শিশির ভেজা রোদ্দুর পর্ব -৩১+৩২

#শিশির_ভেজা_রোদ্দুর
#Part_31
#Writer_NOVA

রাতের নির্জন রাস্তায় নিরিবিলি হাঁটতে কার কেমন লাগে তা আমি জানি না। কিন্তু আমার বেশ ভালো লাগে। তাও যদি হয় পছন্দের মানুষগুলোর সাথে তাহলে তো কথাই নেই। আমি,তায়াং ভাইয়া,তন্বী, নূর আপি, এনজিও সংস্থা সবাই মিলে হাঁটতে বের হয়েছি।ব্যস্ত নগরীর ব্যস্ত কোলাহল ছেড়ে নিরিবিলি পিচঢালা কংক্রিটের রাস্তায় হাঁটতে মন্দ লাগছে না। আকাশে আজ চাঁদের দেখা নেই। তবে ঝলমল করছে ছোট ছোট তারকারাজি। ঘুটঘুটে অন্ধকারের ছোঁয়াও নেই। খালি চোখে রাস্তা চলা যায় এতটুকু উজ্জ্বলতা আছে। খানিক দূরত্বের পরপর সোলার প্যানেলের ল্যাম্প-পোস্টগুলো ততটা উজ্জ্বল আলো না দিলেও রাস্তা চলতে অসুবিধা হচ্ছে না। নূর আপি এসেছে দুই দিন ধরে। কোথাও যাওয়া হয়নি। তাই ভাইয়া সবাইকে নিয়ে বের হয়েছে। দুপুরের খাবারের পর এনাজকে কেউ যেতে দেয়নি। তাই সেও রয়ে গেছে।

এদিকে সাধারণত আসা হয় না। চিপা গলির মতো রাস্তা বলে সাইকেল,বাইক ছাড়া অন্য কোন যানবাহন প্রবেশ করতে পারে না। তন্বী, নূর আপি, তায়াং ভাইয়া আগে চলছে। আমি ও এনাজ কিছুটা পেছনে। এনাজ চুপচাপ আমার পাশাপাশি হাঁটছে। দুপুরের ঘটনার পর লজ্জায় আমি তার সাথে কথাও বলতে পারছি না। মাথা নিচু করে চুপচাপ চলছি। হঠাৎ নীরবতা ভেঙে এনাজই প্রথম কথা বলে উঠলো,

— টিডি পোকা এত চুপচাপ যে?

আমি পলক ফেলে শান্ত দৃষ্টিতে তার দিকে তাকালাম। সে আশেপাশে তাকিয়ে আমার দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছে। পাঞ্জাবী পাল্টে কালো শার্ট পরেছে। সবকিছু এখন কালল। তাকে কালোতো ভালোই লাগছে। আমিও তার সাথে মিলিয়ে ফুল কালো পরেছি।বোরখা, হিজাব, জুতো,সাইড ব্যাগ সবকিছু কালো।এনাজ পকেটে দুই হাত গুঁজে ধীর পায়ে আমার সাথে চলছে। আমি নিচুস্বরে বললাম,

— এমনি।

— তুমি দুপুরের বিষয়টা নিয়ে এখনো টেনশনে আছো?

ইস,আবার দুপুরের কথা উঠালো। আমার ইচ্ছে করছে পিংক কালার বিষ খেয়ে মরে যেতে। ঐ কথা মনে পরলে আমার এখনো লজ্জা করে।থমথমে মুখে বললাম,
— একদম না।

— দেখো যা হয়েছে ভুলে যাও। ঐটা একটা এক্সিডেন্ট ছিলো। সেটা নিয়ে আর লজ্জা পেতে হবে না।

— ওকে।

মুখে ওকে বললেও মনে মনে বেশ রাগ হলো। পুরনো ঘা খুঁচিয়ে জাগিয়ে দিয়ে বলছে ভুলে যেতে। বেটা খাটাশ কোথাকার!

— মনে মনে বকছো নাকি আমায়?

আমি ভুত দেখার মতো চমকে তার দিকে তাকালাম। সে মুচকি হেসে চুলগুলো পেছন দিকে নেড়ে একগালে হেসে বললো,

— নিশ্চয়ই ভাবছো কি করে বুঝলাম?

আমি বিস্ময় মুখে রেখেই ওপর-নিচ মাথা নাড়ালাম। সে হো হো করে হেসে বললো,

— এবারো আন্দাজে ঢিল মেরেছি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে ঠিক জায়গায় লেগেছে। চুপচাপ থেকো না তো তুমি। তোমাকে চুপচাপ একটুও ভালো লাগে না।

— তাই নাকি?

— হুম মিস টিডি পোকা।

— আমি কথা বলে মুডটা নষ্ট করতে চাইছি না। আশেপাশের শান্ত পরিবেশটা চুপ করে ফিল করতে চাইছি। কিন্তু আপনার কারণে তা বোধহয় হবে না।

— কি আর করার বলো? তোমার সাথে থাকতে থাকতে আমিও বাঁচাল টাইপের হয়ে গেছি।

আমি রাগী লুকে তার দিকে তাকাতেই সে ভয় পাওয়ার ভান করে বললো,
— আমি কিছু ভুল বললাম কি?

— আপনি বাঁচাল কাকে বললেন?

— কেন তোমাকে!

— আমি বাচাল?

— কোন সন্দেহ নেই।

দাঁত কটমট করে তার দিকে এগিয়ে গিয়ে বললাম,
—আপনাকে আমি😬….

— চুমু দিবে নাকি জড়িয়ে ধরবে? দুটোর মধ্যে যেটা ইচ্ছে করতে পারো। আমি কিছু মনে করবো না।

— ছিঃ আমার তো খেয়েদেয়ে কাজ নেই।

— নেই বলেই তো বলছি।

— আপনি না কত লাজুকলতা তা এখন কি লাজ-শরম সব ভাতের সাথে খেয়ে ফেলছেন নাকি?

— আসলে ফার্স্ট লিপ কিস ছিলো তো। তাই একটু লজ্জা পেয়েছিলাম। তুমি কি না কি ভাবো?

ছেলের কথা শুনে আমার চোখ দুটো বোধহয় বেরিয়ে যাবে। ও আল্লাহ কি বলে এসব? এটাও দেখছি তায়াং ভাইয়ার মতো ঠোঁটকাটা স্বাভাবের। মুখে কিছু আটকায় না। আর এতদিন বোকা হওয়ার ভান করছিলো। তবে তার কথা শুনে আমার একটু সন্দেহ হচ্ছে।আমি কিছুটা রুক্ষ্ম সুরে বললাম,

— তার মানে এর আগোও কাউকে কিস করেছেন?

— হ্যাঁ, করেছি তো। তুমি করোনি?

— ছিঃ ছিঃ আমি ঐ টাইপের মেয়ে না।

— তা আমি জানি। তবুও একটু বাজিয়ে দেখলাম। আসলে তুমি যা ভাবছো তা না। ছোট বেলায় ক্লাশ টু তে থাকতে এক বাচ্চা মেয়েকে পছন্দ হয়েছিল। সেম ক্লাশের ছিলো। মেয়েটার গাল দুটো গুলুমুলু ছিলো। আমি ওকে একদিন ক্লাশে একা পেয়ে….

তার কথা শেষ হওয়ার আগে আমি চেচিয়ে বললাম,
— মেয়েটাকে একা পেয়ে কি করেছেন আপনি? কোন খারাপ কাজ করেননি তো?

— আরে ধূর। পুরো কথাটা তো শেষ করতে দাও।

— আচ্ছা কন্টিনিউ।

— একদিন ওকে ক্লাশে একা পেয়ে বলেছিলাম আমি ওকে পছন্দ করি। কিন্তু কি হিংসুটে মেয়েরে বাবা। সেই কথা গিয়ে ম্যামকে বলে দিয়েছে। ম্যাম আমায় ক্লাশে ভীষণ বকেছে। সেই রাগে ছুটির পর জোর করে ওর মুখ চেপে গালে টাইট করে একটা চুমু বসিয়ে দিয়েছি। এটা নিয়ে পরে স্কুলে অনেক ঝামেলা হয়েছে। আমার আম্মুকে ডাকিয়ে নিয়ে বিচার বসেছিলো। এর জন্য মারও খেয়েছিলাম। মেয়েটা বিচার দিলেও এরপর থেকে আমার থেকে দূরে দূরে থাকতো। আর আমি সুযোগ পেলে ওর গুলুমুলু গাল জোরে টেনে পালাতাম।

তার এই কাহিনি শুনে আমি হাসতে হাসতে তার বাহুতে ঠাস করে এক থাপ্পড় বসিয়ে দিলাম। বেচারা বেকুবের মতো আমার দিকে তাকালো। আমি তবুও হেসেই যাচ্ছি। যখন খেয়াল হলো তখন হাসি থামিয়ে বললাম,

— সরি। আমার খেয়াল ছিলো না। এই বাজে অভ্যাসটা মাঝে মাঝে চলে আসে। হাসতে হাসতে পাশের জনকে ঠাস করে একটা মেরে দেই। তা এই ছিলো আপনার প্রথম ভালোবাসা?

— না ও আমার প্রথম ভালোবাসা ছিলো না। ও ছিলো আমার প্রথম ভালো লাগা। ঐ ঘটনার পর ঐ মেয়েকে সামনে পেলে কোন না কোনভাবে গাল টেনে পালাতাম। ওকে দেখলে রাগ উঠতো। ওর গাল জোরে টান দিয়ে লাল করতে পেলেই শান্তি লাগতো। মাঝে মাঝে গালে চিমটিও মারতাম।

— আপনি তো মনে হচ্ছে ভীষণ ফাজিল ছিলেন।

— হ্যাঁ, অনেকটা ভেজা বেড়াল টাইপের। আব্বু-আম্মু মারা যাওয়ার পর যখন জীবন কি বুঝতে শিখলাম,বাস্তবতার মুখোমুখি হতে লাগলাম। তখন সব শয়তানি ছেড়ে ভালো ছেলে হয়ে গেলাম। আমার মাথায় সবসময় এটাই থাকতো যে আমি বিপথে গেলে আমার ভাইয়ের সুন্দর ভবিষ্যতটা নষ্ট হয়ে যাবে।

তার কথায় একরাশ বিষন্নতা খুঁজে পেলাম। বড় ভাই-বোনদের বোধহয় এমনি হতে হয়। নিজের সবকিছু ছেড়ে ছোটদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করতে হয়। আমি এই প্রসঙ্গ পাল্টানোর জন্য তাকে জিজ্ঞেস করলাম,

— আপনার প্রথম ভালোবাসার কথাতো বললেন না।

— ওহ হ্যাঁ। মেয়েটির সাথে পরিচয় হয় ক্লাশ নাইনে। অন্য স্কুল থেকে এসে আমাদের স্কুলে ভর্তি হয়। প্রথম দেখায় তাকে ভীষণ ভালো লেগে গিয়েছিলো। কিন্তু খুব চুপচাপ স্বভাবের। সবার সাথে ততটা মিশতো না। না অহংকারের জন্য নয়। ও আসলে সবার সাথে খুব সহজে মিশতে পারতো না। তার সাথে প্রথমে টুকটাক কথা হতো৷ তাও সব পড়ার বিষয়ে। ধীরে ধীরে বন্ধুত্ব। তারপর প্রেম। ও আমার প্রতি দূর্বল ছিলো। তাই আমি প্রপোজ করতেই ও রাজী হয়ে যায়। মাস খানিক চুটিয়ে প্রেম করে ক্লাশ টেনে উঠলাম। ও যথেষ্ট সুন্দরী ছিলো। প্রায় ওর জন্য সমন্ধ আসতো।হঠাৎ একদিন স্কুলে গিয়ে জানতে পারি সামনের সপ্তাহে ওর বিয়ে।ছেলে বাবার ব্যবসায় বসেছে। এত ভালো ছেলে পেয়ে ওর বাবা দেরী করেনি।এক সপ্তাহের মধ্যেই ওর বিয়ে পাকা করে ফেলে। বিশ্বাস করো তখন আমার মাথায় মনে হচ্ছিলো আকাশ ভেঙে পরেছে। সেদিন প্রথম আমি দোকান থেকে দুটো সিগারেট কিনে খেয়েছিলাম। সারারাত কান্না করেছি। কিশোর মনটা মানতেই পারছিলো না যে ওর বিয়ে হয়ে যাবে। বিয়ের দুই দিন আগে আমার সাথে দেখা করতে এসেছিলো। সেদিন প্রথম ও শেষবারের মতো আমাকে জড়িয়ে ধরে অনেক কান্না করেছিলো। বলেছিলো তাকে নিয়ে পালিয়ে যেতে।

💖💖💖

এতটুকু বলে থামলো এনাজ। ওর কণ্ঠ পুরো কাঁদো কাঁদো। আমার ভীষণ খারাপ লাগছে। তবুও বললাম,

— তারপর?

— কিশোর বয়স হলেও মাথায় তখনও আমার ছোট ভাইয়ের কথা মনে ছিলো। ওকে কঠিন গলায় বলেছিলাম বাসায় ফিরে যেতে। আর বিয়েটা করে নিতে। আমি চাইলে বাল্য বিবাহের দায়ে বিয়েটা ভেঙে দিতে পারতাম। থানায় আমার একটা ইনফর্ম যথেষ্ট ছিলো বিয়ে ভাঙতে। কিন্তু মনটা সায় দেয়নি। কারণ এক গরীব বাবার মেয়ে বিদায় করতে কত দেনা করতে হয়, কতকিছু খোয়াতে হয় তা গ্রামে থাকতে নিজের চোখে দেখেছিলাম। আমাদের গ্রামের রাশেদ চাচার মেয়ের বিয়ে ভেঙে গিয়েছিলো যৌতুকের টাকা জোগাড় করতে না পারায়। তিনি সেই শোকে গলায় দড়ি দিয়েছিলো। কিন্তু তার স্ত্রী দেখে ফেলায় সে যাত্রায় মরতে পারেনি। আমার ভালোবাসার মানুষটা সেদিন কাঁদতে কাঁদতে বাসায় চলে গিয়েছিল। দুই দিন পর ওর বিয়ে হয়ে যায়। আজ থেকে ১৩ বছরের আগের কথা। ওর বড় মেয়ের বয়স ১১ বছর হয়ে গেছে। আর আমি এখনো বিয়ে না করা ২৯ বছরের ছেলে।বছর দুই আগে খবর নিয়ে জেনেছিলাম দুটো মেয়ে আছে। আরেকটা নাকি পেটে। এতদিনে নিশ্চয়ই পেটেরটাও এক দেড় বছরের হয়ে গেছে।

এনাজ কথা থামিয়ে আমার দিকে তাকালো।তার চোখ ছলছল করছে। ওপরের দিকে তাকিয়ে চোখের পানি আটকানোর চেষ্টা করতে লাগলো। আমি সাইড ব্যাগ থেকে টিস্যু বের করে তার দিকে বাড়িয়ে দিলাম। সে টিস্যু নিয়ে চোখের কোণায় জমে থাকা পানিগুলো মুছে নিলো।আসলে পৃথিবীটা বিশাল বড়। কত কত কাহিনি নিত্যদিন পৃথিবীর বুকে ঘটে যায়। তার কয়টা আমরা জানি। এনাজ আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললো,

—তারপর বহু বছর কাউকে আর ভালো লাগেনি। কিন্তু তারপর যেদিন আমি আমার ২য় ভালোবাসার মানুষটাকে দেখলাম তখন না চাইতেও নতুন করে আবার ভালোবাসায় জড়িয়ে গেলাম।

— দুজনের কাহিনি বললেন। কিন্তু একজনেরও নাম বললেন না। এটা কি ঠিক হলো?

— ক্লাশ টু-এর ঐ গুলুমুলু বাচ্চা মেয়েটার নাম মনে নেই। তবে প্রথম ভালোবাসার মানুষের নামটা মনে আছে। তাকে কখনো ভুলতে পারবো না। কারণ সে আমার প্রথম ভালোবাসা। তার নাম কি আমি ভুলতে পারি।

— তার নাম কি ছিলো?

— ফাহমিদা।

— ওহ আচ্ছা। তা ২য় ভালোবাসার মানুষটার কাহিনি বলবেন না?

— অন্য একদিন।

— তাহলে নামটা বলুন।

— সেটাও সময়মতো বলে দিবো। খুব শীঘ্রই তাকে প্রপোজ করবো। তখন তোমাকেও সাথে নিবো। তুমি নিজ চোখে দেখে নিয়ো।

তার কথায় ভীষণ হতাশ হলাম। বিষন্নতায় গ্রাস করলো আমায়। প্রথম ভালোবাসার কথা শুনে যতটা না খারাপ লাগছে তার বেশি খারাপ লাগছে ২য় জনের কথা ভেবে। সত্যি মেয়েটা ভীষণ লাকি। নয়তো তাকে কি এনাজ ভালোবাসতো। আমার কপাল খারাপ। আমার লাইফে ভালোবাসা বলতে কোন বস্তু ছিলো না। আর বোধহয় আসবেও না। একজন তো ধোকা দিলো,আরেকজনকে ভালোবাসতে নিয়েই জানতে পারলাম সে অন্য কারো। আমি চোখের পানিটা আড়াল করে দ্রুত পায়ে সামনের দিকে হাঁটতে লাগলাম। এনাজ আমার পিছন থেকে জিজ্ঞেস করলো,
— কি হলো তোমার?

— কিছু না। ভালো লাগছে না। ভাইয়াদের কাছে যাবো।

সবাই মিলে বেশ কিছু সময় রাস্তার দিকে ঘুরলাম। তারপর ফুচকার স্টল থেকে একসাথে সবাই হৈ-হল্লা করে ফুচকা খেলাম। তবে আমার কিছুই ভালো লাগছিলো না। মুখে মিথ্যে হাসি ঝুলিয়ে সারাটা সময় ছিলাম। এনাজের সাথে একটা কথাও বললাম না। ওকে একটু এড়িয়ে চললাম। দুইবার আমার সাথে কথা বলতে চাইলেও আমি কোন উত্তর দেইনি। ফুচকা খেয়ে বাইরে চলে এলাম। সবাই একসাথে হাঁটছি। তায়াং ভাইয়া আমাকে চুপচাপ থাকতে দেখে জিজ্ঞেস করলো,

— কি রে তোর কি হয়েছে?

নূর আপিও একি প্রশ্ন করলো,
— নোভি তোর কি হয়েছে?

আমি তাদের দিকে তাকিয়ে কৃত্রিম হাসি ঠোঁটে ঝুলিয়ে বললাম,
— কিছু না।

তন্বী আমার হাত ঝাঁকিয়ে বললো,
— তাহলে এতো চুপচাপ কেন তুমি নোভাপু? নিশ্চয়ই তোমার কিছু হয়েছে। বলো না?

— এমনি ভালো লাগছে না।

তায়াং ভাইয়া এনাজকে জিজ্ঞেস করলো,
— তোর সাথে কিছু হয়েছে এনাজ? তুই কি কিছু বলেছিস?

এনাজ একবার আমার দিকে তাকিয়ে তায়াং ভাইয়াকে বললো,

— আমার সাথে ওর কিছুই হয়নি। আমরা তো একসাথে কথা বলছিলাম।হঠাৎ করে ওর জানি কি হলো। আমিও বুঝতে পারলাম না।

সবাই জিজ্ঞেস করছে কি হয়েছে, কি হয়েছে। আনার একটাই উত্তর কিছু না। সবাই জিজ্ঞেস করতে করতে হয়রান হয়ে জিজ্ঞেস করাই বন্ধ করে দিলো। সবাই হাঁটছে। আমি কিছুটা পেছনে পরে গেছি। হিল জুতার ফিতাটা কিছু সময় পরপর খুলে যাচ্ছে। যার জন্য হাঁটতে সমস্যা হচ্ছে। সেটাকে উবু হয়ে লাগাতে গিয়ে বারবার পেছনে পরে যাচ্ছি। আজ যে বোরখাটা পড়েছি সেটা আমার থেকে এক সাইজ লম্বা। ভেবেছিলাম কেটে-ছেটে, সেলাই করে এক সাইজ ছোট করবো। কিন্তু তাতে নিচের ডিজাইন নষ্ট হয়ে যাবে।স্লিপার জুতো পরলে বোরখা মাটিতে হিচড়ায়। তাই এর সাথে আমি সবসময় হিল নয়তো উঁচু গোড়ালির জুতা পরি। কিন্তু এরকম বিপদে আগে কখনো পরিনি। ভীষণ বিরক্ত লাগছে। একবার চিন্তা করলাম জুতো খুলে হাতে নিয়ে হাঁটবো। আরেকবার ভাবি থাক দরকার নেই। কিছু সময় পর পর সবাই একসাথে রাস্তায় আমার জন্য দাঁড়িয়ে রইছে। তাদের দাঁড় করে রাখতেও আমার ভালো লাগছে না। আরেকবার জুতার ফিতাটা লাগিয়ে একটু হাঁটতেই আবার খুলে গেলো। ফিতে না লাগালে হাটা যায় না। জুতো খুলে চলে আসে।ভীষণ রাগ হচ্ছে। মনে মনে ভাবলাম এটাই শেষ। আর লাগাবো না। এরপর যদি খুলে যায় তাহলে জুতা খুলে এখানেই ছুড়ে ফেলে দিবো। যেমন ভাবা তেমন কাজ।উবু হয়ে আবার জুতোর ফিতা ঠিক করে লাগতে নিলাম। তখুনি এনাজ সামনে এসে জিজ্ঞেস করলো,

— জুতায় কি সমস্যা?

—😶

— কি ব্যাপার কথা বলছো না কেন? তখন থেকে দেখছি আমাকে এভয়েড করছো ঘটনা কি?

— কিছু হয়নি। আপনি যান আমি আসছি।

— আমি তো দেখতে পাচ্ছি কিছু হয়েছে।

আমি কথা না বলে জুতার ফিতাটা আটকাতে ব্যস্ত হয়ে পরলাম। উনি এগিয়ে এসে হুট করে আমায় কোলে তুলে নিলো। আমি বিস্মিত চোখে তার দিকে তাকালাম। সে কোন কথা না বলে সামনে দৃষ্টি রেখে চুপচাপ হাঁটতে লাগলো। আমি চেচিয়ে বললাম,

— আরে করছেন কি নামান? কেউ দেখলে খারাপ বলবে। প্লিজ নামান।

—আরেকটা কথা বলবে ধপাস করে নিচে ফেলে দিবো। তোমার বারবার জুতোর ফিতা লাগানোর জন্য এতবার দাঁড়িয়ে থাকার থেকে তোমাকে এভাবে নেওয়াই বেটার।

ফেলে দেওয়ার কথা শুনে আমি চুপ হয়ে গেলাম। ভাইয়াদের সামনে যেতেই দেখলাম সবাই আমাকে এভাবে দেখে মিটমিট করে হাসছে। আমি এনাজকে আরেকবার কোলের থেকে নামাতে বলতেই সে চোখ রাঙিয়ে তাকালো। যা দেখে আমি পুরো চুপ হয়ে গেলাম। সত্যি যদি ফেলে দেয় তাহলে আমার কোমড় শেষ।
#শিশির_ভেজা_রোদ্দুর
#Part_32
#Writer_NOVA

দুপুরের খাবার টেবিলে সব গোল করে বসে আছে। আমি চেয়ার টেনে নূর আপির সাথে বসতে নিলেই তায়াং ভাইয়া আমার থেকে চেয়ার কেড়ে নিয়ে নিজে বসে পরলো। আমি রেগে ওর দিকে তাকিয়ে এনাজের পাশের চেয়ারে ধপ করে বসলাম। ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে শয়তানি হাসি দিলো। আমি বিরবির করে ওকে বকে প্লেটটা ঠাস করে আমার সামনে রাখলাম। আজ কলেজ বন্ধ। আগামীকাল নূর আপি, মামী চলে যাবে। তাই সব একসাথে হৈ-হুল্লোড় করে বাসা মাতিয়ে ফেলেছি। ইফাত একবার উঁকি মেরেছিলো। তবে বেশি সুবিধা করতে পারেনি বলে ছুটে পালিয়েছে। মামী, খালামণি আমাদের খাবার বেড়ে দিচ্ছে। হঠাৎ পায়ের মধ্যে লাথি পরতেই আল্লহ গো বলে চেচিয়ে উঠলাম। সব ব্যস্ত হয়ে গেলো। মামী এগিয়ে এসে বললো,

— কি হলো আবার আমার বড় ভাগ্নির?

খালামণি পানির জগ নিয়ে এগিয়ে এলো। পায়ে পানি ডলতে বলে বললো,
— কিসের সাথে ব্যাথা পেলি? নে পানি ডলে দে।

তায়াং ভাইয়া শয়তানি হাসি দিয়ে বললো,
— লেদি তো। নিশ্চয়ই চেয়ারের সাথে ব্যাথা পাইছে।

আমি ওর দিকে একটা খাইয়া ফালামু লুক দিলাম। আমার বরাবরি ও বসছে। আর লাথিটা যে ভাইয়া দিয়েছে তাতে আমি ড্যাম সিউর। ওর শক্ত হাড্ডির পায়ে ভীষণ ব্যাথা পেয়েছি। আজ সারাদিন ধরে শুধু শুধু আমার সাথে লেগে রয়েছে। আমি এনাজের কারণে ওকে কিছু বলতেও পারি না। আবার সইতেও পারি না।এনাজ এগিয়ে এসে আমার পায়ে পানি দিয়ে ডলতে লাগলো। সাথে ইচ্ছে মতো আমাকে বকে ধুয়ে দিলো।

— কোন দিকে ধ্যান থাকে তোমার টিডি পোকা? এখানে খেতে বসছো ঠিকমতো বসে থাকবা। তা না করে এখানেও লাফাতে হবে। আর কোথায় লেগেছে বলো?

— আরে আরে আপনি আমার পা ধরছেন কেন?

— চপ।

তার রামধমকে আমি চুপ হয়ে গেলাম। যদিও আজ প্রথম সে আমার পায়ে হাত দিচ্ছে না। তবুও বিষয়টা দৃষ্টিকটু দেখায়।সব মিলে আমাকে বকতে লাগলো। নূর আপি দৌড়ে ফ্রিজ থেকে বরফ নিয়ে এলো। এনাজকে বরফ দিয়ে বললো,

— ভাইয়া বরফ ধরেন।

এনাজ নূর আপির থেকে বরফ নিয়ে পায়ে ডলতে লাগলো। আমার লাগছে সুড়সুড়ি। একে তো সে আমার বড় হয়ে আমার পা ধরেছে। তাতে কিরকম অস্বস্তি লাগছে। আর বরফের ঠান্ডায় পায়ে সুড়সুড়ি লাগছে। তাই আমি বারবার পা সরিয়ে নিচ্ছিলাম। এনাজ জোরে ধরে বরফ ডলতে ডলতে বললো,

— আরেকবার পা সরালে আমার থেকে খারাপ আর কেউ হবে না।

— এনজিও সংস্থা আপনি আমার পা ছাড়েন। আমার সুড়সুড়ি লাগছে তো আমি কি করবো?

— চুপচাপ বসে থাকো। ব্যাথা পাওয়ার সময় তো মনে থাকে না। এখন এতো সমস্যা কেন?

আমি চুপ হয়ে গেলাম। একে পা ছাড়তে বললেও কোন লাভ হবে না। তন্বী মুখ টিপে হেসে বললো,
— আমি জানি কে করেছে।

আমি মুখ ঝামটা মেরে বললাম,
— চুপ থাক শয়তান ছেমড়ি। তুই আর কথা বলিস না। সবাই আমাকে বকতে আরম্ভ করেছে। অথচ আমাকে যে তায়াং ভাইয়া এতো জোরে লাথি মারলো তার কি হবে? তাকে কিছু বললে না। তোমরা সবাই আমাকে বকার জন্য ছুতো খুঁজো।

তায়াং ভাইয়া অবাক হওয়ার ভান করে বললো,
— আমি তোকে কখন মারলাম? কোন প্রমাণ আছে যে আমি তোকে মেরেছি? প্রমাণ ছাড়া কথা বলিস না।

আমি দুই হাতে মোনাজাত ধরে চেচিয়ে বললাম,
— আল্লাহ তোমার কাছে বিচার দিলাম। তায়াং ভাইয়ারে তুমি শায়েস্তা করো।(তন্বীর দিকে তাকিয়ে) ঐ ছেমড়ি মোনাজাত ধর।

আমার কাহিনি দেখে সবাই মিটমিট করে হাসতে লাগলো। তায়াং ভাইয়া সবে কিছু বলতে মুখ খুলতে নিয়েছিলো। নূর আপির এক ধমকে চুপ হয়ে গেলো।

— তানভীর ভাইয়া আপনি আরেকটা কথা বললে আপনাকে এখানে রাখা হবে না। নিচে বসিয়ে আপনাকে খাবার দেওয়া হবে।

তায়াং ভাইয়া ইনসেন্ট ফেস করে বললো,
— কিনু🥺?

নূর আপি আবার ধমকে বললো,
—আবার কথা বলেন।

তায়াং ভাইয়া ঠোঁটে আঙুল রেখে বাচ্চাদের মতো আধো সুরে বললো,
— আত্তা আমি তুপতাপ🤫।

তায়াং ভাইয়ার কান্ড দেখে আমার হাসি পেলো। তবে না হেসে আমি একটা ভেংচি কেটে অন্য দিকে তাকিয়ে রইলাম। এনাজ বরফ ডলা শেষ করে বেসিন থেকে হাত ধুয়ে এসে আমার পাশে বসলো। আমি মনে মনে ফন্দি এঁটে ফেলেছি। আজ তায়াং ভাইয়ার খবর আছে। মামী, খালামণি কিচেন থেকে খাবার নিয়ে এসে সবাইকে সার্ভ করে দিতে লাগলো।

💖💖💖

সবাই চুপচাপ খাচ্ছি। তায়াং ভাইয়া আমাকে জ্বালানো শুরু করেছে। এই মনে করলেন মাছের কাটা ছুড়ে মারে, মাঝে মাঝে পানির ছিটা মারে। কিংবা পা দিয়ে খোঁচা মারে। আজ ওর মধ্যে শয়তানি আত্মা ভর করেছে। প্রতিদিন আমার ওপর ভর করে। আজ আমার ওপর ভর না করে ওর কাছে চলে গেছে। দুষ্টামী করে আবার ভ্যাবলাকান্তের মতো দাঁত কেলাচ্ছে। মামী গোশতের তরকারি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তায়াং ভাইয়ার সামনে গিয়ে বললো,

— তানভীর, গরুর গোশতের তরকারি দিবো।

আমি মনে মনে ভাবি এই তো আমার সুযোগ। এই সুযোগ তো হাতছাড় করা যাবে না। ফট করে বলে উঠি,

— মামী ওকে গোশত দিয়েন। ওর এলার্জীর সমস্যা। গরুর গোশত খেলে শরীর অনেক চুলকায়। তবে আপনি চাইলে ওকে মূলা দিয়ে যে শুটকি রান্না করেছেন সেই তরকারি দিন। ভাইয়ার তো মুলা অনেক পছন্দ। ভাইয়ার মুলা তরকারি পেলে আর কিছু লাগে না। এখন যদিও মুলার সিজন নয়। কিন্তু পরশু চড়া দামে যে হাইব্রিড মুলাগুলো খালামণি বাজার থেকে কিনে এনেছিলো সেগুলো ওর জন্য কিনে আনছিলো। ভাইয়া কবের থেকে বলছে আম্মু মুলার তরকারি রান্না করো। তার জন্য তো আজকে রান্না করছে।

ভাইয়া রেগে আমার দিকে তাকালো। আসলে তায়াং ভাইয়া মুলার গন্ধই সহ্য করতে পারে না। মুলা খাওয়াতো দূরে থাক। যেদিন বাসায় মুলার তরকারি রান্না হবে সেদিন ভাইয়া বাসায় খাবে না। তাই খালামণি বাসায় এই সবজিটা আনেই না। খালামণি শুধু তার জন্য আধা কেজি মুলা এনেছিলো।তা দিয়ে তরকারি রান্না করেছে। তাও শুধু তার একার জন্য।তন্বী মিটমিট করে হেসে কিছু বলতে চাইলে আমি ওকে ইশারায় চুপ করে থাকতে বলি। তন্বীও চুপ হয়ে যায়।আমার সাথে সুর মিলিয়ে বলে,

— হ্যাঁ মামী। আমার ভাইয়া মুলার তরকারি অনেক পছন্দ করে। আপনি ভাউয়াকে অন্য কোন তরকারি দিয়েন না। শুধু মুলাই দেন।

মামী তো আমাদের কথা সত্যি ভেবে নিলো। মুলার তরকারির বাটি হাতে নিয়ে বাটির অর্ধেক ভাইয়ার প্লেটে তুলে দিলো। ভাইয়া চোখ বড় বড় করে তার প্লেটের দিকে তাকিয়ে রইলো। খালামণি নামাজ পরতে চলে গেছে। সে থাকলে এই শয়তানি করতে পারতাম না। এনাজ ভ্রু কুঁচকে তায়াং ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করলো,

— কিরে তায়াং তোর আবার এই তরকারি কবের থেকে এতো ফেভারিট হলো? আমি তো জানতাম না। তুই সত্যি আমাদের তায়াং তো। যে কিনা……. আউচ।

এনাজ পুরো কথা শেষ হওয়ার আগে আমি আমার বা হাত দিয়ে তার বা হাতে একটা চিমটি মারলাম। সে আউচ বলে আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
— চিমটি মারো কেন?

— এদিকে আসেন। কানটা এদিকে বাড়ান। আপনার সাথে আমার কথা আছে।

— কি কথা?

এনাজ কান বাড়িয়ে দিতেই আমি বললাম,
— তায়াং ভাইয়াকে জ্বালাচ্ছি। একদম ওর পক্ষ নিবেন না। তাহলে কিন্তু ঐ পুরো বাটি মুলার তরকারি আপনাকে খাওয়াবো।

— না না। আমার মুলা পছন্দ নয়। আমি আর কিছু বলবো না।

তায়াং ভাইয়া হুংকার মেরে বললো,
— তোরা ফিসফিস করে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছিস তাই না? একবার শুধু অপেক্ষা কর শাঁকচুন্নি। তোর খবর আছে।

তায়াং ভাইয়া কাঁদো কাঁদো মুখে প্লেট থেকে এক টুকরো মুলা নিয়ে মুখে দিলো। বেচারার বোধহয় ভেতর থেকে সবকিছু গুলিয়ে আসছে। একবার মুখ বাঁকিয়ে এক হাতে মুখ আটকে রাখলো। এখন বেচারা পারছে না উঠে যেতে। কোনরকম সেটাকে গিলে আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
— হাতি ফাঁদে পরলে চামচিকাও লাথি মারে।

নূর আপি মিটমিট হেসে তাকে বললো,
— তানভীর ভাইয়া আপনার না এতো পছন্দ। তাহলে খাচ্ছেন না কেন?

আমি তায়াং ভাইয়াকে এক চোখ মেরে নূর আপিকে বললাম,
— এত কম দেখে ভাইয়া বোধহয় খেতে চাইছে না। মামী ওকে পুরো বাটির তরকারি দেন। নয়তো ভাইয়া আজ ভাত খাবে না।

মামী তায়াং ভাইয়াকে বললো,
— তানভীর আরো তরকারি লাগবে।

তায়াং ভাইয়া মাথা উঁচু করে কাঁদো কাঁদো মুখে প্লেটের ভাত নাড়তে-চাড়তে বললো,
—না মামী😵।

আমি শয়তানি হাসি দিয়ে চেচিয়ে বললাম,
— আরে ভাইয়া লজ্জা পাস কে? আমরা আমরাই তো। আহারে ভাই আমার। বেচারা এত দিন পর প্রিয় খাবার দেখে খুশিতে বোধহয় চোখে পানি চলে আসছে। খুশিতে খেতেই পারছে না।ভাইয়া তুই দেখিয়ে দে তুই সব তরকারি শেষ করে দিবি। তায়াং ভাইয়া কাউকে ভয় পায় নাকি।

এনাজ বললো,
— হ্যাঁ, তায়াং দেখিয়ে দে। তুইও পারিস।

তায়াং ভাইয়া মাথা উঠিয়ে কটমট করে এনাজের দিকে তাকিয়ে বললো,
— শালা,তুইও ওদের মতো শুরু করছিস।

এনাজ দাঁত বের করে একটা হাসি দিলো। আমরা সবাই মিটমিট করে হাসছি। মামী ডাল আনতে কিচেনের দিকে চলে গেল। তায়াং ভাইয়া আমাদেরকে হাসতে দেখে আরো রেগে গেলো। অল্প একটু ভাতের সাথে মুলার তরকারি মেখে মুখে দিতেই ওয়াক ওয়াক করে মুখে হাত দিয়ে বেসিনের দিকে ছুটলো। একদম ঠিক হয়েছে। এবার বোঝ মজা। আমার সাথে লাগার মজা এবার হারে হারে টের পাবি। ভাইয়া উঠে বেসিনের দিকে যেতেই খাবার টেবিলে উচ্চ হাসির রোল পরলো।

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here