মনের মাধুরীতে তুমি পর্ব -০৯+১০

#মনের_মাধুরীতে_তুমি
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ৯
,
,
,
,
সকালের হালকা আলোতে ঘুম ভাংগতেই সুখের সারা শরীর অবশ হয়ে আসে।কোন রকমে উঠে দাড়াতে নিলেই যন্ত্রণাই চোখ মুখ নীল হয়ে উঠে সুখের। ফ্লোরে হাত দিয়ে উঠার চেষ্টা করতে নিলেই হাতে চুরির কাচ বিধে যায়। পুনরায় নিচে বসে পড়ে।এদিকে দরজাতে অনবরত নক পড়ায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠে সুখ নিজেকে শক্ত করে উঠে দাড়ায়ে ওয়াসরুমে চলে যায়।এদিকে দরজায় কড়া নাড়ার আওয়াজ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে যেনো দরজা ভেংগে দম নিবে অপারের মানুষ টা।কিন্তু সেদিকে সুখের ধ্যান নাই সে তো নিজের মতো নিজের সমস্ত কষ্ট পানির সাথে ধুয়ে দিতে
ব্যস্ত। হঠাৎ করে সুখ চিৎকার দিয়ে বসে পড়ে সাওয়ার এর নিচে। হাউমাউ করে কান্না করতে থাকে।ঠিক সে সময় প্রচন্ড আওয়াজ করে ভেংগে যায় ওয়াসরুমের দরজা প্রচন্ড আওয়াজ করে ভেংগে যায়।কেপে উঠে সুখ।চিৎকার বন্ধ হলেও ফোপানো বন্ধ করতে পারেনা সুখ।

আহিয়ান এর রক্তিম বর্ণ চোখ দেখেও ভয় পায়না। বরং কষ্ট গুলো আরও উপচে আসতে শুরু করলো দৌড়ে যেয়ে আহিয়ান এর গলা জড়ায় ধরলো।আহিয়ান মৌটেও প্রস্তুত ছিলোনা এটার জন্য সে ভেবেছিলো থাপ্পড় মেরে দিবে সুখ কে এতোটা কেয়ার লেস কি করে হয়।
কিন্তু সুখের এহেন কান্ডে আহিয়ান এর বুকটা ভারি হয়ে আসতে শুরু করলো

—কেনো সুখ পাখি।কেনো মন টা ভুল মানুষ কে দিলে। তোমার কষ্ট যে আমার শান্তি দেয়না আর কতো নিজের শাস্তি বারাবে বলোত

আহিয়ান এর বলা কথা গুলো সুখের কান অব্দি পৌছালোনা।

—কেন ডাক্তার কেন আমার সাথে এমন হলো কি করে পারলো সে ।টাকা কি এতো বেশি গুরুত্বপূর্ণ।ভালোবাসার মূল্য নাই।ক্যারিয়ার আর ই সব

—এতো কষ্ট হচ্ছিলো তাহলে কেনো করলেনা তাকে বিয়ে কেন কষ্ট আপন করে নিলা

—আপনার কি মনে হয় ডাক্তার এতো সহজ ছিলো আমার জন্য অন্যকারো নামে কবুল বলা উহু মৌটেও না কিন্তু একবার ভাবেন যে ছেলে ক্যারিয়ার এর জন্য নয়ণার হাত ধরতে পারে সে ভবিষ্যতে অন্যকারো জন্য পুনরায় আমার হাত ছাড়বেনা

—তখন নয়না কি বলেছিলো তোমাকে। যেটা শুনে কবুল বলতে এক সেকেন্ড সময় অব্দি নেও নি

—সে আকাশের বাচ্চার মা হতে চলেছে(তাচ্ছিল্যের স্বুরে)

আহিয়ান আর কিছু বলেনা।সুখের ভিজা শরীরের সাথে লেগে থাকার জন্য তার শার্ট ও ভিজে গেছে।তবুও সে ভাবেই দাঁড়িয়ে থাকে।এদিকে সুখ নিজের মনেই নিজের সকল অভিযোগ অভিমান আহিয়ানের বুকের সাথে মিশে মিটিয়ে নিচ্ছে।যেনো তার জন্য সবচেয়ে সুরক্ষিত জায়গা এইটাই।

——

১ মাস পরে,,,,,

সকালের নাস্তা করার জন্য সবাই ডাইনিং টেবিলে গোল হয়ে বসে আছে।সবাই নিজের মতো খেয়ে চলেছে। এরই মাঝে অভিরুপ বলে উঠলেন

—সুখ মামনি

—জ্বি

—তুমি নাকি পুনরায় অনার্সে এডমিশান নিতে চাও সৌরাউর্দি(কাল্পনিক) মেডিকেল কলেজে।

অভিরুপের এমন কথা শুনে কেশে উঠে সুখ।সাথে সাথে মিসেস চৌধুরী পানি এগিয়ে দিলেন সুখের দিকে। রাগী দৃষ্টি নিক্ষেপ করলেন নিজের ছেলের দিকে তিনি জানেন ইচ্ছা টা সুখের নয়।বরং তার ছেলের ই।

—মামু আসলে

—বাবা ওই লজ্জা পাচ্ছে সেজন্য তোমাকে বলতে পারছেনা বুঝোয় তো

সুখ মাথা নাড়িয়ে না করতে যাবে তার আগেই আহিয়ান তার বাম হাতটা দিয়ে সুখের কোমড় জড়িয়ে ধরলো। কেপে উঠলো সুখ
আহিয়ান সবার আড়ালেই সুখের কিছুটা কাছে যেয়ে বলে উঠে।

—মিসেস আহিয়ান যদি বাবার সামনে উলটা পালটা কিছু বলেছো তাহলে ১ মাস আগের ফেলে রাখা বাসর আজকেই সম্পূর্ণ করবো কি বলো

সাথে সাথে হেচকি উঠে যায় সুখের ঢোগ ঢোগ করে পুরা গ্লাসের পানি শেষ করে দিলো

—জ্বি জ্বি মামু আহিয়ান ভাইয়া

সাথে সাথে চাপ দেয় সুখের কোমড়ে।

—আমি উনার হস্পিটালে ইন্টার্নি করতে চায় আসলে আমি যে হস্পিটালে ছিলাম এখানে কিছু সমস্যা হয়েছে পড়া শুনার মান তেমন ভালো না

কাপা কাপা গলায় কথা গুলো বলে উঠে সুখ।

—এইতো আমার মা এইভাবেই আমাকে সব বলবা। আমি চায়না আমার মা আমার কাছে কিছু চাইতে জড়তা অনুভব করুক সেজন্য আহিয়ান বলার পরেও তোমাকে জিজ্ঞেস করলাম।।

—সুখ মাথা নিচু করে নেয়

________

গাড়িতে নিশ্চুপ বসে আছে আহিয়ান আর সুখ।যেহেতু নতুন করে সব কিছুর প্রিপারেশান নিতে হবে সেজন্য বই।কিনতে বেরিয়েছে দুইজন।সুখ পুরাটা সময় চুপ ছিলো

—আপনি এমন টা কেন বললেন মামুকে আমি কখন এই কথা বলেছি

—আমি চায়না আমার বউ এর উপরে কারো ছায়া পড়ুক।

বউ শব্দ শুনে কেপে উঠলো সুখ।এই।প্রথম আহিয়ান তাকে বউ হিসেবে ডেকে উঠলো।অদ্ভুদ প্রশান্তি অনুভব করলো আবার কোথাও একটা চিনচিন করে উঠলো হয়তো অতিত এর পিছুটান।সে জানে আহিয়ান এমন কথা কেনো বললো কারন সুখ যে ভার্সিটি ছিলো সেটা কোমবায়িন্ড ইউনিভার্সিটি ছিলো ইঞ্জিনিয়ারিং বিজনেস ব্যাংকিং ডাক্তার সব সেক্টর ই সেখানে ছিলো।যার কারনে সুখ আকাশ আর নয়নার দেখা হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নই।

—————

বই সামনে নিয়ে বসে আছে সুখ।কিন্তু পড়া তার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে একটা চ্যাপ্টার কিছুতেই মাথা ঢুকছেনা ঢুকবে বা কেমনে এতো মাস পরে বই হাতে নিলে কি আর মাথায় কিছু ঢুকে

শব্দ করে বই টা বন্ধ করে বই এর উপরে মাথা রেখে শুয়ে পড়ে সুখ।ক্লান্ত লাগছে প্রচুর।হঠাৎ সেখানে উপস্থিত হলো আহিয়ান সামনের চেয়ার টা টেনে বসে পড়ে কোণা চোখে তাকায় সুখ

—পড়া কতোদূর

আহিয়ান এর ভারি কন্ঠ শুনে কেমন একটা অনুভূতি হয় সুখের ভালো করে আহিয়ানের দিকে তাকায়।উচা লাম্বা উজ্জ্বল শ্যাম বর্ণের এই সুদর্শন যুবোক টা তার বিয়ে করা স্বামি ভাবতেই কেমন একটা অনুভূতি এসে কড়া নাড়ে। সুখে চোখ যায় আহিয়ানের ঠোঁটের বাম সাইডে কালো কুচকুচে তিলটার দিকে।হঠাৎ বেহয়য়া মনটার ইচ্ছা করে ছুয়ে দিতে তিলটা।

সাথে সাথে আহিয়ান জোড়ে একটা থাবা মারে টেবিলে।সুখ এর টনক নড়ে এতোক্ষন কি ভাবছিলো সেটা ভাবতেই নিজের জিহবা তে নিজে কামড় দেয়

—পড়া বাদ দিয়ে কি ভাবা হচ্ছে।যে যে চেপ্টার শেষ করতে বলেছিলাম করেছো

সুখ ভয়ে মাথা নাড়ায় মানে হ্যা সে করেছে।আহিয়ান কিছু না বলে বই টা এগিয়ে নেয় নিজের দিকে।কিছু প্রশ্ন ধরতেই সুখ থতমত খেয়ে যায়।সে তো কিছুই পারেনা। আহিয়ান এর ও সেটা বুঝতে বাকি রইলোনা

মাথায় বই দিয়ে বারি দিয়ে সুখকে চেয়ার সহ টেনে কাছে নিয়ে এলো দিয়ে যত্ন সহকারে বুঝাতে লাগলো।আশ্চর্যজনক ভাবেই সুখ ও বুঝে গেলো মনে মনে বলে উঠলো

*আপনি আসলেই অসাধারণ ডাক্তার সব দিক দিয়েই পার্ফেক্ট এই একটা মাস আপনি এমন ভাবে আগলে না রাখলে হয়তো ভেংগে গুরিয়ে যেতাম।আসলেই আপনাকে স্বামি হিসেবে পেয়ে আমি ভাগ্যবতী কিন্তু আফসোস আপনাকে ভালোবাসতে পারবো কি না জানিনা আপনিই বা আমাকে কোন দিন আমাকে ভালোবাসবেন নাকি জানা নেই কিন্তু হ্যা আপনার সকল কর্মকান্ডে এক রাশ মুগ্ধতা রয়েছে যাতে মুগ্ধ আমি প্রতিনিয়ত। আপনার জন্য আলাদাই একটা সম্মান তৈরি করে নিয়েছেন।

—এইটুকু মুখস্থ করো আমি আসছি

কথাটা বলেই সেখান থেকে চলে গেলো আহিয়ান।সুখ সেদিক তাকিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে পড়ায় মননিবেশ করলো সুখ।মিনিট ১০ এক পড়েই চোখের সামনে ভাতের লোকমা দেখে অবাক হলো সুখ হাতের দিক থেকে চোখ তুলে সামনে তাকাতেই অবাক হলো কারন,,,,,,,

চলবে!#মনের_মাধুরিতে_তুমি
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ১০
,
,
,
,
সুখ মাথা তুলে তাকাতেই দেখে তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে রায়হান। সুখ কে তাকাতে দেখে মুচকি হাসে রায়হান।

—অনেক পড়েছিস খেয়েনে ভাইয়ের হাতে খাইতে সমস্যা নাই তো

সুখ ও হেসে রায়হানের হাতেই খেয়ে নেই। দরজার আড়াল থেকে সে দৃশ্যটা দেখছে আহিয়ান আর মিসেস চৌধুরী

—এবার কি বলবা মা।ভাই যাকে মন থেকে বোন বানাতে চায় তাকে বুঝি তার বউ বানাবে

—নিজের বোন হয়না। ওই শুধু কথার কথা বলেছে যাতে সুখ ওর হাতে খেয়ে নেই ব্যাস তুই বেশি ভাবছিস।

আমতা আমতা করে কথা টা বলে চলে যায় মিসেস চৌধুরী। আহিয়ান মিসেস চৌধুরীর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে হতাশ নিশ্বাস ত্যাগ করে

—কেন এমন করছো মা।তুমি কেন বুঝেও অবুঝদের মতো আচরণ করছো বুঝতে পারছিনা আমি।

——–

মিসেস চৌধুরী নিজের রুমে এসে একটা নাম্বারে কল দেয়

—হ্যালো

অপরপাশ থেকে বলে উঠলো এক মহিলা

—হুম আপা

মিসেস চৌধুরী কিছু একটা বলে উঠতেই অপর পাশের মহিলাটির মুখে হাসি ফুটে চোখ দুইটা চকচক করে উঠে তার যেনো অনেক বছরের সাধণার ফল পেতে যাচ্ছে সে।

____

পড়তে পড়তে কখন টেবিলে হেলান দিয়ে ঘুমায় পড়েছে সুখ টের পায়নি সে।আহিয়ান এক পলকে তাকায় আছে সে নিদ্রাতে মগ্ন কণ্যাটির দিকে।বুকের পাশটাই আলাদা অনুভূতিতে দোলা দিচ্ছে।হালকা ভাবে টান দিয়ে সুখের হাত টা নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে পকেট থেকে সুন্দর একটা ব্রেসলেট চুড়ি স্টাইলের মতো বের করে পড়ায় দেয় যত্ন করে।আলতো করে চুমু খাই হাতের উলটা পিঠে ঘুমের মাঝেই কেপে উঠে সে।আহিয়ান নিজেও কেপে উঠে। তার এমন কেন হয় এই মেয়ের সংস্পর্শে এসে সে বুঝেনা। এখনো মনে আছে তার সে দিন যেদিন প্রথম দেখেছিলো এই শুভ্র নিশপাপ মুখ খানা

সুখ তখন ইন্টারের স্টুডেন্ট।কলেজে সেবার একটা মেডিকেল ক্যাম্প বসানো হয়েছিলো সে মেডিকেল ক্যাম্পেই উপস্থিত ছিলো আহিয়ান। তাদের কাজ ছিলো সবার রক্ত পরিক্ষা করা।সব মেয়েরাই যেনো ক্যম্পে হাজির হয়েছিলো।সব মেয়েই অযথা চিল্লা চিল্লি করাতে বিরক্ত হয়ে গেছিলো সে। যেনো তাদের রক্ত না কিডনি বিক্রি করা হয়েছিলো।এরই মাঝে সেখানে উপস্থিত হয় ছোট ছোট বয় কাট করা একটা মেয়ের। গোটা গোটা মায়াবী চোখের দিকে তাকাতেই চোখ দুইটা আপন মনেই আটকে গেছিলো আহিয়ানের সবচেয়ে বেশি যেটা তাকে মুগ্ধ করেছিলো সেটা ছিলো মেয়েটির সোজাসাপটা ব্যাবহারে বাকি মেয়েদের ন্যায় ন্যকামো না করে বরং একটা সেন্টারফ্রেশ মুখে দিয়ে চিবুতে চিবুতে রক্ত পরিক্ষা করে আবার ডোনেট করে বেরিয়ে যায়।

সে যাওয়ার পরে আহিয়ান প্রথম কোন মেয়ের পিছু নেয় কিন্তু আফসোস খুজে পায়না সে মেয়েটাকে।এর মাঝেই সময় চলে আসে বিদেশে যেয়ে ডাক্তারির উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার। তার পরে তার দেখা হয় সুখের সাথে রক্তাক্ত অবস্থায়।প্রথমে চিনতে পারেনা কারন তখন কার সুখ আর সেদিন কার সুখের মাঝে ছিলো বিস্তর তফাৎ কারন তখন কার সুখ ছিলো রৌদ্রময়ী।আর এখন কার সুখ হয়ে উঠেছে কমোল অদ্ভুদ তেজ কমে চেহারায় নিয়ে এসেছে এক রাশ মুগ্ধতা। টানা টানা চোখে এখন কালী না কাজল এর জায়গা হয়।অগোছালো চুল গুলো যেগুলো ছোট ছোট করে কাটা ছিলো এখন যত্ন করে গুছিয়ে রাখা কোমড় অব্দি।।

—এক বিশাল পরিবর্তন এই তুমিটাই
তোমার চোখের এই একরাশ আধারে
তুমি বদলে গেছো নতুন রুপে
তবুও তোমার প্রেমে পরিনাই নতুন ভাবে
ঠিক আগের তোমাকে যতোটা ভালোবেসেছি
এই তুমিটাকেও তোতটাই মনের মাধুরিতে মিশিয়েছি

ঘুমের মাঝেই সুখ হেলে পড়ে আহিয়ান এর বুকে।আহিয়ান আলতো করে কোলে তুলে নেয় সুখকে।বিছানায় শুয়ায় দিয়ে উঠে আসতে নিলেই সুখ খামচে ধরে আহিয়ান এর শার্ট।আহিয়ান অবাক হয়। ভালো করে তাকায় দেখ তার সুখ পাখি ঘুমের মাঝেই আকড়ে ধরতে চাইছে তাকে।আহিয়ান আলতো হেসে সুখ এর পাশে বসতেই সুখ ঘুমের মাঝেই আহিয়ান এর কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়ে।আহিয়ান আলতো করে চুমু খাই সুখ এর কপালে।

___________

সকালে সুখের ঘুম ভাংগতেই নিজেকে কারো বাধনে আবদ্ধ দেখে অবাক হয়।কানে স্পষ্ট বারি খাচ্ছে কার হৃদয় এর স্পন্দন। কেপে উঠে সুখ।অঅদ্ভুত কিছু ছিলো এই বুকের স্পন্দনে। যা মহূর্তে সুখের শ্বাস আটকে দিলো।

মাথা টা উপরে তুলতে নিলেই মাথা টা যেয়ে লাগে ব্যাক্তিটির থুতমিতে ব্যাথায় কুকিয়ে উঠে সুখ।এদিকে আচমকা লেগে যাওয়া ব্যাথা আর সুখের কাতর কন্ঠে ঘুম ভেংগে যায় আহিয়ানের

নিজের ব্যাথা ভুলে সুখের মাথা ধরে অস্থির হয়ে উঠলো আহিয়ান

—কি হয়েছে সুখ ঠিক আছো তুমি এই ভাবে কেউ উঠে আমাকে ডাক দিলেই পারতা। এতো কেনো হিটলারি করো তুমি বলবা আমাকে।না জানি কতো ব্যাথা পেয়েছো।

আহিয়ানের এমন উদগ্নি আওয়াজে নিজের ব্যাথা ভুলে হেসে দেয় সুখ।আহিয়ানের ভ্রু জোড়া কুচকে উঠে

—এতোটাও জোড়ে ব্যাথা পাও নি যে পাগল হয়ে যাবা

—আপনি যেভাবে বলছেন যেনো আপনার থুতনিতে না কোন ভারি বস্তুতে মাথা বারি খেয়েছে। আমি ঠিক আছি একটু লেগেছে এই যা।

আহিয়ান কিছু না বলে সুখ কে ছেড়ে উঠে নিজের রুমে চলে গেলো।সুখের এতোক্ষণে টনক নড়ে।

—ছি ছি এতো ক্ষন আমি উনার বুকে থেকেই উনার সাথে ঝগড়া করলাম আল্লাহ। আমি এখন উনার সামনে যাবো কি করে

—যেভাবে আগে আসতা

হঠাৎ আহিয়ানের গলায় চমকে উঠে।সে মনে করেছিলো আহিয়ান চলে গেছে কিন্তু নাহ আহিয়ান হাতে একটা টেবলেট নিয়ে তার সামনে ধরে

—বেশি কিছুদিন হয়নি মাথায় পাওয়া ইঞ্জুরি ঠিক হয়েছে এখন সামান্য ব্যাথাও তোমার জন্য ক্ষতিকর।খেয়ে নেও।

সুখ কাপা কাপা হাতে ঔষধ টা নিয়ে খেয়ে নেই আহিয়ান গ্লাসে পানি ভরে এগিয়ে দেয়।

সুখ এদিক ওদিক তাকায়ে ঢোক গিলছে অস্বস্তি ঘিরে ধরেছে।কাপা কাপা হাতে গ্লাস টা এগিয়ে দেয় আহিয়ানের দিকে।

আহিয়ান মুচকি হেসে গ্লাস টা নিয়ে টি টেবিলে রেখে সুখের দিকে ঝুকে গেলো। চমকে উঠলো সুখ আচমকা পিছাতে নিলেই আহিয়ান সুখ কে টেনে নিজের কাছে নিয়ে এলো

—সামান্য বুকে ঘুমাতেই এতো লজ্জা ওয়াইফি এখনো তো দিন পরে আছে ভবিষ্যৎ এ কি করবা। যখন প্রতিরাত

সাথে সাথে আহিয়ান এর ঠোঁটে হাত দিয়ে দেয় সুখ

—ডাক্তার

সাথে সাথে আহিয়ানের ঠোঁটের স্পর্শ সুখ নিজের হাতে পেতেই হাত দ্রিত সরিয়ে নিতেই চোখ পড়ে নিজের হাতে থাকা ব্রেসলেট এর দিকে।অবাক চাহুনি নিক্ষেপ করে হাত থেকে।ওইটা খুলতে নিলেই আহিয়ান সুখের হাত চেপে ধরে

—ভুলেও ওইটা খুলার চেষ্টা করবে না।তাহলে কপালে কি আছে তুমি।নিজেও জানোনা। আর আমার কথাকে হুমকি হিসেবে নেওয়ার ভুল মৌটেও করোনা সুখ পাখি।

_______

অন্ধকার স্টেশান এ দাঁড়িয়ে আছে রায়হান। কনকনে শীতে দাড়ায় থাকতে অসহ্য লাগলেও কিছু করার নেই।তার মায়ের আদেশ অবশ্য আদেশ টা ছিলো তার মেঝো ভাইয়ের জন্য কিন্তু সে না করে দিয়েছে একবার। তার মানে তাকে দিয়ে সে কাজ করানো ইহকালে সম্ভব নই

হঠাৎ ট্রেন থামতেই এক এক করে সকল পেসেঞ্জার নামতে থাকে।রায়হানের চোখ এতো ভীড়ের মাঝেও আটকে যায় একটা বাচ্চা মেয়ের উপরে।অবশ্য অতোটাও বাচ্চা না ১৯ বছরের মেয়ে সেটা।আর তার হাত ধরেই এগিয়ে আসছে আরেকজন। এরা হলো রায়হানের খালাতো বোন রায়হানের দৃষ্টি সবার আগে যার উপর পড়েছিলো সে ছিলো বৃষ্টি আর বৃষ্টির হাত ধরে যে এগিয়ে আসছিলো সে ছিলো বন্যা।বন্যা বড় আর বৃষ্টি তার থেকে ২ বছরের ছোট।

চলবে!

ব্যাস্ত আছি এই কই দিন যার কারণে গল্প টাইমলি দিতে পারছিনা আশা করি আপনারা বুঝবেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here