প্রেমাসক্তি পর্ব ১৭

#প্রেমাসক্তি
#পর্ব__১৭
#অদ্রিতা_জান্নাত

আম্মু হাতে শাড়িটা ধরিয়ে দিয়ে চলে গেল ৷ হাতের শাড়িটার দিকে তাকিয়ে সেটা ছুড়ে ফেলে দিলাম আমি ৷ ওই লোকটা আর কত নিচে নামবে? লজ্জা হয়না? অনুতপ্ত হয় না সে তার কাজের জন্য? এ কার মেয়ে হলাম অামি ৷ নিজের চোখ মুছে নিয়ে চেঞ্জ করে নিলাম ৷ আপু এসে হালকা করে সাজিয়ে দিয়ে গেল ৷ তারপর নিচে নিয়ে গেল আমাকে ৷ ইশান এসব জানলে কতটা পাগলামি করবে সেটাই বুঝতে পারছি না ৷ ওকে বলবো কি করে আমি?

নিচে গিয়ে দেখি সোফায় একটা মহিলা বসে আছে ৷ তার পাশে বসা একটি ছেলে ৷ অদ্ভুত দেখতে ছেলেটাকে ৷ বিরক্ত লাগছে আমার ৷ ছেলেটার পাশে একটা লোক বসে অাছে ৷ হয়তো এরাই ছেলেটার মা বাবা ৷ আর ছেলেটাই হয়তো পাত্র ৷ বাপি কি দেখে পচ্ছন্দ করেছে এই গাঁধা ছেলেটাকে কে জানে ৷ অসহ্যকর একদম ৷ আমাকে নিয়ে মহিলাটির পাশে বসিয়ে দিলো আপু ৷ চুপচাপ বসে রইলাম ৷ সামনে বাপি বসে আছে ৷ আর তার পিছনে আম্মু আর আপু দাঁড়িয়ে আছে ৷ ফুপ্পি এখানে নেই ৷ দুই মাস আগে সে তার ফ্লাটে চলে গিয়েছে ৷ মাঝেমাঝে এসে দেখে যায় আমাদের ৷ মহিলাটি আমার দিকে তাকিয়ে বললো,,,,,,,,

—- নাম কি তোমার?

ইশিতা : নাম জেনে আসেন নি? ওই লোকটা বলে নি আপনাদের? আজব মার্কা মহিলা ৷

ইশিতা কথাটা বিড়বিড় করে বললেও সেখানকার সবাই- ই শুনলো ৷ ইশিতার বাবা রাগি চোখে তাকিয়ে রইলো ওর দিকে ৷ ইশিতার মা আর বোন মুখ টিপে হাসলো ৷ আর ওই মহিলাটি বেক্কলের মতো হা করে চেয়ে রইলো ৷ ইশিতা ওই মহিলাটির দিকে তাকিয়ে বললো,,,,,,,

ইশিতা : মুখে মশা ঢুকবে গো খালাম্মা!

মহিলাটির হা করা অবস্থাতেই কাশি উঠে গেল ৷ সামনের টেবিল থেকে পানি নিয়ে ঢকঢক করে পানি খেয়ে নিল ৷ ইশিতা দাঁত কেলিয়ে বললো,,,,,,,,

ইশিতা : এবার ঠিক আছেন তো খালাম্মা?

‘খালাম্মা’ শব্দটা মহিলাটির গায়ে লাগলো ৷ মনে মনে রাগ হলো তার ৷ তাকে কোন দিক থেকে খালাম্মার মতো লাগে? নিজের দিকে একবার তাকালো ৷ বেশ সুন্দর ভাবেই তো সেজে এসেছে ৷ সেখানে মেয়েটা তাকে খালাম্মা বলে বুড়ো করে দিচ্ছে ৷ সামনে থেকে ইশিতার বাবা জোরে ধমক দিয়ে বললেন,,,,,,,,

—- ইশিতা?

ইশিতা হালকা হেসে বললো,,,,,,,

ইশিতা : জ্বী বাবা বলেন?

আরমান চৌধুরি হা হয়ে তাকিয়ে রইলেন ৷ মেয়েটা এমন করছে কেন? পাগল টাগল হলো নাকি? মহিলাটি ইশিতার উদ্দেশ্যে বললো,,,,,,

—- আচ্ছা তুমি কাজ করতে পারো?

ইশিতা : কিসের কাজ?

—- বাড়ির কাজ ৷ এই ধরো রান্না করা, ঘর গুছানো ইত্যাদি?

ইশিতা মহিলাটিকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত এক নজর দেখার মতো করে বললো,,,,,,

ইশিতা : কেন? আমাকে কি আপনি বাড়ির কাজের লোক করে রাখবেন নাকি?

—- আরে না না এমনি জিজ্ঞেস করছিলাম ৷ জানতে চাইছিলাম পারো নাকি? তুমি কি রান্না করতে পারো?

ইশিতা : রাঁধতে পারি না ৷ খেতে পারি ৷ আপনি রাঁধবেন আর আমি বসে বসে খাবো ৷ সিম্পল!

মহিলাটি ইশিতার কথায় একটা ঢোক গিললেন ৷ এমন মেয়ে এই প্রথম দেখলেন ৷ কথার কি ছিড়ি! পুরাই নাউজিবিল্লাহ ৷ মনে মনে ভাবছেন তিনি ৷ তারপর কিছু একটা ভেবে বললেন,,,,,,,

—- চা? চা তো বানাতে পারো নাকি?

ইশিতা : এই যে খালাম্মা আমি আপনাকে কেন বলবো এসব? তবুও বলছি ৷ আমি চা বানাইতে পারি না ৷ শুধু গরম পানি করতে পারি ৷

মহিলাটি চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে রইলেন ৷ কিছু বলার মতো ভাষা খুঁজে পাচ্ছেন না তিনি ৷ ইশিতার বাবা বুঝে গেছে তার মেয়ে বিয়ে ভাঙ্গার জন্য উঠে পরে লেগেছে ৷ সে তার বউয়ের উদ্দেশ্যে বললো,,,,,,,,

—- রাহেলা তোমার মেয়েকে নিয়ে যাও ৷

বলেই কিছু একটা ইশারা করলেন ৷ ইশিতা কিছু বলতে যাবে তার আগে ওর বাবা বললো,,,,,,,

—- যাও তুমি ৷

আম্মু আমাকে নিয়ে কিচেনের দিকে চলে গেল ৷ দুটো অরেঞ্জ জুসের গ্লাস ট্রেতে রেখে আমার হাতে দিয়ে বললো,,,,,,

—- কি করছিস বল তো? পরে তোর বাবা আবার শুরু করবে ৷

ইশিতা : যা ইচ্ছা করুক ৷ আমার সামনে ওই লোকটাকে একদম তোর বাবা তোর বাবা করবে না ৷ অসহ্য লাগে ৷ এটা কেন দিয়েছো?

—- ওদেরকে দিয়ে আয় ৷

ইশিতা : কাদেরকে?

—- যারা দেখতে এসেছে তোকে ৷

ইশিতা : ও আচ্ছা… কিইই? ওদেরকে দিব তাও আমি? নেভার!

—- তোর বা… না মানে ওই লোকটা বলেছে ৷ যা না মা ৷

ইশিতা : আচ্ছা ৷

বলেই চলে যেতে নিলে কিছু একটা ভেবে আবার পিছনে ফিরে ট্রেটা নিচে রেখে দিলাম ৷ আম্মু সেটা দেখে বললো,,,,,,

—- কি হলো আবার?

ইশিতা : আমাকে মরিচ আর লবনের কৌটা দাও তো ৷

—- এগুলা দিয়ে তুই কি করবি?

ইশিতা : উফ আগে দাও না প্লিজ ৷

—- আচ্ছা দাঁড়া ৷

আম্মু মরিচ আর লবনের কৌটা বের করে আমার হাতে দিল ৷ আমি মরিচের কৌটা থেকে এক চামচ মরিচ নিয়ে তিনটা গ্লাসে মিশিয়ে দিলাম ৷ এর থেকে বেশি দিলে বুঝা যাবে তাই ৷ লবনের কৌটা থেকে প্রত্যেক গ্লাসে তিন চামচ করে লবন দিয়ে সেটা মিক্সড করতে লাগলাম ৷ আম্মু হা করে তাকিয়ে আছে ৷ মিক্সড শেষে গ্লাসের ট্রেটা হাতে নিয়ে আম্মুর দিকে তাকিয়ে একটু হেসে বললাম,,,,,,,,,

ইশিতা : কেমন হয়েছে হুম? রান্না করাবে আমাকে দিয়ে না? দেখাচ্ছি মজা ৷

—- আরে তুই কি পাগল হয়ে গেলি না কি? এগুলা ওদের খাওয়াবি?

ইশিতা : জ্বী আম্মুজান ওই গাঁধাগুলাকে খাওয়াবো ৷ তুমি আসো গেলাম আমি ৷

বলেই ইশিতা চলে গেল ৷ ওর আম্মু ওখানে দাঁড়িয়ে থেকেই বিড়বিড় করে বলতে লাগলো,,,,,, “এই মেয়েটা আজকে কিছু না কিছু ঘটিয়েই ছাড়বে ৷ তবে বিয়েটা ভেঙ্গে গেলেই ভালো হয় ৷ যাই দেখি” বলেই ইশিতার পিছন পিছন ছুটলেন ৷

আমি হাতের ট্রেটা নিয়ে ওনাদের সামনে রাখলাম ৷ তারপর সোফায় বসে বললাম,,,,,,,

ইশিতা : নিন খান ৷ আমি বানিয়েছি এটা ৷

মহিলাটি ইশিতার কথায় একটা ঢোক গিলে বললো,,,,,,,,

—- আআমরা এসব খাই না ৷

ইশিতা দাঁতে দাঁত চেপে বললো,,,,,,,,

ইশিতা : তাহলে খান কি?

ইশিতার কথা শুনে ওর বাবা চোখ বড় বড় করে তাকালেন ৷ ও কি বলছে এসব? পাশের মহিলাটি ইশিতার কথা শুনে তেজি গলায় চেঁচিয়ে বললেন,,,,,,,,,,

—- কিহ? আমি খানকি? তুমি আমাকে খানকি বললা?

আমি বললাম কি আর এই বয়রা মহিলা বুঝলো কি ৷ আমিও চেঁচিয়ে বললাম,,,,,,

ইশিতা : ওই আপনার কানে সমস্যা আছে নাকি খালাম্মা? ডাক্তার দেখান আগে ৷ বয়রা কোথাকার ৷ আমি বলছি কি খান আপনি? আর আপনি বলছেন আমি খান.. আই মিন গালি দিছি আপনাকে? আপনার ভাবা গুলা তো খুব বিচ্ছিরি ৷

—- ইশিতা?

ইশিতার বাবা ধমক দিয়ে উঠলেন ৷ ইশিতা চুপ হয়ে গেল ৷ মহিলাটি রাগে ফোস ফোস করতে লাগল ৷ ইশিতার মা এসে জুসের প্রত্যেকটা গ্লাস তাদের তিন জনের হাতে তুলে দিলেন ৷ তারা গ্লাস হাতে নিয়ে কিছুক্ষন বসে রইলেন ৷ ইশিতার বাবা তাদের খেতে বললেন ৷ ইশিতা একবার আড়চোখে দেখে নিলো তাদের ৷ তারা জুস মুখে দেয়া মাত্র মুখের জুসটা ছিটকে ফেলে দিলেন ৷ আর তাদের মুখের সেই জুসটা গিয়ে পরলো আরমান চৌধুরির মুখে ৷ সে রক্তিম চোখে তাকালেন তাদের দিকে ৷ ইতি ওর বাবার এমন অবস্থা দেখে শব্দ করে জোরে হেসে দিল ৷ পাশ থেকে ওর মা গুতা দেওয়ায় ও নিজের মুখ চেপে ধরে চুপ করে রইল ৷ মহিলাটি আমতা আমতা করে বললো,,,,,,,,,

—- সরি সরি আসলে জুসটা খুব বিচ্ছিরি ৷ খাওয়ার মতো না ৷ ইশ মুখটাই নষ্ট হয়ে গেল আমার ৷

তারা সবাই পানির গ্লাস থেকে পানি খেয়ে নিজেদের স্বাভাবিক করলো ৷ ইশিতার বাবা মুখ ধুয়ে এসে বসলেন আবার ৷ এখন এক প্রকার বিরক্ত লাগছে তার ৷ তবুও কিছু বলতে পারবেন না তাদের ৷ ইশিতা বলতে লাগলো,,,,,,,,,

ইশিতা : তো খালাম্মা আমার হাতে জুসটা কেমন লেগেছে?

মহিলাটি জোরপূর্বক একটু হেসে বললেন,,,,,,,

—- অঅঅনেক ভালো ৷ ততো এখন আআসল কথা বলি?

ইশিতা : হুম?

—- বলছিলাম যে বিয়ের পর বাচ্চা সামলাতে পারবে তো?

ইশিতা : আপনার বাচ্চা আপনি সামলাবেন আমি কেন সামলাতে যাবো?

—- আমি তোমার বাচ্চার কথা বলছিলাম ৷

ইশিতা : কই বাচ্চা আছে আমার? দেখেছেন আমার কোলে ঝুড়ি ঝুড়ি বাচ্চা? বিয়ের আগেই বাচ্চার কথা বলছেন? কি অসভ্য আপনি খালাম্মা ৷

মহিলাটি চোখ বড় বড় করে তাকালেন ৷ পাশ থেকে লোকটা মানে মহিলাটির স্বামী মহিলাটিকে ধমকের সূরে বলতে লাগলেন,,,,,,,,

—- আহ সুমি ৷ আধুনিক প্রশ্ন করো ৷ কি সব বলে যাচ্ছো?

—- তো তুমিই করো না ৷ আমাকে বলছো কেন?

মহিলাটি তেজি গলায় বললেন ৷ লোকটি ইশিতাকে বলতে লাগলো,,,,,,,,,

—- আমি বলি হ্যাঁ?

ইশিতা মাথা নাড়ালো ৷

—- গান গাইতে পারো?

ইশিতা সঙ্গে সঙ্গে একটা জোরে চিৎকার দিয়ে উঠলো ৷ ড্রইং রুমে উপস্থিত সবাই হাত দিয়ে তাদের কান চেপে ধরলো ৷ ইশিতা কিছুক্ষন পর থেমে দাঁত কেলিয়ে বললো,,,,,,,,

ইশিতা : খালুউউউ? কেমন হলো আমার গানের গলা?

লোকটা আমতা আমতা করে বললো,,,,,,

—- খখখুউউউব সুন্দর ৷

ইশিতা : তাহলে আমি নেঁচে দেখাই এখন?

যার গানের গলা এতো বিচ্ছিরি তার নাচ কতটা বিচ্ছিরি হবে? সেটাই তারা তিন জন ভাবছে ৷ এদিকে ইতি আর ওর মা মুখে চেপে হাসছে ৷ আর ওর বাবার মাথা ফেটে যাচ্ছে রাগে ৷ তবুও মুখে হাসি ঝুলিয়ে বললো,,,,,,,,

—- ওদের দুজনের একটু অালাদা কথা বলা দরকার কি বলেন?

মহিলাটিও তার কথার সাথে তাল মিলিয়ে বললো,,,,,,,

—- হ্যাঁ হ্যাঁ আমরা তো কথা বললাম ৷ এবার ওদের দুজনের একটু আলাদা কথা বললে ভালো হয় ৷ তাহলে বিয়ের কথা আগানো যাবে ৷ যদি আমার ছেলেটা বলে ৷

এই বলেই মহিলাটি তার ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো ৷ এসব দেখে এখন আমার রাগ হচ্ছে ৷ এত কিছু করলাম তবুও বিয়ের কথা আগাবে? মানে কি! বাপি আমার দিকে তাকিয়ে বললো,,,,,,,,

—- ইশিতা? যাও ৷

জোরপূর্বক একটু হেসে বললাম,,,,,,,

ইশিতা : কোথায়?

—- সাফি (ছেলেটা) কে নিয়ে যাও তোমার সাথে ৷ ছাদে গিয়ে দুজনে কথা বলে তারপর নিচে এসো ৷

ইশিতা : কিন্তু আমি…

—- কোনো কথা শুনতে চাই নি ৷ যাও ৷

সেখান থেকে উঠে গটগট করে উপরে চলে গেল ইশিতা ৷ ওর পিছন পিছন ওই ছেলেটাও গেলো ৷

আমি ছাদে এসে একদম কর্ণারে রেলিং ঘেষে দাঁড়ালাম ৷ একটু পর সেই ছেলেটা এসে আমার পাশে দাঁড়ালো ৷ তার দিকে একবার ভ্রু কুচকে তাকিয়ে থেকে সামনের দিকে তাকালাম ৷ ছেলেটা আরেকটু আমার দিকে ঘেষে এসে দাঁড়ালো ৷ আমি একবার তার দিকে তাকিয়ে আবার সামনে তাকালাম ৷ ছেলেটা এবার অারেকটু ঘেষে এসে দাঁড়ালো ৷ আমি কিছু বললাম না সাইডে সরে দাঁড়ালাম ৷ ছেলেটা আবারও আমার দিকে এসে ঘেষে দাঁড়ালো ৷ এবার আমি তার দিকে ফিরে কোমড়ে হাত দিয়ে ধমকের সাথে বললাম,,,,,,,

ইশিতা : এই আপনার সমস্যাটা কি? বারবার এইদিকে আসছেন কেন? দূরে যান ৷ বেশি বাড়াবাড়ি করবেন তো ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিব এখান থেকে ৷

সাফি : আমাদের তো কথা বলতে পাঠিয়েছে না? তো এভাবে চুপচাপ করে থাকলে কেমন একটা হয় না?

ইশিতা : তাই বলে এরকম করবেন? আচ্ছা অভদ্র তো আপনি ৷

সাফি : না না আমি খাঁটি ভদ্র সভ্য আছি ৷

আমি সামনের দিকে ফিরে চুপ করে রইলাম ৷ ছেলেটা আবার বললো,,,,,,

সাফি : তো আপনি কি করেন?

কপাল কুচকে তাকালাম তার দিকে ৷ সে আমতা আমতা করে বললো,,,,,,,

সাফি : না মানে কোন ক্লাসে পরেন?

ইশিতা : আমাকে দেখে কি বাচ্চা মনে হয় আপনার? মনে হয় আমি 1/2 এর স্টুডেন্ট?

সাফি : না না তা কেন হবে?

ইশিতা : তাহলে ক্লাস বলছেন কেন? আমি অনার্সের স্টুডেন্ট আর আমার ফাইনাল এক্সামও শেষ ৷ তো কি মনে হয় কোন ক্লাসে পরি আমি?

সাফি : হুম তাই তো!

বলেই ছেলেটা সামনের দিকে তাকিয়ে ভাবতে লাগলো কিছু একটা ৷ আমি পিছনে ঘুরে চলে যেতে নিলেই ছেলেটা আমার হাত ধরে বললো,,,,,,,,

সাফি : কোথায় যাচ্ছেন?

আমি হাত ঝাঁটা মেরে সরিয়ে দিয়ে বললাম,,,,,,,,

ইশিতা : সেটা আপনার দেখতে হবে না ৷ আমার হাত ধরার সাহস কে দিয়েছে আপনাকে?

সাফি : না মানে আপনি কোথায় যাচ্ছিলেন তাই?

ইশিতা : আমি জাহান্নামে গেলেও তাতে আপনার কি?

সাফি : আচ্ছা সরি ৷ এতো রেগে যাচ্ছেন কেন? একটা কথা বলবো?

ইশিতা : কি?

সাফি : আপনার হাতটা না অনেক নরম ৷

ইশিতা চোখ বড় বড় করে তাকালো ওর দিকে ৷ তারপর আশেপাশে কিছু একটা খুঁজতে লাগলো ৷ অাশেপাশে তাকাতেই একটা কাঠের লাঠি দাঁড় করানো দেখতে পেলো ৷ সেটা দেখে ছেলেটাকে বললো,,,,,

ইশিতা : আমার হাত নরম তাই না? ওকে দেখাচ্ছি মজা!

বলেই এক দৌঁড়ে লাঠিটা এনে ছেলেটাকে মারতে লাগলো ৷ ছেলেটা সারা ছাদ চক্কর দিতে দিতে বলতে লাগলো,,,,,,

সাফি : সরি সরি আর হবে না ৷ আর বলবো না ৷

ইশিতা ছেলেটাকে মারতে মারতে বললো,,,,,,,,

ইশিতা : আর বলবিনা না? আর বলতে দিলে তো বলবি ৷ শয়তান ছেলে তোকে আজকে মেরে ভর্তা করবো ৷ আমার হাত নরম না? এই নরম হাত দিয়েই তোকে জ্যান্ত মারবো আজ ৷

বলেই ইশিতা ছেলেটার পিছে পিছে দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে ছেলেটাকে মারতে লাগলো ৷ ছেলেটা এক দৌঁড়ে ছাদ থেকে নেমে নিচে চলে গেল ৷ ইশিতা দৌঁড়ে গিয়ে কি মনে করে আবার ফিরে এসে হাত থেকে লাঠিটা ছাদে ফেলে নিচে চলে গেল ৷

ছেলেটা দৌঁড়ে ওর মায়ের কাছে গিয়ে বলতে লাগলো,,,,,,,,

সাফি : মা মা ও আমাকে মেরেছে ৷

—- কে?

মহিলাটি বললো ৷ তখনি ইশিতা মুখে হালকা হাসি নিয়ে ইতি আর ওর মায়ের পাশে দাঁড়ালো ৷ পাশ থেকে ইতি ইশিতাকে খোঁচা মেরে বললো,,,,,,,

ইতি : কি রে? তুই মেরেছিস নাকি ওই গাঁধাটাকে?

ইশিতা কিছু না বলে বাঁকা হাসলো ৷ ওর দেখাদেখি ইতিও হাসলো ৷ ইশিতা এমন একটা ভান করতে লাগলো যেন ও কিছুই করে নি ৷ এই দিকে আরমান চৌধুরি সন্দেহ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ইশিতার দিকে ৷ কিছুটা হলেও অান্দাজ করতে পেরেছে সে ৷ সাফি নামের ছেলেটার বাবা বলতে লাগলো,,,,,,,,,

—- কি হলো বল? তোকে কে মেরেছে?

ছেলেটা হাত তুলে ইশিতার দিকে ইশারা করলো ৷ সবাই তাকালো ওর দিকে ৷ ইশিতা মুখ চেপে হালকা হেসে ছেলেটার দিকে একটু এগিয়ে গিয়ে চোখ রাঙিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে আহ্লাদি সূরে বললো,,,,,,,,,

ইশিতা : আমি আপনাকে মেরেছিইইই?

ছেলেটা কনফিউজড হয়ে গেল ৷ একবার মাথা ঝাকিয়ে ‘হ্যাঁ’ বললো তো আবার ‘না’ বললো ৷ ইশিতা একই ভাবে আবার ধমকের সূরে বললো,,,,,,,,,

ইশিতা : কি হলো? বলুন? আমি মেরেছি আপনাকে?

ছেলেটা চট করে একটা লাফ দিয়ে জোরে চেঁচিয়ে বলে উঠলো,,,,,, ” না! না!”

চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here