তুমিই আমার প্রিয় নেশা পর্ব ১৬+১৭

#তুমিই_আমার_প্রিয়_নেশা
#পর্ব:16
#Suraiya_Aayat

হঠাৎ ঘুমের ঘোরে নূর হুড়মুড় করে উঠতেই আয়াশের ঘুম ভেঙে গেল ৷ ঘুম যদিও চোখে ছিলোনা তবুও ঘুমানোর বৃথা চেষ্টা করছিলো ৷ আয়াশের মাথায় অনেক চিন্তা ভাবনা ঘুরছে, আহানের জন্য কষ্টটা বেশি হচ্ছে ৷ নূর ওর বাহুডোরে ছিলো তাই নূরের ঘুম ভেঙে গেছে তা বুঝতে আয়াশের বেশি অসুবিধা হলো না ৷ ভোরের রেশটা কেটে গিয়ে সূর্য ধীরে ধীরে কিরন দিচ্ছে ৷আয়াশ উঠে নূরের দিকে তাকিয়ে বলল
” কি হলো আফু সোনা ব্যাথা পেয়েছো ?”

নূর ওর নিজের মধ্যে গাম্ভীর্যতা বজায় রেখে নামতে গেলেই আয়াশ ধমকে বলল
” কোথায় যাচ্ছো তুমি ? আমি যাওয়ার জন্য পারমিশন দিয়েছি ?”

নূর আয়াশের চাহনি উপেক্ষা করে নামতে গেলেই আয়াশ বলল
” এক পা ও যদি নামিয়েছো তাহলে আমি এমন কিছু করবো যা তুমি এই মুহূর্তে সহ্য করতে পারবে না, অযথা আমাকে রাগিয়ে দিও না,আর কোন কিছুর দরকার হলে আমাকে বলো ৷”

নূর এবার রাগী চোখে তাকিয়ে বলল
” আমার বদলে ওয়াশরুমে কি আপনিই যাবেন?”

নূরের কথায় আয়াশ ঘাবড়ে গেল ৷ একটু ইতস্তত বোধ করে বলল
” ওহহ,তাই বলো ৷ তা এটা এতো জটিল করে বলার কি ছিলো ? সোজাসাপটা বললেই হয় ওয়াশরুমে যাবে ৷”

আয়াশ বিছানা থেকে নেমে নূরকে কোলে নিতে গেলেই নূর বললো
” আমি হেটে যাবো ৷”

আয়াশ ভ্রু কুচকে বলল
” কেন আমি নিয়ে গেলে সমস্যা কি ?”

নূর নিজের কথায় অটুট থেকে বলল
” আমি পায়ে হেটে যাবো ৷ আমি আত্মনির্ভরশীল হতে চাই ৷”

আয়াশ নুরের কথা শুনে ফিক করে হেসে ফেলল
” সত্যি আফুসোনা ! হাটবে বলে তার জন্যও আবার তোমার নিজের মাঝে এমন আত্মনির্ভরশীলতা জেগে উঠলো ৷ যাই হোক গুড ফর ইউ ৷”

কথাটা বলে আয়াশ নূরের দিকে হাত বাড়িয়ে বলল
” হাতটা ধরে নামো ৷”
নূর জানে যে ও নিজে নামতে গেলে ধপ করে পড়ে কোমর ভাঙবে তাই এত কষ্ট আর নিজেকে দিতে চাইনা তাই আর কোনরকম তর্কাতর্কি না করে আয়াশের হাতটা ধরে বিছানা থেকে নেমে দাঁড়াতেই আয়াশ নূরের শরীরের সাথে লেপ্টে দাঁড়িয়ে নূরের কোমরে হাত রেখে নূরকে কাছে টেনে আনতেই নূর একটু থতমত খেয়ে গেল আর হালকা কেঁপে উঠলো ৷

নূর নিজের মধ্যে কঠোর ভাবটুকু আনতে চাইছে বারবার কিন্তু পারছেনা , বারবার যেন মনটা আইসক্রিম আর চকোলেটের মতো গলে যাচ্ছে ৷ একটু কম্পিত কন্ঠে বলল
” কি হচ্ছে কি , আমি ওয়াশরুম যাবো ৷”

আয়াশ নূরের কোমরে স্লাইড করতেই নূর আয়াশের টি শার্ট খামচি মেরে ধরে ফেলল, শরীর জুড়ে শিহরন বয়ে যাচ্ছে ওর ৷ আয়াশ ওর আর এক হাত নূরের কোমরে রাখতেই নূর মাথা নীচু করে নিলো , আয়াশ নূরের কানের কাছে গিয়ে কানে আলতো করে ঠোঁট ছুইয়ে বলল
” আমার পায়ের ওপর পা রাখো আফু সোনা ৷”

নূর আয়াশের কথা শুনে আয়াশের দিকে তাকালো , আয়াশের চাহনি স্থির আর খুব স্বাভাবিক কিন্তু নূরের দৃষ্টি চঞ্চল ৷ নূর ধীমে গলায় বলল
” কেন?”

” এই তুমি না বললে পায়ে হেটে ওয়াশরুম যাবে !”

নূর অবাক হয়ে বলল
” হমম বলেছি , তো ?”

আয়াশ বিচক্ষন ভঙ্গিতে বলল
” তো টো যাই হোক হোয়াটএভার ! তুমি কিন্তু একবার ও বলেনি যে নিজের পায়ে হেটে যেতে চাও তাই পা টা যে কারোর হতে পারে আর এক্ষেত্রে পা টা আমার ৷ তাই তুমি আমার পায়ে পা রেখে হেটে যাবে আর এটাই ফাইনাল, আর তুমি যদি ভেবে থাকো যে তোমার জেদ বজায় রেখে তুমি এখন অযথা আমার সাথে তর্ক করবে তাহলে ফাইন , ঝগড়া করো বাট আমার পায়ের ওপর পা রেখই তোমাকে হেটে যেতে হবে আর এটাই আমার শেষ আর ফাইনাল কথা ‌৷”

এক নাগাড়ে ফটাফট কথাগুলো বলে ফেলল আয়াশ , নূর অবাক চোখে তাকিয়ে আছে ৷ আজকাল খুব অদ্ভুত রকম ব্যাবহার করছে ওর সাথে , আগের মতো আর জোর খাটাই না, কথায় কথায় আর রহস্য রেখে কথা বলে না, খুব সহজ ভঙ্গিতে কথা বলে কিন্তু নূর সে তো আয়াশের এই রুপের সাথে পরিচিত নয় ৷ আয়াশের এই রুপটাই ও চেয়েছিলো কিন্তু কোথাও না কোথাও আয়াশের সেই ডেভিল রুপটাকে নূর খুব বেশি মিস করছে ৷ যে আয়াশ কথায় কথায় ওকে ধমক দিতো, ওর ওপর জোর খাটাতো , নূরের সব সিদ্ধান্ত ও নিতো ‌৷ এটা যদি ক্ষনস্থায়ী বা তা কেবল নূরের অসুস্থতার জন্য হয় তাহলে নূর মেনে নেবে নতুবা নয় কারন ও সেই ডেভিল আয়াশকে ভালোবেসেছে আর তাকেই চাই ৷
নূর বেশ ভালোই বুঝলো যে আয়াশ যা বলেছে তার বাইরে আয়াশ একটা কাজ ও করবে না তাই এই মুহূর্তে আয়াশের সাথে তর্কাতর্কির যুদ্ধে নামা বৃথা ৷ বেশি কথা না ভেবে নূর ওর এক পা আয়াশের পায়ের ওপর রাখলো , আর এক পা রাখতেই নূর কোন একটা কিছুর ভয় পেয়ে ধড়ফড় করে আয়াশের পা থেকে পা নামিয়ে নিলো ৷ আয়াশ মুচকি হেসে বলল
” কি হলো আফু সোনা পা নামিয়ে নিলে যে ! চিন্তা নেই আমার পা ভাঙবে না, এখন আর আগের মতো জিম না করলেও এটুকু শক্তি আছে যে তোমার মতো আরো কয়েকটা বউকে কোলে তুলে নিয়ে পুরো ধানমন্ডি ঘুরতে পারবো , বুঝলে আফু সোনা ?”

আরো কয়েকটা বউয়ের কথা শুনে নূরের রাগ উঠে গেল, তাই রাগটা আর কারোর ওপর না আয়াশের ওপরই ঝাড়া প্রয়োজন তাই রেগে গিয়ে বলল
” এমন দাঁত বার করে হাসছেন কেন? ওয়াশরুম যাবো বলেছিলাম আর আপনি হাজারটা বউ নিয়ে চলে এলেন আবার তাদেরকে ধানমন্ডি ও ঘোরাচ্ছেন ৷ হোয়াটএভার আপনি যাকে খুশি নিয়ে ঘুরুন আই ডোন্ট কেয়ার বাট আপাতত আমাকে ওয়াশরুম অবধি দিয়ে আসলে হবে ৷ যাবেন কি না ? ইয়েস অর নো ?”

আয়াশ নূরের এমন কথা শুনে মুচকি হেসে লম্বা সুরে ডেকে বলল,
” আফুউউউউ সোনাআআআআআ !”
নূর আয়াশের দিকে বাকা চোখে তাকিয়ে বলল
” কি ?”

” মনের ভিতর জ্বালাপোঁড়া হয় ?”

নূর বুঝতে পারলো আয়াশ ঠিক কি ইঙ্গিত করতে চাইছে তাই রেগে গিয়ে আয়াশের পায়ের ওপর পা রেখে , নিজের পা দুটো খানিকটা উঁচু করে আয়াশের গলা অবধি ওর মুখটা নিয়ে গিয়ে আয়াশের গলায় কামড়ে ধরে রইলো ৷

আয়াশ নূরকে ছেড়ে না দিয়ে নিজের আরো কাছে টেনে নিতেই নূর কিছু একটা ভেবে ছেড়ে দিলো ৷

আয়াশ নূরের দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে বলল
” ভ্যাম্পায়ারনী হয়ে গেলে নাকি ? আজকাল যেখানে সেখানে কামড়ে নিচ্ছো ৷”

নূর ওর ঠোঁটটা মুছে বলল
” আপনি ডেভিল হলে আমার ভ্যাম্পায়ার হতে সমস্যা কি ? আর এতো কথাই বা হচ্ছে কেন? আপনি কি আজে আমাকে ওয়াশরুমে নিয়ে যাবেন নাকি না ?”

আয়াশ আর কোন কথা না বাড়িয়ে নূরের নাকে একটা চুমু দিয়ে এক পা বড়াতে গেলেই নূর পড়ে যেতে গেলেই আয়াশ শক্ত করে ধরে বলল
” জামাইকে অন্য মেয়ের সাথে দেখলে রাগের বেলায় ষোলো আনা এদিকে নিজের চিন্তা জিরো ৷ এভাবে টি শার্ট ধরলে এমনিই পড়ে যাবে, গলা জড়িয়ে ধরো ফিল্মি স্টাইলে আর মাঝে মাঝে একটু রোমান্টিক চোখে তাকাবে তাহলে আমি শরীরে এনার্জি পাবো বুঝেছো ?”

নূর আয়াশের দিকে অপলক ভাবে তাকিয়ে আছে , এটা ও কোন আয়াশকে দেখছে ? ও কখনো ভাবেইনি যে আয়াশের শক্ত খোলসে ঢাকা ব্যাক্তিত্বের মাঝেও একটা নরম হৃদয়ের মানুষ আছে ৷ আয়াশের গলা জড়িয়ে ধরে আয়াশের দিকে অপলক তাকিয়ে আছে নূর ৷ ”

আয়াশ নূরকে নিয়ে হাটছে, হাটতে হাটতে হঠাৎ আয়াশ বলল
” মাঝে মাঝে তাকাতে বলেছিলাম আফু সোনা , এখন তো দেখছি তুমি আমার ওপর রিতীমতো নজর দিচ্ছো যদিও আমি জানি আমি খুব সুন্দর ৷” নুরের দিকে চোখ টিপ মেরে ৷
নূর আয়াশের কথাতে খানিকটা লজ্জাবোধ করতেই মাথা নামিয়ে নিলো ৷
নূরকে ওয়াশরুমে দিয়ে এসে আয়াশ বাইরে অপেক্ষা করতে লাগলো ৷ হঠাৎ ফোনে ফোন আসতেই আয়াশ ফোনটা ধরতে গেল ৷ ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলো
নূরের ভাইয়া ফোন করেছে ৷ ওনার কলটা দেখে আয়াশ কিছু একটা ভাবলো তারপর কলটা ধরতেই ওপাশ থেকে নূরের ভাইয়া বলে উঠলো
” হ্যালো আয়াশ নূর কেমন আছে?”

আয়াশ বেশ স্বাভাবিক ভাবে বলল
” ভালোই আছে ভাইয়া ৷”

” নূর যে অসুস্থ তা তুমি একবার ও আমাদেরকে ফোনটা করে জানালে না পর্যন্ত ! ওকে তোমার কাছে তুলে দিয়েছি মানে কি এটা যে ও কেমন আছে তার নুন্যতম খবরটুকু তুমি আমাদেরকে জানাবেনা ৷”

পাশ থেকে নূরের বাবার কণ্ঠস্বর ভেসে আসছে, উনি তারস্বযে চিৎকার করে করে বলছেন
” এই ছেলেকে আমার কোন কালেই ভালো লাগেনি , আমার তো মনে হয় নূরের এমন অবস্থার জন্য ওই দায়ী ৷”

নূরের ভাইয়া নূরের বাবাকে থামিয়ে বলল
” আহ বাবা একটু চুপ করো আমি কথা বলছি তো ! ”
কথাটা বরে আয়াশকে বলল
“বলছিলাম কি আয়াশ নূর অসুস্থ কিন্তু তুমি আমাদেরকে জানাও নি তবে আমরা তো আর আমাদের কর্তব্য কে অস্বীকার করতে পারি না তাই আমারা আজকে নূরকে দেখতে যাবো বিকালে, দরকার হলে কয়েক দিনের জন্য নূরকে এখানে আমাদের কাছে রাখবো, তারপর ও সুস্থ হলে তোমার কাছে না হয় ‌৷”

কথাটা বলতে না বলতেই আয়াশ বলল
” ওকে ৷ আমি এখন রাখছি , তোমরা আসলে এ বিষয়ে কথা হবে !”

আয়াশ ফোনটা কেটে বিছানায় ছুড়ে মারলো, ওর কপালের চামড়ার সূক্ষ ভাঁজ আর রাগের আভা স্পষ্ট ৷ নূর ওয়াশরূমের দরজা ধরে দাঁড়িয়ে আছে , এতখন আয়াশের কথাগুলো শুনছিলো মনোযোগ দিয়ে, যদিও বুঝতে পারেনি আয়াশ কার সাথে কথা বলছিলো আর হঠাৎ ওর এই রাগের কারন কি ৷ আয়াশ নূরের কাছে গিয়ে নূরকে কোলে তুলে নিলো, নূর ভেবেছিলো আবারো হয়তো আয়াশের পায়ে ভর করে হেটে যাবে কিন্তু হঠাৎ আয়াশ কলে নেওয়াতে আয়াশের শার্ট শক্ত করে খামছি মেরে ধরলো ৷ হঠাৎ করে আয়াশ কেমন অদ্ভুত হয়ে গেল, আগের মতো মুখে সেই হাসিটা লেগে নেই ‌ ৷ আয়াশ নূরকে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে নূরকে বলল
” তুমি বসো আমি এক্ষুনি আসছি ৷”

আয়াশ উঠতে গেলেই নূর একটু নরম সুরে জিজ্ঞাসা করলো
” কে ফোন করেছিলো ?”

আয়াশ একটু থেমে বলল
” তোমার ভাইয়া ৷”

নূর অবাক হয়ে বলল
” কেন?”

” তুমি অসুস্থ তোমাকে দেখতে আসছে আর তোমাকে ওরা কয়েক দিনের জন্য তাদের কাছে রাখতে চাই যতদিন তুমি সুস্থ না হও ৷”

নূর জিজ্ঞাসু সুরে বলল
” আপনি কি বললেন?”

আয়াশ নূরের দিকে গম্ভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল
” বলার প্রয়োজন বোধ করিনি তাই বলিনি ৷”

” মানে কি বোঝাতে চাইলেন আপনি !”

আয়াশ নূরে কপালে ভালোবাসার পরশ একে বলল
” আমাকে ছেড়ে কোথাও যাবে না তুমি , বুঝেছো ? না বুঝলে তাড়াতাড়ি বুঝে ফেলো আমি একটু পরই আসছি ৷”

কথাটা বলে আয়াশ বেরিয়ে গেল ৷ ঘড়ির দিকে নূর তাকিয়ে দেখলো, 6.15 বাজে ৷ এতো সকালে আয়াশ কোথায় গেল নূরের ভাবনাতেও আসছে না ৷ তবে নূর মনে মনে ঠিক করে নিলো ওর ভাইয়া বা বাবা তাদের সাথে ওর যাওয়ার জন্য জোর করলেও নূর যাবে না ,যতদিন না আয়াশের সাথে ওর সম্পর্কটা ঠিকঠাক একটা জায়গায় আসছে ততদিন কোথাও যাবে না ও , তাছাড়া ওর ভাইয়ার বলা কথাটা মনে পড়ছে বারবার
” তুই আসলে দেখছি আমাকে আর মায়াকে বাড়ি ছাড়তে হবে ৷”
কথাটা নূরকে অনেক বেশি আঘাত করেছিলো ৷ ধীরে ধীরে বসা অবস্থা থেকে শুয়ে পড়লো পাশ ফিরে , নূরের চোখের কোনা বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে ৷ কখনো কখনো মানুষের কথাগুলো এমনভাবে আঘাত করে যে তার কষ্টটাকে কমানো মুশকিল ‌৷

🎀

ড্রাইভ করছে আয়াশ, পাশে বসে আছে আহান, আহানকে এয়ারপোর্টে পৌছে দিতে যাচ্ছে আয়াশ ৷ ড্রাইভ করার মাঝে আয়াশ বলে উঠলো
” কবে ফিরবে তুমি ?”

আহান মুচকি হেসে বলল
” যেদিন আমি জানবো যে আমি চাচু হতে চলেছি সেদিন ৷”

আয়াশ কথাটা শুনে একটা মুচকি হেসে বলল
” নূরকে চাও ?”

আহান আয়াশের দিকে তাকালো, অনেক বড়ো একটা কথা বলে ফেলেছে আয়াশ ৷ আহান জানে যে আয়াশ কি পরিমান ভালোবাসে নূরকে আর নূরকে পাওয়ার জন্য আয়াশের এতো অভিনয় করা আর সেই আয়াশ নূরকে আহানের কাছে তুলে দিতে চাইছে মানে আয়াশ তার নিজের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান জিনিসটা বিসর্জন দিতে চাইছে ৷ আহান কিছু বলল না চুপ করে বাইরের দিকে তাকিয়ে রইলো ৷

আয়াশ আহানের দিকে তাকিয়ে সামনের দিকে ড্রাইভে মন দিলো ৷ প্রায় 35 মিনিট পর এয়ারপোর্টের সামনে গাড়ি থামালো আয়াশ ৷ আহান গাড়ি থেকে নেমে আয়াশের দিকে তাকালো , আয়াশের কাধে হাত রেখে বলল
” সত্যি অনেক বড়ো হয়ে গেছিস তুই , নিজের প্রিয় জিনিসটাকে হারানোর ব্যাথার কতটা একবার ও ভাবলিনা ৷ লাগবেনা আমার তোর সেই মূল্যবান জিনিস ৷ কিছু কিছু জিনিস দূর থেকে ভালোবাসার জন্য তৌরি হয় ‌৷ তুই খুশি থাকলেই আমি খুশি ৷”

কথাটা বলে আয়াশকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলল আহান ৷
” শোন আমি তাড়াতাড়ি দেশে ফিরতে চাই , আর ততদিন আমি দেশে ফিরবোনা যতদিন না আমি তোর আর নূরের থেকে গুডনিউজ শুনি ‌ ৷ তাড়াতাড়ি আমাকে চাচ্চু ডাক শোনা, আমি অপেক্ষা করবো ‌৷”

আয়াশ আহানকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো, অজান্তেই চোখ থেকে কয়েক ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়লো ৷ প্রিয় মানুষকে সুখে থাকতে দেখার মতো অমূল্য জিনিস এই পৃথিবীতে আর দুটো নেই‌ ৷ তেমনি আহান আর আয়াশের ভালোবাসা একশো শতাংশ খাঁটি ৷

#চলবে,,,

কেমন লাগছে আয়াশ আর নূরের কাহিনী?অলওভার গল্পটা কেমন লাগলো জানাবেন ৷ আর লাইক যদি কমেছে তো গল্পের পর্ব সংখ্যাও করতে থাকবে বলে রাখলাম ৷
তুমিই_আমার_প্রিয়_নেশা
#পর্ব:17
#Suraiya_Aayat

কিছুখন পরপর নূর ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছে ,নূরের জীবনটা সেই চার দেওয়ালে বন্দী ঘরটাতে থেমে থাকলেও দেওয়ালে আটকানো ঘড়িটাতে সময়ের কাটাগুলো থেমে নেই, সময় বহমান তা কখনো করোর জন্য থেমে থাকে না ৷ নূর কিছুখন অন্তর অন্তর ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছে আর সময়ের ঢেউ কাটিয়ে চলেছে ৷ আয়াশ বেরিয়েছে অনেক সকালে আর এখন সকাল 10 টা বাজতে চলল , মাঝে 2 থেকে 3 ঘন্টা কেটে গেছে আয়াশের ফেরার নাম নেই ৷ নূর একটা শুকনো ঢোক গিলল, ওর গলা ধরে আসছে, ঢোক গিলতে গেলেও গলায় ব্যাথা অনুভব করছে , কষ্টটা ধীরে ধীরে ওর মনকে আয়ত্ব করে নিচ্ছে ক্রমাগত ,চোখের কোনে জলরাশির ভিড় তা চোখের পাতার ওঠা নামাতেই গড়িয়ে পড়ার জন্য যথেষ্ট ৷ নুর কাঁপা কাঁপা হাতে ফোনটা ধরলো ৷ আয়াশকে ফোন করবে ভাবছে , এতখন কেবল অপেক্ষা করেছে , কিন্তু কল করেনি ৷ মনের মাঝে থাকা হাজারো দোটানার সীমারেখা পার করে নূর কল করলো ৷ ফোনটা লাউডে দিয়ে রেখেছে , কানে ধরবার ক্ষমতা পাচ্ছে না , যদি পাছে হাত থেকে পড়ে যায় ফোনটা তাই ৷ ‌বেশ কয়েকবার রিঙ হয়ে কলটা কেটে গেল, ওপাশ থেকে কোন রেসপন্স এলো না দেখে নূর ফোনটা ওর পাশে ছুড়ে ফেলল ৷ কান্না পাচ্ছে খুব ৷ কিছুখন থমথমে মুখে সামনের দিকে চেয়ে থাকার পর ঠোঁট উল্টে ফুঁপিয়ে কেঁদে ফেলল ৷ চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে আর বাচ্চাদের মতো গাল ফুলিয়ে কান্না করছে নূর ৷ কিছুখন কান্না করে ধীরে ধীরে হাতের ওপর ভর রেখে বিছানায় শুয়ে পড়লো ৷ মনে মনে ভাবতে লাগলো যে একমাত্র অসুস্থ থাকলেই সবার কাছে নিজের গুরুত্ব বোঝা যাই ৷ চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে আর কান্নার রেশে মাঝে মাঝে কেঁপে কেঁপে উঠছে নূর ৷ কিছু সময় পর কখন যে দু চোখ জুড়ে ঘুম চলে এলো তা নূর জানেনা ৷
বেশ কিছুখন পর ইফার গলার আওয়াজে ঘুম ভাঙলো
” ভাবী ও ভাবী , ওঠো তোমার জন্য নাস্তা এনেছি খেয়ে ঔষুধ খেয়ে নাও ৷”

নূর ঘুমে ভার চোখ নিয়ে ইফার দিকে তাকালো, মেয়েটা অনেক সতেজতা নিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে হাতে আছে একটা ট্রে ৷ নূর ধীরে ধীরে ওঠার চেষ্টা করতে গেলেই ইফা হাতের ট্রে টা টেবিলের ওপর রেখে নূরকে উঠে বসতে সাহায্য করতে নিলেই নূর আধো আধো গলায় বলল
” ইফা তুমি !”

ইফা নূরের পাশে বসে বলল
” আই এম সরি ভাবী আমি জানতাম না যে ভাইয়া বাসাতে নেই, যদি জানতাম তাহলে তোমাকে একা থাকতে দিতাম না , ভাইয়া একটু আগে ফোন করে না বললে তো জানতেই পারতাম না ৷
নূর চোখের ওপর হাত রেখে চোখটা হাত দিয়ে ঢলা দিয়ে ঘুমের রেশটা কাটিয়ে বলল
” উনি তোমাকে ফোন করেছিলেন ?”

ইফা খাবারের ট্রে টা নূরের পাশে রেখে বলল
” জ্বী ভাবী ৷ ভাইয়াই তো বললো তার বাসায় ফিরতে দেরি হবে তাই আমি যেন তোমাকে খাইয়ে দিই ৷ ”

কথাটা শুনে নূরের বুকের ভিতর মোচড় দিয়ে উঠলো, আয়াশ ইফাকে কল করেছিলো কিন্তু ওকে কলব্যাক করার সুযোগ পাইনি ৷ আভিমানের মেঘটা কষ্টের কালো পাহাড়টার গা ঘেঁষে ছুয়ে যাচ্ছে , বুঝতে পারছে না এখন ওর কিরকম ব্যাবহার করা উচিত ৷ নূর চুপ করে আছে দেখে ইফা বলল
” আমি বুজেছি তুমি ভাইয়ার ওপর রেগে আছো তাইনা ? রাগ হওয়াটাই স্বাভাবিক তোমার এই সময়ে তার তোমার পাশে থাকা উচিত কিন্তু ভাইয়া খুব ব্যাস্ত না হলে কখনো এমনটা করতো না ৷”

নূর মিথ্যা ইফাকে উদ্দেশ্য করে ওর মুখে একটা মুচকি হাসি ফুটিয়ে তুলল ৷
” আমি কিছু মনে করিনি ইফা , উনি সত্যিই অনেক ব্যাস্ত মানুষ, আমি ব্যাতিত ওনার জীবনটা যে অনেকটা প্রশস্থ আর সুন্দর তা আমি বুঝি ৷” একরাশ অভিমানের সুরে কথাটা বলল নূর কিন্তু নূরের এমন ঘোরালো প্যাচালো কথার অর্থ বোঝার ক্ষমতা ইফার নেই তাই ও কিছু বুঝলো না তাই একটু অবাকের সহিত বলল
” ভাবী কি বললে আর একবার বলবে ঠিক বুঝলাম না ৷”
নূর ইফার গালে হাত রেখে আগের তুলনায় মুখের হাসিটা আরো বেশি প্রশস্থ করে কথা ঘোরানোর জন্য বলল
“তুমি নাস্তা করেছো ইফা ?”

ইফাও নুরের দিকে মুচকি হেসে বলল
” হমম করেছি ভাবি , তুমি অনেকখন না খেয়ে আছো জানি তোমার অনেক ক্ষিদে পেয়েছে তাই আর কোন কথা না তাড়াতাড়ি খেয়ে নাও ৷”

নূর ট্রে টা হতে নিয়ে বলল
” আমার সাথে তুমিও খাবে কোন কথা শুনবো না ৷”

ইফা চোখ মুখ কুচকে বলল
” নাহ ভাবী আমি খাবো না, তুমি খাও আমার খিদে নেই ৷”

নূর পরোটাটা ছিড়তে গিয়ে হাতে অল্প ব্যাথা পেলো, চুখ মুখ কুচকে ফেলল ব্যথায় তবুও ইফাকে খুব একটুও বুঝতে দিলো না, কিন্তু ইফা নূরের ব্যাথার আভাস পেয়ে নূরের কাছ থেকে ট্রে টা নিয়ে পরোটা ছিড়ে নূরের মুখের সামনে ধরে বলল
” নাও ভাবী হা করো ৷ ”
ইফার এমন কাজে নূরের চোখে জল চলে এলো ৷ ওর মায়ের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে খুব , ছোটবেলায় যখন ও খেতে চাইতো না তখন ওর আম্মু ওকে কতো রূপকথার গল্প বলতো আর ওকে ভুলিয়ে ঠিক পুরোটা খাবার খাইয়ে দিতো ৷
ইফা নূরের দিকে তাকিয়ে বলল
” ভাবী তুমি কাঁদছো কেনো ? আমি কি তোমাকে কষ্ট দিয়ে কথা বলে ফেললাম ?”

নূর ইফার মাথায় হাত রেখে বলল
” তোমরা এত ভালো কেন বলতে পারো ?”

ইফা মুচকি হেসে বলল
” ভাবী তুমিও না, আসলে আমরা তোমাকে অনেক বেশি ভালোবাসি, তাই তোমাকে সবসময় হাসি খুশি দেখতে চাই , তুমি অন্যের বাড়ির মেয়ে বলে আমরা কি তোমাকে অবহেলা করবো বলো ?একদিন তো আমাকেও অন্য বাড়িতে যেতে হবে , তাই আমারা যদি এখন থেকেই নিজেদের মন মানসিকতা বদলাতে পারি তাহলে অন্যদের ধারনাও পাল্টাতে পারবো ৷”
নূর ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো , বিয়ের প্রথম দিন যেদিন ও এই বাড়িতে পা রেখেছিলো সেদিন এই বাড়িটা আর বাড়ির মানুষগুলোকে কতোটা কঠিন আর নিষ্ঠুর বলে মনো হতো নূরের কাছে কিন্তু আজ এই মানুষ গুলোকে ও হারাতে চাইনা কোনভাবেই ৷
ইফা বলে উঠলো
” আরে ভাবী কেঁদোনা আজকে তো তোমার খুশি হওয়ার কথা কারন আজ তো তোমার বাসার লোক আসবে তোমাকে দেখতে ৷”

নূর ওর হাতের তালু দিয়ে চোখের জল মুছে স্বাভাবিক দৃষ্টিতে ইফার দিকে তাকিয়ে বলল
” তোমাকে কে বলল?”

ইফা মুচকি হেসে বলল
” আরে ভাবী আজকে ভোরেই তো আহান ভাইয়া বলে গেলেন যে তোমার বাসা থেকে তোমাকে দেখতে লোকজন আসে তাই তাদের যেন ভালো করে খাতির আপ্যায়ন করা হয় ৷”

নূর জল খেয়ে বলল
” বলে গেলেন মানে ? উনিই মানে আহান ভাইয়াই কি আমার বাসাতে আমার অসুস্থতার কথা বলেছেন?”

ইফা পরোটা নূরের মুখের সামনে ধরে বলল
” হমম, আহান ভাইয়াই তো তোমার ভাইয়াকে ফোন করে বলেছে আর তারা জানিয়েছে যে তারা তোমাকে আজকে দেখতে আসবে ৷ আর আহান ভাইয়া তো আজকে সকালে ইউকে চলে গেছে কবে ফিরবে বলে যাইনি , বলেছে সময় হলে ফিরে আসবে ৷”

নূর এতসব এক সাথে শুনে অবাক না হয়ে পারলো না, আহানের জন্য একটু খারাপ ও লাগছে কারন নূর ভাবছে আহান হয়তো নূরের কড়া কথা শুনে চলে গেছে, এদিকে আহানের প্রতি রাগ ও হচ্ছে কারন আহানের জন্য নূরের ভাইয়া আয়াশকে কথা শুনিয়েছে তাই সকাল থেকে আয়াশের মনটা কেমন হয়ে গেছে ৷ ইফা আর একটু খাওয়াতে গেলে নূর বলে উঠলো
” ইফা আমি আর খেতে পারছি না গো, এর বেশি আর আমার পেটে ঢুকবে না, প্লিজ আর জোর করোনা ৷”

ইফা নূরের দিকে গ্লাসটা বাড়িয়ে দিয়ে বলল
” আচ্ছা ভাবী তাহলে একটু পর আমি আবার আসবো তোমাকে গোসল করিয়ে দিতে ৷ ততখন তোমার খুব বোর লাগলে তুমি টিভি দেখো ৷”

কথাটা বলে নূর টিভি চালিয়ে দিয়ে চলে গেল ৷
নূর বিছানায় মাথা হেলান দিয়ে আছে, আর কতখন একটা মানুষ বিছানায় শুয়ে বসে থাকতে পারে ! নূর ভাবলো ওয়াশরুম যাবে কিন্তু সকালের মতো তো আর আয়াশ নেই তাই ও নিজেই যাবে বলে বিছানা থেকে নামলো,প্রথমবার পড়ে যেতে নিলেও নিজেকে সামলে নিলো ৷ তারপর গুটিগুটি পায়ে ধীরে ধীরে জানালার কাছে গেল , জানালার গ্রিল ধরে হাটতে গেলেই বাইরের দিকে চোখ গেল ৷ আয়াশের খালাম্মু উনি হাতে একটা ট্রেতে করে বেশ কিছু খাবার নিয়ে বাসার পিছনের রাস্তা দিয়ে হেটে কোথাও যাচ্ছেন, নূর প্রথমে ভাবলো এটা হয়তো ওর চোখের ভ্রম তাই আরো ভালো করে দেখলো,হ্যাঁ উনিই হাতে একজনের নাস্তা নিয়ে যাচ্ছেন ৷ হঠাৎ উনি দ্রুত যেন কোথাও মিলিয়ে গেলেন নূর বুঝতে পারলো না, উনি কোথায় গেলেন নূর বুঝলো না ৷ দারোয়ান বা কাজের বুয়াকে তো উনি কখনো খাবার দিতে যান না তাহলে উনি কোথায় গেলেন , তাও আবার এমন রাস্তায় গেলেন যেখানে নূর কখনো যাইনি এবং এ বাসার মানুষজন সেদিকে যাই বলে নূর জানতো না ৷ নূর তবুও বেশি কিছুখন দাঁড়িয়ে রইলো যদি ওনাকে ফিরতে দেখেন, কিন্তু বেশ কিছুখন হলো উনি ফিরছেন না দেখে নূর আর অপেক্ষা না করে ওয়াশরুম চলে গেল ৷

___

” বৌমা শোনো শাড়ি পরেছো ভালো কথা কিন্তু পা বেধে আবার পড়ে যেওনা, সাবধানে হাটবে, আয়াশ বাসায় থাকলে না হয় ও একাই তোমাকে কোলে করে সারা বাসা ঘোরাতো কিন্তু না জানি ছেলেটা কোথায় গেছে এখনো তো বাসায় ফিরলো না ৷ একটু পরই তোমার বাসার সবাই আসবে,রান্নাবান্নাও কমপ্লিট ,আমি শুধু এবার গোসলে যাবো ৷”

নূরের শাড়ির কুচিটা ঠিক করতে করতে বললেন আয়াশের খালাম্মু আফরোজা বেগম ‌৷
নূর কেবলই ওনার সকালের কথাটা ভাবছে , উনি কোথায় গিয়েছিলেন ঠিক ! আচ্ছা ওনাকে কি জিজ্ঞাসা করা উচিত? এরকম হাজারো কল্পনা জল্পনার রেশ কাটিয়ে নূর বলল
” আচ্ছা আন্টি আপনি সকালে বাসার পিছনের দিকে ট্রেতে করে নাস্তা নিয়ে কোথায় যাচ্ছিলেন?”
উনি যেন কথাটা শুনে প্রথমে একটু চমকালেন তারপর স্বাভাবিক ভাবেই বললেন
” কই বউমা কোথাও যাইনি তো, আমি তো সকালে নাস্তা বানানোর পর রান্না ঘরেই ছিলাম, তুমি হয়তো ভুল দেখেছো ৷”

ওনার বলা কথাটা শুনে নূর থেমে গেল, কিছু বলল না আর ৷ আসলেই উনি এতোটাই স্বাভাবিক ভঙ্গিতে কথাগুলো বলেছেন যে তার ওপর সন্দেহের আঙুল তুললে নূর নিজেই হয়তো মিথ্যা বলেছে বলে প্রমানিত হবে, কিন্তু নূর ঠিক দেখেছে যে উনিই ছিলেন কিন্তু কথাটা উনি অস্বীকার করলেন ৷ নূর অবাক হলো একটা বিষয়ে, সাধারনত মানুষ মিথ্যা কথা বলতে গেলে তার কন্ঠস্বরে পরিবর্তন আসে, তার কন্ঠস্বর কাঁপে , শরীরের অঙ্গভঙ্গির পরিবর্তন হয় কিন্তু ওনার বেলায় তেমন কিছুই ছিলো না উনি বড্ড বেশিই স্বাভাবিক ছিলেন ,আর নূর একটা মিথ্যা কথা বলতে গেলেই ওর মাঝে কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে যায় যাতে স্পষ্ট যে কেউ ধরে ফেরবে যে ও মিথ্যা কথা বলে ৷নূর আর কথা বাড়ালো না, চুপচাপ রইলো, ওর কথার মাঝে আফরোজা বেগম নূরের হাতে এক জোড়া চুড়ি পরিয়ে বললেন
” এটা তোমার শাশুড়ির , ওর অনেক ইচ্ছা ছিলো তোমাকে এগুলো নিজের হাতে পরাবে কিন্তু ওর ইচ্ছাটা পূরন হলো না , যাই হোক আমি তো আছি, কখনো নিজেকে একা মনে করবে না কেমন ! আর চিন্তা করো না আয়াশ ঠিক তাড়াতাড়ি ফিরে আসবে ৷”
কথাটা বলে উনি চলে গেলেন ৷ ওনার যাওয়ার পানে নূর তাকিয়ে রইলো ৷ আসলেই ও অনেক ভাগ্যবতী যে ও এমন একটা পরিবারের বউ হয়ে এসেছে ৷

#চলবে,,,,

কেমন হয়েছে🙄?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here