হৃদয়সিন্ধুর_পাড়ে পর্ব ১৭+১৮

#হৃদয়সিন্ধুর_পাড়ে💕
পর্ব: ১৭+১৮
#কায়ানাত_আফরিন
.
২৫.
আজ দুদিন ধরে নিভ্রর সঙ্গে মৌনির কোনো যোগাযোগ নেই। নিভ্র কল করছে ঠিকই তবে মৌনি মোবাইল সুইচড অফ করে রেখেছে। কারনটা মৌনি নিজেই জানেনা। কিন্ত বহুদিন পর পরিবারের সাথে সময় কাটাতে মৌনির ভালোলাগছে। নিভ্রর কথামতো জগতটাকে নতুনভাবে আবিষ্কার করেছে। মায়ের হাতে তেল দেওয়া, বাবার কাছে ছোটবেলার দুর্গম সেই গল্পগুলো শোনা আর রাতের গহীনে নিধার সাথে রাজ্যের কথা জুড়িয়ে বসা। এই সময়গুলোর মধ্যে নিভ্রর কথা ওর মনে পড়েনি ; এটা তবে ভুল ধারনা হবে। কেননা প্রতিটা মুহূর্তেই নিভ্রর স্মৃতি ওকে ভাবুক করে তুলেছিলো। নিভ্রর প্রতিটা কথা, কথায় কথায় ঠোঁটে স্মিত হাসি ফুটিয়ে তোলা সবকিছু যেন ওর স্মৃতিতে ঘুরপাক খাচ্ছে। প্রেম নামক অনুভূতি জিনিসটাই এমন ; রোগের মতো শরীরে বিরাজ করে। কিন্ত এর কোনো প্রতিকার নেই।

সময়টা এখন ভরসন্ধ্যা। বাইরে শোঁ শোঁ হাওয়া বইছে। তাই মৌনিদের বাড়িতে বিদ্যুতের সংযোগ এখন বিচ্ছিন্ন। অনেক গ্রামেই এমন হয়। একটু ঝড়ো হাওয়া বইলে বিদ্যুত চলে যায়। বারান্দার কাছে টিমটিমে আলোর একটা চার্জার লাইট নিয়ে মৌনি আনমনে পড়ছে জহির বায়হানের ”শেষ বিকেলের মেয়ে” উপন্যাসটি। এ উপন্যাসটি মৌনির পছন্দের কিছু উপন্যাসের মধ্যে একটা । কয়বার যে পড়েছে তার কোনো ইয়াত্তা নেই।

আচমকা কেউ ওর থেকে বইটা ছিনিয়ে নিতেই মৌনির মনোযোগভ্রষ্ট হয়ে গেলো। কপাল ভাঁজ করে তাকিয়ে দেখে নিধা দাঁত কেলিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। হাতে রয়েছে এক কাপ চা। মৌনি ওর কাছ থেকে বই নিয়ে বললো,

–”ওমন করে বইটা নিয়ে নিলি কেনো? তুই জানোস না বই পড়ার সময় ড্রিস্টাব করা আমি মোটেও পছন্দ করি না?”

–”জানি তো। কিন্ত আমি ভাবলাম তুমি বোধহয় চেন্জ হয়ে গিয়েছো?”

–”চেন্জ হয়ে গিয়েছি মানে?”

–” তুমি তো আসলেই চেন্জ হয়ে গিয়েছো। তোমাকে এখন আগের মতো মনে হয় না। আগে কথায় কথায় আমাকে বকাবাজি করতে, মাথায় গাটি মারতে , সারারাত কত রকমের গল্প করতে ; কিন্ত তুমি এখন কেমন যেন চেন্জ হয়ে গিয়েছো। একা একা থাকতে ভালোবাসো , আমার সাথে আগের মতো গল্প করো না , বই টান দিয়ে নিয়ে গেলে চিল্লিয়ে ঘর তুলে ফেলো না। কি হয়েছে তোমার বলবে?”

মৌনি কিছু না বলে আবার বইয়ের পাতায় মনোনিবেশ করে। মৃদু চার্জার লাইটের আলোতে যদি কেউ গভীরভাবে ওর মুখমন্ডল দেখে তবেই কেউ বলতে পারবে যে ওর মনে একটা প্রকান্ড চিন্তা ভর করেছে যা নিধা খেয়াল করেনি।

–”তোমার জন্যই চা এনেছি। ”

নিধা মৌনির হাতে চায়ের কাপ দিয়ে ওর পাশে বসে উৎসুক দৃষ্টিতে মৌনিকে দেখতে থাকলো। মৌনি নিধার দিকে না তাকিয়েই বললো ,

–”কিছু বলবি? ওমন করে তাকিয়ে আছিস কেন?”

–”দুলাভাইয়ের কোনো ভাই আছে?”

মৌনি বই রেখে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে ওর দিকে তাকায়। অবাক স্বরে বললো,

–”কে তোর দুলাভাই?”

–”কে আবার? নিভ্র ভাইয়া!”

–”নিভ্র ভাই তোর দুলাভাই হলো কেমনে?আমাদের বিয়ে হয়েছে?”

–”আরেএএ? একদিন তো হয়েই যাবে। এখন বলো না আপু? নিভ্র ভাইয়ার কোনো ভাই আছে?”

–” না। ”

–” তবে মামাতো ভাই? ফুফাতো ভাই? খালাতো ভাই? চাচাতো ভাই?”

–”বলতে পারি না।”

–”তবে ফ্রেন্ড তো আছে?”

এবার বিরক্ত হয়ে যায় মৌনি। মাথায় একটা গাটা মেরে বলে,
–”কি হয়েছে তোর বলতো?এসব জিজ্ঞেস করছিস কেনো?”

–”না , মানে………….ভেবেছিলাম নিভ্র ভাইয়ার কোনো ভাই টাই থাকলে পটিয়ে নিতাম। দুলাভাই যেই ড্যাশিং রে আপু ; তার ভাই থাকলেও তো নিশ্চয়ই তার মতো ড্যাশিং হবে।”

হঠাৎ মৌনির কি হলো মৌনি জানেনা। টাশ করে নিধার গালে একটা চর বসিয়ে দিলো। নিভ্রর সৌন্দর্য নিয়ে অন্যকেউ কিছু বলবে কোনোক্রমেই মৌনি এটা যেন সহ্য করতে পারছিলো না ; যতই ওর আপন বোন হোক না কেনো! মৌনি চিল্লিয়ে বলে ওঠলো,
–”কোন সাহসে নিভ্র ভাইকে তুই ড্যাশিং বললি? Further তোকে যেন আর এসব complement দিতে না শুনি।”

নিধার চোখ ছলছল করে ওঠলো। ও তো আপুর সাথে একটু দুষ্টুমি করছিলো। আপু এমন রিয়্যাক্ট করে ওঠবে এটা জানলে মৌনির সাথে কখনোই এমন করতো না।

–”আপু আমিতো………..”

–”দূর হো আমার চোখের সামনে থেকে।”

মৌনির এত উচ্চস্বরে কথা বলার কারনে ভেতর থেকে মৌনির বাবা-মা দুজনেই বারান্দায় এসে পড়ে। বাইরে তখনও সমানতালে হাওয়া বয়ে চলছে। মৌনির মা পরী বানু ব্যতিব্যস্ত হয়ে বললেন,
–” কি হলো মৌনি? নিধার সাথে এমন করছিস কেনো?”

–”বোঝাও তোমার মেয়েকে। পড়াশুনা বাদ দিয়ে কি শুরু করেছে।”

ক্ষিপ্ত কন্ঠে বলে ওঠলো মৌনি। এদিকে নিধা মাথা নিচু করে বসে আছে। কিন্ত মৌনির এমন কর্কশ ব্যবহার দেখে পরী বানু রীতিমতো অবাক। নিজের মেয়েকে কখনোই তিনি এমন ব্যবহার করতে দেখেননি। কোমল স্বরে তিনি বললেন,

–”কি করেছে নিধা?”

–”কি করেনি এটা বলো। বয়স কত ওর? ১৫-১৬ হবে। আর এই বয়সে এত ছেলে ছেলে করছে কেনো এটাই আমি বুঝছি না। বলে নিভ্র ভাইয়ের মতো ওরও একজন দরকার। এটা দিয়ে কি মিন করতে চাচ্ছে?নিভ্র ভাই শুধু আমার। উনাকে নিয়ে কেউ কোনো মন্তব্য করুক এটা আমি কখনোই মেনে নিবো না।ইভেন আমার বোন হোক না কেন?”

মৌনি প্রচন্ড হাইপার হয়ে ওঠেছে। কথার মাঝে বারবার ঘনঘন নিঃশ্বাস ফেলছে। ওকে এতটা অস্থির হতে দেখে আশরাফ হোসেন এবার এগিয়ে এলেন মৌনির কাছে। চোখে মুখে দুশ্চিন্তার ছাপ। মেয়ের এমন করুন অবস্থা দেখে কোন বাবাই বা শান্তিতে থাকতে পারবে। মৌনির এমন arrogant behave এর জন্য দোষটাতো মৌনির না। আশরাফ সাহেব কোমল গলায় বললেন,

–”মামণি শান্ত হও। নিধা তো তোমার সাথে দুষ্টুমি করেছে।”

–”ওকে তবে বলে দাও পরবর্তীতে এমন ভুল যেন না হয়। আমি তবে ভুলে যাবো যে ও আমার বোন।”
মৌনি আর একমুহূর্তও এখানে দাঁড়ালো না। গটগট করে চলে গেলো নিজের রুমে।
.
.
.
২৬.
”ব্রেকিং নিউজ ! জাল সার্টিফিকেটের অবৈধ ব্যবসার প্রমাণস্বরূপ মিনিস্টির জহির শেখকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ”
সারা দেশে এ খবর নিয়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়। ফেসবুক-টুইটার সহ সকল খ্যাতনামা সোশ্যাল সাইটে এই নিউজ ট্রেন্ডিং হিসেবে চলছে। টিভিতেও এই নিউজ যেন এখনকার প্রচার কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। রাগে-ক্ষোভে টিভির স্ক্রিনে সজোরে কাচের বোতল ছুঁড়ে মারলো রিদান। যার ফলস্বরুপ টিভির পর্দাটি ভেঙ্গে চৌচির হয়ে গিয়েছে।
এই নিউজটা যে কিভাবে সাংবাদিকদের হাতে গিয়েছে তা বুঝতে বিন্দুমাত্র ভুল হয়নি রিদানের। যে মৌনিকে ওর আটক থেকে নিয়ে গিয়েছিলো কাজটা সেই করেছে।

রিদানের লোকগুলোও এককোণে জড়ো হয়ে দাঁড়িয়ে আছে তটস্থ হয়ে। রিদানের রাগ সম্পর্কে ওরা সবাই ভালোমতো জানে। উল্টাপাল্টা কোনো বললে রিদান যে ওদের জান নিয়ে নেবে এ নিয়ে মনে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। রিদান এবার উচ্চস্বরে বলে ওঠলো,

–”ওই rascal টা কে একবার হাতের নাগালে পেলে আমি মেরেই ফেলবো। একে তো মৌনিকে আমার কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে গেলো। আবার আমাদেরই পিঠ-পিছে প্রুফ সাংবাদিকদের হাতে দিয়ে দিলো? কে এই ছেলেটা?”

রিদানের কপালের রগ ফুলে উঠেছে রাগের কারনে। আচমকা পেছন থেকে একটি কন্ঠ ভেসে এলো,
–”দ-দাভাই?”

শান্ত হয়ে যায় রিদান। কেননা কন্ঠটা তারই ফুপির মেয়ে মৃধার।পেছনে ফিরে দেখে মৃধা দরজার এককোণে গুটিশুটি মেরে দাঁড়িয়ে আছে। ওড়নার একপ্রান্তটি হাতের মুঠোয় বন্দী করে রেখেছে। মেয়েটা রিদানকে প্রচন্ড ভয় পায় যা রিদান ভালোমতোই জানে। আর রিদান যখন রেগে থাকে মৃধা চেষ্টা করে রিদান থেকে শতহাত দূরে থাকতে। তাই এসময় হঠাৎ মৃধায় আগমনে রিদান একটু অবাক হয়ে গেলো। শান্ত স্বরে মৃধাকে বললো,
–”এখানে কেনো এসেছিস?”

–”তুমি মামার জন্য আজ সারাদিন কিছু খাওনি। এখন খেয়ে নাও। শরীর খারাপ করবে তাহলে………..”

–”আমার বাবা জেলে বাসি রুটি আর ডাল খাবে আর আমি এখানে আয়েস করে তোর হাতের খাবার খাবো?যেভাবেই হোক বাবার ছাড়ের জন্য আমি কেস করবো।”

–”মামা তো আসলেই দোষ করেছে। জাল সার্টিফিকেটের মতো জঘণ্য কারসাজি চালিয়েছে সে। এমন একজন মানুষ যে কি-না খুবই খারাপ রেজাল্ট করে আর জাল সার্টিফিকেট বানিয়ে যদি কোনো যায়গায় চাকরি পেয়ে যায় ভেবেছো দেশের কি অবস্থা হবে?তুমি কেনো মামার সঙ্গ দিচ্ছো?”

মৃধার একথাটা বলতেই দেরি কিন্ত ওর গালে চর মারতে রিদানের দেরি হলো না। যদিও মৃধা প্রস্তুত ছিলো যে এ কথা শুনে রিদান এমন কিছুই করবে কিন্ত মৃধা এখন প্রতিক্রিয়াহীন।

–”ফুপা-ফুপি মারা যাওয়ার পর আমার বাবাই তোকে এখানে নিয়ে এসেছে। তোকে পড়াশুনা করাচ্ছে। আর তুই কত্ত বড় বেইমান না হলে নিজের মামার নামে এসব কথা বলিস !”

–”একশবার বলবো , হাজার বার বলবো। আর এটাই সত্য। আমার মামা মিঃ জহির শেখ একজন ক্রিমিনাল। আমার বলতে লজ্জা হয় যে উনি আমার………….”

–”তুই থামবি মৃধা নাকি মৌনির মতো তোরও সেম অবস্থা করবো।”

রিদান অনেক রেগে গিয়েছে। কিন্ত মৃধা সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলো।
–”এর থেকে তুমি বেশি কিছু করতেও পারবে না দাভাই। নিজের বিবেককে প্রশ্ন করো যে মামা মিনিস্টার হওয়ার এখন পর্যন্ত কি কি করছে। এই অসুস্থ পরিবেশে বড় হয়েও তোমার মতো পাষাণ হতে পারলাম না আমি। কি মজা পাও এসব করে বলোতো। বস্তি উজার করে , মামার বিরুদ্ধে কেউ কোনো কথা বললে তাকে খুন করে , এসব করে তুমি সবার কাছে ঘৃণা ছাড়া আর কিছুই পাবে না দাভাই। মানুষকে ভালোবাসতে শিখো। তবে তুমিও মানুষের ভালোবাসা পাবে।”

মৃধা একথা বলার পর নীরবে রিদানের রুম ত্যাগ করলো। রিদান এখনও থমকে দাঁড়িয়ে আছে সেখানে। আজ মৃধা এমন কিছু কথা বলে গেলো যা হয়তো এই ২৮ বছরের জীবনে কখনোই উপোভোগ করেনি সে। ছোটবেলা থেকে আজ পর্যন্ত সে বাবা ভক্তই ছিলো। বাবা যা বলতো তাই সে করতো। কখনও ভালো-মন্দ বিচার করেনি।

মৌনি সহ এ পর্যন্ত অনেক মানুষের সাথেই পশুর থেকে অধম আচরণ করেছে রিদান। এমনকি বাবার কথামতই মৌনিকে একটা ইনজেকশন দিয়েছিলো সে যার সম্পর্কে রিদান কিছুই জানেনা। বাবা যা বলেছিলো সেগুলোই মেনে নিয়েছিলো কিন্ত রিদানের ধারনা ওই ইনজেকশনের কাজ মনে হয় অন্যকিছু।
আর কিছু ভাবার মতো ইচ্ছে রিদানের নেই। এখন নাইটক্লাবে গেলেই ওর মাথাটা একটু ঠান্ডা হবে।
.
.
.
——————-
রাত এখন দেড়টা কি দুইটা বাজে। সারাঘরে পিনপন নীরবতা। জানালার কোল ঘেষে মৌনি পলকহীনভাবে সামনে থাকা দীঘিটার দিকে তাকিয়ে আছে। সন্ধ্যের ঝড়ো হাওয়ার পর এখন সবকিছুই শান্ত। কিন্ত বাইরে বিকট অন্ধকার। আর মৌনি কিছুদিন যাবৎ অন্ধকারকে প্রচন্ড ভয় পায়। অন্ধকার দেখলেই মাথায় অনেক আজগুবি চিন্তা ভর করে। আজ নিধা ওর সাথে ঘুমায়নি। কিছুটা শঙ্কিত হয়ে গেস্টরুমেই চলে গিয়েছে।

তাই নিজের ঘরে একা থাকার কারনে ভয়টা মনে আরও গভীরভাবে গেঁথে গিয়েছে মৌনির। সামনের সবকিছু কেমন যেন ঘোলাটে ঘোলাটে লাগছে। তবুও পাথরের ন্যায় গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলো মৌনি।
কিন্ত পারছে না। মাথার চিনচিন ব্যাথাটা ক‍মশ যেন বেরেই চলছে। মনে এত অস্থিরতা কেন?

–”মৌনি পরী?”
কারও নির্লিপ্ত কন্ঠ শুনেই মৌনি থমকে যায়। ঘরে তো সে একা। তবে এটা কার কন্ঠ?পেছনে ফিরে যা দেখলো তাতে অবাক হওয়ার প্রবণতাটা যেন আরও দ্বিগুন বেড়ে গিয়েছে। সে ভুল দেখছে না-তো? দু-তিনবার চোখের পলক ফেলার পরও যখন সে অস্পষ্টভাবে নিভ্রকে দেখতে পারলো তখন যেন ভয়ের সীমাটা অতিক্রম করে ফেলেছে। মৌনি জানে সামনে এটা নিভ্র না। এটা ওর অবচেতন মন শুধু একটা illustration তৈরি করেছে। ঘনঘন নিঃশ্বাস ফেলছে মৌনি। নিজেকে যথাসম্ভব শান্ত করে বললো,

–”মৌনি ! Relax ! সামনে এটা নিভ্র দাঁড়ানো না। এটা শুধুমাত্র তোর মস্তিষ্কের কল্পনা।”

–”কি ভাবছো?”
নিভ্রর গলা শুনতে পারছে মৌনি। মাথার চিনচিন ব্যাথার প্রকোপটা আরও গাঢ় হচ্ছে। কানে হাত দিয়ে মৌনি নিজেকে বললো,

–”এটা নিভ্র না। এটা নিভ্র হতেই পারে না।”

মৌনির তৎক্ষণাৎ মনে পড়লো আজ নিধার সাথে রাগারাগি করার জন্য ট্যাবলেট খেতে ভুলেই গিয়েছিলো। এই জন্যই এসব visual imagination ওর চোখের সামনে ভেসে উঠছে। চোখ দুটো মৌনির পাল্লাক্রমে ভারী হয়ে উঠলো। কানে বারবার অস্পষ্টভাবে ”মৌনি” শব্দটা ভেসে আসছে। মৌনি এবার চিৎকার করে ওর বাবাকে ডাক দিলো। এছাড়া যেন আর কিছুই করার নেই।
পুরো পৃথিবীটা এখন যেন অন্ধকার লাগছে মৌনির কাছে। ঘরের বিভৎস অবস্থা। একপর্যায়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়তেই আবছাভাবে দেখতে পারলো বাবা-মা ওর নিকট দ্রুতগতিতে আসছে। মৌনি এখন প্রতিক্রিয়াহীন। ওর নিকট থেকে শুধু একটাই শব্দ শোনা গেলো ; সেটা হলো দীর্ঘশ্বাস।
.
.
.
.
~চলবে
ভুলক্রুটি ক্ষমাসুলভ চোখে দেখবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here