অজানা অনুভূতি পর্ব -৩৮+৩৯

#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ৩৮
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি

আদ্রিতা বারান্দায় দাঁড়িয়ে কথা গুলো ভাবছিলো তখনই নিচে দেখলো যে, স্বাধীন দাঁড়িয়ে আছে স্বাধীনকে এই রাতে দেখে আদ্রিতা চমকে উঠলো। আদ্রিতা একবার ভাবলো স্বাধীনকে ডাক দিবে। পরে আবার ভাবলো দেখা যাক স্বাধীন এখানে কি করতে এসেছে,

স্বাধীন কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে আবার চলে গেলো।

যাক বাবা চলেই যদি যাবে এসেছিলো কেনো? আর কোনো দরকার থাকলে সামনের দরজা দিয়ে আসতো এইভাবে লুকিয়ে বাগানে কেনো আসলো? না কেনো এসেছিলো তা জানতেই হবে। আদ্রিতা মনে মনে কথা গুলো ভেবে সামিরার রুমে গেলো,

দি আসবো? ( আদ্রিতা)

হ্যাঁ ভিতরে আয় সামিরা বই পড়ছিলো হাত থেকে বইটা রেখে কথাটা বললো।

দি একটা দরকার ছিলো ( আদ্রিতা)

হ্যাঁ বল কি দরকার? ( সামিরা)

স্বাধীন ভাইয়ার নাম্বার আছে তোর কাছে? ( আদ্রিতা)

না আমার কাছে নাম্বার নেই। ( সামিরা)

তাহলে সাজ্জাদের নাম্বার আছে? ( আদ্রিতা)

হ্যাঁ এই নে নাম্বার। ( সামিরা)

সামিরা আদ্রিতাকে নাম্বারটি দিলো। আদ্রিতা নিজের ফোনে নাম্বারটি সেভ করে নিলো।

ওকে দি ( আদ্রিতা)

কিন্তু এতো রাতে তোর এই নাম্বার দরকার কেনো? (সামিরা)

এমনিই একটু দরকার ছিলো আর কি ( আদ্রিতা)

ও আচ্ছা যা ( সামিরা)

আদ্রিতা চলে গেলো। সামিরা ও এই ব্যাপার নিয়ে মাথা ঘামালো না। আবার বই পড়া শুরু করে দিলো। আদ্রিতা নাম্বার ত নিয়েছে কিন্তু সাজ্জাদকে কল দিতে দ্বিধা বোধ করছে। তাও শেষ পর্যন্ত কল দিলো সাজ্জাদকে,

আসসালামু আলাইকুম ( সাজ্জাদ)

আদ্রিতা সালামের জবাব দিলো।

সাজ্জাদ আদ্রিতার কন্ঠ স্বর শুনেই বুঝতে পারলো আদ্রিতা কল করেছে। তুমি এতো রাতে কল করেছো? কোনো সমস্যা হয়েছে নাকি? ( সাজ্জাদ)

না কোনো সমস্যা হয় নি। ( আদ্রিতা)

তাহলে আমাকে মিস করছিলে বুঝি? ( সাজ্জাদ)

একদমই না ( আদ্রিতা)

তাহলে সকালের মতো রোমান্স করতে চাচ্ছো নাকি? আসবো তোমার কাছে? ( সাজ্জাদ)

উফফফ কি অ*সভ্য লোকরে ( আদ্রিতা মনে মনে)

দরকার ছিলো তাই কল করেছি। ( আদ্রিতা)

বলেন ম্যাডাম কি দরকার? ( সাজ্জাদ)

স্বাধীন ভাইয়া একটু আগে আমাদের বাগানে এসেছিলো। কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে চলে গেলো। কোনো কাজ থাকলে সরাসরি বাসায় আসতে পারতো। আর যেহেতু কোনো কাজ ছিলো না সেহেতু এতো রাতে আমাদের বাগানে আসার মানে কি? স্বাধীন ভাইয়া কেনো এসেছিলো?

আমি কিভাবে জানবো কেনো এসেছিলো? ( সাজ্জাদ)

আজব আপনার মাধ্যমেই স্বাধীন ভাইয়ার সাথে পরিচয়। তাই আপনার জানাটাই স্বাভাবিক। (আদ্রিতা)

তুমি মনে হয় ঘুমের চোখে দেখেছো স্বাধীন কেনো যাবে? ( সাজ্জাদ)

না আমি সম্পূর্ণ সিউর ওইটা স্বাধীন ভাইয়া ছিলো।

না স্বাধীন অফিসে আছে। ( সাজ্জাদ)

ও তাহলে আমার মনের ভুল হতে পারে। ( আদ্রিতা)

হুম মনের ভুল। ঘুমাও একা ঘুমাতে ভয় পাবে নাকি আমি আসবো? ( সাজ্জাদ)

উফফফ কি অবস্থা কথাটি বলে আদ্রিতা ফোন রেখে দিলো।

সাজ্জাদ যেনো হাফ ছেড়ে বাঁচলো। স্বাধীনকে কল দিলো,

তোর সমস্যা কিরে? ( সাজ্জাদ)

আমি আবার কি করলাম? ( স্বাধীন)

আদ্রিতাদের বাসায় গিয়েছিলি কেনো? ( সাজ্জাদ)

তুই কিভাবে জানলি?🥹 ( স্বাধীন)

আদ্রিতা কল করেছিলো ও তোকে দেখে ফেলেছিলো। কোনোমতে ওকে বুঝিয়েছি ও ভুল দেখেছে। ( সাজ্জাদ)

ও আচ্ছা তাহলে ওর সমস্যা কোথায় তুই ত সামলে নিয়েছিছ। ( স্বাধীন)

সব সময় কি আমি নজর রাখবো নাকি? নেক্সট টাইম থেকে খেয়াল রাখিস ( সাজ্জাদ)

আচ্ছা ( স্বাধীন)

সাজ্জাদ দোটানায় পড়ে আছে। সব কিছু পরিকল্পনা থাকলে এক অজানা ভয় গ্রাস করছে। আদ্রিতা ও বুঝতে পারছে না কি হতে চলেছে। এক আকাশ সমান অনিশ্চয়তা, অভিমান শত শত অভিযোগ নিয়ে দু’জনই ঘুমিয়ে পড়লো। আদো কি তাদের ভালোবাসার পূর্ণতা পাবে? দু’টি মানুষ কি কখনো এক হতে পারবে?

******সকালে*****

কালকে সামিরার হলুদের অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। এখনই আদ্রিতাদের বাসায় মেহমান আসতে শুরু করছে। সাজ্জাদের বাসায় ও সেম অবস্থা। ঘুম থেকে উঠে আদ্রিতা রেডি হয়ে নিচে নেমে গেলো,

কোথায় যাচ্ছিছ? ( আদ্রিতার মা)

কলেজে ( আদ্রিতা)

কালকে বাসায় এতো বড় অনুষ্ঠান আর এখন তুই কলেজে যাবি? ( আদ্রিতার মা)

মা আজকে এক্সাম আছে যেতেই হবে ( আদ্রিতা)

আচ্ছা যা তাহলে ( আদ্রিতার মা)

আচ্ছা কথাটি বলে আদ্রিতা বেরিয়ে পড়লো।

ভাবি আজকের দিনে মেয়েটাকে বাইরে যেতে না দিলে ও পারতা ( আদ্রিতার ফুফু)

থাক না আপা মেয়েটার এক্সাম ( আদ্রিতার মা )

আমি বলি কি মেয়ে ছোট থাকতে থাকতেই বিয়ে দিয়ে দেও। ( আদ্রিতার ফুফু)

সবে মাএ ইন্টারে পড়ে আর ও পরে বিয়ে দিবো। ( আদ্রিতার মা)

আদ্রিতার ফুফু আর কথা বাড়ালো না। সামিরা উপর থেকে কথা গুলো শুনছিলো সামিরা পারলে আদ্রিতার সাথে সাজ্জাদেরই বিয়ে দিয়ে দেয়।

কিরে তুই এখানে দাঁড়িয়ে আছিছ যে? ( মুন)

না আপু এমনি ( সামিরা)

(মুন হচ্ছে আদ্রিতার ফুফাতো বোন। ৬ মাস আগেই বিয়ে হয়েছে। )

তুই কোনো বিষয়ে আপসেট? ( মুন)

না আপু কেনো? ( সামিরা)

এই বিয়ে নিয়ে তোর কোনো আগ্রহ দেখছি না। তোর কি আদো এই বিষয়ে মত আছে? ( মুন)

হ্যাঁ আপু মত আছে পরিবার ছেড়ে চলে যেতে হবে তাই একটু আপসেট। ( সামিরা)

এইটা নরমাল ব্যাপার বিয়ের ক’দিন পর সব ঠিক হয়ে যাবে। ( মুন)

হ্যাঁ আপু ( সামিরা)

আমি ও প্রথমদিকে অনেক কান্নাকাটি করতাম। তোর দুলাভাই সামলে নিয়েছে। ( মুন)

সামিরা মুচকি হাসলো।

মুন এর স্বামী মুনকে ভালোবাসে তাই ওকে মানিয়ে নিয়েছে। কিন্তু সাজ্জাদ ত আদ্রিতাকে ভালোবাসে সাজ্জাদকি সামিরাকে মানিয়ে নিবে?

****আদ্রিতার কলেজে *****

আদ্রিতার কথা শুনে সবাই চিল্লিয়ে উঠলো

কিকিকি সাজ্জাদ ভাইয়ার সাথে আপুর বিয়ে? (তানহা)

হুম ( আদ্রিতা)

কিন্তু আমি ত মনে করেছিলাম সাজ্জাদ ভাইয়া তোকে ভালোবাসে ( আবির)

আমি ও তাই ভেবেছিলাম ( তানহা)

কালকে গায়ে হলুদ তোরা সবাই চলে আসিস ( আদ্রিতা)

কিন্তু আদ্রিতা ( আলো)

কোনো কিন্তু নেই চলে আসিস কথাটি বলে আদ্রিতা কলেজ থেকে বেরিয়ে গেলো।

*******

সাজ্জাদ নিজের রুমে বসে কাজ করছে। একটু আগে অফিসে যেতে চেয়েছিলো কিন্তু সাজ্জাদের মা কোনোভাবে আজকে বের হতে দিবে না। তাই বাধ্য হয়ে ঘরে বসেই কাজ করছে।

ব্রো কালকে তোর হলুদের অনুষ্ঠান আর এখন তুই কাজ করছিছ? ( আদ্র)

কাজ না করলে বউকে কি খাওয়াবো? ( সাজ্জাদ)

চিল ব্রো এখন ত সামিরা আপুকে একটু সময় দিতে পারিছ। ( আদ্র)

আমকর টাইম নেই ( সাজ্জাদ)

এজন্যই তোর কোনো গার্লফ্রেন্ড নেই ( আদ্র)

হ্যাঁ আর তাই তোর ১০০ টা গার্লফ্রেন্ড রয়েছে। ( সাজ্জাদ)

না ব্রো মাএ ১৭ জন। ( আদ্র)

সাজ্জাদ বিষম খেলো আদ্রর কথা শুনে। আদ্র গান গাইতে গাইতে রুম থেকে চলে গেলো। আদ্রর এইসব আচরণের জন্যই সাজ্জাদ আদ্রকে পছন্দ করে না।

******

আজকে কলেজে কোনো এক্সাম ছিলো না। কিন্তু বাসায় অসহ্য লাগছিলো তাই কলেজে এসেছিলো। কিন্তু সবাই সাজ্জাদের সাথে সামিরার বিয়ে শুনে আদ্রিতাকে অনেক প্রশ্ন করছে। তাই আদ্রিতা কলেজ থেকে বেরিয়ে পড়লো। সব কিছু অসহ্য লাগছে আদ্রিতার কাছে। আদ্রিতা একটি নদীর পাড়ে গিয়ে বসে পড়লো। অনেক সময় নিরবতা শ্রেয়। আদ্রিতা সেই নিরবতাকে অনুভব করতে চাচ্ছে। সেজন্যই একা এসে বসে আছে। আদ্রিতা খোলা আকাশের নিচে বসে ঠান্ডা পরিবেশ উপভোগ করছে। আর ঠিক তখনই আদ্রিতার মনে হলো যে……
#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ৩৯
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি

আদ্রিতার মনে হলো যে আদ্রিতাকে কেউ লক্ষ্য করছে। যেই পিছনে ফিরে তাকালো কাউকে দেখতে না পেয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো। কিন্তু কেমন জানি একটা ভয় করছে। তাই আদ্রিতা দাঁড়িয়ে পড়লো বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্য। হঠাৎ খুব দ্রুত বেগে সাজ্জাদের গাড়ি এসে থামলো আদ্রিতার সামনে,

আপনি এইখানে? ( আদ্রিতা)

গাড়িতে উঠো ফাস্ট ( সাজ্জাদ)

কিন্তু আপনি এইখানে কেনো? ( আদ্রিতা)

বলছি না গাড়িতে উঠো সাজ্জাদ চিল্লিয়ে কথাটি বলে উঠলো। আদ্রিতা ও আর কথা বাড়ালো না। গাড়িতে উঠে পড়লো। সাজ্জাদ গাড়ি চালানো শুরু করলো।

তুমি সেখানে একা কি করছিলে? ( সাজ্জাদ)

এমনি একটু নদীর পাড়ে এসেছিলাম। কিন্তু আপনি কি করে জানলেন আমি এখানে এসেছি? আর আপনিই বা এখানে কি করছেন? ( আদ্রিতা)

এতো কথার উওর তোমাকে দিতে আমি বাধ্য নয়।( সাজ্জাদ)

সাজ্জাদের গম্ভীরের কন্ঠ শুনে আদ্রিতা আর কিছু বলার সুযোগ পেলো না।

কলেজের কথা বলে এখানে কেনো এসেছো?(সাজ্জাদ)

আমি ও আপনাকে জবাব দিতে বাধ্য নয়। ( আদ্রিতা)

সাজ্জাদ আর কথা বাড়ালো না।

শুনুন গাড়ি থামান ( আদ্রিতা)

কেনো? ( সাজ্জাদ)

নাস্তা করবো। ( আদ্রিতা)

বাসায় যেয়ে কইরো ( সাজ্জাদ)

না আমি যাবো না এখন বাসায় গাড়ি থামান আপনি। ( আদ্রিতা)

সাজ্জাদ আদ্রিতার কলেজের সামনে গাছের থামিয়ে দিলো। আদ্রিতা ও নেমে গেলো। সাজ্জাদ আবার চলে গেলো। আদ্রিতা কলেজের ভিতরে চলে গেলো। পরে আলোকে নিয়ে বের হলো। ওর সাথে বাসায় যাওয়ার জন্য আর আলোর সাথেই কিছু খেয়ে নিবে।

****সাজ্জাদের অফিসে****

সাজ্জাদ ফাইল দেখছে। এমন সময় স্বাধীন রুমে আসলো।

আদ্রিতাকে কোখায় রেখে এসেছিছ? ( স্বাধীন)

কলেজে ( সাজ্জাদ)

ও কালকে গায়ে হলুদ সব প্রস্তুতি হয়েছে? ( স্বাধীন)

হুম সব কাজ কমপ্লিট। ( সাজ্জাদ)

ও আচ্ছা ( স্বাধীন)

তুই ঠিক টাইম মতো আমার বাসায় চলে আছিছ।(সাজ্জাদ)

চিল ব্রো এসে পড়বো। ( স্বাধীন)

কালকের জন্য স্বাধীনের ও চিন্তা হচ্ছে অনেক।

******

সারাদিন বাসার কাজ শেষ করে মেহমানদের খাবার খাইয়ে আদ্রিতা রুমে এসে শুয়ে পড়লো। বিছানায় শুয়ে পরার সাথে সাথে ঘুমের রাজ্য হারিয়ে গেলো।

*****

সাজ্জাদের চোখে ঘুম নেই। কেনো জানি নিজের কনফিডেন্স হারিয়ে ফেলেছে। আদো কি আদ্রিতা আর সাজ্জাদ এক হতে পারবে?, নাকি সাজ্জাদের সংক্ষিপ্ত গল্পের অসমাপ্ত কাহিনি হিসেবে আদ্রিতা থেকে যাবে?

****

সামিরা বারান্দায় বসে আছে। ছোট থেকেই মেয়েটা চুপচাপ বিধায় একা থাকতেই পছন্দ করে। ওই যে সামিরার বারান্দা থেকে দেখা যাচ্ছে একটি তারা জ্বলছে। আচ্ছা সামিরা কি কখনো সাজ্জাদের সাথে এইভাবে নক্ষত্রের মতো জ্বলজ্বল করবে? সাজ্জাদ কি আদো সামিরাকে আপন করে কাছে টেনে নিবে? সাজ্জাদের সাথে বিয়ে ঠিক হবার পর থেকেই সামিরা অন্য কারোর প্রতি এক #অজানা_অনুভূতির স্বীকার। আদো কি সামিরা নিজের মনের ভাব প্রকাশ করতে পারবে?

****

স্বাধীন নিজের অফিসের কাজ করছে। বিয়ের জন্য সাজ্জাদ দুদিনের ছুটি নিয়েছে। তাই সব কাজ স্বাধীনের করতে হচ্ছে। স্বাধীনের টেবিলের মধ্যেই তার অসময়ী বৃষ্টির ছবি রাখা আছে। এ-ই মেয়েটার ছবি দেখলে ও যেনো স্বাধীনের কাছে শান্তি লাগে।

******

কেটে গেলো আর একটি দিন। আজকে সামিরার গায়ে হলুদ। প্রথমে মেয়ের বাসা থেকে সাজ্জাদের বাসায় যাবে হলুদ নিয়ে। সাজ্জাদকে হলুদ দিবে। তারপর সাজ্জাদের বাসা হতে সামিরার বাসায় মানুষ আসবে সামিরাকে হলুদ দিতে। সকাল সকাল আদ্রিতা ঘুম থেকে উঠে পড়েছে। আদ্রিতার বাসায় এখন ওর দাদু বাসার সব মানুষ নানা বাসার মানুষরা আছে। সাজ্জাদের বাসায় ও একই অবস্থা।

মা আজকে ওই বাসায় কে কে যাবে? ( আদ্রিতা)

আদ্রিতার বড় খালামনি বলে উঠলো,

ছোটরা যাক ওরা গেলে মজা করতে পারবে। সাথে সাকিব যাক ( সাকিব আদ্রিতার খালাতো ভাই) আর ও কিছু মানুষ যাবে ( আদ্রিতার খালামনি).

আচ্ছা ঠিক আছে। আমি দির রুমে যাচ্ছি। কথাটি বলে আদ্রিতা সামিরার রুমে চলে গেলো। সামিরার রুমে সব বিচ্ছু বাহিনী অর্থাৎ ছোট বাচ্চাতে রুম ভরা। এতো বাচ্চা গুলোর মধ্যে আদ্রিতা সামিরার সাথে কথা বলবে কি করে? তাই আদ্রিতা বাচ্চাদের উদ্দেশ্য বলে উঠলো,

বাইরে যে সবার আগে যাবে তাকে চকলেট দেওয়া হবে। ( আদ্রিতা)

সব বাচ্চারা দৌঁড়ে বাইরে চলে গেলো। আদ্রিতা রুমের দরজা বন্ধ করে দিলো। সাসিরা হাসলো,

পাশে এসে বস ( সামিরা)

আদ্রিতা সামিরার কাছে এসে বসলো,

দি আমাদের মিস করবি ত? ( আদ্রিতা)

মিস ত করতেই হবে তোর মতো একটা বান্দর বোন যার থাকবে তাকে মিস না করে কি পারা যায়?(সামিরা)

কাল থেকে এইরুম আমার হয়ে যাবে 😁 ( আদ্রিতা)

রুমে তালা লাগিয়ে যাবো। ( সামিরা)

আদ্রিতা হাসলো। সামিরা এবার একটু সিরিয়াস ভাবে বললো,

সাজ্জাদকে ভালোবাসিস? ( সামিরা)

না দি ভালোবাসতাম এখন থেকে সে তোমার হাসবেন্ড। তাই আর এ-ধরনের কথা বলো না ( আদ্রিতা)

সামিরা ওএই ব্যাপারে আর কথা বাড়ালো না। কারন এইসব কথায় দু’জনই ভিতর থেকে ভেঙে পড়ছে।,

মা বাবাকে ছাড়া কিভাবে থাকবো? কথাটি বলে সামিরার চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়লো।

আরে তুই দেখি বিয়ের আগেই কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছিছ। ( আদ্রিতা)

বিয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সিদ্ধান্ত। আর বড় বড় সিদ্ধান্তর সময়ের সব মেয়েদের চোখে পানি আসেই। এটা স্বাভাবিক বিষয়। (সামিরা)

কিন্তু আমার চোখে ত পানি আসে না। ( আদ্রিতা)

তোর বিয়ের সময় দেখিছ কত কান্না করবি তোর নিজের ও জানা নেই ( সামিরা)

আগে তুই বিয়ে করে নে তারপর আমারটা দেখা যাবে। ( আদ্রিতা)

এমন সময় দরজায় কেউ ধাক্কা দিলো। আদ্রিতা যেয়ে দরজা খুলে দিলো,

আরে তুইএখানে বসে গল্প করছিছ? দুপুর হয়ে আসলো সবার খাবার বেড়ে দিতে হবে নিচে চল ( মুন)

আচ্ছা আপু চলো ( আদ্রিতা)

সামিরা শোন বিয়ের সময় একা থাকা ঠিক না। তোর দাদু নিচের রুমে আছে আমার সাথে নিচের রুমে চল। ( মুন)

আচ্ছা আপু ( সামিরা)

সামিরা, আদ্রিতা মুন নিচে চলে গেলো। সামিরা তার দাদুর রুমে চলে গেলো। আদ্রিতা মুন বাকি যেই মেয়েরা বাসায় আছে সবাই খাবার পরিবেশনের কাজে লেগে পড়লো। ছেলেদের খাওয়া হলে মেয়েরা ও খেয়ে নিলো। সবার সাথে গল্প করতে করতে বিকাল হয়ে গেলো।

তোরা ত সন্ধ্যায় বের হবি রেডি হওয়া শুরু কর তোরা। একবার রেডি হওয়া শুরু করলে ত আর থামার নাম থাকে না। ( আদ্রিতার মা)

সবাই যার যার মতো রুমে গেলো রেডি হওয়ার জন্য। আদ্রিতা ও রুমে এসে দরজা আটকে দিলো। গোসল করার জন্য ওয়াশরুমে গেলো। ঠিক তখনই বারান্দা দিয়ে কেউ আদ্রিতার রুমে প্রবেশ করলো, সম্পূর্ণ কালো ড্রেস কালো মুখোশের জন্য তাকে চেনা যাচ্ছে না। আদ্রিতার খাটের উপর একটি সুন্দর লেহেঙ্গা রেখে দিলো। সাথে সাজগোজ করার জন্য আর ও অনেক জিনিস। জিনিসগুলো লোকটি সুন্দরভাবে খাটের উপর সাজিয়ে রাখছিলো।

অন্যদিকে আদ্রিতা ভুল করে ওয়াশরুমে জামা নিতে ভুলে গেছে রুমের দরজা বন্ধ থাকায় আদ্রিতা নিশ্চিন্তে ছিলো। টাওয়াল পেচিয়ে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এলো।

লোকটি বিছানায় সব জিনিস গুছিয়ে পিছনে তাকিয়ে দেখলো আদ্রিতা শুধু টা*ওয়াল পড়ে দাঁড়িয়ে আছে। আদ্রিতা যেনো কথা বলতে ও ভুলে গেছে। লোকটি ও স্তব্ধ হয়ে গেছে। আদ্রিতা চিল্লাতে নিবে ঠিক সেই সময়……..

#চলবে

[

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here