আসমানী ও জ্বীন পর্ব -০১

যদি কোনো ১৬বছরের মেয়ের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতে পারো আমাবস্যার রাতে তাহলে নিশিকাল তুই তোর সব জাদুক্ষমতা ফিরে পাবি। আর সেই মেয়ের গর্ভে যে সন্তান আসবে সে তোর থেকে আরো শক্তিশালী।
আসছে অমবস্যায় আমরা ফিরে পাবো আমাদের পুরোনো শক্তি। দাউ দাউ করে জ্বলছে প্রতিশোধের আগুন। শেষ করে দিব সব কিছু সব কিছু চলে আসবে আমাদের দখলে। হা হা হা ৫০ বছরের অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চলল বলে। ফিরিয়ে আনবো আগের সবাই কে। আমি চন্ডি কখনো হার শিখেনি সকল শয়তানের শক্তি সকল জাদুবিদ্যা আমার মধ্যে আমি ধারন করব।
হা হা হা।
,,,,,,,,,,,,

মা আমি তোমার সৎ মেয়ে তাই তুমি একটু ভুলের জন্য আমাকে মারছ? তুমি না আমার আপন খালা?? ওমা গো কেনো এমন করে মারছ ঘরের সব কাজ তো আমিই করে দেই তাও কেনো তুমি আজকের এইটুকু বিষয় নিয়ে আমাকে মারছ মাগো আর মেরো না সহ্য করতে পারছি না চামড়া ফেটে রক্ত বেড় হতে চললো,,,,

মরে যা তুই একটা আপদ আমার কপালে জুটেছে আজকে থেকে এই অন্ধকার ঘরে তুই থাকবি।
মরতে পারিস না কত মেয়েরা কত রোগ শোকে মারা যায় তোকে এতো রকম শাস্তি দেই, না খাইয়ে রাখি তাও তুই মরস তো নাই আরো সুন্দর রূপে রূপবতী জিরো ফিগার নিয়ে বড় হয়ে উঠো। বলতে বলতে বাম গালের উপর গরম খুন্তি বসিয়ে দিল অধরা চৌধুরী।

আসমানী ও আল্লাহ আমাকে বাঁচাও বলে চিৎকার দিয়ে সেই অন্ধকার রুমে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়।

তুই কি মানুষ না রাক্ষসী হাত থেকে একটা গ্লাস পড়ে গেছে তার জন্য মেয়েটার সাথে এতোটা খারাপ ব্যবহার তুই করতে পারিস তোর ভিতর কি আল্লাহর ভয় আসে না। তুই তো ওর আপন খালা তাও কেনো নিজের বোন ঝীর সাথে এতো জঘন্য আচরন করতে পারোস তোর কি মায়া বলতে কিছু নাই?

— চুপ থাক বুড়ি,, হ্যা আমি রাক্ষসী তোর সমস্যা এতই যখন নাতীর জন্য এতই দরদ তো যা না তুই এই বাড়ি থেকে তোর নাতিকে নিয়ে। তুই তো কম অন্য ধংস করিস না। খুব তারাতারি তোদের সব গুলোকে বিদায় করব।

— তুমি আমাকে তুই তুকারি করছ আমি তোমার মায়ের সমতুল্য।
— আর রাখ তোর মা নিজের মাকেই কখনো ছাড় দেইনি আর তুই শ্বাশুড়ি হয়ে আসছোস মা দাবী করতে।
— নাহ তোমার মুখে মা ডাক শোনার মত ইচ্ছে আমার নেই তার চেয়ে মরন ভালো মায়া রাক্ষসী একটা। সামান্য একটা গ্লাসের জন্য মেয়েটাকে এমন শাস্তি তুই দিতে পারোস।
— শোন বুড়ি মোটেও আমি ঐ গ্লাসের জন্য মারিনি আজ ও কি কান্ড ঘটিয়েছে তুই জানিস?? ওকে আমি কতবার বলেছি আসমা তুই মেহমানের সামনে বের হবি না কারো সামনে যাবি না। কিন্তু ও আমার কোনো কথায় শুনেনি। আজ চাঁদনী কে ছেলে পক্ষ দেখতে এসেছিল সেটা তুই যানিস কিন্তু তোর নাতী যখন ছেলে পক্ষ আসে তখন ও হটাৎ করে সামনে চলে আসে।
আমার চাঁদনী যার গায়ের রং দুধে আলতার মত দেখতে, সারাক্ষণ যাকে আমি পুতুলের মত যত্ন করে সাজিয়ে রাখি সেইখানে চাঁদনী কে না কাজের বেটির মত দেখতে তোর নাতী আসমা কে পছন্দ হয়েছে। ঐ অবস্থায় দেখে পছন্দ হয়েছে ছেলের মায়ের। এখন আসমাকে বউ করে নিতে চায়।

— লাগাম দাও মুখে আসমানীকে কাজের মেয়ের মত করে রাখো তুমি আসমানী দেখতে এমনিতেই সুন্দরী ওকে সাজানোর প্রয়োজন হয়না ও মুক্তর মত সব সময় ঝলমল করে। আর চাঁদনী কে তো তুমি টাকা দিয়ে সুন্দর করেছো। পিতলের পাতীলের মত কয়দিন পর পর ঘষা মাঝা করতে হয় নাহলে তো কালচে ভাব তৈরি হয় যা দেখতে খুবি বিশ্রী লাগে।
ও তো বড় তাহলে ওকে রেখে কেনো চাঁদনী কে বিয়ে দিতে চাইছো কেনো আগেই বলেছি ওকে আগে বিয়ে দেও ওর বিয়ে হয়ে গেলে তো আর এই আপদ থাকত না ।
— মুখ সামলে কথা বলুন চাঁদনীও কিন্তু আপনার নাতী।
— কেনো তুমিই তো বললে আমার নাতী আসমানী।

মম মম তারাতারি রুমে আসো তো।
— হ্যা চাঁদনী মা আসছি।
— মা ঐ মেয়েটার জন্য আমি কি রাইয়ান কে হারিয়ে ফেলব? মা দেখো রাইয়ান কে প্রথম দেখায় আমি ভালোবেসে ফেলেছি তুমি যদি সত্যি আমাকে ভালোবাসো তাহলে আমার ভালোবাসাকে আমার কাছে ফিরিয়ে দাও।
আচ্ছা মা আমি কি আসমার থেকে দেখতে সুন্দর না? আচ্ছা মম আচমকা ওর এতো রূপ কই থেকে আসে? মাঝে মাঝে আমিও ওর দিকে তাকালে আর চোখ ফেরাতে পারিনা। ও কে মা? ওর মাঝে অদ্ভুত কিছু আছে না হলে এমন হয় কিভাবে আমি ২দিন পার্লারে না গেলে কেমন যেন হয়ে যাই কিন্তু ও এমন কেনো?
— শোন ওসব তোর মনের ভুল ওকে তো আমার দেখলে শরীর জ্বলে উঠে। মনে হয় ও আমার জন্ম সত্রু। আর ওর আজ বাম গাল পুড়ে দিয়েছি আর কখনো ওকে সুন্দর লাগবে না।

আসমানী নিজেকে নতুন কোনো জায়গায় আবিষ্কার করল যেখানে শুধুই রাত দিনের আলো বুঝা যাচ্ছে না চারদিকে জঙ্গল সো সো বাতাস বইছে,,,,
হটাৎ আসমানী পিছনে একটা শব্দ শুনতে পেলো তাকিয়ে দেখে কোনো এক বিদঘুটে আকৃতির পিশাচীনি ওর দিকে তেরে আসছে।
আসমানী ভয়ে দৌড়ানো শুরু করে। দৌড়াতে দৌড়াতে আসমানী বড় একটা আম গাছের নিচে দাড়ালো হটাৎ কারো শব্দ শুনতে পায় আসমানী মা আমাকে তুই বাঁচা নিয়ে যা আমাকে এখান থেকে তুই তারাতারি আয় আসমানী মা আমাকে বাঁচা।

—- কে তুমি? কই থেকে আমাকে ডাকছো? সামনে আসো আমার সাথে এভাবে গায়বি ভাবে কেনো কথা বলছ।
— মা আসমানী আমাকে বাঁচা।
—কে তুমি? বলে আসমানী চারদিকে খুজঁতে লাগল। কোথায় তুমি কথা বলছ না কেনো? সামনে আসো।

আসমানীর মাথায় কিছু একটা দিয়ে আঘাত করা হয়। আসমানী মা বলে চিৎকার দিয়ে উঠে নিজেকে আবিষ্কার করল অন্ধকার ঘরে। আসমানী এবার প্রচন্ড রকম ভয় পেয়ে যায় আসলেই এটা কি স্বপ্ন ছিল নাকি বাস্তব।
আসমানী রাতারাতি ঘামতে শুরু করে। ভয়ে আসমানীর গলা শুকিয়ে গেছে আসমানী আসতে আসতে উঠে দাড়ায় দরজায় গিয়ে বারবার ধাক্কা দিচ্ছে আর বলছে মা আমার অনেক ভয় করছে বেড় করো এখান থেকে ও দাদী আমায় বার করো আমি অনেক ভয় পাচ্ছি ক্ষমা করো আমাকে আমাকে এই অন্ধকার ঘর থেকে বের করো আসমানী চিৎকার দিয়ে কাঁদতে শুরু করে আর দরজা ধাক্কাতে থাকে কিন্তু কারো কোনো সারা শব্দ পাচ্ছে না। আস্তে আস্তে আবারও আসমানী অচেতন হয়ে পরে।

মিসেস অধরা আপনি যেভাবে চাইছেন এটা সম্ভব না কারন আপনার শ্বশুর সকল সম্পত্তি আসমার নামে করে দিয়েছে এখন চাইলেও আপনি এই জায়গা বিক্রি করতে পারবেন না।

— উকিল সাহেব এটা কি ভাবে সম্ভব? আমার শ্বশুর নিখোজঁ আরো ১০ বছর আগে থেকে। সে কিভাবে আসমানীকে সব কিছু লিখে দিল?
—- সে নিখোজঁ হওয়ার আরো ২ বছর আগেই তার সব সম্পত্তির মালিক করে গেছেন আসমানীকে। তখন আসমানীর ১৮ পূর্ন হয়নি তাই আপনাদের দায়িত্বে ছিল কিন্তু এখন সম্পুর্ন সম্পত্তির মালিক ও। আপনারা চাইলেও এখন কিছুই করতে পারবেন না। আর ওকে মেরে ফেললে ওর সব কিছু এতিম খানায় চলে যাবে।

— তাহলে এখন কি করতে পারি উকিল সাহেব?
— ওর থেকে যেভাবে হোক সই করিয়ে নিতে হবে।
— ওকে দেখছি।

অধরা দৌরে স্টোর রুমে যায় দরজা খুলে দেখে পুরো ঘর অন্ধকার কোনো শব্দ পাওয়া যাচ্ছে না । মোবাইলের ফ্লাশ অন করে খুঁজতে শুরু করল আসমানী কে। আসমা আসমা বলে অধরা ডাকতে শুরু করে।কিন্তু কোথাও আসমানীকে দেখা যাচ্ছে না। হটাৎ পায়ের সাথে কিছু একটার সাথে ধাক্কা খেয়ে মাটিতে পড়ে যায় অধরা।

চলবে,,,,,

( আসসালামু আলাইকুম। এটি একটি রূপকথার গল্প যার সাথে বাস্তবের কোনো মিল নেই তবে কিছু কিছু অংশে শিক্ষানীয় বিষয় থাকবে। আর অবশ্যই ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন এবং ধরিয়ে দিবেন। বানান গুলো বুঝে পড়ে নিবেন। কেমন হইছে জানাবেন আপনাদের মতামতের উপর পরবর্তী পর্ব লিখব ইনশাআল্লাহ)

#আসমানী_ও_জ্বীন
( সম্পূর্ন কাল্পনিক রূপকথার গল্প)
#01 ( সুচনা পর্ব)
#Esrat_jahan_Esha

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here