হৃদমাঝারে শুধু তুমি পর্ব ৫

#হৃদমাঝারে_শুধু_তুমি
#লেখনিতে_সাবরিন_জাহান
#পার্ট:০৫

ট্রেন স্টেশনে দাড়িয়ে আছে অরিন,মমি,হৃদিতা,তনয়া আর সামান্তা।অরিন হোয়াইট টি শার্ট এর সাথে স্কাই ব্লু স্কার্ট আর জিন্সের জ্যাকেট পড়েছে।

সামান্তা:ট্রেন কয়টায় আসবে ?

অরিন:সামনেই অবস্থিত।

সামান্তা: ওহো।

তনয়া:চোখ নাই নাকি?

সামান্তা:এই তোর বড়ো হই ,সম্মান কর।

তনয়া:আমার ঠোঙা।

অরিন ট্রেনে উঠে গেলো। তার দেখা দেখি সামান্তা আর বাকিরাও উঠলো। সিট এ বসে পড়লো ।
ওদিকে আদ্রিয়ান ,অনিক আর সাগর সেম ট্রেনের অপজিটে বসেছে।তাই দেখতে পারছে না।ট্রেন ছাড়লো রাত ৮ টায়। যেহেতু বিয়ে গ্রামে হবে তাই ওদের গন্তব্য গ্রামের বাড়ি।মধ্যরাত। সামান্তা,মমি আর হৃদিতা ঘুমাচ্ছে।অরিন জেগে আছে ।

তনয়া:আপু!

অরিন:হুমম?

তনয়া:পানি খাবো।

অরিন: ব্যাগে আছে দেখ!

তনয়া: ওটা শেষ।

অরিন:কি?

তনয়া:হুমম

অরিন:আচ্ছা ৫ মিনিট পর ট্রেন থামবে এক স্টেশনে,ওখান থেকে নিবো।

তনয়া:আমিও যাবো ।

অরিন:না তুই এখানে থাকবি।

তনয়া:প্লিজ,আমি মধ্যরাতের স্টেশন একবার দেখতে চাই।প্লিজ।

অরিন:আচ্ছা।

কিছুক্ষণ পর ট্রেন থামলো অরিন আর তনয়া নামলো।

তনয়া:আপু,এই খানের পানি ভালো না।চলো ঐ দোকানটায় যাই।

অরিন:লেট হয়ে যাবে তনয়া।

তনয়া:আরে হবে না চলো।

অরিনকে অজ্ঞতা যেতে হলো,কিন্তু দোকানদার লেট করছে।

অরিন:মামা,জলদি।ট্রেন ছেড়ে দিবে।
বলতে দেরি কিন্তু ট্রেনের হর্ন ছেড়ে যেতে দেরি না।
অরিন:তনু ভাগ।
এক হাতে বোতল নিয়ে অন্য হাতে তনয়ার হাত ধরে দৌড় লাগালো।কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না।চলে গেলো ট্রেন।

তনয়া: যাহ.এবার কি হবে?

অরিন কটমট করে তনয়ার দিকে তাকালো। তা দেখে তনয়া মেকি হাসি দিল।

তনয়া:সরি।
অরিন দীর্ঘশ্বাস ফেললো, হাতে আছে ১৫০ টাকা।বাকি টাকা ট্রেনে ওর ব্যাগে।এখন এই টাকা দিয়ে ও এত দূর যাবে কিভাবে।ফোন টাও নিয়ে নামে নি।টেনশন হচ্ছে ওর। ও একা হলেও প্রবলেম ছিল না। কিন্তু সাথে যে বোন আছে।পাশে তাকাতেই ভ্রু কুঁচকে গেল ওর।

অরিন:এই লোক এখানে কেন?(মনে মনে)

অরিন কে এভাবে তাকাতে দেখে তনয়া ও এভাবে তাকালো।মূল উদ্দেশ্য আপু এই লোকটা কে এভাবে কেন দেখছে জানতে চাওয়া।
আদ্রিয়ান ফোন টিপতে টিপতে সামনে এগোতেই দেখতে পেলো ট্রেন নেই। আদ্রিয়ান এর বসে থাকতে ভাল্লাগছিল না ।তাই নেমেছিল।ফোন টিপছিল কিন্তু কোথা থেকে চোর এসে ফোন খপ করে নিয়ে দৌড় দিল।আদ্রিয়ান এর কাছে ফোন টা ইম্পর্ট্যান্ট না কিন্তু ফোনে থাকা ওর আর অরিনের স্মৃতি ইম্পর্ট্যান্ট।তাই ও দৌড় লাগালো চোর এর পিছু।ধরেও ফেলে।ফোন নিয়ে আসতে আসতে ট্রেন চলে যায়।আদ্রিয়ান পাশে থাকা এক লোককে জিজ্ঞেস করলো,

আদ্রিয়ান:আচ্ছা ট্রেন কতক্ষন আগে ছেড়েছে?

লোকটি তার টাক মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললো,

লোক: প্লেন?প্লেন কোথা থেকে আইবো?এটা তো ট্রেনের ইষ্টিশন।

আদ্রিয়ান:আরে প্লেন না,ট্রেন,ট্রেন।

লোক:আরে ভাই এটা প্লেনের ইষ্টিশন না এটা টেরেনের ইষ্টিশন।

আদ্রিয়ান বুঝতে পারলো লোকটি কানে কম শুনে।আর ওদিকে অরিন মুখ চেপে হাসছে আর তনয়া কোনো মতে হাসি আটকে রাখছে।অনেক্ষণ কথা বার্তার এক পর্যায়ে আদ্রিয়ান বললো।

আদ্রিয়ান:মিস্টার,আমি বলেছি ট্রেন মানে রেল গাড়ি ।

লোকটা কিছুক্ষণ ক্ষিপ্ত চোখে তাকিয়ে তার টাক মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,

লোকটি:মানছি আমার চুল নাই,তাই বইলা টাক রে বেল কইলেন?আর বেল মারি মানে কিতা?

আদ্রিয়ান বেকুব বনে গেলো।অরিন এবার জোরে হেসে দিলো।হুট করে হাসির আওয়াজে আদ্রিয়ান পিছে ঘুরল।অরিন মুখে হাত দিয়ে হাসি আটকানোর চেষ্টা করছে।আদ্রিয়ান এর সেইসবে খেয়াল নেই।সে তার অরি পাখিকে দেখছে।হোয়াইট টি শার্ট এর সাথে স্কাই ব্লু স্কার্ট আর জিন্সের জ্যাকেট এ অপরূপ লাগছে। মস্তিষ্কে হটাৎ নাড়া দিল অরিন এখানে কেনো?

আদ্রিয়ান:তুমি এখানে?

অরিন:তোমাকে কেন বলবো?

তনয়া:তোমরা একে অপরকে চিনো?
অরিন কিছু বললো না
আদ্রিয়ান:হুমম,চিনি,অনেক ভালোভাবে।কিন্তু এখানে কি করো এত রাতে ?

তনয়া মুখ গোমড়া করে বললো ট্রেন মিস করেছে।পড়ে সব কাহিনী বললো।

আদ্রিয়ান:নেক্সট ট্রেন সকাল ৮ টায়।এতক্ষণ কি করবে?

অরিন:জানি না।

আদ্রিয়ান: সলিউশন আছে।
অরিন কিছু বললো না।কারণ আপাতত হেল্প এর জন্য কাওকে তো লাগবেই।
আদ্রিয়ান:আমিও সেম জায়গায় যাবো। এখান থেকে কিছুটা দূরে গাড়ি পাওয়া যাবে।সেটাই করে গেলে সকালের আগে রেল স্টেশনে পৌঁছে যাবে।তারপর ওখান থেকে বাকিদের নিয়ে যেতে পারবে।
অরিন:গাড়ির ভাড়া কত করে?
আদ্রিয়ান:একজনের ২০০।
অরিনের মুখ মলিন হয়ে গেলো।আদ্রিয়ান বুঝতে পারলো।
আদ্রিয়ান:আমার সাথে চলো।আমি ভাড়া দিয়ে দিবো।
অরিন: কারো দয়া চাই না।
আদ্রিয়ান এর বুকে তীরের মত বিধলো কথা টা।
আদ্রিয়ান:এত টা পর করে দিলে(মনে মনে) দয়া না। রেল স্টেশনে পৌঁছে গিয়ে টাকা ফেরত দিয়ে দিও।
অরিন ভাবলো কথা টা ঠিক তাই রাজি হলো।
নির্জন রাস্তায় আগে আগে হাটছে আদ্রিয়ান ,পিছে পিছে অরিন আর তনয়া।
অরিন:সব তোর জন্য হইছে ।
তনয়া:সরি বললাম তো।
আদ্রিয়ান:তোমরা এত স্লো হাঁটলে জীবনেও পৌঁছাবো না।
তনয়া:আমার কি দোষ ?এই মেয়ে তো ধীরে ধীরে হাটছে।
আদ্রিয়ান:কচ্ছপের গতি কি আর বাড়বে না?
অরিন চোখ ছোট ছোট করে তাকালো।
অরিন:আমাকে বললে?
আদ্রিয়ান:কোনো সন্দেহ আছে?
অরিন এবার রাগী চোখে তাকালো,আদ্রিয়ান ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে হেঁটে চললো।
অরিন: হ্যাঁ হ্যাঁ,কচ্ছপ ভালো আছে । কারো মত তো আর ট্রেন স্টেশনে প্লেন খুঁজতে যাই না।
আদ্রিয়ান:আমি প্লেন খুজি নাই।
অরিন:প্রমাণ আছে।
আদ্রিয়ান:ট্রেন স্টেশনে প্লেন কেন খুজবো আমি?
অরিন:বড়লোক মানুষ বলে কথা!আবার বেল মারবে।
তনয়া ফিক করে হেসে দিল।আদ্রিয়ান দাত কটমট করে তাকালো ।
আদ্রিয়ান:বেশি হচ্ছে না?
অরিন:কচ্ছপ বলার আগে ভাবা উচিত ছিল। কথায় আছে না “ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না”
বলেই বত্রিশ দাত বের করে হাসলো।
আদ্রিয়ান বির বির করে বললো,”বিচ্ছু একটা।”
অরিন:কিছু বললে?
আদ্রিয়ান:না না,তোমাকে কিছু বলতে পারি।
অরিন: আহ।
আদ্রিয়ান অরিনের দিকে তাকালো।অরিন নিচে বসে আছে, পায়ে হাত দিয়ে ।
আদ্রিয়ান:কি হলো?
অরিন: পায়ে কিজানি বিধলো!
আদ্রিয়ান অরিনের পায়ে তাকাতে দেখলো একটা বেশ বড় কাচের টুকরা যা অসাবধানতায় অরিনের পায়ে ঢুকে গেছে।আর রক্ত বের হচ্ছে।
আদ্রিয়ান: ইস,স্টুপিড।দেখে চলতে পারো না।সব সময় হাত পা কাটা কি জন্মগত স্বভাব?
অরিন:আমি কি ইচ্ছে করে করছি?(গাল ফুলিয়ে)
তনয়া:ভাইয়া এখন কি করবে?
আদ্রিয়ান আসে পাশে তাকালো,কিছু পেলো না। তাই নিজের পকেট থেকে রুমাল বের করে পা বেঁধে দিলো।

আদ্রিয়ান:আরেকটু সামনে এগোলে আয়ুর্বেদিক ঔষুধের ঢেরা পাবো।তাই চলো।

তনয়া:কিন্তু আপু হাঁটবে কিভাবে?

আদ্রিয়ান:হাঁটবে কেনো?

তনয়া:ওমা,তাহলে যাবে কিভাবে?

আদ্রিয়ান:কেনো,এভাবে!
বলেই অরিন কে কোলে তুলে নিলো।এবার অরিন বিস্ময়ের চরম পর্যায়ে।
অরিন:এই এই নামাও,নামাও।

আদ্রিয়ান: দেখো এমনেই লেট,আর লেট করলে সকালের পরেও পৌঁছাতে পারবো না।
অরিন আর কিছু বলল না ।চুপ করে রইলো।
আদ্রিয়ান হেঁটে চললো,সাথে তনয়া।তনয়া মিটিমিটি হাসছে।বেশ লাগছে তার।
আদ্রিয়ান:বুঝলে তনয়া,এখন ৫৫ কেজির বস্তা কে নিয়ে এত টা পথ যেতে হবে।

অরিন:আমাকে নামাও,আমি কি বলেছি আমাকে নিতে?

আদ্রিয়ান:তনয়া মানুষ যদি নিজেই নিজেকে বস্তা ভেবে নেয় আমাদের কিছু করার আছে?

তনয়া:একদমই না।

অরিন:তুমি এই মাত্র আমাকে বস্তা বললে!

আদ্রিয়ান:নাম বলেছি কি?

অরিন রাগে ফেটে যাচ্ছে,,এভাবে ইনডাইরেক্টলি অপমান করছে।বলতে বলতে পৌঁছে গেলো,কিছু জরী বুটি দিয়ে তৈরি ওষুধ লাগাতে কাটা স্থানে জ্বালা অনুভব করলো।কিছুক্ষণ পর ঠাণ্ডা অনুভত হয় অরিন।পা নাড়িয়ে দেখলো, ব্যাথাটা কমছে।
অরিন:বাহ এত জলদি সেরে গেলো।

আদ্রিয়ান:এটাই আয়ুর্বেদিক ওষুধের কাজ বুঝলে?আব..তোমরা বসো আমি ওদের কিছু দিয়ে আসি।
বলেই ভিতরে গেলো।তনয়া আর অরিন বসে আছে ।তখন কিছু বখাটে টাইপ ছেলে আসলো।এসে ওদের সামনের বেঞ্চিতে বসে পড়লো।তাদের মধ্যে একজন বললো,

১ম জন:মামা,আজকে মেবি পার্টি হবে।

২য় জন: হু,একসাথে দুইটা পাখি।

১ম জন:উফ কি গরম।

অরিন আর তনয়া বুঝতে পারলো ওদেরকে উদ্দেশ্য করেই এসব বাজে কথা বলছে।

১ম জন:মামনি তোমার নাম কি?(তনয়া কে উদ্দেশ্য করে)

তনয়া অরিনের হাত চেপে ধরলো।ভয় পাচ্ছে ও।

২য় জন:আহারে সোনা টা ভয় পাচ্ছে,তো তুমি বলো তোমার নাম কি?(অরিন কে উদ্দেশ্য করে)
অরিন মুচকি হেসে বলল,
অরিন: স্যান্ডাল!

৩য় জন:স্যান্ডাল?

অরিন: হ্যাঁ,স্যান্ডাল এর এক বাড়ি দিবো, অসভ্যতামো ছুটে যাবে। বাচ্ছা মেয়েকে নিয়েও আজেবাজে কথা বলো।তোমরা কি মানুষ? কাপুরুষের দল..মেয়েদের একা পেলেই ইভটিজিং করতে মন চায়?

কাপুরুষ বলায় ছেলেগুলোর মাথায় রক্ত উঠে গেলো।তার মধ্যে একজন এসে অরিনের হাত ধরে ওকে দাড় করালো।এবার তনয়া আরো ভয় পেয়ে যায়।আর কান্না করে দেয় ।

১ম জন:কাপুরুষ না ?আয় দেখিয়ে দেই আমরা কাপুরুষ কিনা!
বলেই অরিনের গায়ে হাত দিতে গেলে,কেও ওর হাত মুচড়ে ধরে।হাতের মালিকের দিকে তাকাতেই কেঁপে উঠলো অরিন আর বাকি সব।কারণ আদ্রিয়ান এর চোখ লাল হয়ে আছে।যেকোনো সময় ভৎস করে দিতে পারে এমন।সবাই ভয় পেয়ে যায়।আদ্রিয়ান ওকে ঘুরিয়ে এক ঘুষী মারে,ফলে মুখ থুবড়ে পড়ে যায় ছেলেটি।তারপর এলোপাথারি মারতে থাকে ওকে, তনয়া ভয়ে দাড়িয়ে আছে। আশেপাশের মানুষ আদ্রিয়ান কে আটকাচ্ছে।কিন্তু ও ছাড়ছে না।ওর এক কথা।
“আমার অরি পাখিকে ছোঁয়ার সাহস কে দিয়েছে তোকে?”
কথাটা তনয়া খেয়াল করে নি,কারণ ও ভয়ে আছে।কিন্তু অরিন ঠিকই খেয়াল করছে।যখন কেও থামাতে পারছে না তখন অরিন গেলো।
অরিন:আদ্রিয়ান প্লিজ থামো।
আদ্রিয়ান এবার থামলো।কিছু না বলে তনয়া আর অরিনের হাত টেনে সামনে এগুলো।আর ভাগ্যবশত গাড়ি পেয়েও গেলো।গাড়ি চলছে আপন গতিতে।তনয়া অরিনের কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে গেছে।কিন্তু অরিনের ঘুম নেই।মাথায় একটা কথা ঘুরছে।আদ্রিয়ান কেনো বললো তার অরি পাখি?সে তো তাকে ভালোবাসে না,তাহলে?অরিন আদ্রিয়ান এর দিকে তাকাতেই দেখলো আদ্রিয়ান ঘুমোচ্ছে।অরিন নড়ে চড়ে বসলো নিজের পায়ের দিকে তাকাতেই চমকে গেলো।ওষুধ দেওয়ার পর আবার সেই রুমাল দিয়েই ওরা পা বেঁধে দিয়েছে। অরিন খেয়াল করে দেখলো এটা ওর দেওয়া রুমাল। আদ্রিয়ান এর বার্থডে তে গিফট করছিল।আদ্রিয়ান এটা এখনও রেখেছে?অরিনের মনে আছে।আদ্রিয়ান বলছিলো,”এই রুমাল আমি কখনো হাত ছাড়া করবো না,কারণ এরা আমার অরি পাখির দেওয়া প্রথম উপহার।”
অরিন আর ভাবতে পারছে না।কেনো জানি মনে হচ্ছে,কিছু একটা আছে যা ও জানে না।
সকালে ওরা রেলস্টেশন পৌঁছে গেলো।অরিন বাকিদের সাথে নিজের মনির বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলো।কিন্তু এখনও এক চিন্তা,”আদ্রিয়ান কি ওকে ভালোবাসে?আর বাসলেও কেন এভাবে ঠকালো?”
গাড়ি চলছে কিন্তু অরিন জানে না,নতুন ঝড় আসছে তার জীবনে।ভয়ংকর ঝড়।

#চলবে

(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here