অজানা অনূভুতি পর্ব -০৬

#গল্পঃঅজানা_অনূভুতি
#লেখীকাঃফারহানা_জান্নাত
#পর্বঃ০৬

আবিরঃ এটা কার বাচ্চা মম। নিশ্চয় আমার বাচ্চা না। আমার মনে হয় এটা অন্য কারো বাচ্চা। প্লিজ তুই সত্যি কথা বল আমাকে আমি কিছু বলবো না।

মম আবির এর কথায় অবাক হয়ে তাকায় আছে। বাচ্চা আসলো কোথা থেকে পরক্ষণেই মনে হলো সে তো নিজেই বাচ্চা নিছে। কিন্তু আবির এর কথা শুনে মম ঘৃণা মাখা মুখ নিয়ে আবির এর দিকে তাকায়। নিজের বাচ্চাকে কেও অন্যের বাচ্চা বলে দাবি করে।

মমঃ ছি আবির তোমার লজ্জা করে না। তোমার বাচ্চাকে অন্য কারো বাচ্চা বলে দাবি করতে। তাছাড়া কয় মাস হচ্ছে সেটা ও যানো না এখনই বলতিছো এটা তোমার বাচ্চা না। ছি আমার লজ্জা করতিছে তোমার সাথে কথা বলতে ও।

আবিরঃ যাস্ট সেট আপ।

আবির এর ধমক এ মম ভয়ে কেঁদে দেয়। আবির পরক্ষণেই ভাবলো আগে পরিক্ষা করা যাক তারপর সব সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে। যেই ভাবা সেই কাজ আবির মম কে নিয়ে ক্লিনিকে যায়। আর সব চেষ্ট করায়। মম কে বাসায় পাঠায় দিয়ে আবির বাসায় ফিরে রাত ১১ টাই চোখ-মুখ লাল হয়ে আছে দেখলে মনে হবে কান্না করছে অনেক। আবির এসে দেখে মম এখন ও বসে আছে। আবির কিছু না বলে ফ্রেশ হয়ে এসে মম এর মুখের উপর ফাইল ছুঁড়ে মারে আর জোরে জোরে বলতে শুধু করে।

আবিরঃ তোর পেটে তিন মাসের বাচ্চা আছে। এটা কখন ও আমার বাচ্চা হতেই পাড়ে না। কার বাচ্চা পেটে রাখছিস। ও কার আবার আয়ান এর তাইনা সে তো তোর পুরান প্রেমিক। বিয়ের আগে তো বহুবার মেলা-মেশা করছিস আর আমি যাওয়ার পড় আবার ও সুযোগ বুঝে ওর কাছে গেছিলিস।

আবির এর কথায় মম অবাক হয়ে যায়। আবির তাহলে সব যানে। আয়ান আর মম এর ব্যাপার এ। কিন্তু এসব সত্যি হলে ও তো বাচ্চাটা আবির এর। বিয়ের পর তো আবির ছাড়া কারো সাথে মেলামেশা করে নি মম। আবির এর চিল্লানিতে সবাই আবির এর রুমে আসে। এসে দেখে মম বসে কান্না করতিছে আর আবির একের পড় একটা কথা বলতিছে।

আয়না সরকারঃ আবির বাবা কি হয়েছে এতো রাতে এসব কি শুরু করেছিস বল তো। তুই দিন দিন কেমন যেন হয়ে যাচ্ছিস। কি হয়েছে বলবি তো। মেয়েটা এমনি অসুস্থ আর তুই বকাঝকা শুরু করে দিছিস ওর সাথে।

আবিরঃ আমি কার কথা শুনতে চাই না বের হও আমার রুম থেকে। তোমাদের আদরের মেয়ে প্রেগন্যান্ট তবে এটা খুশির খবর না। ৩ মাস এর প্রেগন্যান্ট। আমি দেশে আসসি তিন মাস আগে ঠিকি কিন্তু ওরে আমি মেডিসিন খাওয়াইছি তাহলে এটা কার বাচ্চা। (রাগে জোরে জোরে বললো)

মমঃ আবির দেখ আমি বুঝাই বলতেছি প্লিজ। তুমি যা ভাবতিছ তা না। আমি মেডিসিন..

মমকে কিছু বলতে না দিয়ে মম এর গালে চড় বসায় দেয় আবির। আর বলতে লাগে যে।

আবিরঃ আমি সবার সামনে সব বলতে চাচ্ছি না। তুই কি বলতে পারবি তুই বিয়ের আগে কোনো ছেলের সাথে মিশিস নাই এমন কি আমি থাকার পড় ও তার কাছে নিজেকে সঁপে দিতে লাগছিলিস।

আবির এর কথায় মম চুপ মেরে যায় এসব সত্যি। আয়ান ভয়ে ঢোক গিলে যে আবির সব জানলো কিভাবে। আবির এর মা-বাবা অবাক হয়ে তাকায় আছে মম এর দিকে। আবির ঝারি মারতে শুরু করলে মম বলে এসব সত্যি। আয়না সরকার মোমের দিকে তাকায় চলে যায় সেখান থেকে। তাদের ভাবতে ও লজ্জা করে যে মন এমন একটা মেয়ে ছিল।

সকালে মন ঘুম থেকে উঠে নিচে গিয়ে দেখে তার বাবা-মা সবাই চলে এসেছে। আর সবাই মমের দিকে কেমন একটা রাগী ভাব নিয়ে তাকায় আছে মম বুঝতে পারে তার শাশুড়ি মা সবাইকে সবকিছু বলে দিয়েছে। মম কিছু বলতে যাবে তার আগের তার মা বলে।

মিম্মাঃ তুই এমন একটা মেয়ে আমরা কখনো ভাবতে পারিনি। তোকে আমরা কেউ মানুষ করতে পারি নাই। আবিরের মা আর তোকে এখানে রাখতে চায় না। আর আমিও তোকে বাড়িতে উঠাতে পারবো না। এমন মেয়ে আমার আর চাই না। তাই এখন তুই কোথায় যাবি সেটা তোর ব্যাপার এই বাড়িতে তোর আর জায়গা নেই আর এমনকি আমাদের বাড়িতেও।

মম অবাক হয়ে তাকায় আছে সবার দিকে। ওখানে আবির ও বসে আছে কিন্তু কিছু বলতিছেনা। মম ভাবে এখানে থেকে বা কি লাভ। যেখানে তাকে তার হাসবেন্ড ভালবাসে না আর। কতই বা অত্যাচার সহ্য করবে তার থেকে এখান থেকে চলে যাওয়াটাই তার জন্য ভালো। মম তাদেরকে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয় যে সে এখানে আর থাকবে না। চলে যাবে এখান থেকে।

মম ঘরে এসে নিজের জামা কাপড় গুছিয়ে নেয়। তখন আবির এসে দরজা লাগাই দিয়ে মমকে নিজের কাছে টেনে নিয়ে নরম কন্ঠে বলে।

আবিরঃ দেখ আমি সব জানি মম তোর আর আয়ান এর কথা। আয়ান ভালো-না ওর আরো অনেক মেয়ের সাথে সম্পর্ক আছে। আর তোর ঘারে এই নখের আচর আমার না নিশ্চয়। তার মানে তোরা আবার ইন্ডিমেট হয়ছিস। দেখ আমি আর তোর উপর অত্যাচার করবো না প্লমিস। তুই শুধু এই বাচ্চাটা নষ্ট কর। এটা আমার বাচ্চা না তুই নিজে ও জানিস। আমি তোকে যতবার কাছে টানছি ততবার মেডিসিন দিছি।

মম আবির কে নিজের থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে। ওয়াশরুমে চলে যায়৷ তারপর ফ্রেশ হয়ে এসে বলে।

মমঃ আপনি আমাকে চিন্তে ভুল করছেন মিস্টার আবির। আমি এই বাচ্চা কখন ও নষ্ট করবো না কারণ আমি নিজ ইচ্ছায় এই বাচ্চা..। যাক-গে আমি খারাপ মেয়ে আপনার ছোট ভাই ও খারাপ এটা আমি জানতাম হবে দেরিতে। তাই সম্পর্ক নষ্ট করছিলাম। কিন্তু এখন তার থেকে ও বড় খারাপ আপনি। সময় মত ডিভর্স লেটার পাড়িয়ে দিয়েন আপনার সামনে আর আসবো না।

আবির বুঝলো কাল রাগের মাথায় বেশি হয়ে গেছে। সে কখন ও মম কে ছাড়া থাকতে পারবে না এখন উপায় মম কে বাঁধা দিতে হবে আর বাচ্চা টা ও নষ্ট করা যাবে না। আবির নিজেকে কন্ট্রোল করে বলে।

আবিরঃ ওকে তোকে বাচ্চা নষ্ট করতে হবে না। কোথাও যাইতে হবে না যা জামা চেন্জ করে শুয়ে পর তোর শরীর ভালো না।

মম আবির এর কথায় মুচকি হেঁসে বেগ পএ নিয়ে চলে যায় সেখান থেকে। আবির চেষ্টা করে ও আর থামাতে পাড়ে নাই। এরপর আর আবির মম এর কোনো খোঁজ পায় নাই। সেইযে মম গেলো ১.৫ বছর হয়ে যাচ্ছে এখন ও বাড়ি ফিরে নাই না নিজের বাড়ি। কোথায় আছে কেও কোনো খবর পায় নি।

আবির এখন নিজেকে সামলিয়ে নিয়েছে। মম এর জন্য তার বড্ড খারাপ লাগে মেয়েটা কই আছে কিছু যানে না।

অতিতঃ

ঐদিকে সেদিন মম বাড়ি থেকে বেড় হয়ে কোথায় যাবে তা বুঝে উঠতে পারে না তার কোনো ফেন্ড ও নাই। একটা আছে মেয়ে ফেন্ড তার বাসায় একটা রাত যায়গা হবে কিনা তাও বুঝে উঠতে পারতিছে না তবুও কিছু না ভেবেই ফোন দেয় আর সব খুলে বলে। মম কে তার ফেন্ড ঠিকানা সেন্ড করলে চলে যায় সেখানে। তবে অবাক করার বিষয় তাদের পরিবার এই মম এখন ও আছে। নিজের মেয়ের মতো করে আগলে রেখেছে তারা।

বর্তমানঃ

মিতুলঃ তোর সব দোষ কি দরকার ছিল মমকে এসব বলার। তোর কি মনে হয় সত্যি ঐটা তোর বাচ্চা না দেখ তিন মাস এর ছিল আর ও বেশি হলে নাহয় সন্দেহ করতিস। ছি তুই অযথা মেয়েটাকে মিথ্যা অভিযোগ করছিস। আমার মনে হয় তোর কোথাও ভুল হচ্ছে। এখন আর কেদে কি হবে সর। যা আগে মনে ছিল না কতো আর সহ্য করবে মেয়েটা বল।

আবিরঃ আমার বারবার মনে হচ্ছিল ঐটা আমার বাচ্চা না। তো কি করবো আমি বলবি আমাকে। ওর উপর থেকে সন্দেহ আমার যাচ্ছিল না তাই এমন করছি আমি। কখন ও ভাবি নাই ও আমাকে এভাবে ছেড়ে চলে যাবে। তুই প্লিজ আমাকে এনে দে মমকে প্লিজ।

মিতুলঃ চুপ। একদম কানের কাছে ঘেন ঘেনাবি না তা এখন কি মনে হয় বল যে ঐ বাচ্চা টা কার। এখন ও কি তোর সন্দেহ আছে নাকি।

আবিরঃ না কারণ…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here