এবং স্ত্রী পর্ব – ১৬

#এবং_স্ত্রী
#পর্ব_১৬
#Jannatul_Ferdos

অফিস থেকে ফিরেই উৎস নিরুপমার খোঁজ শুরু করেছে।আজ সে বিকালের মধ্যেই চলে এসেছে।নিরুপমা গত দুই আড়াই মাস ধোরে উৎসকে ঘুরিয়ে যাচ্ছে।যখনই উৎস জিজ্ঞাসা করে সে কি বন্ধুত্ব করবে কিনা একটার পর বাহানা দিয়েই চলেছে কখনো কখনো উৎসকে ধোরাই দেয় না।তবে এইবার উৎস একদম চেপে ধোরেছে৷ মুসকানের দোহায় দিয়ে অবশেষে নিরুপমা তাকে কথা দিয়েছে আজ তাকে উত্তর দেবে।কিন্তু এই মেয়ে এতো বড় বজ্জাত যে কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না উৎস।সে খুঁজতে খুঁজতে তার মায়ের রুমে যায়।রুমের ভিতরের দৃষ্ট দেখে উৎসের চোখ ছল ছল করে উঠে।মুসকান বসতে শিখে গেছে।সে বসে বসে লাফাচ্ছে। নিরুপমা আর তনিমা বেগম তার সাথে খেলছে।মুসকান আদো আদো করে মা মা করতেছে।উৎস এবার কেঁদে দেয় তার মেয়ে বসা শিখে গেছে।আদো আদো করে বুলি ফুটছে।উৎস মুসকানকে ডাক দেয়।মুসকান তার বাবার কণ্ঠ শুনে ফিরে তাকিয়ে খিল খিল করে হেসে দিয়ে আরো লাফানো শুরু করে।সত্যিই এই যুগের বাচ্চার অনকে এডভান্স। ৭ মাসের একটা বাচ্চা কিভাবে তার বাবাকে চিনে ফেলেছে।তবে মুসকান এখনো বেশিক্ষণ বসতে পারে না।পরে যায়।এখন ও ঠিক তাই হলো লাফাতে লাফাতে দুম করে পড়ে যায় যদি ও ব্যথা পায় নি কিন্তু ছোট মানুষ একটু ভয় পেয়েছে।এমন জোরে চিৎকার করে কান্না করে দিয়েছে উৎস দৌড়ে গিয়ে তাকে কোলে নিয়ে কান্না থামানোর চেষ্টা করে কিন্তু কে শুনে কার কথা। কান্না করেই যাচ্ছে।নিরুপমা উৎসের কোল থেকে তাকে নিয়ে থামানোর চেষ্টা করে।নিরুপমার কোলে গিয়ে কাধে মাথা রেখে মুসকান মুখে আঙ্গুল পুরে উম উম করতে থাকে। উৎস অবাক হয়ে যায় এতোক্ষণ ধোরে সে মুসকানের কান্না বন্ধ করতে পারল না আর নিরুপমার কোলে যেতেই সে থেমে গেল।তবে কি সত্যিই সে মুসকানের বেস্ট মা হয়েছে?
“নিরুপমা মুসকানকে আমার কাছে শুয়ে দিয়ে যাও। উৎস সবে এসেছে দেখো ওর কি কি লাগে….তনিমা বেগম বললেন
নিরুপমা মুসকানকে দিয়ে উৎসের সাথে রুমে যায়।নিরুপমা রুমে প্রবেশ করতেই উৎস দরজা আটকিয়ে নিরুপমাকে দেওয়ালের সাথে চেপে ধোরে।ঘটনার আকস্মিকতায় নিরুপমা ভয় পেয়ে যায়।উৎস আর নিরুপমা এখন খুব কাছাকাছি।দুজনেরই হার্টবিট ধুক ধুক করছে।নিরুপমা যেন হিম হয়ে যাচ্ছে। নিরুপমা নিজেকে ছাড়ানোর ব্যর্থ চেষ্টা করে বলে…
” কি করছেন উৎস ছাড়েন
“উহু আগে উত্তর দাও
” বলেছি তো দেব
“না আগে উত্তর দিতে হবে নাইলে আমি ছাড়বো না।
” প্রশ্নটা যেন কি ছিল?
উৎসের রাগ হচ্ছে তাও নিজেকে কন্ট্রোল করে বলে…
“আমার সাথে বন্ধুত্ব করবে?
” হুম
“শুধু হুম?
“আমি আপনার বন্ধুত্বের রিকুয়েষ্ট এক্সেপ্ট করলাম।
” আরো একটা প্রশ্ন ছিল
“কি?নিরুপমা এবার ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করে
” ঠোঁটের নিচে যে তিল আছে সেখানে প্রতিদিন একটা করে চুমু খেতে চেয়েছিলাম আজ অব্দি উত্তর দাও নি
“উম ঠোঁটের নিচের এই তিলে প্রতিদিন একটা করে চুমু খাওয়ার ও পারমিশন দিলাম।সেদিন ইচ্ছা করেই দেই নাই দেখতে চেয়েছিলাম কি করেন। আপনি আসলেই ব্যক্তিত্ব সম্পূর্ণ একজন মানুষ যার জন্য সেদিন আমি কোনো উত্তর না দেওয়ায় সেদিন থেকে আজ অব্দি আপনি একবার ও আমার পারমিশন ছাড়া চুমু দেন নাই।তবে হ্যা যেদিন আমাকে বউয়ের স্বীকৃতি দেবেন সেদিন থেকে আর পারমিশন চাইবেন না ওকে?
নিরুপমা কথাটি বলে উৎসকে পাশ কাটিয়ে আসতে গেলে উৎস হাত ধোরে টেনে নিয়ে আবার দেওয়ালে চেপে ধোরে।নিরুপমা কিছু বলার আগে তিলে একটা গভীর কিস করে উৎস ওয়াশরুমে প্রবেশ করে।নিরুপমা হাসবে না কাঁদবে বুঝতেছে না।
” বজ্জাত,ইতর, ছোটলোক,শয়তানের লিডার যখনই পারমিশন দিলাম ওমনি লুচুগিরি শুরু করে দিছে।ব্যাটা উৎস তুমি তো আমার প্রেমে পড়েছোই এখন শুধু তোমার মুখ থেকে শোনার অপেক্ষা হেহেহে।
কেটে যায় আরো ২ মাস।নিরুপমা আর উৎসের খুনশুটি চলতে থাকে।মুসকান এখন পুরোপুরি বসা শিখে গেছে।কিছু ধোরে দাঁড়িয়ে ও থাকতে পারে।দাঁত উঠেছে একটা। আরেকটার একটু খানি উঠেছে।এখন মুসকান নিরুপমাকে দেখলেই মা মা করে।যখন উৎসের কথা মনে পড়ে বাবা বাবা করে চিল্লায় আর কাঁদে।তখন উৎসকে ভিডিও কলে দেখানো লাগে।মুসকান ও তার বাবাকে ফোনের ওপারে দেখে খুশি।কিন্তু যখন ফোন এর মধ্যে উৎসকে ধোরতে যায় কিন্তু পারে না তখন হায়রে চিৎকার।নিরুপমাকে ফট করে কামড় দিয়ে বসে কখনো ফোন ধরতে পারলে বা হাতের কিছু থাকলে ছুড়ে মারে।৯ মাসের বাচ্চা মেয়ে এতো রাগি হতে পারে কেউ না দেখলে বিশ্বাস করবে না।তবে উৎস অনেক চেঞ্জ হয়ে গিয়েছ।নিরুপমাকে সবদিক থেকে সাপোর্ট করে।নিরুপমা একটা সনামধন্য ভার্সিটিতে ভর্তি হতে পেরেছে।ওদের এই খুনশুটি পূর্ন বন্ধুত্বের উপরে যে কালো ছায়া আসতে চলেছে তা তারা বুঝতে ও পারছে না।অরিত্রা মারা যাওয়া পর এই ৯ মাসে একটা বারের জন্য ও তার মা মিসেস ডালিয়া এ বাড়িতে আসেন নি এমনকি মুসকানকে দেখতে ও না।তবে উৎসের সাথে তার কথা হতো।হঠাৎ করেই এই ৯ মাস পর মিসেস ডালিয়ার আগমন ঘটে।তবে এই আগমন কি নিরুপমার জন্য মঙ্গলের না ক্ষতির তা একমাত্র আল্লাহ জানেন।মিসেস ডালিয়ার আগমনে কি হতে চলেছে নিরুপমার জীবনে?

চলবে!

আমার ৯ মাসের একটা বোন আছে।মুসকানের চরিত্রটা আমি তাকে কল্পনা করেই লিখি।ছোট হওয়ার জন্য দুঃখিত।এতো পরিমাণে গরম পড়েছে লিখার এনার্জি পাচ্ছি না। অবশ্যই গঠনমূলক মন্তব্য করবেন,ধন্যবাদ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here