তোমায় চেয়েছি পুরোটাই পর্ব -৩১+৩২

#তোমায়_চেয়েছি_পুরোটাই
#পার্টঃ৩১
#জয়ন্ত_কুমার_জয়

অসুস্থতা বুঝতে পেরে মিষ্টির পাশে দাঁড়ালো নীলু।মিষ্টি নীলুর হাত ধরে নিজেকে একটু সামলে নিলো।চোখের জল যেন আর বাঁধ মানছে না।মিষ্টির ইচ্ছে করছে চিৎকার করে বলতে,”প্লিজ আঙ্কেল বিষন্নকে দূরে পাঠাবেন না আপনার পায়ে পড়ি,,ওকে ছাড়া আমি ম’রে যাবো,প্রিয়জনকে হারানো খুব কষ্টের,আমি আর ভালোবাসার মানুষটাকে হারাতে চাইনা,”।কিন্তু সেই আর্তনাত কেউ শুনতে পেলো না।বিষন্ন নরম স্বরে বললো

” বাবা আমি এবরোডে পড়ালেখা করতে যাবো না, আমার ক্ষমা করে দিও ”

” কেনো যাবি না? ”

” বাবা পড়াশোনা আমার ভালোলাগে না,”

” তোমার মাথা ঠিক আছে?বুঝতে পারছো তুমি কি বলছো? ”

বুঝতে পারলাম বাবা ভিষণ রেগে গেছেন।রেগে গেলে তার স্বর ভারী হয়ে আসে,তখন তুই থেকে তুমিতে চলে আসেন।আমি বিনীতভাবে বললাম ” বাবা আমি দেশে থেকেও তো করতে পারি তাই না ”

” না পারো না,তুমি কি পারো আর কি পারো না সেটা আমি ঠিক করবো, তুমি না ”

” তুমি কি ইচ্ছের বিরুদ্ধে আমায় পাঠাবে?! ”

” প্রয়োজন পড়লে তাই করবো। আমার কথা বলা শেষ,এবার সবাই আসতে পারো ”

আমি কিছু বলতে পারলাম না।এই নিয়ে বাবার সাথে একাকি কথা বলতে হবে।মিষ্টির দিকে তাকাতেই আমার প্রচন্ড মায়া হতে লাগলো।মিষ্টির চোখে জল,সেই জল আড়াল করে আমার দিকে স্বাভাবিক ভাবেই তাকিয়ে মুচকি হাসলো। কিন্তু আমি বেশ বুঝতে পারছি এই মুহুর্তে ওর মনের ভিতরে ঠিক কি চলছে।

ঘরের সব আলো নিভিয়ে বসে আছে বিষন্ন ইচ্ছে করছে ছুটে পালিয়ে যেতে এই সবকিছু থেকে।চোখের ইনফেকশনটাও বেড়েছে,মনে হচ্ছে কেউ সুই ফুটাচ্ছে।বিষন্ন ঠিক করলো মিষ্টির সাথে কথা বলবে।প্রয়োজন হলে এইসব কিছু থেকে আলাদা হয়ে তারা দুজন অন্য কোথাও নিজেদের স্বপ্ন বুনবে।

ছাঁদের ঠিক মাঝখানটায় মিষ্টি দাড়িয়ে আছে।মিষ্টির পাশেই বিষন্ন।বিষন্ন বুঝতে পারছে না কি বলে শুরু করবে।বেশ কিছুক্ষন কেটে গেলো দুজনার নিরবতায়।নিরবতা উপেক্ষা করে মিষ্টি বললো

” কিরে চুপ করে আছিস যে? ”

” কি বলবো বুঝতে পারছি না ”

” আনন্দে সব কথা হারিয়ে গেছে তাই না? হাহাহাহা ”

” তুমি হাসছো? ”

” ওমা হাসবো না?এতো ভালো একটা খবর,তুই সুইজারল্যান্ডে যাবি,সেখানে পড়ালেখা করবি,তারপর গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করে দেশে ফিরবি।অবশ্য দেশে ফিরবি কিনা ঠিক বলতে পারছি না ”

” সবটা কি তোমার কাছে সহজ মনে হচ্ছে? ”

” হু।শোন বিষন্ন,তোর বয়স কম, সামনে এখনো পুরো ক্যারিয়ারটা পড়ে আছে।আমিও চাই তুই যাবি,কয়দিনেরই বা ব্যাপার? মাত্র তো চার বছর ”

বিষন্নর ইচ্ছে করছে মিষ্টির গালে একটা চ’ড় বসিয়ে দিতে।এই মেয়ে কি বলছে?ওর কি কোনো কষ্ট হবে না আমায় ছাড়া?ও কি সত্যিই আমায় ভালোবাসেনি?তবে কি আমার জোড়াজুড়িতে শুধু সায় দিয়ে গেছে?। বিষন্ন নিজেকে সামলে নিয়ে বললো

” আমি তোমায় ছাড়া থাকতে পারবো না,আমি তোমায় নিয়ে পালিয়ে যাবো,যেখানে বাবা আমাদের খুঁজে পাবে না ”

” একটা চ’ড় দিয়ে সব দাঁত ফালায় দিবো।ভবিষ্যতের চিন্তা আছে তোর? জীবনটা কি এভাবেই আবেগের নৌকায় ভাসিয়ে দিবি? ”

মিষ্টির কথায় বিষন্নর চোখের কোনে জল চলে এলো।চোখের জল মুছে বিষন্ন বললো

” প্লিজ এভাবে বলিও না,আমি সহ্য করতে পারবো না,অনেক কষ্টে তোমায় পেয়েছি,প্লিজ তোমার সাথে আমায় রেখে দাও ”

” আমায় পেয়েছিস মানে কি, তোর পাগলামি সহ্য করতে না পেরে একটু সায় দিচ্ছিলাম,মনে করেছিলাম কিছুদিন গেলে এইসব আবেগ সব কেটে যাবে, কি…..”

এইটুকু শুনেই বিষন্ন আর রাগ সামলাতে পারলো না।কষে একটা চ’ড় বসিয়ে দিলো মিষ্টির গালে।মিষ্টি তাল সামলাতে না পেরে টবের সাথে ধাক্কা খেয়ে ফ্লোরে পড়ে গেলো।বিষন্ন সেদিকে খেয়াল না করে হনহন করে চলে আসলো নিজের রুমে।

আজ ডিসেম্বরের ২০ তারিখ।বিষন্নের পরিক্ষা শেষ,আজ তার ফ্লাইট।বাবার ইচ্ছেনুযায়ী বিষন্ন অপেক্ষা করছে কখন ১১ টা বাজবে।এগারোটায় ফ্লাইট। এখন বাজে দশটা।আরো এক ঘন্টা সময় হাতে আছে।এয়ারপোর্টে বিষন্নের সাথে বসে আছে নীলু,আর ওর মা।বিষন্নর বাবা কার সাথে যেন ফোনে কথা বলছেন।নীলু বিষন্নর হাত ধরে বসে আছে,ওর চোখে জল।বিষন্ন আশেপাশে তাকাচ্ছে, যদি একপলক মিষ্টিকে দেখতে পায় সেই আশায়।সেই রাতের পর থেকে মিষ্টির সাথে বিষন্নর আর দেখা হয়নি।পরেরদিন যখন ঘুম ভাঙ্গলো তারপর জানতে পারলো মিষ্টি কাউকে কিছু না জানিয়ে বাড়ি থেকে চলে গেছে।বিষন্নও তাকে খোঁজার চেষ্টা করেনি,কি দরকার? যে হারিয়ে যেতে চায় তাকে খোঁজা বৃথা। তবুও মন যে সেটা মানতে চায় না,তাই তো বারবার চোখ খুজে বেড়াচ্ছে এয়ারপোর্টে থাকা শতশত মানুষের ভিড়ের মধ্যে মিষ্টিকে।মিষ্টি যদি এখনো হঠাৎ সামনে এসে বলে ” এইযে বিষন্ন বাবু,সুইজারল্যান্ডে গিয়ে আর কাজ নেই,চল আমরা দূর কোনো দ্বীপে গিয়ে ছোট্ট একটা সংসার সাজাবো,রাত হলে সমুদ্রে হাটু অব্দি জলে পা ভিজিয়ে তারা দেখবো,বাতাসে এলোমেলো চুল আমার মুখে এসে পড়বে,আর তুই সেই চুল পরম যত্নে কানে গুঁজে দিবি “।দেখতে দেখতে সময় হয়ে এলো।বিষন্ন সবাইকে বিদায় জানিয়ে রওনা হলো পরিবারকে ছেড়ে,বন্ধুবান্ধবদের ছেড়ে,দেশ ছেড়ে অন্য নতুন একটা জায়গায়।শুধু বিদায় দিতে পারলো না যাকে কাছে পেতে চেয়েছিলো।

__________________

দুপুরের কড়া রোদে মিষ্টি হাঁটছে।হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছালো হোস্টেলে।আগের হোস্টেলটা পরিবর্তন করেছে, যেন ওই বাড়ির কেউ তার খোঁজ না পায়,বিশেষ করে বিষন্ন।সবকিছুর থেকে একপ্রকার পালিয়ে বেড়াচ্ছিলো বলা চলে।মিষ্টি ফ্রেশ হয়ে এককাপ চা হাতে ছাঁদে গেলো।এইছাদে একটা দোলনা আছে।দোলনার পাশে নানা ফুলের টপ।সেখানে যে ফুলগুলো ফুটেছে সবগুলিই রোধে নেতিয়ে পড়েছে।মিষ্টি ফুলগুলোর ওপর আলতো স্পর্শ করে দোলনায় বসলো,চায়ের কাপ রাখলো পাশে।কড়া রোদটাই কেন জানি খুব ভালোলাগছে।মিষ্টি হাতের ডায়রিটা খুললো।আজকের তারিখটা লিখতেই হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠলো।মিষ্টির ভাবান্তর হলো হলো না।সে ডায়রিতে লিখছে

সময়- একটা ছয় মিনিট/বিশ তারিখ

প্রিয় বিষন্ন,
তোকে বিদায় জানিয়ে ফিরলাম মাত্র।চাইলেও আর দেখতে পারবো না দীর্ঘসময়,চাইলেও ছুঁতে পারবো না।আচ্ছা তুই কি এয়ারপোর্টে আমায় খুঁজেছিলি?আমার কেন জানি মনে হচ্ছিলো তুই আমায় মনে মনে অনেক খুজেছিলি,ভেবেছিলি আমি শেষ বিদায়টা দিতে চলে আসবো।তোর ভাবনা একদম ঠিক রে,আমি সত্যিই গিয়েছিলাম,আর যাই হোক তুই আমায় বুঝিস।জানিস তোকে দূর থেকে দেখে আমার পুরো দুনিয়াটা ভেঙ্গেচুড়ে একাকার হয়ে যাচ্ছিলো,আমি কিভাবে তোকে ছাড়া থাকবে এতোদিন বলতো?আমি অপেক্ষায় থাকবো তোর,তোর মিষ্টি সবসময় তোরই থাকবে বুঝলি?

এইটুকু লিখতেই ফোনের রিং বারবার বেজে উঠছে।বিরক্ত হয়ে ফোন ধরতেই ওপাশ থেকে কান্নামিশ্রিত স্বরে নীলু বললো

” বিষন্নর জন্য আমার খুব খারাপ লাগরে রে, পুরো বাড়িটা কেমন ফাঁকা হয়ে আছে,আমিও আর থাকবো না এই বাড়িতে ”

মিষ্টির চোখ ভিজে উঠলো।জল মুছে বললো ” কয়েকটা দিন’ই তো,ঠিক কেটে যাবে দেখিস ”

” তুই এরকমটা কেনো করলি বলতো? কেনো ওকে বলতে দিলি না যে বাবা বলেছেন ওখান থেকে ফিরেই তোদের বিয়ে হবে ”

” আমি জানিনা নীলু,শুধু মনে হচ্ছিলো এটা জানলে বিষন্ন যেতে রাজি হতো না।আর আমি চাই বিষন্ন যেন ওর পড়াশোনায় ফোকাস করতে পারে ”

” এখন তুই কি করবি? ”

” ইন্টারভিউ দিয়েছি কিছুদিন আগে,মনে হচ্ছে একটা জব ম্যানেজ করতে পারবো, নিজেকে প্রস্তুত বিষন্নর জন্য প্রস্তুত করতে হবে না? ”

” আচ্ছা আজ না তোর পরিক্ষা ছিলো? পরিক্ষা কেমন হলো ? ”

” ভালো, নীলু এখন রাখি,পড়ে ফোন দিবো ”

ফোনটা কেটে মিষ্টি হাসলো।আজ তার পরিক্ষা ছিলো ঠিকি,কিন্তু সে পরিক্ষা দেয়নি।পরিক্ষার হলে বসলে বিষন্নকে দেখতে যাওয়া হতে না।পরিক্ষা না দেওয়ায় একবছর নাহয় পিছিয়ে যাবে,তাতে কি আসে যায়,বিষন্নকে এভাবে দূর থেকেই দেখার জন্য জীবনের পরিক্ষাতেও এভাবে হাসিমুখে অনুপস্থিত থাকতে পারবে সে।

______________________

এয়ারপোর্টে নামার কিছুক্ষন পরেই বাবার বন্ধু রাজ আঙ্কেল আমায় তাদের বাড়িতে নিয়ে এলেন।আমার থাকার যায়গা হলো ওপর তলায়।রাস্তায় আসতে আসতে ওনার সাথে বেশ কিছু কথা হলো,কথার মাধ্যমে বুঝতে পারছি তিনি খুব সহজ সরল এবং ভালো মনের একজন মানুষ।তার পেশা জাহাজের পাইলট।পুরোজীবনটা সমুদ্রেই কাঁটিয়ে দিচ্ছেন।তার দুই মেয়ে,বড় মেয়ের নাম নিশু আর ছোট মেয়ের নাম তিশু।এটুকু বলতেই ওনার বাড়িতে এসে পৌছালাম।

ফ্রেশ হয়ে বিছানায় আয়নায় চুল ঠিক করছি এমন সময় একটা মেয়ে ট্রে-তে করে একটা কাপ নিয়ে এসে বললো

” আপনার জন্য কফি নিয়ে এসছি,কোথায় রাখবো ”

আয়নায় চুল ঠিক করতে করতেই বললাম ” টেবিলেই রেখে দিন ”
মেয়েটাকে এই প্রথম দেখলাম।বয়স ষোলো-সতেরো এরকম হবে,ফর্সা মুখে পাতলা ঠোঁট। মেয়েটার কন্ঠ সুন্দর। কফি হাতে নিয়ে চুমুক দিলাম।মেয়েটা এখনো দাড়িয়ে আছে।দাড়িয়ে থাকা দেখে বললাম

” আপনি রাজ আঙ্কেলের মেয়ে? ”

” জি,আমার নাম তিশু,”

” আমার নাম বিষন্ন,”

মেয়েটা কিছু না বলে একপ্রকার দৌড়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে গেলো।ব্যাপার কি কিছুই বুঝতে পারলাম না।যেখানে এডমিশন নিয়েছি সেটা কলেজ একই সাথে ভার্সিটিও।জানুয়ারি থেকে ক্লাস শুরু।কফির কাপটা হাতে নিয়ে ছাঁদে উঠলাম।ছাঁদ থেকে বাইরের দৃশ্যটা চোখে পড়ার মতো।বড়বড় কাঁচের বিল্ডিংয়ে রোদ প্রতিফলিত হয়ে একটা রোমাঞ্চকর পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।ছাঁদে কয়েকটা টব,টবে ফুল ফুটেছে। টবটা দেখে হঠাৎ মিষ্টির কথা মনে পড়লো।এরপর মনে হতে থাকলো একের পর এক ওর সাথে কাটানো সময়গুলো। মুহুর্তেই ভাবনা থেকে বেড়িয়ে এলাম,কেন ভাবছি আমি ওর কথা? এতো কষ্ট দিয়েছে তবুও কেন ওর কথা মনে পড়ছে? বারবার বেলজ্জার মতো সামনে গিয়েছি,নিজেকে প্রকাশ করেছি,শেষ পর্যন্ত কিনা বললে এইসব আমাকে সায় দিচ্ছিলে?বাহ্! আমিও কি পাগল,সত্যিই ভেবে বসলাম তুমিও আমায় ভালোবাসো।আর নয়,অনেক হয়েছে নিজেকে প্রকাশ করা,এইবার এই বিষন্ন আর আগের বিষন্ন থাকবে না।লাগবে না তোমার ভালোবাসা…..

চলবে?#তোমায়_চেয়েছি_পুরোটাই
#পার্টঃ৩২
#জয়ন্ত_কুমার_জয়

পড়ালেখা,ক্লাব,সেখানকার আধুনিক পরিবেশ,নতুন বন্ধু সবকিছু মিলেমিশে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে বিষন্নর।ভার্সিটিতে তাকে বেশিরভাগ ছেলে-মেয়েই চেনে একজন বেষ্ট সংগীত শিল্পী হিসেবে।ভার্সিটির সংগীত এবং খেলাধুলার কয়েকটা ক্লাবে বিষন্ন টপ লেভেলের মধ্যে আছে বলা যায়।এরমধ্যেই জিতেছে বেশ কয়েকটি চ্যাম্পিয়ন ট্রফি।পড়ালেখা যেমন তেমন, তাকে বেশিরভাগ টানে গান আর সাঁতারে।যেন এই দুইটা জিনিসই তার জীবনের একমাত্র ভালোলাগা।

রোজকার মতো আজ ভোরেও তিশু বিষন্নর রুমের সামনে গান প্রাকটিস করছে।বিষন্নর রুম থেকে ছাঁদ দেখা যায়।রোজ তিশুর গানের গলায় বিষন্নের ঘুম ভাঙ্গে।সারাদিনটা ক্লাবে গান আর সাঁতার পার করে অনেক রাত অব্দি পড়াশোনায় ব্যাস্থ থাকে সে।ভোর হতেই তিশুর গান তাকে খানিকটা বিরক্তও করে,আবার ভালোও লাগে।মিষ্টি স্বরের গানই হয়তো বিষন্নর মন খারাপটা ধীরে ধীরে ভালোলাগায় পরিণত করে।বিষন্ন বিছানা থেকে নেমে ওয়াসরুমে থেকে ফ্রেশ হয়ে নিলো।নিজে কফি বানিয়ে টাওয়েলটা গলায় পেঁচিয়ে রওনা হলো ছাঁদে।সেখানে জিমের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুর ব্যাবস্থা করা আছে, ঘড়ি ধরে ত্রিশ মিনিট জিম করে বিষন্ন রেডি হয় ভার্সিটির উদ্দেশ্য। সারাদিনটা সেখানেই কাটে।সন্ধায় বাসায় ফিরে তিশুকে গান শেখাতে বসায়।তিশুর ও গান শেখায় প্রবল আকর্ষন।একঘন্টা গান প্রাকটিস করিয়ে বিষন্ন যায় নিজের রুমে,সেখানে রুম অন্ধকার করে কিছুক্ষণ মিউজিক শুনে পড়তে বসে,পড়াশোনা চলে গভীর রাত অব্দি।

ছাঁদে উঠে একটা ডাম্বেলের ওপর কফির কাপটা রাখলো বিষন্ন।বেশ কিছুক্ষণ জিম করে ক্লান্তি দূর করতে সকালের দৃশ্য কিছুক্ষণ উপভোগ করে।এমন সময় তিশু গান ছেড়ে এসে বললো

” এইযে মিঃবি,আপনার কি জিম শেষ? ” তিশু বিষন্নকে সংক্ষেপে বি বলে ডাকে।বিষন্নর এই নামটা প্রথমে ভালো না লাগলেও এখন তেমন মন্দ লাগে না।বিষন্ন ঠান্ডা কফিতে চুমুক দিতে দিতে বললো

” হু, ”

” আজ তাড়াতাড়িই শেষ হলো মনে হচ্ছে ”

” আজকে ক্লাবের সাঁতার প্রতিযোগিতার ফাইনাল রাউন্ড তিশু, তাই শরীর বেশি ক্লান্ত করা যাবে না ”

” আমি ভেবেছি আমিও আপনার সাথে জিম করবো,আমিও আমার হাত আপনার মতো পেশিবহুল করবো ”

তিশুর কথায় বিষন্নর হাসি পেলো।হাসতে হাসতে বললো ” চিকন হাতেই তোমায় সুন্দর লাগে,”

” সত্যি? সত্যি বলছেন? ”

” হ্যা, তবে চাইলে একটু জিম করতে পারো,এতে শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে ”

” আজকে আপনি সাঁতারে জিতবেন, আমি জানি ”

” কি করে জানো? ”

” আমার মন বলছে,আপনাকে হারাবে এমন কেউ আছে বলে আমার মনে হয় না ”

” দেখা যাক,”

” আপনাকে যে কাল রাতে একটা বই দিয়েছিলাম সেটা পড়েছেন? ”

বিষন্ন একটু ইতস্তত ভঙ্গিতে বললো ” আসলে এখনো পড়িনি,সময় হয়ে ওঠেনি,তবে আজ পড়বো ”

” পড়ে কি বুঝেছেন আমায় জানাবেন,আমি অপেক্ষা করবো ”

” আচ্ছা ”

এইটুকু বলে বিষন্ন সাওয়ার নিয়ে বেড়িয়ে পড়লো ভার্সিটির উদ্দেশ্য।এরমধ্যে তিশুও রেডি,বিষন্নই রোজ তাকে নামিয়ে দেয়,কেননা তিশুর কলেজ পেরিয়েই বিষন্নর ভার্সিটি,তাই এই দায়িত্বটা রেজ বিষন্নকেই পালন করতে হয়।তিশুকে কলেজের সামনে নামিয়ে দিয়ে বিষন্ন ভার্সিটির গেইটে পৌঁছাতেই বিষন্নর হলুদ রঙ্গের গাড়িকে সেখানকার স্টুডেন্টরা ঘিরে ধরলো।সবাই বিষন্নকে শুভেচ্ছা,অল দ্যা বেস্ট জানালো।বিষন্ন গাড়িটা পার্কিং করে ক্লাবের দিকে রওনা হলো।

আর কিছুক্ষণের মধ্যেই কমপিটিশন শুরু হবে।ওয়াটার স্যুট পরে প্রতিটি কমপিটিটর প্রস্তুতি নিচ্ছে।বিষন্নও কালো রঙ্গের স্যুট পড়ে প্রস্তুতি নিলো।লাল টকটকে টি-শার্ট পড়া একজন লোক ঘড়ি দেখে ঠিক ১০ঃ৩০ মিনিটে ফায়ারিংয়ের মাধ্যমে জানান দিলেন কমপিটিশন শুরু হয়েছে।প্রতিটি কনপিটিটর সঙ্গে সঙ্গে সুইমিং পুলে ঝাপ দিলো।প্রত্যেকজন ছুটছে গুলির বেগে,বিষন্নও খুব দ্রুত সুইমিং করছে।শেষ অব্দি ফাইনাল টাচে প্রথম স্পর্শ করলো সুয়া নামের একটা ছেলে।বিষন্নর পজিশন সেকেন্ড। ফাইনাল টাচে স্পর্শ করে বিষন্ন সুয়ার দিকে তাকিয়ে হাসলো,সুয়া অনেকটা হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইলো বিষন্নর দিকে।

গ্যালারির অন্যান্য দর্শক সবার মুখে একটা হতাশার ছাপ ভেসে উঠলো।বিষন্নর সেকেন্ড হওয়ার বিষয়টা কেউ মেনে নিতে পারছে না,তারা প্রথম পজিশনে বিষন্নকে দেখতে চেয়েছিলো।অন্যান্য দর্শকের মতো সেখানে বসে থাকা তিশুরও মন খারাপ হয়ে গেলো।কলেজ ফাঁকি দিয়ে সে এখানে এসছে বিষন্নকে জয়ী হিসেবে দেখতে,কিন্তু তার সেই ইচ্ছেটা পূরন হলো না।

মন খারাপ নিয়ে ক্লাবের বাহিরের ক্যান্টিনে মুখ কালো বসে বসে আছে তিশু।লক্ষ্য করলো বিষন্ন হাসি হাসি মুখে বেড় হচ্ছে,বেড় হয়েই বিষন্ন সোজা এসে বসলো তিশুর সামনের চেয়ারে।তিশু ভয়ে একটু গুটিসুটি হয়ে বসলো।বিষন্ন বললো

” কলেজ ছেড়ে এখানে কেনো? ”

তিশু মাথা নীচু করে বললো ” আপনার কমপিটিশন দেখতে এসছি ”

” তোমার ভবিষ্যৎবাণী তো মিথ্যে হয়ে গেলো,আমি ফাস্ট হইনি ”

নিশু ভ্রু কুচকে বললো ” আমার মনে হচ্ছে আপনি ইচ্ছে করে ওই ছেলেটাকে জিতিয়ে দিয়েছেন।এর থেকেও তারাতাড়ি আপনি সুইম করতে পারেন,কিন্তু আজ করেননি ”

বিষন্ন কিছু বললো না।একটা বার্গার নিয়ে এসে নিশুর সামনে এসে বসলো।বার্গারে একটা কামড় দিয়ে টেবিলে থাকা ড্রিংসে চুমুক দিতে যাবে এমন সময় তিশু বললো ” ওটা আমি অর্ডার দিয়েছি “।বিষন্ন ড্রিংস রেখে আরেকটা ড্রিংস অর্ডার দিলো।দু’জনই চুপচাপ।তিশু দেখতে পেলো যে ছেলেটা একটু আগে ফাস্ট হয়েছে সেই ছেলেটা এদিকেই আসছে।

ছেলেটা কাছে এসে বিষন্নর সাথে হ্যান্ডসেক করলো।তাদের মধ্যে বেশ হেসে হেসে কথাও হচ্ছে,তিশু বুঝতে পারলো না কি হচ্ছে,এই ছেলেটার সাথে বিষন্ন হেসে হেসে কথা বলছে? কিভাবে সম্ভব? আমি তো জানি কমপিটিটররা একে অপরের খুব বড় শত্রু হয়,এমনকি তারা নিজেদের ছায়াও মাড়ায় না।তাদের কথাবার্তা কিছু কিছু কানে এলো,যেমন

” তোমাকে অনেক ধন্যবাদ বিষন্ন,আমি তোমার কাছে কৃতজ্ঞ থাকবো ”

” আরে ব্যাপার না,তুমি নিজের পরিশ্রমে এই পুরষ্কার পেয়েছো,এটা তোমার প্রাপ্য ছিলো।আশা করি এই টাকা দিয়ে তোমার পড়াশোনার খরচ হয়ে যাবে ”

” তুমি চেয়েছো বলে পেরেছি,নইলে সম্ভব হতো না, পড়ালেখা খরচ হয়ে যাবে মনে হচ্ছে ”

” ট্রিট দিতে হবে কিন্তু,চ্যাম্পিয়ন বলে কথা ”

” অবশ্যই,তুমি কার্ডটা রাখো,যা ইচ্ছে খাও,আমায় বাড়ুতে ঢ়েতে হবে,মা এই মেডেলটা দেখলে খুব খুশি হবে।আর তোমায় অনেক ধন্যবাদ বন্ধু ”

__________________________

আজ সকাল থেকে মিষ্টির মেজাজ প্রচন্ড খারাপ।আর কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রেজেন্টেশন শো করাতে হবে,অথচ নতুন নতুন ডিজাইন গুলি এখনো পৌঁছায়নি।মিষ্টি বেল টিপে তার পি.এ তাওসিফকে ডাকলো।তাওসিফ একপ্রকার দৌড়ে চলে আসলো মিষ্টির কেবিনে।মিষ্টি কঠিন গলায় বললো

” কি করেন আেনি সারাদিন?আর দশ মিনিট পর প্রেজেন্টেশন, এখনো নতুন কালেকশন পৌঁছায়নি,”

” স….সরি ম্যাম,আমি বিষয়টা বুঝতে পারছি না কেন এরকম হচ্ছে, সম্ভবত সার্ভার খুব দূর্বল,তাই পৌঁছাচ্ছে না ”

” পাঁচ মিনিটের মধ্যে যদি কালেকশন না পাই তাহলে আমার বিরাট বড় প্রজেক্ট হাত ছাড়া হয়ে যাবে।হা করে কি দেখছেন,যে করেই হোক কালেকশনের ব্যবস্থা করুন যান,”

” জি ম্যাডাম আমি দেখছি ”

তাওসিফ চলে যেতেই মিষ্টি আবারো ডাকলো।গম্ভীর স্বরে বললো ” নতুন ডিজাইনের দায়িত্ব কাকে দেওয়া হয়েছিলো? ”

” মিঃঅভ্রকে দেওয়া হয়েছিলো ”

” ওহহ নো,,আমি কতবার বলেছি ইমারজেন্সি কোনো কাজ ওনাকে না দিতে? যদি আজকের প্রজেক্ট হাত ছাড়া হয়ে যায় তাহলে আপনার চাকরিও আউট হয়ে যাবে।”

” ম্যাম আমার কি দোষ,আমি তো…..”

” চুপ,এখন যান এখান থেকে,আর মিঃঅভ্রকে বলেন ম্যাম ডাকছে ”

তাওসিফ হন্তদন্ত হয়ে বেড় হয়ে গেলো।কিছুক্ষণ পর কাঁচের দরজা সরিয়ে মিঃঅভ্র ভেতরে এসে মিষ্টির সামনের চেয়ারে বলসো।মিষ্টি রাগি স্বরে জিগ্যেস করলো

” আপনার ডিজাইন পনেরো মিনিট আগে আসার কথা, সেখানে আর পাঁচ মিনিট পর প্রেজেন্টেশন, অথচ আপনার ডিজাইন এখনে পৌঁছায়নি ”

মিঃঅভ্র স্বাভাবিক ভাবেই বললেন ” ম্যাম আমার দোষ কোথায় এখানে,সার্ভার দূর্বল থাকলে আমার তো কিছু করার নেই,”

” সার্ভার তো কাল রাত থেকে দূর্বল,সেটা মাথায় রেখে একটু আগে পাঠাবেন না? এটা তো মাথায় রাখা উচিত আপনার,মানে কি… ”

আরো কঠিন কিছু কথা বলতে যাবে এমন সময় মিষ্টির মনিটরে একটা মেইল আসলো।ওপেন করতেই দেখলো অভ্রর পাঠানো সব ডিজাইন।মিষ্টি স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো।আর এক মিনিট পরেই প্রেজেন্টেশন।মিষ্টি মিঃ অভ্রকে যেতে বলে প্রজেক্টরের সামনে দাড়ালো।

অভ্র এখনো বসে আছে,এক হাত গালে রেখে তাকিয়ে আছে সামনে দাড়িয়ে থাকা ব্যাস্ত মেয়েটার দিকে।কে বলবে? কয়েক সেকেন্ড আগ মুহুর্ত পর্যন্ত এই মেয়েটার মাথায় আগুন জ্বলেছিলো,আর এখন নিমিষেই সব রাগ উধাও,কত সুন্দর হাত নাড়িয়ে, হেসে হেসে ক্লায়েন্টদের সাথে ডিসকাস করছে।অভ্র ভেবে পায় না একটা মেয়ে এতোদিক সামাল দেয় কিভাবে,এই যায়গায় সে হলে এতে বড় কোম্পানি দুইদিনে লাটে উঠে যেতো।অথচ এই তরুনী একসঙ্গে দেশের টপ ফাইভের দুইটি কোম্পানির CEO.।

অভ্রর এভাবে হা করে তাকিয়ে থাকা দেখে মিষ্টি বিব্রতবোধ করছে,কিন্তু সে কিছুই বলতে পারছে না,কারন সামনের পর্দায় বিদেশের নানান পর্যায়ের বড়বড় সব বিজনেসম্যানরা বসে আছেন।মিষ্টির ইচ্ছে করছে অভ্রর সবগুলা চুল পটপট করে ছিঁড়ে ফেলতে,এভাবে তাকিয়ে থাকলে প্রেজেন্টেশন দেওয়া যায় নাকি?এমনিতেই মিষ্টি এইসবে প্রচুর লজ্জা পায়,তার মধ্যে এভাবে হ্যাবলার মতো কেউ তাকিয়ে থাকলে সে লজ্জা দ্বিগুণ বেড়ে যায়।

পঁচিশ মিনিটের প্রেজেন্টেশন শেষ করে মিষ্টি ধপ করে চেয়ারে বসে পড়লো।অভ্র হাত তালি দিলো।অভ্রর এরুপ কর্মকান্ডে মিষ্টির একটু রাগ হলো কিন্তু কিছু বললো না,কেননা সে এই মুহুর্তে খুব খুশি।অভ্রর করা ডিজাইন ওদের পছন্দ হয়েছে,পছন্দ না হয়েও তো উপায় নেই,অভ্র চারুকলায় পরপর তিনবার গোল্ড মেডেল অর্জন করেছে।এমনিতে অনেক দক্ষ তবে খুবই ছন্নছাড়া।অভ্র বললো

” কত রেটিং দিয়েছে? ”

” টেন আউট অফ টেন ”

” ওয়াও,কংগ্রাচুলেশনস, ”

” এটাতো আমার আপনাকে দেওয়ার কথা,এতো সুন্দর ডিজাইন তৈরি করেছেন ”

” আমাকে দিতে হবে না,,আপাতত একটু হাসুন ”

মিষ্টি ইতস্তত করে বললো ” মানে? ”

” মানে একটু হাসুন,গম্ভীর মুখে আপনাকে দেখতে ভালোলাগে না,আমার দায়িত্ব সকল সৌন্দর্য তৈরী করা ”

মিষ্টি কিছু বললো না।টেবিলে থাকা ফাইলটা খুললো,ফাইলে কোনো কাজ নেই,অভ্রর কথায় লজ্জা কাটাতে মূলত ফাইলটা খোলা।অভ্র আবারে বলল

” একটা বাজে,লান্সের সময় হয়ে এসছে,এতো বড় প্রজেক্ট পেলাম,এই আনন্দে আমি আপনাকে ট্রিট দিতে চাই,প্লিজ না করবেন না,প্লিজ প্লিজ প্লিজ প্লিজ,”

অভ্রর এতো রিকুয়েষ্টে মিষ্টি রাজি হয়ে গেলো।অফিস থেকে বেড়িয়ে অভ্র একটা রিক্সা দার করালো।মিষ্টি ভ্রু কুচকে বললো

” রিক্সা কেনো? ”

” রেস্টুরেন্টটা একটু দূরে,তাই রিক্সা ”

” গাড়িতে যাই,অফিসে তো অনেক গাড়ি ”

” আজ নাহয় রিক্সাতেই গেলাম,আশা করি খুব একটা খারাপ লাগবে না ”

মিষ্টি আর কিছু বললো না।মিষ্টি লক্ষ্য করেছে অভ্রর বেশিরভাগ কথাই সে ফেলতে পারেনা।আজ দুইবছর পর রিক্সায় উঠলো মিষ্টি।এই দুইবছরে কতটা পরিবর্তন সে হয়েছে।কে বলবে এই মিষ্টি দুইবছর আগ অব্দি রিক্সা,কখনো পায়ে হেটে এই শহরে হেটেছে।রিক্সা চলতেই মিষ্টির বু’কের ভেতরটা কেমন যেন দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে।মিষ্টি ইশারা করে রিক্সা থামাতে বলে।রিক্সা থামতেই মিষ্টি সাথে সাথে নামলো,রাস্তার পাশের বেঞ্চে বসলো।অভ্র ছুটে গেলো রাস্তার ওইপারে,জলের বোতল আনতে।

মিষ্টি চোখ বন্ধ করলো।মনে মনে ভাবলো ” এভাবে একসাথে কতটা সময় আমরা রিক্সায় ঘুরেছি তাই না রে বিষন্ন? তুই শুধু বাহানা খুঁজতি আমার হাত ধরার।কত সুন্দর ছিলো সেই সময়গুলো। আচ্ছা বিষন্ন তুই কি সত্যিই বুঝতে পারিস নি আমি তোকে কতটা চেয়েছি? তুই পেছন পেছন ঘুরবি জন্য তোকে এড়িয়ে চলতাম।তোর এই ঘুরঘুর করা আমার যে কি ভালোলাগতো তা তুই কখনো বুঝবি না।অথচ দেখ আজ তিনটা বছর কেটে গেলো।তুই আমার খোঁজটা পর্যন্ত নিলি না,একটাবার ফোন অব্দি করলি না।আমার কিন্তু তোকে রোজ মনে পড়ে জানিস? বারবার মনে হয় জীবনে ভালো থাকার জন্য কি এতোকিছুর সত্যিই প্রয়োজন আছে,? কি হতো যদি ওইভাবেই তোর সাথে থাকতে পারতাম,খুব বড় চাওয়া হতো কি সেটা?আমি তোকে ঠকাইনি বিষন্ন,তোর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই এরকমটা করেছিলাম।কিন্তু এখন তো দেখছি তুই নিজের ভবিষ্যত নিয়ে অনেক ভালোই আছিস,একটা বার খোঁজ নিলি না আমি কেমন আছি।তবে আমি অপেক্ষা করবো তোর জন্য,এই মিষ্টি তোর ছিলো,তোরই থাকবে।শুধু তুই প্লিজ পাল্টে যাস না,প্লিজ প্লিজ….

চলবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here