অভিমানে তুমি পর্ব ১১+১২

#অভিমানে_তুমি (সিজন ২)
#ফারিয়া_আফরিন_ঐশী
#পর্বঃ১১

ব্যাগের মধ্যে প্রেগনেন্সি কিট গুলো দেখে স্পর্শ ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করল–কবে টেস্ট করেছো??
নিদ্রিতা হাত দিয়ে চোখের পানি মুছে বলল–কাল আর আজ সকালে!!!
স্পর্শ –এরইমধ্যে এতবার টেস্ট করেছো??এত কিট কে কিনে দিল তোমায়??
নিদ্রিতা ফুপিয়ে উঠে বলে–আমি আর সামিরা ফার্মেসি থেকে কিনেছি!!!
স্পর্শ –কিটের দরকার ছিল আমাকে বললেই হতো!!!নিজে বা বান্ধবী যাওয়ার তো দরকার ছিল না!!!
নিদ্রিতা—তুমি কিট নিয়েই পড়ে আছো!!!এদিকে—
স্পর্শ –এতো কাঁদার কি আছে বুঝলাম না!!!তোমার কান্না দেখে মনে হচ্ছে তুমি অবিবাহিত অবস্থায় কনসিভ করেছো!!!আজব!!!
নিদ্রিতা হালকা রেগে বলে—বিয়ে করেছি কেউ তো জানে না!!এখন কি হবে!!!!আমি তো কিছুদিনের মধ্যেই মোটা হয়ে যাবো!!তখন!!!
স্পর্শ এবার না পেরে হেসেই দিলো!!!নিদ্রিতা ভ্রু কুঁচক ঠোঁট ফুলিয়ে বলে–এতো সিরিয়াস আলোচনার মধ্যে হাসির কি হলো???
স্পর্শ ব্যাগটা সাইডের বেঞ্চ এ রেখে বলল–হাসবো না তো কি!!!তুমি কনসিভ করেছো এখন কি তোমায় তোমার বাপের বাড়ি বসিয়ে রাখব নাকি!!!
নিদ্রিতা—বাপী যদি না মানে???
স্পর্শ নিদ্রিতাকে কাছে টেনে কোমড় জড়িয়ে ধরে বলল–না মানার কি আছে!!আমি কি ছেলে খারাপ??
আর যদি নিতান্তই না মানে তাহলে তোমায় তুলে নিয়ে আসবো!!!
নিদ্রিতা ঠোঁট ফুলিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে!!!
স্পর্শ হালকা করে দেখে নিয়ে বলে–টেস্ট করাতে হবে!!কাল হসপিটাল নিয়ে যাব!!আর এতো টেনশনের কিছু নাই!!!
নিদ্রিতা তাও ঠোঁট ফুলিয়ে আছে কোনো কথাই বলছে না!!!
স্পর্শ –কথা বলবে না আমার সাথে??আচ্ছা বলো না!!আমি আমার বেবির সাথে কথা বলে নিবো!!!
নিদ্রিতা ভ্রু কুঁচক বলে–ও কি কথা বলতে পারে নাকি!!!
স্পর্শ –পারবে পারবে!!!
নিদ্রিতা–তুমি কবে যাবে বাপীর সাথে কথা বলতে??
স্পর্শ –কাল যাবো বিকালে!!!বি রেডি!!ঝামেলা করলেই কালই তুলে নিয়ে আসবো তোমায়!!
নিদ্রিতা মুখ ফুলিয়ে বলে–বাজে লোক!!!
স্পর্শ –হুমম বাজেই ভালো!!কান্নাকাটি করে আমার আনন্দই মাটি করে দিল!!এখন চুপ করে থাকবা।।আমার বেবিকে আদর করব!!
নিদ্রিতা–কেমনে??
স্পর্শ ভালো করে চারপাশে দেখে নিল!!চারপাশ খালি দেখে নিদ্রিতাকে আরো কাছে নিয়ে নিদ্রিতার ঠোঁট আকড়ে নিল!!!
বিয়ের প্রায় ১ বছরে স্পর্শের এমন ছোঁয়াতে নিদ্রিতা অভ্যস্ত!!সে বাধা দিলেও স্পর্শ মানবে না তা সে খুব ভালো করেই জানে!!!
নিদ্রিতাকে ছেড়ে দিয়ে স্পর্শ বলল–আমাদের বিয়ের ১ বছর হতে আরও ১৪ দিন বাকি!!তার আগে তোমার জন্মদিনও পড়েছে!!
নিদ্রিতা–হুমম!!
স্পর্শ –চলো বাড়ি পৌঁছে দি!!আর কোনো রকম খারাপ লাগলেই আমাকে ফোন করবে!!আর কিছুর দরকার হলেও জানাবে!!!
নিদ্রিতা–ওকে!!!
স্পর্শ আর নিদ্রিতা গাড়িতে এসে বসে।।৫ মিনিটের মধ্যে নিদ্রিতার বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থামায়!!নিদ্রিতা নামার আগে বলে–কাল আসছ তো??
স্পর্শ নিদ্রিতার কপালে চুমু দিয়ে বলে–আসব!!চিন্তা করো না!!
নিদ্রিতা এবার ডোর খুলতে গিয়েও না খুলে,,স্পর্শের কাছে এসে স্পর্শ গালে চুমু দিয়ে হেসে বলল–আল্লাহ হাফেজ!!
স্পর্শ হেসে বলল–আল্লাহ হাফেজ!!
নিদ্রিতা নেমে বাড়ির ভেতর চলে গেল!!
স্পর্শ গাড়ি ঘুরিয়ে বাড়ির পথে রওনা হলো!!!
স্পর্শ —শিট!!!! নিদুর এখনো বয়স হয়নি!!ও ভুল করতেই পারে!!বাট আমি কি করলাম!!!এতো ছোট এজে বাচ্চা হলে নিদুর ক্ষতি হতে পারে!!!ধ্যাত!!!!১ম বার নয় ঘোরের মধ্যে ছিল বাট তারপর!!! আমার উচিত ছিল সাবধানে থাকা!!!ধূরর!!!
যা হবার হয়েছে!!কালই নিদুর বাড়িতে কথা বলবো!!!না রাজি হলে জোর করে নিয়ে আসবো!!তাও আমি নিদুকে চাই!!!
এসব ভাবনার মাঝেই স্পর্শ নিজের বাড়ি পৌঁছে গেল!!!গাড়ি থেকে নামার সময় দেখল সেই কিটের ব্যাগটা!!
স্পর্শ হালকা হেসে কিটের ব্যাগটা হাতে নিয়ে বলল–পিচ্চি পাগলী আমার!!!
তারপর ব্যাগটা নিয়ে বাড়ির ভেতরে চলে গেল!!
ব্যাগটা আলমারিতে রেখে ফ্রেস হয়ে বেডে বসে নিদ্রিতার দেওয়া টেডিবিয়ার কে কাছে টেনে জড়িয়ে ধরে শুয়ে বলল–তুই আর বিরক্ত হোস না!!কয়েকদিনের মধ্যেই আমার নিদু চলে আসবে তারপর তোর ছুটি!!!
নিদ্রিতার কথা বলেই ফোন হাতে নিয়ে ডায়াল করল নিদ্রিতার নম্বরে!!
নিদ্রিতা রিসিভ করতেই স্পর্শ বলল –শরীর কেমন লাগছে এখন??
নিদ্রিতা–ভালোই!!তবে জানো আমার মনে হচ্ছে বেবি কিক করছে!!!
স্পর্শ এবার জোরে হেসে দিল!!!তারপর বলল–তাই বুঝি!!!
নিদ্রিতা–হাসার কিছুই না!!সত্যি!!!
স্পর্শ আবারো হেসে বলল–,হুমম,,হুমম!!অবশ্যই সত্যি!! আচ্ছা শোনো তুমি রেস্ট নাও আমিও একটু রেস্ট নি!!
নিদ্রিতা–আচ্ছা!! রাতে ফোন করবে তো??
স্পর্শ –করবো পাখি!!!
তারপর স্পর্শ ফোন কেটে!!জোরে হেসে বলল–হায়রে পিচ্চি!!!ও নাকি মা হবে!!আমারই দোষ সব!!!
স্পর্শ ফোনটা রেখে টেডিবিয়ারকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ল!!
পরদিন বিকালে,,,
স্পর্শ রেডি হয়ে হচ্ছে!!! এরই মধ্যে নিদ্রিতার ফোন!!
স্পর্শ –হুমম,,নিদু!!
নিদ্রিতা–কখন আসছ তুমি??
স্পর্শ –রেডি হচ্ছি!!তবে নিদু আজ কিন্তুু তুমি টেস্ট টা করালে পারতে!!!জেদ করে গেলেই না!!
নিদ্রিতা–কাল যাবো!!!তুমি দ্রুত চলে এসো!!
স্পর্শ –আসছি!!আর লাফালাফি কম কর!!বেবির ক্ষতি হতে পারে!!
নিদ্রিতা–ওকে!!!
স্পর্শ রেডি হয়ে বেরিয়ে যায়!!
নিদ্রিতা অপেক্ষা করতে থাকে!!
স্পর্শ ২৫/২৬ মিনিটের মধ্যেই নিদ্রিতার বাড়িতে পৌঁছে যায়।।বেল বাজাতেই একজন মেইড দরজা খুলে দেয়!!বেলের আওয়াজ শুনে নিদ্রিতা নিজেও নিচে চলে আসে,, স্পর্শ ভেতরে এসে মিষ্টির প্যাকেট গুলো নিদ্রিতার হাতে দিয়ে বলে ডাকো মা – বাবাকে!!!নিদ্রিতা হাসি মুখে লতা কে বলে–ডেক আন তো বাপী আর মাকে!!তারপর নিদ্রিতা মিষ্টির প্যাকেট গুলো টেবিলে রেখে সোফার এক কোণে এসে দাঁড়ালো!!!
নিদ্রিতার বাবা-মা নামার পথেই সোফাতে বসে থাকা স্পর্শকে দেখে ঘামতে শুরু করে!!কারণ পুরোপুরি প্রমাণ এখনো জোগাড় হয়নি!!
নিদ্রিতা তাদের নামতে দেখে বলে–বাপী এসো!!
নিদ্রিতার ডাক শুনে স্পর্শ ও তাকায়, তাকনো মাত্রই চোখ লাল হয়ে যায়!!রাগে ফুলতে শুরু করে!!!অতিরিক্ত ফর্সা হওয়ার জন্য কপালের রগ গুলো ফুলে আছে তা ভালোই বোঝা যাচ্ছে!! আকাশ আর নিশিতা ভয়ে ঘামতে শুরু করেছে কারণ এতো দিনে স্পর্শের রাগ সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা তারা পেয়েছে!!!
আকাশ ধীর পায়ে নিচে নেমে আসতেই দাঁড়িয়ে পড়ে স্পর্শ!! নিদ্রিতা স্পর্শকে উদ্দেশ্য করে বলে–আমার বাবা —
নিদ্রিতা কথা শেষ করার আগেই স্পর্শ দাঁতে দাঁত চেপে বলে–জানি!!খুনি লোকটাকে ভালো করেই চিনি!!!
নিদ্রিতা ভ্রু কুঁচক বলে–কি???কিসব যা তা বলছ??
স্পর্শ এবার চেঁচিয়ে বলে–ঠিকই বলেছি!!!খুনি এই লোক!!!
নিদ্রিতা স্পর্শকে এতো রাগতে দেখে ভয় পেয়ে যায়!!!
স্পর্শ এবার আকাশের জামার কলার চেপে ধরে!!নিদ্রিতা দ্রুত স্পর্শের হাত ধরে বলে–ছাড়ো বাপীকে!! কি করছ তুমি??
তামান্না(নিদ্রিতা এর মায়ের নাম বদল করা হলো)।।
তামান্না যেন কোনো কিছু বোধে পাচ্ছে না!!!কেমন হতবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে!!!
স্পর্শ নিজের যেন হিতাহিত জ্ঞান হারিয়েছে!!! সে আকাশের কলার ধরে আকাশকে ঘুষি মারতে হাত ওঠাতেই নিদ্রিতা হাত চেপে ধরেছে!!!
স্পর্শ নিদ্রিতা কে ধাক্কা দিয়ে আবারও আকাশের কলার চেপে বলে—খুন করে ফেলবো তোকে!!
নিদ্রিতা ধাক্কা খেয়ে বেশ ব্যাথা পায়!!!কোনোমতে উঠে দৌড়ে বলে আবারো স্পর্শের হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করে বলে–ছাড়ো আমার বাপীকে!!আমার বাপী কোনো খুন করেনি(কান্নামিশ্রিত কন্ঠে)।।
স্পর্শ এবার আকাশকে জোরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় আর আকাশ গিয়ে সিড়ির সাথে।।
স্পর্শ তারপর বলে–তোর ভাগ্য ভালো আজ আমি গান নিয়ে আসিনি!!তবে ভাবিস না তুই বাঁচবি!!বি রেডি!!
আকাশের আবার বুকে ব্যাথা শুরু হয়েছে!! তামান্না হুস পেয়ে দৌড়ে স্বামীকে ধরে!!স্পর্শ বেরিয়ে যেতে নিলেই কান্নারত নিদ্রিতা এসে স্পর্শের হাত চেপে ধরে।।তারপর বলে–তুমি কেন আমার বাপীর সাথে এমন করলে??
স্পর্শ হাত ঝাড়া দিয়ে বলে–এটা তো খুবই কম!!খুন করবো ওকে আমি!!
নিদ্রিতা আবারো স্পর্শের পথ আটকে বলে–এমন কেন করছ??এমন করলে বাপী তো রাজি হবে না!!!
স্পর্শ এবার নিদ্রিতাকে চেপে ধরে বলে–তোর মনে হয় তোর মতো খুনীর মেয়েকে আমি আর আপন করবো!!তোর বাবাকে রেডি করে রাখিস স্পর্শ ওকে খুন করবেই!!!বলেই গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যায়!!!!নিদ্রিতা দৌড়ে ভেতরে এসে দেখে তার বাবার নাক মুখ দিয়ে রক্ত ঝড়ছে!!!
নিদ্রিতা দ্রুত হসপিটালে ফোন করে!!
স্পর্শ গাড়ি ড্রাইভ করতে করতে ফোন করে!!
ফোন রিসিভ হতেই ফোনের অপরপাশের ব্যক্তিকে বলে–সেটআপ রেডি করো!!আকাশকে পেয়ে গিয়েছি!!!কঠিন মৃত্যু হবে ওর।।আর আকাশকে তুলে আনো ফাস্ট!!!!
তারপর ফোন কেটে বলে–আমার মায়ের খুনীকে ছাড়ব নাহ!!!
অপরদিকে,
নিদ্রিতা আর তামান্না দ্রুত আকাশকে হসপিটালে নিয়ে যায়!!!
আকাশের মাইল্ড অ্যাটাক হয়েছে!!!
নিদ্রিতা আর তামান্না কেঁদেই যাচ্ছে!!!
ডাক্তার জানিয়েছেন ৭২ ঘন্টার আগে কিছুই বলা যাচ্ছে না!!
নিদ্রিতা স্পর্শকে ফোন করে কিন্তুু স্পর্শ ফোন পিক করে না!!
হাসপাতালে স্পর্শের লোক এসে স্পর্শকে জানায় আকাশের অবস্থা,, তখন স্পর্শ বলে–আগে সুস্হ করার ব্যবস্হা করো!!রিলিজের দিনই ওকে ধরবে!!!মেক সিউর যেন পালাতে না পারে!!!আর হ্যাঁ আকাশকে জীবিত চাই আমি!!!
নিদ্রিতা এরমাঝে একবার স্পর্শের বাড়ি ছুটে গিয়েছিল!!
স্পর্শ তখন একনাগাড়ে ড্রিংক করছে!!নিদ্রিতা ছুটে গিয়ে স্পর্শের হাত ধরে বলে–কেন এমন করছ??আমার বাবা খুন করার মতো মানুষ না!!!আর যদি ভুল বোঝাবুঝি হয়েও থাকে তা বাবার সাথে কথা বলে মিটিয়ে নেও প্লিজ!!
এবার স্পর্শের হাত নিজের পেটে ধরে বলে–প্লিজ স্পর্শ!!!
কিন্তুু স্পর্শ প্রতিশোধের নেশা আর সায়ানের প্রোরোচনাতে এতই মগ্ন যে নিদ্রিতার কথা তার মাথাতেই আসছে না!!
নিদ্রিতার থেকে জোর করে হাত ছাড়িয়ে ঘর থেকে বের করে দেয় নিদ্রিতাকে আর বলে–কখনো তোর মুখ দেখতে চাই না!!
তারপর দরজা বন্ধ করে দেয়!!
বাইরে একে তো ঠান্ডা তারওপর ঘোর বর্ষা!!!
নিদ্রিতা দ্রুত নিজের পেটটা ঢেকে নেয় যাতে তার বাবুর ঠান্ডা না লাগে!!তারপর চোখের পানি ফেলে রওনা হয় হাসপাতালের পথে!!!!
#অভিমানে_তুমি (সিজন ২)
#ফারিয়া_আফরিন_ঐশী
#পর্বঃ১২

একদম কাকভেজা হয়ে নিদ্রিতা হাসপাতালে এলো!!!

নিদ্রিতার ছোট্ট মনে আজ পাহাড় সমান অভিমান জমেছে স্পর্শের জন্য!!!! নিদ্রিতা গুটিগুটি পায়ে তার বাবার কেবিনের সামনে আসে!!মায়ের পাশে বসতেই,,তামান্না জিজ্ঞেস করে–এমন ভিজে কোথা থেকে এলি??

নিদ্রিতা মাথা নিচু করে বলে–স্পর্শের বাড়ি থেকে!!!

তামান্না–ওও!!!

নিদ্রিতা এবার তার মায়ের হাত ধরে বলল–আচ্ছা, মা,স্পর্শ কেন বলল বাপী ওর মাকে খুন করেছে??বাপী তো কাউকে খুন করতেই পারে না!!!

তামান্না গায়ে জড়ানো চাদর দিয়ে চোখের জল মুছে বলল–তোর বাবা কখনো কাউকে খুন করেনি!!স্পর্শ ভুল বুঝছে!!তুই শুধু এটুকু জেনে রাখ স্পর্শ তোর বড় খালামনি আর বড় চাচ্চুর ছেলে!!!

নিদ্রিতা হতবাক হয়ে বলল–তারমানে স্পর্শ আমার খালাতো চাচাতো ভাই!!!তাহলে ও কেন আমার বাপীকে মারতে চাইছে??

তামান্না–সে অনেক কথা রে মা!!!!

নিদ্রিতা এবার চোখের জল ফেলে বলল–মা!!স্পর্শ তো আমার কোনো কথাই শুনছে না!!!আমি যে ভুল করে কন্সিভ করে ফেলেছি!!!ও তো বাচ্চাকেও মানছে না!!!

তামান্না শুনে কিছুটা অবাক হলো তারপর নিদ্রিতাকে জড়িয়ে ধরে বলল–চিন্তা করিস না!!আমি আর তোর বাপী সব ঠিক করে দিবো!!স্পর্শ যেদিন সব ঠিক টা জানবে সেদিন ঠিক মেনে নিবে!!আর যদি না ও মানে আমরা আছি তো ওকে ঠিক মানুষ করে নিবো!!!চিন্তা করিস না!!!

নিদ্রিতা মায়ের সান্ত্বনা তে কিছুটা শান্ত হলেও তার মনে হাজারো প্রশ্ন!!!!

২৪ ঘন্টা হয়ে গিয়েছে নিদ্রিতার বাবা অবজারভেশনে আছে!!অবস্থার কোনো উন্নতি নেই!!!

নিদ্রিতা বাড়ি গিয়েছে কিছু জিনিস আনতে!!!

বাড়ি পৌঁছে বারবার স্পর্শকে ফোন করছে!!কিন্তুু নম্বর ব্যস্ত বলছে!!তারমানে স্পর্শ তার নম্বর ব্লক করেছে!!ফেসবুকেও নিদ্রিতার জায়গা হয়েছে স্পর্শের ব্লক লিস্টে!!এসব দেখে নিদ্রিতার বুক ফেটে কান্না এলো।।

দরকারি জিনিস নিয়ে আবারো ছুটলো স্পর্শের দরজায়।কারণ নিদ্রিতার দরকার স্পর্শের সাথে কথা বলা!!!!

নিদ্রিতা বার ছয়েক বেল বাজাতেই স্পর্শ দরজা খুলল।।স্পর্শের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে নিদ্রিতা!!!

স্পর্শ জিজ্ঞেস করল –কি দরকার??

নিদ্রিতা–দরকার তো অনেক!!!(কান্নামাখা কন্ঠে)

স্পর্শ –যেমন??

নিদ্রিতা এবার স্পর্শকে দুহাত দিয়ে ধাক্কা দিল।।তাতে যদিও স্পর্শের খুব একটা লাগল না!!

নিদ্রিতা এবার রেগে চিল্লিয়ে বলল–তোমার সাথে এখন আমার দরকারের সম্পর্ক তাইনা???অসভ্য লোক!!!আমাকে এই বিশ্রি পরিস্থিতিতে ফেলে মজা নিচ্ছ??আমার বাবার কোনো দোষ নেই!!!সবটা জেনে তারপর এসো!!!

এবার স্পর্শ শক্ত করে নিদ্রিতাকে দেয়ালের সাথে মিশিয়ে চেপে ধরল,তারপর বলল–চুপ!!!একদম চুপ!!!গলা উঁচু করে কথা বলা আমার পছন্দ না!!!আর সবটা জেনেই তোর বাবাকে মারতে চাই!!খুন করেছে ঐ লোক আমার মা কে!!নিজের চোখে দেখেছি!!!

নিদ্রিতা এবার একটু শান্ত হয়ে স্পর্শের দুগালে হাত রেখে বলল–আচ্ছা, একটা ভুল বোঝাবুঝি আছে,,তুমি বাবার সাথে কথা বলে মিটিয়ে নাও!!!সবটা ভেবে এগোও প্লিজ!!!এমন না হয় আজকের জন্য তোমাকে কাল সাফার করতে হয়!!!

স্পর্শ –সব জানি আমি!!!এটুকু তুমি জেনে রাখ তোমার বাবা মরবে!!!খুব জলদি!!!

নিদ্রিতা এবার খানিক শক্ত কন্ঠে বলল–ঠিক আছে!! তবে এটা জেনে রাখো আমি মানি না আমার বাবা কোনো ভুল করতে পারে!!!আজ থেকে তুমি তোমার রাস্তায় আমি আমার!!!

বলেই নিদ্রিতা চলে গেল!!!স্পর্শ ভেতরে গিয়ে রাগে সব জিনিস ছুঁড়তে লাগল!!!

নিদ্রিতা সিএনজি করে হসপিটাল এ চলে এলো!!!

৪ দিন পর,,,,

নিদ্রিতার বাবা এখন বেশ সুস্থ!!! আজ তারা বাড়ি যাবে!!এই ৪ দিনে নিদ্রিতা আর কোনো চেষ্টাই করেনি স্পর্শের সাথে যোগাযোগ করার!!

৩ জনে হাসপাতালের বাইরে এসে সিএনজি এর জন্য অপেক্ষা করছে!!!

ঠিক তখনই একদল লোক কালো গাড়ি করে এসে আকাশকে জোর করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়!!!

নিদ্রিতা আর তামান্না বেশ কিছুদূর গাড়ির পেছন পেছন দৌড়ে যায়!! কিন্তুু হাঁপিয়ে এক পর্যায় আর পারে না!!!

নিদ্রিতা আর তামান্না কাঁদতে কাঁদতে পুলিশের কাছে যায়!!!পুলিশ জানায় নিদ্রিতা যদি একরাতের জন্য থানাতে থাকে তাহলে তারা তার বাবাকে খুঁজে আনবে!!তামান্না মেয়ের হাত ধরে নিয়ে বাড়িতে চলে আসে আর বলে–মরে যাবো তাও তোর কিছু হতে দিবো না!!!

আর বলল–আল্লাহর ওপর ভরসা রাখ ঠিক তোর বাবা ফিরে আসবে!!!

নিদ্রিতা তো কেঁদে কেঁদে অস্থির!!! তামান্না জায়নামাজে বসেছে!!!

নিদ্রিতার তখনই মনে হলো একাজ স্পর্শের ছাড়া আর কারো না!!!

দৌড়ে স্পর্শের বাড়ি চলে এলো!!!কিন্তুু বাড়ি তালাবদ্ধ!!!!

নিদ্রিতা বেশ বুঝল তার বাবাকে স্পর্শই আটকে রেখেছে!!!

নিদ্রিতা বাড়ি ফিরে এলো!!!

অন্যদিকে,,,,

আকাশকে একটা চেয়ারের সাথে বেধে রাখা হয়েছে!!!

আকাশের একেই অসুস্থ শরীর তারপর দড়ির চাপে হাতে পায়ে বেশ কষ্ট হচ্ছে!!!

আচমকা দরজা খুলে কেউ একজন প্রবেশ করল!!!

চেয়ার নিয়ে সামনে বসে হাতের বন্দুক টা আকাশের মাথায় তাক করে বলল–আপনাকে কিভাবে মারি বলুন তো??

আকাশ ঢোক গিলে বলল–বিশ্বাস করো স্পর্শ বাবা,, আমি মারি নি তোমার মা কে!!!অনেক সত্যি আছে যা তোমার অজানা!!

স্পর্শ এবার এসে বলল–চুপ!!!গল্প সাজাবেন না।।।কঠিন ভাবে মারবো আপনাকে!! বি রেডি!!!

বলে স্পর্শ বের হতেই আরেকজন কালো পোশাক পরিহিত লোক একটা ব্যাগ হাতে ঘরে ঢুকল!!!আকাশের সামনে বসে বলল–আপনার একটু সেবা করতে এলাম!!

বলেই আকাশের মুখে কাপড় ঢুকিয়ে মুখ বেধে দিল!!

তারপর আকাশের মর্মান্তিক ভাবে আকাশের ডান হাতের ৫ টা নখ তুলে দিল!!!আকাশ চিৎকার করতেও পারছে না আবার সহ্য ও করতে পারছে না!!!

লোকটি কাজ সেরে আকাশের হাতে ব্যান্ডেজ করে বলল–সায়ান স্যারের কাজ শেষ!!!কাল আবার আসবো খাতির করতে!!!

বলেই বেরিয়ে গেল!!

আকাশ বারবার আয়মানের কথা মনে করছে!!কারণ সে আগেই আয়মানকে সবটা জানিয়েছিল!!!আয়মান দ্রুত প্রমাণ যোগাড় করে এলেই আকাশের মুক্তি!!!!!

এভাবেই রোজ আকাশের ওপর ছোটখাট অত্যাচার করা হয় যা স্পর্শের অজানা!!!

সেদিন নিদ্রিতার কথাগুলো স্পর্শ অনেকবার ভেবেছে!!!তাই নিজেই সবটা খোঁজ নিচ্ছে!!!যদি সত্যি আকাশ খুনি হয় তাহলে সে আকাশকে মারবে তাই আটকে রেখেছে!!!তবে আকাশকে অত্যাচার করার কোনো অর্ডার স্পর্শ দেয়নি!!!সবটাই সায়ানের বুদ্ধি!!!!

এভাবেই কাটে ৩মাস,,,,

আকাশ এখনো বন্দি!!!বেশ অসুস্থ ও!!!হাত পায়ের নখ সব তোলা হয়ে গিয়েছে!!! পিঠের অনেক জায়গায় ব্লেড দিয়ে কেটে নুন মরিচ দেওয়া হয়েছে!!!! আকাশের মনে হচ্ছে সময় বেশ কম তার কাছে!!!এই ৩ মাসে স্পর্শ একবারও আসে নি!!!

নিদ্রিতা আর তামান্না আশাসব ছেড়েই দিয়েছে!!! ২.৫ মাসের মাথাতেই আচমকা নিদ্রিতার ব্লিডিং শুরু হয়!!!ডাক্তারের কাছে গেলে জানা যায়,নিদ্রিতার মিসক্যারেজ হয়েছে!!!! অতিরিক্ত টেনশন, দৌড়াদৌড়ি আর বয়স কমটাই মূল কারণ!!!নিদ্রিতার শরীর এখনো বেবি ধারণের উপযুক্ত নয়!!!

এসবের জন্য নিদ্রিতা বেশ চুপচাপ হয়ে গিয়েছে আর দূর্বল ও!!!!

এখন নিদ্রিতা ২ টো টিউশনি করে কোনোমতে নিজেদের খাওয়ার জোগান দিচ্ছে!!!!

তবে নিদ্রিতার মনে জমেছে স্পর্শের জন্য তীব্র অভিমান!!!!

আজ স্পর্শ দার্জিলিং ফিরেছে সাথে আয়মান!!!কোলকাতা গিয়ে নিজে যাচাই করে সবটা জেনেছে!!!বাকিটা আয়মান নিজে দেখা করে সাহায্য করেছে!!!

সবটা জেনে স্পর্শ কেমন যেন থমকে গিয়েছে!!! এমনকি নিজের অস্তিত্ব যে মিথ্যা তাও মনে হয়েছে তার কাছে!!!স্পর্শের মুখে বেশ দাড়ি উঠেছে তারওপর চুল গুলোও বেড়েছে!!!

সবটা জানার পর,,,সায়ান পালিয়েছে তার মাকে নিয়ে,,

সান্ত্বনাকে স্পর্শ নিজের আন্ডারে রেখেছে!!!নিজের বাবার চিকিৎসার ব্যবস্হা করে এসেছে!!!

আজ দার্জিলিং আসার মূল কারণ হলো নিদ্রিতা!!!

স্পর্শের এখন বড্ড দরকার তাকে!!!অন্যায় তো করেছে,, ক্ষমা চাইবার পালা এবার!!!

স্পর্শ আর আয়মান গাড়ি করে সেই জায়গায় আসে যেখানে আকাশকে রাখা হয়েছিল!!!

আকাশের ঘরে এসে আকাশের অবস্থা দেখে স্পর্শ হতবাক!!!সে তো আকাশকে কোনো টর্চারের অর্ডার দেয়নি!!!তাহলে!!!

দ্রুত সিসি টিভি ফুটেজ চেক করে!!!

তারপর টর্চার করা গার্ডকে ডাকে!!!গার্ড এসেই পরিস্থিতি বুঝে বন্দুক তাক করে স্পর্শের দিকে!!!

স্পর্শের ইশারাতে স্পর্শের গার্ডরা ঐ লোকটাকে ধরে জিম্মি করে ফেলে!!!তারপর স্পর্শ জিজ্ঞাসা করে—কার কথাতে করেছিস এই কাজ??

লোকটি কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়না!!!কয়েক ঘা দিতেই সায়ানের নাম বলে!!!স্পর্শ শুনেই রেগে যায় সাথে সাথে শুট করে লোকটির মাথায়!!!

তারপর ঘুরে দেখে আকাশকে ছাড়িয়ে আয়মান ধীরে দাঁড় করিয়েছে!!!

স্পর্শ গিয়ে সাথে সাথে জড়িয়ে ধরে আকাশকে তারপর কেঁদে বলে–সরি চাচ্চু!!!তুমি আমার জন্য এতো কষ্ট পেয়েছো!!!!

আকাশ খুব কষ্টে স্পর্শকেও জড়িয়ে ধরে বলে–ধুর!!পাগল ছেলে তোর কোনো দোষ নেই!!!

স্পর্শ –আমি সবটা না জেনেই তোমাকে কষ্ট দিয়েছি!!!

আকাশ–তুই তো পরিস্থিতির স্বীকার রে বাবা!!!

স্পর্শ –তুমি হসপিটালে চলো তারপর বাড়ি যেতে হবে চলো!!!

আকাশ–হুমম রে চল!!খুব কষ্ট হচ্ছে!!!

স্পর্শ আর আয়মান ধরে আকাশকে গাড়িতে করে হসপিটালে নিয়ে যায়!!!!

আকাশের ট্রিটমেন্ট চলছে আর স্পর্শ পাশে বসে আছে!!!

বারবার নিদ্রিতার নম্বরে কল করছে!!!

আকাশ–নিদু কে ফোন করছিস???

স্পর্শ চোখের কার্নিশের পানি মুছে বলে–হুমম!!!পরশু থেকেই বাট নো রেসপন্স!!!

আকাশ হালকা হেসে বলল–আমার নিদু কিন্তুু বেশ অভিমানী!!!বকলেই সে রেগে যায়!!!

স্পর্শ –আমার ওপরও অনেক রেগে আছে!!!অন্যায় করেছি আমি!!

আকাশ–তবে শ্বশুর হিসেবে জামাই আমার কিন্তুু বেশ লেগেছে!!

স্পর্শ এবার হালকা হেসে বলে–আমারও শ্বশুরকে বেশ পছন্দ হয়েছে!!!

অন্যদিকে,

নিদ্রিতা জানালার কাছে বসে আছে!!! স্পর্শের সাথে কাটানো দিনগুলো মনে করতেই চোখ ভরে এলো!!!!

তামান্না খাবারের জন্য ডাকতেই নিদ্রিতা নিচে গেল!!!

নিদ্রিতা আজ সবটা জানে কিন্তুু স্পর্শের করা অন্যায় সে কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না!!!!!

স্পর্শ গাড়ি চালাচ্ছে,, উদ্দেশ্য নিদ্রিতাদের বাড়ি!!!

আয়মান আর আকাশ টুকটাক গল্প করছে!!!

স্পর্শের মনে বাসা বেধেছে ঘোর চিন্তা!!!

স্পর্শ ভাবছে—আজ ৩ মাস নিদ্রিতার সাথে দেখা হয় না!!!ও তো জানেই না কি পরিস্থিতিতে আমি আছি!!!আচ্ছা আমার বেবি কেমন আছে!!নিদ্রিতা কি পারছে নিজের খেয়াল রাখতে!!!!নিদু কি আমার ওপর অনেক রেগে আছে!!!!আমার সাথে কি কথাই বলবে না!!!!যাই হোক আমি ক্ষমা চাইবো বারবার চাইবো!!!!ওকে ক্ষমা করতে হবে!!দ্রুতই আমার কাছে নিয়ে আসবো!!!আর না!!!আমার পক্ষে আর কোনো ধাক্কা নেওয়া পসিবল না!!!

এসব ভাবনার মাঝেই স্পর্শ গাড়ি থামায় নিদ্রিতার বাড়ির সামনে!!!

স্পর্শের মনে একটাই চিন্তা এখন নিদ্রিতা!!!!!

আকাশ আয়মানের সাহায্য নিয়ে বাড়িতে গিয়ে বেল বাজাতেই দরজা খুলে দেয় নিদ্রিতা,,,বাবাকে দেখে অঝোরে চোখের পানি ফেলছে!!!

বাবার হাতে পায়ে ব্যান্ডেজ দেখে নিদ্রিতা বুঝেই নিল এসব কাজ স্পর্শের!!!!

বাবাকে ঘরে নিয়ে বসাতেই অতিরিক্ত দূর্বলতার কারণে সেন্সলেস হয়ে পড়েন !!!!নিদ্রিতার কোলে বাবার মাথা।। আকাশকে সেন্সলেস হতে দেখে দ্রুত পায়ে ছুটে আসে স্পর্শ।। সে পরে আসায় নজরে পড়েনি নিদ্রিতার।।

তবে যেই আকাশকে ধরল তখনই নিদ্রিতার রক্তিম চোখের মুখোমুখি হলো সে!!!!নিদ্রিতার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে স্পর্শ!!! নিদ্রিতার চোখে রাগ আর স্পর্শের চোখে তৃষ্ণা!!!!

স্পর্শ তাড়াতাড়ি আকাশকে ধরতে গেলে নিদ্রিতা হালকা কন্ঠে বলে—অর্ধেক তো মেরেই ফেলেছেন!!! বাকিটুকু মারতে এলেন বুঝি!!!

নিদ্রিতার ধীর কন্ঠের শক্ত কথাতে নিদ্রিতার অভিমানের মাত্রা বুঝে নিল স্পর্শ!!!

আকাশ কে আয়মান ধরে ঘরে নিয়ে যায়!!!তামান্না ও চলে যায়!!!

নিদ্রিতা উঠে যেতে নিলেই স্পর্শ হাত আটকে ধরে বলে—আমার কথাগুলো একবার শোনো নিদু প্লিজ!!!

নিদ্রিতা হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করেই যাচ্ছে!!!

স্পর্শ আরো একটু শক্ত করে ধরে নিদ্রিতার দিকে তাকায়!!!

নিদ্রিতা বেশ সিম্পল একটা হালকা হলুদ শাড়ি পড়া!!!আঁচল টা দুভাজ করে রাখা!!লম্বা চুলে ঢিলেঢালা বেনি গাথা!!!হাত,নাক,গলা খালি,,কোনো গহনাই নেই!!চেহারাতে বেশ কালচে ছাপ!!!

তাও স্পর্শের কাছে সবচেয়ে সুন্দরী নারী মনে হচ্ছে তাকে!!!

স্পর্শ নিদ্রিতাকে দেখে নিয়ে বলে–একটু শোনো প্লিজ!!!আমার জন্য না হোক আমাদের বেবির জন্য!!!

নিদ্রিতা হালকা হেসে বলে–যে নেই তার জন্য শুনেও কোনো লাভ নেই!!!

স্পর্শ অবাক হয়ে নিদ্রিতার হাত ছেড়ে জিজ্ঞেস করে– মানে??

নিদ্রিতা এবার স্পর্শের দিক থেকে দূরে সরে বলে—মরে গিয়েছে সে!!!২.৫ মাসেই!!!!কারণ এরকম নিষ্ঠুর বাবার পরিচয় নিয়ে পৃথিবীতে আসার কোনো ইচ্ছে ছিল না তার!!!

বলেই নিদ্রিতা নিজের চোখের জল লুকিয়ে ওপরে তার বাবার ঘরে চলে গেল!!!

আর স্পর্শ হতবাকের মতো দাঁড়িয়ে আছে!!!!স্পর্শের চোখে জল চিকচিক করছে!!!

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here