#বৃত্তের_বাইরে (পর্বঃ ২)
লিখাঃ #Sifat_Arnab_Rehan.
.
রুমে এসে ফ্যানের পাওয়ার বাড়িয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে মাথার চুলগুলো ছেড়ে ভাবনার জগতে ডুব দিলাম ৷ ভাবতে লাগলাম অর্ণবকে নিয়ে ৷ তাকে যেভাবে হোক আমার দিকে টানতে হবে ৷ সে যাতে আমার প্রতি আকর্ষিত হয় সেরকম কাজ করতে হবে ৷ সিদ্ধান্ত নিলাম ননদকে ফোন দিয়ে বলবো যে তার ভাই এখনো আমার রুমে আসেনি, ননদ অবশ্যই তার ভাইকে এটা বলে দিবে এবং অর্ণব এতে বাধ্য হবে রুমে আসতে ৷ ভাবনা মোতাবেক আমার ননদকে ফোন দিলাম ৷ ফোন রিসিভ করলে বিষয়টা খুলে বললাম ৷ সে ব্যপারটা জানতে পেরে তোড়জোর শুরু করে দিলো, উত্তেজিত গলায় বলল, “ভাবী তুমি চিন্তা করোনা, দেখছি ব্যপারটা ৷ গাধাটা ৫ মিনিটের মধ্যে রুমে যাবে ৷ শুধু ৫টা মিনিট ওয়েট করো!
.
ননদের কথামত অপেক্ষার প্রহর গুণতে লাগলাম ৷ এবং অর্ণবকে বশে আনতে গায়ের শাড়িটা খুলে বিছানার একপাশে ফেলে রাখলাম ৷ বালিশে মাথা রেখে কাৎ হয়ে শুয়ে রইলাম ৷ ভাবতে লাগলাম, বোকাটা রুমে ঢুকে কিরকম ব্যবহার করবে? সে কি রেগে যাবে? রাগলে কিরূপ রাগবে? প্রচন্ডভাবে রেগে যাবে নাকি ঈষৎভাবে রাগবে? নাকি আমার আবেদনময়ী লুক দেখে হ্নদয়ে সুখ লুটিয়ে নিবে এবং আমার প্রতি তার মনে ভালবাসা জাগ্রত হবে? আমার এমন লুক দেখে নিশ্চয় হুমড়ি খেয়ে যাবার কথা! নাকি সে অবহেলা করে তাকাবেও না? বিশ্বাস তো আছে তার চাচাতো বোনকে এমনরূপে দেখে ফিদা হবেই হবে ৷ এরকম হওয়াটা স্বাভাবিক কারণ সে কখনই আমাকে এরকম অর্ধ-অনাবৃত্ত অবস্থায় দেখেনি ৷ ভাবতে ভাবতে পনের মিনিট পার হয়ে গেল অথচ অর্ণবের আসার খবর নেই ৷ মেজাজ গেলো বিগ্রে ৷ মনে হচ্ছিল এক্ষণি ছাদে গিয়ে ওর গালে কষে কয়টা থাপ্পর মেরে আসি ৷ আমার সাথে সে রোমান্স না করুক, রুমে এসে তো দু-চারটা কথা বলতে পারে! সেটাও করছেনা ৷ এটা করলে কি তার খুব ক্ষতি হয়ে যাবে? নাকি ক্ষয় যাবে তার? আমি তো জানি পুরুষ মানুষ সবচেয়ে ধৈর্য্যহারা হয় বাসর ঘরে ৷ তারা বাসর ঘরে ঢুকেই বউকে জড়িয়ে ধরতে চাই ৷ বউ চালাক প্রকৃতির হলে স্বামীর পরীক্ষা নেয় ৷ অর্ণবের তো এমন হওয়া উচিত ছিল ৷ তখন আমি অন্তত চালাক স্ত্রীদের মত কাজ করতাম না ৷ অর্ণবকে পরীক্ষা নিতাম না, সে যা চাইতো তাতেই কাৎ হয়ে যেতাম ৷ অর্ণব এমনটা না করলেও সমস্যা নেই, সে আমার নিকট একবার এলেই হলো, তারপর দেখাতাম আমার কারিশমা ৷ নারীর হাতে হাজারটা অস্ত্র থাকে পুরুষদের বশ করার ৷ আমার একটা বিশেষ অস্ত্র তথা, গুণ রয়েছে ৷ কথার জালে মানুষকে বশে আনতে পারি, তবে সবসময় না ৷ যদি আমার মন চাই তবেই পারি ৷ বাসর রাত্রে অর্ণবকে বশে আনা কোনো ব্যাপারই না ৷ কিন্তু তাকে তো আমার সামনাসামনি হতে হবে ৷ সে তো আসছেনা ৷ ছাদে কেন যেন তাকে মুগ্ধ করার মত কোনো কথায় বলতে পারিনি ৷ শুধু তার কথাগুলো মন দিয়ে শুনেছি, এবং কথাগুলো মেনে নেবার বৃথা চেষ্টা করেছি!
তখন তো মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম তাকে পাবার আশা ছেড়ে দিব কিন্তু এখন মনে হচ্ছে সেটা সম্ভব নয় ৷ ভালবাসার মানুষটিকে হারিয়ে নিজেকে নিঃসঙ্গ লাগছে; তার উপর অর্ণবকে হারিয়ে ফেললে বেঁচে থাকার শেষ ইচ্ছাটুকুও থাকবেনা!
.
আচমকা রুমে ঢুকে পরলো আমার প্রাণপ্রিয় স্বামী ৷ সে আমাকে দেখামাত্র হকচকিয়ে উঠে চোখ দুটো গোলগোল বানিয়ে একনজর তাকিয়ে চেহারা আমার দিক থেকে সরিয়ে নিলো ৷ এরপর ধীর পায়ে বেডের পাশে এসে পৌঁছল ৷ অতঃপর তার গায়ের পাঞ্জাবীটা খুলে বিছানার একপাশে ছুঁড়ে মারলো ৷ পাঞ্জাবীটা ঠিক আমার শাড়ির উপরে গিয়ে পরলো ৷ কেন যেন শরীরটা কেঁপে উঠলো এক অজানা শিহরণে ৷ অনুভূতিটা অপ্রকাশ্য ৷ অর্ণব কোনোরুপ কথা না বলে বেডের পাশে ধীরস্থিরভাবে শুয়ে পরলো ৷ দীর্ঘ একটা শ্বাস ফেলে আমাকে তীক্ষ্ণকন্ঠে বলল,
-সোনু, আমার মাথাটা টিপে দে তো!
.
ভ্যাঁবাচেকা খেয়ে গেলাম তার কথায় ৷ আড়চোখে তাকিয়ে ভ্রু কুঁচকিয়ে মনে মনে বললাম, “শালা, মাথা টিপিয়ে নিতে রুমে এসেছিস? ভরা যৌবনদ্বীপ্ত একজন নারী তোর নিকট সপে দিয়েছে আর তাকে দিয়ে তুই অপ্রয়োজনীয় কাজ করিয়ে নিবি, মূল্যবান প্রতিটা মুহূর্ত নষ্ট করবি? মধুর লগণ জলে ডুবাবি? গর্ধভ কোথাকার!”
ভাগ্যিস কথাগুলো অর্ণব শুনতে পায়নি, পাবার কথাও নয় ৷ শুনতে পেলে নির্ঘাত আমার কান ধরতো ৷ ওর সাথে যতবার মশকরা করতে গেছি ততোবারই ওর মৃদ্যু অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে, ওর কাজই ছিল আমার কান ধরে হুশিয়ারির কন্ঠে বলা আর যেন মশকরা না করি ৷ কিন্তু আমি বারবারই একই ভুলটা করতাম ৷ মাঝেমধ্যে অর্ণব আমাকে দিয়ে মাথা টিপেও নিতো ৷ অনেক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল আমাদের ৷ কখনো ভাবিনি সে আমার জীবনসঙ্গী হবে ৷ অথচ আমি আজ তার অর্ধাঙ্গীনি, সে আমার স্বামী ৷ অর্ণবের মাথা টিপে দিচ্ছেনা দেখে সে চেঁচানো গলায় বলল,
-কি রে কানে যাচ্ছেনা কি বলছি?
তীর্যককন্ঠে জবাব দিলাম,
-আমি পারবোনা ৷ নিজের মাথা নিজে টিপে নাও ৷ আমি কি এই কাজের জন্য তোমাকে বিয়ে করেছি?
-জানি সেজন্য বিয়ে করিস নি, কিন্তু আমি তোকে এমনি এমনি তো মাথা টিপতে বলছি না; খুব ব্যথা করছে মাথাটা ৷ একটু করলেই ঠিক হয়ে যাবে ৷
জানিস, তোর হাতে জাদু আছে ৷ ঐ কোমল নরম তুলতুলে লাউয়ের সবজির ডাটার ন্যায় হাতজোরা দিয়ে মাথা টিপে নিলে মুহূর্তে ব্যথা উধাও!
-অনেক বলেছো ৷ পারলে আরেকটা সোনুকে বিয়ে করে এনে তাকে দিয়ে মাথা টিপে নাও ৷
-প্লিজ আমার লক্ষ্মী বোনটা, টিপে দে না ৷ -বোন বললে কখনই না ৷
-ওকে, বউ আসো, টিপে দাও!
.
অর্ণবের মুখ থেকে বউ ডাকটা শুনে বুকটা অন্যরকম ভাললাগার প্রশান্তিতে ভরে উঠলো ৷ গালভর্তি তৃপ্তির হাসি ফুটলো ৷ হাসিমাখা কন্ঠে তাকে বললাম,
-ঠিকআছে, আমার এদিকে আসো ৷
.
অর্ণব মিষ্টি হেসে বলল,
-আসছি, কিন্তু তুই শাড়ি খুলে শুয়ে আছিস কিসের জন্য? শরীরে কি খুব গরম তোর?
-গরমই তো, ফ্যান দিয়েও হচ্ছেনা ৷
-যা, কালকেই এয়ারকন্ডিশনার কিনে আনবো ৷
-তাতেও হবেনা, আমার শরীরের গরম কমানোর জন্য বিশেষ মানুষটাকে দরকার!
.
অর্ণব থম মেরে গেলো ৷ আচমকা সে ফিক করে হেসে বলল,
-ও! তুই এই গরমের কথা বলছিস? আমি তো বুঝতেই পারিনি ব্যপারটা ৷ তোর জন্য একটা বিশেষ অফার আছে!
.
কপালে কৌতূহলের ছাঁপ ফেলে উৎসাহিত কন্ঠে তাকে জিজ্ঞেসা করলাম,
-কিসের অফার?
-আমাকে তুই নিজের বয়ফ্রেন্ড ভেবে নিতে পারিস, আমি কিছু মনে করবোনা ৷ আমাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হলে কোনো সমস্যাও হবেনা ৷ স্বামী-স্ত্রী তো!
-জি না, আমি আমার মত থাকতে চাই ৷ আমার এমন একজনকে দরকার যার মনটা ছুঁয়ে যাবে আমার ভালবাসায়!
-ওহ! এই ব্যাপার ৷ তারমানে তোর হুশ ফিরবেনা? একজনকে ভালবেসে মস্তবড় বাঁশ খেলি, সেই আবারো প্রেমের ভূত তোর মাথায় চেপেছে? তোর মাথা থেকে ভূতটা কেমনে তাড়ানো যায় বলতো?
-কথা বন্ধ করো, তোমার মাথাটা এগিয়ে দাও!
.
অর্ণব আমাকে অবাক করে দিয়ে আমার হাতটা টেনে ধরলো ৷ শোয়া থেকে উঠে বসেছি কিছু মুহূর্ত আগে ৷ অর্ণব হাত ধরে টান দেওয়ায় তার বুকের উপর পরে গেলাম ৷ সে আমাকে অবাকের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে দিয়ে তার বুকের মাঝে আষ্টেপিষ্ঠে ধরে রাখলো ৷ স্তম্ভিত হয়ে গেলাম ৷ নিস্তব্ধতা আমাকে ঘিরে ধরলো ৷ হ্নদস্পন্দন এত ব়ৃদ্ধি পেলো যে দেহ নিথর হয়ে গেলো ৷ অর্ণবের বুকের মাঝে প্রথমবারের মত আমার স্থান হলো ৷ তার দেহের পরশে সুখ দরিয়ায় দোল খেলতে লাগলাম ৷ আমার মুখে আচমকা তৃপ্তির রেখা এসে ভিড় করলো, মিহি মিহি হাসির উদ্ভাস হলো ৷ মনটা আনন্দে ভরে উঠলো ৷ অর্ণব ক্রমেই আমাকে তার বুকের সঙ্গে আষ্টেপিষ্টে চেপে রাখছিল ৷ তার চোখে মুখে কামনার আগুন ৷ সেই আগুনে নিজেকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে মারতে ইচ্ছা করছে ৷ কিন্তু লাজুক মন তার নিকট ধরা দিতে দ্বিধা করছে ৷ তাকে হারানোর সুপ্ত ভয় ভেতরে ক্রমশ বড় হচ্ছে ৷ অর্ণব আমাকে তীব্রভাবে বিস্ময়ের জালে আটকে দিলো যখন সে আলতোভাবে আমার কপালে চুম্বন রেখা অঙ্কন করে দিলো!
.
আচমকা বিদ্যুতের বিঘ্ন ঘটলো ৷ সেইসাথে আমার ঘুমটাও ভেঙ্গে গেল ৷ এতক্ষণ তবে স্বপ্ন দেখছিলাম ৷ আসলেই এমনটা স্বপ্নেই সম্ভব ৷ আর এমন অলিক স্বপ্ন কখনো বাস্তবে রুপ নিবেনা ৷ অর্ণব তো আমার না!
অর্ণবের জন্য অপেক্ষা করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম টেরই পাইনি ৷ অর্ণবের বোন বলেছিল ৫ মিনিট পরই তার ভাই আমার রুমে আসবে অথচ আমি তার অপেক্ষায় ঘুমিয়ে পরেছিলাম ৷ মোবাইলে সময় দেখতে গেলে দেখলাম রাত ২ টা বাজে ৷ তারমানে ২ ঘন্টা হয়ে গেছে আমার ননদকে ফোন দেবার ৷ বুঝতে পারছি অর্ণব তার বোনের কথা শোনেনি ৷ বাধ্য হয়ে রুম থেকে বের হলাম ৷ ছাদের দিকে গেলাম ৷ ছাদে পৌঁছে খেয়াল হলো আরে আমি তো শাড়ি না পরেই চলে অাসছি ৷ শাড়িটা তো বেডে রাখা ৷ ছাদের মাঝখানে চলে আসছি, অর্ণবের মুখোমুখি আমি ৷ ছাদ থেকে চলে যাবো সেটাও পারছিনা ৷ অর্ণব আমার দিকে বিষাক্ত চোখে তাকিয়ে আছে ৷ পূর্নিমার রাতে চাঁদের প্রতিফলিত আলোয় অর্ণবের চেহারাটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে ৷ সে ভীষণভাবে রেগে আছে ৷ চোখ, মুখ রক্তিম হয়ে আছে ৷ আমি যেখানে দাঁড়িয়েছি সেখানেই নিশ্চল নিথর হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম ঠিক পাথরের মূর্তির ন্যায় ৷ অর্ণব আমার দিকে রাগি চেহারা নিয়ে এগিয়ে আসতে লাগলো ৷ আমার একদম নিকটে এসে দাঁড়ালো ৷ কয়েক ইঞ্চি ফাঁকা দুজনের মাঝখানে ৷ ভয়ে আমার দম আটকে যাবার মত অবস্থা ৷ বুক উঠানামা করছে ৷ অর্ণব রাগের আতিসাহ্যে ফোঁসফোঁস করছে ৷ মনে হচ্ছে এখনই সে আমাকে উদরপূর্তি করবে ৷ অকস্মাৎ সে চেঁচিয়ে উঠে রাগান্বিত স্বরে বলল,
-এখনো এমন বেশে আছিস? লজ্জা কি পানিতে গুলে খেয়ে ফেললি? রুমে গিয়েছিলাম; গিয়ে দেখি তুই অর্ধউলংগ হয়ে শুয়ে আছিস ৷ কেন? এসব করে কি হবে বল তো? আমার মন জয় করবি এমন নিচু কাজ করে? না, পারবিনা ৷ এ মন শুধু চৈতির ৷ তাকে ছাড়া দুনিয়াতে আর কিছু দেখিনা আমি ৷ এক্ষণি শাড়ি পরে নে!
.
অর্ণবের ধমকের সুরের কথামালা শুনে আতঙ্কে কেঁপে চলছি থরথর করে ৷ ঠোঁট কাঁপছে ৷ চোখ ভিজে গেছে জলে ৷ কেঁদে দিবো দিবো ভাব ৷ আচমকা অর্ণব ফিক করে হেসে উঠলো ৷ তার হাসিটা এখন বিরক্তিকর লাগছে ৷ তার হাসি থামলোনা ৷ বেড়ে চললো ৷ খিলখিল করে হাসতে হাসতে একপর্যায়ে থেমে থেমে বলল,
-সরি রে, মাফ করে দিস; তোর সাথে একটু মজা করলাম ৷ তোকে এভাবে কথাগুলো বলা ঠিক হয়নি ৷ তুই যে পরিমাণ সুন্দর তাতে যেকোনো পুরুষ মন্ত্রমুগ্ধের মত নিষ্পলক তাকিয়ে থাকবে ৷ সেখানে এমন আবেদনময়ী রুপে দেখলে কেউ ভুলক্রমে একটা পলকও ফেলবেনা ৷ তোকে এমনরূপে দেখে মুগ্ধ, বিমোহিত, উচ্ছ্বসিত আমি ৷ অনেক ভাললাগছে তোকে এভাবে দেখে ৷ তবে কি জানিস? তোকে সাধারণ বেশভূষাতেই বেশি সুন্দর লাগে ৷ যেন প্রকৃতির সৌন্দর্যের আঁধার তুই ৷ সৃষ্টিকর্তা নিজ হাতে তোকে হাজার বছর ধরে বানিয়েছে, কোনো খুঁত নেই- নিপুন,নিখুঁত তুই ৷ চাঁদের চেয়ে সৌন্দর্যের আঁধার ৷ একজন মনোহরিণী মায়াবতী তুই ৷ তোকে আমার চোখে মায়াবতী লাগে ৷ যে মায়াবতীর জন্য অপেক্ষায় থাকে হাজারো স্বপ্নপূরুষ ৷ আজকে তোকে একটা কঠিন সত্য বলবো ৷ যেটা হয়তো তুই বিশ্বাস করবিনা ৷ কিন্তু বলতেই হবে কথাটা ৷ সত্যটা এই দিনে বলবো বলে এতদিনের প্রতিক্ষা!
.
অর্ণব কথাগুলো বলে আমার দিকে মায়াভরা চোখে তাকালো ৷ আমি যেন লজ্জাবতীর রুপ ধারণ করেছি ৷ তার কথাতে রাজ্যের যাবতীয় লজ্জা ভিড় করেছে আমার দেহে, মনে ও প্রাণে ৷ অর্ণবের দিকে ঠিকমত তাকাতে পারছিনা ৷ সে তার হিমশীতল হাতের মাধ্যমে আমার গালে আলতোভাবে পরশ বুলিয়ে দিয়ে অন্য হাতটা দিয়ে আমার ডান হাতটা ধরলো ৷ অতঃপর আদুরে গলায় বলল,
-কি, আমার কথাগুলো কি বিশ্বাস করবি? যদি বিশ্বাস করিস, তাহলে বলবো!
.
মাথাটা নিচু করে লাজরঙ্গা চেহারায় কাঁপা ঠোঁট নিয়ে আড়ষ্ট কন্ঠে বললাম,
-কি বলবে বলো, আমি বিশ্বাস করবো!
.
অর্ণব দীর্ঘ একটা শ্বাস ফেলে মৃদ্যুস্বরে বলল,
-আমার সঙ্গে….
.
#চলবে
.
আগের পর্ব লিংকঃ