অজানা_অনুভূতি পর্ব ৪+৫

#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ৪
#লেখাঃInsia_Ahmed_Hayat

হায়াতঃ চড়ুই পাখি বারোটা..

আরহামঃ চড়ুই পাখি বারোটা নাকি পনেরোটা তা দিয়ে আমি কি করবো গেম এর কথা বলো।

হায়াতঃ আরে নীলবাবু চড়ুই পাখি বারোটা খেলবো হুহ।

আরহামঃ এটা আবার কি খেলা।

হায়াতঃ আরে বাহ এই খেলা জানে না খুব সুন্দর করে গাধা বানানো যাবে( মনে মনে) ছি ছি ছি নীলবাবু এই খেলা সম্পর্কে জানেন না। ছি

আরহামঃ তোমার হয়েছে নাকি আরো ছি ছি করবা।

হায়াতঃ হ্যা হয়েছে( এই বলে মেঝেতে বসে পড়লো) নীলবাবু এদিকে আসেন (মেঝেতে বসার জন্য বলল)

আরহাম ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে।
হায়াতঃ কি হলো হেরে যাওয়ার ভয়ে লুকানোর প্ল্যান করছেন বুঝি।

আরহাম উঠে সোফা থেকে উঠে মেঝেতে বসলো।
আরহামঃ জিই না আরহাম চৌধুরী ভয় পায় না। আর হেরে যাওয়ার ভয়ে লুকানোর মতো ছেলে আমি নই। খেলেটা কিভাবে খেলবো সেটা বলো।

হায়াতঃ ঠিক আছে শুনেন খেলার আগে শর্ত দিতে হয় আর শর্ত সব সময় মেয়েরাই দেয় বুঝলেন।

আরহামঃ এই খেলার নিয়ম টা বানালো কে।

হায়াতঃ সেটা বড় কথা নয় আসল কথা হলো খেলা খেলে জিতা। তোহ শর্ত দিবো আপনি রাজি তোহ।

আরহামঃ অবশ্যই রাজি শর্ত কি বলো।

হায়াতঃ খেলায় যে জিতবে সে যা বলবে তাই করতে হবে। রাজি।

আরহামঃ একটু ভেবে বলল হুম রাজি। তোহ শুরু করো কিভাবে খেলবা। কীভাবে খেলে।

হায়াত আরহামের হাত মেঝেতে রাখতে বলল হায়াতও রাখলো এরপর শুরু করলো।
হায়াতঃ চড়ুই পাখি বারোটা ডিম পেরেছে তেরোটা একটা ডিম নষ্ট চড়ুই পাখির মনে বড় কষ্ট । চড়ুই পাখি বারোটা…. ( হায়াত খেলছে আরহাম হাবলার মতো অবাক চোখে তাকিয়ে আছে হায়াতের দিকে। মানে কি বলবে ভাষা খুজে পাচ্ছে না আরহাম।)

হায়াতঃ ইয়েএএএএএস জিতে গিয়েছি লালালালালালালালালালালালালালালালায়াল।লুলুলুলুলুলুলু

আরহাম অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
আরহামঃ এক মিনিট এক মিনিট এটা কি হলো কি খেলা কেমন খেলা কিভাবে জিতেছো কিছুই তোহ বুঝলাম না (ভ্রু কুচকে)

হায়াতঃ হ্যা হ্যা এখন তোহ বুঝবেনই না আমি যে জিতে গিয়েছি। এখন নানান কাহিনি বানাবেন হুহহ।

আরহামঃ না মানে আসলে তুমি জিতে গেলে (অবাক হয়ে) কিভাবে হলো।

হায়াতঃ বলেছিলাম না আমার সাথে কেউ পারে না (ভাব নিয়ে) তোহ এবার শর্ত অনুযায়ী যা বলবো তাই শুনতে হবে আপনাকে ওকে।

আরহামঃ ঠিক আছে।(ভ্যাবাচেকা খেয়ে)

হায়াতঃ আমরা যে আইসিটিতে ফেইল করেছি তার জন্য আমাদের পাচ জনকে কোনো শাস্তি দিবেন না।

আরহামঃ অহ এই ব্যাপার এই চালাকি করেছো তাই না। কোনো ছাড় নেই।

হায়াতঃ না নীলবাবু এটা ঠিক না। আর ছি ছি আরহাম চৌধুরী নিজে কথা দিয়ে কথা রাখে না। আমি তোহ ভেবেছিলাম সে কতো ভালো কতো মিষ্টি আর এখন তোহ দেখি সে একজন…

কিছু বলতে পারল না আরহামের ফোন বেজে উঠলো। আরহাম ফোন চেক করে মুচকি হাসলো
আরহামঃ ঠিক আছে এইবারই লাস্ট কিছু বলবো না।
এই বলে আরহাম ফোন নিয়ে নিজের রুমে চলে গেলো।হায়াত আরহামের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে এরপর হেসে দিলো। অবশেষে নীলবাবুকে শাস্তি না দেওয়ার জন্য পটিয়েই ফেললো।

এরপর অর্পা আসলো হায়াতেরা চলে গেলো।
পরের দিন কলেজে
আনিশাঃ আজ তোর কারনে দেরি হয়েছে হায়াত। ভাগ্য ভালো লেট হওয়ার ফাইন দিতে হলো না।

প্রিসাঃ ঠিক আছে গাল ফুলিয়ে লাভ নেই নিজে দেড়ি করেছো।

হায়াতঃ তোরা আমার বান্ধুবি নাকি দুশমন হ্যা। ঘুম থেকে উঠে ব্রাশ করছিলাম লেট হবে বলে যেইভাবে আছি ওইভাবেই উঠিয়ে নিয়ে এসেছিস। এখন সবাই হাসাহাসি করছে। মুখও ধুতে দিলি না তোরা দেখিস তোদের কপালে…

আনিশা,প্রিসা,অর্পাঃআমাদের কপালে তোর ভাইরা পড়বে।(এক সাথে বলল)

আয়াতঃ আচ্ছা এই ক্লাস শেষ হতে ৪ মিনিট বাকি হায়াত ফাতেমা ম্যাম এর কাছ থেকে ফেসওয়াস আর চিরুনি নিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসিস।

★★
হায়াত ফ্রেশ হয়ে চুলে চিরুনি করে ম্যামকে ফেরত দিয়ে দৌড়ে সিড়ি দিয়ে উঠতে গিয়ে পায়ের সাথে পা লেগে পড়ে যাচ্ছিলো। হায়াত টের পেলো যে সে কারো বুকের উপর পরলো।গায়ে থেকে সুন্দর স্মেল আসছে।হায়াতের চুল খোলা হওয়ায় সব চুল মুখের উপর এসে পড়লো আর পুরো পিঠ জুড়ে চুল ছড়িয়ে আছে।
হায়াত নিজেকে সামলিয়ে সরে দাড়িয়ে তাকালো।একটি ছেলে নতুন স্যার নাকি এই ভেবে বলল
হায়াতঃ অপ্স স্যরি স্যরি আমি ইচ্ছে করে করিনি । পায়ের সাথে পা লেগে পড়ে গিয়েছে (এই বলে খোপা করতে করতে চলে যাচ্ছিলো)

ছেলেঃ তোমাকে খোলা চুলে বেশ লাগে।
হায়াত দাঁড়িয়ে গেলো বলে কি চেনা নাই জানা নেই আর কি বলল রেগে উত্তর দিবে তার আগেই।

ছেলেঃ হ্যালো হ্যা শোনা যাচ্ছেনা বলেছি তোমাকে খোলা চুলে বেশ লাগে তাই চুল খোলা রাখো।(কানে ব্লুটুথ লাগানো তাতে হাত রেখে বলল।এই বলে হেটে সিড়ি বেয়ে নিচে নেমে চলে গেল)

হায়াতঃঅবাক হয়ে নিজের মাথায় নিজেই টোকা দিল অফফো হায়াত তুইও না সব সময় রেগে যাস। ওই ছেলে তোহ ফোনে কথা বলছে।একটা ধন্যবাদও দিলি না ভাগ্য ভালো উল্টো পালটা কিছু বলিসনি নিজের মুখ খুললে তোহ যা নয় তাই বলে বেরাস। আর ছেলেটাকে কোথায় কোথায় যেনো দেখেছি।

হায়াত উপরে উঠে ক্লাসে যেতে যেতে একবার মাঠের দিকে তাকালো। ওই ছেলেটা গাড়িতে উঠছে।
হায়ায়ঃআরে এতো হ্যা এবার মনে পড়েছে। এতোহ

আয়াতঃআদনান চৌধুরী।

হায়াতঃ তুই এখানে

আয়াতঃ তোকে খুজতে আসছিলাম।

হায়াতঃহ্যা আয়াত এই আদনান এখানে কি করছে।

আয়াতঃ আমাদের নেতার ছেলে তার উপর এর বাবাও আমাদের কলেজের ট্রাস্টি। আর এইবার ইলেকশনে দাঁড়িয়েছিলো আর জিতেছেও ওই যে মনে নেই আমরা যে এদের কারনে দেয়ালের উপর দিয়ে গিয়েছিলাম।

হায়াতঃ হ্যা মনে আছে। জানিস কিছুক্ষন আগেই তোহ এর সাথে আমার দেখা হলো আমাকে নাক ফাটা থেকে বাচিয়েছে।

আয়াতঃভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে।
।হায়াত সব বলল। এরপর আয়াত কিছুক্ষণ হায়াতকে বকা দিয়ে ক্লাসে চলে গেলো।

সন্ধ্যায়

অর্পাদের বাড়িতে পার্টি চলছে। হায়াতেরা এসে পড়েছে।

আয়াতঃ অর্পা স্যারদের তোহ দেখছি না।

অর্পাঃ দেখবি কিভাবে দুই চিপকু আসছে আর আমার ভাইদের কোন চিপায় নিয়ে গিয়েছে কে জানে।

হায়াতঃ মানে কোন চিপায় কার চিপায় আর চিপকুটা আবার কে।

আয়াতঃ আরনাবও কার সাথে গিয়েছে( মুখে হালকা রাগী ভাব)

অর্পাঃ খুজে দেখ তোরা আমি ইভান এর কাছে যাচ্ছি।

আয়াতঃ আমি একটু ঘুরে আসি।

আনিশাঃ অর্পা তোহ ইভানের সাথে গেলো। ইফাত যে কেনো আসলো না ধ্যাত।

প্রিসাঃ তোর কি ইফাতের কথা মনে পড়ছে নাকি অনেক।

আনিশাঃ না তা পড়বে কেনো মনে তোহ তোরই একা পড়ে।

হায়াতঃ ধূর তোরা ঝগড়া কর আমিও ঘুরে আসি।

হায়াত দৌড়ে যাচ্ছিলো হঠাৎ কারো সাথে ধাক্কা লাগে।
হায়াতঃ অপ্স স্যরি স্যরি আপু আমি দেখি না।(একটা মেয়ের সাথে ধাক্কা লাগলো আর তার হাতের গ্লাসের সব জুস মেয়েটার ড্রেসে পড়ে গেলো)

মেয়েঃ এই মেয়ে কি করলে এটা আমার ড্রেসটা নষ্ট করলে জানো এই ড্রেসের দাম কতো।

হায়াতঃ দুঃক্ষিত আপু আমি ইচ্ছে করে করিনি।

মেয়েঃ তুমি ইচ্ছে করেই আমার উপর জুস ঢেলে দিয়েছো। তোমাদের মতো মেয়েদের আমার চেনা আছে। যতসব লো ক্লাস ক্ষেত কোথা থেকে যে আসে। আমার জুতাও তোমার ৫০ ড্রেস থেকে দামি। এই ড্রেসটা আমি ২০ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছি তা তোমাদের মতো মেয়েরা কখনোই পারবে না।ছোটলোক কোথাকার

হায়াতঃ আপু আপনি কিন্তু বেশি বারাবাড়ি করছেন সামান্য জুস পড়ে যাওয়ায় এতো রিয়েক্ট করার কিছুই নেই। আর হ্যা আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করিনি আপনার ড্রেস কতো বা জুতা কত। বেশি বড়লোকি দেখাতে গিয়ে ছোটলোকের কর্মকাণ্ড করে ফেলছেন।

মেয়েঃ কি বললে আমি ছোট লোক।(বলেই কেদে দিল) আরহাম দেখলে এই মেয়ে আমাকে ছোট লোক বলল

হায়াত পেছন ফিরে দেখলো আরহাম এদিকেই আসছে। মেয়েটা আরহামকে জরিয়ে ধরলো।

আরহামঃ কি হয়েছে জেসিকা। কাদছো কেনো

জেসিকাঃ এই মেয়েটা আমাকে ছোটলোক বলেছে আর ইচ্ছে করে আমার ড্রেসে জুস ফেলে দিয়েছে।

হায়াত কিছু বলতে যাবে তার আগেই।
আরহামঃহায়াত তোমার কাছ থেকে আর কি আশা করা যায়। অনেক বেশি বেয়াদব হয়ে গেছো। কার সাথে কেমন ব্যবহার করতে হয় ভুলে গিয়েছো। নিজেকে কি ভাবো তুমি।

হায়াতঃ স্যার একবার আমার কথাটা…

আরহামঃ চুপ (ধমক দিয়ে) তোমার কথা শোনার সময় নেই মুখে যা আসে তাই বলে ফেলো। জেসিকা লন্ডন থেকে এসেছে ওর নকেরও যোগ্য না তুমি আর আসছো ওকে ছোট লোক বলতে। পার্টিতে আসছো ফ্রেন্ডসদের সাথেই থাকো জেসিকার পেছনে পড়ে আছো কেনো।(রেগে বলে চলে যাচ্ছিলো)

এইদিকে জেসিকা সয়তানি হাসি দিয়ে ভেংচি কেটে আরহামের সাথে চলে যাচ্ছে। হায়াত এখনো অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।

হায়াতঃলোকটা এমন কেনো কোনো কিছু বলার সুযোগই দিলো না। আর হায়াত তুই কেনো চুপ আছিস। (হায়াত কিছু ভেবে দুইটা জুসের গ্লাস নিয়ে আরহামের সামনে দাড়ালো)

জেসিকাঃ এই মেয়ে এখানে আমাদের সামনে আসছো কেনো। লজ্জা নেই কিছুক্ষণ আগে আরহাম যা বলল ভুলে গিয়েছো আসলে তোমাদের মতো মেয়েদের লজ্জা বলতে কিছুই নেই।

হায়াত হালকা হেসে একটা গ্লাসে জুস সবটা জেসিকার মুখে ছুড়ে মারলো। এতে জেসিকাসহ আরহাম আর আশেপাশের সবাই অবাক।

আরহামঃ তোমার… (আর কিছু বলার আগেই হায়াত আরেকটা গ্লাসের জুস আরহামের মুখের উপর মারলো।)
এইবার সবাই অবাক হয়ে চেয়ে আছে। আশেপাশে তেমন মানুষ ছিলো না। যারা ছিলো তারা পরিচিত। আয়াত হায়াতের পাশে এসে দাড়ালো। রাগে আরহামের মাথা ফেটে যাচ্ছে।

হায়াতঃ কাউকে কিছু বলার আগে ভেবে নিবেন কাকে কি বলছেন। কাউকে কিছু বলার সুযোগ দিতে হয় কথাটা আপনিই আমায় বলেছিলেন অথচ আপনিই মানেননি। যাইহোক আপনার এই হাইক্লাস জেসিকা প্রথমে আমায় ছোট লোক বলেছে ভুল করে জুস ড্রেসে পড়েছিলো তাতে আমি স্যরিও বলেছি।কিন্তু আপনি আমার কথা না শুনে এক তরফা কথা শুনে আমায় যা নয় তাই বলে দিয়েছেন। আর হ্যা কার যোগ্যতা কতটুকু তার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আপনি কে হন। বিদেশ থেকে পড়ে এসেছেন অথচ ব্যবহার কিভাবে করতে হয় তা কি ওইখানেই রেখে এসেছে। কোনটা ভুল আর কোনটা সঠিক তার কি কোনো জ্ঞ্যান নেই আপনার। অন্ধের মতো কাউকে বিশ্বাস করবেন না দেখা যাবে একদিন ঠকে যাবেন।

এই বলে হায়াত বাহিরে চলে গেলো প্রচুর রাগ লাগছে। সামান্য একটা ব্যাপার নিয়ে এতো কাহিনি করলো। হায়াত বাগানের সাইডে গিয়ে বসল।

এইদিকে আরহাম নিজের রুমে বসে আছে পাশেই জেসিকা বসে আছে। আর নেকা কান্না করছে।
জেসিকাঃ আরহাম ওই মেয়ে আমাদের এতো অপমান করলো আর তুমি কিছু বললেনা কেনো। তুমি কি আমায় অপমান করানোর জন্য এখানে আনিয়েছো(কাণ্ণা করতে করতে।)

আরহামঃ জেসিকা আমাকে একা থাকতে দাও প্লিজ।

জেসিকাঃ কিন্তু।

আরহামঃ দেখো জেসিকা আমি আর এইবিষয়ে কথা বলতে চাচ্ছি না। তুমি নিচে যাও আমি আসছি।

জেসিকা চলে গেলো।

★★
আরনাব আয়াতের সাথে দাঁড়িয়ে আছে।
আরনাবঃ হায়াত এমনটা না করলেও পারতো।

আয়াতঃ কি বলতে চাচ্ছেন দোষ হায়াতের শুনুন মিস্টার আরনাব চৌধুরী আমার বোন কখনো কোনো ভুল কাজ করে না। আপনার ভাই না বুঝে আমার বোনকে কথা শুনিয়েছে আর আমার বোন তার জবাব দিয়েছে।

আরনাবঃ আমি জানি আয়াত কিন্তু তুমি ভাইকে চিনো না ভাই জেসিকার জন্য সব করতে পারে। জেসিকাকে ভালোবাসে আরহাম ভাই।

আয়াতঃ ভালোবাসা ঠিক আছে কিন্তু অন্ধ ভালোবাসা কখনোই ঠিক না। এতে করে আমরা ভুল কোনটা আর সঠিক কোনটা ভুলে যাই যা আপনার ভাই করছে।

এই বলে আয়াত চলে গেলো। আরনাব আয়াতের বলা কথা গুলো ভাবছে।

আনিশাঃ হায়াত কোথায়।

অর্পাঃ জানি না কোথায়। এতো বড় ঘটনা ঘটলো আর আমি দেখলাম না। ভাগ্য ভালো বড়রা আর ইভান দেখেনি।

প্রিসাঃ দেখবে কিভাবে ঘটনাটা পুল সাইডেই হয়েছে সেখানে আমরা ছাড়া তেমন কেউ ছিলো না।ওই মেয়ে কি যেনো নাম।

আয়াতঃ জেসিকা।

প্রিসাঃ হ্যা জেসিকার চিল্লাচিল্লি শুনে ওইদিকে গিয়ে দেখি হায়াত কথা শোনাচ্ছে আরহাম স্যারকে। স্যারের চেহারাটা দেখেছিস।

অর্পাঃ এই প্রথম কেউ ভাইয়ার সাথে এমন করেছে। না জানি এর ফল কি হয়।

আয়াতঃ কি হবে তোর ভাই এরও দোষ আছে। অন্ধ ভালোবাসা ভালো নয়।( আয়াত রেগে চেয়ারে গিয়ে বসলো)

এরপর সবাইকে সবটা বলল। প্রিসা,আনিশা,অর্পা টেনশনে আছে। হায়াতকে আপাতত একা থাকতে দেওয়া উচিত।

অর্পাঃ এই ব্যাপারটা ইভানকে কোনো ভাবেই জানতে দিবি না।

আয়াতঃ ইভান ভাইয়া কোথায়। আরনাব যদি বলে দেয়।

অর্পাঃ সুযোগ নেই বলার ওইযে দেখ এক চিপকু এসে পড়েছে।
আয়াত অর্পার কথায় তাকালো। আরনাব একটা মেয়ের সাথে হেসে হেসে কথা বলছে তা দেখে আয়াতের গা জ্বলে যাচ্ছে। কেন এতো রাগ লাগছে জানে না আয়াত। রাগে কটমট করে অন্য দিকে চলে গেলো আয়াত। যাতে এদের দিকে চোখ না পড়ে।

★★ কিছুক্ষন পর
আয়াত খেয়াল করলো মেয়েটা আরনাবের কাছ থেকে চলে গিয়েছে তাই তারাতাড়ি আরনাবের কাছে আসলো আয়াত।

আয়াতঃ আরনাব

আরনাবঃ আরে আয়াত তুমি হ্যা বলো

আয়াতঃ আসলে ওই মেয়েটাকে যার সাথে আপনি কথা বলছিলেন।

আরনাব ভ্রু কুচকে বলল
আরনাবঃ সেটা যেনে তুমি কি করবে। আর মেয়েটার নাম জেনি। আর হ্যা এইটা জিজ্ঞেস করার জন্য এখানে এসেছো।

আয়াতঃ না আসলে বলছিলাম…

আর কিছু বলার আগেই জেনি নামের মেয়েটা আরনাবকে টেনে নিয়ে গেলো। আয়াত আরনাবের যাওয়ার দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে।

★★
হায়াত বেঞ্চের উপর বসে আছে চুপচাপ মনটা অনেক খারাপ। কেন জানি আরহামের কথায় অনেক বেশি কষ্ট পেয়েছি।

“হেই মিস লম্বা চুলওয়া সুন্দরী” কারো কণ্ঠ শুনে পাশে তাকালো হায়াত।

হায়াতঃ অবাক হয়ে আমাকে বলছেন। আপনি এখানে? আপনি তোহ।

“আমি আদনান চৌধুরী”(আদনান)

হায়াতঃ হ্যা আপনাকে তোহ আমি চিনি। কলেজে তোহ আপনার সাথে ধাক্কা খেয়েছিলাম। আর হ্যা তার জন্য ধন্যবাদ।

আদনান হাসলো।

হায়াতঃ আব আপনি এখানে। আপনাকে তোহ পার্টিতে দেখলাম না।

আদনানঃ আমি মাত্র এসেছি। আসবো না কেনো আফটার অল আমার ছোট বোনের বার্থডে বলে কথা।

হায়াতঃ ছোট বোন মানে (অবাক হয়ে)

আদনান আবারো হাসলো।
হায়াতঃ বলুন অর্পা আপনার বোন হয় কিভাবে।

আদনানঃ বলবো একদিন। আচ্ছা তুমি এখানে একা বসে আছো যে মন ভালো নেই নাকি।

হায়াতঃ না তেমন কিছুই না একা থাকতে ইচ্ছে করছিলো।

আদনানঃ তুমি কিন্তু খুব সুন্দর করে দেয়ালের উপর দিয়ে হাটতে পারো

হায়াত কিছুক্ষন তাকিয়ে ছিলো এরপর দুজনেই হেসে দিলো।

” হায়াত” কারো ডাকে দুজনের হাসি থেমে গেলো।

হায়াতঃ ইভান ভাইয়া।

ইভান কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে হায়াতের কাছে এসে ওকে টেনে আদনান এর কাছ থেকে নিয়ে যাচ্ছে। এমন ব্যবহার এ হায়াত আর আদনান দুজনেই অবাক হয়ে গেলো।

হায়াতঃ ইভান ভাইয়া হাত ছাড়ো আমার।

ইভান হায়াতের কোনো কথা না শুনে অর্পাদের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে বাকিদের নিয়ে রৌনা দিলো বাসার উদ্দেশ্যে।
ইভানের এমন কাজে সবাই অবাক।।
#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ৫
#লেখাঃInsia_Ahmed_Hayat

ইভান সবাইকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে আয়াত ও হায়াতকে নিয়ে বাসায় গেলো। হায়াত চুপচাপ নিজের রুমে চলে গেলো। ইভানও নিজের রুমে গিয়ে রুম লক করে বসে আছে। আয়াত ইফাত ও ইশানকে গিয়ে সব বলল।

আয়াত রুমে এসে দেখলো হায়াত রুমে নেই।
বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে হায়াত ওর পাশে এসে দাড়ালো আয়াত

আয়াতঃ হায়াত প্রেমে পড়া জিনিসটা বড়ই অদ্ভুত। একবার প্রেমে পড়লে যার প্রেমে পড়েছো তার আশেপাশে অন্য কাউকে সহ্য হয় না।

হায়াত অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। আয়াত হায়াতকে অন্য বিষয় চিন্তা করার জন্য এই কথাটা বলল কারন আয়াত জানে হায়াতের মাথা একটা জিনিস ডুকে গেলে সেটা নিয়েই ভেবে ভেবে কুল পায় না। তাই নতুন কিছু ভাবার জন্য নতুন কিছু ওর মাথায় ডুকিয়ে দিলো।

হায়াতঃ আয়াত তুই কি প্রেমে পড়েছিস নাকি?

আয়াতঃ হায়াতের দিকে তাকালো, নাতোহ আমি আর প্রেমে হাহাহা(বলেই হেসে দিলো)

হায়াত আয়াতের হাসি দেখে হেসে দিলো আয়াত ভ্রু কুচকে হেসে দিলো।

হায়াতঃ সে ছোট বেলা থেকে কিছু বলার জন্য এই হাসিটাই যথেষ্ট ছিলো। তোকে যে আমি খুব ভালো করে চিনি। চল (বলে আয়াতকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে)

আয়াতঃ আরে আরে কোথায় নিয়ে যাচ্ছিস আমায়।

হায়াতঃ জোসনার মাকে দেখতে।

আয়াত হেসে দিলো। হায়াত ও আয়াত ছাদের এসে দাড়ালো। সেই ছোট বেলার অভ্যাস এখনো যায়নি দুইবোন খুব করে মাঝ রাতে একা একা ছাদে এসে পড়তো একসাথে থাকা ঘুমানো খাওয়া দুষ্টুমি করা আরো কত শত স্মৃতি আছে এই বাড়ির আনাচে কানাচে। দুইজন মাঝ রাতে সবার আরালে চোখের ফাকি দিয়ে হায়াতের জোসনার মাকে(চাঁদকে) দেখিতে আসতো)

আয়াত ও হায়াত দুজনের হাত ধরে আকাশের দিকে চেয়ে আছে। হায়াতের চোখ চকচক করছে।

হায়াতঃ জোসনার মা আজকে তোমায় অনেক বোর দেখাচ্ছে একদম রুটির মতো তুমিও কি আমাদের মতো আজ অনেক খুশি। জানো আজকে তোমাকে একটা কথা বলবো আর সেটা হলো।

এইযে আমার ৪ মাসের বড় বোন+ বেস্টু আয়াত কারো প্রেমে পড়েছে। জ্বলজ্বল করা তারা তোমার বন্ধ বান্ধবকে বলে দিও আমার বোন প্রেমে পড়েছে। আমার বোন প্রেমে পড়েছে ( হালকা চিৎকার করে)

আয়াতঃ হায়াত আস্তে নয়তো পাশের বাসার লোক চোর বলে দৌড়ে আসবে।

হায়াত হেসে দিলো সাথে আয়াতও। হায়াত ও আয়াত একে অপরকে জড়িয়ে ধরলো। হায়াতের লুকিয়ে রাখা চোখের নোনা জল গড়িয়ে পড়লো। মা মরে যাওয়ার পর এই একটা মানুষ হায়াতকে মায়ের মতো ভালোবেসেছে। মায়ের মতো খেয়াল রেখেছে। অনেক সময় না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লে নিজের হাতে ঘুমের মাঝেই খাইয়ে দিতো। হায়াত কোথাও যেতে হলে কোন ড্রেস পরবে কোন হেয়ার স্টাইল করবে তা সব আয়াত করে দিতো। সব সময় আয়াত হায়াতের পাশেই ছিলো। তার উপর আরো তিনজন বান্ধুবি আছে যারা সব সময় হায়াতের পাশে ছিলো।

★★★
হায়াত ঘুমিয়ে আছে নিশ্চিন্তে। এদিকে আয়াতের চোখে ঘুম নেই। যখন থেকে আরনাবের সাথে জেনিকে দেখেছে তখন থেকে মনের অজানা_অনুভূতি টা নাড়া দিয়ে উঠেছে। অনেক অনেক প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। প্রথমত হায়াত আর ইভান ভাইয়ার ঝামেলা তার একে অপরের সাথে এমন কেনো করছে। আর এইভাবে হায়াতকে টেনে বাসায় নিয়ে আসলো কেনো যেই ইভান হায়াত অর্পার বার্থডেতে যাবে বলে যাবে না বলেছিলো সেই ইভান নিজে ড্রাইভ করে টেনে নিজের পাশে বসিয়ে নিয়ে এসেছে। বুঝতে পারছি না ইভান ভাইয়ার মাথায় কি চলছে। নাকি আরহামের স্যারের ব্যাপারটা আরনাব বলে দিয়েছে। আর জেনির সাথে আরনাবের কি সম্পর্ক। এতশত ভেবে ফোন হাতে নিয়ে বারান্দায় দাড়ালো আয়াত ভাবছে কল করবে কি না। কতশত ভেবে আরনাবের নাম্বারে কল করলো। রিং ভাজছে কেউ উঠাচ্ছে না। আবার চেষ্টা করলো
✆ ✆ ✆ ✆
আয়াতঃ হ্যা আসসালামু আলাইকুম।

“অলাইকুম আসসালাম”(মেয়ে কণ্ঠ শুনে বুকটা ধুক করে উঠলো। বুকে চিন চিন ব্যাথা হচ্ছে শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে কিন্তু কেনো এত কষ্ট কেনো হচ্ছে আয়াতের তাই ভাবছে আয়াত)

মেয়েঃ হ্যালো হ্যালো ও হ্যালো
মেয়েটার ডাকে হুস আসলো
আয়ায়ঃ জিই আপনি কে। আরনাব কোথায়।

মেয়েঃ আমি জেনি। আপনি কে আর এতো রাতে আরু বেবিকে কল দিয়েছেন কেনো।

জেনির কথা শুনে চোখের কোনে নোনা জল জমে গেলো তাহলে কি আমার প্রথম প্রেম হেরে যাবে শুরু হওয়ার আগেই শেষ হয়ে যাবে। আমার ভালোবাসাটা কি এক তরফা হয়ে যাবে ভাবছে আয়াত।

জেনিঃ আরে কথা বলছেন না কেনো আপনি কে যে আমার আরু বেবিকে কল দিয়েছেন। নেক্সট টাইম যদি তুই কল দিস তাহলে তোর খবর আছে আরনাব আমার আর আমরা খুব যলদি বিয়ে করবো তাই আমার আরু বেবির কাছ থেকে দূরে থাকবি।

আয়াত নিজেকে স্বাভাবিক করে বলল
আয়াতঃ জিই আমি আয়াত আরনাব স্যার এর স্টুডেন্ট। স্যারকে বলবেন আমি কল দিয়েছিলাম। একটা পড়ার বিষয় এ কল দিয়েছিলাম।স্যরি এতো রাতে আপনাদের বিরক্ত করার জন্য কালকে কলেজ থেকে পড়াটা জেনে নিবো। আল্লাহ হাফেজ।

জেনিকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ফোন কেটে দিলো।
আয়াতঃখুব কান্না পাচ্ছে কিন্তু কাদবো না। (মনে মনে)
কারো হাত কাদের উপর পড়ায় পেছন ফিরে হায়াতকে দেখে অবাক হলো। আয়াত কিছু বলবে তার আগেই হায়াত আয়াতকে জড়িয়ে ধরলো। আয়াত কান্নায় ভেংগে পরলো। এইসময় এ কি শান্তনা দেওয়া যায় তাই ভাবছে হায়াত। সবটাই শুনেছিলো হায়াত হালকা আন্দাজ করতে পারছে। কারিন পার্টিতে আয়াত আরনাবের দিকেই চেয়ে ছিলো আর আরনাব একটা চিপকু মেয়ের সাথে চিপকে ছিলো।

★★★
পরেরদিন কলেজে গেলো সবাই। আয়াত ও হায়াতের কারো মন ভালো নেই। অরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুই ভাই এর কাছ থেকে দূরে থাকবে।

হায়াতরা হাটছে প্রিসা, অর্পা, আনিশা কথা বলছে আয়াত ও হায়াত চুপচাপ।
সিড়ি বেয়ে দোতলায় উঠার সময় আরহাম ও আরনাবের সাথে দেখা। হায়াত ও আয়াত দেখেও না দেখার ভান করে চলে গেলো।

ক্লাসে
আরহাম ক্লাস নিচ্ছে। আরহামে কেনো জানি আজ ভালো লাগছে না আজ হায়াত একদম চুপচাপ অন্যদিন হলে প্রশ্ন করে করে আরহামের মাথা খেয়ে ফেলতো। হায়াতের এমন ব্যবহার এ আরহামের অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছে এক অজানা_অনুভূতি।

আরহাম কোনো মতে ক্লাস নিয়ে চলে গেলো।
টিফিন টাইমে খবর আসলো হায়াতকে আরহাম স্যার তার কক্ষে যেতে বলেছে। হায়াত হেটে হেটে আরহামের কক্ষের সামনে এসে দাড়ালো। এসে নক করলো।

★★
আরহামের সামনে ৫ মিনিট ধরে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে হায়াত। তা দেখে আরহাম আর চুপ থাকতে পারলো না

আরহামঃ মিস রেডিও আজকে কি আপনার ব্যাটারি ডাউন নাকি আজ যে কোনো প্রশ্ন করেননি।

হায়াতঃনিশ্চুপ

আরহামঃ আজকে কি আপনার মনে কোনো প্রশ্ন জাগেনি নাকি সব পারেন।

হায়াতঃআমি প্রশ্ন তাকেই করি যে আমার কথা + প্রশ্ন মনোযোগ দিয়ে শুনে। এক তরফা কথা শুনে মানুষকে নিচু করা মানুষ আমার মোটেও পছন্দ নয় তাই তাদের থেকে নিজেকে দূরে রাখি।(স্বাভাবিক ভাবে বলল)

আরহাম হায়াতের দিকে তাকালো।
আরহামঃ হায়াত আই এম স্যরি।

হায়াত অবাক হয়ে তাকালো। স্যরি তাও আরহাম চৌধুরী যাকে দিয়ে ভুলেও স্যরি বলাতে পারে না কেউ সে আমায় স্যরি বলছে।

হায়াতঃ কি বললেন স্যারবাবু (অবাক হয়ে)

আরহাম হাসলো। হায়াত তার নিজের রুপে ফিরে এসেছে।
আরহামঃ স্যরি হায়াত। আসলে আমার সব কতাহ শোনা উচিত ছিলো। রাতে আরনাব আমাকে সব বলেছে তখনি স্যরি বলতাম হলে কিন্তু পড়ে জানলাম। ইভান তোমাদের নিয়ে চলে গিয়েছে।

হায়াতঃ আচ্ছা। এখন আমি আসি আপনার কারনে আমার টিফিন ওরা খেয়ে ফেলবে (বলে দৌড় দিলো)
আরহাম হাসলো কেনো হাসলো নিজেও জানে না। হায়াতের কথায় নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে কখনোই এক তরফা কথা শুনে কিছু করা উচিত নয়। তাইতোহ আদালতে দুইপক্ষের কথা শুনে রায় দেয়। মেয়েটা কার্যকলাপ অনেকটা আলাদা।

হায়াত বাহিরে যেতেই জেসিকার সাথে দেখা।

জেসিকাঃ কি ছোটলোক হায়াত আমার আরহাম আবার বকেছে নাকি কথা শুনিয়েছে নাকি অপমান করেছে। আর জানো সে আমায় অনেক ভালোবাসে আমি যা বলি তাই বিশ্বাস করে। আমাকে ছোটলোক বলেছিলে আমার বাড়ির চাকরানীর দামও তোমার চেয়ে বেশি( বলে চলে যাচ্ছিলো)

হায়াতঃ হেই মিস জিঙ্গা স্যরি জেসিকা তোমার বয়ফ্রেন্ড আমাকে স্যরি বলেছে। খুব তোহ ভেংচি কেটে নেকা কান্না করে নীলবাবুর কানে বিষ ঢেলেছিলো আজকে সে নিজে আমায় ঢেকে স্যরি বলেছে। আর সব টাকা মনে হয় চাকরানীদেএ দিয়ে দেও আমার বাড়ির কাজের বুয়া নুরিও ভালো পোশাক পড়ে তোমার মতো এমন ছেড়া প্যান্ট পড়ে না। আমাদের বাসায় এসো আমার আর আয়াতের কিছু পুরনো ড্রেস আছে ওইগুলো দিয়ে দিবো। হাহাহাহা বাই মিস জিঙ্গা স্যরি জেসিকা।

বলে চলে গেলো। জেসিকা রাগে ফুসছে। জেসিকা আরহামের সাথে দেখা না করেই চলে গেলো

হায়াত ক্লাসে গেলো। আর সবাইকে বলল। সবাই অবাক হলো।

আয়াত ওয়াশরুমে গেলো.
হায়াতঃ আচ্ছা অর্পা এই জেনিটা কে যে আরনাব স্যার এর সাথে চিপকে ছিলো।

অর্পাঃ কে আবার যার মুখে জুস ঢেলেছিলি তার ছোট বোন হয়।আব্বু ফ্রেন্ড এর মেয়ে ওরাও লন্ডন এ থাকতো আর আরহাম ভাইয়েররাও ওইখান থেকেই পড়াশোনা করেছে তাই ওদের চিনে।

হায়াতঃ হুম বুঝলাম। আরনাব ভাইয়া আর জেনি কি রিলেশনশীপে আছে নাকি।(আচ্ছা তাহলে এই দুই ডাইনি বোন যারা দুই জমজ ভাইকে ফাসিয়েছে মনে মনে)

অর্পাঃ জানি না। তা বলতে পারবো না। কারন আরনাব ভাইয়া একদম চুপচাপ থাকে। আর এই বিষয়ে আমি কখনো

হায়াত আর কিছু না বলে ক্লাস থেকে দৌড়ে চলে গেলো আরনাবের কাছে। বাকিরা নিজেদের মতোই আছে।

★★
হায়াতঃ মিস্টার আরনাব চৌধুরী।

আরনাবঃ হায়াতের এমন ডাকে হালকা অবাক হলো। হ্যা বলো হায়াত তুমি এখানে।

হায়াতঃ কালকে রাতে আপনি কার সাথে ছিলেন।

আরনাবঃ মানে।

হায়াতঃ কালকে আপনাকে আয়াত কল করেছিলো আর আপনি আপনার গার্লফ্রেন্ড জেনিকে দিয়ে কোথায় শুনিয়ে দিয়েছেন কেনো। আপনারা দুই ভাইয়ের কি আমাদের কথা শোনানো ছাড়া কি কোনো কাজ নেই। নাকি এটাই আপনাদের অভ্যাস।

আরবানঃ অবাক হয়ে কি বলছো আয়াত রাতে আয়াত কল দিয়েছে কিন্তু জেনি তোহ আমায় কিছু বলল না আর এক মিনিট এক মিনিট জেনি আমার গার্লফ্রেন্ড এটা তোমায় কে বলেছে।

হায়াতঃ সেটা জেনিকেই জিজ্ঞেস করুন। আর ধরেন জেনি নাই বলল আপনার কল লিস্টে তোহ দেখতে পারতেন স্যার। এমনিতে তোহ আপনিও রাত বিরাতে আয়াতকে কল দিয়েছেন আয়াত কি আপনাকে কখনো কিছু বলেছে আর আয়াত একবার কল দেওয়ায় এতো কথা। আপনার কাছ থেকে এটা আশা করিনি আরনাব স্যার।

বলেই চলে গেলো। আরনাব অবাক হয়ে আছে সব কিছু মাথার উপর দিয়ে গেলো।

আরনাব সাথে সাথে ফোন বের করে জেনিকে কল দিয়ে বিকালে দেখা করার কথা বলল।

কলেজের ক্লাস শেষ করে হায়াতেরা গেট দিয়ে বের হলো পাশের ফুসকার দোকানে গিয়ে বসলো। হায়াত একটু বাহিরে গিয়ে হাটছে।
আয়াতরা বসে আড্ডা দিচ্ছে হঠাৎ কে জেনো আয়াতের চোখ ধরলো। আয়াত ওর চোখের উপরে কারো হাত স্পর্শ করে বুঝার চেষ্টা করছে কে। বাকি সবাই চুপ হয়ে আছে।

আয়াতঃ এই কেরে আমার চোখে ধরেছে। যদি আমার চোখের কাজল লেপ্টে যায় তোকে আমি ছাড়বো না। কার এমন মোটা হাত। আরে কেউ কথা বলে না কেনো।
জাহিদ তোর মোটা হাত ছাড়বি নাকি আমি উঠে ঘুষি মারবো

জাহিদ চোখ ছেড়ে বলল
জাহিদঃ এই আয়াত তুই প্রতিবার কিভাবে বুঝে ফেলিস যে আমি।

আয়াত দাঁড়িয়ে জাহিদের দিকে তাকালো।
আয়াতঃ বুঝবো না কেনো প্রতিবার তুই এসেই তোর মোটা হাত দিয়ে আমার কাজল পড়া চোখে ধরিস আর আমার চোখ একদম কালো বানিয়ে দিস।

জাহিদঃ হ্যা বুঝলাম। এবার বল কেমন আছিস। আর তোরা কেমন আছিস(অর্পাদের)

অর্পাঃ ওহ আচ্ছা আমাদের তাহলে চোখে পড়লো তাই না। আমি তোহ ভাবলাম আমরা অদৃশ্য হয়ে গিয়েছি।

জাহিদঃ তোরা যেই মোটা চোখে না পড়ে কি উপায় আছে।

আনিশাঃ কি বলল(বলেই জাহিদের চুল টেনে ধরলো)

প্রিসা জাহিদকে কিল ঘুষি মারছে।
জাহিদঃ আরে থাম থাম। এইভাবে মারলে তোহ আমার বউ বিধবা হয়ে যাবে।

অর্পাঃ বউ বিধবা হবে মানে তুই বিয়ে করে ফেলেছিস জাহিদ।(সবাক অবাক)

জাহিদঃ ইয়ে মানে হ্যা।

আয়াতঃ কাকে বিয়ে করেছিস। আর আমরা জানিও না। এলাকা থেকে গিয়ে তোহ চান্দু তুই হাওয়া হয়ে গিয়েছো।

জাহিদঃ ওর সাথে তোদের দেখা করাবো নে। আগে বল লাল মরিচ কোথায়।

আয়াতঃ হায়াত কোথায় তা জানি না। বাহিরে হবে।

অর্পাঃ দেখলি আয়াত আমরা এক সাথে পড়েছি ছোট বেলা থেকে যেই না ওর বাবার বদলি হয়ে অন্য শহরে গিয়েছে ওমনি একা একা বিয়ে করে ফেলেছে যাতে আমাদের দাওয়াত দেওয়া না লাগে।(রেগে)

জাহিদঃ আরে দাওয়াত দেওয়ার জন্যই তোহ আসলাম।

প্রিসাঃ ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারের ছেলে বিয়ে করেছে আর আমরা এখনো সিংগেল।(গাল ফুলিয়ে)

আনিশাঃ তুই সিংগেল।

প্রিসাঃ আমি তোহ সিংগেল্। (রেগে) আমি সিংগেল তুই মিংগেল।হুহহ

আয়াত হেসে হেসে জাহিদের সাথে কথা বললছে। কলেজের সামনে দোকানটা হওয়ায় গেটের বাহির থেকে সব দেখা যায়।

★★
আরনাব দোকানের বাহিরে দাড়িয়ে আয়াতকে ডাক দিলো। আরনাবকে এখানে দেখে আয়াত সহ সবাই অবাক।

আয়াতঃ স্যার আপনি।

আরনাবঃ ওই ছেলেটা কে।

আয়াত ভ্রু কুচকে কিছুক্ষন চেয়ে তারপর বলল,প

আয়াতঃ সেটা যেনে আপনি কি করবেন।

আরনাবের প্রচুর রাগ লাগছে নিজেকে কন্ট্রোল করে
আরনাবঃ আজকে তুমি বিকালে রেস্তোরাঁয় আসবে বিকাল ৪ টায়। আর হ্যা না আসলে আমি এসে তুলে নিয়ে যাবো। আর আমি কোনো বাহানা শুনতে চাচ্ছি না যা বলেছে ঠিক সময়ে যেনো পৌঁছে যাবে। আর ঠিকানা আমি মেসেজ করে দিবো।

বলেই আরনাব চলে গেলো। আয়াত অবাক হয়ে টাস্কি খেয়ে দাঁড়িয়ে আছে আর আরনাবের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। অর্পারা আয়াতকে জিজ্ঞেস করায় কিছু বলল না চুপ ছিলো।

★★★
কলেজের পাশেই একটা বেলি ফুল গাছ আছে ওটার কাছে আসলো হায়াত। অনেক ফুল ধরেছে আর সুন্দর সুভাষ আসছে। আশেপাশে নিরিবিলি। হায়াত মাটিতে পড়ে থাকে ফুল গুলো কুড়িয়ে তার ঘ্রাণ নিচ্ছে। মাতাল কপ্রা ঘ্রান। যতপবারই বেলি ফুলের ঘ্রান নেই একদম সব কিছুই ভুলে যায় সব ক্লান্ত চলে যায়। ঘ্রাণ নিয়ে পেছন ফিরে একটু ভয় পেয়ে গেলো।

হায়াতঃ আব মিস্টার আদনান আপনি এখানে।

আদনান এক ধ্যানে হায়াতের দিকে তাকিয়ে আছে তা দেখে হায়াত বলল।
হায়াতঃ ওহ হ্যালো মিস্টার আদনান কোথায় হারিয়ে গেলেন।। হারিয়েই যখন গিয়েছেন তাহলে আমাকে বলেই হারাতেন।

হায়াতের কথায় ধ্যান ভাঙ্গলো আদনানের। আদনান একটু হেসে হায়াতের দিকে একটা প্যাকেট এগিয়ে দিলো। হায়াত একবার আদনানের দিকে আরেকবার প্যাকেটার দিকে তাকিয়ে আছে। হায়াত কিছু বলবে তার আগেই একটা বাইক এসে ওদের সামনে দাড়ালো।

হায়াতঃ ইভান ভাইয়া (অবাক হয়ে)

ইভানঃ হায়াত বাইকে উঠ।

আদনান স্বাভাবিক ভাবেই তাকিয়ে আছে। হায়াত একবার ইভানের দিকে আরেকবার আদনানের দিকে তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করছে আসল ঘটনা কি। যতবার আদনানের সাথে হায়াত থাকে ইভান এসে নিয়ে কিন্তু কেনো।

হায়াতকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ইভানের রাগ উঠে যায়। হাতে ধরে এক টান মারে এরপর হায়াত বাইকে উঠে। ইভান একটু সামনে গিয়ে আয়াতকে নিয়ে বাকিদের বাসায় যাওয়ার জন্য বলে।

★★ হায়াতদের বাসায়
হায়াতঃ ইভান ভাই বার বার তুই আমার সাথে এমন কেনো করছিস।

ইভানঃ নিশ্চুপ

হায়াতঃ আমার কাছ থেকে দূরে থাকবি। তোর ছায়াও আমি দেখতে চাই না।
বলেই রুমে চলে গেলো।বাকি সবাই অবাক এদের দুই ভাইবোনের মধ্যের কি চলছে কিছুই বুঝতে পারছে না।

★★
বিকালে আয়াত বসে বসে ভাবছে যাবে কি না দোটানায় পড়ে গেলো। এইসব ভাবছে। আয়াতের ভাবনায় তীর মারলো ফোনের রিংটোন এ।

ফোনের স্ক্রিনে বড় বড় করে লেখা “আরনাব”

আয়াত ভাবছে ফোন ধরবে কি না।

চলবে
(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here