More than love পর্ব -১৬

#More_tham_love
#মেঘলা_আহমেদ
পর্বসংখ্যা-[১৬]

-” Hlw আপনাদের সাথে আছি আমি কিক্যানো। মেশিন কিক্যানো এর ২য় যাত্রা সফল হয়েছে। এখানে চারজন যাত্রী আছে। তারা ভ্রমন করছে এক ইউনিভার্স থেকে আরেক ইউনিভার্স এ। আপনারা অবস্থান করছেন আলফা প্ল্যানেট এ। যাত্রীদের নামার জন্য কিক্যানোর দরজা খোলা হচ্ছে।

মেশিনের ক/ম্পন থামতেই একটি রোবটিক ভয়েস পাওয়া যায়। সবাই আশ্চর্য হয়ে যায় কথাগুলো শুনে। রোদ্দুর রুহির দিকে তাকিয়ে ফিসফিসিয়ে জিজ্ঞেস করে-

-” এই এটা আবার কে কথা বলছে?

রুহি রোদ্দুরের কথায় তার দিকে তাকিয়ে বলে-

-” এটা এই মেশিনে সেট করা‌ আ/র্টিফি/সি/য়াল ইন্টে/লিজেন্স। যাতায়াতের‌ পথে সাহায্য করে এটা। দাঁড়াও ওয়েট। কিক্যানো, তুমি শুনতে পাচ্ছো? কিক্যানো?

তখনি আবারো রোবটিক ভয়েস পাওয়া যায় –

-” ইয়েস কিক্যানো হেয়ার। কিকা, কিকা। আপনাদের কি লাগবে বলুন?

সবাই আরেকদফা অবাক হয়ে যায়। রুহি সিটবেল্ট খুলে দাড়িয়ে বলে-

– কিক্যানো, আমরা এখন নেমে যাবো এই মেশিন টি কোথায় থাকবে? আর তোমার সাথে যোগাযোগ করবো কিভাবে?

তখনি মেশিনের সামনের একটা অংশ উপরের দিকে ওঠে। তাতে চারটা ঘড়ির মত বস্তু। রুহির ঠোঁটে হাসি ফোটে তা দেখে। কিক্যানো এবার বলে-

-” কিক্যানো কানেক্টেড। এখানে চারজন যাত্রী আছে। তাদের জন্য এই ডিভাইস গুলো। এই ডিভাইসের সাথে কিক্যানো কানেক্টেড আছে। আপনাদের কোন নির্দেশনা লাগলে বলবেন। ডিভাইস গুলো নিন প্লিজ। আর মেশিন টি নিরাপদ স্থানে থাকবে আপনারা এই জায়গায় এসে কিক্যানো কে ডাকলেই মেশিন চলে আসবে।

রুহি হেসে চারটা ডিভাইস নিয়ে নেয়। পেছনে ঘুরে দেখে সবাই তার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে। রোজা অবাক হয়ে বলে-

-” বইন আসলেই তর মাথায় বুদ্ধি আছে। নাইলে এত কি কেমনে সম্ভব?

রুহি সবাইকে ডিভাইস গুলো দিয়ে দেয়। নিজের টা হাতে পড়তে পড়তে বলে-

-” হুম বুঝছি রোজরানি। এবার ডিভাইস টা হাতে পড়ে নাও সবাই।‌

রোদ্দুর সিটবেল্ট খুলে উঠে দাঁড়ায়। হাতে লাগানো ডিভাইসটার কাছে মুখ নিয়ে বলে-

-” কিক্যানো শুনতে পাচ্ছো?

তখনি ডিভাইসটার ভেতর থেকে রোবটিক আওয়াজ পাওয়া যায় –

-” ইয়েস কিক্যানো কানেক্টেড।

রোদ্দুর রুহির দিকে তাকিয়ে বলে-

-” ওয়াও ইনভেনশন টা কিন্তু দারুন।‌

রুহি শুধু মৃদু হাসে। তার‌ মাথায় এখন অন্য চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে। সাইমন ডিভাইস চেক করার জন্য বলে-

-” কিক্যানো। আমরা কি আত্মরক্ষার জন্য কিছু পেতে পারি? যেমন ধরো কোন ডিভাইস?

কিক্যানো নিজের রোবটিক ভয়েস এ বলে-

-” ইয়েস। আপনারা লে/জার গা/ন পেতে পারেন। অপেক্ষা করুন। লোডিং….

সবাইকে আরেকদফা অবাক করে দিয়ে সামনে আবারো চারটা লে/জার গা/ন দৃশ্যমান হয়। সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। সাইমন উঠে দাঁড়ায়। লে/জার গা/ন হাতে নিয়ে বলে-

-” কিক্যানো, তুমি মস্করা করছো নাতো? এটা আসলেই কি লেজার গান?

কিক্যানো রোবটিক ভয়েস এ বলে-

-” মস্করা! সেটা আবার কি? দুঃখিত আমার সিস্টেমে এই ওয়ার্ড টা নেই‌। কিন্তু এটা আসল লেজা/র গা/ন। চাইলে নিজের মাথায় লে০জার বি/ম ফেলে ট্রাই করে দেখতে পারেন।

রুহি চোখ বড় বড় করে বলে-

-” কিক্যানো এসব কি বলছো। সাইমন ভুলেও ওর কথা শুনবে না। চলো এখান থেকে। এই পাঁচ ব্যা/টারি বেশিই বোঝে।

-” দুঃখিত আমি কিক্যানো। পাঁচ ব্যাটারি নই‌। আমার সিস্টেমে অনেক ডিভাইস ব্যবহৃত হয়েছে।

রুহি রেগে তাকায়। সবাই হো হো করে হেসে দেয় কিক্যানোর কথায়। রোদ্দুর হেসে বলে –

-” আরে রুহি ছাড়ো তো। চলো আমরা বেরোই।

সবাই আস্তে আস্তে নিচে নামে মেশিন থেকে। চারদিকে তাকাতেই অবাক হয়ে যায় সবাই। নতুন নতুন কিসব বিল্ডিং। রাস্তায় রাস্তায় রোবট।‌ মানুষ রোবটিক কুকুর নিয়ে হাঁটছে। সবই অবাক করা ব্যাপার। রুহি হাতের ডিভাইসে জিজ্ঞেস করে-

-” কিক্যানো তুমি কি বলতে পারো সাইন্টিস্ট আয়মানের বাসা কোথায়?‌

কিক্যানো বলে ওঠে-

-” ওয়েট। কিক্যানো কানেক্টেড। সার্চিং সাইন্টিস্ট আয়মান। আপনি যেখানে দাঁড়িয়ে আছেন তার থেকে ১০ মিটার দূরে। সাইন্টিস্ট আয়মান নামের ডিভাইস সো করছে। তার চেয়ে কিছু দুরে দুরে আরো আছে।

রুহি জানে ১০ মিটার দূরের টাই তার বাবা। চোখদুটো ঘোলা হয়ে গেল বাবার কথা মনে পড়ায়। সাইমন পাশে দাঁড়িয়ে বলে-

-” চলো যাওয়া যাক।

রুহি পেছনে তাকায় রোজা, রোদ্দুর ও তার দিকে তাকিয়ে আছে। রুহি হাঁটা দেয় সামনে। আজো এই পথ চিনতে তার কষ্ট হচ্ছে না কোন‌।‌ সে সোজা হেটে তাদের বাড়ির সামনে আসে। আরো উন্নত হয়েছে বাড়িটা। নামটা এখনো আগেরই আছে। রুহি সবার দিকে তাকিয়ে বলে-

-” তোমরা আমার পেছন পেছন এসো। আমার মনে হয় না আমরা এই গ্রহে এসেছি এই খবর এখনো বাবার অজানা আছে। তবে রোদ ভাই আর রোজা সা/বধান। তোমরা এই গ্রহের রোজা আর রোদের সাথে দেখা হলে সঙ্গে সঙ্গে সরে যাবে। এক মিনিট সামনাসামনি থাকলেই ভ্যানিশ হয়ে যাবে কিন্তু। বি কে/য়ারফুল।

রুহি আস্তে করে দরজা খোলে বাড়ির। পা টিপে টিপে বাড়িতে ঢোকে। কিন্তু কোন মানুষ নেই। কেউ নেই বাড়িতে। রুহি ডিভাইসে জিজ্ঞেস করে-

-” কিক্যানো আমরা যে বাড়িতে আছি, সে বাড়িতে কি আর কোন মানুষ নেই?

-” কিক্যানো ফাউন্ডিং। আপনারা যেখানে আছেন সেখানে এখন আর কেউ নেই।

রুহি যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো। রোদ্দুর ভ্রু উঁচিয়ে বলে-

-” তাহলে এবার আমরা কি করবো?

সাইমন আর রোজা বলে ওঠে-

-” শোন আমাদের কাছে একটা প্ল্যান আছে।

___________

প্রায় এক ঘন্টা পর সাইন্টিস্ট আয়মান বাসায় আসে। কিছু ডিভাইস কেনার জন্য সে মার্কেটে গিয়েছিল। রোজা, রুহি, সাইমন আর রোদ্দুর সবাই মিলে দরজার দিকে তাকিয়ে আছে এক ঘন্টা ধরে। দরজা খোলার আওয়াজ পেয়ে সবাই স/ত/র্ক হয়ে যায়। দুই দিকে ভাগ হয়ে যায় চারজন। দরজা খুলে আয়মান ভেতরে ঢোকে। হাতের ব্যাগগুলো সোফার উপরে রাখে। কিচেনে পানি আনতে গেলে কেমন যেন লাগে তার। মনে হচ্ছে পেছনে কেউ আছে। পেছনে ফিরে তাকায় আয়মান। না কেউ নেই। সে পানি পান করতে গেলেই সজোরে বা/ড়ি পড়ে মাথায়। চোখ মেলে তাকিয়ে চারপাশটা দেখার আগেই ঝাঁপসা হয়ে আসে। রুহি দৌড়ে বসে তার বাবার পাশে। আঘা/ত টা সাইমন করেছে। কারন রোজা, রুহি আর রোদ্দুরের সাথে পৃথিবীর আয়মানের খুব ভালো সম্পর্ক আছে। তাই তারা দূর্বল হয়ে পড়বে আঘাত করতে গেলে। রুহি তার বাবার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে। করবছর পর সে বাবাকে দেখলো। রুহি সাইমন আর রোদ্দুর কে ইশারা করে। তারা আয়মান কে ধরে। আয়মানের ল্যাবে নিয়ে যায়। অচেতন আয়মান কে তারা দড়ি দিয়ে বেঁ/ধে দেয় চেয়ারের সাথে। এবার জ্ঞান ফেরার পালা। রোদ্দুর হেসে বলে-

-” ওয়াও তোমার বাবাকে বশ করা তো অনেক ইজি! হাহাহা তুমি কত ভয় পাচ্ছিলে!

রুহি অবাক হয়ে যায়। আসলেই তার বাবা তো এত বোকা নয়। তার বাড়িতে ঢুকলাম অথচ কোন সিকিউরিটি এলার্ম বাজলো না। কোন সিকিউরিটি রোবট নেই দরজায় কারন কি? আর তার রোজা আপু সেও তো কোথাও নেই? তার হয়তো বিয়ে হয়ে গিয়েছে। আর তার বাবার মধ্যে কোন চিন্তাই যেন ছিলোনা। সাইমন পেছন থেকে এসে বলে-

-” কি ভাবছো?

রুহি চমকে উঠে বলে-

-” কিছুনা।

সাইমন জোড় করে বলে-

-” বলোনা। এভাবে ভয় পেলে কেন? কিছু তো ভাবছিলে। কিক্যানো তুমি কি জানো রুহি কি ভাবছিলো?

রোবটিক ভয়েস পাওয়া যায় –

-” কিক্যানো কানেক্টেড। উনি কিছু ভাবছিলেন। কি ভাবছিলেন তা জানিনা। আপনারা ফিরছেন কখন?

সাইমন হেসে বলল:-

-“তাড়াতাড়ি ফিরবো। তোমাকে ধন্যবাদ। রুহি এবার বলো কি ভাবছিলে।

রোদ্দুর আর রোজাও এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করে-

-” কি ভাবছিলে?

রুহি চিন্তিত গলায় বলে-

-” আচ্ছা তোমাদের কি মনে হয় আমার বাবা এত বোকা? সে নিশ্চয়ই জানতো আমরা আসবো। কারন সব সিস্টেম তার হাতের নাগালে। তাহলে কেন কোন সিকিউরিটি ছাড়া ছিল। মনে হয় না এখানে গোলমাল আছে?

রুহির কথায় সবাই ভাবনায় পড়ে যায়

-” বাহ রুহি বুদ্ধিমান হয়ে গেছো। তুমি জানতে তোমার বাবা বোকা নয়। তাহলে এটা জানতে না এখানে চারকে হাত পা নিয়ে এসে তোমাদের কোন কাজ নেই?

কারো কথায় পেছন ফিরে তাকায় সবাই!

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here