চিত্তদাহ লেখনীতে : শুভ্রতা আনজুম শিখা পর্ব ৯

#চিত্তদাহ
লেখনীতে : শুভ্রতা আনজুম শিখা
পর্ব ৯

🍂🍂🍂

শ্রেয়াকে বারান্দা দিয়ে নামিয়ে দিয়ে নুররা দরজা দিয়েই বেরিয়ে এলো। সকলের থেকে লুকিয়ে শ্রেয়াদের নিয়ে গাড়ির কাছে যাওয়ার সময় চন্দ্র দাড়িয়ে বললো,
এভাবে পালাতে ভালো লাগছে না।
~মানে? (নুর)
অরণ্য বাঁধা দিয়ে বললো,
আহনাফ! ভাই আমার! ভালোই ভালোই চল, বাঁশ খাওয়াস না দোস্ত!
~ভাইয়া নো! দৌড়ানি দিবে। ডোন্ট ডু ইট!
মাহতাব এগিয়ে বাধা দিয়ে বলতেই চন্দ্র ফিচেল হাসলো। ঘুরে দাঁড়িয়ে শ্রেয়ার বাবার লোকদের দিকে তাকালো। তারা চন্দ্রদের থেকে বেশ অনেকটাই দূরে। চন্দ্র চিৎকার করে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বললো,
এই! এই! অন্ধমন্ডলি!!! বিয়ের কন্যা নিয়ে গেলাম যে। তারা করবে না নাকি?
চন্দ্রের এমন কাজে শুভ্রতা সহ তার পুরো পল্টন অবাক। চন্দ্র শুভ্রতার হাতটা আরেকটু শক্ত করে ধরেই দৌড় লাগালো। ইতিমধ্যে অরন্য নুরের হাত ধরে আর আহাদ শ্রেয়ার হাত ধরে দৌড় লাগিয়েছে। মাহতাব তো চন্দ্রের ঘুরে দাঁড়ানোর সাথে সাথেই গাড়ির দিকে দৌড় লাগিয়েছে। পেছনে শ্রেয়ার বাবার দলবল আর সামনে ওরা। ওদের দেখে মনে হচ্ছে এখানে রীতিমতো কপোত কপোতীদের দৌড় প্রতিযোগিতা চলছে। গাড়ি চলতে শুরু করতেই নুর পেছন ফিরে তাকালো। চন্দ্ররা চিৎকার করে বলছে,
শাদি মোবারক!!!!
নুর দেখলো সকলের মুখেই বিশ্বজয়ের হাসি। নুরও হাসলো, সে ঠিক করছে কিনা ভুল তা তার জানা নেই। সে শুধু জানে সে কাউকে চিরকালের মত কষ্ট পাওয়া থেকে মুক্তি দিয়েছে। সে যদি ভুলও করে থাকে তবে আফসোস নেই, আক্ষেপ নেই।
_________________________________

আহাদের বাসার সামনে গাড়ি থামতেই নেমে দাড়ালো সবাই। বাড়িতে প্রবেশ করেই রিদিতা ক্ষিপ্ত কণ্ঠে বললো,
আপনার আর শুভ্রতার কি মাথার তার ছেড়া আহনাফ ভাই? আরেকটু হলেই ধরা খেতাম।
~ওনাকে বলছিস বল। আমাকে টানছিস কেনো? (শুভ্রতা)
~তুই নিজেও তো প্রায় সময় এমন উল্টা পাল্টা কাজ করিস। (রিদিতা)
~অকারণে নাম নিচ্ছিস যখন চল এখন ধরে নিয়ে ওদের বাড়িতে দিয়ে আসি তোকে। তখন আমার নাম জপিস।
শুভ্রতার কথায় দ্রুত নিজের হাত ছাড়িয়ে দূরে সরে দাড়ালো রিদিতা। মেকি হাসি দিয়ে বললো,
রাগ করিস কেনো? মজা করছিলাম।
শুভ্রতা এক দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। মাহতাব শাড়ী গহনাভর্তি কয়েকটা ব্যাগ এনে তিলোত্তমার হাতে দিয়ে বললো শ্রেয়াকে সাজিয়ে দিতে। মেয়েরা সকলে শ্রেয়াকে সাজাতে নিয়ে গেলেও শুভ্রতা আর নুর গেলো না। শ্রেয়াকে বারান্দা দিয়ে নামতে সাহায্য করার সময় রেলিং এর সূচালো কিছু দ্বারা হাত কেটে গেছে নূরের। এতো ঝামেলার মধ্যে ফার্স্ট এইড করার সুযোগ না থাকায় অরণ্য যত্ন সহকারে তার হাতে রুমাল বেধে দিয়েছিলো। আহাদ ফার্স্ট এইড বক্স এনে দিতেই অরণ্য ছো মেরে তা নিয়ে নিলো। আহাদকে রেডী হতে বলে নিজেই নূরের হাত ব্যান্ডেজ করতে বসলো। অরণ্য খেয়াল করলো তার হাত কাপছে, তরতর করে ঘাম বইছে। সে একজন ডাক্তার। অবশ্যই রক্ত দেখে ভয় সে পাবে না। তবে আজ নূরের হাতের এই ছোট ক্ষতটির ট্রিটমেন্ট করতেও তার হাত পা কাপছে। এ যেনো এক দুঃসাধ্য কাজ। অরণ্য জিভ নিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নূরের দিকে তাকালো। নুর দাতে দাত চেপে বসে আছে। এক মুহূর্তের জন্য অরণ্যের মনে হলো ক্ষতটা নুর পায়নি বরং অরন্য পেয়েছে। চন্দ্র তাড়া দিয়ে বললো,
ভাই একটা ব্যান্ডেজ করতেই মনে হচ্ছে অর্ধ জনম পার করবি। জলদি কর!
অরণ্যের বলতে ইচ্ছে হলো,
ব্যাথাটা তোর প্রেয়সী পেলে বুঝতি এই ক্ষতের চিকিৎসা করতে অর্ধ জনম লাগে নাকি পূর্ণ জনম।
অরণ্য হতাশার শ্বাস ফেলে আবারো নুরের ক্ষতে ব্যান্ডেজ করায় মনোযোগ দিলো।
_______________________________

শুভ্রতা নুরের ব্যান্ডেজ করা হাতটি নিজের হাতে নিয়ে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে দেখতে দেখতে বললো,
মিয়া বিবি তো রেডী হয়ে বসে আছে। এই কাজীটা কখন আসবে শুনি?
চন্দ্র সোফায় শুয়ে পা দোলাতে দোলাতে বললো,
টেক্সট করে বলেছে আসছে। একটু সময় লাগবে।
~ও আচ্ছা। (শুভ্রতা)
নুর বসে শুভ্রতার কার্যকলাপ দেখতে লাগলো। তার হাত এখনও শুভ্রতার হাতের মুঠোয়। সে ঠোঁট কামড়ে নুরের ব্যান্ডেজ করা হাতটি ধরে মনোযোগ দিয়ে দেখছে। হটাৎ ই শুভ্রতা এক আঙ্গুল দিয়ে নুরের ক্ষততে গুতা দিলো। নুর আর্তনাদ করে এক ঝাড়া মেরে হাত ছাড়িয়ে নিতেই শুভ্রতা ফিক করে হেসে উঠলো। নুরের আর্তনাদে সকলের দৃষ্টি তাদের দিকেই স্থির হলো। নুর হাত ঝাড়তে ঝাড়তে ধমকে উঠে বললো,
এমন করলি কেনো? ফাজিল যেনো কোথাকার!
শুভ্রতা এবার সোজা হয়ে বসলো। ঠোঁট বাঁকিয়ে বললো,
এটা তোর শাস্তি।
নুর শুভ্রতার শাস্তির কারণ বুঝলো না। মনে করার চেষ্টা করতে চাইলো তার অপরাধকে? কিন্তু কিছুতেই কোনো ভুল মনে করতে পারলো না। শুভ্রতা আবার বললো,
বেখেয়ালিভাবে কাজ করিস তাই তোর শাস্তি এটা।
নুর ক্ষিপ্ত হয়ে কিছু বললেও শুভ্রতা সেদিকে পাত্তা না দিয়ে কানে ইয়ারফোন গুজে বসে রইলো। কিছুক্ষণ বাদেই ২ জন লোক বাড়িতে প্রবেশ করলো। এদের বেশভূষা দেখেই সকলে বুঝতে পারলো এদের মধ্যে একজন কাজী আর একজন শ্রেয়ার ভাই। শ্রেয়ানের মাথায় ব্যান্ডেজ করা দেখে অরণ্য আর আহাদ বিচলিত হয়ে জিজ্ঞেস করলো,
~সে কি মাথা ফাটলো কি করে?
চন্দ্র সোফায় সোয়া থেকে উঠে আরাম করে বসে বললো,
কিরে? বাড়িতে জেনে গেছে নাকি যে তুই পালাতে সাহায্য করেছিস? এজন্যই কি কেলানি খেয়ে এলি নাকি?
~পড়ে গিয়েছিলাম।
ছোট এক জবাব দিয়ে শ্রেয়ান চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলো।

🍂🍂🍂

অসম্ভব রাগ আর বিরক্তি নিয়ে শুভ্রতার দিকে চেয়ে আছে নুর, তিলোত্তমা, রূপা, রিদিতা আর উপমা। কিন্তু তাদের রাগ কে পাত্তা না দিয়ে শুভ্রতা ফুচকা খেয়েই চলেছে। আপাতত ফুচকা থেকে মনোযোগ সরালেই যেনো তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে। শুভ্রতা আরেকটা ফুচকা মুখে দিয়ে আড়চোখে নুরের দিকে তাকালো। চিবুতে চিবুতে বললো,
নিজেদের ফুচকা রেখে আমার দিকে বেক্কলের মত চেয়ে আছিস কেনো?
শুভ্রতার কথায় নুর ওরা যেনো জ্বলে পুড়ে উঠলো। মুহূর্তেই চেহারায় ভর করলো গম্ভিরতা। কপালে দেখা দিল সুক্ষ্ম ভাঁজ। ওদের অভিব্যক্তি পরিবর্তন হতে দেখেও শুভ্রতা ভড়কালো না। স্বভাবসুলভ ভাবেই ঠোঁট কামড়ে ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে রইল ওদের দিকে। নুর দাতে দাত চেপে বললো,
তোর আংটি টা কাল শ্রেয়াকে দিয়েছিস কেনো?
শুভ্রতা কি ভেবে আবারো ফুচকা মুখে পুরে নিয়ে বললো,
ওমা! বিয়েতে উপহার দিতে হয় না! তাই দিয়েছি।
উপমা কণ্ঠে তেজ বাড়িয়ে বললো,
তা গায়ে আর কিছু ছিলো না? আংকেলের টাকার অভাব পড়েছে যে তোর টাকায় কেনা আংটিটাই দিতে হলো।
শুভ্রতা ঠোঁট বাঁকিয়ে হাসলো। ফুচকার খালি প্লেটটা একটু দূরে সরিয়ে দিয়ে হাত ভাঁজ করে নুরদের দিকে তাকালো। চেয়ারে হেলান দিয়ে বললো,
আমার আংটির জন্য তোদের এতো আফসোস হচ্ছে কেনো শুনি।
~আফসোস হবে না! নিজের টাকায় এই আংটি কিনবি বলে কতগুলো টিউশন করেছিস তুই। আমাদের পর্যন্ত সময় দিতে পারতি না তখন। এতো কষ্টের ফল এমনিই দিয়ে দিলি! (নুর)
~আমরা যে আড্ডা দেওয়ার জন্য কত্ত ওয়েট করতাম। তোর থেকে বেশি কষ্ট তো আমরা করেছি। এটা আমাদের কষ্টের ফল হিসেবে ঘোষণা করা উচিত। (রিদিতা)
~এই আংটি ছাড়াও তোর কাছে আরো অনেক গহনা ছিল। তার থেকে একটি দিলেও হতো। এটা না দিলেও পারতি (তিলোত্তমা)
~আমাদের কত কষ্টের বিনিময়ে কেনা আংটি। তুই এমনি এমনিই দিতে পারলি! তোর কষ্ট হলো না? (উপমা)
শুভ্রতা গালে হাত দিয়ে মনোযোগ সহকারে সব কথা শুনলো। রূপার দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে বললো,
তুই কিছু বলবি না?
রূপা মুখ খুলতে নিলেই শুভ্রতা হাত বাড়িয়ে থামিয়ে দিয়ে বলে,
থাক আর কিছু বলা লাগবে না। এখন জবাব দেই। গহনা ছিল অবশ্যই কিন্তু তা আমার টাকায় ছিলো না। বাবার টাকায় ছিলো। আমি চেয়েছিলাম আমার নিজের থেকে কিছু দিতে। আর রইলো আমার কষ্টের ফল। এতে শুধু আংটি দিয়েছি, হাত দেইনি। এতো ক্ষেপে যাওয়ার কি আছে! কুল বাচ্চারা!
নুর বিরক্তি নিয়ে বললো,
তুই প্লীজ দেশ ছেড়ে উগান্ডা চলে যা। তুই দেশের জন্য কত বড় হুমকি তুই জানিস?
শুভ্রতা মাথা নাড়ালো। নুর কপাল কুচকে বললো,
তোর মত মানুষই দেশ দেউলিয়া করে বলবে “শুধু দেশেই তো দেউলিয়া হয়েছে, পৃথিবী তো আর দেউলিয়া হয়নি”
~বইন তুই কোথা থেকে কোথায় চলে গেলি! (তিলোত্তমা)
~ধ্যাত!!! বাদ দিবি এই টপিক! ক্লাসে যাবি না? (শুভ্রতা)
~হ্যাঁ, চল। দেরি হয়ে যাবে নয়তো।

🍂🍂🍂

সময় ও স্রোত কারো জন্যে অপেক্ষা করে না। পরীক্ষার আর মাত্র দুইমাস বাকি এরপরই ভার্সিটি জীবনের সমাপ্তি। নুরও ফিরে যাবে তার নিজ বাড়িতে। বন্ধুদের সাথে কি আর দেখা হবে না তখন?
~তোর ফোন কখন থেকে বাজছে ধরছিস না কেনো?
মায়ের হটাৎ ধমাকানোতে সন্ধি ফিরে পেলো নুর। হকচকিত হয়ে বললো,
কি? কি হয়েছে?
নিতা ভ্রু কুচকে মেয়ের দিকে তাকালেন। নুরের কপালে হাত রেখে চিন্তিত কণ্ঠে বললেন,
তুই ঠিক আছিস?
নুর চোখ পিট পিট করে তাকালো। মাথা উপর নিচে নাড়াতেই নিতা আবার বললো,
তবে খেয়াল কোথায় তোর? ড্রয়িং রুম থেকে তোর ফোনের শব্দে আমি দৌড়ে এলাম আর তোর হাতের কাছে ফোন থাকতেও তুই গালে হাত ঠেকিয়ে বসে আছিস।
নুর জবাব দিলো না। ফোনটা আবার বেজে উঠতেই বললো,
ধরছি, তুমি যাও তোমার সিরিয়াল দেখতে।
নিতা গলা উচিয়ে বলতে বলতে গেলেন,
বন্ধুত্বে ঝগড়া হলে মিটিয়ে নিতে হয়, ভুল বুঝাবুঝি হলে সামনে বসে কথা বলতে হয়। একে অপরের সাথে কথা বন্ধ রাখলে সম্পর্কে ফাটল ধরে।
নুর হা হয়ে মায়ের কথা শুনলো। তার আবার ঝগড়া হলো কখন? আপাতত এসব বাদ দিয়ে আগে কলটা রিসিভ করা বেশি প্রয়োজন মনে করলো নুর। নয়তো যে কল দিয়েছে তার মাথা গরম হলে বাড়ি এসে ঝেড়ে যাবে। কল রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে তৎক্ষণাৎ ক্ষিপ্ত কণ্ঠে বললো,
বাইচা আছোস? কল ধরতে এত সময় লাগে! কই আছিলি তুই?
শুভ্রতার চিৎকারে নুর ফোনটা কান থেকে দূরে সরালো। দূর থেকেও স্পষ্ট শুভ্রতার কণ্ঠ শুনতে পাচ্ছে। ধীর কণ্ঠে শুধালো,
শুভি! ঠান্ডা হ। পড়ছিলাম তাই খেয়াল করিনি।
~অনলাইনে আয়
বলেই শুভ্রতা কল কেটে দিলো। কল কাটতেই নুর দম ছাড়লো। এই মেয়েটা সহজে কাউকে কল করেনা আবার যখন করবে তখন সাথে সাথেই রিসিভ না করলে রেগে আগুন হয়ে থাকবে। শুভ্রতার রাগ সম্পর্কে যথেষ্ট অবগত সে তাই দেরি না করে দ্রুত মেসেঞ্জার গ্রুপে ঢুকলো। দেখলো শুভ্রতার মেসেজ,
সামনে তো পহেলা বৈশাখ। ওই কালো শাড়িটা পড়ে সবাই এক সাথে ঘুরতে বের হবো। ঠিকাছে?
সাথে সাথেই সকলে রিপ্লাই দিলো যে তারা রাজি। নুরের মনে হলো ভার্সিটি লাইফ খুব শীঘ্রই শেষ হবে বলেই হয়তো শুভ্রতার এমন ইচ্ছা হয়েছে। আবার হয়তো শুধু মাত্র নুর নিজেই এমন চিন্তা করছে। হয়তো…

🍂 বর্তমান 🍂

হটাৎ গাড়ি ব্রেক করতেই চোখ মেলে তাকালো নুর। কখন যে চোখ লেগে এসেছিল বুঝতেই পারে নি। বন্ধ জানালার বাহিরে চেয়ে দেখলো ফিলিং স্টেশনের সামনে গাড়ি থামানো। কান থেকে হেডফোন খুলে আকাশের দিকে তাকালো নুর। এখন আর বৃষ্টি পড়ছে না। কিন্তু আকাশটা ঘন, কালো মেঘে আচ্ছন্ন। জানালার কাঁচ নামতেই ঠান্ডা বাতাস তার শরীর ছুঁয়ে গেলো। চোখ বন্ধ করে সে শীতল হাওয়া উপভোগ করতে চাইলো। কিন্তু নুরুজ্জামান বলে উঠলেন,
জানালা বন্ধ করো নুর। নীরা আর তোমার মা ঘুমাচ্ছেন। ঠান্ডা লাগবে ওদের।
নুর মিররে বাবার দিকে তাকালো। জানালার কাঁচ তুলতে তুলতে বাধ্য মেয়ের মতো বললো,
সরি বাবা, খেয়াল করিনি।
নুরুজ্জামান চুপ রইলেন। নুর জানতে চাইলো,
বাবা? ঢাকা যেতে আর কতক্ষন লাগবে?
নুরুজ্জামান আশেপাশে দেখলেন। নির্মল কণ্ঠে বললেন,
প্রায় দেড় ঘণ্টা।
নুর প্রশ্ন করলো,
এতো সকালে ঢাকা কেনো যাচ্ছি আমরা? কেউ কি অসুস্থ?
নুরুজ্জামান জবাব দিলেন না। নুর মিররে দেখতে পেলো বাবার অভিব্যক্তি হটাৎ ই পাল্টে গেলো। নুর উদ্বিগ্ন হয়ে বললো,
বললে না বাবা? আমরা কেনো যাচ্ছি?
নুরুজ্জামান গম্ভীর, থমথমে কণ্ঠে জবাব দিলো,
ঘুমাও নুর। খুব ভোরে উঠেছ আজ, তোমার ঘুম প্রয়োজন।
নুরের বলতে ইচ্ছে করলো,
আমার তো ঘুম আসছে না।
বাবার মুখশ্রী দেখে বুঝলো তিনি আজ উত্তর দিতে ইচ্ছুক নয়। নুরও ঘাটালো না। হয়তো মা আর বোনের মত বাবাও বেশ চিন্তিত।
~~~
চলবে~
(রিচেক করা হয়নি। বানান ভুল হলে অবশ্যই জানাবেন। আচ্ছা! কমেন্টস না করলে বুঝবো কি করে যে গল্পটা কেমন লাগছে? বাই দ্যা বুড়িগঙ্গা, হ্যাপি রিডিং~)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here