এক_রক্তিম_ভোর পর্ব ৩

#এক_রক্তিম_ভোর
#প্রভা_আফরিন
#পর্ব_৩

রেস্টুরেন্টে বসে আছে নাবিলা। অয়নের জন্য অপেক্ষা করছে সে। আজ অয়নের সাথে দুপুরে লাঞ্চ করতে এসেছে। অয়নই সকালে দাদিকে ফোন দিয়ে বলে রেখেছে। তবে অয়নের এখনো দেখা নেই। তার অফিস থেকে আসতে লেইট হচ্ছে। নাবিলা অলস ভঙ্গিতে মেনু কার্ড উলটে চলেছে। ঠিক তখনই পাশে কেউ শব্দ করে চেয়ার টেনে বসলো। নাবিলা মেনু কার্ড থেকে মাথা তুলে দেখলো প্রয়াস ভাইয়া। কিছুটা চমকেও গেলো।
নাবিলা বললো,
‘ ভাইয়া তুমি এখানে?’

‘ একই প্রশ্ন তো আমারও। তুই এখানে কেনো?’

‘ ইয়ে.. মানে..’

‘ তোর ফিয়ন্সি অয়নের জন্য ওয়েট করছিস তাইতো। আমি বন্ধুদের সাথে এসেছিলাম। যাওয়ার পথে তোকে দেখলাম। আজকের লাঞ্চটা নাহয় তোদের সাথে করি। অয়নের সাথেও পরিচয় হয়ে যাবে।’

‘ তুমি জানলে কিভাবে?’

‘ দাদিকে ফোনে কথা বলতে শুনেছি। তোর হবু সব তোর দাদি কে জানায়। সেও বুঝে গেছে কাকে বললে কাজ হয়।’

নাবিলা আর কথা না বলে চুপচাপ বসে রইলো। অয়ন যতই স্মার্ট হোক বা নাবিলাকে স্মার্ট করতে চাক না কেনো। নাবিলা জানে অয়নের মনটা খুবই নিচু। অন্যের ভালোলাগা খারাপ লাগার কোনো মূল্যই দেয় না। নাবিলার তো না ই। আর নাবিলার সাথে ছেলে বন্ধুদেরও পছন্দ করে না। প্রয়াস ভাইয়াকে করলে হয়। মনে মনে চাইলো নাবিলা।

কয়েক মিনিট পেরোতেই অয়ন এলো। একদম ফরমাল ড্রেসআপ এ এসেছে। নাবিলার পাশে প্রয়াস কে বসে থাকতে দেখে ভ্রু কুচকে তাকালো। প্রয়াস নিজে থেকেই হাত বাড়িয়ে দিয়ে পরিচয় দিলো। অয়ন সৌজন্য দেখিয়ে হ্যান্ডশেক করে বসে পড়লো। অয়নের সাথে একজন মেয়েও আছে। অয়নের বোন দিশা।

দিশা নাবিলাকে জড়িয়ে ধরে কুশলাদি করলো। নাবিলা এবং প্রয়াস বসেছে একপাশে আর অন্যপাশে অয়ন এবং দিশা। দিশা প্রয়াসের সামনাসামনি বসেছে। প্রয়াসকে আগে কখনো দেখেনি। আর না পরিচয় হয়েছে। দিশা কিছুটা আগ্রহী হয়ে উঠলো প্রয়াসের প্রতি। বারবার আড়চোখে তাকাতে লাগলো। কিন্তু প্রয়াস সেদিকে ভ্রুক্ষেপহীন।

অর্ডার নিতে ওয়েটার বয় আসলে অয়ন নিজের এবং নাবিলার খাবার অর্ডার দিলো। সব হাফ বয়েল এবং সাথে স্যুপ। নাবিলা কোনো দ্বিরুক্তি করলো না বা সেই সুযোগটাই পেলো না। অয়নকে অর্ডার দিতে দেখে প্রয়াস একবার নাবিলার দিকে তাকালো। নাবিলা নির্বিকারভাবে বসে আছে। প্রয়াস কিছুটা অবাক হলো। নাবিলা জীবনেও এইসব খাবার খেতো না। স্যুপ তো ওর জীবনেও পছন্দ না। সেই মেয়ে এসব খাবে!

মেনু কার্ড হাত ঘুরে প্রয়াসের কাছে আসতেই ও বিরিয়ানি অর্ডার দিলো। সাথে কোক। ওর অর্ডার শুনে নাবিলা বাদে বাকি দুজন অদ্ভুত চোখে তাকালো যেনো আজব কিছু অর্ডার করেছে। প্রয়াস ড্যাম কেয়ার ভাব নিয়ে বসে রইলো। ক্ষানিক বাদে খাবার এলে প্রয়াস হাত দিয়ে খাওয়া শুরু করলো। এটা দেখে অয়ন নাক ছিটকালো। প্রয়াসকে ওর একদমই ভালো লাগছে না। কিন্তু সৌজন্য রক্ষার্থে কিছু বলছে না। দিশার কাছে প্রয়াসের এই ড্যাম কেয়ার ভাবটা খুবই ভালো লাগলো।

প্রয়াসের খাবার দেখে নাবিলা বারকয়েক ঢোক গিললো। এইসব স্যুপ, ছাইপাশ খেতে হয় অয়নের সাথে খেতে আসলে। তারওপর হাতও ব্যাবহার করতে পারে না। সব খেতে হয় চামচ দিয়ে। অয়ন একবার জিজ্ঞেস ও করে না নাবিলার কি খেতে ইচ্ছে করে। নাবিলাকে তাকাতে দেখে প্রয়াস কোকের গ্লাসটা এগিয়ে দিলো ওর দিকে। তা দেখে অয়ন সঙ্গে সঙ্গে বাধা দিয়ে বললো,

‘ নাবিলা এখন ডায়েটে আছে। ওর জন্য কোক বা ড্রিংকস খাওয়া ঠিক হবে না।’

নাবিলা অসহায় মুখে গ্লাসটার দিকে তাকালো। মনে মনে ঠিক করলো এখান থেকে ফিরেই কোক খাবে আগে। এইসব ডায়েট ফায়েট ওর জন্য না। নাবিলা অবশ্য ডায়েট মানতোও না। শুধু বাড়িতে এবং অয়নের সামনে দেখাতো। আর বাহিরে ইচ্ছামতো স্ট্রিট ফুড খেতো। কিন্তু অয়ন এখন ওর ওজন পর্যবেক্ষণ করতে শুরু করেছে। অয়নের মতে নাবিলার ওয়েট আরেকটু কমাতে হবে।

প্রয়াস অয়নের কথা উপেক্ষা করে বললো,
‘একদিন খেলে কিচ্ছু হবে না।’

আবার নাবিলার দিকে গ্লাস এগিয়ে দিলো। নাবিলা নিতে যেতেই অয়ন বলে উঠলো,

‘ নাবিলা তুমি কি ভুলে গেছো তোমায় এখনো পাঁচ কিলোগ্রাম বার্ন করতে হবে। সেখানে তুমি এসব খেতে চাইছো?’

‘ নাবিলার ওজন কত! যে ওকে পাঁচ কেজি বার্ন করতে হবে?’ প্রয়াস রুষ্ট গলায় বললো।

‘ ৫৫ কেজি। ৫০ তে আসতে হবে।’

‘ কেনো?’

‘ কারন ভাইয়া বেশি ওয়েট পছন্দ করে না। ভাবীর উচ্চতা ৫ ফুট দুই ইঞ্চি অনুযায়ী ৫০ কিলোগ্রাম মোটা লাগবে না, মানানসই হবে। ভাইয়া চায় ভাবী সবদিক দিয়ে পারফেক্ট হোক।’

দিশা ইচ্ছে করেই উত্তর টা দিলো। অনেকক্ষন ধরে প্রয়াসের সাথে কথা বলার সুযোগ খুজছিলো সে।
প্রয়াস গম্ভীর চোখে নাবিলাকে দেখলো। নাবিলা মাথা নিচু করে আছে। আসলে সে ভেতরে ভেতরে ফুসছে অয়নের প্রতি।

প্রয়াস তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে খাবারে মনোযোগ দিলো। খাওয়ার সময় অসাবধানতা বসত হাত লেগে কিছুটা স্যুপ নাবিলার হাটুর ওপর পড়ে। প্রয়াস সাথে সাথে টিস্যু নিয়ে মুছে দিতে দিতে বললো,

‘ এখনো খাওয়ার সময় জামাকাপড় নষ্ট করার অভ্যাস গেলো না তাইনা। মি.অয়ন আপনার কপালে দুর্ভোগ আছে এই ভ্যাবলাকান্তকে নিয়ে।’

প্রয়াস স্বাভাবিক ভাবে মুছে দিলো যেনো কিছুই হয়নি। অপরদিকে অয়ন বিষ্ফোরিত চোখে ওদের দিকে তাকিয়ে ছিলো। তা দেখে নাবিলা অনুমান করলো আজ দাদির কানে আরো কিছু মন্ত্রনা দেবে অয়ন নামক প্যারাটা।

প্রয়াস খাওয়া শেষে আয়েশ করে ঢেকুর তুললো। অয়ন এমনভাবে তাকালো যেনো প্রয়াস ভুল কিছু করেছে সে। প্রয়াসের তাতে কিছু আসলো গেলো বলে মনে হলো না। বরং সে ওয়েটারকে ডেকে আরো দুই প্লেট বিরিয়ানি প্যাক করে নিলো।

______

বাড়ি ফিরেই ঘুমিয়ে পড়েছিলো নাবিলা। সেই ঘুম ভাঙলো মোবাইলের আওয়াজে। প্রয়াস ফোন দিয়েছে। রিসিভ করে কানে দিতেই প্রয়াস বললো,

‘ এক্ষুনি এ বাড়িতে আয়। কোনো বাহানা চলবে না।’

কথা শেষ করে নাবিলাকে কিছু বলতে না দিয়েই লাইন কেটে দিলো প্রয়াস। অগত্যা বাধ্য হয়েই নাবিলা ঘুম জড়ানো চোখে, এলোমেলো চুলে চলে গেলো প্রয়াসের বাড়িতে।
ঘুমানোর আগে লেন্স খুলেছিলো। এখন আর পড়তে ভালো লাগছে না বলে একদমই কম ব্যবহার করা মোটা ফ্রেমের চশমাটা বের করে পড়ে নিয়েছে।

প্রয়াস সোফায় পা দুলিয়ে মোবাইল স্ক্রল করতে ব্যস্ত। নাবিলা তা দেখে বিরক্ত হলো। ওর সাধের কাচা ঘুমটা ভেঙে আসতে হয়েছে। প্রয়াস মুখ তুলে এক পলক নাবিলাকে দেখে আবার মোবাইলে মনোযোগ দিয়ে বললো,

‘ এক কাপ কড়া করে কফি বানিয়ে দে তো। মাথাটা খুব ধরেছে।’

‘ তুমি এইজন্য ঘুম ভাঙিয়ে আনলে আমায়? আমি ভাবলাম দরকারি কিছু হবে। ধুর!’

‘ আপাতত আমার জন্য এইটাই দরকারি কাজ। দুই বছর ছিলাম না বলে আমার মুখের ওপর ঘুরিয়ে কথা বলতেও শিখে গেছিস! আগে যেমন তুই বানাতি আজ থেকে আবারও তুই ই বানাবি। বুঝলি। আর শোন আমার বিরিয়ানিটা ঠান্ডা হয়ে গেছে একটু গরম করে আন। পেট ভরেনি আমার। তোর ননদ দিশার জন্য ভালো করে খেতেই পারলাম না।’

নাবিলা চোখ ছোট ছোট করে বললো,
‘দিশা কি করলো আবার?’

‘ খাবারের সময় কেউ হা করে তাকিয়ে থাকলে কি খাওয়া যায়। তোর ননদ তো আমাকেই দেখে যাচ্ছিলো যেনো কোনো গুরুত্বপূর্ণ নিউজ টেলিকাস্ট চলছিলো আমার মুখে। অবশ্য সুন্দর হলে যা হয় আরকি।’

‘ বিরিয়ানি আর কফি একসাথে আবার কিভাবে খায়?’

‘ আমি খাবো তোর সমস্যা কোথায়? যা জলদি।’

নাবিলা প্রয়াসের অগোচরে মুখ ভেঙচি দিলো। তারপর রান্নাঘরের চলে গেলো। বিরিয়ানি গরম করতে গিয়ে সেই ঘ্রানে নাবিলার নিজেরও খিদে পেয়ে গেছে। রেস্টুরেন্টে নামমাত্র খেয়েছে সে। তবুও নিজেকে সামলে খাবার এনে ডাইনিং টেবিলে রাখলো। বিরিয়ানি আর কফি কোন নবাবজাদা একসাথে খায় নাবিলার জানা নেই।

‘ নিন আপনার খাবার। আমি গেলাম।’

‘ চুপচাপ বসে পড়।’

‘ মানে? আমি কেনো বসবো? আমার ঘুম পাচ্ছে।’ বলে নাবিলা সত্যি সত্যিই হাই তুললো।

প্রয়াস এসে চেয়ার টেনে দিয়ে বললো,
‘ বসতে বলছি। এতো বিরিয়ানি আমি একা খেতে পারবো না। বাবাও বাড়িতে নেই তাই নষ্ট হবে। তুইও খাবি আমার সাথে।’

নাবিলা কি করবে বুঝতে পারলো না। ওর সত্যিই বিরিয়ানির গন্ধে খিদে পেয়েছে। বাড়িতে দাদি খেতে দেবে না। আবার প্রয়াসের কাছে নিজেকে হ্যাংলামি প্রকাশ করতেও চাইছে না। আবার ভাবলো হ্যাংলা ভাববে কেনো? খেতে তো প্রয়াস ভাইয়াই বলেছে।

‘ এতো ভাবার কি আছে শুনি। না খেলে নষ্ট হবে তাই বলেছি। না খেলে থাক, তুই গিয়ে ঘুমা।’

প্রয়াস কফি মগ হাতে নিয়ে বসে পড়লো। নাবিলাও কিছু না বলে চুপচাপ প্রয়াসের বরাবর বসে দুইটা প্লেট নিয়ে খাবার বাড়লো। প্রয়াস অর্ধেক কফি শেষ করে বিরিয়ানি প্লেট টেনে নিয়ে খাওয়া শুরু করে দিলো। নাবিলাও চুপচাপ খেয়ে নিলো। দুজনে মিলে পুরোটা শেষ করে ফেলেছে। শেষে নাবিলা শব্দ করে ঢেকুর তুলে সাথে সাথে মুখ চেপে ধরলো। মনে মনে নিজেকে গালি দিয়ে ভাবলো,

‘ইশ ভাইয়া কি ভাববে!’

প্রয়াস ঠোট টিপে হেসে চেয়ার ছেড়ে উঠে গেলো। ফ্রিজ থেকে কোক বের করে নাবিলার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো,

‘ দুটো গ্লাসে ঢেলে বারান্দায় আয়।’

নাবিলা বাধ্য মেয়ের মতো তাই করলো। অয়নের দেওয়া ডায়েটের চক্করে পছন্দের খাবার থেকে দূরে থাকতে হয়। আজ একটু ভালো লাগছে।

বারান্দায় হালকা হাওয়া বইছে। সূর্যের তেজ এখনো কিছুটা রয়েছে। তেরছাভাবে কিছুটা রোদ এসে প্রয়াসের বারান্দা দখল করেছে। টাইলসে প্রতিফলিত হয়ে সেই রোদ ঝলকে উঠছে।
নাবিলা গ্লাসে কোক ঢেলে আনতেই প্রয়াস বারান্দায় রাখা চেয়ারটায় বসতে বললো।

দীর্ঘক্ষণ কেউ কোনো কথা বললো না। এভাবে চুপচাপ বসতে নাবিলার অস্বস্তি শুরু হয়েছে। কারন প্রয়াস নাবিলার দিকে তাকিয়েই কোকের গ্লাসে চুমুক দিচ্ছে। রোদ ওদের গায়ে না লাগলেও টাইলসে আলোর ঝলকানিতে নাবিলার এলোমেলো কোকড়ানো চুলগুলো ঝলমল করছে। কপালে চুলের কাছটায় বিন্দু বিন্দু ঘামের দেখা মিলছে। মোটা ফ্রেমের চশমার ভেতর চোখজোড়া যে অস্বস্তি অনুভব করছে তা প্রয়াস বুঝতে পারলো। কানাডা থেকে আসার পর এই প্রথম নাবিলাকে চশমায় দেখলো প্রয়াস।

‘ আজকে তোকে একদম আগের নাবিলা মনে হচ্ছে।’
নাবিলা কিছু বললো না।

‘ তোর হবু বর তোকে পারফেক্ট পাশ্চাত্যের রমনী করতে চাইছে। সবদিকে খেয়াল রাখছে কিন্তু পাশ্চাত্যের রমনীদের মতো আত্মবিশ্বাসী কেনো বানাচ্ছে না। নাকি সে চায় তুই বাইরে দিয়ে পারফেক্ট হ, আর ভেতরটা ফাকা থাকুক।’

প্রয়াসের এমন কথায় নাবিলা থতমত খেয়ে গেলো। কোনো উত্তর দিলো না বা কি উত্তর দেওয়া উচিৎ ভেবে পেলো না।

প্রয়াস আবার বললো,
‘ বাহিরের চাকচিক্যের চেয়ে নিজের মনোবল এবং আত্মবিশ্বাস বেশি গুরুত্বপূর্ণ। নিজের ভালো মন্দের ওপর কারো অন্যায় হুকুম মানা যে কিনা এখনো আপন নয়, এর মানে নিজের ব্যাক্তিত্ব হীনতার পরিচয় দেওয়া। ইচ্ছার বিরুদ্ধে মুখ বুজে অন্যের কথা মানার চেয়ে তার সামনে নিজের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়ে প্রকাশ করা উচিত। এতে অপর ব্যাক্তিটি কোনোকিছু চাপিয়ে দেওয়ার সুযোগ কম পাবে।’

নাবিলা মনোযোগ দিয়ে প্রয়াসের কথাগুলো শুনলো। আসলেই নিজের ভেতর আত্মবিশ্বাসের অভাব আছে নাবিলার। মনের কথা জোর দিয়ে প্রকাশ করতে পারে না।
প্রয়াস কোকটা শেষ করে শব্দ করে গ্লাসটা রেলিং এর ওপর রাখলো। তারপর নাবিলার দিকে তাকিয়ে বললো,

‘ বি কনফিডেন্ট অ্যাবাউট ইওরসেলফ।’

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here