এবং স্ত্রী পর্ব – ১৮

#এবং_স্ত্রী
#পর্ব_১৮
#Jannatul_Ferdos

“এই মেয়েকে তুমি ডিভোর্স দাও উৎস….খুব সহসায় কথাটি বলল মিসেস ডালিয়া বেগম।উৎস নির্জীব হয়ে তাকিয়ে আছে তার দিকে।তার থেকে হয়তো এমন কিছু আশা করেনি উৎস।
” কি বলছেন আম্মু ডিভোর্স কিভাবে
“কেন যেভাবে দেয়
” কিন্তু আম্মু
“কিসের কিন্তু উৎস?ও তোমার অরিত্রার আম্মুকে আমাকে অপমান করেছে। আর তাছাড়া ও যে মুসকানের ক্ষতি করবে না এর কি গ্যারান্টি আছে?
” না আম্মু ও এমনটা করবেন না
“আমি তাহলে মুসকানকে নিয়ে যাবো
” না আম্মু প্লিজ আপনি মুসকানকে নিবেন না।আমি মুসুকে ছাড়া থাকতে পারব না
“তাহলে নিরুপমাকে ডিভোর্স দাও
” আম্মু আমার বাবামা কখনোই রাজি হবে আর আমি তাদের কষ্ট দিতে পারব না
“ও তুমি তাদের কষ্ট দিতে পারবে না কিন্তু অরিত্রাকে কষ্ট দিতে পারবে?ঠিক আছে আর এক মূহুর্ত নয় এই বাড়িতে…. মিসেস ডালিয়া গজ গজ করে রুম থেকে বের হলেন।উৎস কয়েকবার আম্মু দাঁড়ান বল ডাকে কিন্তু তিনি শুনেন না।উৎসের রুম থেকে বের হয়ে সোজা প্রেমার রুমে যায়।মুসকান প্রেমার কোলে ছিল। নিরুপমা খাটের এক কোনায় বসে চুপ করে ছিল।তিনি হন্তদন্ত হয়ে প্রেমার থেকে মুসকানকে নিয়ে যায়।ঘটনার আকস্মিকতায় প্রেমা ঘাবড়ে যায়।তনিমা বেগম উঠে দাঁড়ান।কি হচ্ছে বোঝার চেষ্টা করছেন।
” আমি মুসকানকে নিয়ে যাবো। এইখানে ওকে রাখব না।
কথাটি শুনে যেন তনিমা বেগম আর প্রেমা আকাশ থেকে পড়লেন।নিরুপমা এবার তার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকালো।সে উঠেই নিরুপমাকে তার কোল থেকে নিয়ে যায়….
“কোন অধিকারে মুসকানকে নিবেন?
” কোন অধিকার মানে?আমি মুসকানের নানু।
“নানু?কথাটা হাস্যকর লাগলো না?মুসকানের বয়স কত ১০ মাসের কাছাকাছি আমি এই বাড়িতে এসেছি প্রায় ৭ মাস।কই এই ৭ মাসে তো দেখি নাই আপনি একবারের জন্য এ বাড়িতে মুসকানের জন্য এসেছেন।তার জন্য কোনো খেলনা কিনে পাঠিয়েছেন তাহলে আজ কেন নিজেকে তার নানু বলে পরিচয় দিচ্ছেন অধিকার খাটাচ্ছেন।মুসকান আমার মেয়ে আর আমি মুসকানকে কখনোই আপনার কাছে দিব না।
” এই মেয়ে একদম দরদ দেখাইতে আসবা না।মায়ের থেকে মাসির দরদ বেশি?তুমি ওর সৎ মা।আর সৎ মা কখনো মা হয় না।
“এই কথা গুলো বলেই তো উৎসকে ফোন দিয়ে ব্রেইন ওয়াশ করতেন। সৎ মা সৎ মাই হয়।যার দরুন উৎস কখনোই আমাকে মুসকানের মা হিসাবে এবং স্ত্রী হিসাবে মানত না।
নিরুপমা লাস্ট বলা কথা গুলোই এবার প্রেমা আর তনিমা বেগম অবাক হয়ে গেল।
” উৎসকে তিনি এসব বলতেন?….তনিমা বেগম অবাক সুরে জিজ্ঞেস করলেন
“হ্যা মা
” কিন্তু তুমি কিভাবে জানলে?
“মা বউ আমি এ বাড়ির সব খবরই রাখতে হই। মিসেস ডালিয়া উৎসকে ঠিক মধ্য রাতে ফোন দিত।যেহেতু অফিস টাইমে তিনি সুযোগ পেতেন না।রাতে কল দিলে উৎস বারান্দায় গিয়ে কথা বলত।আর ছোট থেকেই আমার ঘুম খুব পাতলা আবার মুসকানের জন্য আমি সেভাবে ঘুমাই না।তো উৎসকে আমি প্রায় দেখতাম বারান্দায় গিয়ে কারোর সাথে কথা বলত। আমি এইভাবেই তাকে লক্ষ্য করি আর তাদের কথার সারাংশ সারমর্ম দ্বারা বুঝতে পারি আমার প্রতি উৎসের এমন অবহেলা, অবজ্ঞার মূল কারন এই মানুষটা।
” আমি ভুল কি বলেছি?সৎ মা কখনোই আপন হয় না
“একদম ঠিক সৎ মা কখনোই আপন হয় না।যেমনটা আপনি কখনোই অরিত্রা আপুর মা হতে পারেন নাই।আর না পেরেছেন শুভাকাঙ্ক্ষী হতে।
এবার যেন আরেক দফা শক খেল সকলে।উৎস চোখ সরু করে তাকিয়ে আছে।
” তুমি কি বলছো ভাবি এসব আগা গোড়া মাথা কিছুই বুঝতেছি না।
“এগুলা তোমাদের বুঝতে হবে না।সময়ের অপেক্ষা করো সব জানতে পারবে।আর হ্যা আপনাকে বলছি মুসকানের দিকে হাত বাড়ানোর ও চেষ্টা করবেন না।ওকে আমি দিব না।ও আমার সন্তান বুঝতে পেরেছেন আপনি????…শেষের কথাটি চিৎকার করে বলে নিরুপমা।
” তুমি খুব বাড়াবাড়ি করছো।উৎস তুমি কিছু বলছো না কেন?
“আম্মু আমি মুসকানকে রেখে থাকতে পারব না….উৎস একটু অসহায় ভঙ্গিতে বলল
মিসেস ডালিয়া কিছু বললেন না নিজের রুমে চলে গেলেন।তার ভাব দেখে বোঝা গেল এতো সহজে তিনি যাবেন না।নিরুপমাকে জ্বালিয়ে তবেই যাবেন।তিনি পারুল বেগমের থেকে ও সাংঘাতিক।

চলবে!

দেরিতে পোস্ট করার জন্য দুঃখিত।গঠনমূলক মন্তব্য আশা করছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here