ক্রাশ পর্ব -০৩

#ক্রাশ
#পর্ব_০৩
#মুমতাহিনা_জান্নাত_মৌ
আসসালামু আলাইকুম।
সবাই কেমন আছেন?
আমি এখন একটা কবিতা আবৃতি করবো।
কবিতাটির নাম নোলক।
লিখেছেন আল-মাহমুদ

আমার মায়ের সোনার নোলক হারিয়ে গেলো শেষে
হেথায় খুঁজি হোথায় খুঁজি সারা বাংলাদেশে।
নদীর কাছে গিয়েছিলাম,,,,,,,,

মোহনা এই পর্যন্ত কবিতাটি বলতেই স্যার তাকে আটকে দিলো আর বললো কবিতা টা সুন্দর চয়েজ করেছো,
কিন্তু এই কবিতার সাথে তুমি যদি একটু অভিনয় করতে তাহলে অনেক বেশি সুন্দর হতো।
মোহনা সেই কথা শুনে একটা ঢোক গিললো।
এতোগুলো স্টুডেন্ট দের সামনে সে যে কবিতা আবৃতি করছে এটাই তার কাছে অনেক।
তার উপর স্যার অভিনয় করতে বলছে!!!
মোহনা তখন বললো,

স্যার আমি তো অভিনয় করতে পারি না।
তখন এক ম্যাডাম বললো শুধু হাত নেড়ে নেড়ে বোঝাবে।
মোহনা ম্যাডামের কথা শুনে হা করে তাকিয়ে রইলো।ম্যাডাম তখন মোহনাকে জিজ্ঞেস করলো বোঝ নি?

মোহনা মাথা নাড়িয়ে জানিয়ে দিলো সে বোঝে নি।
তখন ম্যাডাম বললো,
যেমনঃযখন বলবে আমার মায়ের তখন বুকে হাত দিবে আর মাকে দেখাবে আর নোলক বললে নাকে হাত দিয়ে দেখাবে।
মোহনা তার ম্যাডামের কথা শুনে সেইভাবেই অভিনয় করলো।
কিন্তু এমন অভিনয় করে কবিতা আবৃতি করতে তার খুব লজ্জা লাগছে।
তবুও লজ্জা শরম ত্যাগ করে সে কবিতা পাঠের সাথে অভিনয় চালিয়ে গেলো।
তখন সেলিনা ম্যাডাম বললো,
বাসায় গিয়ে বেশি করে প্রাকটিস করবে।
তাহলে আরো ভালো হবে।

মোহনা সেই কথা শুনে অনেক বেশি খুশি হলো।
তার মানে সে ফাইনাল রাউন্ডের জন্য সিলেক্ট হয়েছে।

মোহনা এই সুযোগে সাগরের দিকে তাকালো আর মনে মনে ভাবতে লাগলো সাগর নিশ্চয় তার দিকে দেখছে।
যেহেতু সে এখন সকল স্টুডেন্ট দের সামনে এসে কবিতা আবৃতি করছে।
আর সবার চোখ তো এখন তার দিকেই।
কিন্তু না!!!
সাগর অন্যজনের সাথে কথা বলছে।
তার দিকে একবারও তাকাচ্ছে না।

হঠাৎ ওসমান স্যার বললো তোমাকে সিলেক্ট করা হলো।
ফাইনালের জন্য আরো সুন্দর করে প্রস্তুতি নাও।
মোহনা সেই কথা শুনে তার সীটে গিয়ে বসলো।
আর মনে মনে ভাবতে লাগলো যার জন্য লজ্জা শরম ত্যাগ করে সবার সামনে গিয়ে কবিতা আবৃতি করলাম,
হাত নেড়ে নেড়ে অভিনয় ও করলাম,
তার তো আমার দিকে কোন খেয়ালই নাই।
মোহনার মন টা খারাপ হয়ে গেলো।
আর মনে মনে বিড়বিড় করতে লাগলো।
এইভাবে এক এক করে সবাই সবার কবিতা পাঠ করে শোনালো।

এবার যারা যারা গানের প্রতিযোগিতায় নাম দিয়েছে তাদের পালা।
মোহনা ঠিক করেছে সে একটা দেশাত্নবোধক গান গাইবে।
কবিতাটি যেমন সবার ভালো লেগেছে নিশ্চয় গানটিও ভালো লাগবে।
কারন বাড়িতে তো সবসময় সে গুন গুন করে গান গায়।
যখন যে গান শোনে সেটাই বার বার তার মনের মধ্যে ঘোরাঘুরি করে।
আর সারাদিন সেটাই গুন গুন করে।

কিন্তু মোহনা সবার সামনে গিয়ে যেই বলতে লাগলো,

প্রতিদিন তোমায় দেখি সূর্যের আগে,
প্রতিদিন তোমার কথা হৃদয়ে জাগে,
ও আমার দেশ,,,,,,,,,,,,
ও আমার বাংলাদেশ,,,,,,,,,,,

ঠিক তখনি রুমের সকল স্টুডেন্ট হেসে উঠলো।
মুহুর্তের মধ্যে ক্লাস রুমে হইচই পড়ে গেলো।
মোহনা গান থামিয়ে দিয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকলো।
এদিকে স্টুডেন্ট রা হইচই করেই যাচ্ছে।
মোহনার চোখে জল টলমল করছে।
তার গান শুনে সবাই যে এভাবে হেসে উঠবে সে ভাবতেও পারে নি।
তখন স্যার বললো stop stop.
silent please.
আর মোহনার দিকে তাকিয়ে বললো,

তুমি এসব কি গান গাইছো?
কোথায় থেকে গান শিখেছো?
গান গেয়েছো এর আগে?

মোহনা নিচ মুখ হয়ে উত্তর দিলো না স্যার।
সবার সামনে আজকেই ফাস্ট গাইছি।
স্যার তখন বললো সেইজন্য এমন ভুলভাল সুরে গাইছো।
তোমাকে গান থেকে বাদ দেওয়া হলো।
যাও তুমি তোমার সীটে গিয়ে বসো।
মোহনা মন খারাপ করে তার বেঞ্চে গিয়ে বসলো।
আজকে তার ভীষণ লজ্জা লাগছে।
সে সবার হাসির পাত্র হয়ে গেলো।
এদিকে ক্লাস রুমের সবাই মোহনার দিকে বার বার তাকাতে লাগলো।
মোহনা তাই নিচ মুখ হয়ে থাকলো।
সবার পারফরম্যান্স সে ঠিকভাবে দেখতেও পেলো না।

হঠাৎ সাগর কে গান গাওয়ার জন্য মঞ্চে ডাকা হলো।
কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় এটাই যে সাগর ও সেম গান চুজ করেছে।
তখন ওসমান স্যার বললো এই গান ছাড়া কি আর অন্য কোন গান নেই?
সবাই দেখি এই এক গানের পিছনে পড়ে আছে?
তখন রফিক স্যার বললো এর আগে যারা গেয়েছে তাদের একজনকেও ফাইনালের জন্য সিলেক্ট করা হয় নি।
তখন ওসমান স্যার বললো তাহলে তোমার টাও শুনি।
দেখি তোমার টা কেমন হয়?

সাগর ওসমান স্যারের কথা শুনে গাইতে লাগলো।
তার গান শুনে সবাই হাততালি দিলো।
তখন সেলিনা ম্যাডাম বললো তোমাকে সিলেক্ট করা হলো।
যাও বেঞ্চে গিয়ে বসো।
সাগর সেই কথা শুনে বেঞ্চে গিয়ে বসলো।

এদিকে মোহনার রাগ অভিমান সব দূর হয়ে গেলো।
সে ভাবতেই পারছে না সেম গান সাগরও চুজ করেছে।
আর সে সিলেক্ট ও হয়ে গেছে।
মোহনা মনে মনে ভাবতে লাগলো তাদের দুইজনের মনের কি মিল!!!!!
এটা কি করে সম্ভব হলো???
মোহনা সাগরের দিকে তাকিয়ে থাকলো।
কিন্তু এদিকে সাগর বাহিরে চলে যাচ্ছে।
কারন সে আর কোন প্রতিযোগিতায় নাম দেয় নি।
মোহনা সাগর কে চলে যাওয়া দেখে সেও চলে যেতে ধরলো।
যেখানে তার ক্রাশ থাকবে না সে সেখানে থেকে কি করবে?

তখন পলি মোহনাকে টেনে বসালো,
আর বললো,
কই যাচ্ছিস?
মোহনা বললো বাড়ি যাচ্ছি।
আমার তো আর কোন পারফরম্যান্স নাই।
পলি তখন বললো তুই তো খুব স্বার্থপর একটা মেয়ে।
নিজের পারফরম্যান্স শেষ তাই চলে যাচ্ছিস।
আমার পারফরম্যান্স দেখবি না?
এর পরেই তো ডান্স কম্পিটিশন শুরু হবে।
মোহনা ভুলেই গেছিলো যে এর পর ডান্স এর প্রতিযোগিতা হবে।
তাই মোহনা বসেই থাকলো।
কারন তার ফ্রেন্ড পলি এখন ডান্স করবে।

মোহনা রুমে বসে আছে ঠিকই কিন্তু বার বার বাহিরে তাকাতে লাগলো।
সে সাগর কে খুঁজতে লাগলো।
কিন্তু সাগর আর রুমে ঢুকলো না।
তার মানে সাগর চলেই গেছে।

প্রোগ্রাম শেষ হওয়ার পর মোহনা আর তার বান্ধুবীরা রুম থেকে বের হলো।
তারা সবাই এখন যে যার বাড়ি চলে যাবে।
হঠাৎ এক ছেলে গান গাইতে লাগলো,

প্রতিদিন তোমায় দেখি সূর্যের আগে,,,,,,,,,,
মোহনা আর তার বান্ধুবীরা পিছন ফিরে তাকালো।
ছেলেটি গান গাইছে আর তার বন্ধুরা হাসাহাসি করছে।
মোহনা বুঝতে পারলো ছেলেগুলো তাকে নিয়ে মজা করছে।
মোহনার ভীষণ রাগ হলো।
তার ইচ্ছা করছিলো কষে দুই গালে দুই টা চড় দিতে।
কিন্তু তারা স্কুলের বড় ভাই ছিলো।
তাই আর কিছু বললো না সে?
কিন্তু ছেলেটা সেই এক গান বলতেই আছে বলতেই আছে।
আর তাদের পিছু পিছু হাঁটছে।
তখন আরেক ছেলে বললো কি এক গান বার বার গাইছিস?
এই গান টা তো ফ্লপ হয়েছে।
তখন আরেকজন বললো গানের শিল্পী টা কিন্তু অনেক সুন্দরী ছিলো।
কিন্তু তার গলা এতো বেসুরে কেনো?
তখন আরেকজন বললো এসব বেসুরে গান বাদ দিয়ে অন্য কিছু বল এবার?
ছেলেটি তখন বললো আমার মায়ের সোনার নোলক হারিয়ে গেলো শেষে,,,,,

মোহনা এবার হাঁটা বাদ দিয়ে দাঁড়ালো।
আর পিছনের ছেলেগুলোকে বললো আপনারা এরকম করছেন কেনো?
স্যারের কাছে কিন্তু আপনাদের নামে complain দেবো।

ছেলেটা তখন বললো তুমি কি এসব কথা আমাদের বলছো?
কি করলাম আমরা?
মোহনা বললো আমার গাওয়া গান আর কবিতা বার বার বলছেন কেনো?
তখন ছেলেটি বললো ও,,,,?
তাই,,,,,?
এগুলো তোমার গান????
সরি ভুল হয়ে গেছে।
ম্যাডাম অটোগ্রাফ প্লিজ।

বাকি ছেলেগুলো সেই কথা শুনে হেসে উঠলো।
তখন মোহনার বান্ধুবীরা বললো মোহনা চল?
এদের সাথে কথাই পারবি না।
উলটা ঝামেলা করবে।
মোহনা সেই কথা শুনে চলে গেলো।
আর মনে মনে নিজেই নিজেকে বকতে লাগলো।
কেনো যে এসব প্রতিযোগিতায় সে নাম দিতে গেলো?
তবে ছেলেগুলোর চেহারা মনে রাখলো।
তারা যদি আরেকদিন তাকে এই নিয়ে ব্যঙ্গ করে তাহলে সে সত্যি সত্যি তার ক্লাস টিচার কে বলে দিবে।

মোহনা বাসায় এসে রাত দিন কবিতা প্রাকটিস করতে লাগলো।
কারন তাকে ফাস্ট হতেই হবে।
এদিকে তো সে দড়ি খেলায় ফাস্ট হয়েই আছে।

এক সপ্তাহ পর মোহনাদের স্কুলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হলো।
এবার প্রধান অতিথি হিসেবে এসেছে নব্য নির্বাচিত এম,পি।
যিনি এককালে এই স্কুলেই পড়াশোনা করেছেন।
তাই তিনি স্কুলের উন্নয়নে কাজ করতে চান।
সেইজন্য এম,পি স্যার কে খুশি করার জন্য খুব সুন্দর করে স্টেজ টাকে সাজানো হয়েছে।
আর এম,পি স্যার কে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য স্কুলের কয়েকজন স্টুডেন্ট কে ফুলের তোরা নিয়ে দাঁড় করানো হয়েছে।
হঠাৎ মোহনার ক্লাস টিচার রুবেল স্যার মোহনাকে ডাক দিলো আর বললো তুমিও এসো।
মোহনা সেই কথা শুনে তার স্যারের কাছে এলো।

স্যার মোহনাকে সাগরের সামনে দাঁড় করিয়ে রাখলেন।
আর তার হাতেও একটা ফুলের তোরা দিলেন।
দুই লাইন করা হয়েছে।
একটা ছেলেদের আরেকটা মেয়েদের।
আর মাঝখান দিয়ে এম,পি স্যার যাবেন।

মোহনা সাগরের সামনে দাঁড়াতেই,
তার হার্টবিট দ্রুত চলতে লাগলো।
কিন্তু সাগর ফুলের তোলা নিয়ে শুধু গেটের দিকেই দেখছে।
তার সামনে যে সুন্দরী সুন্দরী মেয়েরা দাঁড়িয়ে আছে সেদিকে ওনার খেয়ালই নাই।

হঠাৎ এম,পি সাহেব গাড়ি থেকে নামলেন।
আর সকল স্টুডেন্ট দাঁড়িয়ে ওনাকে অভ্যর্থনা জানালো।
আর যাদেরকে ফুলের তোরা দেওয়ার জন্য দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে তারা সবাই সবার হাতের ফুলের তোরা এম,পি স্যার কে দিয়ে দিলেন।

মোহনা ফুলের তোরা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ঠিকই কিন্তু সে শুধু সাগরের দিকেই তাকাচ্ছে।
এম,পি স্যার যে তার সামনে এসেছে সে খেয়ালই করে নি।
তখন তার পাশের মেয়েটা বললো এই মেয়ে?
কোন দিকে তাকিয়ে আছো?
ফুলের তোরা টা স্যার কে দাও?
মোহনা সেই কথা শুনে চমকে উঠলো।
আর সাথে সাথে ফুলের তোরা টা এম,পি স্যার এর এক সহচরী কে দিয়ে দিলো।
এদিকে সবাই মোহনার দিকেই তাকিয়ে আছে।
এম,পি স্যার ও কিছু টা লজ্জা পেলো।
কারন সবাই তো এম,পি স্যার কে ফুলের তোরা দিলো।
কিন্তু এই মেয়ে তাকে না দিয়ে তার সহচরী কে দিলো কেনো?
মোহনার এমন ভুলভাল কাজ দেখে তার পাশের মেয়েটা বললো এই মেয়ে কি করলে এটা?
যাকে ফুলের তোরা দিলে উনি তো এম,পি স্যার নন।
তুমি এটা কি করলে?
মোহনা তো সে কথা শুনে ভয় পেয়ে গেলো।
এখন রুবেল স্যার নিশ্চয় তার উপর রাগ হবে।

মোহনা রুবেল স্যারের বকার ভয়ে কিছুক্ষন ওনার থেকে নিজেকে আড়াল করে রাখলেন।
কিন্তু মোহনা কতক্ষন নিজেকে আড়াল করে রাখবে?
কারন হঠাৎ তার নাম ঘোষণা করলো স্যার কবিতা আবৃতি করার জন্য।
মোহনা তাই আর দেরী না করে মঞ্চের দিকে এগিয়ে গেলো।
সেখানে গিয়ে দেখলো সাগর ও একটা ডায়রি হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
এই প্রথমবার সাগর আর মোহনা মুখোমুখি হলো।
সাগর একবার মোহনার দিকে তাকিয়ে আবার অন্য মুখ হলো।
মোহনা আর দেরী না করে মঞ্চে গিয়ে কবিতা আবৃতি করতে লাগলো।
তার কবিতা আবৃতি করা শেষ হলে সে মঞ্চ থেকে নামলো।
আর তার আসনে গিয়ে বসলো।
তারপর এক এক করে সবাই সবার পারফরম্যান্স শেষ করলো।

অনুষ্ঠান একদম শেষ পর্যায়ে এসে গেছে।
এবার পুরুষ্কার ঘোষণার পালা।
মোহনার তো বুক কাঁপছে।
এই প্রথম সে কোন প্রতিযোগিতায় নাম দিয়েছে।
তার উপর সাগরের মতো ব্রিলিয়ান্ট এক স্টুডেন্ট ও প্রতিযোগিতায় নাম দিয়েছে।
যে প্রতিবার ফাস্ট হয়।
মোহনা তো ধরেই নিয়েছে এবারও সাগর কবিতা আবৃতি তে ফাস্ট হবে।
কিন্তু কবিতা আবৃতি তে ফাস্ট হিসেবে মোহনার নাম ঘোষণা করলো।
আর সেকেন্ড হিসেবে সাগরের নাম ঘোষণা করলো।
মোহনার বান্ধুবীরা তো সেই কথা শুনে চিৎকার দিয়ে উঠলো।
এই প্রথমবার কেউ সাগর কে হারালো।
মোহনার বিশ্বাসই হচ্ছে না যে সে সাগরকে হারিয়ে দিয়ে ফাস্ট হয়েছে।
মোহনা আর সাগর একসাথে মঞ্চে গেলো পুরুষ্কার নিতে।
মোহনার তো বিশ্বাসই হচ্ছে না যে সে সাগরের সাথে একই মঞ্চে উঠে পুরুষ্কার নিচ্ছে।
মোহনার আজ খুব আনন্দ হচ্ছে।
সাগর সেকেন্ড হয়েছে তবুও তার মুখে হাসি লেগেই আছে।
মঞ্চ থেকে নামার পর সাগর মোহনাকে বললো কংগ্রাচুলেশন।
এই বলে সে চলে গেলো।
একটুও দেরী করলো না।
আবার মোহনার দিকে তাকালোও না।

মোহনা খুশিতে একটা কথাও বলতে পারলো না।

সে তো এই দিন টার জন্যই অপেক্ষা করছিলো।
অবশেষে সাগরের সাথে মোহনার সামনাসামনি দেখা হলো।
এবং সাগর তার সাথে কথাও বললো।
এটা যে মোহনার জন্য কত বড় একটা আনন্দের ব্যাপার ছিলো সেটা শুধুমাত্র সেই জানে।

মোহনা দিন দিন সাগরের প্রতি দূর্বল হয়ে গেলো।
কিন্তু সে তার অনুভূতি কাউকে বলতে পারছিলো না।
সে এই কথা টা তার বান্ধুবীদের ও বলে নি।
তাছাড়া একটা মেয়ে হয়ে সে কি করে কোন ছেলেকে আগে ভালোলাগার কথা বলতে পারে।
সে দিন রাত সাগরের কথায় শুধু ভাবে।

এইভাবে মোহনা ক্লাস নাইনে উঠলো।
সাগরের মন জয় করার জন্য সে এক রোল করার অনেক চেষ্টা করেছে।
তবুও পারলো না এক রোল করতে।
তবে সে আগের চেয়ে অনেক উন্নতি করেছে।
এবার তার রোল হলো ৫,
এদিকে সাগর স্কুল থেকে বিদায় নিয়েছে।
কারন সে এবার এস,এস,সি পরীক্ষা দিচ্ছে।
তাই সে সাগর কে যাতে না হারিয়ে ফেলে তাই তার ফোন নাম্বার কালেক্ট করে।
কিন্তু একদিনও ফোন দেয় নি তাকে।
তবে প্রতিদিন নাম্বার টা বের করে দেখতে থাকে।
সাগরের মোবাইল নাম্বার টা এমন ভাবে মনের মধ্যে গেঁথে আছে যে এখন কেউ মোহনার বাবা বা ভাইয়ের নাম্বার জানতে চাইলে মোহনার মুখে আগে সাগরের নাম্বার টাই চলে আসে।
যার কারনে সে তার রেজিষ্ট্রেশন ফর্মেও ভুল করে সাগরের নাম্বার টাই দিয়ে দেয়।

সাগর যেহেতু এখন স্কুলে আসে না তাই মোহনার সাথে তার আর দেখাও হয় না।
সে সাগর কে ভোলার অনেক চেষ্টা করে তবুও ওর কথাই বার বার মনে হয়।

এদিকে আবার তার ক্লাস টিচার তো সন্দেহ করছে সাগরের সাথে তার সম্পর্ক আছে।
সেজন্য তিনি মোহনাকে অনেকগুলো উপদেশ ও দিলেন।
স্যারের উপদেশ শুনে মোহনা মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলো আর সে সাগরের কথা ভাববে না।
যে ছেলে তার কেউ নয় অযথা তার কথা সে কেনো ভাববে?????????

কিন্তু ভাগ্যের পরিক্রমায় আবার তাদের দেখা হয়।
তবে এবারের দেখা হওয়াটা একটু অন্য রকম ছিলো।

চলবে,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here