অশ্রুমালা পর্ব ১৯+২০

#অশ্রুমালা
part–19
#Arishan_Nur(ছদ্মনাম)

–টিকিট কেটে যখন দিয়েছিলাম তখন আমার চোখ আলমারি তে ছিল না। সাথেই নিয়ে রেখেছিলাম তাই জানি তুমি এখানে আছো। এই বাসে আছো। ক্লিয়ার?

রোদেলার চোখ বেড়িয়ে যাওয়ার উপক্রম। আবেগ তার পাশের সিটে বসে আছে। এটা কিভাবে সম্ভব! সে তো তাকে রাখতে পর্যন্ত আসে নি। এখন আলগা পিরিতি দেখানোর কি দরকার?

আবেগ সমুদ্র কে যে ট্রলিতে করে শুইয়ে রাখা হয়েছে সেটা সিটের সামনে রাখলো। সমুদ্র জেগেই আছে। বাবার দিকে তাকিয়ে আছে সে। আবেগ সমুদ্রের কপালে চুমু খেল এবং রোদেলার দিকে তাকিয়ে তার ভ্রু কুচকে গেল৷

সে গমগম আওয়াজে বলে, দূরপাল্লার বাসে এভাবে মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে আছো কেন? সিটে বসো।

রোদেলার মাথা ভোভো করছে। তার কেন যেন খুব খুশি লাগছে। নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ মনে হচ্ছে তার।

হুট করে বাস সামান্য ঝাকুনি দিল। রোদেলা টাল সামলাতে না পেরে আবেগের উপর পড়ে গেল।

আবেগ বিরক্ত হয়ে বলে, তখন যে বসতে বলেছিলাম তাও কেন এতোক্ষন ধরে দাঁড়িয়েই ছিলে?

রোদেলা উত্তর দিল না। সে আবেগের দিকে তাকিয়ে থাকল। তার কেন যেন এই মূহুর্তে আবেগকে জড়িয়ে ধরে পাক্কা এক ঘন্টা হাউমাউ করে কাদতে মন চাচ্ছে। যে সে কান্না না একেবারে মরা কান্না জুড়ে দেওয়ার প্রবল ইচ্ছা জাগছে৷ কেন এমন ইচ্ছা জাগলো তার সে জানে না? আর না জানতে চায়৷ আবেগের মতো সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়ায় সে আশাবাদী না৷

বরংচ সেই সব প্রশ্নই সবচেয়ে খাটি যার কোন উত্তর নেই।

আবেগ আস্তে করে রোদেলাকে তার উপর থেকে সরিয়ে সিটে বসালো। এতে অবশ্য তাকে রোদেলাকে টাচ করার প্রয়োজন পড়েছিল।

রোদেলা সিটে বসার সাথে সাথে সমুদ্র কান্না শুরু করে দিল।

আবেগ সমুদ্র কে কোলে নিল তারপর রোদেলার দিকে তাকিয়ে বলে, ফিডার কোথায় ওর?

রোদেলা কোন উত্তর দিতে পারল না৷

আবেগ আরেক দফা বিরক্ত হয়ে নিজেই ফিডার খুজে সমুদ্র কে খাওয়ালো৷

রোদেলা দুচোখ দিয়ে অপলক বিমুগ্ধ নয়নে আবেগ আর সমুদ্র কে দেখে ই চলেছে৷

আবেগ নিজের সিটে একটু হেলিয়ে নিয়ে সমুদ্র কে ট্রলিতে শুইয়ে দিল এবং তার চোখ রোদেলার উপর পড়ল। সে দেখতে পেল রোদেলা তার দিকেই তাকিয়ে আছে৷

আবেগ তা দেখে ঠোঁট চেপে হাসতে লাগলো। তা দেখে রোদেলার বেশ লজ্জা হতে লাগে। ইশ! এই লজ্জাতেও কতো সুখ!

আবেগ কিছু বললো না। সে জানালার পাশের সিটে বসেছিল। সিটে হেলান দিয়ে আধ শোয়া হয়ে জানালার দিকে তাকালো। অদ্ভুত এক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। আধো আলো আধো অন্ধকার! হালকা কুয়াশা। এই শীত তো এই উষ্ণতা! বাসে সম্ভবত গান চালানো হয়েছে। রবীদ্র সংগীত চলছে।

বঁধু, কোন আলো লাগল চোখে!
বুঝি দীপ্তিরূপে ছিলে সূর্যলোকে!
ছিল মন তোমারি প্রতীক্ষা করি
যুগে যুগে দিন রাত্রি ধরি,
ছিল মর্মবেদনাঘন অন্ধকারে,
জন্ম-জনম গেল বিরহশোকে।
অস্ফুটমঞ্জরী কুঞ্জবনে,
সংগীতশূন্য বিষণ্ন মনে
সঙ্গীরিক্ত চিরদুঃখরাতি
পোহাব কি নির্জনে শয়ন পাতি!
সুন্দর হে, সুন্দর হে,
বরমাল্যখানি তব আনো বহে,
অবগুণ্ঠনছায়া ঘুচায়ে দিয়ে
হেরো লজ্জিত স্মিতমুখ শুভ আলোকে,,,,,,,,

আবেগ চিন্তা করতে লাগলো, এখানে কবি বধু বলতে কি তার প্রেয়সীকে বুঝিয়েছে? যদি বধু তার প্রেয়সী হয় তাহলে কি গানটার মর্ম এমন কিছুটা হয় নাঃ প্রেয়সীর ভালোবাসার ঝলমলে আলো তার চোখ এসে পড়তেই সে বুঝতে সক্ষম হলো তার প্রেয়সী সূর্যলোকের চেয়ে ও দীপ্তিমান! ভালোবাসার আস্তরন পড়ে তার চোখ এমন হয়ে গেছে যে প্রেয়সীকে সূর্যের চেয়েও আলোকিত লাগতে শুরু করেছে?

কিন্তু,,, কিন্তু ফিজিক্সের মতে কোন মানবই দীপ্তিমান বস্তু না। যদিও বা রবীন্দ্রনাথের ছন্দের সাথে পদার্থ বিজ্ঞানের সূত্র মেলানো বোকামি ছাড়া আর কিছু ই না।

আবেগকে গম্ভীর মুখে কিছু ভাবতে দেখে রোদেলা ধরেই নিল আবেগ নেহাকে নিয়ে কিছু ভাবছে না তো?

একথা ভাবতেই রোদেলার গায়ে হিংসার আগুন জ্বলতে লাগে৷ মানুষ হলো বড্ড স্বার্থপর জীব। রোদেলাও খুব স্বার্থপর হয়ে গেছে কিন্তু কি করার? সে তো সিনামা বা সিরিয়ালে নায়িকা না যে অন্যের সুখের জন্য নিজেকে বিসর্জন দিবে? নিজের অধিকার থাকা সত্ত্বেও সেটা ব্যবহার না করে অন্যের হাতে তা তুলে দিবে। এটা কেবল সিনেমায় মানায়। বাস্তব এমন না! সিনেমার সাথে বাস্তবতার মাঝে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন মাইলের ফারাক আছে!

কিন্তু উপন্যাস বা গল্পের প্রতিটা চরিত্র কিন্তু সামান্য পরিমানে হলেও বাস্তবের একেক টা মানুষের মতোন হয়। বাস্তবিক না হলেও আজগুবি হয় না। উপন্যাস যে লেখে সে নিশ্চয়ই কোন বাস্তব চরিত্রের দিকে তাকিয়ে একেকটা চরিত্র সাজায়৷ উপন্যাসে নায়ক-নায়িকারা সিনেমা জগতের হিরো-হিরোইনের মতো দামি পোশাক পড়ে না। হাই মেকাপ নেয় না৷ সবসময় তাদের জয় হয় না! আবার কোন গল্পের নায়িকা বা মূল চরিত্র মানেই এই না যে সে সাধু। ভুলের উর্ধে থাকবে সে এমনটা ভাবা নিশ্চিত বোকামি ছাড়া কিছু না!

এই মূহুর্তে রোদেলার উপন্যাসের চরিত্র হতে মন চাচ্ছে! তাহলে সে এখন আবেগের বুকে ঝাপিয়ে পড়ে চন্দবিলাস করত!

রোদেলা মিনমিনে আওয়াজে আবেগকে তার নাম ধরে ডাক দিল।

আবেগ জবাবে ফিসফিস করে বলে, কি?

–জেগে আছো?

আবেগ বিরক্তিমাখা কথা কন্ঠে বলে, এটা কেমন প্রশ্ন করলে তুমি? ঘুমিয়ে গেলে কি উত্তর দিতাম?

–আমি জানালার পাশের সিটে বসতে চাই। উঠবেন একটু প্লিজ? (করুন কন্ঠে)

রোদেলার অনুরোধ ফেলতে না পেরে আবগ উঠে দাড়ালো এবং রোদেলাকে তার সিট ছেড়ে দিল। রোদেলা জানালার পাশে গিয়ে বসল। সে মাথা ঠেকিয়ে দিয়ে চুল ছেড়ে দিল। জানালা কিঞ্চিৎ খুলে দেয়।

আবেগ ডিস্টার্বড ফিল করে এতে। এমনি শীত শীত ভাব। কি দরকার জানালা খুলে দেওয়ার!

রোদেলার গা জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে৷ কিন্তু সে একথা একবারো আবেগকে বলে নি। জ্বর আধ ঘন্টা আগে থেকে এসেছে।বাসা গাথা শুরু করেছে দেহে। মাত্র আধা ঘণ্টায় যে শরীরকে এভাবে কাবু করে নিবে তা ভাবতেও পারেনি রোদেলা।

সে গুনগুন করে বাসে চালু করা গানটা গেতে লাগলো।

বঁধু কোন আলো লাগলো চোখে!
বুঝি দীপ্তিলোকে ছিলে সূর্যলোকে!
ছিল মন তোমারি প্রতিক্ষা করি
যুগে যুগে দিন রাত্রী ধরি

আচ্ছা যদি কোন একদিন সে হারিয়ে যায়, অচীন ঘন কুয়াশায় লাপাতা হয়ে যায় কিংবা
In the middle of the deep osean, if she lost!

আবেগ কি তার প্রতিক্ষা করবে? অপেক্ষায় চেয়ে রবে? কিংবা হারিয়ে যেতে দিবে?

নাকি বলবে, যাও! সমুদ্রের জোয়ার-ভাটায় হারিয়ে যাও। আমি খুজব না তোমায়!

রোদেলা ভাবতে লাগলো, আজকে থেকে সে সমুদ্র কে বাবু বলে ডাকবে না। ওসেন বলে ডাকবে। সমুদ্রের ইংরেজি যদিও সি কিন্তু সে ওসেন কথা ডাকবে। ওসেন এর আভিধানিক অর্থ মহাসমুদ্র হলেও সে সমুদ্র কে ওসেন বলেই ডাকবে।সবাই তাকে ওসেনের আম্মু বলে ডাকবে। তার চোখের সামনে বিশাল নীল জলরাশি ভেসে উঠে! সেই জলরাশিতে সে পা ডুবিয়ে বসে আছে।

আস্তে আস্তে অন্ধকার জগতে তলিয়ে যেতে লাগলো সে। চোখ খোলা রাখা দায় পড়ে তার জন্য!

অসুস্থ হওয়াও মজার। অসুস্থ হওয়ার মাঝেও আনন্দ আছে। এক বিচিত্র অনুভূতি জাগ্রত হয় মনের মধ্যে তখন। কারো সান্নিধ্যে আসতে মন চায়! কাউকে গভীরভাবে পাওয়ার তীব্র আকাক্ঘা জাগে!

★★★

বাড়ির সবার সামনে নেহার গালে চড় বসালেন শেখ সাহেব। নেহা থাপ্পড় খেয়ে তাজ্জব বনে গেল। এর আগেও বহুবার, অগনিত বার তার বাবার অবাধ্য হয়েছে, রুড বিহেভ করেছে কিন্তু কোন দিন তার আব্বি তার গায়ে হাত তুলে নি।

নেহার চোখে বেয়ে পানি পড়তে লাগে।

তা দেখে শেখ সাহেব চোখ সরিয়ে নিলেন এবং কড়া গলায় বলে, আমি কিছু শুনতে চাই না। তোমার বিয়ে প্রাচুর্যের সাথে হবে। দ্যাটস ইট। তোমার হুজুত্তি, বেয়াদবি সব মেনে নিয়েছি কিন্তু আর একটা কথাও শুনব না। আমি তোমাকে অনেক আগেই বলেছি আবেগের সাথে তোমার বিয়ে দিব না। কিন্তু তুমি আমার অবাধ্যতা করে ওর সাথে প্রনয় করেছো। আমার সামন দিয়ে, ওর সাথে দেখা করতে গিয়েছো। আমি বাধা দিতে গিয়েও বাধা দিতে পারি নি। কিন্তু এখন কাটা নিজেই রাস্তা থেকে সরে গেছে। তাই এবার আর তোমার কোন কথা শোনা হবেনা। ক্লিয়ার?

নেহা প্রতিউত্তরে কিছু না বলে হনহন করে তার রুমে চলে যায়। তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে শেখ সাহেব ছোট একটা শ্বাস ফেলে।

প্রাচুর্যর সামনেই এসব ঘটল। সে শেখ সাহেবকে উদ্দেশ্য করে বলে, চাচ্চু আমি যাই? দেখি ওকে কনভিন্স করা যায় কিনা?

–যাও। তোমাকেই তো দেখতে হবে।

প্রাচুর্য মৃদ্যু হেসে পা বাড়ায় নেহার রুমের দিকে৷

নেহা রুমে গিয়েই রুমের সব জিনিসপত্র ভাংচুর করতে লাগলো।

প্রাচুর্য রুমে ঢুকে তা দেখে আর আগানোর সাহস পেল না। সেখান থেকেই গলা খাকিয়ে বলে, কি রে বড়লোকের বেটি! আদুরে মেয়ে। বাপের টাকার শেষ নাই তাই না?

নেহা তার কন্ঠ শুন্ব পেছনে তাকালো। কি ধারালো সেই চাউনি! তলোয়ারের চেয়েও বেশি ধার সেই চাউনিতে!

সব কিছু উপেক্ষা করা গেলেও এই মারাত্মক চাউনিকে উপেক্ষা করার ক্ষমতা নাই প্রাচুর্যের!

সে অদ্ভুত নজরে তাকিয়ে থাকে নেহার দিকে। কি আছে এই চোখে? মায়া তো একদমই নেই। কেবল আছে জেদ আর জেদ! তারপর ও এই জেদরানীতে সে আক্রান্ত!

নেহা কড়া গলায় বলে, যা এখান থেকে। দূর হ তুই আমার সামন থেকে।

প্রাচুর্য জিভ কেটে বলে, ছিঃ! নিজের হ্যাসবেন্ড কে কেউ তুই বলে ডাকে!

নেহা ফুসতে থাকে। পারলে এখনি প্রাচুর্য কে কাচা খেয়ে যাবে।

নেহা নিজেকে শান্ত কথা করে বলে, তুই জানিস না আমি আবেগকে ভালোবাসি? তাও কেন এমন করছিস আমার সাথে?

প্রাচুর্য নেহার সামনে গিয়ে বলে, এটা ভালোবাসা না! ভালোবাসা কোন দিন অশান্ত হয় না। ভালোবাসাকে নদীর মতো শান্ত হতে হয়। আর যা করছি তোর ভালোর জন্য ই করছি। আবেগ তোর ভালোবাসা না। বরং জেদের বশে করে ফেলা একটা ভুল মাত্র।

নেহা বলল, আবেগ ও আমাকে ভালোবাসে।

প্রাচুর্য শান্ত গলায় বলে, সিরিয়াসলি ইউ থিক সো? হাহা। এক মিনিট আমি আগে হেসে নিই। তারপর কথা বলি!

প্রাচুর্য সত্যি সত্যি এক মিনিট ঘর কাপিয়ে হাসল। তার পর বলল, আচ্ছা তোর তো শাড়ি পছন্দ না তাই না?

–হ্যা৷

–একদম পছন্দ করিস না শাড়ি। সত্যি বলতে তোকে শাড়িতে মানায় না। কিন্তু আবেগ তোকে বারবার শাড়ি পড়তে বলত৷ কেন বলত?

–ওর পছন্দ শাড়ি তাই বলত পড়তে৷

প্রাচুর্য নেহার মুখের সামনে এসে বলে, ছেলে মানুষেরা কখনোই ব্যক্তিগত ভাবে মেয়েদের সামগ্রী পছন্দ করে না। তার চোখে যে মেয়ের মায়া আটকে থাকে তার পছন্দের সামগ্রীসমুহই সে পছন্দ করে। এবার ঠান্ডা মাথায় উত্তর দে, শাড়ি কার খুব খুব পছন্দ?

নেহার মনের অজান্তেই বলে ,রোদেলা।

–আবেগ তোকে নাক ফুটা করতে বলেছিল না? অথচ তোর তো কান ই ফুটা করা নাই। রোদেলা কিন্তু কারনে অকারণে নাকে অলংকার পড়ে। আসলে কি জানিস? আবেগ তোর মধ্যে বারবার রোদেলা কে চাইত। তাই তো ওর পছন্দ গুলো, ওর স্বভাব গুলো তোর মধ্যে প্রতিস্থাপন করতে চাইত। আসলে এতে দোষের কিছু নাই। একটা পুরুষের মন যেই নারীর দখলে, সে সব জায়গায় কারনে -অকারনে তাকেই খুজবে।

নেহা প্রাচুর্য কে ধাক্কা দিয়ে চলে যেতে গেলে।,প্রাচুর্য তার হাত ধরে বলে, সূর্য পূর্ব দিকে উঠে। সময় চলমান। আবেগ রোদেলাকে ভালোবাসে –এই তিনটা বাক্যই চিরন্তন সত্য। Universal Truth!
#অশ্রুমালা
part–20
#Arishan_Nur (ছদ্মনাম)

–রোদেলা,,,রোদেলা,,,,দেখি একটু কষ্ট করে চোখ খুলো। খুব কষ্ট হচ্ছে তোমার কি?রোদেলা? (চিন্তিত গলায় আবেগ ডাকছে রোদেলাকে)

রোদেলা অচেতনের মতো আবেগের কাধে হেলান দিয়ে শুয়ে আছে। তার চারপাশে কোন হুশ নেই। কারো কথাই যেন কানে যাচ্ছে না তার৷

কিছুক্ষন আগে হুট করে বাসের ঝাকুনিতে রোদেলার মাথা আবেগের কাধে এসে পড়ে। আবেগ জেগেই ছিল। ফোন চালাচ্ছিল।

কাধে রোদেলার মাথা ঠেকতেই সে উষ্ণতা অনুভব করে। এক মিনিটের মধ্যে তার কাধ মনে হচ্ছে এখনি জ্বলে যাবে। এতো উত্তাপ! তখনি আবেগ ফোন রেখে রোদেলা তে মনোযোগ দেয়।

তার কপালে হাত রাখতেই বুঝে যায় প্রচন্ড জ্বর যাচ্ছে রোদেলার গা দিয়ে। আবেগ বুঝে উঠতে পারছে না কি করবে?

চলন্ত বাসে কিভাবে রোদেলার সেবা করবে? মেডিসিন সঙ্গে নেই যে খাইয়ে দিবে। এদিকে রোদেলা মরার মতো তার কাধে পড়ে আছে। সামান্য ঝাকুনি খেলেই পড়ে যাবে। আবেগ শাক্ত করে রোদেলাকে নিজের বুকের সাথে চেপে নেয়। সঙ্গে সঙ্গে আবেগের বুকটাও উত্তপ্ত হতে লাগে। আবেগ রোদেলার ঘন ঘন নিশ্বাস-প্রশ্বাস অনুভব করতে লাগলো। মেয়েটার হৃদস্পন্দন তার কানে অস্পষ্ট ভাবে যাচ্ছে। আবেগের মনের মধ্যে তখন এক আকাশ পরিমান অস্থিরতা। রোদেলার শরীর যে মৃদ্যু কাপছে তা আবেগ বুঝতে পারছে, অনুধাবন করতে পারছে৷ রোদেলার গায়ের মিস্টি সুবাস আবেগের নাকে এসে লাগতে শুরু করল।

আবেগ আবারো রোদেলাকে ডাক দিল। কিন্তু রোদেলা সায় দিল না ডাকে। গভীর ঘুমে তলিয়ে আছে সে।

একজন ডাক্তার হওয়ায় পর ও আবেগ বেশ ভয় পাচ্ছে। এর চেয়ে কতো শত ভয়ংকর কেস সে হ্যান্ডেল করে। সেদিনই তো এক লোক আসল যার পায়ের উপর দিয়ে গাড়ি চলে গেছে। রক্তাক্ত পা দেখে তো আবেগ ঠিক ই শান্ত ছিল। ঠান্ডা মাথায় সব ব্যবস্থা করল।

তাহলে এখন সেই ডাক্তারই কেন একজন সামান্য জ্বরের রুগী দেখে চিন্তিত হচ্ছে। মস্তিষ্ক অনেক ভাবে আবেগকে বোঝানোর চেষ্টা করল কিন্তু আবেগের চিন্তার পরিমাণ এক চিলকে কমল না। উলটা সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে তা আরো বেড়েই চলেছে৷

আবেগ এবার ব্যাগ থেকে পানির বোতল বের করে রোদেলার মুখে ছিটা দিল। রোদেলা নড়েচড়ে উঠে চোখ পিটপিট করে খুলেই আবেগকে চিন্তিত মুখে তার সামনে দেখতে পেল।

রোদেলা কে চোখ খুলতে দেখে আবেগ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে।

–এখন কেমন লাগছে রোদেলা?

রোদেলা উত্তরে এতো আস্তে করে কি যেন বলল যা কানে এসে পৌছালো না আবেগের।

সে রোদেলার মুখের সামনে বোতল ধরল। রোদেলা হালকা মাথা উচিয়ে পানি খেয়েই মুখ -চোখ কুচকালো। এতেই কিছুটা পানি রোদেলার গায়ে এসে ছিটকে পড়ল।

আবেগ বলল, কি হয়েছে?

–পানি অনেক তিতা লাগছে।

আবেগ মৃদ্যু হাসল। সে বুঝতে পারল জ্বর হওয়ায় এমনটা হচ্ছে।

আবেগ একটা টিস্যু বের করে রোদেলার গলায় পড়া পানি মুছে দিল৷

ওমনি রোদেলা আবেগকে জড়িয়ে ধরে খুব শক্ত করে।

আকষ্মিক এমন করে রোদেলার কাছে আসাটা আবেগকে অস্বস্তিতে ফেলে দিল। মনের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়ে যাচ্ছে।

রোদেলা খুব শক্ত করে আবেগকে জড়িয়ে আছে। তার মাথা ভারী হয়ে গেছে। মাথা তুলে রাখতে খুব কষ্ট হচ্ছে তবুও আবেগকে জড়িয়ে আছে। তার চোখ দিয়ে টুপটুপ করে চোখের পানি পড়ছে। রোদেলার চোখের মমতাময় অশ্রুতে আবেগের শার্ট খানা ভিজে উঠতে লাগে।

আবেগ অস্থির হয়ে যাচ্ছে৷ কেন রোদেলা কাদছে? সে কি রোদেলাকে খুব কষ্ট দিচ্ছে? মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে রেখেছে?

রোদেলা অস্ফুটস্বরে বলে, আমি তোমাকে ভালোবাসি।

কথাগুলোর মধ্যে এতোটাই জড়তা ছিল আবেগ শুনতে পায় নি। সে না পারছে রোদেলাকে জড়িয়ে নিতে আর না পারছে তার থেকে রোদেলাকে সরিয়ে দিতে৷ উফ! এক মিশ্র অনুভূতি বয়ে যাচ্ছে। এই মিশ্র অনুভূতির মধ্যে ভালো লাগাও আছে আবার সংকোচ, দ্বিধাও রয়েছে।

রোদেলা আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কাপা কাপা স্বরে জ্বরের ঘোরে বল উঠে, আবেগ?

–হু।

রোদেলা জ্বরের ঘোরে বলতে কিছু একটা বলতে গিয়েও বললো না।

তাই বলল, না কিছু না। এখন বলতে ইচ্ছা করছে না। অন্য কোন দিন বলব।

–আচ্ছা। রেস্ট নাও৷

★★★

ফোনের স্ক্রিনের দিকে এক ধ্যানে চেয়ে আছে মেঘ। তার গা থরথর করে কাপছে। চোখ লাল বর্ণ ধারন করেছে। দাতে দাত চেপে নিজেকে সংযম করছে সে।

ফোনের স্ক্রিনে লেখা, অথৈয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে। খুব শ্রীঘই তার বিয়ে।

এই খবরটা সে এক মাধ্যমে থেকে মাত্র পেল। মেঘ ধপ করে চেয়ারে বসে পড়ে। এতো দ্রুত অথৈ বদলে গেল? তার বোকাসোকা গার্লফ্রেন্ডটা এখন অন্য কারো সাথে বিয়ের পিড়িতে বসবে? আগে তো তাকে ছাড়া কিছুই বুঝত না? আর এখন তাকেই বুঝে না।

মেঘের চোখ ফেটে গরম জল পড়তে লাগে। কি এক অসহ্যকর যন্ত্রনা এটা। না পারে সইতে না পারে মরতে!

কেন? কেন? তার ভালোবাসা কেই দূরে চলে যেতে হলো? কি এমন পাপ করেছে সে?

অথৈয়ের সাথে দেখা হয়েছিল রোদেলার মাধ্যমেই!

হ্যা রোদেলার মাধ্যমেই তো অথৈয়ের দেখা পেয়েছিল সে।

ভর্তি কোচিং করেও যখন রোদেলা ডাক্তারি চান্স পেল না তখন ভারাক্রান্ত মনে ইডেনে ভর্তি হয় রোদেলা। তার বাবা-মায়ের রোদেলাকে ভালো মানের প্রাইভেট ভার্সিটিতে পড়ানোর সামর্থ্য ছিল না। রোদেলার ভালো মানের প্রাইভেট ভার্সিটিতে পড়ার ইচ্ছা থাকলেও বাবাকে জোড় করে না। সে ছোট থেকেই খুব বাধ্য আর আর্দশ সন্তান ছিল বাবা-মায়ের। তাকে প্রাইভেটে এতো টাকা খরচ করে পড়াতে যে তার বাবার উপর রোলার কোস্টার যাবে তা বেশ বুঝতে পারে রোদেলা।

এইচ এস সি তে এ প্লাস পায় নি। তাই ইঞ্জিনিয়ানিং সেক্টরে ট্রাই ও করে না।

রোদেলা ভার্সিটি যাওয়া-আসা শুরু করে। ইডেন যেহুতু ন্যাশনাল ভার্সিটি সেই সাথে সরকারি তাই রেগুলার ক্লাস না করলেও চলে । এজন্য সপ্তাহে তিন দিন মামার বাসায় থেকে সে টানা ক্লাস করে বাসায় যেত। কোচিং যেভাবে করেছে ভার্সিটিও সেভাবেই করতে লাগে রোদেলা।

আবেগের তখন ইন্টার্ণ চলে। সকালে যেত, বিকাল বা সন্ধ্যা ফিরত। প্রায় দিন ই আবেগ রোদেলা এক সঙ্গে বের হত। রিকশায় করেই যাতায়াত করত তারা।

পাশাপাশি বসে যখন আবেগ রোদেলা ঢাকার রাস্তায় শো শো করে এগিয়ে যেত তখন রোদেলার মন ও চোখ আবেগের মধ্যে ই সীমাবদ্ধ থাকত। রোদেলার মনে তখন লাল-সবুজের মেলা! সে মেলায় হরেক রককের শখের হাঁড়ি আর প্রতিটা হাঁড়িতে আবেগের নামের চিরকুটে ভরা৷

আবেগের মনে কি চলছিল তা আবেগ নিজেই বুঝত না। কিন্তু প্রতিদিন রোদেলাকে ভার্সিটি না নিয়ে গেলে তার কেমন ছটফট লাগত। জানে না কেন এমন হত। দম আটকে আসত রোদেলাকে না দেখলে। আবেগ এটাকে শ্বাস কষ্ট ভাবা শুরু করে দেয়। তার ডিকশনারিতে ভালোবাসা বা প্রেম নাই। তার ডিকশনারিতে আছে কেবল,
Grays Anatomy, Basic pathology, Medical Embryology, Snells clinica Neuroanatomy, Appiled Physiology মতন মোটা মোটা বইয়ের প্রতিটা পাতা। এসব বইয়ের কোন কোণায় ভালোবাসা বা প্রেম দিয়ে লেখা নাই তাই বোধগম্য নয় আবেগ প্রেম সম্পর্কে।

মাঝে মধ্যে হাফ ব্রেকে আবেগ কোন কারন ছাড়াই রোদেলার ভার্সিটিতে যেত। সেই সময় মেঘও আসত তার সাথে। আবেগ ই তাকে ধরে বাধে আনত। মেঘ তখন পড়া শেষ করে একটা কম বেতনের জব করছিল। বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন বুকে নিয়ে।

রোদেলার বান্ধবী ছিল অথৈ৷ দুইজন ই ফাস্ট ইয়ার। মাত্র এক মাস হয়েছে ক্লাস করার। তাদেরকে এক কথায় ফ্রেশারস বলা যায়।

রোদেলার সাথে আবেগ যখন দেখা করতে যেত তখনি মেঘের চোখ যায় অথৈয়ের উপর।

অথৈকে প্রথম দেখাতেই প্রেমের হাওয়া দোলা দিয়ে যায় মেঘের হদয় জুড়ে। কি স্নিগ্ধ চাউনি অথৈয়ের ডাগর ডাগর চোখের। সবসময় রোদেলার সাথেই থাকত । রোদেলা ছাড়া বোধহয় বাথরুমেও যায় না —প্রথম দেখায় এমনই মনে হয় মেঘের অথৈকে দেখে।

সেদিন আবেগ তাদেরকে নিউমার্কেট নিয়ে গিয়ে ট্রিট দেয়। কোন কারন ছাড়াই ট্রিট দেয়। সেদিন আবেগ রোদেলা, মেঘ আর অথৈকে নিউমার্কেট নিয়ে গিয়ে খাওয়ালো। ঝাল ফ্রাই আর নিউমার্কেটের বিখ্যাত ফুচকা আর লাচ্ছি।

সেদিন খুব মজা করেছিল চারজন। মেঘ অথৈকে ইমপ্রেস করার জন্য অনেক জোকস, মজার কথা বলেছিল। যার জন্য আড্ডাটা জমে গিয়েছিল। রোদেলা মেঘের হাব-ভাব দেখেই বুঝে যায় মেঘ উইক হয়ে পড়েছে অথৈয়ের উপর। আর এদিকে মেঘ বুঝে যায় রোদেলা আবেগ নামক একটা নিরামিষ প্রানীর উপর ভয়ংকর লেভেলে আহত৷

কিন্তু আবেগ তো বুঝতে নারাজ। রোদেলা অবশ্য চেষ্টা করে না বোঝাতে আবেগকে। সে চায় আবেগ তাকে নিয়ে নিজে থেকে ই ভাবুক।

এতোক্ষন পর্যন্ত খুব সুইট একটা মিস্টি মিস্টি প্রেম বা চারজনের একটা আড্ডাখানার গল্প চলছিল। যেখানে চার জন ভিন্ন বাসিন্দার মানুষের জীবনের সুখ-দুঃখের গল্প, হাসি -হতাশার বুলি বলা হত৷

কিন্তু কথায় আছে না? যেখানে মিস্টি আছে সেখানে মাছির উপদ্রব ও আছে।

মাছি হিসেবে হয়ত নেহা এসেছে কিংবা তৃতীয় পক্ষ হিসেবে। কে জানে?

আবেগ আর রোদেলার মিস্টি মিস্টি কথোপকথন থামাতে আর চোখের ইশারায় ভালো লাগাকে রোধ করতে নেহার আগমন ঘটে।

ফাস্ট ইয়ারের ছয় মাস ক্লাস শেষ হয়ে যাওয়ার পর ইডেনে ভর্তি হয় নেহা। বড়লোক বাবার একমাত্র মেয়ে সে। বাংলাদেশের টপ প্রাইভেট ভার্সিটিতে পড়া শুরু করে কিন্তু শেষ অব্দি সামলাতে পারে না। নেহা ছোট থেকেই ফাকিবাজ স্বভাবের। তাই তো তার বাবা ইডেনে ভর্তি করে দেয়।

নেহার কারনে মেঘ আর অথৈয়ের সম্পর্কের অবনতি হয় নি। নেহা যখন ভর্তি হয় তখন মেঘ আর অথৈয়ের মধ্যে কিছু একটা হয়ে গিয়েছিল। আবেগ আর রোদেলার মধ্যে তখনো কিছু হয় নি৷

ওই যে জীববিজ্ঞানে আছে না? মাইটোসিস বিভাজন শুরু হওয়ার আগে কোষের নিউক্লিয়াস কিছু প্রস্তুতিমূলক কাজ করে। সেটাকে ইন্টার ফেস পর্যায় বলে। আবেগ আর রোদেলাও সম্পর্কে জড়ানোর আগের কিছুটা প্রস্তুতিমূলক কাজ করে নিজেদের প্রস্তুত করছিল কিংবা ইন্টার ফেস দশায় ছিল তারা।

তখনি আগমন ঘটল নেহার। নেহা মেয়েটা খারাপ না। বেশ চটপটে স্বভাবের। চঞ্চল আর হাসি খুশি। ইডেনে সে একাই মনে হয় শার্ট-প্যান্ট পড়ত।

মেঘ অতীত থেকে বের হয়ে এলো৷ এখন আর এসব ভেবে লাভ কি? সে হতাশাভরা শ্বাস ফেলে মনে মনে বলে, তুমি সুখে থাকো অথৈ আর তোমার সুখ আমার মনে আগুন জ্বালাক!

★★★

রিশাদ তার গাড়ির সিটে হেলান দিয়ে সিগারেট ফুকছে। আবেগের বাড়ির কিছুটা সামনে দাঁড়ানো সে। রিশাদের মেজাজ বিঘড়ে আছে। ড্রাইভার কে সিগারেট আনতে বলেছিল। ব্যাটা সিগারেট এনেছে কিন্তু কমদামি সিগারেট এনেছে। রিশাদ আবার গোল্ড লিভ বা বেনসন ছাড়া খায় না। এসব কমদামি সিগারেট খেলে তার মনে হয় ধোয়া খাচ্ছে। তার চ্যালাদের মাধ্যমে মাত্র জানতে পারল, রোদেলা আর আবেগ নেই। তারা নাকি গ্রামে গেছে। এ নিয়েও চেতে আছে রিশাদ।

হারামী গুলো আগে বললেই তো আর কষ্ট করে এদিকে তার আসার লাগত না।

রিশাদ সিগারেট ফেলে দেওয়ার জন্য গাড়ির জানালা খুলতেই তার চোখ আটকে গেল। একটা কমবয়সী মেয়ের দিকে। মেয়েটার মুখে মাস্ক। ইদানিং এই করোনার জন্য সবাই মাস্ক পড়ছে। মেয়েটাও পড়ে আছে। হাতে প্যাকেট। খাবারের প্যাকেট৷

রিশাদের মেয়েটাকে দেখে আগ্রহ বাড়তে থাকল। মেয়ে দেখলে এমনি রিশাদের মাথা ঠিক থাকে না। সেখানে এই মেয়েটা বেশ সুন্দর। লম্বা, ফর্সা। চেহারা দেখতে পাচ্ছে না সে৷

মেয়েটা গুটিগুটি পায়ে তার গাড়ির সামনে এসে, রাস্তার ধারে এসে থামল। তারপর মাস্ক খুলল। প্যাকেট থেকে খাবার বের করল। একটা প্রেস্টি ছিল। সে খুশি মনে কেকে কামড় বসালো এবং খেতে লাগলো।

রিশাদের ও লোভ হতে লাগলো। একজন ভালো মানুষ হলে হয়তো কেকটা দেখে সেটার উপর তার লোভ জন্মত বা তার ও কেক খেতে মন চাইত৷ কিন্তু রিশাদ যেহুতু নোংরা মস্তিষ্কের তাই তার কেকের প্রতি না মেয়েটার প্রতি লোভ জন্মালো। মেয়েটা ভারী মিস্টি দেখতে। কিন্তু চেনা চেনা লাগছে৷ কোথায় যেন দেখেছে। রিশাদ লুকিয়ে মেয়েটার ছবি তুলে নিল।

মেয়েটা সামনের দিকে পা বাড়ালো। রিশাদ ও তাকে ফলো করতে লাগলো।

মেয়েটা সামনের বিল্ডিং এ ঢুকে পড়ল। রিশাদ হতভম্ব হয়ে যায়। আবেগ যে বিল্ডিং এ থাকে সেখানে ঢুকল।

রিশাদ মোবাইলে মেয়েটার ছবি দেখতেই চিনে ফেলল। মেয়েটা আবেগের ছোট বোন। রোদেলার কাজিন। ইভানা নাম। এর আগে দেখেছিল সে। কিন্তু এই নজরে তো দেখে নি।

রিশাদের ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে উঠল এবং সে মনে মনে বলে, দুই বোনই তো সুন্দরী। তবে ইভানা বেশি সুন্দর। উফ! দেখেই তো নেশা ধরে গেল।

ইভানা কেক খেতে খেতে বাসায় ঢুকল। সে মাঝে মধ্যে ই প্রেস্টি খায়। আজকে ডিনারের পর খেতে মন চাচ্ছিল তাই বের হয়ে নিজেই কিনে আনল। অন্য সময় দারোয়ান কে টাকা দেয় উনি কিনে আনে। কিন্তু আজকে ইভানা নিজেই বের হলো। সে খুব খুশি। ভাইয়া ও ভাবীর সাথে গ্রামে গেছে খবর পেয়ে সে খুব আনন্দিত হয়েছে৷ এজন্য ই সেলিব্রেশন করতে কেক খেল।

চলবে।

[সবাই দেখলাম রিশাদকে খুব মিস করছিল তাই চলে এলো রিশাদ। আর গল্পটার প্রতি কি আপনারা দিন দিন আগ্রহ হারাচ্ছেন? অসংখ্য ধন্যবাদ সবাইকে। ]
চলবে৷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here