবা মা ডিভোর্স নিয়ে সেপারেট হয়ে যায়।সেহেরের মা দিশা তার প্রথম ভালোবাসার কাছে ফিরে যায়।নতুন এক সংসার সাজায়। বাবা সেহেরকে নিজের কাছেই রেখে দেন।প্রতিজ্ঞা করলেন মেয়েকে লালনপালন করে জীবন পাড়ি দিবেন ।কিন্তু সেই প্রতিজ্ঞা বেশিদূর টিকলো না।বছর ঘুরতেই প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ হলো।বাবা বিয়ে করে নতুন বউ বাড়ী আনলেন।তিনবছরে নাবালিকা সেহের শিশু হলেও মা আর সতমায়ের তফাত বুঝতে তার বেশিদিন সময় লাগলো না।বাবার অগাধ আদর পেলেও মায়ের কমতি সর্ব্দাই তাকে খাঁই খাঁই করে পোড়াতো।দিন বাড়তে লাগে সেই সাথে সেহেরকে নিয়ে তার বাবা আর সতমায়ের মাঝেকার অশান্তি বাড়তে থাকে। সেহেরের দাদী এসবে অতিষ্ঠ হয়ে একসময়ে নাবালিকা সেহেরকে নিয়ে আলাদা বাড়ীতে উঠেন।একা হাতে সেহেরকে বড় করেন।বাবার অগাধ টাকা থাকায় খাওয়া পড়া নিয়ে সমস্যায় পরতে হয়নি।চাওয়ার আগেই বাবা সব হাজির করেছেন।সময় তার নিজ গতিতে চলছিলো সে তখন ক্লাস টেনে। এমন সময় তার জীবনে এক অঘটন ঘটে।অজানা এক কালো ছায়ার আগমন ঘটে।সেই বাদামী চোখওয়ালা মানুষটার নজর সেহেরের সজ্জিত জীবনটাকে তছনছ করে দেয়।অজ্ঞাত সেই ব্যক্তি থেকে বাঁচতেই বাবার ইচ্ছাতে তাকে ছেড়ে ঢাকায় মায়ের সংসারে পাড়ি জমাচ্ছে।এই প্রত্যাশায় তাদের মাঝে থাকাকালীন অজ্ঞাত সেই ব্যক্তি কোন ক্ষতি করতে পারবে না। ছোট নিশ্বাস নিয়ে অন্তত ভীতিহীন দিন পাড় করা যাবে।
শুনেছে মায়ের শ্বশুরবাড়ীর লোকজন বেশ ক্ষমতাবান।ঢাকায় তাদের বেশ চলে। মায়ের শ্বশুর মশাই মন্ত্রী কি না!
ট্রেনের ভেঁপু বেজেছে । সেহের চশমার আড়ালে ঘুমে ভারী ভারী হওয়া চোখ খুলে জানালার পানে তাকায়।সামনে বড় বড় অক্ষরে লিখা ‘কমলাপুর রেলস্টেশন ‘।দ্রুত ব্যাগ গুলো হাতে নিয়ে দরজার দিকে পা বাড়ায়।
প্রত্যেক শহরের নিদিষ্ট কিছু বৈশিষ্ট্যর সাথে নিদিষ্ট কোন গল্প থাকে। শহর বদলানোর সাথে সাথে সেই গল্পেরা নতুন মোর নেয়।সেহেরের বিষাদময় জীবন কি প্রেমময় ছন্দে সেজে উঠবে? নাকি কারো প্রেমনেশার বিষাক্ত প্রেমে গ্রাস হবে!
বুক ভরে দীর্ঘ নিশ্বাস নিয়ে সেহের বগি থেকে নামে!

গতরাতের ঘন বর্ষন জানালার কাঁচে নিজের চিহ্ন ছেড়ে গেছে।বিন্দু বিন্দু পানি গুলো চুয়ে চুয়ে লম্বা রেখা টেনে পতিত হচ্ছে।বারান্দার বিদেশিনী ফুলের গাছে গুলায় পড়ন্ত ছিটা ছিটা বৃষ্টিকণা মুক্তার মত চকচক করছে। সারাশহরে দিনের আলো ফুটলেও ঘরটা এখনো ঘোর অন্ধকারে ঢাকা।ভারী ভারী পর্দায় জানালা গুলো ডেকে। জ্বলন্ত মোমবাতির অগ্নিশিখা শেষের দিকে । নিভু নিভু জ্বলছে।আবছা হলুদ আলো সারা ঘরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ।
ঘরের দেয়াল সেহেরের হাজারো ভঙ্গিমার তৈলচিত্রে পূর্তি।যেন কেউ স্বযত্নে নিজ হাতে এঁকেছেন।পিনপতন নীরবতার মাঝে কোথাও বোর্ডে তুলি চলার আওয়াজে থমথম করছে ।দক্ষিণের জানালার বিপরীতে পেইন্টিং বোর্ডে কারো আবছা ছায়া পরছে ।মানুষটার রঙে মাখা নিরলস হাত দুটো তুলি চেপে বোর্ডে চলছে।রক্ত লাল নির্ঘুম চোখজোড়া কঠিন নেশায় ডুবে। পেইন্টিং না যেন কোন এক ভয়ানক নেশা। পেইন্টিং বোর্ডে ভেজা শুভ্র শাড়ী ল্যাপটানো সেহেরের একপাশে ঘুরে তাকানোর তৈলচিত্র ভেসে আছে।মায়া মায়া বড় চোখ ,বৃষ্টিস্নাত ঠোঁট ।নির্বস্ত্র পিঠ কালো মেঘের ন্যায় লতানো চুলে আধো ঢেকে ,ঘাড়ের নিচ বরাবর গাঢ় কালো তিল স্পষ্ট ভেসে। মেয়ে নয় যেন কোন আষাঢ়ের পরী। অজ্ঞাত ব্যক্তি পেইন্টিং বোর্ডে হাত ছুঁয়িয়ে মাতাল মাতাল আওয়াজে ফিসফিসিয়ে বলে,”আমার হুর “।বাগানে ডানা জাপটানো প্রজাপতিটা সেহেরের তৈলচিত্রের দিকে ছুটে চলছে ,এমন ফুল কে না ছুঁতে চাইবে? প্রত্যেক প্রাণী- ই যে সৌন্দর্যের পূজারী। এ দেখে অজ্ঞাত মানুষটা চটে যায়।সেহেরের ছবির দিকে বাড়ন্ত প্রজাপতিকে থাবা মেরে নিজের হাতের মুঠোয় পিষিয়ে মারে।পেইন্টিং এর দিকে তাকিয়ে ক্রুদ্ধ স্বরে বলে ,”তোমার দিকে বাড়ন্ত প্রত্যেকটা জীবকে মরতে হবে। হোক সে মানুষ বা প্রাণী ।এ ভাবেই পিষে মরবে। তোমাকে স্পর্শ করার অধিকার একান্তই আমার, তুমি আমার শুধুই আমার! ”
ফোনটা বেজে উঠে ,অজ্ঞাত ব্যক্তির ভ্রু জোড়া কুঞ্চিত হয়ে আসে।ফোন রিসিভ করে কানে ধরতেই অপরপাশ থেকে আওয়াজ আসে”স্যার, ট্রেন এসে গেছে! মেডাম গাড়ীর দিকে আসছে।ড্রাইভার মেডামকে বাড়ী পৌছিয়ে দিবে”
“বিন্দু মাত্র ভুল হলে তোমার গর্দান যাবে। তার উপর নজর রাখো ।”
অপর পাশের মানুষটা যেন ভয়ে কাঁপলো।থতমত গলায় বলল,”জ…জি স্যার !”
অজ্ঞাত ব্যক্তি ফোন রেখে এক চিলতে হাসলো।
“ওয়েল ডান হুর! আমার থেকে পালাতে আমার কাছেই নিজেকে ধরা দিচ্ছো! এবার তুমি পুরোপুরি আমার নজরবন্ধী
আমার শহরে ,আমার অন্দরমহলে তোমার স্বাগতম! খুব শীঘ্রই দুজন মুখোমুখি হবো। ”

চলবে কি ?😶

ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।প্লিজ সবাই সবার মতামত জানাবেন😊😊😊।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here