আমার তুমি পর্ব ২২

#আমার_তুমি❤
#লেখিকাঃ-তানজিনা আক্তার মিষ্টি ❤
#পর্ব:- ২২

চোখ দিয়ে পানি পরছে এভাবে সবাই মিলে আমাকে ঠকালো।
রাইয়্যান আমাকে এখানে এনেছে। সবাই নাটক করেছে আমার সাথে। মামা ও এভাবে সে তো আমাকে সব বলতে পারতো কিন্তু কি করলো সে আর ও সব আড়ালে রেখেছে।
বাসা থেকে বের করে হাতে কিছু টাকা দিয়ে আর একবার ও আমার খোজ নিলো না। এই জন্য অন্যের ভরসা ছেরে দিয়ে।
আববুর কথা আমার থেকে লুকিয়েছে এটা কি তারা ঠিক করেছে একদম ই না। এটা ঠিক আমি কষ্ট পেতাম এই কষ্ট সবাই পাবে।তাই কি সন্তানের কাছে তার বাবার কথা গোপন রাখা উচিত একদমি না এটা অনুচিত কাজ। সবাই আমার সাথে অন্যায় করেছে। বাবার কথা বলেনি ঠকিয়ে এই বাড়িতে এনেছে। এদের থেকে তো মামির মার খেয়ে তার কাছে থাকাই ভালো ছিলো। সে মারতো কিন্তু ঠকাতো না তো মিথ্যা বলে এভাবে রাখতো। কি ভাল অ্যাকটিং না করল রাইয়্যান আমার সাথে প্রথম দেখা হলো ঝগড়া। আবার এবাড়ি এসে চোর। বন্ধু বানালো এতো নিখূতঁ অভিনয়। সাথে আন্কেল তাকে কতোটা বিলিভ করেছিলাম বাবার মতো ভেবেছিলাম সেও সব জানত।

কাউকে ক্ষমা করবো না এই বাড়িতে ও আর থাকবো না। কিন্তু এই রাতে একা একটা মেয়ে হয়ে কোথায় যাবো। কাল সকালেই হসপিটালে আববু কে দেখতে যাবো সাথে বাড়ির থেকে ও বেরিয়ে যাবো। মামার কাছে ও যাবো না কাউকে চাইনা আমার কারো দয়া চাইনা নিজের বাচার রাস্তা নিজে খুজবো না পেলে মরে যাবো তবুও এই ঠকদের সাথে থাকবো না।

সারারাত কেদেঁ চলল বাইরে থেকে রাইয়্যান দরজা ধাক্কা দিয়েছে হাজার বার কিন্তু খুলে নি। কথা ও বলেনি ভয় পেয়ে বারান্দায় দিয়ে আরুর রুমে ঢুকে। দেখে খাটে হেলান দিয়ে আরু ঘুমিয়ে আছে চোখে পানি শুকিয়ে আছে। এতোটা কষ্ট পাবে ভাবেনি। ও জানতো এতে আরু রেগে যাবে কষ্ট পাবে কিন্তু এতোটা ভাবেনি।

আরুর পাশে বসে ওকে ঠিক শুইয়ে কিছু ক্ষণ আরুর দিকে তাকিয়ে থেকে বেরিয়ে আসে।

পরদিন

রাইয়্যান আর রায়হান চৌধুরী সোফায় বসে আছে। নিরব হয়ে দুজনে আরুর রাগ কি করে ভাঙাবে ভাবছে। দরজা খুলেনি এখন ও সকালে উঠে কেমন রিয়াক্ট করবে কে জানে।

হঠাৎ সিড়ি দিয়ে আরুকে নামতে দেখে দুজনেই সেদিকে তাকায়।
আরুশি যে ব্যাগ নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে ছিলো সেই ব্যাগ টা হাতে নিয়ে আবার বেরিয়েছে। কারো দিকে না তাকিয়ে দরজার দিকে যায়।

–আরু কোথায় যাচ্ছ?

রাইয়্যান প্রশ্ন ছুরলো কিন্তু আরু শুনে ও না শুনার ভান করে এগিয়ে যাচ্ছে। আন্কেল ও ডাকছে কারো সাথে কথা বলবো না।
রাইয়্যান উঠে আরুর হাতে চেপে ধরে আটকায়।

–আরু তোমাকে কিছু জিগ্গেস করছি

–ছারুন হাত আমি চলে যাচ্ছি।

–হোয়াট চলে যাচ্ছ মানে কোথায় যাচ্ছ।

–সেদিকে দুচোখ যায় সেদিকে চলে যাবো। আর কোনদিন কারো আশ্রয় নিবো না। ছারুন হাত।

–পাগল হয়ে গেছ তুমি কোথায় ও যাবে না তুমি চুপ করে ভেতরে এসো। মানছি আমরা ভুর করেছি তোমাকে না বলে এসব করা ঠিক হয় নি। রাগ হাওয়াটা স্বাভাবিক কিন্তু তাই চলে যাওয়া সিদ্ধান্ত নিতে পার না।

–আমার জীবন আমার যা ইচ্ছে তাই সিদ্ধান্ত নিবো। আপনি বলার কে ছারুন মিথ্যাচার আমি পছন্দ করিনা। আপনাদের কাছে আমি সারা জীবন ঋণি থাকবো কারণে এতো দিন অনেক হেল্প করেছে খাইয়ছেন পরালেখা করিয়েছেন তার জন্য থ্যাংকস।

–আমি কে তোমাকে কাল ই বলেছি আরু। তুমি কোথায় ও যেত পারবে না।

–কে আপনি আমাকে আটকানোর ছারুন আমাকে যেতে দিন।

–আমি তোমার হাজবেন্ট। আমার কথা শুনতে তোমাকে হবেই এখানে থেকে যাওয়ার কথা মাথা থেকে ঝেরে ফেলে দাও। ভুল করেছি তার জন্য ক্ষমা চাইছি প্লিজ এমন কর না। আন্কেল সুস্থ হলেই তোমাকে সব বলে দিতাম কিন্তু তার অগেই তো তুমি সব জেনে গেলে।

–হাজবেন্ট আর ইউ ম্যাড আপনি সেই ছোট কালের ফালতু বিয়েটাকে নিয়ে আমার উপর জোর করছেন। ওইটা কোন বিয়েছিল না ওকে ওইটাকে পুতুল বিভিন্ন বলে না আর বুঝ ছিল আর না আপনার ওইটা ভেবে ভুলেও নিজেকে স্বামী ভাববেন না আর না আমাকে স্ত্রী।

–মাইন্ড ইউর ল্যাংগুয়েজ আরু। তুমি আমার মার দেওয়া বিয়েকে অস্বীকার করছো। আমার মা তোমার মা মিলে যে বন্ধন দিয়েছে তাকাকে অপমান করছো এটা কিন্তু আমি মেনে নেবনা।
আমি সব সহ্য করতে পারলেও আমার মাকে অসম্মান করা সহ্য করবো না।

আরুশি নিজেই কথা গুলো বলে চুপ হয়ে গেছে। ওর রাগ রাইয়্যানের উপর সেটা করতে গিয়ে আরেকজন কে অপমান করতে চায় না। তাই চুপ আছে রাইয়্যান ত সত্যি বলেছে তাদের দেওয়া সম্পর্কে অপমান করা উচিত হয়নি কিন্তু একে তো আমি স্বামী বলে মেনে কখনো নেব না।

আরুকে চুপ থাকতে দেখে ওকে টেনে সোফায় এনে বসালো। গার্ড ডেকে ব্যাগ উপরে নিয়ে গেল।

রায়হান চৌধুরী কথা বলছে আরুর সাথে,
রায়হান আরুর মাথায় হাত দিয়ে কিছু বলছে রাইয়্যান দূরে দাড়িয়ে কথা শুনতে পারছে না হঠাৎ আরু আববু কে জরিয়ে ধরে কেদে দিলো।

জানিনা কি বলেছে রাইয়্যান কাছে এসে একটা কথা শুনলো আরু সরি বলছে। কারণ কারণ টা অজানা।

আরু উঠে আমার কাছে এসে দাড়ালো আমাকে ও সরি বলবে নাকি ও নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছে আমি ইচ্ছে করে এভাবে কিছু করি নি। খুশি হয়ে তাকিয়ে আছে আরু ওকে বুঝবে।
ওর আশায় জল ঠেলে অন্য কথা বলল,

–আমাকে হসপিটালে নিয়ে চলেন।

আর কিছু না বলে দরজা খুলে বেরিয়ে এলো। রাইয়্যান ও দৌড়ে ওর পেছনে এলো।

–আরু কিছু না খেয়েই যাবে কিছু খেয়ে নাও আমরা একটু পরেযাই।

— আমার খিদে নেই আপনার খেতে হলে যান খান আমি একাই চলে যাবো।

–আরে আমি আমার কথা না তোমার কথা বলছি কিছু খেয়ে নাও। কাল রাতে ও তো ঠিক মতো খাওনাই।

–যাবেন কিনা বলেন।

–আচ্ছা চলো।

বলেই গাড়ির নিয়ে এলো। আরুশি জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে একবারের জন্য ও রাইয়্যানের দিকে তাকা নি। রাইয়্যান ড্রাইভ করছে ফাকে একটু পর পর আরুর দিকে তাকাচ্ছে।

–এখানে গাড়ি থামালেন কেন এটাতো হসপিটাল নাহ

রাইয়্যান নেমে আরুর কে নামতে বলল,

–নামো।

–এখানে কেন নামবো,

–খাবো তাই।

–আমি খাবো না আগেই বলেছি।

রাইয়্যান আর কথা না বারিয়ে দরজা খুলে আরুর হাত টেনে বাইরে বের করে এনে। রেস্টুরেন্টে ঢুকতে লাগল,

আরুশি কিছু বলার সুযোগ পেলনা। ঘটনা এতো দ্রুত ঘটলো যখন বুঝলো ভালো করে নিজেকে স্বাভাবিক করে ছুটাছুটি করতে লাগলে।

রেস্টুরেন্টে এসে আরুশি টান মেরে হাত সরিয়ে চিৎকার করে উঠল,

–আপনি আমাকে জোর করে নিয়ে এলেন

–ভালো কথায় না আসলে তো জোর ই করতে হবে তাইনা।

–না জোর করবেন না আপনি বেশি বেশি করছেন কিন্তু সব কিছু।

–একদমি বেশি করছিনা। বউ না খেয়ে থাকলে কি আমি জোর না করে থাকতে পারি বলো আর এখানে সিন্ক্রিয়েট করো না এটা পাবলিক জায়গা দেখো সবাই কেমন করে দেখছে।

–আমার জন্য না আপনার জন্য সবাই আপনাকে দেখছে।

–তোমার কি জেলাস হচ্ছে? আই মিন হওয়ার ই কথা যতই হোক নিজের হাজবেন্ট কে অন্য মেয়েরা দেখলে তো,,
কথার মাঝে থামিয়ে,

–কি আমি জেলাস হবো ইম্পসিভল। আর বারবার হাজবেন্ট হাজবেন্ট করবেন না একদম এইটা শুনলে আমার গা জ্বলে উঠে।

— হচ্ছো হচ্ছো কিন্তু স্বীকার করছো না। এখন আর তর্ক করতে চাইনা বসো আন্কেলকে তো দেখতে যেতে হবে।

— আমি খাবো না কতো বার বলবো।

–তোমাকে খেতেই হবে। বসো।

বলেই হাত ধরে টেনে বসিয়ে দিলো। আরু উঠতে যাবে রাইয়্যান শক্ত করে ধরে রাখে যাতেউঠতেনা পারে ওয়েটার কে ডেকে খাবার অর্ডার দেয়।

–আপনার এতো খিদে আপনি খান আমাকে কেন জোর করছেন?

–বউ না খেলে কি আমি খেত পারি।

–একদিনে বউ বউ কই এতো দিন তো এসব কিছু দেখিনি।

–তার মানে আগেই বললে ভালো হতো তাই নাহ। এতো ঝগড়া করতি না কি ঝগড়াটাইনা করেছো

–ফালতু কথা বাদ দিন হাত ছারুন আমি উঠবো।

–নো।

ছুটাছুটি করেও উঠতে পারলো না। একটু পর খাবার চলে এলো।

–খাও।

–খাবো না।

বলেই মুখ ঘুরিয়ে নিলো।

–আরু লেট কিন্তু তুমি নিজেই করছো তারাতারি খাবার টা শেষ করে চলো।নাহলে যেতে পারবে না কিন্তু।

–আগুন চোখে তাকাল, আপনি কিন্তু,

রাইয়্যান কায়দা বুঝে মুখে খাবার ঢুকিয়ে দিয়েছে। আরুশি বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে এটা করবে ভাবে নি।

খাবার গিলতেও না পারছে না ফেলতে ও পারছে না। রেস্টুরেন্টে এখানে খাবার ফেলা যাবে না।

–এভাবে তাকিয়ে আছো কেন শেষ করো তাকিয়ে থেকে তো কথা বলতে পারবেনা কিছু বলতে চাইলে শেষ করো।

গাল ফুলিয়ে চিবাতে লাগলো শেষ হতেই রাইয়্যান আবার খাবার ঢুকিয়ে দিলো,

এমন ভাবে তাকিয়ে ছে যেন চোখ দিয়েই বর্ষ কর দেবে। আশেপাশে সবাই তো হা হয় তাকিয়ে আছে। হঠাৎ সবার হাসির শব্দে চারপাশে তাকিয়ে আর ও রেগে উঠলো।
মুখে হাত দিয়ে খাবার শেষ করে বলল,

–আমি নিজেই খেয়ে নিচ্ছি। প্লিজ আর দিয়েন না সবাই কি ভাবে তাকিয়ে আছে।

–আই ডোন্ট কেয়ার।

–আমি কিন্তু?

–ওকে ওকে রাগতে হবে না খাও।

বলেই নিজের খেতে লাগলো।

আরুশি গাল ফুলিয়ে খেয়ে নেয়।
হসপিটালে এসেই আরুশি আবার কান্না শুরু করে দেয় বাবার এই অবস্থা কোন সন্তান ই মেনে নিতে পারে না। এতো দিন পর বাবাকে পেলাম তাও এই অবস্থা।
হাত ধরে এক দৃষ্টি তে তাকিয়ে আছে বাবার দিকে কতো অভিমান জমে ছিলো ভেবেছিলো যেদিন সামনে পাবে খুব করে বকবে রাগ করে কথাই বলবে না। এখন বাবাই আমার সাথে রাগ করে আছে কেন? চোখ দিয়ে পানি পরছে শব্দ হচ্ছে না যদি ক্ষতি হয় তাই। কাল কেদেছিলো বাবাকৈ দেখে নিজেকে সামলাত পারেনি।
রাইয়্যান ডাক্তার এর সাথে কথা বলে দরজা কাছে দাড়িয়ে আরু কে খেয়াল করছে। ওর ও খারাপ লাগছে এভাবে আরুকে দেখে এই জন্য বলেনি আগে যাও বলতো আরুর মামার জন্য বলেনি।

দুই ঘন্টা পর বাসার আসে আরু তো আসবেই না জোর করে নিয়ে এসেছে। বসে থাকলে তো আর কিছু হবে না।
প্রতিদিন দুইবার করে আরু ওর বাবাকে দেখতে যায়। কলেজে ও যায় না ঠিক মতো বাবার চিন্তায় পরা র কথা ভুলেই গেছে।

দুইদিন পর বিকেলে বসে আছে হঠাৎ ফোন বেজে উঠে দেখে সোনালীর কল। ও বলল টেস্ট এক্মামের রোটিং দিয়ে দিয়েছে। আরুর মাথায় বাজ পরে দুইদিন ধরে পরাই হয় না। বাবাকে নিয়ে সব ভুলে বসেছে। লেখাপরা তো করতেই হবে।

পরদিন কলেজে গেল ও।
কলেজে থেকে এসেই দেখে সোফায় মামা মামি বসে আছে।
মামি আমাকে দেখেই দৌড়ে এসে জরিয়ে ধরলো যেন কতো ভালোবাসে আমাকে।
চলবে❤
#আমার_তুমি❤
#লেখিকাঃ-তানজিনা আক্তার মিষ্টি ❤
#পর্ব:- ২২[ এক্মটা পার্ট]

–মামি তোমরা এখানে?

–মা আমার তুই রাগ করে চলে এসেছিস মা। চল ফিরে চল আমার সাথে আমি আর কষ্ট দেব না তোকে। জোর করে বিয়ে দিতে চেয়ে আমি অপরাধ করেছি ক্ষমা কর। আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি তোর সাথে অনেক অন্যায় করেছি ক্ষমা কর মা আমাকে।

আরুশি কিছু বুঝতে পারছে না হা হয়ে তাকিয়ে আছে মামির মুখের দিকে মামি আমার হাত ধরে বারবার ক্ষমা চাইছে।
মামির আবার কি হলো এমন করছে কেন?

–কি হলো মা কথা বলছিস না কেন? রাগ করে আছিস তাইনা। আমি আর ভুল বুঝতে পেরেছি তোর উপর অত্যাচার করা উচিত হয়নি এখন আমি হারে হারে টের পাচ্ছি থাকত কতো কষ্টই না দিয়েছি কিন্তু তুই চলে আসার পর আমি তোকে খুব মিস করেছি। একা লেগেছে খুব তোকে আমি ও খুব ভালোবাসী কিন্তু বুঝতে পারিনি চলে আসাতে আমার বুঝ হলো।

–মামি কি হয়েছে তোমার বলো তো?

–আমার ভল ভেঙে আরুশি আমি ওই জন্টু এ বিশ্বাস করেছিলাম ও বলেছিলো তোকে ভালোবাসে বিয়ে করলে আমি খারাপ কাজ করবে না তাই মেনে নিয়েছিলাম ও তো আমার ভাই পো বল তাই তোর সাথে বিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ও যে তোর এতো বড় সর্বনাশ করতে গেছিলো জানলে ওকে তোর খবর দিতাম না।

–খবর দিয়েছো মানে?

–হুম রে তোর কলেজের খবর আমিই দিয়েছিলাম।

–তুমি জানলে কিভাবে আমি কলেজে পরি এখন ও।

মামির মুখে একটা অস্হি ভাব দেখা গেল আমতা আমতা করে কিছু বলবে তার আগেই মামা চলে এলো।

–আরুশি মা আমাকে ও ক্ষমা করে দে তুই তো আমার উপর ও রেগে আছিস। আমি তোকে বলতে না করেছিলাম একটা কারণেই এভাবে নিজের বাবাকে দেখলে তুই ভেঙে পরতি।

–ভেঙে পরবো বলে তোমরা আমার থেকে এতো বড় কথা গুলো লুকিয়ে যাবে শুধু তাই নয় এখানে আসা থেকে সবাই নাটক করবে।

–ওই সময় ওইটাই তোর জন্য ভালো মনে হয়েছিলো রে। এটা ভেবে তুই তোর মামার সাথে রেগে থাকবি। কি করলে ক্ষমা করবি বল আমি তাই করবো।

বলেই কান্না ভাব করলো আমার খুব খারাপ লাগছে এভাবে মামাকে দেখে। সে তো আমার ভালোই চেয়েছে সব সময় এটা ঠিক মামির অত্যাচার এর বিরুদ্ধে কখনো প্রতিবাদ করে নি কিন্তু পরে এসে অনেক ভালোবাসা দিয়েছে মামির আড়ালে। সে তো খারাপ চাইবে না আমার রাগটা উচিত না।

–এভাবে বলো না মামা আমি তোমার উপর রেগে নেই তো। কষ্ট হয়েছিল এভাবে না বলে এতো কিছু ঘটছে যে আমি নিজেকে ঠিক রাখতে পারিনি। এখন আর অভিমান নেয়।

–তোর মামিকে ও ক্ষমা করে দে ও নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে

— কিন্তু,

–তোর মামাকে কি আর বিশ্বাস করিস না ভুলে যাস না এই আমি তোকে এতো বড় করেছি এই দুইবছর দেখে রেখেছি। তোর বাবা তো তোকে ফেলেই চলে এসেছিলো।

–তোমাকে আমি চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করি মামা কষ্ট পেয় না আমি মামি কে ক্ষমা করে দিয়েছি।

মামাকে আমি খুব ভালোবাসি। কিন্তু আজকে মামা বিহেভ কেমন জানি লাগলো। হয়তো মামিকে মেনে নিচ্ছিলাম না তাই হয়তো কিন্তু মামিযে নিজের ভুল বুঝে এতোটা ভালোবাসছে খুব ভালো লাগছে।

আরুশি ওর মামিকে জরিয়ে ধরে কেদে দিলো এখন মামিকে মার মতো লাগছে আজকে এতোটা চেন্জ কি করে হলো।

দুপুরের খাবার খেয়ে নিলো সবাই তারপর মামা মামি চলে গেল।

মনটা ভালো হয়েছে আছে আরুর সব দিক দিয়ে আনন্দ আর খুশি এসে জমা হচ্ছে। শুধু রাইয়্যানের সাথেই কথা বলে না।

রাইয়্যান আরুর রুমে আসে।দেখে বারান্দায় বসে আছে আরুর মনটা ভালো দেখে রাইয়্যানের ও মনটা ভালো হয়ে গেছে। ও এসেছ আরুর সাথে গল্প করতে এক সপ্তাহ ধরে আরু সাথে ঝগড়া হয়না।

–আরু কি করছো?

–আরু মাথা উচু করে মাথা তুলে তাকায় রাইয়্যানের দিকে তারপর আবার সামনের দিকে তাকিয়ে যায়। রাইয়্যানের সাথে কথা বলে একদম ইচ্ছে হয়না কেন? আবার কথা না বললে ও মিস করি কেন হচ্ছে এমন। কাছে আসলে বিরক্ত লাগছে দূর গেলে মিস করছি।
আলাদা একটা অভিমান হয়েছে মন চাইছে রাইয়্যান সেই অভিমান ভাঙুক কিন্তু এটা কেন করবে কে আমি বউ হাহাহা সেটা তো রাইয়্যান দায় বদ্ধতা থেকে করছে। উনি তো তানিশা আপুকে ভালোবাসে। আমাকে শুধু মাএ দায়বদ্ধতার জন্য মেনে নিয়েছে তার জীবনে আমি বুজা হতে চায়না।

–আরুওওওও

কানের কাছে তীব্র চিৎকার শুনে নরেচরে বসলাম কি হয়েছে বুঝতে পাশে তাকিয়ে রেগে উঠলাম। রাইয়্যান আমার ভয় পাওয়া দেখে হাসছে।

–কি এতো ভাবছো আমি যে তোমার পাশে বসে আছি সে খেয়াল আছে তোমার। সবাই কে তো ক্ষমা করে দিলে আমি কি দোষ করেছি যে আমাকে করতে পারছো না।
তাকাও আমার দিকে আরু আমি তো তোমার ফ্রেন্ড বলো বর না ভাবো ফ্রেন্ড হিসেবে ও কি ক্ষমা করা যায় না। এভাবে তোমার চোপ থাকাটা খুব কষ্ট দিচ্ছে আমাকে।

–এভাবে বলছেন কেন আমার ক্ষমা করায় আপনার কি বা আসে যায়। আর রাইয়্যান চৌধুরী কারো সামনে বসে ক্ষমা চাইছেএটা ও কি আমাকে দেখতে হচ্ছে।

–যারতার সামনে না শুধু মাএ তোমার সামনে মাথা নিচু করতে ও রাজি আছি। প্লিজ ফর গিভ মি।

কানে হাত দিয়ে। না চাইতে ও এটা দেখে আরুর হাহা করে হেসে উঠলো যা একজন মুগ্ধ চোখে দেখছে। এতো সুন্দর হাসি কারো হয়। পাগল করা হাসি।

–হাসছো তার মানে ক্ষমা করেছো তাই না।

–যান ক্ষমা করলাম। আর কখনো আমাকে মিথ্যে বলবে আর ক্ষমা করবো না।

–পাগল নাকি যেছে এটা আর করবো না কখনো।

রাগ অভিমান চলে গেল দুজনে আযানের আগ পযর্ন্ত গল্প চললো,
আযান পরতেই রাইয়্যান চলে গেল আরু অযু করে এসে নামাজ আদায় করে নিলো।

পর পর সময় ভালোই যাচ্ছিলো আরু ভেবে নিয়েছে কি করবে। রাইয়্যানকে এই সম্পর্কে নিয়ে ভাবতে না করে দেবে। নিজের ভালোবাসা ফেলে আমাকে নিয়ে কষ্টে তাকে রাখতে চায়না। তানিশা আপুর সাথ কথা বলবো আমি।

প্রতিদিন দুবার করে হসপিটালে যেত কিন্তু এখন একবার বা একদিন পর যায়। কারণে আরুর টেস্ট এক্মাম শুরু হয়ে গেছে।

চারটা এক্মাম শেষ হয়েছে কাল র্মাথ এক্মাম তাই পরাটাও বেশি নয়টা বাজে খেতে ডেকেছিলো যায় নি। রাইয়্যান আজ বাসার নেই দুপুরের পরে আর তাকে দেখি নি।

কোথায় গেছে? জানি ও না।
পরছি এখন তাকে নিয়ে না ভাবাটাই ভালো।

দশটার দিকে রাইয়্যান এলো আমার রুমে।

–আপনি বাসার এসেছেন কখন।

–এইতো এখন এলাম। আরু তোমার জন্য সারপ্রাইজ আছে।

–কিহ[ ব্রু কুচকে]

–এখন না কাল বলবো এখন পরো।

বলেই চলে যাচ্ছি লো আবার কিছু দেখে থেমে যায়।

–এই খাবার এইভাবে কেন খাওনি।
পেছনে ফিরে জিগ্গেস করলো।

আরু মুখ কাচুমাচু করছে ইশশ খাবার টা চাচি কেনযে রেখে গেছে এখন ধরা পরতে হলো তো। এখন না খাইয়ে গেলে তো।

–কি হলো কথা বলছো না কেন? খাওনি তুমি?

–নাহ মানে আসলে।

– না মানে করছো কেন রা জিগ্গেস করেছি তার উওর দাও।

–ওই খাবো তো চাচি খাবার দিয়ে গেল। পরছিলাভ তো তাই ভুলেই ভুল গেছিলাম।

–তুমি ইচ্ছে করে খাওনি আমি জানি। নিজের প্রতি একটু কেয়ার ও না তুমি আরু। এখন আমার সাভনে খাও উঠো।

–আমার পরা বাকি আছে অনেক ।পরে খেয়ে নেবো আপনি যান।

–নো তুমি আর খাবেনা আমি জানি উঠো হাত ধুয়ে আসো খাও।

–পরে,

–ওকে আমি খাইয়ে দিচ্ছি।

-না না তার দরকার নাই এখন ই যাচ্ছি।

বলেই উঠে গেল। মনে মনে একশ বকা দিচ্ছে।

পরদিন

এক্মাম শেষ বের হয়েই দেখে রাইয়্যান দাড়িয়ে মুখে মাক্ম। সাথে সোনালী ছিলো ও তো আমাকে কানে কানে জিগ্গেস করছে ছেলেটা কে রে। মুখ দেখেনি তাই রাইয়্যানকে চিনতে পারে নিহ।

কি বলবো মুশকিল বারবার জিগ্গেস করছে তাই। বলল ফ্রেন্ড,

–আমার ফ্রেন্ড,

ও অবিশ্বাস্য চোখে তাকালো,

–কি হলো এভাবে তাকাচ্ছিস কেন?

–আমাকে বোকা পেয়েছিস নাকি। এতো বড় ছেলে তোমার ফ্রেন্ড তুমি বলবে আর আমি বিশ্বাস করবো।

— সত্যি।

–বয়ফ্রেন্ড তাই না লজ্জ পাচ্ছিস। মুখ না দেখেই বলছি অনেক সুন্দর হবে। আচ্ছা মুখ খুখেনি কেন?

–তুই কিন্তু বেশি বুঝছিস।

সোনালী কিছু বলবে রাইয়্যানের ডাক শুপে থেমে যায়।

–আরু তারাতারি আস।

সোনালী চোখ টিপে বলল, আরু বাবাহ্

আরুশি কটমট চোখে তাকালো কিন্তু সোনালী হা চলে গেছে বলেই।

হসপিটাল এসেছে।

— এখন ই চলে এলেন যে পরে আসতাম। মানে বাসার গিয়ে না হয়।

–সারপ্রাইজ না দেওয়া পযর্ন্ত আমি শান্তি পাচ্ছি না গো চলো।

–এখানে সারপ্রাইজ?

–হুম,

আরুশি কে নিয়ে রাইয়্যান আরুর বাবার রুমে নিয়ে এলো। আরু কিছু বুঝছে না এখানে কি সারপ্রাইজ আবার দেবে। যাই দিক বাবাকে দেখা হবে

সামনে তাকাতেই চোখ টা ছলছল করে উঠল বাবা তাকিয়ে আছে। ও রাইয়্যানের দিকে তাকালো,

–কেমন সারপ্রাইজ দিলাম?

আরু কিছু না বলে বাবাকে জরিয়ে ধরলো হালকা করে ওরবাবা তাকিয়ে আছে হাত একটু নরাতে পারছে। কথা বলতে পারছে না। তবুও ও আরো খুশি খুব এমন সারপ্রাইজ পাবে ভাবেই নি।

–কবে কথা বলবে বাবা তুমি। আমাকে চিনতে পারছো তো তোমার মেয়ে তোমার আরুশি। কথা বলো না জরিয়ে ধরো না। বলো না কথা।

ওর বাবার চোখে ও পানি কিন্তু কিছু বলছে না।
আরো তার চোখে মুছে দিল,

চলবে❤
[ভুলক্রটি ক্ষমার চোখে দেখবেন]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here