অন্তরালের কথা পর্ব ৩২

#রিপোস্ট
#অন্তরালের_কথা
লেখা – জান্নাতুল ফেরদৌস মাটি
পর্ব – ৩২
.
.
” না না, কি সমস্যা হবে এমনিতেই আর কি…আচ্ছা সেকথা বাদ দেয় এবার চলতো দেখি বাড়ি যেতে হবে যে। ”
” বাড়ি যেতে হবে মানে? তান…ভাবি যে অসুস্থ, এ অবস্থায় কি ডক্টররা ভাবিকে রিলিজ দিবে? ”
” দিবে কি বলছিস অলরেডি রিলিজ দিয়ে দিয়েছে। তাইতো আমি এসেছি তোকে নিয়ে যেতে। ”
” ওহ্! আচ্ছা। তাহলে এখানে দাঁড়িয়ে থেকে কি করব চলো সবকিছু গুছিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হই। ”
” হুম চল। ”
.
গাড়ির সামনের সিটে বসে তিহান ড্রাইভ করছে। শুধু যে ড্রাইভই করছে তাও নয়। ড্রাইভ করার পাশাপাশি গাড়ির সামনে থাকা আয়নাটি দিয়ে বারংবার তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে দুটি ভালোবাসার মানুষের চাহনির মাঝে মুগ্ধতার পরিমাণ। একবার রাস্তার দিকে তো একবার আয়নার দিকে তাকাতে তাকাতেই তিহান চলে আসে বাড়ির ভেতর। গাড়ি থামিয়ে অতলের উদ্দেশ্যে বলল,
” ভাইয়া তুমি ভাবিকে নিয়ে ভেতরে যাও। আমি সবকিছু নিয়ে আসছি। ”
তিহানের কথায় সম্মতি জানিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে অতল তানহাকে ধরে আস্তে আস্তে যেতে লাগল বাড়ির ভেতরে।
বাড়িতে অতলের পা রাখতে দেরি কিন্তু তার বাবা মায়ের চোখে জল আসতে দেরি হয়নি। যে ছেলের আশা অনেক আগেই ছেড়ে দিয়েছিল সেই ছেলেকে এতদিন পর কাছে পেয়ে যেন গোটা পৃথিবী পেয়ে ফেলেছে তারা দু’জন। অতলের কাছে গিয়ে কপালে, গালে, বুকে হাতিয়ে হাতিয়ে চোখের জল ফেলে মরিয়ম বেগম বললেন,
” শান্তর কাছ থেকে তোর ফেরার কথা শুনে তোকে এক ঝলক দেখব বলে চাতক পাখির ন্যায় ছটফট করে যাচ্ছি রাত থেকে। কিন্তু তোর বাবা যেতে দেয়নি হসপিটালে দু’জনের বেশি এলাও নেই বলে। রাতটা যে কি করে পার করেছি এ কেবল আমি আর আমার আল্লাহই জানে।কেমন আছিস বাবা? কোথায় ছিলি এতগুলো দিন? মায়ের কথা কি একটি বারও মনে পড়ে নি? আর তানহা..সে যে তোর পথ চেয়ে বসে থাকবে জানতি না? কি করে পেরেছিস এতগুলো দিন নিজেকে দূরে রাখতে আমাদের থেকে? আর এ কি হাল করেছিস নিজের শরীরের? পুরো দেখি অর্ধেক হয়ে গিয়েছিস। ”
” আরে আরে থামো। একদমে সবকথা বলে কি অসুস্থ হয়ে পড়বে নাকি? আমিতো তোমার সামনেই আছি ধীরস্থিরে কথা বলো। ”
পেছন থেকে আনিস খন্দকার এসে চোখের জল মুছে কাঁপা গলায় বললেন,
” এই দেড়টি বছর কোথায় ছিলি তুই? কার কাছে ছিলি? আর কেনই বা ছিলি? ”
” বাবা! তোমার কি মনে হচ্ছে আমি ইচ্ছে করে তোমাদের থেকে দূরে ছিলাম? ”
অতলের কথটি শুনে তানহা অবাক হয়ে গেল! মুখ খুলে অতলের উদ্দেশ্যে কিছু বলতে যাবে সেসময় মিরাজ কাকার দিকে চোখ পড়তেই তানহা দেখে মিরাজ কাকা তাকে ইশারা দিয়ে কিছু একটা বলতে না করছে। প্রায় ক্ষানিকটা সময় মিরাজ কাকার দিকে তাকিয়ে ব্যাপারটি বুঝতে পেরে চোখ নামিয়ে মুখ বুজে দাঁড়িয়ে রইলো অতলের পাশে তানহা।
এদিকে আনিস খন্দকার বললেন,
” তাহলে… তাহলে কোথায় ছিলি তুই? ”
” আমি শেষ যেদিন ঘর থেকে বেরিয়ে ছিলাম সেদিন আমার একটি এক্সিডেন্ট হয় যার ফলে আমি ব্রিজ থেকে পানিতে গাড়ির ধাক্কা খেয়ে পড়ে যাই এতটুকুই আমার মনে আছে। তারপরের কিছুই আমার মনে ছিল না। আর মনে করার উপায়ও ছিল না। কেননা আমি আমার স্মৃতি শক্তি হারিয়ে ফেলেছিলাম। তবে গতকাল আমি আমার পুরনো সব কথা মনে করতে পারি। তারপর যারা আমায় মাঝ নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় পেয়েছিল তাদের কাছ থেকে শুনতে পাই তারা আমায় নদী থেকে পেয়েছে আর আমি গত দেড়বছর যাবৎ তাদের কাছেই আছি। তারপর তাদের মোবাইল থেকেই বাড়ির নাম্বারে আমি কল দেই কিন্তু তখন ঘরে মিরাজ কাকা ছাড়া কেউ ছিল না। আর তার কাছ থেকেই আমি জানতে পারি তানহার এই অবস্থার কথা। তারপর কাকার থেকে হসপিটালের নাম জেনে সোজা সেখানেই চলে গেলাম। আর এখন আমি তোমাদের সামনে। এখনো কি মনে হয় বাবা আমি ইচ্ছে করে তোমাদের থেকে দূরে ছিলাম? ”
” না রে বাবা না, মোটেও না। তুই ফিরে এসেছিস এটাই যে আমার সাত কপালের ভাগ্য। কি হয়েছিল, না হয়েছিল সেসব জানার কোন প্রয়োজন নেই আমার। ”
” জানি বাবা। ”
কিন্তু মিরাজ তো তোর ফোন দেয়ার কথা বলেনি আমাদের! কি মিরাজ বলেছ? ”
মিরাজ কাকা সামনে আসতে আসতে বলল,
” আজ্ঞে না ভাই বলা হয়নি। সেসময় সবার চিন্তা তানহা মায়ের অসুস্থতা সবমিলিয়ে আসলে ভুলে গিয়েছিলাম। ”
” হুম, তাও ঠিক। আচ্ছা অতল, বাবা তুই তানহাকে নিয়ে ঘরে যা। মেয়েটা এমনি অসুস্থ তারউপর তোকেও অসুস্থ অসুস্থ দেখাচ্ছে। ঘরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে দু’জন বিশ্রাম নেয়। দেখবি শরীরটা ভালো লাগবে। ”
” হুম বাবা। আমিও তাই বলতে চেয়েছিলাম। ”
মরিয়ম বেগম কান্নাভেজা কন্ঠে বললেন,
” ছেলেটাকে এতদিন পর দেখলাম একটু কথা বলব না? ”
আনিস খন্দকার বললেন,
” বলবে না কেন? অবশ্যই বলবে তবে কিছু সময় পর। ওদের দু’জনের শারীরিক অবস্থা দেখে বুঝতে পারছ না দু’জনের বিশ্রামের প্রয়োজন? ”
” হুম। কি করব বলো? মন যে মানে না। থাক বাবা, যা তোরা ভেতরে গিয়ে বিশ্রাম কর। ”
” মন খারাপ করো না মা শরীরটা ভালো লাগলেই ছুটে তোমার কাছে চলে আসব।”
” হ্যাঁ বাবা, তাই করিস। কিছুটা ভালো লাগলে মায়ের কাছে চলে আসিস। ”
” আচ্ছা মা, এখন যাই। ”
” যা বাবা, যা। ”
অতল স্মিত হেসে তানহাকে ধরে এগুতে লাগলো নিজেদের ঘরের দিকে।
এতগুলো দিন পর নিজ ঘরে পা রেখে এক প্রশান্তিময় নিঃশ্বাস নিয়ে ঘরের দরজা লক করতেই তানহা পেছন থেকে ভ্রু কুচকে বলল,

” তুমিতো মিথ্যে বলো না অতল! তাহলে আজ কেন এতগুলো মিথ্যে বললে? ”
” তোমাকে না কাল বলেছিলাম কিছু কিছু জিনিস গোপন থাকা ভালো। তাহলে কেন আবার খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে প্রশ্ন করছ? ”
খুঁচিয়েছি কোথায়? আমিতো কেবল জিজ্ঞেস করলাম। ”
” গোসল কি একা করতে পারবে নাকি আমার করিয়ে দিতে হবে? তুমিতো আবার অসুস্থ হলে আমার হাতে ছাড়া গোসল করতে পারো না। ”
অতলের কথা ঘোরানোর ধরন দেখে তানহা বুঝে ফেলল অতল আর এ বিষয়ে কথা বলতে চাচ্ছে না। তাই সে নিজেও কথা না বাড়িয়ে অতলের বুকে মাথা রেখে জড়িয়ে ধরে বলল,
” আমি জানি না কেন তুমি চলে গিয়েছিলে! আমার কোন ভুলের শাস্তি দিতে চাচ্ছিলে তাও জানি না। আর জানার আশা রাখছিও না, যদি কোন একদিন তোমার মনে হয় আমায় বলা প্রয়োজন সেদিনই না-হয় শুনব। তবে আজ এই মুহুর্তের পর থেকে নিজেকে যথেষ্ট সাবধানে রাখব। যাতে করে তোমার মনে আমার ভালোবাসা নিয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহ না জমে থাকে। তোমায় যে বড্ড ভালোবাসি। একবার তোমাকে হারাতে বসেছিলাম কিন্তু আর যে হারাতে পারবো না। ”
” হারাতে যদি না-ই পারো তবে চুপটি করে এই বুকে লেপ্টে দাঁড়িয়ে থাকো তো।”
” তুমি আমাকে ছেড়ে আর কোত্থাও যাবে না তো? ”
নোনা জলে ভরা টলটলে চোখে কাঁপা গলায় বলা তানহার কথাটি শুনে অতল তানহার মুখের উপর এসে থাকা চুলগুলো কানের পেছনে গুঁজতে গুঁজতে বলল,
” কোথায় যাবো পাগলি? তোমরা ছাড়া, এই ঘর ছাড়া আমার কি আর কোত্থাও যাওয়ার জায়গা আছে? ”
” ভীষণ ভালোবাসি তোমায় বিশ্বাস করো।”
” সে-তো আমিও জানি। আর বউ এর কাজই তো বরকে ভালোবাসা তাই না?”
” হুম। কিন্তু….”
” কোন কিন্তু না এবার মুখে তালা লাগিয়ে চোখ বুজে অনুভব করোতো আমাদের ভালোবাসার পরিমাপ। ”
তানহাও কথা না বাড়িয়ে কাচুমাচু হয়ে লেপ্টে থাকে অতলের বাহুডোরে। কতগুলো দিন পর যে এই শান্তি পেয়েছে, সহজে কি এই মুহূর্ত হাত ছাড়া করা যায়!
.

অতল ক্লান্তিমাখা মুখ নিয়ে শার্টের বোতাম খুলতে খুলতে সোফায় হেলান দিয়ে বসে মা মরিয়ম বেগম ও তিহানের উদ্দেশ্যে বলল,
” আজ ১৭ দিন হলো তোমাদের মাঝে ফিরে এসেছি। এই ১৭ দিনের মাঝে ঠিক কতক্ষণ তোমাদের সাথে সময় কাটিয়েছি বলতে পারো? এভাবে আর কতদিন বলতে পারো মা? আমারও তো জীবন আছে, ব্যবসা আছে সেগুলো ফেলে কতদিন আমি এখানে পড়ে থাকব? গত ১৫ দিন যাবৎ নাহলেও ১০ থেকে ১২ টা মেয়ে দেখে ফেলেছি তারপরও তোমার ছোট ছেলের পাত্তাই নেই। আমার কি খুব প্রয়োজন ওকে বিয়ে করাবার শুধুমাত্র বাবার কথা রক্ষার্থেই তো এই ছুটোছুটি করছি। ”
অতলের কথার মাঝে তিহান টিভির দিকে তাকিয়ে রিমোট দিয়ে চ্যানেল পরিবর্তন করতে করতে বলল,
” আমার পাত্তা পাবার আশায় কি মেয়ে দেখতে গিয়েছিলে ভাইয়া? আমি কি একবারও বলেছি আমি বিয়ে করবো? ”
আনিস খন্দকার পাশ থেকে বললেন,
” তুই বলিস নিই তবে আমি বলেছি। তোর অভিভাবক হিসেবে সেই অধিকারটুকু অবশ্যই আছে আমার। তাই না? ”
” আমি তো না করিনি যে তোমার অধিকার নেই। তবে আমি মতামতও দিই নিই। ”
” আমি তোর থেকে মতামত জিজ্ঞেসও করিনি। যা মতামত নেয়ার আগেই নিয়ে নিয়েছি। ”
” এটা কি কোন যুক্তিসঙ্গত কথা বাবা? ”
” আমিতো একটি কথা বুঝতে পারছি না আগে যদি এ বিষয়ে রাজি হতে পারিস তবে এখন রাজি হতে সমস্যা কোথায়? ”
এই মুহূর্তে তিহান কি উত্তর দিবে ভেবে পাচ্ছে না। লজ্জা যেন মাথা কাটা যাচ্ছে তার। তার ভাইয়ের সামনেই তার ভাইয়ের বউকে বিয়ে করার উদ্দেশ্যে রাজি হওয়ার মতো কথাটা তার বাবা কি করে বলতে পারলো তিহান ভেবে কুলাতে পারছে না। এই বিষয়টি নিয়ে যে তানহাও বেশ অস্বস্তিবোধ করছে সেটি বুঝতেও তিহানের সমস্যা হলো না। তাই এ বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে সবকিছু স্বাভাবিক করতে তিহান সোফা ছেড়ে উঠে বেরিয়ে যেতে যেতে বলল,
” তোমাদের যা ভালো মনে হয় করো। তোমাদের সিদ্ধান্তই আমার সিদ্ধান্ত। কিন্তু… আমি কোন মেয়ে টেয়ে দেখতে যাবো না। তোমাদের যাকে ভালো মনে হয় তাকেই সিলেক্ট করে ফেলো আমার কোন নিষেধ নেই। ”
বলেই তিহান দ্রুত ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গেল।
এদিকে ঘরে উপস্থিত থাকা সকলেই হাসি মুখ করে আলহামদুলিল্লাহ বলল। আর আনিস খন্দকার অতলের কাছে গিয়ে বলল,
” বাবা অতল! গতকাল রাতের দেখা মেয়েটিকে আমার বেশ লেগেছে। মেয়েটির কথা শুনে কেন যেন মনে হয়েছে এ মেয়েটিই আমার তিহানের জন্য পারফেক্ট। এখন তুই কি বলিস? ”
” আমারও বেশ লেগেছে। এই অবধি যতগুলো মেয়ে দেখেছি তাদের মধ্যে আমার মনে হয় ওই মেয়েটাই বেস্ট। তিহানের থেকে বয়সও কম, মান্যগণ্যও করবে। তারউপর আরেকটি বিষয়ও কিন্তু আছে বাবা। ”
” কোন বিষয়? ”
” এর আগে যতগুলো মেয়ে দেখেছি সবগুলোতে কিন্তু তিহানের অনুপস্থিতিটা আমাদের কথা বাড়াতে আটকে দিয়েছে। তবে এই একটি পরিবার যারা তোমার পরিচিত বলে তিহানকে না দেখেই বিয়ের পাকা কথা বলতে বসেছিল। আর এটাও বলেছিল তিহানকে তাদের দেখার প্রয়োজন নেই একেবারে বিয়েতে দেখলেই হবে। এটা আমাদের জন্য কত বড় প্লাস পয়েন্ট ভাবতে পারছ? ”
” হুম সবই ভেবেছি আমি। তুই এক কাজ কর তাদের ফোন করে আমাদের বাসায় একবার ঘুরে যেতে বল। সেই ফাঁকে নাহয় বিয়ের ডেটও ফিক্সড করে ফেলব। ”
” আচ্ছা বাবা, আমি কল করে সব জানিয়ে দিচ্ছি। ”
.
” নিদ্রার আম্মু! এই নিদ্রার আম্মু! কোথায় গেলে? ”
ফিরোজ আলম হাতে থাকা ব্যাগটি টেবিলের উপর রাখতে রাখতে তার স্ত্রী আইরিন বেগমকে ডাকছিলেন। আইরিন বেগম হাতের কাজ ফেলে দ্রুত ড্রয়িং রুমে এসে তড়িঘড়ি করে বলল,
” কি ব্যাপার? তুমি এই দুপুরে? অফিসে কি কোন প্রবলেম হয়েছে? তোমার শরীর কি খারাপ লাগছে? কি হয়েছে টা কি? ”
” আরে আরে, তুমি এতো উত্তেজিত হচ্ছো কেন? আমি একদম ঠিক আছি আর অফিসেও কিছু হয়নি। ”
” তাহলে… তাহলে তুমি এ অসময়ে অফিস ছেড়ে বাড়িতে কি করছ? ”
” সমস্যা হলেই কি বাড়িতে আসা যায়? খুশিতে আসা যায় না? ”
” কি বলছ তুমি? আমিতো কিছুই বুঝতে পারছি না। ”
” আরে আমাদের নিদ্রার বিয়ে ঠিক হয়ে গেল বলে। ”
” কি বলছ কি তুমি? ”
” হ্যাঁ, আমি একদম ঠিকই বলছি। ঘন্টা দুয়েক আগে তিহানদের বাসা থেকে তিহানের বড় ভাই ফোন দিয়েছিল। বলেছে কালই যেন একবার তাদের বাসায় তোমায় নিয়ে ঘুরে আসি। আর তার কথার ধরন দেখে মনে হলো তারা হয়তো কালই বিয়ের পাকা কথা বলবে। ”
” কি বলছ তুমি? আমার যে কি ভালো লাগছে। খুব চিন্তায় ছিলাম মেয়েটিকে নিয়ে, অল্প বয়স কিসের থেকে কি ভুল করে ফেলে! ”
” হুম নিদ্রার আম্মু, আমিও তো এই একই চিন্তায় ছিলাম। দিনকালের যে অবস্থা ভুল পথে পা বাড়াতে বেশি সময় লাগে না। এখন ভালো ভালো মেয়েটাকে তিহানের মতো একজন সুপাত্রের হাতে তুলে দিতে পারলেই আলহামদুলিল্লাহ। ”
ফিরোজ আলম ও তার স্ত্রী আইরিন বেগমের কথার মাঝে তাদের একমাত্র মেয়ে নিদ্রা এসে গাল ফুলিয়ে বলল,
” বাবা! মা! আমি কি খুব বেশি বোঝা হয়ে গিয়েছি তোমাদের কাছে? ”
ফিরোজ আলম হাসি মুখ করে আদরের মেয়ে নিদ্রার কাছে গিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,
” তোর কি আদৌ মনে হয় তুই আমাদের কাছে বোঝা? তোর বাবা-মা’কে কি তুই চিনিস না? ”
” তাহলে কেন তোমরা বিয়ে বিয়ে করছ? আমার এই বুকটাতে কষ্ট হয় বুঝো না? আমার ফ্রেন্ডদের কারো কি বিয়ে হয়েছে বলো? তাহলে আমার কেন হবে? কেবলই তো ইন্টার পাশ করলাম এখনো ভার্সিটিতেও ভর্তি হইনি আর তোমরা এখনি বিয়ের কথা বলছ? ”
নিদ্রার কথা শুনে ফিরোজ আলম নিদ্রাকে একহাত দিয়ে কাঁধে জড়িয়ে ধরে সোফায় বসতে বসতে বললেন,
.
.
চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here