অচিনপুর পর্ব -১৬

#অচিনপুর – ১৬

“আমার আজের রাতের খোরাক তোর টুকটুক শিরীন ঠোঁট
গজল শোনাও, শিরাজি দাও, তন্বী সাকি জেগে ওঠ!
লাজ-রাঙা তোর গালের মত দে গোলাপি-রং শরাব,
মনে ব্যথার বিনুনি মোর খোঁপায় যেমন তোর চুনোট।”

সৌমিকের এস্রাজের সুর ভেসে আসছে। তার সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে যাচ্ছে ছোটো আপার গানের গলা। ওমর খৈয়ামের অনুবাদ করেছিলেন কাজি নজরুল ইসলাম। রুবাইয়াত ই ওমর খৈয়াম নামে পরিচিত এই অনুবাদ কবিতাগুলো। ছোটো আপার গানের প্রতিটি শব্দে আমার ভয়ংকর অনুভূতি হতে শুরু হলো। মনে হচ্ছে, খৈয়াম নয়, আমাকে উদ্দেশ্য করে প্রতিটি শব্দের তীর ছুঁড়ে দিচ্ছে সৌমিক নিজেই। এস্রাজের তীক্ষ্ণ সুরের মূর্ছনাকে বড্ড উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মনে হচ্ছে।
উদ্দেশ্যমূলক এই সুরে বুকে ভালো লাগার ব্যথা শুরু হয়েছে আমার। সত্যি সত্যিই গাল লাল হয়ে উঠছে ভালো লাগার আবেশে। আর অদ্ভুত ব্যাপার এই ভালো লাগা শেয়ার করার মতো কেউ নেই আমার। ভালো লাগার সাথে সাথে আরেকটা যে বোধ তৈরি হলো আমার তাকে সম্ভবত অপরাধবোধ বলে!
ছোটো আপা কাঁদছে, আমি টের পাচ্ছি। আমারও হঠাৎ কান্না পেল। ও যেদিন জানবে সৌমিক আমাকে ভালোবাসে, খুব কি কষ্ট পাবে? খুব কি রাগ করবে আমার উপর? কথা বলবে না আর আমার সাথে? অচিনপুর ছেড়ে দূরে চলে যাবে? আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসতে চাইল। বিছানা ছেড়ে উঠে পড়লাম। বারান্দায় ভরা তারার আকাশ। চাঁদটা উথাল-পাতাল আলো বিলোচ্ছে। সমস্ত অচিনপুর ভেসে যাচ্ছে নিঝুম, ঠান্ডা চাঁদের আলোয়। ঝিকিমিকি তারার আকাশ যেন একটা কাচের সমুদ্র। লক্ষ লক্ষ অজানা অচেনা তারার সমুদ্রটা ভেঙে খানখান হয়ে পড়েছে ঘাপটি মেরে থাকা ওই সব পাহাড়গুলোর মাথার উপর। পাহাড়গুলো যেন নিঃশব্দে ইনবিন করে কাঁদছে।
তার নিচে দাঁড়িয়ে ছোটো আপাও খুব আস্তে আস্তে কাঁদছে। আমি ওর পাশে গিয়ে ওকে দুই হাতে জড়িয়ে ধরলাম!
আমারও ভীষণ কান্না পাচ্ছে ওর জন্য। ওর গাল থেকে পানির দাগ মুছে দিয়ে গালে গাল ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলাম কিছুক্ষণ।
এস্রাজের সুর থেমে গিয়েছে বেশ কিছুক্ষণ। অনেকটা দূরে রাস্তার উপর গাঢ় অন্ধকারের ভেতর আমি সৌমিকের উপস্থিতি অনুভব করলাম। ওই তো অন্ধকারে পাহাড়ের ঢালে এসে দাঁড়িয়েছে ও, ঠিক কৃষ্ণা দিদির বাগানের শেষপ্রান্তের রাস্তার উপর।
ওর নিঃশ্বাসের শব্দ পেতে শুরু করলাম, ওর হৃদয়ের স্পন্দনও আমাকে কাঁপিয়ে দিয়ে গেল যেন। মেরুদন্ডের ভেতর দিয়ে একটা ভালো লাগার শিরশিরানি নেমে যেতে থাকল আস্তে করে। আবার আমি মোহিত হয়ে পড়ছিলাম। সৌমিকের মুখটা মনে পড়ল। ও বলেছিল আমি ওর নিজস্ব নারী! তবে কি ওই আমার নিজস্ব মানুষ, যে সারাটা সময় শুধু আমাকেই ভালোবাসবে! ভালো লাগায় ডুবে যেতে শুরু করেছিলাম, নাক টেনে টেনে ছোটো আপা কথা বলল,
— চল স্বর্ণ, ঘুমাতে যাই। বাতাসে হিম আছে। তোর ঠাণ্ডা লাগবে।
— তুমি কাঁদছ কেন, ছোটো আপা?
— এমনিতেই। মাঝে মাঝে কাঁদতে খুব ইচ্ছে করে।
— একদম এমনিতেই?
— হুম।
— বলো না, আপা, কেন কাঁদছ?
— তুই ছোটোমানুষ। বুঝবি না।
ঘুমাতে এসেও ছোটো আপা ফুলে ফুলে কাঁদল। ওইপাশের বিছানায় মেজ আপা একা একা ঘুমাচ্ছে। মামি মেরে ওর হাতে কালশিটে ফেলে দিয়েছে। রোগে ভুগে চোখ মুখও শুকিয়ে এতটুকু হয়ে আছে। অত সুন্দর দেখতে ছিল, অল্প কয়েকটা দিনের ব্যবধানে রোগা আর কুৎসিত হয়ে গিয়েছে। তারপর আছে ওই টার্কিশ দেমির কুমিরের চিন্তা। বজ্জাতটা টার্কিতে ফিরে গিয়ে আর আপার ফোন ধরেনি, ফেসবুক আইডি ডিএক্টিভেট করে রেখেছে। চিন্তায় চিন্তায় আপা শেষ। সেই প্রানচঞ্চল, চটপটে, রাগী মেজ আপা মনে হয় হারিয়ে গিয়েছে৷ ওই যে ওটা, যে ওই বিছানায় গুটিশুটি হয়ে শুয়ে আছে, সেটা মেজ আপার মতোই দেখতে ওর ছায়া শুধু। মেজ আপার কষ্ট দেখে আমার মনে হয় ওই দেমির কুমির ফিরে আসলেই ভালো হতো। নিয়েই না হয় যেত ও মেজ আপাকে ওই দূরদেশে! আমি এবারে একটুও কাঁদতাম না!

****
আজকে একটা বড়ো দিন আমার জন্য। আমার বড়ো আপার বিয়ে। এই বিয়েতে আমার একটুও সম্মতি নেই তবু আমি এসেছি। বড়ো আপার বিয়ে হবে আর আমি সেখানে থাকব না, সেটাও কি হয়? তবে মামিকে বলিনি। আমি আর ছোটো আপা লুকিয়ে এসেছি। কলেজের ব্যাগে শাড়ি, গয়না লুকিয়ে নিয়েছিলাম, প্রমিদের বাড়ি থেকে সেজে এসেছি। প্রমিকে কিন্তু বলিনি বড়ো আপার বিয়ের কথা। বড়ো আপা নিষেধ করে দিয়েছে কাউকে বলতে। প্রমি বারবার জানতে চাইছিল। জো মাও ও জানতে চেয়েছিল শাড়ি পরছি কেন? তাকেও বলিনি কিছু। প্রভাত দাদা জানতে চাইলে বলতাম। কিন্তু অনেকদিন সে অচিনপুর আসে না। সেই যে আমি অসুখে পড়লাম, তারপর আমার টেস্ট পরীক্ষা শেষ হলো। প্রায় দুই মাসের কাছাকাছি হলো ও আসে না। প্রমির কাছে শুনেছি, সরকারি এক কর্মশালায় যোগ দিতে দেশের বাইরে গিয়েছে। এই সপ্তাহেই নাকি ফিরবে! ফিরুক না, কত কথা জমে আছে পেটের ভেতর, ওকে বলব বলে!

বিয়েটা রাজধানী শহরে গিয়েই হতে পারত, অনেক সহজ হতো সেটা। খুব সহজেই বিয়ের সমস্ত কার্যপ্রণালি সম্পাদনা করা যেতে পারত। অচিনপুরের পাহাড় বা মেখলির মুসলমান পরিবারের কেউ কোনো বাধ সাধতে পারত না। কিন্তু বড়ো আপা বিয়ে না করে অচিনপুর ছাড়তে চায়নি।
আমরা এসেছি খোলচিং পাহাড়ে। এই পাহাড়ের চুড়ায় ম্যারিজ রেজিস্ট্রারের অফিস। ভিন্ন ধর্মের বিয়েগুলো সম্পাদিত হয় স্পেশাল ম্যারিজ এক্টের আওতায়। নির্দিষ্ট ফরমের তথ্যপূরণ করে হলফনামায় সই করে বিবাহের চুক্তিনামা এফিডেফিট করে নিতে হবে। সব কাজ শেষ করে আসলে আমি আর ছোটো আপা দুটো ফুলেল মালা দিলাম ওদের হাতে। কৃষ্ণাদিদির বাগানের সব সুন্দর আর রঙিন ফুলগুলো তুলে নিজের হাতে এই মালা গেঁথেছি আমি। একটা উজ্জ্বল দাদার হাতে দিলাম আরেকটা বড়ো আপার হাতে দিলাম। উজ্জ্বল দাদা হেসে দিয়ে বলল,
— আমি তোমার বড়ো আপাকে কেড়ে নিচ্ছি না, স্বর্ণ৷ শুধু আমার সাথে থাকতে নিয়ে যাচ্ছি। তুমি যখন ওকে ডাকবে ও চলে আসবে অচিনপুরে। আবার তোমার যখন খুব ইচ্ছে করবে ওকে দেখতে, হুট করে চলে যাবে রাজধানীতে। ও কেমন সারপ্রাইজড হবে তোমাকে দেখলে, তাই না?
আমি ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বললাম,
— আমার আপাকে তুমি কখনো কোনো দুঃখ দিও না গো!
বিয়েতে দুই পক্ষেরই কোনো অভিভাবক বা আত্মীয় উপস্থিত না থাকলেও আমরা দুই বোন আর বড়ো আপার বন্ধুরা ছিল। উজ্জ্বল দাদার পক্ষ থেকেও ওর কয়েকজন কাজিন ও বন্ধুরা এসেছিল। ওরা একটা মুকুট পরিয়ে দিলো বড়ো আপাকে। উজ্জ্বল দাদাদের সমাজে বিয়ের কনেকে বিবাহ অনুষ্ঠানে এই বিশেষ মুকুট পরতে হয়। মূল্যবান ধাতু ও রত্নখচিত এই মুকুটটি উজ্জ্বল দাদাদের বংশের বৈশিষ্ট্য বহন করে। উজ্জ্বল দাদার মা এই বিয়ে না মানলেও ছেলের বউয়ের প্রাপ্য গহনা ঠিকই পাঠিয়ে দিয়েছেন।
খোলচিং চুড়া এই অচিনপুরের সবচেয়ে সুন্দর পাহাড়। ঝকঝকে সিঁড়ির ধাপের দুই পাশে কত শত ফুলগাছের সমাহার, পুরো পাহাড়টাকেই রঙিন করে রেখেছে। আর পাহাড়ের চুড়ায় উঠলে চমৎকার অচিনপুর শহরটা একসাথে দেখে নেওয়া যায়। ওই যে শহরের এক পাশ দিয়ে এঁকেবেঁকে নীলচে পানির সাথে ঝিরঝির করে বয়ে যাচ্ছে সুন্দরী তপতী নদী। কী নীল ওর পানি – যেন আকাশের সাথে প্রতিযোগিতায় নেমেছে। মেঘহীন আকাশটাও আজকে রঙের খেলায় মেতেছে। ঝকমকে নীলের মাঝে সাদা সাদা মেঘ উড়ে ছুটে বেড়াচ্ছে। আর পাহাড়ের কোলে কোলে সারা অচিনপুরের সুন্দর সুন্দর বাড়িগুলো! তপতীর ওইপাশে অবারিত ফসলের মাঠ। ওটা অন্য কোনো গ্রাম হয়তো! ওর নাম আমার জানা নেই। হয়তো ওর নাম তপতীই! আমাদের অচিনপুর গাঁয়ের মতো ওই গ্রামটাতেও হয়তো অল্প কয়েক ঘর বাঙালি থাকে আর সবাই পাহাড়ি! প্রভাত দাদাকে বলতে হবে একদিন ওইখানে আমাকে নিয়ে যেতে। অচিনপুর আমার বাড়ি, ওর সবটাই চিনতে চাই আমি। প্রভাত দাদার জিপ নিয়ে কি ওইপাড়ে যাওয়া যাবে? চেম্মুডুর মতো করে ওই নদীতেও কি ফেরি চলে?
প্রভাত দাদা যদি প্রমিকে একটা ফোন কিনে দিতো খুব ভালো হতো তবে। শহরে এসে যখন নেটওয়ার্ক পেতাম, ওই ফোন দিয়ে আমি প্রভাত দাদাকে কল দিতাম আর বলতাম, ‘তাড়াতাড়ি চলে এসো তো! কতকাল তোমাকে দেখি না!’
ছোটো আপা ছুটে এসে ডাকল আমাকে,
— স্বর্ণ, কী ভাবছিস একা বসে বসে? সবাই তো নেমে গিয়েছে। আমিও নেমে গিয়ে আবার তোকে খুঁজতে উপরে উঠলাম।
অনেকগুলো সিড়ি বেয়ে উঠে হাপাচ্ছে ও। আমি জানতে চাইলাম,
— কোথায় যাব আমরা?
— বিয়ে হলো, বিয়ের ভোজ হবে না? সেতুলীতে খাওয়াবে সবাইকে। চল তাড়াতাড়ি। ওরা অপেক্ষা করে আছে আমাদের জন্য। বিকেলেই বড়ো আপা রাজধানীর জন্য রওনা করবে।
আমার বুক ফেটে কান্না আসতে চাইল। সেই বারো বছর আগের রাতগুলোতে ফিরে গেলাম। পাহাড়ের মেয়ে-বউরা কেউ রাতে বাড়ির বাইরে থাকে না। আমার সাথে কেউ রাতে থাকতে আসত না। বাড়ির বাইরে তিত্তেই দাদা, সুবিমল কাকা আর অর্জুন কাকা পালা করে পাহারা দিতো আমাকে। একেক রাতে একেক জন। বারান্দার এক কোণে তক্তপোশ বিছিয়ে ঘুমাত তারা। একটা কুপি বাতি জ্বলত পায়ের কাছে আর মদের কলসী থাকত বিছানার পাশে। দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড় করানো থাকত বাঁশ চেছে সূচালো করা মাথার ভয়ংকর লাঠি। ওই লাঠিতে বাঘও মারতে পারে তারা।
কিন্তু প্রতি সন্ধের মুখে প্যালের দাদি, থুত্থুরে বুড়ি, জরু দাদি তার লাঠিতে ভর দিয়ে এসে বসত আমার ঘরের দাওয়ায়। দুটো আস্ত জলপাই বের করত ওড়নার আঁচলের খুঁট থেকে৷ আমার হাতে দিতে দিতে বলত,
— ও দিদি, রাত্তিরে যেন হুড়কো খুলিসনে! শক্ত করে শেকল টেনে দিস!
আমি ভয় পেয়ে বলতাম,
— কেন দাদি? পাহাড়ের শক্তিশালী পুরুষেরা পাহারায় রাখে আমাকে। আমার কী ভয়?
— ভয় তো ওই পুরুষেই রে, দিদি! পেটে মদ পড়লে একটাও তো আর মানুষ থাকে না রে! অসুর হয়ে যায় সব।
ভয়ংকর দৈত্য!
আমি ভয় পেয়ে কেঁদে কেঁদে বলতাম,
— দৈত্য? ওদের কি তখন শিং গজায়?
— সে যাই গজাক না কেন, উঁকি দিয়ে দেখতে হুড়কো খুলবি না মোটেও। সে দোর আঁচাক, ভাঙুক, কাঁদুক – মোট্টে সাড়া দিবি না যেন। চুপটি করে থাকবি! আর বারবার করে দেখে রাখবি, ঠিকঠাক খিল লেগেছে কি না! মদ খেয়ে মাতালগুলো হাজার ডাকলেও যেন দোর খুলে দিস না দিদি! হাজার কাঁদলেও না, ভয় দেখালেও না!
অমনি আমি ভয় পেতে শুরু করলাম। হাট থেকে হাওয়াই মিঠাই এনে দিতো যে তিত্তেই দাদা, সেই তিত্তেই দাদাকে ভয় পেতাম! মা ডাক ছাড়া কথা বলত না, সেই অজয় কাকাকে ভয় পেতাম। সুবিমল কাকার বলিষ্ঠ শরীরের টগবগে রগ দেখে ভয় পেতাম!
দরজার খিল শক্ত করে চেপে দিয়ে আমার পড়ার টেবিলটাকেও ঠেলেঠুলে নিয়ে আসতাম আমার ছোটো দুই হাতে টেনে। দরজার সাথে চাপিয়ে রাখতাম সেটাকে। তারপর বিছানায় উঠে সমস্ত কাঁথা-কম্বল ভেতর ঢুকে গিয়ে নিজেকে আড়াল করতে চাইতাম সমগ্র দুনিয়া থেকে, রাত্রের ভয়ংকর অন্ধকারের থেকে আর রূপকথার সেই সমস্ত নখওয়ালা, দাঁতওয়ালা, লাল চোখওয়ালা দৈত্য-দানোর থেকে! অত অত কম্বলের ভেতর থেকেও থর থর করে কাঁপতাম আমি। কেঁদে কেঁদে বাবাকে ডাকতাম আমি… বাবা, ও বাবা কোথায় তুমি, আসছ না কেন? আমার পানির পিপাসা পেতো, আমি আরো ভালো করে বিছানায় সেধিয়ে যেতাম। আমার বাথরুম চাপত, আমি আড়ষ্ট হয়ে বিছানায় দাঁত কামড়ে পড়ে থাকতাম! কিছুতেই নড়তাম না, শব্দ করতাম না একটা ফোটাও!
এক রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। দিগন্ত বুজে যাওয়া বৃষ্টি। সমস্ত পুরী নিঝুম হয়েছিল, শুধু বৃষ্টির একটানা ঝরঝর শব্দ আর থেকে থেকে বিদ্যুৎতের ঝলকানি আর কী প্রচণ্ড তার আওয়াজ।
তিত্তেই দাদা ডাকল তখন দরজার কড়া নেড়ে নেড়ে,
— ও দিদিগো, তুমি কি দোতলায়? নিচতলায় জল ভরে যাবে যে, সমস্ত জানালা লাগিয়ে রেখেছ তো?
আমি আরো ভালো করে কম্বল মোড়া দিয়ে দুই কান চেপে রইলাম, কিছুতেই শুনব না আমি ওই ডাক! তীব্র আতঙ্কে কেঁপে উঠে, অদেখা আমার সেই মাকে ডেকে উঠলাম,
— মা, মা গো…!
অমন অন্ধকার বড্ড ভয় পাই আমি! আর ভয় পাই অমন একাকি থাকাতেও …

চলবে…
আফসানা আশা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here