সুপ্ত অনুভুতি পর্ব ১১+১২

#সুপ্ত_অনুভূতি🍂♥️
#পর্ব_১১
#Writer_Nusrat_Jahan_Sara

সিলেট থেকে ঢাকায় এসেছি আজ দুইদিন হয়ে গেছে৷ অদ্রিতা আপুর বিয়ের আর মাত্র ছয় দিন বাকি আছে৷ অথচ এখনো কোন কেনাকাটা হয়নি৷ তাই আজ সবাই শপিংয়ে এসেছি৷ আমাদের সবার কেনাকাটা কমপ্লিট অথচ আদিব ভাইয়া মেয়েদের মতো একটার পর একটা ড্রেস দেখেই যাচ্ছে৷ ভাইয়াকে শপিংয়ে নিয়ে এলে এই সমস্যা প্রথমে জীবনেও কিছু চয়েজ করবেনা পরে আসার সময় হাতের কাছে যা পাবে তাই কিনবে চয়েজ হোক বা না হোক৷আদিব ভাইয়া প্যান্ট হাতে নিয়ে উল্টে পাল্টে দেখছে৷ কোথা থেকে একটা মেয়ে এসে ভাইয়ার হাত থেকে প্যান্ট ছো মেরে নিয়ে নিলো৷

“আরেহ্ বাহ প্যান্টটা তো দারুণ!!! আমি এইটা নিবো৷
.
এই যে মিস অচেনা এটা আমি আগে চুজ করেছি ওকে তাই প্যান্টটা দিয়ে দিন আমি নিবো এটা৷
.
আমার নাম আছে তাই অচেনা অজানা বলে ডাকবেননা৷
.
তা কী নাম আপনার শুনি৷
.
আমার নাম ফারিহা ইসলাম মেঘা৷ সবাই ফারিহা বলে ডাকে৷
.
আচ্ছা৷ প্যান্টটা এবার দিয়ে দেন৷
.
বললাম তো আমি এটা নিবো কথা কানে যায়না আপনার৷
.
আর ইউ মেড৷ আপনি তো হান্ড্রেড পারসেন্ট মেড তা না হলে ছেলেদের প্যান্ট কোনো মেয়েরা নেয় নাকি৷বাইরে দোকানের নাম দেখেননি বড় বড় করে লিখা আছে জেন্টস৷ আর আমি এখুনি এই মুহুর্তে পাবনায় ফোন দিচ্ছি আর তাদের বলছি যে আপানাদের পাগলাগারদ থেকে একটা পাগল পালিয়ে এসেছে৷ আর সে এখন মর্ডান হওয়ার চেষ্টা করছে৷
.
আমার কথা বললে নিজের কথাটাও একটু বইলেই কেমন৷আপনি নিজে ওতো পাবনা থেকে পালিয়ে এসেছেন৷ ইউ নো ওয়াট এক পাগল আরেক পাগলকে খুব সইজেই চিনে ফেলে৷ আর আপনি ওতো একটা পাগল আর আমার কী মনে হয় জানেন আপনি পাবনার পাগলাগারদে ছিলেন তাই আমি কোথা থেকে এসেছি সেটা খুব সহজেই বুঝতে পেরে গেছেন,রাইট৷ আশ্চর্য আমি কী একবারো বলেছি যে আমি এটা আমার জন্য নিবো৷ এটাতো আমি আমার ভাইয়ার জন্য নিবো গিফ্ট করবো বলে৷ পাগল আমি না আপনি৷ পাগলা কোথাকার৷
.
হেই ইউ মাইন্ড ইউর লেঙ্গুয়েজ৷ আমার মতো হ্যান্ডসাম ড্যাশিং বয়কে আপনার কাছে মেড মনে হচ্ছে৷ ওহ মাই গডন্যাস৷কোথায় যাই আমি৷
.
লিসেন,এক কাজ করেন আপনার ড্যাশিং হ্যান্ডসাম বরং আপনার পকেটে রাখেন৷ এসব অন্য মেয়েকে দেখাবেন কেমন৷ যত্তসব৷
.
আদিবও মেয়েটির হাত থেকে প্যান্ট টান মেরে নিয়ে নিলো৷

“মামা এটার দাম কত৷
.
চার হাজার পাঁচশো৷
.
এই নিন পাঁচহাজার বাকি পাঁচশো অন্য একদিন এসে নিয়ে যাবো৷
.
আয়েশাঃহুম তারপরও আদিব পাঁচশো টাকা ছাড়বেনা৷
.
মামা এটার মতো সেম আরেকটা হবে৷
.
না আর নেই একটাই ছিলো৷
.
মেয়েটা আদিবের দিকে শক্ত চোখে তাকিয়ে বললো,
আপনাকে আমি দেখে নিবো৷
.
কচু দেখবে৷
.
আদিব ভাইয়াকে আমরা এই প্রথম কোনো মেয়েদের সাথে ঝগড়া করতে দেখেছি তাও মেয়েদের মতো৷ এতোদিন তো আহিল ভাইয়া মেয়েদের সাথে ঝগড়া করতো এবার আদিব ভাইয়া হিহিহিহি৷
🍁🍁🍁🍁
শপিং করা শেষ অথচ সামান্তা আর আদনান ভাইয়ার কোনো খুঁজ নেই৷ এই দুজন ভালোই প্রেম করছে৷ শুধু প্রেম নাই আমার কপালে৷ তাতে কী আমার জন্যও এমন কেউ আসবে যে আমাকে পাগলের মতো ভালোবাসবে ওদের সবার ভালোবাসাকেও হার মানাবে৷ যে আমাকে একমুহূর্তের জন্যও একা ছাড়বেনা ছায়ার মতো পাশে থাকবে৷ প্রটেক্ট করবে৷ আচ্ছা আমি যা ভাবছি সত্যি যদি এমন কেউ আসতো৷ আমার কেন জানিনা এসব মনে হলেই আদিল ভাইয়ার কথা মনে পড়ে৷ শুধু এটাই মনে হয় আমার সব চাওয়া পাওয়া আদিল ভাইয়াকে ঘিরে৷ভাইয়াকে না দেখলে একদম ভালো লাগেনা আমার৷ এই দুইদিন আমি ভাইয়ার চেয়ে আড়ালে আড়ালে থেকেছি৷ তাও আমাদের প্রায়ই চোখাচোখি হয়েছে৷ যখনই ভাইয়ার দিকে তাকাই তখুনি দেখি ভাইয়ার মুখে মিষ্টি হাসি লেগে আছে৷ প্রতিটি রাত আমি ভাইয়াকে নিয়ে ভাবি এখন৷ ভাইয়ার হাসি মাখা মুখ চোখ বুঝলেই অন্ধকার এক দেয়ালে বিশাল ছবির মতো ভেসে উঠে যেটা শুধুমাত্র আমিই দেখি৷ এগুলো কী শুধুই অনুভূতি নাকি ভালোবাসা৷
আদিব ভাইয়ার ধাক্কাতে হুস আসলো আমার৷

আদিবঃতুই এখানে স্ট্যাচুর মতো দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কী ভাবছিস৷
আদনান ভাইয়া আর সামান্তাকে পেয়েছিস???
.
না তো আচ্ছা আমি সামনে এগিয়ে দেখছি৷ তা আয়েশা আপু আর অদ্রিতা আপু কোথায়৷
.
ওরা জুয়েলারি কিনছে৷
.
আচ্ছা
আমি এগিয়ে গেলাম সামনে রাস্তা ঘাটের দিকে ভালো করে তাকাচ্ছি কিন্তু কোথাও কেউ নেই৷ রোডের বাম পাশে তাকাতেই দেখলাম সামু কাঁদতে কাঁদতে দৌড়ে আসছে৷ আর ওর পিছুপিছু আদনান ভাইয়া৷
সামু আমাকে দেখে দৌরে এসে জড়িয়ে ধরে ফুপিয়ে কেঁদে দিলো৷

“সামু কী হয়েছে তোর? আর ইউ ওকে?
.
রুহি,, রুহি আদিল ভাইয়া এক্সিডেন্ট করেছে৷
.
কীহ!!!! কিন্তু কিভাবে৷
.
কার দিয়ে৷ ভাইয়ার সারা শরীর জখম হয়ে গেছে৷ ভাইয়ার অবস্থা খুব ক্রিটিকাল৷
.
আদিল ভাইয়ার কথা শুনে আমার চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পরছে৷ দম বন্ধ হয়ে আসছে আমার৷ সামুর কাছ থেকে হসপিটালের নাম জেনে আর না দাঁড়িয়ে চলে গেলাম হসপিটালে৷ পিছন থেকে সামু অনেকবার ডেকেছে কিন্তু পাত্তা দেইনি আমি৷ আমার মনে হচ্ছে আমার কলিজা কেউ ছিনিয়ে নিচ্ছে৷ কেন এমন হচ্ছে কিচ্ছু বুঝতে পারছিনা আমি আর বুঝতে চাইওনা৷
আমি সারা হসপিটালের করিডোর দিয়ে দৌড়াচ্ছি আর ডক্টর নার্সকে পেলে জিজ্ঞেস করছি তারা কেউ আদিল নামের কাউকে এডমিট করেছে কী না৷ কিন্তু সবাই না করছে৷
আমি কিছু বুঝে উঠতে পারছিনা৷ আদিল ভাইয়া কোথায় থাকতে পারে৷ আমি পিছন ঘুরতেই কারও বুকের সাথে ধাক্কা খেলাম মুখ মুখ তুলে ব্যাক্তিটির চেহারা দেখে চমকে উঠলাম আমি৷আদিল ভাইয়া আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে৷ একেবারে সুস্থ শরীরে৷ তারমানে সামু তখন যে বললো ভাইয়া এক্সিডেন্ট করেছে৷ কিন্তু ভাইয়াতো আমার সামনে সুস্থ শরীরে দাঁড়িয়ে আছে৷একেবারে ফিট৷ তারমানে সামু মিথ্যা বলেছে৷ কিন্তু কেন?

ভাইয়া তুমি নাকি এক্সিডেন্ট করেছো?
.
হ্যাঁ৷
.
তাহলে তুমি যে আমার সামনে সুস্থ শরীরে দাঁড়িয়ে আছো৷
.
তোর কী মনে আমি মরে যাই৷
.
ভাইয়ার মুখে মরার কথা শুনে খুব কষ্ট লাগলো আমার৷ এসব কী বলছে ভাইয়া৷ আমি কখনো এসব ভাবতে পারি নাকি৷
.
সামান্তা যে বললো তুমি এক্সিডেন্ট করেছো আর সারা শরীর নাকি জখম হয়ে গেছে আর তোমার অবস্থা নাকি ক্রিটিকাল৷
.
হুম আমি এক্সিডেন্ট করেছি৷ শুধু হাতে আর বুকে একটু ব্যাথা পেয়েছি৷তবে হসপিটালে এডমিট হইনি৷ সামান্তা মিথ্যা বলেছে তোকে৷
.
আমি ভাইয়ার কথা শুনে হাতের দিকে তাকালাম সত্যি হাতে ব্যান্ডেজ করা৷ সাদা শার্টও রক্তে লাল হয়ে আছে অনেক জায়গায়৷ যা আগে আমার চোখে পড়েনি৷ আমি আর কিছু না ভেবে ভাইয়ার বুকে ঝাপিয়ে পড়লাম৷ চোখ থেকে পানি ঝর ঝর করে পরছে৷ বেশ কিছুক্ষন পর এভাবেই থাকার পর অনুভব করলাম ভাইয়া আমার পিটে হাত রেখেছে৷

তুই যে আমার জন্য এতো পাগল সেটা যদি আজ এক্সিডেন্ট না করতাম তাহলে জানতেই পারতাম না৷ ভাগ্যিস মারা যাইনি নাহলে তোর পাগলামুটা যে দেখতে পারতাম না৷
.
প্লিজ স্টপ টকিং ননসেন্স,ইট হার্টস টু হেয়ার ইউ ডাই৷ ড্যাম ইট!!!!
.
আমার মুখে মরার কথা শুনলে তোর কষ্ট হয়৷ কিন্তু কেনো??
.
কারন আমি তোমাকে ভালোবাসি৷
কথাটা বলার সাথে সাথেই ভাইয়া আমায় টাইট করে জড়িয়ে ধরলেন৷ আমার যখন মনে হলো আবেগের বশে আমি কী বলে ফেলেছি সাথেসাথেই আমি ভাইয়াকে ছাড়িয়ে দূরে সরে এলাম৷
.
ছিঃ রুহি৷ সত্যি তুই পাগল হয়ে গেছিস৷ নিজের মনের অনুভূতিগুলো প্রকাশ না করলে কী এমন হয়ে যেতো৷ এখন ভাইয়া কী ভাববে আমাকে৷ ধুর ধুর৷

“হয়েছে নিজেকে আর গালাগাল করতে হবেনা৷ তা আমার কাছ থেকে উত্তর নিলি না তো যে আমি তোকে ভালোবাসি কী না৷
.
তার দরকার নেই আমি জানি৷
.
কী জানিস??
.
জানি এটাই তুমিও আমাকে ভালোবাসো৷
কথাটা বলে হনহনিয়ে চলে এলাম সেখান থেকে৷ ভাগ্যিস তেমন কেউ ছিলোনা৷ লাঞ্চ টাইম হওয়াতে সবাই লাঞ্চ করায় ব্যাস্ত৷
আমি সিএনজিতে উঠতে যেতেই ভাইয়া আমাকে টেনে নিয়ে কারে বসিয়ে দিলেন৷ আমি এক দৃষ্টিতে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছি৷ ভাইয়ার দিকে আর তাকাতে পারবোনা৷ ভিষন লজ্জা করছে৷

আদিল ড্রাইভ করছে আর আরুহির দিকে তাকাচ্ছে৷
সামু মিথ্যা কথা বলে এক কাজ ভালোই করেছে৷ রুহি আমি তোকে সবার আগেই মনের কথা বলতাম কিন্তু তোর কাছে যে আমি অপরাধী ছিলাম৷ সেদিনের পর থেকে তোর সামনে যেতেও আমার লজ্জা করতো৷ কি অন্যায়টাই না করেছিলাম রাগের বশে তোর সাথে৷ আমি এটাই চাইছিলাম যাতে তুই আমাকে তোর মনের কথা বলিস৷আর আমি এই কয়েকদিন ধরেই দেখছি তুই আমার দিকে তাকিয়ে সাথেসাথে চোখ সরিয়ে নিস৷ কিন্তু সেটা ঘৃণার নয় লজ্জার৷ অনেকদিন তোর থেকে দূরে দূরে থেকেছি কিন্তু আর নয় খুব শীঘ্রই তোকে আমার করে নিবো রুহি৷
#সুপ্ত_অনুভূতি🍂♥️
#পর্ব_১২
#Writer_Nusrat_Jahan_Sara

আদিল ভাইয়া শপিংয়ে না গিয়ে আমাকে নিয়ে সোজা বাসায় চলে এলো৷আমি গাড়ি থেকে নেমে ভাইয়ার দিকে না তাকিয়েই দৌড়ে নিজের রুমে চলে এলাম৷ এরপর ভাইয়ার দিকে তাকালেও আমার লজ্জা লাগবে৷ আজকের কথা যতবারই মনে হচ্ছে ততবারই ব্লাশিং হচ্ছি৷ দরজা বন্ধ করে শুয়ে পরলাম৷ আজ আর ওত সহজে ভাইয়ার সামনে যাবোনা বাবা৷
🍁🍁🍁
আদিল নিজেকে আয়নায় দেখছে আর মিটিয়েমিটিয়ে হাসছে৷ সে ভাবতেই পারছেনা আরুহি ওকে এতো তারাতাড়ি মনের কথা বলে দিবে৷
মনের সুখে শাওয়ার সেরে ছাঁদে গেলো৷ আজ সে তার অনুভূতি প্রকৃতির সাথে শেয়ার করবে৷
ছাঁদের রেলিঙে পিঠ টেকিয়ে চারপাশ দেখছে আদিল৷ আর আজকের কথা মনে হলেই মাঝেমধ্যে মুচকি হাসছে৷
🍁🍁🍁🍁
রাতে বসে বসে কাসেম বিন আবুবাকারের প্রেম ও বিরহ উপন্যাসটা পড়ছিলাম৷ কোথা থেকে আদিব ভাইয়া দৌড়ে এসে বললো,বিনোদন দেখবি চল৷

“বিনোদন, কিসের বিনোদন?
.
চল গেলেই দেখতে পাড়বি৷
.
আমি উপন্যাসটা রেখে আদিব ভাইয়ার পিছু পিছু গেলাম৷ ভাইয়া সোজা আদনান ভাইয়ার রুমে ঢুকলো৷ আমি গিয়ে যা দেখলাম তাতে ৪৪০ ভোল্টের শক না খেয়ে পাড়লাম না৷ আদনান ভাইয়া আর আহিল ভাইয়া আয়েশা আপু আর অদ্রিতা আপুর থ্রি_পিস পড়ে নাচতেছে৷

আদনানঃওহো ইস্কমে দিলবার দেদিনা,দেদিনা মাই দেদিনা৷
.
আদিবঃও আল্লাগো এই পাগল দুইটায় এসব কী উল্টা পাল্টা গান গাইছে৷
.
আহিলঃজানে মন দুই জীবন
.
আরুহিঃ হিন্দির মাঝে বাংলা কোথা থেকে আসলো৷ তাও তুই জীবন না দুই জীবন হাহাহা৷
.
আদনানঃমে ইতনি সুন্দর হুমে কিয়া কারু কারু কারু কারু৷

সামান্তার হাসির আওয়াজ পেয়ে পাশে তাকাতেই দেখলাম সে দরজার চিপায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভিডিও করছে আর হাসছে৷ সে ভিডিওগুলো রিংকিকে দিবে৷

ভাইয়ারা ইচ্ছামতো নেচে তারপর থামল৷ তারাতাড়ি করে ড্রেস খুলে ফেললো৷ আহিলের চোখ গেলো আদনানের ড্রেসের দিকে৷ বেচারা নাচতে নাচতে ড্রেসের সেলাই ছুটিয়ে ফেলসে৷

আহিলঃভাইয়া ড্রেসের সেলাইতো ছুটে গেসে এখন কী করবা৷ অদ্রিতা আপুর যে রাগ তোমাকে বিনা মশলাতেই কাচা চিবিয়ে খাবে৷
.
আদনানঃপ্লিজ ভয় দেখাস না৷ রুহি প্লিজ বোন আমার ড্রেসটা সেলাই করে দে৷
.
আরুহিঃআমি কেনো দিবো তোমার উড বি ওয়াইফাই আছেতো তাকে বলো৷
.
সামান্তাঃআমি পারবোনা আমি গেলাম৷ নাচার সময় খেয়াল ছিলোনা হুহ৷
.
আরুহিঃআমিও গেলাম৷
.
আদনান না পেড়ে শেষে একটা সুই সুতা নিয়ে বসলো৷ তারমধ্যে আবার গোল্ডেন কালার ড্রেসের সাথে কালো সুতা দিয়ে সেলাই করছে৷ ইয়া বড় বড় সেলাই৷
সেলাই করে আবার আগের জায়গায় রেখে দিয়েছে৷
🍁🍁🍁
আদনান ভাইয়ার রুম থেকে আসার সময় আদিল ভাইয়ার সাথে চোখাচোখি হয়ে গেলো আমার৷ আমি ভাইয়ার পাশ কেটে যেতেই ভাইয়া আমার হাত ধরে টেনে উনার সামনে দাঁড় করালেন৷

“কী সমস্যা তোর৷
.
কোনো সমস্যা নেই৷
.
তাহলে কেনো ইগনোর করছিস আমায়৷
.
কই ইগনোর করছি৷
.
চল আমার সাথে৷
আদিল ভাইয়া আমাকে নিয়ে ছাঁদে গেলেন৷ আকাশে আজ খুব বড় চাঁদ উঠেছে৷

রুহি দেখ কী সুন্দর চাঁদ৷ আমার খুব শখ ছিলো তোকে নিয়ে ছাঁদে বসে চাঁদ দেখবো আর গল্প করবো৷আজ আমার নিজেকে খুব হাল্কা লাগছে৷
.
কেনো??
.
কারন আমি এখন তোর মনের খবর জানি৷
.
কিন্তু আমিতো জানিনা৷
.
কথাটা বলার সাথে সাথেই আদিল ভাইয়া আমার সামনে হাটু ভেঙে বসে পরলো৷ তারপর আমার একটা হাত ধরে বলতে শুরু করলো,,

আজ এই চাঁদ এই প্রকৃতি শাক্ষী থাকবে তোর আমার ভালোবাসার৷ সমস্ত কিছুকে শাক্ষী রেখে আজ আমি বলছি আমি তোকে ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি৷ হৃদয়ের সমস্তটুকু দিয়ে ভালোবেসে যাবো তোকে যতদিন বাঁচবো৷ সবসময় ছায়ার মতো পাশে থাকবে৷ কিন্তু আমি একা থাকলেইতো আর হবেনা তোকে ওতো আমার পাশে থাকতে হবে৷ কী থাকবি তো৷

আমি ভাইয়ার কথা শুনে মাথা নাড়ালাম যে আমি উনার পাশে থাকবো৷
ভাইয়া আমার হাতে একটা চুমো দিয়ে উঠে দাঁড়ালো৷ ছাঁদের কোনায় টবে রাখা ফুল গাছ থেকে একটা কাঠ গোলাপ এনে আমার কানের পাশে গুজে দিলো৷ তারপর মুচকি হেসে আমাকে ইশারা করলেন আমি যাতে চাঁদের দিকে তাকাই৷আমিও ভাইয়ার ইশারা অনুসরন করে চাঁদের দিকে তাকালাম৷ আসলেই খুব সুন্দর লাগছে আজকের চাঁদটা৷ মনে হচ্ছে আজকে আমাদের দুজনকে আলোকিত করার জন্যই চাঁদটা উদিত হয়েছে৷ আমি আর ভাইয়া আরও কিছুক্ষণ ছাদে থেকে রুমে চলে এলাম৷ কাল থেকে আবার মেহমান আসা শুরু হবে৷
🍁🍁🍁🍁
সকালে ঘুম থেকে উঠে আমি আদিব ভাইয়া আর সামু বসে বসে টিভি দেখছি৷ টিভিতে তখন জীবন সাথী সিরিয়াল চলছে৷

আদিবঃট্রাস্ট মি৷ আমার কপালে যে থাকবে আমি থাকেই বিয়ে করবো৷
.
আদিব ভাইয়ার কথা শুনে আমি আর সামু ফিক করে হেসে ফেললাম৷

আরুহিঃভাইয়া তোমার কপালে যে আছে থাকেইতো তোমায় বিয়ে করতে হবে৷ মানে কোন না কোন ভাবে বিয়ে হবেই হবে৷
.
সামান্তাঃএক্সাক্টলি৷ আর তোমার বাম পাঁজরের হাড় দিয়েই আল্লাহ্ তায়ালা তোমার জীবন সাথীকে সৃষ্টি করেছে৷
.
আদিবঃহয়েছে হয়েছে জানি আমি৷

হঠাৎই আদিবের চোখ পড়লো একটা মেয়ের দিকে৷ মেয়েটি বাসার চারিদিক দেখছে আর হাঁটছে৷ হাতে আাবার বড় ব্যাগও রয়েছে৷

“স্টপ৷”

আদিব ভাইয়ার কথা শুনে আমি আর সামু দুজনেই তাকালাম৷ একি এটাতো শপিংয়ের মেয়েটা যে ভাইয়ার সাথে ঝগড়া করছিলো৷ এ এখানে কী করছে৷

আদিবঃএক্সকিউজ মি৷ এখানে কী চাই৷ এটা আমার বাসা পাবনার পাগলাগারদ নয়৷
.
আদিব ও আমার বন্ধুর মেয়ে৷ ভদ্র ভাবে কথা বলো৷
.
শুনলেন আপনি কী যেনো নাম আপনার ওহ হ্যাঁ মনে পরেছে আদিব৷ মিষ্টার আদিব ভদ্র ভাবে কথা বলবেন আমার সাথে৷ বাই দ্যা ওয়ে আমার রুমটা কোনদিকে একটু বলবেন প্লিজ৷ আমি অনেক টায়ার্ড৷
.
হ্যাঁ নিশ্চয়৷ কিচেনের পাশের রুমটা আপনার জন্যই বরাদ্দ করা হয়েছে মিস ফারিহা৷
.
ওয়াও কি কিউট আমার নামটাও আপনার মনে আছে দেখছি৷ প্লিজ হ্যান্ডসাম আমার অরিজিনাল রুমটা দেখিয়ে দিন৷
.
ফারিহার কথা শুনে আদিব ভাইয়া আগুন ছাড়াই মমের মতো গলে গেছে৷
.
হ্যাঁ হ্যাঁ নিশ্চয় আসুন আসুন আমি দেখিয়ে দিচ্ছি আপনার রুম৷ আপনার মতো মেহমান আসাতো আমার জন্য ভাগ্যের ব্যাপার৷ দিন আপনার ব্যাগটা দিন আমি রুমে দিয়ে আসি৷

চলবে♥️

[ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন৷ আমি দুঃখিত আজকের পার্ট ছোট হওয়ার জন্য৷ কিন্তু আমিই বা কী করবো গলা ব্যাথা,মাথা ব্যাথা, জ্বর সব একসাথে এসে দেখা দিয়েছে যেন সবটি প্ল্যান করেই এসেছে৷ ]
চলবে♥️

[ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন৷ অনেকেই বলছে কাজিনদের মধ্যে ভালোবাসাটা uncomfortable লাগে৷ কিন্তু আমাদের ইসলাম ধর্মেতো কাজিনদের সাথে বিবাহ জায়েজ৷ তাহলে প্রেম বিয়ে করতেই পারে অসুবিধেটা কোথায়৷ আপনাদের ভালো না লাগলে আমাকে জানাবেন আমি দুই তিন পর্বেই গল্পের ইতি টানবো৷,,,, ধন্যবাদ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here