#হয়তো_তোরই_জন্য
#পার্ট_১১
#নিশাত_জাহান_নিশি
—-“ভাইয়া প্লিজ চোখ খুলুন। আমি আপনাকে সাহায্য করব ভাইয়া। প্লিজ চোখ খুলুন।”
লোকটা চোখ গুলো আধ খোলা করে তমার দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,
—“আমি তোমাদের কোনো ক্ষতি করব না বোন। প্লিজ আমাকে বিশ্বাস করো। তুমি জায়ান ভাইয়াকে বুঝাও আমার কথা যেনো বিশ্বাস করে। আমার বোনটা সত্যি সত্যি ঐ শয়তান গুলোর হাতে বন্ধী। আমার বোনটার জীবনের ঝুঁকি আছে। প্লিজ জায়ান ভাইয়াকে বলো আমার বোনটাকে বাঁচাতে।”
জায়ান লোকটার কথা শুনছে আর তমার দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে। তমার থাপ্পড়টা ওর গালে নয় মনে লেগেছে। মনের ক্ষতটাকে তিনগুন বাড়িয়ে দিয়েছে। জায়ান নিজেকে কিছুটা শান্ত করে ধপ করে মাটিতে বসে লোকটাকে ওর দিকে ঘুড়িয়ে শান্ত কন্ঠে বলল,,,,,
—-“আমি আপনাকে কিভাবে বিশ্বাস করব? কোনো পাকাপোক্ত রিজন থাকলে বলুন!”
লোকটা মিনমিন করে বলল,,,,
—-“জেনিয়াকে চিনেন? আমার বোন?”
—-“নামটা বেশ চেনা চেনা লাগছে। হয়তো এর আগে নামটা অনেকবার শুনেছি।”
—-“আপনার সাথে ইতালীতে একই রিসোর্টে থাকত জেনিয়া। আপনাকে খুব ভালো করে চিনে। আপনি ও হয়তো চিনেন!”
জায়ান চোখ দুটো বন্ধ করে কপাল ঘঁষছে আর বলছে,,,,,,
—-“মেয়েটার নামটা মনে আছে বাট ফেইসটা মনে করতে পারছি না। মেয়েটা সম্ভবত আমার এক ক্লাসের জুনিয়র ছিলো।”
—-“হুম জেনিয়া আপনার এক ক্লাসের জুনিয়র ছিলো। জেনিয়া সবসময় আপনার কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করত। সবসময় আপনাকে চোখে চোখে রাখত। কারণ জেনিয়া আপনাকে খুব ভালোবাসত। আজ আপনি যখন ইতালি থেকে বাংলাদেশে ব্যাক করেছেন জেনিয়া ও আপনার সাথে একই সময় বাংলাদেশে ব্যাক করেছে। বাড়িতে ফিরেই জেনিয়া আপনার কথা আমাকে জানায়। আপনাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়। ইতালী থেকে ফেরার সময় জেনিয়া আপনার বাড়ির এড্রেসটা কালেক্ট করে এনেছিলো। আজ আমি সেই এড্রেস অনুযায়ী জেনিয়াকে নিয়ে আপনার বাড়িতে যাই। গিয়ে দেখি আপনাদের পুরো বাড়ি ফাঁকা। তবে আপনাদের গার্ডেনে কালো হুডি পরিহিত একজন লোক ঘুরাঘুরি করছিলো। লোকটার হাত গুলো ছিলো রক্তাক্ত। গলাকাটা দুটো বিড়াল হাতে নিয়ে উনি জোরে চিৎকার করে বলছিলো…..
—-“আমি তোকে ছাড়ব না জায়ান। বিড়ালের গলা গুলো যতোটা নৃশংস ভাবে কেটেছি। তোর গলা ও ঠিক এতোটা নৃশংস ভাবে কাটব। তুই আমার ভালোবাসা ছিনিয়ে নিয়েছিস। তোর দেহ থেকে যতোক্ষন পর্যন্ত গলা আলাদা করতে না পারব ততক্ষন পর্যন্ত আমি শান্তি পাবো না। তাই আজই তোর গলাকাটার প্ল্যান করলাম।”
লোকটা কথা গুলো বলছিলো আর ছুরি দিয়ে বিড়ালেরর অবশিষ্ট দেহটাকে টুকরো টুকরো করছিলো। চোখের সামনে জেনিয়া এসব সহ্য করতে না পেরে তেড়ে গিয়ে পেছন থেকে লোকটার পিঠে চাপড় মারে। লোকটা অগ্নি শর্মা হয়ে পিছনে ফিরেই জেনিয়ার গালে জোরে এক চড় বসিয়ে দেয়। সাথে সাথেই জেনিয়া মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। আমি দৌঁড়ে গিয়ে জেনিয়াকে ধরি। সেকেন্ডের মধ্যেই কোথা থেকে দুজন হুডি পড়া লোক এসে আমাকে আর জেনিয়াকে টেনে হেছড়ে উনাদের সাথে করে গাড়িতে নিয়ে বসিয়ে দেয়। আমাদের হাত, পা, মুখ বেঁধে দেওয়া হয়। আমরা বিন্দুমাএ নড়াচড়া ও করতে পারছিলাম না। কিছুক্ষন পর ঐ লোকটা হম্বিতম্বি হয়ে গাড়িতে উঠে পড়ে। লোকটা গাড়িতে উঠার সাথে সাথেই গাড়িটা স্টার্ট করে দিলো। আমি আর জেনিয়া অসহায়ের মতো দুজন দুজনের দিকে তাকিয়েছিলাম। লোক গুলো আমাদের স্যরি বলার সময় ও দেয় নি। টেনে হেছড়ে উনাদের সাথে করে অজানায় নিয়ে যাচ্ছিলো। কিছু দূর যাওয়ার পর জেনিয়াকে চড় মারা লোকটা কাউকে ফোন করে বেশ ভালো মোডে বলছিলো,,,,,,,
—-“আরেক জনকে পেয়ে গেলাম। তোদের আর বেজোড় সংখ্যা নিয়ে ডেসপারেড হতে হবে না। মোট হলো ২০ জন। পাখি আমার খাঁচায় ই বন্ধী আছে। শুধু জায়গা মতো পৌঁছানোর পালা। পৌঁছানোর সাথে সাথেই চালান করে দিতে হবে। এক মুহূর্ত ও দেরি করা যাবে না। গট ইট?”
ঐপাশ থেকে কি বলেছে শুনি নি। বাট লোকটা হাসি মুখে ফোনটা কেটে পিছু ঘুরে আমাদের দিকে তাকায়। লোকটার মুখে আলাদা মাস্ক লাগানো ছিলো। লোকটাকে বিন্দু মাএ চেনার জো নেই। আমি আর জেনিয়া ভয়ার্ত দৃষ্টিতে লোকটার দিকে তাকিয়ে ছিলাম। ভয়ে চোখের পানি বাঁধ মানছিলো না। লোকটা শয়তানী হাসি দিয়ে জেনিয়ার দিকে তাকিয়ে বলল,,,,
—-“আমাকে চড় মারার শাস্তি তুই হাড়ে হাড়ে টের পাবি। তোর জীবনটা নরক বানিয়ে ছাড়ব আমি। বেচে দেবো তোকে আমি ভিনদেশে। প্রতিদিন, প্রতিরাত কষ্ট, যন্ত্রনায় দ্বগ্ধ হবি। কেউ তোকে বাঁচাতে আসবে না।”
এসব কথা শোনার পর আমার মাথার রক্ত গরম হয়ে গিয়েছিলো। নিজেকে ছাড়ানোর জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করছিলাম। এক প্রকার ধস্তাধস্তি শুরু করে দিয়েছিলাম। জেনিয়া বোবা কান্না করছিলো। হয়তো লোকটার কড়া কথা গুলো শুনে জেনিয়া বড্ড ভয় পেয়ে গিয়েছিলো। চোখের সামনে নিজের ছোট বোনের এমন বোবা আর্তনাদ সহ্য করতে পারছিলাম না। কিন্তু তখন আমার কিছুই করার ছিলো না। চুপচাপ সহ্য করে নিয়েছি সব। এক প্রকার জোড় পূর্বক পানি দিয়ে হজম করার মতো।
কিছুক্ষন পর গাড়ি এসে পৌঁছে যায় এক্টা পুরনো বাংলোতে। কিছুটা ফার্ম হাউজের মতো বাংলো টা। গাড়িটা গেইটের সামনে থামতেই বাংলো থেকে আরো কতো গুলো কালো হুডি ওয়ালা লোক এসে আমাকে আর জেনিয়াকে গাড়ি থেকে টেনে হেছড়ে নামিয়ে বাংলোটাতে নিয়ে রুম বন্ধী করে দেয়। আমি আর জেনিয়া দুজনই ফ্লোরে ছিটকে পড়ি। দুজনেই ফ্লোরে চিৎ হয়ে আধশোয়া হয়ে পড়ে থাকি। আমি কোনো রকমে নিজেকে শান্ত করে বুক দিয়ে হেছড়াতে হেছড়াতে দরজার কাছে গিয়ে বসে পড়ি। আড়ি পেতে শুনতে চাইছিলাম বাইরে কি হচ্ছে বা তাদের পরবর্তী কার্যক্রম কি। অনেকক্ষন আড়ি পেতে থাকার পর অবশেষে শুনতে পেলাম ওদের প্ল্যানিং। জেনিয়ার হাতে থাপ্পড় খাওয়া লোকটা ফেইস টু ফেইস কারো সাথে হেসে হেসে বলছিলো,,,,,,,,
—-“মাঝ রাতে এসে নিয়ে যাবে মেয়েটাকে। এরপর সব গুলো মেয়েকে নিয়ে সোজা ইরানে পাচার করে দিবে। মেয়েটাকে যেহেতু হাতের কাছে পেয়েছি তাই এক্টু নিজের মতো করে শাস্তি দিতে চাই। আমাকে চড় মারার শাস্তি সুদে আসলে বুঝিয়ে দিবো।”
কথা গুলো বলেই লোকটা হু হা করে হাসতে হাসতে আমাদেরকে বন্ধী করা রুমের দরজায় দিলো এক ধাক্কা। ধাক্কার বেগে আমি কিছুটা দূরে গিয়ে ছিটকে পড়ি। লোকটা তেড়ে এসে ফ্লোরে চিৎ হয়ে পড়ে থাকা আমার বোনের চুল টেনে লোকটার মুখোমুখি করে মুখের কালো কাপড়টা খুলে দিয়ে আমার বোনের গালে আরেকটা চড় বসিয়ে বলল,,,,,,,,
—-“কে তুই? কেনো তুই ঐ জায়ান কুওার বা**র বাড়িতে গিয়েছিলি?”
তোমাকে অকথ্য ভাষায় গালি দেওয়াতে আমার বোন সহ্য করতে পারে নি। আমার বোন রাগে গিজগিজ করতে করতে জোরে চিৎকার দিয়ে বলেছিলো,,,,,,
—-“আমি জায়ানকে ভালোবাসি। জায়ান আমার ভালোবাসা। খবরদার নেক্সট টাইম তুই আমার জায়ানকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করবি না। আর ঐ সময় কি বলেছিলি তুই? তুই আমার জায়ানের গলা কাটবি? হাসালি তুই আমায়। তুই কেনো তোর চেয়ে বড় বড় গদ ফাদারদের ও ক্ষমতা নেই আমার জায়ানের গলা কাটার। কারণ, আমার জায়ান খুব সাহসী আর তেজী পুরুষ। ওর কাছে তুই জাস্ট তুচ্ছ এক্টা মাছি। যাকে ফু দিলই উড়ে যাবি।”
জেনিয়া কথা গুলো বলার বলার সাথে সাথেই লোকটা বসা থেকে দাঁড়িয়ে জেনিয়ার বুক বরাবর এক্টা লাথি দিয়ে জেনিয়াকে প্রায় অনেকটা দূরে নিয়ে ছিটকে ফেলে। জেনিয়া ব্যাথায় চিৎকার করছিলো আর লোকটার দিকে তাকিয়ে রাগে ফুসছিলো। আমি নিজেকে ছাড়ানোর জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু বার বারই ব্যর্থ হচ্ছিলাম। নিজের চোখের সামনে বোনের আঘাত সহ্য করছিলাম। নিজেকে তখন পৃথিবীর সবচেয়ে কুলাঙ্গার ভাই মনে হচ্ছিল। যে কিনা নিজের বোনের অত্যাচার নিজের চোখের সামনে দেখছে।
লোকটা জেনিয়ার দিকে রক্তিম চক্ষু নিয়ে তাকিয়ে জোরে চিৎকার করে বলল,,,,,
—-“জায়ানকে আমি নিজের হাতে মারব। গলা কেটে মারব ওকে। আর তোকে করব ইরানে পাচার। ঐখানে দিনে রাতে মানুষ তোকে খাবলে খুবলে খাবে আর এটাই হবে তোর উপযুক্ত শাস্তি। শুধু তুই কেনো বলছি, জায়ানের সাথে জড়িত প্রত্যেকটা মানুষকে আমি এক এক করে মারব।”
কথা গুলো বলেই লোকটা দরজা আটকে রুম থেকে বের হয়ে যায়। আমি আর জেনিয়া দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে চোখের জল ছাড়ছিলাম। জেনিয়ার মুখের পট্টিটা খোলা অবস্থায় ছিলো। জেনিয়া বুক ব্যাথা নিয়ে হেছড়াতে হেছড়াতে আমার পাশে বসে কানে কানে বলছিলো,,,,,,,
—-“ভাইয়া….তুই এখান থেকে পালানোর ব্যবস্থা কর। যে করেই হোক তুই জায়ান ভাইয়ার কাছে পৌঁছা। শুধু মাএ জায়ান ভাইয়া ই পারবে আমাদেরর এই বিপদ থেকে রক্ষা করতে। না হয় সব শেষ হয়ে যাবে ভাইয়া। আমাকে ওরা অচেনা দেশে পাচার করে দিবে। কেউ আমাকে আর কখনো খুঁজে পাবে না। যা করার তাড়াতাড়ি করতে হবে ভাইয়া। তাছাড়া জায়ান ভাইয়ার জীবন ও হুমকির মধ্যে আছে। জায়ান ভাইয়াকে সতর্ক করতে হবে।”
জেনিয়ার কথা মতো আমি নিজেকে ছাড়ানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ি। হাত পায়ের বাঁধন গুলো খোলার জন্য প্রাণপণে চেষ্টা করি। জেনিয়া ও আমাকে অনেক ভাবে সাহায্য করে। প্রায় এক ঘন্টা যুদ্ধের পর আমি সফল হই হাতের বাঁধন খুলতে। হাতের বাঁধন খোলার পর পরই ফটাফট আমার পায়ের বাঁধন গুলো খুলে ফেলি। বসা থেকে উঠে পুরো রুমটায় চোখ বুলিয়ে দেখলাম, জানালাটা সম্পূর্ণ উন্মুক্ত। কোনো গ্রীল বা থাই নেই। শুধু এক্টা পর্দা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। জেনিয়াকে অনেক ফোর্স করছিলাম আমার সাথে পালানোর জন্য কিন্তু সে রাজী হয় নি। কারণ হীতে বিপরীত হতে পারে। লোক গুলো রুমে ঢুকে জেনিয়াকে খুঁজে না পেলে তাহলে হয়তো আরো বেশি ডেসপারেড হয়ে উঠবে। তখন ঝুঁকির পরিমান বহু অংশে বেড়ে যাবে। তাই জেনিয়া রাজি হয় নি। আমি যখন দেয়াল টপকে জানালা দিয়ে বের হতে যাবো তখনই বাইরে থেকে আওয়াজ আসছিলো তোমাকে নাকি বোম ব্লাস্টে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বাইরের সবাই বেশ খুশি ছিলো। তবে জেনিয়ার মোটে ও বিশ্বাস হয় নি তুমি মরেছ। জেনিয়ার দৃঢ় বিশ্বাস ছিলো তুমি বেঁচে আছো। বাহির থেকে ওরা জোরে জোরে চিৎকার করে বলছিলো তোমার মরদেহ নাকি আজমেরী রেস্টুরেন্টের সামনে পড়ে আছে। ওরা সফল হয়েছে তোমাকে খতম করতে। কথাটা শোনার সাথে সাথেই আমি জানালা থেকে লাফ দিয়ে মাটিতে পড়ি। বাংলো টার আশেপাশে কোনো গার্ড ছিলো না। তাই আমার জন্য সুবিধে হয়। আমি ঐখান থেকে পালিয়ে সোজা বাড়ি যাই। এরপর আমার গাড়ি নিয়ে আজমেরী রেস্টুরেন্টের সামনে গিয়ে দেখি আসলেই তোমাদের গাড়িটা ব্লাস্ট হয়ে গেছে। ফরেনসিকরা বলছিলো তোমাদের মৃত দেহের আলামত খুঁজে পায় নি। তাই আমি গাড়ি নিয়ে এই পথে ছুটছিলাম। আমার বিশ্বাস ছিলো আমি তোমাকে এখানেই পাবো। দেখো ঠিক পেয়ে ও গেলাম। আমার হিসেব অনুযায়ী এখন তোমার ঝুঁকির পরিমান আরো বেশি বেড়ে গেলো। কারণ ওরা বুঝে গেছে তুমি বেঁচে আছো। এতক্ষনে হয়তো ওরা তোমাকে খুঁজতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। তাই এই মুহূর্তেই আমাদের এই খান থেকে পালাতে হবে। আমি সাথে করে গাড়ি নিয়ে এসেছি। চলো আমরা তিনজনই এখান থেকে পালাই।”
জায়ান লোকটার দিকে সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। জায়ান এখনো লোকটাকে পুরোপুরি ভাবে বিশ্বাস করতে পারছে না। তমা জায়ানের দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে। জায়ান লোকটার থেকে চোখ সরিয়ে তমার দিকে তাকালো। তমার অশ্রুসিক্ত চোখে দেখে জায়ান নিজেকে ঠিক রাখতে পারছে না। তমার চোখে স্পষ্ট লিখা আছে,
—-“জায়ান ভাইয়া… প্লিজ তুমি লোকটাকে বিশ্বাস করো। উনাকে সাহায্য করো। বোনের জন্য গড়ানো কোনো ভাইয়ের চোখের জল ই মিথ্যে হতে পারে না।”
জায়ান তমার চোখের পানি গুলো মুছে তমাকে ঝাপটে ধরে বলল,,,,,,,
—-“শুধুমাএ তোর মুখের দিকে তাকিয়ে আমি লোকটার কথা বিশ্বাস করলাম। করব আমি হেল্প লোকটাকে। তোর জন্য আমি সব করতে পারি তমু। দরকার হলে নিজের জীবনটা ও বিলিয়ে দিতে পারি।”
তমা কাঁদতে কাঁদতে জায়ানকে টাইট করে জড়িয়ে ধরে বলল,,,,,,
—-“তোমাকে নিয়ে খুব ভয় পাচ্ছি জায়ান ভাইয়া। তোমার যদি কিছু হয়ে যায়। আমার অনেক কষ্ট হবে জায়ান ভাইয়া। অনেক অনেক অনেক কষ্ট হবে।”
—-“কেনো কষ্ট হবে তমু? তুই তো আমাকে ভালোই বাসিস না।”
হুট করে তমা জায়ানকে ছেড়ে দিয়ে লোকটার আনা গাড়িতে বসে পড়ল। জায়ানের প্রশ্নের উওর দিতে সে হিমশিম হয়ে গেছে। আপাতত সে এসব প্রশ্নের মুখোমুখি হতে চায় না। লোকটা রক্তাক্ত শরীর নিয়ে শোয়া থেকে উঠে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হেঁটে গাড়িতে বসে পড়ল।
জায়ান ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি স্টার্ট করে দিলো। উদ্দেশ্য জেনিয়াকে আটকে রাখা পুরনো বাংলো।
#চলবে,,,,,,,,