তুমি বললে আজ সিজন ২ গল্পের লিংক | রিধিমা জান্নাত রূপা | পর্ব -০১

.
“তাসফি ভাই আসছে বনু।”

রিফাপুর কথায় চমকে উঠলাম আমি। তাসফি… তাসফি ভাই আসছে? মানে….. কথাটা যেন ঠিক হজম করতে পারলাম না। মুহুর্তেই বিশ্বাস করতে পারলাম না, আদোও ঠিক শুনলাম নাকি ভুল। কই? সকালেও তো শুনলাম না সেই মানুষটার আসবার কথা। তাহলে এখন? এখন হঠাৎ কিভাবে কি হলো? আর কেউ আমাকে আগে জানালো না কেন তাসফি ভাই আসবার কথাটা?

আমি রামিয়াত রূপা। নিজ জেলা শহরে নামী কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। মাস খানিক আগে কলেজে ভর্তি হয়ে পুরো দমে পড়াশোনায় মনোযোগ দিয়েছি, নিয়মিত কলেজ করছি। ভার্সিটিতে চান্স নেবার ইচ্ছে থাকলেও পরিবারের সবাই বারণ করে দেয়। কারণ হিসেবে বলে, ‘পরিবারের ছোট মেয়ে কে কিছুতেই দূরে কোথাও পাঠাবো না। বাইরের জগৎটা বড্ড খা*রাপ, রিমি রিফা বাইরের জগৎতের সাথে তাল মিলিয়ে চললেও রূপা কিছুতেই পারবে না, ও অনেক ছোট।’ বড় চাচার কথার উপর আর কেউ কিছু বলতে পারে নি। মাঝে মাঝে মনে হয় আসলেই আমি কারোর সাহায্য ছাড়া অচল। ছোট বেলা থেকেই আমার প্রতিটা কাজে, প্রতি ধাপে সবাইকে পাশে পেয়েছি। বিশেষ করে তাসফি নামক সেই মানুটাকে, একটা সময় খুব গভীর ভাবেই জড়িয়ে গেছি তাসফি ভাইয়ার সাথে। তখন থেকেই অনেকটা পরনির্ভরশীল হয়ে পড়েছি। তাই বড় বাবার কথায় আমিও আর দ্বিমত পোষণ করি নি।

কলেজ থেকে ফেরার পর বাসায় এত আয়োজন, এত এত রান্না, সবার এত উত্তে*জনা উদগ্রীব, খুশি দেখে অনেকটা অবাকই হয়ে গেছিলাম। নিজের কৌতুহলকে কিছুতেই দমাতে না পেরে রিফাপুর কাছে জিজ্ঞেস করেই ফেললাম হঠাৎ এত আয়োজন কিশোর জন্য? মজার ছলে রিফাপুকে খোঁচা এটাও বলে উঠলাম,
“কি রিফাপু, বড়মা তোমাকে বাসা থেকে ছাঁ*টাই করার ব্যাবস্থা করছে নাকি? বড়মার ছোট জামাই আসছে নাকি, যে এত এত আয়োজন করে চলেছে দুই জা মিলে?”

আমার কথায় রিফাপু হেঁসে উঠলো জোরে করে। বললো,
“আরে না…. ছোট জামাইয়ের থেকেও বড় কেউ আসছে।”

হুট করে কথাটা বলে পরক্ষণেই চুপ হয়ে যায় রিফাপু। তারপরই আস্তে করে আমাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে,
“তাসফি ভাই আসছে বনু।”

.
কথাটা শোনার পর থেকেই আমি বিস্মিত হয়ে গেছি। সমানে ভেবে চলেছি কিছু একটা। রিফাপুর কথাটা যেন ঠিক বিশ্বাস হচ্ছে না আমার, সত্যিই কি তাসফি ভাই আসছেন? কয়েক বছর আগের সেই অজানা অনুভূতিতে হঠাৎই জেঁকে ধরছে মনে। অদ্ভুত ভাবে পুরো শরীর যেন কেঁপে কেঁপে উঠছে আমার।
যে মানুষটাকে গত তিন বছর ধরে ইগনোর করে গেছি, সবার সামনে ওনার কথা উঠলে এড়িয়ে গিয়েছি, কারোর সামনে ভুলেও একটি বারের জন্য যার নাম পর্যন্ত নেই নি, এমন কি নতুন মোবাইল ফোন হাতে পাবার পর ওনার নাম্বার, আইডি সমস্ত কিছুই আগে থেকে ব্ল*ক করে দিয়েছি, এক প্রকার লুকিয়েই থেকেছি তার থেকে। আজ কি না, সেই মানুটাই আমার সামনে আসবে? সেই মানুষটার সামনেই পড়তে হবে আমাকে?

কেন জানি হঠাৎই চোখ দুটো ছলছল করে উঠলো। রিফাপুর দিকে তাকিয়ে দেখলাম আমার দিকেই তাকিয়ে আছে, হয়তো কিছু একটা বলতে চাচ্ছে, কিন্তু সাহস করে বলতে পারছে না। আমিও আর শোনার অপেক্ষায় রইলাম না, রিফাপু কে ‘আমি রুমে যাচ্ছি’ বলেই সোজা রুমের দিকে হাঁটা ধরলাম। রুমে ঢুকে দরজাটা স্বযত্নে বন্ধ করে দিয়ে, বিছানার এক কোণায় গুটিশুটি মে*রে খাটের সাথে হেলান দিলাম। মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম কাল সকাল পর্যন্ত কিছুতেই রুমের দরজা খুলবো না, আর না বাইরে যাবো। সেই সাথে বাড়ির প্রতিটা সদস্যদের প্রতি ভীষণ রকম রাগ ও অভিমান জমা হতে লাগলো। কিন্তু সবচেয়ে বেশিই রাগটা গিয়ে পড়লো তাসফি নামক সেই ব*জ্জা*ত মানুষটার প্রতি। নিজের বাসা থাকতে এখানেই কেন আসতে হবে তার? অবশ্য আসবেই না বা কেন? আমাদের পরিবারের একমাত্র আদরের ছেলে বলে কথা, ছোট থেকে বেশির ভাগ সময়ই এই বাসাতেই থেকেছেন, তার উপর বিদেশ থেকে পিএইচডি করে ডিগ্রি নিয়ে আসছেন। পরিবারের সবাই তো তাকে মাথায় করে রাখবে এখন।

তাশরিফ রওনাফ তাসফি! আমার একমাত্র ফুপির এক মাত্র আদরের ছেলে। শুধু ফুপির নয়, আরও ভাই বোন থাকা সত্ত্বেও, তাসফি ভাইয়া আমাদের পুরো পরিবারের-ই আদরের ছেলে। ফুপি ছোট হলেও তার সংসারটা সবার আগে গুছিয়ে দেয় সবাই। পরিবারের প্রথম সন্তান এবং সবার অতি আদরের একজন হয়ে আসেন তাসফি ভাইয়া। শুধু আমাদের পরিবারেই নয়, ওনার কোন চাচা বা ফুপি না থাকায় দুই পরিবারের-ই আদরের ছেলে হয়ে উঠেন তাসফি ভাই।
আব্বুরা তিন ভাই বোন, বড় চাচা, আব্বু এবং ফুপি। বড় চাচার দুই মেয়ে, রিমি আপু এবং রিফা আপু। রিফাপু পড়াশোনা করলেও রিমি আপুর বিয়ে হয়েছে গত পাঁচ বছর হলো। সাড়ে তিন বছরের একটা ছেলেও আছে রিমি আপুর। আমাদের সবার বড় তাসফি ভাই। সাড়ে পাঁচ বছর আগে বুয়েট থেকে ইন্জিনিয়ারিং শেষ করেন। তারপর মেধা তালিকায় স্কলারশিপ পেয়ে বিদেশে পারি দেন পিএইচডির জন্য।
তাসফি ভাইয়ের দেড় বছরের ছোট রিমি আপু, তার প্রায় পাঁচ বছরের ছোট রিফাপু। এবং রিফাপুর আড়াই বছরের ছোট হলাম আমি। পরিবারের সবার ছোট হয়েও আদরের চেয়ে শাসনটাই সবার চেয়ে বেশি পেয়েছি আমি। তার অর্ধেক অংশ জুড়েই ছিলেন তাসফি ভাইয়া। ধীরে ধীরে সেই মাত্রাটা বেড়েই চলেছিলো, সাথে ছিলো ওনার অসংখ্য জমিয়ে রাখা আবেগ, অনুভূতি। কিন্তু হুট করেই যেন চার বছর আগে সবকিছু হারিয়ে যায়, সবকিছুকে বিস*র্জন দিয়ে পারি জমান বিদেশের মাটিতে।

.
“কার জন্য কাপড়চোপড় এমন অ*র্ধেক খু*লে শুয়ে আছিস? বেয়াদব!”

পুরুষালী কণ্ঠের ধমকে এক প্রকার লাফিয়েই উঠলাম যেন। নিজেকে স্থিতি করে সামনে তাকাতেই প্রচন্ড চমকে উঠলাম। টিপটিপ চোখে সামনে তাকাতেই আবারও ধমকে উঠলো সামনের মানুষটি।

“জামা কাপড় অ*র্ধেক খু*লে কার জন্য অপেক্ষা করছিস? নাকি, আমি আসছি শুনে, আমাকে দেখানোর জন্য জামা কাপড় অ*র্ধেক খু*লে অপেক্ষা করছিস?”

একটু হুস হতেই ধরফর করে উঠে বসলাম বিছানায়, সাথে সাথে দু’ হাত দিয়ে কাপড়চোপড় ঠিক করতে লাগলাম, বালিশের পাশে থেকে ওড়নাটা নিয়ে গায়ে চাদরের মতো করে জড়িয়ে নিলাম। একটু ঘুমালে যে আমার জামা কাপড় ঠিক থাকে না, এটা নতুন কিছু নয়। কোথাকার কাপড় ঠিক কোথায় চলে যায় নিজেই বুঝতে পারি না। আজকেও তার ব্যাতিক্রম হলো না। প্লাজো আর টপস পড়ায় এলোমেলো হয়ে শরীরের অনেক অংশই বেরিয়ে ছিলো।
কিন্তু এই মানুষটা যে সোজা আমার রুমে ঢুকে এমন কিছু বলবে সেটা ভাবতেই পারি নি। রিফাপু পর পর দু’বার রুমে আসায় পরে আর দরজা লক করি নি। হালকা ভিড়িয়ে দিয়ে বিছানায় শুয়ে ছিলাম, বেশ কিছু সময় নিয়ে চোখ বন্ধ করে আকাশ পাতাল ভাবতে ভাবতে কখন যে চোখ দুটো লেগে এসেছিলো বুঝতেই পারি নি। আর সেই সুযোগই উনি রুমে এসেছেন। কিন্তু লাগাতার ওনাকে ইগনোর করার পরও আমার রুমে কেনই বা আসলেন তাসফি ভাইয়া? মনের প্রশ্নটা মুখ ফুটে করেই ফেললাম ওনাকে। কাঁপা কাঁপা গলায় আস্তে করে বললাম,
“আ..আপনি আমার রুমে ক্য..কেন?

“কেন? অন্য কারোর জন্য এভাবে শ*রীর দেখিয়ে অপেক্ষা করছিলি নাকি? তার জায়গায় আমি আমি এসে খুব ভুল করলাম নাকি?”

তাসফি ভাইয়ের এমন কথায় হঠাৎই রাগ হলো আমার, অনেকটা জোরেই বলে উঠলাম,
“দেখেন তাসফি ভাইয়া, আপনি কিন্তু আমাকে….”

“দেখছি তো, জামাটা খু*লে ফেল আরও ভালোভাবে দেখছি।”

বলেই আমার দিকে এগিয়ে আসতে লাগলেন উনি। ভয়ে গলা শুখিয়ে গেল আমার, শুঁকনো কয়েকটা ঢোক গিলেও গলাটা কিছুতেই ভেজাতে পারলাম না, একটুকুও না। কাঁপা কাঁপা গলায় বলতে লাগলাম,
“দেদ..দেখেন তাসফি ভাই… আ…আপনি কিন্তু এমন করতে পারেন না, যান বলছি আমার রুম থেকে।”

“উফ্! আবার জান ডেকে আমাকে ডাইভার্ড করতে চাচ্ছিস ক্যান? দেখতে বললি যখন ভালো ভাবেই দেখা, খো*ল জামা কাপড়।”

“কক্…কি বলছেন আপনি? এক্ষুনি বেরিয়ে যান আমার রুম থেকে, যান বলছি…. ”

শুনলেন না উনি আমার কথা। এক পা এক পা করে এগিয়ে আসতে লাগলেন আমার কাছে। ওনাকে কাছে আসতে দেখে আমি আবারও বলে উঠলাম,
“একদম ভালো হবে না, চলে যান বলছি। একদম আমার কাছে আসার চেষ্টা করবেন না। তাসফি ভাই… চলে যান বলছি আমার রুম থেকে। একদম আমাকে ছু*বেন না। একদম ছু*বেন না, খুব খা*রাপ আপনি তাসফি ভাই… খুব খারাপ আপনি, তাসফি ভাইয়া…. ”

চিৎকার করে ধড়ফড়িয়ে উঠে বসলাম বিছানায়। প্রচন্ড গতিতে বুকটা টিপটিপ করতে লাগলো। আশেপাশে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করলাম ঠিক কোথায় আছি। নিজের রুমেই আছি, বুঝতে পেরেই আবারও আশেপাশে চোখ বুলিয়ে নিলাম। খুঁজতে লাগলাম কাঙ্ক্ষিত সেই মানুষটাকে, কিন্তু পুরো রুমে চোখ বুলিয়েও পেলাম না। দরজার দিকে তাকাতেই নজরে এলো রুমের দরজাটা ভেতর থেকেই বন্ধ করা। তাহলে কি আমি আবারও স্বপ্ন দেখলাম? জানালা দিয়ে বাইরে তাকাতেই ব্যাপারটা শিয়র হলাম। হ্যাঁ…. এটা স্বপ্নই ছিলো। মাত্র তো সকাল হলো, রিফাপুর সাথে বলা কথাগুলো থেকে তাসফি ভাই আমার রুমে আসা পর্যন্ত সবটাই তাহলে স্বপ্নই ছিলো? হতাশ হলাম না একটুও, খুশিও হতে পারলাম না মোটেও। ওই মানুষটাকে নিয়ে আমার স্বপ্ন দেখাটা একদমই নতুন কিছু নয়। প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর ধরে প্রতিনিয়ত স্বপ্ন দেখেই চলেছি ওনাকে নিয়ে। শুধু প্রথম দেড় বছর জেগে জেগে কল্পনায় স্বপ্ন দেখেছি, আর বিগত চার বছর গভীর রাতে ঘুমিয়ে গেলে স্বপ্ন দেখেছি ওনাকে নিয়ে।

কিন্তু আজকে ভোর বেলায় হঠাৎ এমন স্বপ্ন দেখলামই বা কেন? কই আগে তো এমন কোন স্বপ্ন দেখি নি। আর ভোরের স্বপ্ন নাকি সত্যি হয়, তাহলে কি তাসফি ভাইয়া সত্যিই আসবেন? ওনার আসবার কথা ভেবেই বুকের টিপটিপ শব্দটা প্রচন্ড গতিতে সুর দিতে লাগলো। বুকে হাত দিয়ে বার কয়েক জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে লাগলাম। থাকতে পারলাম না বিছানায়, বাইরে গিয়ে এক্ষুনি দেখতে হবে, সত্যিই কি উনি আসছেন কি না।
বিছানা ছেড়ে উঠে সোজা ওয়াশরুমে ঢুকে গেলাম। খুব দূত ফ্রেশ হয়ে বেড়িয়েও এলাম। দরজা খুলে ড্রয়িং রুমে এসে কাউকেই চোখে পড়লো না। একবার রিফাপুর রুমের দরজার কাছে গিয়ে ফিরে আসলাম। ভেতর থেকে বন্ধ করা, হয়তো এখনো ঘুম থেকেই উঠে নি। আবারও ড্রয়িং রুমে এসে মিনিট দুয়েক দাঁড়িয়ে থাকলাম। না… এভাবে কিছুতেই হবে না। আর দাঁড়িয়ে না থেকে ড্রয়িং রুম পেরিয়ে পাশের অপর ফ্ল্যাটে আসলাম।

চার তালার এই বাসাটা আস্তে আস্তে গড়ে তুলে বড় চাচা এবং আব্বু মিলে। প্রতি তলায় দুটো করে ফ্ল্যাট থাকলেও দোতালায় পুরোটা জুড়ে আমাদের বসবাস। দুই ফ্ল্যাট মিলে একটা করা হয়েছে, কিন্তু সিস্টেমটা দুই ফ্ল্যাটের মতোই রয়েছে। একদিকটায় আমাদের, মানে রিমি আপু, রিফাপু, আমার এবং তাসফি ভাইয়ার রুম আছে, তার সাথে আরও একটা রুম রয়েছে। অপরটায় বড় চাচা বড়মা, আব্বু আম্মু, ফুপির রুম সহ আরও একটা রুম রয়েছে, সাথে কিচেন সহ বড় ড্রয়িং রুম। মূলত রান্নাবান্নার প্রসেসিংটা দেখতেই ওইদিকটায় যাওয়া। তাহলেই বুঝতে পারবো আসলেই উনি আসবেন কি না।

রান্না ঘরে আসতেই আম্মুর সাথে দেখা হলো। আমাকে দেখেই বলে উঠলো,
“সারারাত না ঘুমিয়ে মোবাইল টিপছিস নাকি? এত সকাল সকাল উঠলি কেমনে?”

হতাশ হলাম আম্মুর কথায়। কয়েক দিন দেরিতে ঘুম থেকে উঠায় বলতো সারাসাত নাকি মোবাইল টিপেছি, তাই সকালে উঠছি না। আর আজকে সকালে ঘুম থেকে উঠেও এই একই কথা শুনতে হলো। অনেকটা বিরক্তি কণ্ঠে বলে উঠলাম,
“রাতে গিয়ে দেখে আসতে পারো না? মোবাইল টিপি নাকি ঘুমায়। সকালে উঠলেও দোষ।”

“হু, বুঝছি! হাত মুখ ধুছিস, নাকি ঘুম থেকে উঠেই চলে আসছিস?”

“ফ্রেশ হয়েই এসেছি।”

আর কিছু বললো না আম্মু। সকালের নাস্তার আয়োজনে ব্যস্ত হয়ে গেল। সেখানে মিনিট পাঁচেক থেকেও বুঝতে পারলাম না কিছু। সেখান থেকে সোজা চলে আসলাম ড্রয়িং রুমে। বড় চাচা এবং আব্বু নিজেদের ব্যাবসার নানান কথা আলোচনা করে চলেছেন ড্রয়িং রুমে বসে, কিন্তু তাসফি ভাইয়ার প্রসঙ্গে কোন কথায় বললেন। তাহলে কি আমারই ভুল, উনি আসলে তো একটিবার হলেও ওনার নামটা এই বাড়িতে উঠতে। তাহলে উনি আসবেন না?
ঘন্টা দুয়েকর ব্যবধানে যখন বুঝতে পারলাম পুরোটাই আমার বোঝার ভুল, সিয়র হতেই স্বস্তি পেলাম যেন। ওই মানুষটার সামনে কিছুতেই আসতে চাই না আমি, আর না ওনার কথা ভাবতে চাই। এই চার বছর যেভাবে চলছে সেভাবেই চলুক সবকিছু।

.
আস্তে আস্তে যখন দুপুর গড়াতে লাগলো তখন তখন আরও শিয়র হয়ে গেলাম সত্যিই উনি আসছেন না। উনি আসলে বাসার পরিবেশটায় অন্য রকম হয়ে যেতো। এই পর্যন্ত রিফাপুর সাথে গল্প করে এবং মোবাইল টিপেই সময়টা কাটিয়েছি। কিছু একটা ভেবে কলেজেও যাই নি আজকে। এখন কিছুটা বোরিংও লাগতে শুরু করলো, আফসোস হতে লাগলো কলেজ যাওয়াটাই ভালো ছিলো আমার জন্য। ফুরফুরে মেজাজে থাকতে পারতাম হয়তো। মোবাইল টিপতে টিপতে বিরক্ত হওয়ায় রেখে দিলাম। রিফাপুর সাথে একটু গল্প করার ইচ্ছে হতেই আর বসে থাকলাম না রুমে। রুম থেকে বেরিয়ে রিফাপুর রুমে হাঁটা ধরলাম। হঠাৎই মাথায় কেউ টোকা দিতেই চমকে উঠলাম কিছুটা। এই বাড়িতে আমার মাথায় আবার কে টোকা দিতে পারে? ভেবেই পিছন ফিরতে নিলাম সেই মানুষটাকে দেখতে। পিছন ফিরে তাকে দেখে প্রচন্ড অবাক হয়ে গেলাম।

.
.
চলবে……???

#তুমি_বললে_আজ
#সিজন_২
লেখনীতেঃ #রিধিমা_জান্নাত_রূপা
#সূচনা_পর্ব

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here