তোমার মনের মধ্যিখানি পর্ব -১০

#তোমার_মনের_মধ্যিখানি 🌼
#মিমি_মুসকান ( লেখনিতে )
#পর্ব_১০

[

নিঝুমের সামনে কয়েকটা মেয়ে দাঁড়ানো। মেয়েগুলো ইয়া লম্বা। নিঝুম ভ্রু কুঁচকে তাঁদের দিকে তাকিয়ে আছে। তাদের সামনে নিজেকে নিতান্তই বাচ্চা বাচ্চা লাগছে। আচ্ছা সেই কি বাচ্চা নাকি মেয়ে গুলোই একটু বেশি লম্বা। নিঝুম তাদের পায়ের দিকে লক্ষ্য লাগছে। যেই লম্বা এর মাঝে হাই হিল! হাঁটে কিভাবে ওরা! না হাই হিল নিঝুমও পড়ে তবে সবসময় না। কোন বিশেষ অনুষ্ঠানে , কিন্তু তখনো তার হাল যা হয় দেখার মতো। আর এখানে আশ্চর্যের বিষয় মেয়েগুলো রোজ’ই এগুলো পড়ে। এর সাথে একগাদা মেকআপ। কতো ভোরে উঠে তারা!

রীতিমতো তাদের সামনে দাঁড়িয়ে থেকে এই কথা গুলোই মনে আসছে নিঝুমের। তাদের দেখে মনে হচ্ছে দ্বিতীয় তানিশার দল! যাই হোক এই নিয়ে তার কোন মাথা ব্যাথা নেই। সে স্বাভাবিক গলায় বলল,

“সামনে থেকে সরে দাঁড়াও!

একটা মেয়ে একটু ভাব নিয়ে বলল, হ্যাঁ দাঁড়াচ্ছি!

বলেই‌ একটু সরে দাঁড়ানোর পর যেই না নিঝুম যেতে নেবে তখন এসে আবার জড়ো হয়ে দাঁড়াল। নিঝুম বুঝতে পারল তারা এভাবে এভাবে সরবে না। নিশ্চিত কিছু না কিছু এখন করবে। নিঝুম শব্দ করে শ্বাস ফেলে বলল, “কি চাই!

মেয়ে গুলো হেসে উঠলো। সামনের দিকের মেয়েটা এগিয়ে এসে বলল, তোমার হাল দেখতে এলাম। সেদিন তানিশা যেই ঔষধ দিয়েছে তা ঠিকঠাক জায়গায় লেগেছে কি না!

পাশের মেয়েটা একটু ঢং করেই বলল, আহ এভাবে বলিস না। বেচারির লাগছে!

পেছন থেকে আরেকটা মেয়ে বলল, লাগার তো দরকার তাই না! অন্যের প্রেমিকের দিকে চোখ দিলে প্রেমিকা তো আর বসে থাকবে না।

“কি বলছিস?

“কেন জানিস না তুই! আহনাফের আশপাশে শুধু ঘুর ঘুর করতো এই মেয়েটা। এখন আহনাফও তো কতো ভালো ছেলে। কি করে এই মেয়েটা কে কিছু বলতো বল তো।

“দেখতে তো খুব ভালোই মনে হয় কিন্তু এর পেটে পেটে এতো!

নিঝুম চুপচাপ শুনে যাচ্ছে। কোন কিছুই বলার ইচ্ছে করছে না তার! মোট কথা তাদের কথা কানেই নিতে চাইছে না নিঝুম। শুধু ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে!

এদিকে পেছন থেকে তানিশা ইশারা করতেই মেয়ে গুলো নিঝুমের দিকে জড়ো হতে থাকে। নিঝুম খানিকটা পেছন যেতে যেতে দেওয়ালের সাথে আটকে পরে। নিঝুম বলে উঠে,

“তোমাদের সমস্যা কি? এইভাবে আমার পেছনে লাগছো কেন?

একটা মেয়ে হেসে নিঝুমের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে,
“অন্যের পেছনে লাগাল স্বভাব তো তোমার।দেখেছি তো সেদিন কিভাবে আহনাফের গায়ের সাথে ঠেসাঠেসি করছিলে। তার বুকের মাঝে এসে পড়েছিল।

নিঝুম এতোক্ষণ চুপ হয়ে থাকলেও এখন আর পারল না। চোয়াল শক্ত করে বলল, তোমাদের সমস্যা কোথায় এখানে। আমি ঠেসাঠেসি করি নাকি চিপকে থাকি এতে তোমাদের কি?

মেয়েরা এবার নিজেদের মধ্যেই বলাবলি করতে থাকে, দেখলি দেখলি মেয়েটার স্বভাব দেখলি, কিভাবে জোড় গলায় কথা বলছে।

“চোরের মায়ের বড় গলা শুনিস নি!

নিঝুম এবার রেগেই বলে উঠে,
“হ্যাঁ করেছি আমি চুরি, আমার যা মনে চায় তাই করেছি এতে তোমাদের কি? আর যাই হোক তোমাদের মতো অন্যের পিছনে তো আর সমালোচনা করি নি আর না ওত পেতে বসে থাকি অন্যের দোষ ধরার জন্য!

সামনের মেয়েটা হাতের আঙ্গুল নিঝুমের চোখের দিকে ঠেকিয়ে বলে, সাবধানে কথা বলো। তোমার সাথে আমাদের তুলনা করছো!

নিঝুম হেসে মেয়েটার হাতের আঙ্গুল নামিয়ে বলে, প্রথমে তে তুমি আমার থেকে দূরত্ব রেখে কথা বলো। তুমি আমার সিনিয়র নও যে তোমার সব কথা শুনে চলতে হবে আমার। তাই নিজের অবস্থা বুঝে কথা বলো। সাহস হয় কিভাবে তোমার আমার দিকে আঙুল তোলার!

মেয়ে গুলো থমতম খেয়ে গেল। তার সাথে রিয়া আর দিয়াও খানিকটা অবাক হলো। তানিশা বাঁকা হাসল হয়তো এইটা সে আগে থেকেই আন্দাজ করেছিল। নিঝুম দমে যাবার পাত্রী নয়। ভাঙবে তবু মচকাবে না! নিঝুম এবার মেয়েগুলোর চোখে চোখ রেখে বলে, আমার জীবন,‌ যা ইচ্ছে হয় করবো। তুমি কে আমাকে বলার!

পাশ থেকে একটা মেয়ে বলে উঠে, হ্যাঁ এইসব মেয়েকে আর আমরা কি বলবো। ওদের জন্য তো আমাদের নাম খারাপ হচ্ছে।

নিঝুম এক নিশ্বাসে বলে উঠে,
“যখন লোকে কথা বলে তখন না হয় আমাকে দেখিয়ে দিয়ো তাহলে আর কেউ কিছু বলবে না। ঠিক আছে। সরো এখন আমার সামনে থেকে!

বলেই যেই না নিঝুম যেতে নেবে তখন’ই তানিশার ইশারায় একজন পায়ে ল্যাং মেরে ফেলে দিলো নিঝুম কে। ধপাস করে মেঝেতে পড়ে গেল নিঝুম। আশেপাশের সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল। মেয়ে গুলো সবাই হেসে উঠল। দূরে দাঁড়ানো তানিশাও মুচকি হাসল। মেয়ে গুলো এসে এবার নিঝুমের চারদিকে জড়ো হয়ে বলল,

“পরবর্তীতে আমার সাথে উঁচু গলায় কথা বললে এর থেকেও খারাপ হবে বুঝলে তুমি!

বলেই চলে যেতে নিল। নিঝুম দ্রুত উঠে দাঁড়িয়ে বলল, না বুঝতে পারি নি। আরেকবার এসে কি বুঝাবে আমাকে!

মেয়ে গুলো পিছন ফিরে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে রইল। নিঝুম হাত ঝেড়ে তাদের উদ্দেশ্যে বলে উঠল,

“তোমরা কি ভেবেছ আমাকে কিছু বলবে আর আমি চুপচাপ মেনে নেবো। এত’ই কি সহজ নাকি!

মেয়ে গুলো তেড়ে এলো। একটা মেয়ে কথা বলার জন্য আঙুল তুলতেই নিঝুম তার হাত মুচরে দিল। সবাই চমকে উঠল। নিঝুম তার হাত ছেড়ে দিতেই মেয়েটা মেঝেতে বসে কাঁদো কাঁদো মুখ করল। নিঝুম বিরক্তি স্বরে বলল,

“এতো জোরেই ধরে নি, বাচ্চাদের মতো কাঁদতে শুরু করো না।

“তোমার সাহস কি করে হয় আমাদের সাথে এমনটা করার।

“চুপ করেই ছিলাম, কিছু করার ইচ্ছে ছিল না। তবে তোমাদের কারণে আর থাকা হলো না।

বলেই নিঝুম কাঁধের ব্যাগটা কে ধরে নিজের পথে হাঁটা ধরল। তখনই বাকি মেয়েরা এসে তাকে আবারো ঘিরে ধরল তাকে। নিঝুম বিরক্তি হয়ে পেছনের দিকেই হাঁটা ধরতেই দেখল তানিশা নিচে পড়ে থাকা মেয়েটা কে উঠাচ্ছে! এখন যে একটা কিছু হবে তা আর বুঝতে বাকি নেই। তানিশা হেসে নিঝুমের সামনে এসে দাঁড়াল। নিঝুম ভয়ে এক পা পিছিয়ে গেল। তানিশা হেসে হাত উঠালো। ভয়ে চোখ বন্ধ করে নিল নিঝুম। অতঃপর দেখল তানিশা তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। নিঝুম ভয়ে ভয়ে তানিশার দিকে তাকাল। রিয়া আর দিয়া মুখ টিপে হাসছে। তানিশা বলে উঠে,

“তোমরা মারা”মারি করছো কেন?

নিঝুম কিছু বলতে নিবে তার আগেই পেছনের মেয়ে গুলো বলে উঠে,
“আপু আমরা তো ওকে বুঝাচ্ছিলাম!

“কি বুঝাচ্ছিলে!

“এটাই যে অন্যের প্রেমিকের দিকে চোখ না দিতে!

মেয়েটার কথা শুনে রিয়া আর দিয়া শব্দ করে হাসল। তানিশা মুখ টিপে হেসে নিঝুমের দিকে ফিরল। নিঝুম দাঁতে দাঁত চেপে দাঁড়িয়ে রইল। অস্থির লাগছে তার। পাশ থেকে দিয়া বলে উঠে,

“এতে মারা*মারি করার কি দরকার পড়ল!

নিঝুম যার হাত মুচরে দিয়েছিল সেই মেয়ে বলে উঠে,
“এটাই তো আপু। আমি তো বলছিলাম আহনাফ ভাইয়ার থেকে দূরে থাকো। তানিশা আপুর এটা একদম পছন্দ না। এটা বলতেই সে আমার হাত মুচরে দিল।

তানিশার কপাল কুঁচকে গেল। ওপাশ থেকে আরেকটা মেয়ে বলল, আপু আমার মনে হয় তোমার ওকে আরেকবার বোঝানো দরকার।

নিঝুম বলে উঠে, “না মোটেও এমনটা না। ওরা শুধু শুধু আমার পিছন লাগছিল। আর ওরা সবাই মিলে আগে আমাকে ল্যাং মেরে ফেলে দিয়েছিল। তাই আমি ওর হাত মুচরে দিয়েছি। কিন্তু এতো জোড়ে না, শুধু হাতটাই ধরেছিলাম!

সব গুলো মেয়ে একসাথে বলে উঠল, মিথ্যে কথা!

নিঝুম মেয়েগুলোর দিকে অবাক চোখে ফিরে বলল, মোটেও না। তোমরা সবাই মিথ্যে বলছো।

“কেন বলবো আমরা মিথ্যে! তোমার সাথে আমাদের কি শত্রুতা। আর আমরা এতোজন মিথ্যে’ই বা বলবো কেন?

নিঝুম পুরোই থতমত খেয়ে গেল। সে কিছু বলতে নিবে তখনই তানিশা বলে উঠে, এতোজন কেন মিথ্যে বলবে বলো তুমি! এছাড়া ওদের এতোজনের সাথে তোমার একার কথা আমি কিভাবে মানবো। শুধু এই একজনের কথায় কি হবে বলো তো।

নিঝুম ঢোক গিলল। আশপাশ তাকাতেই দেখল যাদের মনোযোগ এতোক্ষণ এখানে ছিল তারা এখন নিজের নিজের কথায় ব্যস্ত। নিঝুমের‌ বুঝতে বাকি রইল না সে একদম ফেসে গেছে। তানিশা হেসে বলে, এখন নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করবে কিভাবে! কে বাঁচাবে এখন তোমাকে!

নিঝুম ঘন ঘন শ্বাস নিতে লাগল। কি হবে এখন? যাদের থেকে দূরে দূরে থাকবে বলে ভেবে এসেছে তারাই এখন তাকে ঘিরে আছে। অনেকটাই অস্থির হয়ে পড়েছে সে। এর মাঝেই হঠাৎ করে পেছন থেকে কেউ বলে উঠল,

“আমি!

সবাই পেছন ফিরল। তাকিয়ে দেখল শান্ত আসছে। এতো চিন্তার মাঝে শান্ত’র আওয়াজ নিঝুমের কান অবদি যায় নি। এদিকে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়ে গুলো শান্ত কে দেখতে পেয়েই অস্থির! রিয়া বলে উঠে, শান্ত তুই! তুই বাঁচাবি এই মেয়েকে!

নিঝুমের কানে এই কথাটা গেল। সে ভড়কে গেল! ঠিক তৎক্ষণাৎ নিঝুমের ব্যাগ ধরে পেছনের দিকে টানল শান্ত। নিঝুমও উল্টো দিকে পা বাড়াতে লাগল। শান্ত আর নিঝুম এখন পাশাপাশি। শান্ত মুচকি হেসে নিঝুমের কাঁধে নিজের হাত রেখে বলল,

“হুম আমি! আমি আছি মিস চশমিশের দলে। দূর থেকে এতোক্ষণ সব দেখেছি।‌ নিঝুম যা বলছে সত্যি বলেছে!

মেয়ে গুলো এবার ঢোক গিলল। শান্ত হেসে তাকাল নিঝুমের দিকে। নিঝুম ঘন ঘন শ্বাস নিয়ে তাকিয়ে আছে। তার কানে বাজছে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত!

তানিশা দুই হাত বাহুতে গুঁজে বলে, কারণ কি শুধু এটাই!

শান্ত শব্দ করে শ্বাস ফেলে বলে, না একদম’ই না। মিস চশমিশ আমার শিকার। আর আমার শিকার কে অন্যকারো শিকার হতে আমি দিতে পারি না।

অতঃপর খপ করে নিঝুমের হাত ধরে বলে, চলো তোমার সাথে হিসাব নিকাশ এখনো বাকি!

বলেই টেনে নিয়ে যায় নিঝুম কে। এতোক্ষণের বিপদ সংকেত’র আসল কারণ এখন বুঝতে পারছে নিঝুম। তার মনে একটা কথা বাজছে জলে কুমির ডাঙ্গায় বাঘ না থুরি জলে তানিশা আর ডাঙ্গায় অশান্ত! এর মাঝেই নিঝুম! দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভাবতে লাগল, পালাবার জায়গা নেই আর!

দাঁড়িয়ে থাকা মেয়ে গুলো অবাক চোখে তাকিয়ে রইল। শান্ত নিঝুমের হাত ধরে নিয়ে যাচ্ছে এটা দেখেই সবার গা জ্বলে যাচ্ছে। একজন তো বলেই উঠল, আগে আহনাফ আর এখন শান্ত! কি মেয়ে এইটা!

কথাটা গেল তানিশার কানে। কিন্তু তানিশা অদ্ভুত ভঙ্গিতে শুধু এতোটুকুই বলল, মিস চশমিশ!

——

“ছাড়ুন কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আমাকে!

“জলে ঢুবিয়ে মারবো তোমায়।

“কেন?

“এমনেই, তোমাকে মরতে দেখলে খুব ভালো লাগবে আমার!

নিঝুম চমকে উঠলো। না এই অশান্ত করতে পারে না এমন কিছু নেই। দেখা যাবে সত্যি সত্যি তাকে নদীতে ফেলে দেবে। মূহুর্তেই মনে পড়ল সে সাঁতার জানে না! ক্যাম্পাসের সবাই তাকিয়ে আছে তার দিকেই। নিঝুম অনেক চেষ্টা করছে হাত ছাড়ানোর। কিন্তু শক্তির সাথে পারছে না। রাগ হচ্ছে তার। রেগেই আবারো কামড় বসানোর জন্য শান্ত’র হাতের দিকে বাড়তেই হঠাৎ করে থেমে গেল শান্ত। নিঝুম মুখ তুলে দেখল শান্ত তার দিকেই ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে। মুহূর্তেই দাঁত বের করে হেসে উঠলো নিঝুম। শান্ত বলে উঠে, কি করতে যাচ্ছিলে?

“কিছু না।

“তুমি আবার আমাকে কামড় দিবে বলে ভেবেছিলে!

“একদম’ই না।

“তাহলে এমনভাবে দাঁড়িয়ে আছো কেন?

ধপাস করে বসে পড়ল নিঝুম। বলে উঠল, বসবো বলে। আমার পা ব্যাথা হয়ে গেছে। আর হাঁটতে পারছি না আমি বিশ্বাস করুন।

শান্ত হাসল। হাত ছেড়ে দিল নিঝুমের। নিঝুম হাতের দিকে তাকিয়ে রইল। যেন অবিশ্বাস্য কিছু ঘটে গেছে। শান্ত হাঁটু গেড়ে বসে বলল, ভালো নাটক করতে পারো তো!

নিঝুম দাঁত বের করে হাসল। হেসে বলল, না না আমি নাটক করি নি!

“আমার থেকে পালিয়ে বাঁচবে বলে ভেবে রেখেছো!

“তা কিভাবে হবে বলুন। আপনার থেকে কি করে বাঁচবো আমি। সেটা কি আদৌও সম্ভব।

শান্ত শব্দ করে শ্বাস ফেলে বলল, আচ্ছা যাও! ছেড়ে দিলাম তোমায় যাও!

নিঝুম হেসে এক লাফ দিয়ে বলল, সত্যি! খুব ভালো আপনি অশান্ত!

বলেই এক দৌড়ে পালিয়ে গেল সে। শান্ত প্রথমে হাসল। অতঃপর দাঁড়িয়ে গিয়ে বলল, অশান্ত! তুমি আমায় অশান্ত বললে। ছাড়বো না তোমায়। দেখে নেবো।

আহিম পেছন থেকে বলে উঠলো, চলে গেছে।

শান্ত দাঁতে দাঁত চেপে বলল, তো কি? আবারো ধরবো। তখন দেখিয়ে দেবো কে অশান্ত!

বলে রেগে হন হন করে চলে গেল শান্ত!

—-

রেগে বিড় বিড় করতে করতে শান্ত এসে বসল আহনাফের পাশে। আহনাফ ভ্রু কুঁচকে একবার শান্ত’র দিকে ফিরল। বিড় বিড় করতে দেখে বলে উঠল,

“পাগল হলি নাকি!

“তোর আমাকে দেখে এটা মনে হলো।

“তাহলে এতো বিড় বিড় করছিস কেন?

শান্ত মুখ ঘুরিয়ে নিল। রাগে তার শরীর জ্বলছে। আহনাফ ঘড়ির দিকে ফিরে তাকিয়ে বলল, ক্লাসের সময় হয়ে গেছে। চল!

শান্ত অদ্ভূত ভঙিতে তাকিয়ে রইল। এর অর্থ ক্লাস করতে চায় না সে। আহনাফ তার হাত টেনে বলল, ক্লাসে চল!

শান্ত কে টেনে ক্লাসে নিয়ে এলো আহনাফ। ক্লাস শুরু হলো। স্যারও ক্লাসে ঢুকল। আহনাফ পাশ ফিরে তাকিয়ে দেখল শান্ত ঘুমাচ্ছে। দু একবার ডাকল শান্ত কে! কিন্তু তাতে লাভ হলো না। সে ঘুমের ঘোরেই আছে। আশপাশ চোখ ফিরিয়ে দেখল আহিম, আফিন, নীলাভ্র আর এদিকে তানিশা, দিয়া আর রিয়া তার দিকেই তাকিয়ে আছে। দীর্ঘশ্বাস ফেলে শান্ত কে ডাকতে লাগলো। তবুও শান্ত উঠলো না।

এদিকে স্যারের নজরে পড়ল শান্ত। স্যার এগিয়ে এসে দাঁড়াল বেঞ্চের পাশে। আহনাফ উঠে দাঁড়াল। ভার্সিটির সবথেকে স্ট্রিক স্যার উনি। স্যার ডাস্টার হাতে শান্ত কে খোঁচা দিতে লাগলা। আফিন আর নীলাভ্র মুখ টিপে হাসছে। শান্ত নড়েচড়ে উঠে বলল, আহ্ আহনাফ ঘুমোতে দে!

স্যার গম্ভীর গলায় বলে উঠল, এটা তোমার বেড রুম না ক্লাস! ঘুমানোর ইচ্ছে হলে ক্লাসে এসেছে কেন? তামাশা করতে!

শান্ত মুখ তুলে তাকাল। স্যার কে দেখে উঠে দাঁড়াল সে। বলে উঠল, সরি স্যার!

স্যার গম্ভীর স্বরে বলল, সরি স্যার!

স্যারের এরকম আচরণে হেসে উঠলো সবাই। শান্ত চোখ ঘুরিয়ে তাকাতেই ক্লাসের সবাই চুপ হয়ে গেল। স্যার হেসে বলল, ভালোই করছো! পুরো ভার্সিটিকে নিজের দখলে নিয়ে নিয়েছ দেখছি!

শান্ত কিছু বলল না, শুধু মাথা নিচু করে রইল। স্যার কটাক্ষ করে কতো গুলো কথা শুনাল। তানিশা দাঁড়িয়ে বলল, স্যার! যদি পুরো সময় আপনি একজনকেই দেন তাহলে আমরা ক্লাস করবো কখন।

স্যার হেসে বলল, তোমরা কি আদৌও পড়াশোনা করতে আসো। আর আহনাফ! তোমায় বলছি, রেজাল্ট ভালো আসলেই ভালো স্টুডেন্ট হওয়া যায় না। তোমরা সবাই ভালো রেজাল্ট করো তো ঠিক কিন্তু কখনো ভালো মানুষ হতে পারবে না!

আফিন বলে উঠে, তো স্যার পরিক্ষা তো দেই ভালো রেজাল্টের জন্য’ই তা নয় কি?

আফিনের কথায় পুরো ক্লাস হেসে উঠলো। স্যার জোরে বলে উঠল, সাইলেন্ট! ভার্সিটি তোমাদের কারো সম্পত্তি না! প্রতিদিন নতুন না নতুন কোন কান্ড তোমরা ঘটিয়েই যাচ্ছো! কিছু বলাও যাচ্ছে না তোমাদের!

রিয়া বলে উঠে, আপনারা না বলতে পারলে আমাদের কি করার স্যার বলুন তো!

আহনাফ চোখ ঘুরিয়ে তাকাল রিয়ার দিকে। রিয়া চুপ হয়ে গেল। তবে মুখ টিপে হেসে ফেলল শান্ত। স্যার শান্ত’র ঘাড়ে হাত রেখে বলল, হাসি পাচ্ছে খুব!

“না স্যার!

স্যার দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন, তোমাকে এখন পানিশমেন্ট হিসেবে বোর্ডে একটা প্রশ্ন সলভ করতে দিলে তুমি পারবে। তাই তোমাকে আমি সেটা দেবো না। বলবো ক্লাসের থেকে বেরিয়ে যাও। এরপর আমার ক্লাসে আর কখনো তোমাকে দেখতে চাই না আমি!

শান্ত মাথা নাড়িয়ে বলে, ওকে স্যার!

অতঃপর ব্যাগ কাঁধে নিয়ে বেঞ্চে থেকে বেরিয়ে এসে ক্লাস রুম থেকে বের হতে নিয়েও আবারো পেছন ফিরে স্যারের দিকে তাকিয়ে বলে, ধন্যবাদ স্যার! আপনার এই কথার কারণে আর কখনো আমাকে ক্লাসে আসতে হবে না আমায়। বেঁচে গেলাম আমি, এই বোরিং ক্লাস করতে আমারও ভালো না!

বলেই হেসে বেরিয়ে আসে শান্ত! স্যার গম্ভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। এর মধ্যেই আহনাফ উঠে দাঁড়ায়। স্যার তার দিকে ফিরে বলে, তাহলে তুমিও চলে যাচ্ছ।

“সরি স্যার!

বলেই আহনাফ দ্রুত বেরিয়ে যায়। একে একে আফিন, আহিম, নীলাভ্র, তানিশা, রিয়া আর দিয়া সবাই বেরিয়ে যায়! স্যার বলে উঠে, এরপর তোমরা আর কেউ আমার ক্লাসে থাকবে না। যদি তোমাদের দেখি তাহলে আমি ক্লাস না করিয়েই চলে যাবো!

এই ছয়জন তখন উঁকি মেরে একসাথে বলে , ওকে স্যার!

বলেই হাসতে হাসতে চলে যায়। স্যার চেঁচিয়ে উঠে বলে, আর কেউ বের হতে চাও, তাহলে চলে যাও!

সবাই চুপ হয়ে স্যারের আওয়াজে। স্যার দাঁতে দাঁত চেপে তাকিয়ে থাকে দরজার দিকে। রেগে হেঁটে আসেন বোর্ডের কাছে!

——

আহনাফ দৌড়ে এসে শান্ত’র পিঠে বই দিয়ে মেরে বলে, সব তোর দোষ!

“আহ মারছিস কেন?

“স্যারের মুখে মুখে তর্ক করলি কেন?

শান্ত নাক ফুলিয়ে দুই হাত কোমরে দিয়ে আহনাফের দিকে এগিয়ে বলে, প্রথমে তো দোষ আমার না। গতকাল রাতে তোর কারণে আমি ঘুমাতে পারি নি তাই আজ ক্লাস এতো কিছু হলো। আর দ্বিতীয়ত আমি একা কিছু বলি নি, ওই দেখ তোর পিছনে!

আহনাফ পেছন ফিরে দেখে পুরো দল আসছে। আফিনে মাথায় ধপাস করে বাড়ি মেরে বলে, মুখ বন্ধ রাখতে পারিস না তোরা।

আফিন মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে বলে, আহ এই স্যার টা একটু বেশিই জ্ঞান দিচ্ছিল তাই…

বলেই হেসে উঠে। আহনাফ বই দিয়ে তাকে মেরে সামনে তাকাতেই দেখে শান্ত চলে যাচ্ছে। আহনাফ বলে উঠে,
“কোথায় যাচ্ছিস!

শান্ত পেছন না ফিরেই বলে উঠে, ক্যান্টিনে, ঘুমোতে!

আফিন, নীলাভ্র আর তানিশা দৌড়ে পিছন পিছন এসে বলে, আমরাও আসছি আড্ডা দিতে!

আহনাফ পিছন তাকাতেই দেখল বাকিরা দাঁড়িয়ে আছে। আহনাফ বলে উঠে, তোরা দাঁড়িয়ে কি দেখছিস, যা! আহিম, রিয়া আর দিয়া হেসে হাটা ধরে। আহনাফ রিয়ার গাল টেনে বলে, মুখ বেশি চলে তোর!
রিয়া গালে হাত দিয়ে হাসতে থাকে!

——

নিঝুম গালে হাত দিয়ে স্যারের দিকে তাকিয়ে আছে। স্যার পড়িয়ে যাচ্ছে, তার নজর পড়ার দিকে। এদিকে তিথির নজর স্যারের দিকে। ইফা নোট করছে!

তিথি ফিসফিসিয়ে নিঝুমের ঘাড়ে মাথা রেখে বলে, স্যার টা অনেক হ্যান্ডসাম তাই না!

নিঝুম এবার বোর্ডের থেকে চোখ সরিয়ে স্যারের দিকে তাকাল। অতঃপর তিথির দিকে তাকিয়ে বলল, হুম তা বটে।‌ কিন্তু তোর সাথে মানাবে না!

তিথি রেগে নিঝুমের হাতে বারি মারে! স্যার তিথির দিকে ফিরে বলে, হে ইউ!

তিথি তাড়াহুড়ো করে দাঁড়িয়ে বলে, ইয়েস স্যার!

“ডোন্ট সাইট টক! দ্বিতীয় বার যেন না দেখি। বসো!

তিথি মুচকি হেসে মাথা নাড়িয়ে বসে পড়ল। ফিসফিস করে নিঝুম কে বলল, আহ দেখলি আদনান স্যার আমার সাথে কথা বলল।

নিঝুম “হুম” বলে চোখ ঘুরিয়ে তাকাল ইফার দিকে। কলম দিয়ে তাকে গুঁতো দিয়ে বলল, তুই কি করছিস?

“নোট!

নিঝুম হেসে বলল, গুড গার্ল! এই নে আমারটাও একটু করে দে!

ইফা চোখ ঘুরিয়ে তাকাল নিঝুমের দিকে। নিঝুম একগাল হেসে বলল, উম্মাহ!

ইফা দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিঝুমের খাতা এগিয়ে নিল!

——-

ক্লাস শেষে নিঝুম, তিথি আর ইফা এসে বসল ক্যান্টিনে! রিয়া তাকে দেখে তার দিকে যেতে নিতেই তানিশা তাকে থামিয়ে দিয়ে বলল, শান্ত এখানে!

রিয়া থেমে আবারো নিজের জায়গায় বসে পড়ল। আহনাফ নোট করছিল। নিঝুম কে দেখতে পেয়ে নোট থামিয়ে নিঝুমের দিকে তাকাল। মনে পড়ল সকালের কথা, এই মেয়ে তখন তাকে এড়িয়ে চলে গেছিল। কিন্তু কেন?

আহনাফের পাশেই শান্ত ঘুমোচ্ছিল! আহিম এসে তাকে খোঁচা মেরে বলল, মিস চশমিশ হাতের নাগালে এসে পড়েছে!

শান্ত’র ঘুম এতোও গভীর ছিল না। মুখ তুলে তাকাল সে নিঝুমের দিকে। এদিকে নিঝুম হয়তো এখানকার কাউকেই দেখেনি। আহনাফ ভ্রু কুঁচকে বলল, মিস চশমিশ! কে?
আহিম হাতের ইশারায় দেখিয়ে বলল, ওই মেয়ে!

শান্ত মাথা তুলে হেলান দিয়ে বসে বলল, মিস চশমিশ!

বলেই বাঁকা হাসল। আহনাফ ভ্রু কুঁচকে বলল, ওকে চশমিশ বলিস কেন?

শান্ত মুখ ফিরে বলল, নাম জানি না বলে। হিসাবনিকাশ আছে ওর সাথে!

আহনাফ কতোক্ষণ তাকিয়ে রইল নিঝুমের দিকে। শান্ত আহনাফের দিকে ফিরে বলল, আমার মনে হয় তুইও ওর নাম জানিস না!

আহনাফ শান্ত’র দিকে ফিরে মাথা নাড়ল। শান্ত শব্দ করে হেসে বলল, নাম জিজ্ঞেস করে আসা যাক!

বলেই উঠে দাঁড়াল সে। এদিকে নিঝুম, ইফা আর তিথি তাদের কথায় ব্যস্ত! নিঝুম তার জুসের গ্লাসের দিকে হাত বাড়াতেই শান্ত তা নিয়ে ফেলল।‌ নিঝুম অবাক চোখে তাকাল শান্ত’র দিকে। পুরো ক্যান্টিনে মানুষে ভর্তি! তাদের সবার নজর এখন নিঝুমের দিকে। নিঝুম সবার থেকে আড়াল হয়ে নিজের বার্গার মুখে দিল। শান্ত জুস খেতে খেতে একটা চেয়ার নিয়ে বসল ইফা আর নিঝুমের মাঝে । নিঝুম নিজের মনে খেয়ে যাচ্ছে। শান্ত তিথির দিকে ফিরে বলল, হাই!

তিথি অবাক হয়ে তার দিকেই তাকিয়ে ছিল।‌ সেও হাত নেড়ে বলল,হাই!

শান্ত পাশ ফিরে ইফার দিকে তাকিয়ে বলল,‌কি ?

ইফা মাথা নাড়িয়ে বলল কিছু না! তানিশা, রিয়া আর দিয়া অপেক্ষায় আছে, কি হবে এখন! শান্ত এখন কি করবে!

আহনাফ ভ্রু কুঁচকে খানিকক্ষণ তাকিয়ে রইল নিঝুমের দিকে। অতঃপর উঠে দাঁড়িয়ে চলে গেল সে। শান্ত এবার খানিকটা নড়েচড়ে বসল। নিঝুম ঘামছে! এই অশান্ত নিশ্চিত কিছু একটা করবে!

হঠাৎ শান্ত ধীরে ধীরে নিঝুমের কানের কাছে এগিয়ে বলে, “আচ্ছা চশমিশ তোমার নাম কি?

নিঝুম খাওয়া থামিয়ে দিল। শান্ত’র দিকে ফিরে তাকাল সে। হঠাৎ করেই বিষম গেলো সে। কাশতে লাগল সে। শান্ত নিঝুমের মাথায় হাত বুলিয়ে বলল, আহ আস্তে আস্তে খাও। তোমার খাবার তো আর কেড়ে নিচ্ছি না আমি!

নিঝুম কোনমতে সামলালো নিজেকে। শান্ত’র দিকে ফিরে বলল , কি?

“তোমার নাম জিজ্ঞেস করলাম, কি নাম তোমার?

নিঝুম ঢোক গিলল। শান্ত হেসে জুসের গ্লাস রাখল। নিঝুমের মনে হচ্ছে শান্ত তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে! এটা কিভাবে হতে পারে শান্ত তার নাম জানে না। শান্ত তাকিয়ে আছে তার উওরের আশায়। নিঝুম হাতের ঘড়ির কাঁটার দিকে তাকিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলল, আমার কাজ আছে যেতে হবে!

বলেই দ্রুত বের হয়ে গেল। শান্ত অবাক হয়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলল, আরে চশমিশ! এই..

বলতে বলতে নিঝুমের পেছন পেছন বের হলো।

নিঝুম হাঁটছে আর ভাবছে, ঠিক কি শুনলো সে। অশান্ত তার নাম জানে না। এটা কি আদৌও সত্যি। কিভাবে হতে পারে এটা! বিড় বিড় করতে করতে হাঁটতে গিয়ে হঠাৎ করেই বাড়ি খেলো কিছুর সাথে। আহ কপালে খুব ব্যাথা পেলো। হাত দিয়ে ঢলে তাকিয়ে দেখল তার সামনে দেওয়াল! নিঝুম দীর্ঘশ্বাস ফেলে পাশ ফিরিয়ে যেতে নিতেই তাকিয়ে দেখল দূরে আহনাফ দাঁড়ানো। দুই হাত প্যান্টের প্যাকেটে দিয়ে হাসছে সে। নিঝুমের বোকামো দেখে হাসছে । নিঝুম নাক ফুলালো। হন হন করে পাশ দিয়ে চলে যেতে নিল নিঝুম। কয়েক পা যেতেই পেছন থেকে আহনাফ বলল,

“আমায় ইগনোর করছো তুমি!

নিঝুম দাঁড়াল। তার বুক কেঁপে উঠলো। কিন্তু কোন উওর না দিয়ে চলে যেতে নিল। আহনাফ তখন পিছন ফিরে বলে উঠে,

“আচ্ছা তোমার নাম কি?

নিঝুম এবার ভড়কে গেল। বিষ্ময় চোখে সামনে তাকাল সে। শান্ত এসে দাঁড়াল আহনাফের পাশে। এদিকে নিঝুমের বিশ্বাস হচ্ছে না আহনাফ তার নাম জানে না। কিভাবে হয় এটা! তার ক্রাশ তার নাম’ই জানে না। ইচ্ছে করছে ওই দেওয়ালে গিয়ে আবারো একটা বাড়ি খেয়ে আসতে। শান্ত হেসে আবারো বলল, মিস চশমিশ’র নাম চশমিশ!

শান্ত’র কথায় আহনাফ হেসে দিল। নিঝুম রেগে সামনে এসে দাঁড়াল তাদের। কোমরে হাত রেখে নাক ফুলিয়ে বলল, আপনারা কেউই আমার নাম জানেন না!

দু’জনেই মাথা নাড়িয়ে বলল না! নিঝুম হা হয়ে তাকিয়ে বলল , সত্যি!

দু’জনেই মাথা নাড়িয়ে বলল হ্যাঁ!

নিঝুম শব্দ করে শ্বাস ফেলল। তার বিশ্বাস’ই হচ্ছে না এই কথা। রাগ হচ্ছে খুব, এতো দিন ধরে এই অশান্ত তাকে হেনস্তা করছে অথচ তার এতো সুন্দর নাম টাই জানে না। দাঁতে দাঁত চেপে দুজনের হাত হ্যান্ডশেক করে বলল,
“হাই, হ্যালো গুড মর্নিং আমি নিঝুম! আমার নাম নিঝুম! ঠিক আছে!

বলেই মাটিতে ধপাস করে পা দিয়ে হাঁটা ধরল সে। কষ্ট তো বেশি লাগছে আহনাফ তার নাম জানে না। এই দুঃখ কোথায় রাখবে সে। শান্ত হেসে বলে, এটা ঝুম হবে!

নিঝুম পিছন ফিরে দাঁতে দাঁত চেপে বলে, ইট’স নিঝুম নট ঝুম!

শান্ত হেসে বলে, ঝুম ঝুমাঝুম ঝুম!

নিঝুম রেগে বিড় বিড় করতে করতে চলে যায়। নিঝুম কে জ্বালাতে পেরে শান্ত হেসে একাকার। এদিকে আহনাফ মুচকি হেসে বলে, নিঝুম! বাহ সুন্দর নাম।

#চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here