উদ্দেশ্যহীন কথা পর্ব -১০+১১

#উদ্দেশ্যহীন_কথা
Part_10
#Writer_Fatema_Khan

কথা হঠাৎ এমনটা হওয়ায় ভয় পেয়ে যায়। সিএনজি তে থাকা লোকটা নয়তো? কিন্তু কথাকে আশ্চর্য করে দিয়ে ছেলেটা কথা থেকে খানিকটা দূরে সরে দাড়ালো। কথা এখনো দেয়ালের সাথেই লেগে দাঁড়িয়ে আছে। মনে হচ্ছে তার নড়াচড়ার শক্তি নেই। ছেলেটা দূরে যাওয়াতে তার উপর কিছুটা আলো পরছে। ছেলেটার মুখে মাস্ক পরা। কথার চিনতে একটুও দেরি হল না এটা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা সেই ছেলেটা যে তাকে রিকশায় উঠিয়ে দিয়েছিলো। কথা কাপা কাপা গলায় বললো,
—আপনি এখানে?

—তাহলে চিনতে পেরেছো আমাকে,

—কে আপনি? আর আমার পিছনে পরে আছেন কেনো, আমিতো আপনাকে চিনিই না।

—যদি বলি ক্ষণিকের জন্য হলেও আমি তোমার পরিচিত তাহলে

—আপনাকে আমি চিনি বলে মনে হচ্ছে না আর আপনি ওইভাবে স্যারের সামনে এমন করলেন কেনো আর এইভাবে আমাকে এখানে নিয়ে আসা কোন ধরনের ভদ্রতা?

—তো কি করব ওই নিবির তোমার কাধে হাত রেখেছিল আর এক প্রকার জোর করে তোমাকে লিফট দিতে চাচ্ছিল।

—তাই বলে ওইভাবে স্যারের সামনে, স্যার কি ভাবছে কে জানে?

—অন্য কারো সম্পর্কে ভাবার সময় আমার নেই তুমি ওই নিবির থেকে দূরে থাকবে আমি এটাই জানি

—আপনি কে বলেন তো যে আপনার কথা শুনতে হবে। আমার দরকার হলে আমি কথা বলবই আর প্রয়োজনে স্যারের গাড়িতে লিফটও নিব। আপনি মানা করার কে?

—এতকিছু আমি জানি না ওই নিবিরের থেকে দূরে থাকবে আমি এটাই জানি

—চুপ থাকুন আপনি, এভাবে এত রাতের বেলা একটা মেয়েকে রাস্তায় একা পেয়ে এভাবে অন্ধকার একটা জায়গায় নিয়ে আসা এটাকে আমি কি বলব?

—যা তোমার বলার তাই বলতে পারো। তবে রাস্তায় বললে কেউ দেখতে পারত, তখন সবাই ভাবত তুমি এত রাতে কার সাথে কথা বলো রাস্তায় দাঁড়িয়ে। কিন্তু এখন কেউ দেখেও নি আর না কেউ তোমাকে নিয়ে কিছু ভাববে। এখন তুমি বাসায় যাও কাল দেখা হবে।

বলেই কাব্য অন্যদিকে চলে যাচ্ছিল৷ কথা কিছু বলতে চায় কিনা তাও জানতে চায় নি। কথাও কিছুক্ষণ পর বাসায় চলে যায়। কথা দুই তিনবার বেল বাজানোর পর কনক দরজা খুলল।
—কিরে এত লেইট হল আজ রিকশা পাস নি বুঝি?

— হুম রিকশা পাই নি তাই সিএনজি দিয়ে আসতে হল তারপর আবার….

—আবার কি থেমে গেলি যে বল

—ফ্রেস হয়ে আসি তারপর খেতে খেতে বলব আজ অনেক কাহিনী ঘটে গেছে।

—কি বলিস, তাহলে তুই তাড়াতাড়ি ফ্রেস হয়ে আয়

_________

—কাব্য,

কাব্য থেমে যায় সিড়িতে উঠতে গিয়েও। পিছনে ফিরে দেখে কাব্যর মা বাবা দাঁড়িয়ে আছে। কাব্য তাদের সামনে এসে দাড়িয়ে বলল,
—কিছু বলবে তোমরা?

— হুম তোমার সাথে কিছু কথা আছে আমাদের। তুমি বস

—আমি আসলে খুব টায়ার্ড তাই কাল বলি

—কাল না আজই শোনো। তোমার যখন সময় নেই তাই বসতেও হবে না। কাল থেকে তুমি আমার সাথে অফিস যাবে

—সরি বাবা, আমি এত তাড়াতাড়ি অফিস জয়েন করতে চাচ্ছি না। আর কিছুদিন ঘুরাঘুরি করি বন্ধুদের সঙ্গে তারপর না হয় জয়েন করব।

কাব্যর বাবা রায়হান খান সেখান থেকে রেগে উপরে চলে যায়। কাব্যর মা ছেলের দিকে এগিয়ে এসে মাথায় হাত রেখে বলে,
—তোর যখন মন চাইবে তুই তখনই অফিস জয়েন করিস। তোর বাবার কথায় কান দিস না। আমার ছেলেটা,এত বছর আমাদের থেকে দূরে ছিল আর এখন নাকি একটু ঘুরাঘুরি না করে অফিস জয়েন দিবে। তুই এক কাজ কর ফ্রেস হয়ে খেতে বসে পর।

—লাভ ইউ মা। আমি আসছি আর যাচ্ছি, তুমি খাবার রেডি করো।

উপর থেকে কাব্যর বাবা সবকিছু দেখছিলো আর বলছিলো,
—যেমন মা তার তেমন ছেলে। কাব্য থেকে কিছু আশা করাও ঠিক না আমার। যতদিন সে নিজেরটা না বুঝে সব আমাকেই দেখতে হবে।

__________

কনক খাবার খাওয়া বন্ধ করে হা করে কথার দিকে তাকিয়ে আছে। আর কথা সারাদিনে ঘটা সেই মাস্ক পরা ছেলেটার কথা বলছে।
—আরে তুই কি বলিস এগুলো! ছেলেটা দেখতে কেমন একটু বল

—আমি কি করে দেখব সে মাস্ক পরা ছিল আর নাম তো বলে নি।

—আর তুই জিজ্ঞেস করিস নি নাম কি?

—আমার তো তখন রাগ উঠে গেছিলো, কি ধরনের ব্যবহার এগুলো তুই নিজেই বল

—এগুলো ভালোবাসা বুঝলা সোনা ভালোবাসা।

— ভালোবাসা! এই একটা শব্দ আজ আমাকে কোথা থেকে কোথায় নিয়ে এসেছে। কত কিছু দেখতে হয়েছে আমাকে। যাকে বিশ্বাস করেছি সেই ঠকিয়েছে। যাকেই আকড়ে ধরতে চেয়েছি সেই বিশ্বাস ভেঙে চলে গেছে। ভালোবাসার মানুষটাই ঠকিয়ে মাঝ পথে ছেড়ে দিল সেখানে যাকে আমি চিনিই না তার নাম অবদি জানি না তার করা ছোট ছোট কাজকে কি করে ভালোবাসা বলি আমি। আর আমি নিজেও চাই না আর কাউকে আকড়ে ধরতে, চাইনা কেউ এই অভিশপ্ত জীবনে আসুক।

— হয়েছে পুরোনো দিনের কথা বাদ৷ এখন খেয়ে ঘুমা গিয়ে। আচ্ছা দাড়া দাড়া আজ আমার সাথেও একটা ঘটনা ঘটে গেছে।

—কি?

—একটা খুব সুন্দর দেখতে ছেলের সাথে দেখা। দেখতে মনে হল কোনো অফিসে কাজ করে। কিন্তু একটা কথা জানিস

—ছেলেটাকে আমি ত্রিশ টাকা দিয়েছি

— এহ! কিন্তু কেনো?

—দাড়া ডিটেইলস বলছি তোকে

তারপর কনক ১০মিনিটের কাহিনী ৩০মিনিটে শেষ করলো। কথাও মনযোগ দিয়ে সব শুনছিল।
—ওয়াও ইন্টারেস্টিং! কিন্তু এই ছেলেটা কি আগে এখানে আসছিল নাকি আজকেই প্রথম দেখলি?

—আজকেই দেখলাম আগে কখনো দেখিনি।

—দেখিস কাল তোদের আবার দেখা হবে, সুন্দর করে ওই ছেলের সাথে কথা বলিস

— মানি কি, আর তুই কি করে জানিস আমার সাথে কাল আবার দেখা হবে!

— ওই যে, ত্রিশ টাকা ফেরত দিতে হবে না তোর। তাই আর কি

— ও এখন বুঝলাম। আমার কি মাত্র ত্রিশ টাকা ফেরত নেওয়া ঠিক হবে, কেমন দেখায় তাই না

— হুম তাও ঠিক, কিন্তু ধার যখন নিয়েছে ফেরত তো দিতেই হবে।

— হুম বুঝলাম।

কথা কনকের দিকে তাকিয়ে হাসছিল তা দেখে কনক বলল,
— তুই হাসছিস কেনো আগে সেটা বল

— কিছু না তাড়াতাড়ি খেয়ে নে বুদ্ধুরাম।

— আমি আবার কি করলাম যে বোকা বললি।

— কিছুনা খা তুই এখন খাবার ঠান্ডা হয়ে গেছে অলরেডি।

________

রুমে ড্রিম লাইট জ্বালিয়ে বারান্দায় বসে আছে কাব্য। আর ভাবছে আজ প্রথম সে কথার এত কাছে ছিল। তার হাত ছুয়েছে। কথার ভয়ে চুপসে যাওয়া মুখ কিন্তু এমন ভাবে কথা বলা যেনো সে ভয় পাচ্ছে না। উলটো কাব্যকে বকে দেওয়া নিবিরের সাথে এমন ব্যবহার করার জন্য। সবকিছুতেই কেমন ভালো লাগা কাজ করছিলো।
—আচ্ছা কথার খোজ আমি পাই প্রায় তিন বছর আগে। এর আগের দুই বছর ও কোথায় ছিল? ও ট্রেন থেকে নেমে একটা বয়স্ক মহিলার সাথে গাড়ি করে চলে গেছিলো তাহলে ওই মহিলা কই আর কনকের সাথে দেখা পেলো কোথা থেকে? এই কথার কাছে আমার হাজারো প্রশ্ন কবে সব জানতে পারব আমি? আদোও সম্ভব তো আমার পক্ষে জানা, কথা কি সব বলবে আমাকে?
#উদ্দেশ্যহীন_কথা
Part_11
#Writer_Fatema_Khan

দুই পাশে দুইটা বেনি করে নীল রঙের স্কুল ড্রেস তৈরি আমি। ক্লাস এইটে নতুন স্কুলে এডমিশন নেই। বরাবরই সাজতে পছন্দ করি আমি। কপালে কালো টিপ, কানে ছোট দুল, হাতে কালো বেল্টের হাত ঘড়ি, শরীরে পারফিউম আর ঠোঁটে হালকা গোলাপি লিপস্টিক। কাধে ব্যাগ ঝুলিয়ে স্কুলের উদ্দেশ্যে হাটা ধরি। বাড়ির কাছেই স্কুল তাই হেটেই যেতাম। প্রথম দিন স্কুলে গিয়েই আমার কয়েকটা বন্ধু হয়ে যায়। স্কুল থেকে আসার পথে একটা ছেলে আমার সামনে এসে দাঁড়ায়। দেখতে খুব সুন্দর গায়ে কলেজের পোশাক পরা। আমার স্কুলের পাশেই কলেজ। তবে হাতে বা কাধে ব্যাগ বা বই নেই। আমাকে বলল,
—তুমি কথা তাই না রিয়ানের বোন?

—জি কিন্তু আপনি কে আর আমাকে কি করে চিনেন?

—আমি আর রিয়ান একসাথেই পড়ি। কথা তুমি খুব সুন্দর

আমি খুব খুশি হয়ে গেলাম তার কথা শুনে। আমাকে সুন্দর বলেছে৷ সে আমাকে সুন্দর বলেছে কি মজা।

—এই কথা কি ভাবছো?

— কই কিছু না। আচ্ছা আপনার নাম কি?

—আমি বিহান। আচ্ছা আজ তাহলে আসি আবার পরে কথা হবে। বাই!

—বাই!

এভাবেই আমাদের রোজ দেখা হত। আমাকে তার কেমন লাগত সেটা আমি আজ অবদি জানি না, তবে আমি তার উপর আসক্ত ছিলাম। তার মোহে জড়িয়ে গেছিলাম। এভাবেই যাচ্ছিল দিন। একদিন সে আমাকে স্কুলের পাশেই একটা পুকুর আছে। সেই পুকুরের ঘাটে নিয়ে গেলো। তখন টিভিতে বিভিন্ন সিরিয়াল, মুভি দেখতাম। আর আমার সামনে যেনো ঠিক ওইগুলাই ঘটতে শুরু করলো।।সেখানে গিয়ে বিহান হাটু গেরে আমাকে তার ভালোবাসার কথা জানায়। সেদিন মনে হচ্ছিল এই বুঝি সব পেয়ে গেছি আমি। রাজি হয়ে গেলাম তার প্রস্তাবে। এভাবেই কাটছিলো আমার আর বিহানের প্রতিটি দিন। মানুষ বেশি খুশি হলে সব হারাতে হয়। আমার ক্ষেত্রেও তাই ঘটলো৷ ফুফির ফেমিলি দেশে আসল আর আমার সাথে তার ছেলের বিয়ে ঠিক করে ফেলে। বাসায় কাউকে কিছুই বলার সাহস পাচ্ছিলাম না কি বলব আমি তাদের? দেখতে দেখতে আমার গায়ে হলুদের রাত চলে আসলো। এর মাঝে আমি একবারও বিহানের সাথে দেখা বা কথা হয়নি। গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর সুযোগ বুঝে পালিয়ে আসি। কিন্তু সেই সময় আমার ভালোবাসা মিথ্যা প্রমাণিত হলো। সে জানতো আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে তবু্ও আমার সাথে যোগাযোগ করে নি। উলটা আমাকে বলেছিল বিয়ে করে নিতে।

—কথা প্লিজ আর বলিস না ভালো লাগছে না। আর কান্না থামা। আমার কত কষ্ট হচ্ছে বল এসব শুনে।

—আর প্রতি রাত আমি এসব ভেবেই ঘুমাতে যাই। কারণ আমার জীবনের পুরো মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল এই দিনগুলোই। প্রতিটি মুহূর্ত আমার জীবনের সবচেয়ে ভুল সময় ছিলো। একটা গান শুনবি?

— কি গান?

কেড়ে নিও রাতের যত ঘুম
আরো নিও বিষাদগ্রস্ত বেলা
মেনে নিও একলা থাকা
দূরে রেখো তোমার অবহেলা
শুধু রেখে দিও রেখে দিও
ভুল করে ভালোবাসা আমার অভিমান
আর রেখে দিও
আমাকে নিয়ে তোমার ভুলে যাওয়া গান।
মুঠোফোন ব্যস্ততা ফিরিয়ে নিও
মুছে দিও অপেক্ষার বিনিদ্র রাত
আছে যত লুকনো দুঃখবোধ
নড়ে না উঠুক অচল দু হাত।
শুধু রেখে দিও, রেখে দিও
ভুল করে ভালোবাসা আমার অভিমান
আর রেখে দিও
আমাকে নিয়ে তোমার ভুলে যাওয়া গান।

—রাত অনেক হয়েছে কনক এবার বিছানায় যাওয়া দরকার।

—তুই কি এখনো বিহানকে ভালোবাসিস?

—আমাদের ঘুমানো দরকার। কাল ক্লাস আছে আমাদের। আর হ্যাঁ মুখ ধুয়ে ঘুমাতে যাবি। কেঁদে কেটে তো বুক ভাসিয়ে ফেলেছিস। এখন না ঘুমালে মাথা ব্যাথা করবে, তাই মুখ ধুয়ে ঘুমিয়ে পর৷

___________

কথা ও কনক ক্লাসে বসে আছে। প্রথম ক্লাস এখনো শুরু হয়নি। প্রথম ক্লাস নিবির স্যারের। তাই কথার একটু লজ্জা লাগছে স্যারের সামনে যেতে কালকের ঘটনার জন্য।
—এই কি হল তোর? এভাবে মুখে চন্দ্র সূর্য সব গ্রহণ করে বসে আছিস। কি চিন্তা করছিস বলতো?

—নিবির স্যার কিছু বলবে নাতো কালকের জন্য, আর স্যার আমাকে আর ওই ছেলেকে কি ভেবেছে কে জানে?

—আরে কি আর ভাববে এত টেনশন করিস না। আর ভাবলেও তোর কি?

— হুম। আচ্ছা স্যার এখনো আসে নি তাই না

—আমিও তোর মতই ক্লাসে বসে আছি। তুই যেমন জানিস না ঠিক আমিও জানি না।

—আচ্ছা বুঝলাম।

— ওই দেখ স্যার আসছে। উফ কি স্মার্ট এই নিবির স্যার তাই না

— হুম। আচ্ছা স্যার আসতেছে ক্লাসে মনযোগ দিতে হবে সামনে এক্সাম।

নিবির স্যার রুমে ঢুকেই একবার কথার দিকে তাকিয়ে তারপর ক্লাস শুরু করে। নিবির স্যার অন্যান্য কথা বলেনি ক্লাসে শুধু পড়ার কথাই বলেছে। কথা আর কনকও মনযোগ দিয়ে পুরা ক্লাস শেষ করে। কালকের কথা যেন কথা ভুলেই গেলো। ক্লাস শেষে নিবির বের হওয়ার আগে কথার সামনে দাঁড়িয়ে বলল,
—কথা ক্লাস শেষ করে আমার সাথে দেখা করবা তুমি।

—আচ্ছা স্যার।

নিবির স্যার ক্লাসরুম থেকে বের হয়ে চলে গেলেন। কথা অসহায়ের মতো স্যারের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। স্যার হয়তো কাল অনেক অপমান বোধ করছেন তাই কথাকে ডেকে সাজা দিবে৷ কথা কনকের দিকে তাকিয়ে রইল। কনক বলল,
—এভাবে না তাকিয়ে বল কি বলতে চাস?

—স্যার দেখা করতে বলল যে, আমাকে কি কোনো শাস্তি দিবে। সামনে এক্সাম ভালো করে পড়ব তা না একটার পর একটা ঝামেলা যেনো রেডি হয়ে থাকে।

—কিছুই বলবে না দেখে নিস ।

পরবর্তী সব ক্লাস শেষ করে কথা আর কনক নিবির স্যারের সাথে দেখা করতে গেলো। কথাকে আসতে দেখে নিবির উঠে দাড়ালো। কথা অনুমতি নিয়ে রুমে ঢুকলো সাথে কনকও আছে।
—কথা কাল যে ছেলেটা তোমাকে রিকশায় উঠিয়ে দিয়েছিলো সে কে? তাকে কি তুমি চেনো?

—আসলে স্যার হয়েছে কি আমি ওই ছেলেকে আগে কখনো দেখিও নি। কালকেই প্রথম দেখলাম। আমি নিজেও অনেক অবাক হয়েছি তার ব্যবহারে। যেনো আমাকে চেনে, আমাকে জানে। আর সে নিজেও বলেছে আমরা পরিচিত আগেও দেখা হয়েছে তবে আমার মনে নেই।

—বুঝলাম। তবু্ও তুমি সাবধানে আসা যাওয়া করো। কারো কোনো ভরসা নেই, কে ভালো আর কে যে খারাপ তাই বুঝা যায় না।

—আচ্ছা তাহলে স্যার আমরা যাই আমাদের টিউশন আছে।

—ঠিক আছে।

_________

কথা কলেজের মেইন গেইটের সামনে আসার আগেই ওইখানে আগে থেকেই একটা রিকশা বসে ছিলো। কথা গেইটের বাইরে বের হলেই রিকশা তার দিকে এগিয়ে আসে।
—আফা রিকশাত উডেন

—আমিতো আপনাকে ডাকি নি তাহলে আগে আগে চলে আসলেন যে? মনে হল আমার জন্যই এতক্ষণ অপেক্ষা করছিলেন।

—হ আফা। ভাইয়ে কইচে যতক্ষণ না আপনারে জায়গা মত পৌঁছাই দিয়া না আসি ততক্ষণ এখানেই দাঁড়িয়ে থাকতে।

—আমি আপনার রিকশায় যাব না। দয়া করে আপনি অন্য পেসেঞ্জার খোজেন। আমি আরেকটা নিয়ে নিব রিকশা।

—এডি কইয়েন না ভাই আমারে আস্ত রাখব না। আপনি দয়া কইরা অন্য রিকশা নিয়েন না। আমারটাতে চলেন।

—এই কথা চলে যা, এই বেচারা

—আচ্ছা। আমি যাচ্ছি। বাই!

কথা রিকশাতে উঠে চলে গেলো। কনক দাঁড়িয়ে আছে রিকশার জন্য। কিছুক্ষণ পর একটা বাইক এসে দাড়ালো তার সামনে। বাইকে বসা লোকটা হেলমেট খুলে ফেলল৷ তারপর কনকের দিকে তাকালো। কনক হা করে তাকিয়ে আছে। কনক বলল,
—একি আপনি এখানে

— হুম আমি।

চলবে ইনশাআল্লাহ,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here