অন্তরালের কথা পর্ব ৩১

#রিপোস্ট
#অন্তরালের_কথা
লেখা – জান্নাতুল ফেরদৌস মাটি
পর্ব – ৩১

.
.
” তুই যেরকম করছিস তানহাকে সুস্থ করার বদলে তুই তো নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়বি। এভাবে করলে কি হয় তিহান? সেই গতকাল দুপুরে ভাত খেয়েছিলি আর আজ আরেক দুপুর পেরিয়ে সন্ধ্যা কাটিয়ে রাত হতে চলছে। কিন্তু এই অবধি খাবার তো দূরের কথা এক গ্লাস পানিও তোকে আমরা কেউ খাওয়াতে পারিনি। আয়নায় দাঁড়িয়ে দেখতো তোকে কেমন লাগছে! এই একদিনের মাঝে কতটা পরিবর্তন এসেছে তোর মাঝে তুই নিজেই বুঝতে পারবি। ”
শান্ত কথাগুলো বললেও তেমন একটি প্রভাব পড়েনি তিহানের উপর। তিহান এরকম ভাব ধরেছে যেন সে কিছুই শুনেনি আর কেউ কিছু বলেওনি। সে তার মতোই কেবিনের এপাশ থেকে ওপাশ হেঁটে যাচ্ছে। এমন সময় কেবিনের ভেতর থেকে নার্স এসে তিহানের দিকে তাকিয়ে বলল,
” পেশেন্টের জ্ঞান ফিরেছে। আপনারা চাইলে এখন ভেতরে যেতে পারেন তবে যেকোনো একজন। ”
কথাটি বলেই নার্স চলে গেল ডক্টরকে ডাকতে।
তিহান পেছনে ঘুরে শান্তর দিকে তাকিয়ে চোখের জল ফেলে বলল,
” শুনেছিস? তানহার জ্ঞান ফিরেছে। আমার তানহার জ্ঞান ফিরেছে। ”
” কাঁদিস না প্লিজ। এটা কি কাঁদার সময় পাগল এটা তো খুশির সময়। চোখের জল মুছে তানহার কাছে যা। কাল থেকে না ছটফট করছিলি তানহাকে দেখবি বলে! তাহলে এখন কেন দাঁড়িয়ে আছিস? ভেতরে গিয়ে প্রাণ ভরে তানহার সুস্থ মুখখানি দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেল, যা। ”
” হুম যাচ্ছি। আমি এখনি যাচ্ছি। আর তুই বাবা-মা’কে কল করে জানিয়ে দেয় তানহার জ্ঞান ফেরার খবরটি। বাবা-মা তো চিন্তা করছে। ”
” সেকথা তোকে ভাবতে হবে না, আমি এখনি বলে দিচ্ছি। তুই বরং দ্রুত তানহার কাছে যা। ”
শান্তর দিকে তাকিয়ে কৃতজ্ঞতা পূর্ণ হাসি দিয়ে কেবিনে ঢুকতে নিলেই পেছন থেকে কারো হুড়মুড়িয়ে আসার শব্দ শুনে তিহান পেছন ফিরে তাকাতেই তার চোখ দুটো যেন ছানাবড়া হয়ে যায়। সত্যি দেখছে নাকি মিথ্যে তিহান নিজেই বুঝতে পারছে না। মুহূর্তের মাঝে মাথা ঘুরে চোখের সামনে সব ঘোলাটে লাগতে শুরু করলো। একদিক থেকে মন খুশিতে ভরে উঠলেও অন্যদিক থেকে বিষন্নতা যেন তাকে ঝেঁকে ধরছে। রাগে, কষ্টে এবং খুশিতে তার সবকিছুই গুলিয়ে যাচ্ছে কিন্তু মুখ দিয়ে কিছুই বলতে পারছে না। সব শব্দ,বর্ণ, অক্ষর যেন আজ তার কাছে অচেনা। চিনার ইচ্ছে থাকলেও উপায় খুঁজে পাচ্ছে না। তাই কেবিনের সামনে থেকে দু’কদম পিছু হটে জায়গা করে দেয় সামনে থাকা অস্থিরতায় ভরা মানুষটিকে।

.
চুলের ভাজে ভালোবাসা মাখা চিরচেনা স্পর্শ পেয়ে চোখ মিটমিট করে তাকিয়ে সামনে থাকা মানুষটিকে দেখে তানহার বুকের মাঝে ধক করে উঠলো। হার্টবিট স্বাভাবিকের চেয়ে দশগুণ বেশি উঠানামা করতে লাগলো। কি বলবে কি করবে কিছুই যেন তার বোধগম্য হচ্ছে না। তবে এটা বুঝতে পারছে তার বুক ফেটে কান্না আসছে। যে কান্নাকে আজ সে কিছুতেই আড়াল করতে চায় না। চোখের জল ফেলে ক্যানেল ঢুকানো হাতটি আস্তে করে উঠিয়ে সামনের টোলে বসা মানুষটির গালে আলতো করে ছুঁয়ে কাঁপা গলায় বলল,
” অতল!”

অতল তানহার হাতটি নিজের গালের সাথে চেপে ধরে কান্নাভেজা কন্ঠে বলল,
” হুম বউ আমি… তোমার অতল। ”
” আমি সবাইকে অনেক বলেছি আমার অতল মারা যায়নি বেঁচে আছে। একদিন না একদিন ঠিক ফিরে আসবে আমার কাছে কিন্তু কেউ বিশ্বাস করেনি সবাই উল্টো আমাকে বুঝানোর চেষ্টা করেছে তুমি নেই এটা ভাবতে। কিন্তু আমি ভাবিনি, ভাবার চেষ্টাও করিনি। আমার মন যে বলতো তুমি আসবে তাহলে কেন বিশ্বাস করব? আচ্ছা, তুমি কি সত্যি আমার কাছে এসেছ নাকি কল্পনায়? আমি যে কল্পনায় তোমায় চাই না, আমার ভালোবাসায় তোমায় চাই। আমাকে ছেড়ে যেও না প্লিজ.. আমি তোমাকে ছাড়া যে বাঁচবনা। প্লিজ তুমি বাস্তবে আমার বুকে ফিরে এসো কল্পনায় নয়। ”
কাঁদতে কাঁদতে অতলের বুকে হাত রেখে কথাগুলো বলছিল তানহা। অতল সেই হাত ঠোঁটের কাছে নিয়ে চুমু খেয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলল,
” কল্পনায় নয় আমি যে তোমার সামনে সত্যি বসে আছি গো। দূরে থাকতে চেয়েও যে পারলাম না, সেই তোমার ভালোবাসার টানে ফিরে আসতেই হলো। কিন্তু তুমি… তুমি কি করে পারছিলে আমার থেকে তোমায় আলাদা করতে? বুক কাঁপেনি তোমার? মনে পড়েনি আমার কথা? ”
” তোমার থেকে নিজেকে আলাদা করবো না বলেই তো বিদায় নিতে চেয়েছিলাম সবার থেকে। তোমার কথা মনে পড়ে বলেই তো আজ আমি মৃত্যুর কোল থেকে ফিরে হসপিটালের বিছানায় শুয়ে। বেঁচে থাকার ইচ্ছে থাকলে যে এ মুহুর্তে অন্যের বিছানায় শুয়ে থাকতে হতো যেটা আমি কখনোই পারবো না। তাইতো এ পথ বেছে নিতে হয়েছিল আমায়। ”
” না-হয় সেই পথটাই বেছে নিতে তাও তো এক আকাশের নিচে থাকতে পারতাম। ”
” ভালোবাসি তোমায় কি করে পারব অন্যকে মেনে নিতে? ”
” আচ্ছা বাদ দাও সেই কথা। এখন বলো কিরকম লাগছে তোমার? শরীর কি খারাপ লাগছে? ”
” কথা এড়িয়ে যেও না অতল! আমার আজ এ পরিস্থিতি কেন, কেন অন্য পুরুষের সাথে নতুন বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার মতো সময় এসেছিল আমার জীবনে? কেন এতগুলো দিন তোমার থেকে আমায় আলাদা থাকতে হয়েছিল? কেন আমার সুখের সংসারে আগুন লেগেছিল? কেন অতল কেন? ”
” এসব কথা না’হয় পড়ে হবে! ”
” না, যা কথা আছে সব এখনি হবে। তুমি কিছুক্ষণ আগেই বলেছিলে আমার থেকে দূরে গিয়েও থাকতে পারোনি। এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে আমি কি এটাই ধরে নিব না যে, তুমি ইচ্ছে করেই আমার থেকে দূরে গিয়েছিলে? ”
” হুম। ”
” তারমানে সেদিন কোন এক্সিডেন্ট হয়নি, আর না তুমি সেই নদীতে পড়েছিলে তাই না? ”
“তুমি কিন্তু এখনো সুস্থ হওনি।ডক্টর বলে দিয়েছে এই অবস্থায় উত্তেজিত হওয়া তোমার জন্য খুবই ক্ষতিকর।”
“আমার কথার উত্তর দাও অতল।”
” হুম, সেদিনের সবকিছুই সাজানো ছিল। আর আমিই সাজিয়েছিলাম সবকিছু। ”
” যে ছেলেটি আমাকে তোমার মোবাইল দিয়েছিল, পুলিশকে সমস্ত ঘটনার বর্ণনা দিয়েছিল তারাও তোমার সাজানোর অংশ ছিল তাই না? ”
” হুম, পুরোটাই সাজানো। ”
” কিন্তু কেন এরকম করেছিলে তুমি? কোন পাপের শাস্তি দেবার জন্য? আর আমি কেমন আছি, বেঁচে আছি কি-না আর বেঁচে থাকলেও ঠিক কিভাবে বেঁচে আছি একবারও জানতে ইচ্ছে হয়নি তোমার? একটি বারও কি খোঁজ নেয়ার চেষ্টা করেছ তুমি? ”
” যদি বলি সর্বক্ষণ। ”
” মানে? ”
” হুম, আমাদের বাড়ির কেয়ারটেকার মিরাজ কাকা সবকিছু জানে। তাকে জানিয়েই আমি সবকিছু করেছি। আর তার মাধ্যমেই আমি তোমার প্রতিটি মুহূর্তের খবরাখবর জানতাম। ”
” মিরাজ কাকা সবকিছু জানে! আর আমাদের কিছুই বলেনি? এটা কি করে পারল মিরাজ কাকা? ”
” না পেরে যে উপায় নেই। আমি যে আসার সময় তাকে আমার মাথার দিব্যি দিয়ে এসেছিলাম। আর শুধু মিরাজ কাকাই না আমার ম্যানেজারও জানতো। ”
” ওহ্! ভালো…. তো মিরাজ কাকার থেকে তুমি আমার সব খোঁজ নিতে, তাহলে সে অবশ্যই তোমায় আমার আত্মহত্যার খবর দিয়েছে তাই তুমি এখানে ছুটে এসেছ কিন্তু সেকি বলেনি আমার বিয়ের কথা? ”
” বলেছে.. কিন্তু আমি দেখতে চেয়েছিলাম তুমি কি করো। আর এই পরীক্ষাটি করার জন্যই তো তোমার থেকে নিজেকে দূরে রাখা। ”
” কিন্তু কেন এরকমটা করেছিলে জানতে কি পারি? আমার ভালোবাসায় কি কোনো ফাঁক পেয়েছিলে তুমি যার জন্য এরকম করতে বাধ্য হলে! ”
” না গো ফাঁক পাইনি তবে…ভালোবাসার গভীরতা বুঝতে চেয়েছিলাম। ”
” কিন্তু কেন? ”
” সব কেন’র যে উত্তর হয় না তানহা। কিছু কিছু কেন… কেন তেই রাখা উত্তম। ”
” মানে? ”
” অন্তরালের কথা অন্তরালেই থাকা ভালো। ”
” আমাকে বুঝিয়ে বলবে প্লিজ? ”

” আজ এ মুহুর্তে এ বিষয়টি ক্লোজ হবে আর কোনোদিন ওপেন করার ইচ্ছা বা চেষ্টা মনে পোষন করো না। ”
” বুকে জড়িয়ে ধরবে আমায়? আজ রাতটা তোমার বুকে ঘুমিয়ে পার করতে চাই। অনেকগুলো রাত গিয়েছে নির্ঘুমে আর পারছি না। বড্ড ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। ”
” শুধু কি তুমি? আমিও যে ক্লান্ত। এতোগুলো দিনের ঘুম না’হয় আজ পুষিয়ে নেব। তোমায় এই বুকের মাঝে নিয়ে। ”
অতল কথাটি বলেই তানহাকে নিজের বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরে চোখ বুজে নোনা পানি ছেড়ে দিল। এদিকে তানহাও অতলের বুকে গুটিসুটি মেরে লেপ্টে রয়েছে। বিন্দুমাত্র নড়াচড়া করছে না। তবে অতলের মতো তানহাও চোখের জল ফেলে বলল,
” এ শান্তি পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ শান্তি। এ শান্তি থেকে নিজেকে আর বঞ্চিত করতে চাই না। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এ শান্তির আষ্ঠেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকতে চাই। ”
তানহার কথা শুনে অতল মুচকি হেসে তানহার চুলে চুমু খেয়ে তানহাকে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।
.

রাত পেরিয়ে ভোর হয়ে গিয়েছে। তিহান এখনো দাঁড়িয়ে আছে হসপিটালের বেলকনির পাশে। অতলকে কেবিনে দিয়ে যেভাবে এসে দাঁড়িয়েছিল এখনো ঠিক সেভাবেই দাঁড়িয়ে আছে। বিন্দুমাত্র পরিবর্তন হয়নি তার দাঁড়ানোর ভঙ্গিতে। রাত থেকে শান্ত হাজারো কথা বলে তিহানকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেছে কিন্তু শেষ অবধি পারেনি। রাত ঘুচিয়ে ভোরের আলো ফুটে গেলেও তিহান একটি প্রতিউত্তর দেয়নি শান্তর কথার। যার ফলে শান্ত ক্ষানিকটা ক্ষিপ্র হয়ে যায় তিহানের উপর। আর চলে যাওয়ার আগ মুহূর্তে তিহানকে বলে যায়, ” অবুঝকে বুঝানো যায় তবে যে বুঝদার তাকে হাজার চেষ্টা করলেও বুঝানো যায় না। ” বলেই শান্ত হনহন করে বেরিয়ে পড়ে হসপিটাল থেকে। সেই থেকে তিহান একা একা হসপিটালের বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে। আর মনে মনে ভাবছে,
” কি করে পারলো সে এরকম কাজ করতে? কেন সে বিয়েতে রাজি হলো? কেন পুরনো সম্পর্কগুলোকে নতুন করে পাবার আশা করেছিল? যে সম্পর্কের তালিকায় বর্তমানে তার কোনো অস্তিত্বই নেই ! দিব্যি তো গুছিয়ে নিয়েছিল সে নিজেকে তাহলে কেন বাবা-মায়ের কথায় দূর্বল হয়ে গিয়েছিল সে? ”
মনের মাঝে নানা কথা ভাবতে গিয়ে তিহান বুঝতে পারেনি তার পেছনে কেউ দাঁড়িয়ে আছে। কাঁধে কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে বোধ হলো কেউ পেছনে আছে। স্বাভাবিক ভঙ্গিতে পেছনে ফিরে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে বলল,
” অতল ভাইয়া,কি খবর তোমার? এখানে কেন তুমি? ”
” ভাইয়ের সাথে কথা বলতে এলাম। ”
” ওহ্! অবশ্য আমি এখনি তোমার কাছে যেতাম কিন্তু ঘুম থেকে উঠেছ নাকি সেটাই বুঝতে পারছিলাম না তাই দ্বিধা দ্বন্দ্বে ভুগছিলাম। ”
” ভাইয়ের কাছে যেতে আবার দ্বিধা দ্বন্দ্ব? ”
” তুমি যে এখন আর একা নেই ভাইয়া তাই আর কি…! তারউপর এতগুলো দিন পর ফিরে এসেছ তাই চাইছিলাম না তোমাদের বিরক্ত করি। ”
” আমার ফিরে আসা কি শুধু তানহার জন্যে? তোদের জন্য নয়? ”
” না ভাইয়া আমি সেরকম কিছু বলতে চাইনি। আমি বলতে চেয়েছিলাম… ”
” আচ্ছা বাদ দেয়। ”
” হুম, আচ্ছা ভাইয়া তুমি এতদিন কোথায় ছিলে? আর সেই রাতে কি বা হয়েছিল? ”
” সেসব কথা না’হয় একবারে বাবা-মায়ের সামনে বলব। একই ঘটনা জনে জনে বলার চেয়ে একবারে সবাইকে সামনে রেখে বলা ভালো। ”
” আচ্ছা ঠিক আছে। ”
” হুম, এবার আয় তো বুকে কতদিন হলো দু’ভাই কোলাকুলি করিনি। ”
” হা.. হা…এসো। ”
মিথ্যে হাসি হেসে তিহান অতলকে জড়িয়ে ধরল। অতলও মুচকি হাসি দিয়ে তিহানকে জড়িয়ে ধরে মনে মনে ভাবল,
” তানহার ভালোবাসা পরীক্ষা করার জন্য নয় দুটি মনের সুখের জন্যই সে চলে গিয়েছিল এতদূর। গঠন করেছিল মনের চারিদিকে প্রাচীরের ন্যায় দেয়াল। বিয়ের কথা শুনে বড্ড খুশিও হয়েছিল সে। তার চলে যাওয়া স্বার্থক হবে বলে। কোনোদিন সে এমুখো হবে না এও প্রতিজ্ঞা করেছিল কিন্তু তানহা মৃত্যুর পথে কথাটি শুনে আর নিজেকে আটকে রাখতে পারেনি যার ফলাফল আজ তিহান ভোগ করছে। কিন্তু তারই বা কি করার ছিল তানহাকে যে সে ভালোবাসে আর সেই তানহার এরকম বাজে খবর শুনে কি করেই বা সে হাত পা গুটিয়ে বসে থাকবে! আর তানহার এই বাজে ঘটনাটিও যে ছিল তাকে ঘিরে তাকে যে আসতে হতোই। যেই দুটি মনের সুখের জন্য নিজের সবটা ত্যাগ করে চলে গিয়েছিল সেই দুটি মন যখন এক নেই তাহলে দূরে গিয়ে লাভ কি? যে মেয়ে একবার ভালোবেসে তার শাস্তিরূপ তার কাছে ধরা দিয়ে সবকিছু ভুলে নতুন করে বাঁচবার স্বপ্ন দেখেছিল সেই মেয়েকে পুনঃরায় ভালোবাসার শাস্তি কি করে দেবে সে? তার তো অধিকার নেই অকারণে কাউকে কষ্ট দেয়ার। তবে হ্যাঁ এসব কিছুর মাঝে তিহান যে বড্ড কষ্ট পেয়েছে। হারানোর ব্যাথা যে আবারও জাগ্রত হয়েছে বুকের মাঝে। লুকিয়ে ফেলা সকল অনুভুতি নতুন করে মাথাচাড়া দেয়া যে অসম্ভব যন্ত্রণার সামিল। তবে এ যন্ত্রণা আর বয়ে বেড়াতে দেবে না অতল তিহানকে। এতদিন না’হয় কিছু জানতো না সে, এবার তো জানে তাহলে কিভাবে চুপ করে থাকবে সে? তারউপর আগের সম্পর্ক গুলোও তাজা হয়ে উঠেছে। এতদিন মন থেকে দুটি আত্মার মিল চাইলেও গতকাল রাত থেকে তার ভাবনার যেন আকাশ পাতাল তফাৎ সৃষ্টি হয়েছে। একবার যখন ফিরে এসেই পড়েছে সে আর চায় না পুরনো কিছু তাদের মাঝে দেয়াল হয়ে দাঁড়াক। মনের মাঝে তানহাকে ভুলে যাবার চেষ্টা থাকলেও নতুন করে আঁকড়ে ধরে বাঁচবার ইচ্ছে যে ঝঁকে ধরেছে তাকে। এই ইচ্ছের মাঝে তৃতীয় ব্যাক্তির পদার্পণ যাতে না হয় তার জন্য যা যা করার প্রয়োজন সব করবে অতল। সব….”
অতলের ভাবনার মাঝে তিহান অতলকে ঝাকি দিয়ে বলল,
” কি হয়েছে ভাইয়া? এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কি ভাবছ? কোনো সমস্যা হয়েছে কি? ”
অতল চোখ মুখ ঘুরিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে বলল,
.
.
চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here