রোদ বৃষ্টির প্রেম পর্ব -০৯

#রোদ_বৃষ্টির_প্রেম
#Nishi_khatun
#part_09

রাতের বেলা হসপিটালের করিডর দিয়ে হেটে যাচ্ছিল
রোদ। হঠাৎ করে বৃষ্টির কেবিনের সামনে এসে রোদের পা দুটো আপনা-আপনি স্থির হয়ে যায়। কেনো জানি সামনের দিকে আর এগিয়ে যেতে ইচ্ছা করছে না। রোদ সামনে কেবিনের দিকে এগিয়ে যায়। কেবিনের দরজাতে হাত দিতেই খুঁলে যায়। রোদ ভেতরে প্রবেশ করে দেখে বৃষ্টি ঘুমিয়ে আছে।
রোদ আস্তে করে বৃষ্টির পাশে এসে দাঁড়িয়ে থাকে। ঘুমন্ত বৃষ্টিকে সে নিরবে অবলোকন করতে থাকে।
মেয়েটার ঘুমন্ত মুখটা দেখে রোদের বুকের মাঝে তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে। কি সিগ্ধতা এই চেহারার মাঝে। খুব মায়াবী মেয়েটা। তবে মেয়েটা জেগে থাকলে চেহারার মাঝে বিষণ্ণতার ছাপ স্পষ্ট বোঝা যায়। মুখে না বললেও ওর মায়াবী চোখ দুটোর মাঝে ওর মনের গভীর কষ্টে ছবি স্পষ্ট বোঝা যায়। কি সমস্যা মেয়েটার। পরিবারের সব সদস্য তো আছে। তাহলে কি মেয়েটার জীবনে অন্য কেউ ছিলো? যার জন্য এতো বিষণ্ণতা?
তবে তোমার জীবনের অতীত যাই থাকুক না কেনো আমার তোমাকে চাই। হ্যাঁ আমার তোমাকে চাই। এই রোদের বৃষ্টি হবে তুমি। জানি না এমন কেনো হয় তোমাকে দেখলে। সে যাই হোক না কেনো। আমি তোমাকো আমার জীবন সঙ্গী বানাতে চাই। জানি না এসব আমার অবুঝ মনের সুপ্ত বাসনা কি না। তবে তোমাকে দেখলে আমার হৃদয়ের ভেতর থেকে চিৎকার দিয়ে বলে,”রোদ তোর জীবনে শীতলতার পরশ এই মেয়েটা বয়ে আনতে পারবে।”
তবে এখুনি আমি তোমাকে জোর করে নিজের জীবনে জড়াতে চাই না। আগে নিজে ভালোভাবে তোমাকে ভালোবাসি সে অনুভূতি উপভোগ করতে চাই। তারপর না হয় আমার প্রেমের রং এ তোমাকে রাঙাবো।

এতো সব কিছু কল্পনা করে রোদের ঠোঁটের কোণায় রৌদ্রময় মিষ্টি হাসি ফুটে ওঠে। রোদ নিজেও জানে না হুট করে কি ভাবে সে একটা মেয়েকে নিয়ে এতো জল্পনাকল্পনা করছে। এটা তার মস্তিষ্কের ভুল ইচ্ছা।
রোদ তোর বয়স হচ্ছে। তোর দ্রুত বিবাহ করা উচিৎ। ঘাড়ে বউয়ের দায়িত্ব থাকলে এসব প্রমের ভুত ঘাড় থেকে নেমে যাবে। নাহ এখানে থাকা যাবে না। নয়তো ভুল করে কোনো ভুল করে বসতে পারে সে।
যাবার সময় হুট করে বৃষ্টির কপালে একটা চুম্বন করে চলে যায়।

কখন কার জন্য কার মনের মাঝে অনুভূতিরা জাগ্রত হবে তা কেউ বলতে পারে না। অনেকে তো প্রথম দেখাতে সারাজীবনের জন্য পথ চলতে শুরু করে।

বৃষ্টি বেচারি এসবের কিছু বুঝতে পারলো না। যদি বুঝতে পারতো তাহলে রোদের খবর ছিলো। আজ রোদকে ডাক্তারের স্থানে পেসেন্ট হতে হতো।

রোদ বাড়িতে এসে চুপচাপ নিজের ঘরে প্রবেশ করে। নিজেকে কেমন চোর চোর মনে হচ্ছে।রিয়ানা কে পছন্দ করে আর বৃষ্টিকে বিয়ে করার কথা চিন্তা করছে। সব দোষ ঐ বৃষ্টি নামের মেয়রটার। আর কখনো ওর সামনেই যাবো না।


এদিকে রিয়ানা সাদিকের সাথে মধ্যরাতের নিরবতা উপভোগ করতে বাড়ি থেকে চোরের মতো বেড়িয়ে গেছে। সাদিক বাইক চালাচ্ছে আর রিয়ানা পেছনে বসে আছে। রাতের নিরবতা তারা ভালোই উপভোগ করছে। যে শহরতলী সারাদিন মানুষের কোলাহলে মুখোরিত থাকে। রাতের অন্ধকার বাড়ার সাথে সাথে সব কিছু আস্তে আস্তে নিরব হতে থাকে। সাদিকের সাথে ঘুরতে ঘুরতে ওরা শহর থেকে অনেক দূরে চলে আসে। যেখানে মধ্যো রাতে দু জন ছেলে মেয়ের আশা উচিৎ নয়। তবে খাঁচায় বন্দী পাখি একবার মুক্তির স্বাদ পেলে কি আর খাঁচার মায়া করে সেখানেে ফিরে যায়? এরা সব কিছু ভুলে এদের মতো ঘুরতে থাকে। হঠাৎ করে ওদের সামনে কিছু মানুষের আগমণ ঘটে। ওদের বাইক থামাতে বাধ্য করে। সাদিক বাইক থামানোর সাথে সাথে একজন মহিলা রিয়ানার হাত ধরে বাইক থেকে টেনে নামিয়ে আনে। সাদিক ও বাইকের পাশে দাঁড়িয়ে বলে,”আপনাদের সমস্যা কোথায়? আমাদের এভাবে রাস্তার মাঝে দাঁড় করানোর মানে কি?”

একজন লোক রিয়ানা কে উদ্দেশ্য করে বলে,”তোর লগে এই মাইয়ার কি সম্পর্ক? ”

লোকটার বিচ্ছিরী চাহনি দেখে সাদিকের বুঝতে সমস্যা হয় না। যে তাদের কি ইঙ্গিত করে বোঝাতে চাইছে?

রিয়ানা রেগে বলে,”আমাদের মাঝে যে সম্পর্ক থাক তাতে আপনাদের কী? আমাদের এইভাবে মাঝরাস্তায় দাঁড় করানোর মানে কি? যেতে দিন আমাদের। ”

যে রিয়ানার হাত ধরে ছিল সে রিয়ানার গালে থাপ্পড় দিয়ে বলে,”মাঝরাতে নাগরের লগে খারাপ কাম করে বেড়াবি আর আমরা কিছু কইলে দোষের? ”

সাদিক – দেখুন আপনি ভাষা সংযোত করে কথা বলুন। না জেনে বুঝে দোষারোপ করতে আসবেন না।

সামনের এক মুরব্বী জিজ্ঞাস।করে,”তোমার লগে মাইয়ার কি সম্পর্ক? ”

সাদিক একবাক্যে বলে,”আমার বউ লাগে। আপনাদের সমস্যা? ”

রিয়ানা সাদিকের দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকে।
সাদিক রিয়ানা কে চোখের ইশারাতে চুপ থাকতে বলে।
রিয়ানা ছোট বাচ্চা মেয়ে নয় তাই সেও পরিস্থিতি বুঝতে পেরে সাদিকের সাথে সহমত প্রকাশ করে।
বিপদ থেকে মুক্তি পেতে।

এদিকে রিনি নিজের রুমের মধ্যে পায়চারি করছে। আজকে ভার্সিটির ক্লাসরুমের সেই ঘটনা কোনো ভাবেই ভুলতে পারছে না। কেনো না সে তো ইচ্ছা করে বিহানের গালে চুম্বন করতে যায় নি। লোকটা ভরা ক্লাসে সবার সামনে থাপ্পড় মেরে দিলো? একটি বার ভেবে দেখলো না সে একটা মেয়ের গায়ে হাত তুলছে?
এই লোকটার জন্য আজ সব গুলো ক্লাসে সে চুপচাপ ছিলো। পুরো ক্লাসের স্টুডেন্ট তার দিকে বার বার আড় চোখর দেখছিল। আর কানাকানি তে নানারকম কথা বলছিল।
রিনি- বিহান স্যারের জন্য আমাকে আজ প্রিন্সিপ্যাল স্যার ও কথা শোনাতে পিছপা হয় নি। এই নিয়ে দ্বিতীয় বার প্রিন্সিপাল স্যার জোড় গলায় কথা বলেছে। ক্লাসের কথা যদি কোনো ভাবে বাবা মা জানতে পারে তাহলে রিনির কপালে দুর্ভোগ আছে। বাবা মা রিনিকে সোজা বিয়ে দিয়ে দিবো দাও কোনো গরুর রাখালের সাথে।
এসব নিয়ে চিন্তায় সারারাত রিনির ঘুম হয় না।
এভাবে নির্ঘুম রাত কাটে।

এদিকে ভোরের সূর্য নতুন দিনের সূচনা করতে পূর্ব আকাশে উকি দেয়।
(গল্পটা আজ রিভাইস দিতে পারি নাই।তাই ভুল গুলো বলবেন সংশোধন করে দিবো।)
:
:
চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here