উদ্দেশ্যহীন কথা পর্ব -২০+২১

#উদ্দেশ্যহীন_কথা
Part_20
#Writer_Fatema_Khan

আয়ান কনকের দিকে এগিয়ে যাবে ঠিক সেই সময় তার মোবাইলে কল আসে। সে দাঁড়িয়ে যায়। কে কল করেছে দেখার জন্য মোবাইল বের করে প্যান্টের পকেট থেকে। দেখে রোজা কল করেছে। ফোন রিসিভ করবে তার আগেই কল কেটে গেলো। আয়ান পরে কল করে কথা বলে নিবে এই ভেবে মোবাইলটা আবার পকেটে রেখে সামনে এগিয়ে যাবে কনকের কাছে তখন দেখে কনকের সামনে তূর্য আর কাব্য দাঁড়িয়ে আছে আর কনকের সাথে কি যেনো বলছে। এটা দেখে যেনো আয়ানের রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছিলো। এক মুহূর্তও আর সেখানে না দাঁড়িয়ে বাইকে উঠে চলে গেলো আয়ান। আয়ানকে দেখতে পেয়ে কনক হাত দেখিয়ে কয়েকবার নাম ধরে ডাকলেও ততক্ষণে আয়ান অনেক দূরে চলে গেলো।
—এমন কেনো করলো, আজ এসেও দেখা করলো না আমার সাথে!

কাব্য কনককে জিজ্ঞেস করলো,
—কে উনি, তোমার পরিচিত নাকি?

— হুম জিজু আমার পরিচিত। কিন্তু চলে গলো কেনো? আচ্ছা তাহলে আমি এখন যাই আমার দেরি হচ্ছে।

— ঠিক আছে যাও

তারপর কনক চলে গেলো। তূর্য নিজের গাড়ি এনেছিলো সেটা করে চলে গেছে আজ সে খুব ক্লান্ত তাই আজ আর আড্ডা দেওয়া হবে না। আর এদিকে কাব্যও তার বাইক করে চলে গেলো।
_________

কনক অনেকক্ষণ ধরে খেয়াল করছে কথা সেই কখন থেকে মন খারাপ করে বসে আছে। বাসায় আসার পর থেকেই কথা কিছুই বলছে না শুধু চুপ করে বসে আছে।
—কিরে কথা তুই এভাবে চুপ মেরে বসে আছিস কেনো? বলবি কি হয়েছে তোর? আমি তো ভেবেছিলাম আজ বাসায় আসলে আমাকে তুই আস্ত রাখবি না আর এদিকে তুই তো কথাই বলছিস না।

— ও কিছু না।

—অফিসে প্রথম দিন ভালো কাটে নি বুঝি?

— আমি আজ অনেক লেইট হয়ে গেছি জানিস। তার জন্য আমাদের নীলিমা ম্যামের ছেলে যে আমার জন্য সকাল থেকে অপেক্ষা করছিলো সে খুব রেগে গেছে।

—কি বলেছে তোকে নীলিমা ম্যামের ছেলে।

—কিছু বললেও তো ভালো ছিলো কিন্তু উনি আমার এত লেইট দেখে রাগে অফিস থেকে চলে গেছে।

— এটা তো খুব খারাপ হলো, তারপর তোকে নীলিমা ম্যাম কি বললো?

—ম্যাম বললো ওনার ছেলে এমনই। এগুলো নিয়ে চিন্তা না করতে।

—তাহলে তো সব ঠিক আছে কোনো চিন্তার বিষয় নেই।

—তুই যতই বল চিন্তার বিষয় নেই, কিন্তু আমার জবের প্রথম দিন এমন কিছু আমার কাজের জন্য একদম ভালো না। এমনিতেই আমার যা কপাল এর থেকে ভালো আর কি হতে পারে বল।

—তুই এসব নিয়ে একদম ভাবিস না। দেখলি তো নীলিমা ম্যাম তো বলেছে ওনার ছেলে এমনই। এখন অন্য কথা বল

— হুম তাই যেনো হয়, নীলিমা ম্যামের ছেলে যেনো আমার উপর রেগে না থাকে। আচ্ছা শোন তুই কাব্যকে আগে থেকেই চিনতিস নাকি?

—ইয়ে মানে চিনতাম মানে ওই দিন কলেজ এসেছিলো তোর সাথে দেখা করতে এসেছিলো। কিন্তু ওইদিন তোর ইন্টারভিউ ছিলো তাই দেখা হয়নি। ওইদিন আর কি আমার সাথে কথা বলেছিলো।

— তুই কি এটা জানিস কাব্যই হলো সেই ছেলে যার সাথে আমার পাঁচ বছর আগে ট্রেনে দেখা হয়েছিলো।

— হুম জানি আমাকে ওইদিন বলেছিলো তাই তো আমি ওইদিন তোকে চালাকি করে নিচে পাঠালাম।

—তুই জানিস আমি কত ভয় পেয়ে গেছিলাম তোর জন্য। এমনকি আমি কাব্যকে ওইরাতে থাপ্পড় পর্যন্ত মেরেছি।

— কিহ্! কেনো মারলি, তুই জানিস তোকে কত ভালোবাসে কাব্য জিজু।

— আমার তোর জন্য খুব চিন্তা হচ্ছিলো তখন কি করব বল। আর কাব্য তোর কাব্য জিজু কি করে হলো শুনি?

— আজ না হয় কাল তো সে আমার জিজুই হবে তাই না।

— তোরা একটু বেশিই ভেবে ফেলছিস। আমি এখনো বিহানকে ভুলতেই পারি নি এত বছর পরেও সেখানে নতুন কাউকে নিয়ে ভাবা নিছক বোকামি ছাড়া কিছুই না।

— তবু্ও আমি তোকে বলব কাব্য জিজু খুব ভালো ছেলে। আমি যতটুকু বুঝতে পেরেছি তোকে খুব ভালোবাসে। আর ভালোবাসা সবসময় পাওয়া যায় না। আর এভাবে অবহেলা পেতে থাকলে হয়তো সেও আর তোর পিছু পিছু ঘুরবে না। তখন তোকে পস্তাতে না হয়।

— আচ্ছা এসব কথা বাদ দে। এখন বল আজ এসেছিলো সে?

— হুম আজ এসেছিলো কিন্তু আমার সাথে কথা না বলেই চলে গেলো। আমি কয়েকবার তাকে ডেকেছিলাম পেছন থেকে কিন্তু সে অনেক দূরে চলে গিয়েছিলো। তাই আর কথা হয়নি।

—উনি তোর উপর রেগে যান নি তো কোনো কারণে?

— তাও জানিনা।

কনক কেমন মনমরা হয়ে বসে রইলো। কথাও আর কথা বাড়ালো না। দুইজনই চুপ করে বসে রইলো।
________

কাব্য নিজের রুমে বসেই কথার কথাই চিন্তা করছিলো। আজও দেখা হলো না তার।
—আচ্ছা কথা আজ কলেজ আসে নি কেনো? ওকে একবার দেখার জন্য অফিস না করেই চলে এলাম আমি। যেখানে নতুন এমপ্লয়ির সাথে দেখা করা খুব দরকার ছিলো আমার। কলেজের সামনেই ছিলাম আমি একবারও দেখি নাই তাকে। আর কনক যখন বাইরে আসলো তাকে জিজ্ঞেস করতে গিয়েও করা হলো না। তার আগেই কনক কাউকে ডাকা শুরু করলো, আর ওই লোক তো বাইক নিয়ে তার আগেই চলে গেলো। আর ওমনিই সে মন খারাপ করে চলে গেলো। কি হলো কে জানে তাই আর কথা বাড়ালাম না। কিন্তু কথার সাথে দেখা হলো না অফিসের কাজও হলো না। যাই হোক কাল অফিসে যেতেই হবে, তার মানে কালও কথার সাথে দেখা হবে না। আরেকটা দিন আমার প্রেয়সীর সুন্দর মুখ টা দেখা হবে না।
_________

একের পর এক সিগারেট জ্বালাচ্ছে আয়ান।
— কনক কি তাহলে তূর্যকে পছন্দ করে। আর ভেবেছি হয়তো সেও আমার মতই আমাকে পছন্দ করে। কিন্তু আমার কনকের সাথে একবার হলেও কথা বলা প্রয়োজন। কাল আমার কনকের সাথে কথা বলতেই হবে৷ এভাবে প্রত্যকেদিন এভাবে থাকা সম্ভব না আমার পক্ষে।
________

খুব সকালেই প্রথম ট্রিপেই বাসে উঠলো রোজা আর আয়ানের মা। আয়ানের সাথে সকালে বের হওয়ার আগেই কথা বলে বের হয়েছে তারা। রোজার এইচএসসি এক্সাম শেষ হয়েছে কালকেই। তাই আজ তারা ঢাকা চলে যাচ্ছে। আর ২-৩ ঘন্টার ভেতর তারা ঢাকায় পৌঁছে যাবে।
— মা আমরা কি এখন থেকে সত্যি ভাইয়ার সাথেই থাকব

— হ্যাঁ রে মা। তোর ভাইয়া একা ঢাকায় থাকে। সবকিছুতেই তার কত কষ্ট হয়। তার থেকে ভালো আমি আর তুই ওইখানেই থাকব তাহলে তোর ভাইয়েরও একটু সুবিধা হবে আর তোকেও একটা ভালো ভার্সিটিতে এডিমিশন করাতে পারব।

— ঠিক বলেছো মা। এখন শুধু ভাইয়ার জন্য একটা মিষ্টি বউ আর আমার জন্য একটা ভাবি নিয়ে আসো তাহলেই হবে।

— তোর ভাই তো কাকে যেনো পছন্দ করে তাকে ছাড়া বিয়েই করবে না। বললো তো আমরা ঢাকা গেলে আমাদের সাথে কথা বলবে এই বিষয়ে দেখি কি বলে।
________

আজ কথা ৯ঃ৩০ টায় অফিস গিয়ে বসে আছে। আজ কোনোকিছুর বিনিময়ে নীলিমা ম্যাম আর ম্যামের ছেলেকে নিরাশ করবে না। সবার আগে কথাই অফিসে এসে পরেছে। ১০টার দিকে নীলিমা আর কাব্য অফিসে চলে আসে। আসার কিছুক্ষণ পরেই কথাকে তাদের রুমে ডাকা হয়। কথা খুব তাড়াতাড়ি সব ঠিকঠাক করে তাদের রুমের দিকে এগিয়ে যায়।
#উদ্দেশ্যহীন_কথা
Part_21
#Writer_Fatema_Khan

কথা খুব তাড়াতাড়ি সব ঠিকঠাক করে তাদের রুমের দিকে এগিয়ে যায়। দরজার সামনে এসে বড় করে একটা শ্বাস ছাড়ে তারপর দরজায় নক করে হালকা ফাক করে বলে,
—মে আই কাম ইন ম্যাম

—ইয়েস কাম ইন কথা

নীলিমা খান হেসে কথাকে ভেতরে আসতে বললো। কাব্য মেয়েটির কন্ঠে শুনে অবাক সাথে তার মাও মেয়েটিকে কথা বলে সম্মোধন করলো। কথা হাস্যোজ্জ্বল মুখে ভেতরে ঢুকলো। কাব্য মেয়েটিকে দেখার জন্য চেয়ার থেকে উঠে দাড়ালো। কাব্য উঠে দাড়াতেই পুরো ফ্রিজ হয়ে গেছে আর কথাও কম অবাক হয়নি। দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে। কাব্য আর কথাকে এভাবে দেখে নীলিমা খান বলে উঠলো,
— তোমরা দুইজনে বসো তারপর কাজের কথা বলি।

কথা নিজেকে সামলে বলে উঠলো,
—গুড মর্নিং ম্যাম এন্ড গুড মর্নিং স্যার

— গুড মর্নিং কথা। দুইজনে বসো।

কাব্য আর কথা নীলিমার বরাবর সামনে থাকা চেয়ার দুইটাতে বসে। কাব্য আর কোনো কথাই বললো না। সে এখনো শকড হয়ে আছে তার যেনো এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না কথা তার সামনে বসে আছে। সে যেনো এক ঘোরের ভেতর আছে এটা সত্যি নাকি মিথ্যা?
_________

রোজা বাসে বসে বাসের জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে। খুব দ্রুত গ্রামের চাষ করা জমি পেছনে ফেলে যাচ্ছে। ছোট ছোট দিঘি গুলোও ফেলে ছুটে চলছে বাস টি। সূর্যের আলোতে বিলের পানি যেনো চিক চিক করছে। রোজা এর আগে কখনোই ঢাকা আসে নি। এই প্রথম ঢাকা যাচ্ছে তাই তার মনে খুশির শেষ নেই সাথে ভাইয়ের সাথেও দেখা হবে। কিন্তু নিজের গ্রাম ছেড়ে যেতেও তার কম কষ্ট হচ্ছে না। চোখের কোণে পানি জমে আছে। তখনই রোজার মায়ের মোবাইল বেজে উঠলো। রোজা মায়ের আড়ালেই চোখের পানিটা মুছে ব্যাগ থেকে মোবাইল বের করলো। মোবাইলের স্ক্রিনে আয়ানের নাম্বার দেখে রোজার মুখে হাসি ফুটে উঠলো।
— হ্যালো ভাইয়া

— হুম। কি করছিস তোরা, খারাপ লাগছে না তো বাসে?

— না ভাইয়া আমার খুব ভালো লাগছে। কতদিন পর তোমার সাথে দেখা হবে আর মা ঘুমিয়ে আছে। জানোই তো মায়ের শরীরটা ভালো না। তবে একটু একটু খারাপও লাগছে বাড়ির জন্য। গ্রামের সবাইকে ছেড়ে চলে আসলাম তো তাই।

— চিন্তা করিস না তুই। এখানে আসলে সব ভালো লাগবে। আর আমার কিছুক্ষণ দেরি হতে পারে তোরা কিন্তু বাস থেকে নেমে ওখানেই থাকিস। আর আমি না আসা পর্যন্ত কোথাও যাবি না। আর ভয় পাবি না একদম ঠিক আছে।

—আচ্ছা আমরা কিছুক্ষণ অপেক্ষা করবো সমস্যা নাই। আর আমি কি এখনো ছোট নাকি যে ভয় পাব।

—আচ্ছা পাকা বুড়ি তুই আমার দাদি আম্মা তুই এবার ঠিক আছে তো?

—এতটাও বুড়ি হয়নি আমি হুহ

— হাহাহা! আচ্ছা ঠিক আছে রাখছি এখন। বাই!

— বাই! ভাইয়া।

আয়ান ফোন কেটে নিজে নিজে বললো,
—মা আর রোজা তো কিছুই চেনে না আমি এখন যদি বাস স্ট্যান্ডে থাকতে পারতাম তাহলে বেশি সুবিধা হত। কারণ তাদের আসতে আরও ৩০ মিনিটের মত সময় লাগবে। কিন্তু এদিকে আমার আরও অনেক কাজ পরে রয়েছে। কি করবো এখন।

এসব নিজে নিজে বলেই আয়ান পেছনে তাকিয়ে দেখে তূর্য দাঁড়িয়ে আছে। মুহুর্তের মধ্যে আয়ানের মুখটা অন্ধকারে ছেয়ে গেলো সাথে রাগও হলো। এই তূর্যকে দেখলেই আয়ানের রাগ উঠে যায়। তূর্য হাসি মুখ নিয়েই আয়ানের কাছে এসে দাড়ালো।
— আপনার মা আর বোন আসতেছে ঢাকায়?

—জি স্যার। আসলে আমার বোনের এইচএসসি এক্সাম শেষ হয়ে গেছে তাই ভাবলাম ঢাকায় নিয়ে আসি আর একটা ভালো ভার্সিটিতে এডমিশন করাই দিব। আর আমিও এখানে একা থাকি তাই আর কি।

— বুঝলাম। তা আপনি ওনাদের রিসিভ করতে চলে যান। ওনারা নতুন আসছেন ঢাকায় আপনি কিছুক্ষণ আগে গিয়েই ওনাদের জন্য অপেক্ষা করুন।

—তাহলে আমার অফিসের কাজ কে করবে? কমপ্লিট তো করতে হবে তাই না?

—কাল কমপ্লিট করবেন তাহলেই হলো। আর আমি নিজেই কিন্তু আপনাকে যেতে বলছি। অচেনা যায়গায় দুইজন মহিলা মানুষ এভাবে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করবে ভালো দেখায় না। আর ঢাকার ভেতর কে ভালো আর কে খারাপ বুঝার কোনো উপায় নেই।

—আপনি ঠিক বলছেন স্যার। আমার যাওয়া দরকার।

— হুম যান আপনি।

—আচ্ছা স্যার আমি তাহলে যাচ্ছি।

আয়ান তূর্য থেকে বিদায় নিয়ে বাস স্ট্যান্ডের উদ্দেশ্যে চলে গেলো। তূর্যও নিজের কাজে মন দিলো।
_________

কাব্য সেই কখন থেকে কথার মুখের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। নীলিমা খান যে তার ছেলের হাবভাব খেয়াল করেন নি তেমনটা কিন্তু না। তিনি সব খেয়াল করছেন কিন্তু এটাই বুঝতে পারছেন না তার ছেলে কথা কে আগে থেকেই চিনে নাকি আজ দেখেই ভালো লেগেছে। আর বেচারি কথা কিছুই বলতে পারছে না নিচের দিকে তাকিয়ে নিজের সকল কাজ বুঝে নিচ্ছে। অনেকটা লজ্জা পাচ্ছে কথা কাব্যের মায়ের সামনে কাব্য এভাবে তাকিয়ে থাকার কারণে। কাব্যের মা কথার পরিস্থিতি বুঝতে পেরে বলে,
— কাব্য তোর যদি বাইরে কাজ থাকে তুই যেতে পারিস। এখানে তোর কোনো কাজ নেই আপাতত।

—না মা আমি এখানেই ঠিক আছি।

—প্রতিদিন তো অফিস থেকে যাওয়ার জন্য উতলা হয়ে পরিস আর আজ কিনা যেতেই চাইছিস না।

— আসলে মা আমি ভাবলাম যে অফিসের দিকে মন দেওয়া দরকার। তাই আমি এখন থেকে রোজ অফিস আসব আর নিজের সব কাজ করবো। কি ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাই না? আর নতুন এমপ্লয়ি কেও তো আমাকেই সব কাজ বুঝিয়ে দিতে হবে তাই না, তাই আমি আর একদিনও অফিস মিস দিব না।

— হুম তা তো দেখতেই পাচ্ছি কথাকে তুই কত কাজ বুঝাচ্ছিস আর কিভাবে কিভাবে বুঝাচ্ছিস। এভাবে কাজ করলে তোর বাবা এসে দেখতে বিজনেস শেষ হয়ে গেছে।

—উফ মা তুমি তো আমার উপর একটু ভরসা করতে পারো তাই না, দেখবে দুই এক দিনের ভেতরে আমি সব কিছুই নিজের আয়ত্তে আনতে পেরে গেছি।

—ঠিক আছে দেখি তুই কি করতে পারিস, কিন্তু আমাকে ডেইলি তোর সাথেই অফিস আসতে হবে যা দেখছি।

— হ্যাঁ তুমিও আসবে আমার সাথে তারপর যখন মনে হবে এবার আমি পারফেক্ট তখন থেকে না হয় তুমি আর অফিস এসো না। ততদিন আমিও চাই তুমি আমার সাথে অফিস আসো।

—আচ্ছা কথা তুমি গিয়ে নিজের টেবিলে গিয়ে বসো আর বাকি কাজ গুলো কমপ্লিট করে আমার কাছে নিয়ে আসো।

— ওকে ম্যাম।

কথা যে ফাইল গুলোতে কাজ করছিলো সেগুলো নিয়ে রুম থেকে বের হয়ে আসলো। কাব্য কথার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ছিলো। কাব্যকে এভাবে দেখে কাব্যের মা বললো,
— কাব্য সে বের হয়ে চলে গেছে আর দেখা যাচ্ছে না। এবার আমার দিকে ফির আর কিছু কাজ কর।

কাব্য তার মায়ের কথায় কিছুটা লজ্জা পেয়ে মাথা চুলকে সামনে ফিরে মায়ের দিকে তাকিয়ে হালকা হেসে নিজেও কাজ করতে লাগলো। আর এ দেখে কাব্যের মাও মুচকি হাসলো। সে ঠিকই তার ছেলে যে কথাকে পছন্দ করে তা বুঝতে পেরেছে।
_________

প্রায় ১০ মিনিট ধরে আয়ান বাস স্ট্যান্ডের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। তাদের গ্রাম থেকে আসা বাসটা এখনো আসে নি। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই বাস এসে পরবে। এর মাঝে কয়েকবার রোজার সাথে আয়ানের কথা হয়। আরও ৫ মিনিট পর রোজাদের বাস এসে থামলো স্ট্যান্ডে। প্রথমে আয়ানের মা নামলো তার পরেই রোজা। তাদের দেখে আয়ানের মুখে হাসি ফুটে উঠলো আর তাদের দিকে এগিয়ে গেলো। আয়ানের মা আর রোজাও আয়ানকে দেখে এগিয়ে আসলো আয়ানের দিকে।

চলবে ইনশাআল্লাহ,,,,,
চলবে ইনশাআল্লাহ,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here