দ্বিতীয় বাসর পর্ব ৪+৫

দ্বিতীয় বাসর(গল্প) পর্ব-৪
হাসিনা সাঈদ মুক্তা

মিতুর বিয়ে হয়েছে প্রায় তিন মাস হতে চল্ল।এর ভেতর তাদের বাসর,সোহাগরাত কোন কিছুই হয়নি।লোকটা আসলেই পরিচ্ছন্ন স্বভাবের।তার মৃত স্ত্রীকেই ভালোবাসেন মিতু টের পায়।
মিতু বাবাইকে অনেক ভালোবেসে ফেলে।নিজের ছেলের মতো পরম মমতা দিয়ে যত্ন নেয় বন্ধন আহমেদ এর একমাত্র ছেলেকে।ছেলের ভাব-ভঙ্গী কথা বলার ঢঙ বাবার মতোই যেন মনে হয় মিতুর কাছে।যদিও যখন থেকে মিতু ওকে পড়াতে আসতো,তখন থেকেই আদর করত দশ বছর বয়সী বাবাইকে।বাবাই এর জন্মদিন ছিল জুন মাসে।মিতুর বিয়ে হয় মে মাসের দশ তারিখে।বিয়ের পর বাবাই,মিতু ও নানুকে নিয়ে বাবাই এর জন্মদিনে জিনজিয়ান রেস্টুরেন্টে খেতে নিয়ে গিয়েছিল বন্ধন সাহেব।সেটাই ছিল মিতুর তার স্বামীর সাথে বিয়ের পর প্রথম বাইরে খেতে যাওয়া আর বাবাই এর ছোটখাটভাবে জন্মদিন পালন।বাবাই এর সম্ভবত একটু মন খারাপ ছিল।তার অনেক শখ তার বন্ধুদের মতো জন্মদিন করবে।বন্ধুরা আসবে,পার্টি করা,ফ্যান্সি ড্রেস বা জোকার সাজিয়ে মজা করা,আর এখন পার্টি মানেই ডিজে।বন্ধুর বড় ভাইয়ের জন্মদিনে দেখেছিল বাবাই।গুলশানে তাদের বাসায় বিশাল আয়োজন করেছিল,ডিজে পার্টি,সঙ্গীত শিল্পীদের ডেকে এনে গান শোনা,বন্ধুদের নিয়ে মাস্তি, সেলফি আরো কত কি?কিন্তু তার মা কেয়া আহমেদ মারা যাবার পর বাসায় কোন পার্টি হয় নি।মিতুকে এসব কথা শেয়ার করে বাবাই।
মিতু তখন আশ্বস্ত করে আগামী জন্মদিনে সেই সব ব্যবস্থা করে দিবে।মিতুর তখন একটা ইচ্ছে হয় বাবাইকে বলতে।মিতুকে যেন মা বা মামনী বলে ডাকে বাবাই।কিন্তু বাবাই এখনো মিতুকে আন্টি বলে ডাকে।মিতু অবশ্য এখনো বাবাইকে তেমন কিছু বলে নি।”ছেলেটাকে আর একটু সময় দেয়া যাক,ও নিজে থেকেই মামনী ডাকবে।’ বেশ আশাবাদী মিতু।
দিনের একটা সময়ে নানুর সাথে সময় কাঁটায়,নানুর ঘরে আসে।কখনো তার বিছানাটা সুন্দর করে গুছিয়ে দেয় পরম যত্নে।নানু পান চিঁবোতে খুব পছন্দ করেন।নানা রকম খয়ের,জর্দা,সাদা পাতা মিষ্টি জর্দাও আছে তার পানপাত্রের ভান্ডারে।আশী ঊর্ধ্ব নানু চশমার ফাঁক ফোকরে মিতুর দিকে কিভাবে যেন তাকায়।খুবই রসিক একটা মানুষ।মিতুকে দেখামাত্রই রসিকতা শুরু করে দেন।কখনো মিতু কখনো বুবু ডাকেন।
“শোন মিতু আমার বাবু সোনাকে আদর দিয়ে দিয়ে পাগল বানায় ফেলবি যেন ঘর ছাড়া কিছুই না বুঝে।জলদি বাসায় চলে আসে।’তারপর মুচকি হেসে আবার শুরু করে দুষ্টু বুড়ী,” আমার বাবু সোনাটা তোকে কেমন করে সোহাগ করে বল না বুবু?সারাদিন তো অনেক ব্যস্ত থাকে।একটু বয়স হইছে তাতে কি……?পারে না বল?’মিতু প্রচন্ড লজ্জা পায়।বুড়ীর এইসব কথা শুনে মনে মনে বলে,”বুড়ী রে বুড়ী তোমার জানার এত সখ? উনাকে তবে তোমার ঘরে পাঠিয়ে দেই?তোমার বাবুকে তুমি সোহাগ করো?’
এমনি মিতু অনেক লাজুক প্রকৃতির। পার্লারে বিয়ের ফেসিয়াল করার সময়ও গায়ে ঠিকমতো ওড়না দিয়ে যতটা সম্ভব নিজেকে আবৃত করে রাখে।পার্লারের মেয়েরাও অবাক হয় “আপু এত লজ্জা আপনার?এখানে তো সব মেয়ে আপনি এত লজ্জা পাচ্ছেন কেন?এত লজ্জা পেলে ফেসিয়াল কিভাবে করাবো বলেন?’
মিতুর সাথে তার ফুপাতো ভাই এর বউ ছিল।সেতারার বিয়ের সময় ঐ ভাবী যখন মিতুকে শাড়ী পড়িয়ে দিচ্ছিল,মিতু যেন লজ্জায় লাল হয়ে গিয়েছিল।ভাবীও তার লাজুক ননদিনী নিয়ে মজা করতে লাগল তাদের সাথে।আর সাথে তো পারুল ছিলই সেও যোগ করল, ওয়েস্টার্ন ড্রেস পড়া নিয়ে মিতুর আকাশ থেকে পড়ার কাহিনী।
বন্ধন আহমেদ এর ডাক নাম বাবু।এটা নানুই রেখেছেন ছোটবেলায়।মিতু নানুর ওমন রসভরা কথায় প্রথমে তো খুবই লজ্জা পায়।এখন অভ্যস্ত হয়ে গেছে শুনতে শুনতে।নানুকে রাতে এক গ্লাস বাদাম দুধ আর ওষুধ দিতে আসে।বাদাম দুধ হাড় ক্ষয় আর পেশীর জন্য অনেক ভাল।শরীরের দূর্বলতা কাঁটাতে আর সবল রাখতে খুবই উপকারী।মিতু এসব তার গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিভাগে অর্নাস মার্স্টাস করার সময় পড়ে জেনেছে।তা ছাড়া তার বড় চাচাও চিকিৎসক।তার বাবার শরীর দূর্বল হলেই মিতুকে বলতেন বাদাম দুধ খাওয়াতে।
মিতু দুধের গ্লাস নিয়ে নানুর রুমে আসতেই নানুর তো সেই তিড়িংতিড়িং মার্কা দুষ্টুমী।নানু মিতুকে চমকে দিয়ে বল্লেন,”ঐ দেখো বেকুবের কি কান্ড!’
“কি হয়েছে নানু?আমি আবার কি করলাম?’মিতুরও তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া।
“আরে এই দুধ তোর সয়ামীকে খাওয়ায়েছিস?’
“না উনি তো রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছেন।’
“কি?’নানু যেন মিতুর কথায় আঁতকে ওঠেন!
‘আরে বেক্কলটা তুই ওরে ঘুমাতে দিলি কেন?এই দুধের গ্লাস বাবুকে দিয়ায়,ওরে ভাল করে খাওয়া আমি এই বয়সে এসব খেয়ে কার কাজে আসব এখন?এই দুধ যে খাবে তার শক্তি বাড়বে তারপর…..’
মিতুর কান গরম হয়ে যায় নানুর এসব ওলটপালট কথা শুনে।দুধের গ্লাসটা নানুর বিছানার টেবিলটায় রেখে বলে “এই দুধ এখন তোমার কাজেই আসবে।পুরোটা খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ো।’
বলেই পালায় ঘরটা থেকে।পিছন থেকে নানুর আক্ষেপ,”কি যুগ পড়েছে সওয়ামীকে এখন আর বউরা পাগল বানাতে চায় না ওরে সওয়ামীই সব আমি তোর ভালোর জন্যই বলি এসব….পড়ে বুঝবি এই বুড়ীর কথা বাসি হলেও ফলে।'(চলবে)দ্বিতীয় বাসর(গল্প) পর্ব-৫
হাসিনা সাঈদ মুক্তা

লজ্জাশরম বলতে একটা কথা আছে।বন্ধন সাহেবের নানী অর্থাৎ নানুর সেটা একেবারেই নাই।”বুড়ীর মাথাটা একেবারেই গেছে।’মিতুর হয়েছে যত জ্বালা।বন্ধন সাহেব,আর্মি অফিসার সেই সুবাদে খানসামা,সৈনিক প্রভৃতি ঘরের কাজগুলো করে দেয়।রান্না,ওয়াশরুম পরিষ্কার,কাপড় ধোয়া ইত্যাদি।তবে রান্না ও কাপড়কাঁচা নিজের হাতে করতেই বেশী ভালোবাসে মিতু।এছাড়া একটা ছোটা বুয়া এসে কাজ করে দিয়ে যায়।বুয়া আগে নাকি বান্ধা ছিল মিতুর বিয়ের পর সারাদিন কাজ শেষে বাড়ী চলে যায়।বুয়াটাও আজব।নানুকে আগে সেই সময় দিত।এখন সেও নানুর মতো করে কথা বলে।
“আফামনি ভাইরে বিয়া করানোতে যে আমার কত সুবিধা হইল।বুড়ীটা খালি আমার সওয়ামীর কথা জিজ্ঞেস করতো।’
মিতুর ভ্রুকুটি করে বলে,”কি জিজ্ঞেস করতো তোমাকে আবার?’
বুয়াও আচমকা হেসে ওঠে যেন লজ্জায় মরে যাচ্ছে।”বুঝেন না আফামনি।?সওয়ামীর কথা কি হইবার পারে?’
মিতু এবার বেশ রেগে যায়,”এ বাসায় কি এসব বিষয় ছাড়া আর কোন কথা নেই?’বুয়ার বয়স ও পয়ঁতাল্লিশ এর মতো হবে।বড় বড় ছেলে মেয়ে।মেয়ের বিয়েও হয়েছে নাতী-নাতনীও আছে।বুয়ার স্বামী নাকি তাকে ছেড়ে আর একটা বিয়ে করেছে।কিন্তু বুয়ার যেন তাতে কিছু যায় আসে না।
সেদিন বুয়া আসেনি।নানু গোসল করতে গেলে নানুর পিঠটা বুয়া ডলে দেয়।আর দুজনের কত গল্প আর হাসাহাসি।মিতু কিছুটা আন্দাজ করে এবার কি নিয়ে তাদের এত হাসাহাসি। বুয়া যখন আসেনি মিতু গোসল খানায় ঢুকল নানুর পিঠটা সেই ঢলে দিতে লাগলো।ওমনি বুড়ী শুরু করে দিল।
“হ্যা রে আমার বাবু সোনা তোকে ঘুমাতে দেয় তো?’
মিতুর বিরক্তি”কি আজব ঘুৃমাতে কেন দিবেন না?’
“আহা ন্যাকা রাতে তোকে একলা পায়ে ছেড়ে দিবে?আমি কিছু বুঝি না।’
“বুঝই যখন জিজ্ঞেস করছো কেন?’
হঠাৎ মিতুর হাতের উপরের দিকটা জোরে টান দিয়ে ধরে নানু।মিতুর শাড়ীর আঁচল সড়িয়ে দিতে নেয় সে,”দেখি দেখি আমার বাবু সোনা কোথায় কোথায় দাগ বানায়েছে?’
মিতু খুবই ভয় পেয়ে যায়। এক ঝটকায় নানুর আক্রমন থেকে নিজেকে দ্রুত সড়িয়ে নেয়। প্রচণ্ড রেগে যায় এবার মিতু,নানুকে বকা দেয়ার ভঙ্গীতে বলে,”নানু কি করছো তুমি?ছাড়ো আমাকে ছাড়ো। ভাল লাগছে না তোমার এসব অসভ্যতা।’
“ও তাই রে বুবু আমি ছুঁইলেই বুঝি অসভ্য না যেন কইলি?আর বাবু সোনা ছুঁইলে বুঝি ভাল লাগে তোর?’
মিতুর মোটেও ভালো লাগছে না এসব শুনে নানুর দিকে তোয়ালে এগিয়ে দিয়ে বল্ল।”তোমার এতকথা ভালো লাগে না আমার,তাড়াতাড়ি বের হও এবার।’
ওমনি বলে ওঠে নানু,”এখন আর কেন ভালো লাগবো।শোন মিতু তোর বিয়ার আগে বাবু সোনা আমার ঘরেই বেশী থাকতো।কত আমার কোলে মাথা দিয়া ঘুমাইসে।’
মিতু যেন এবার হতভম্ব হয়ে গেল কথাটা শুনে।
“উনি তোমার ঘরে ঘুমাতেন? বাবাই কই ঘুমাতো তাহলে?’
“আরে ছোট বাবু ওর ঘরেই ঘুমাইতো।যখন ইচ্ছা হইতো হেইডাও আমার খাটের কোনে বাপের পাশে ঘুমাইতো।’
নানু বাবাই ডাকতে পারেন না।উনার কথায় আঞ্চলিকতা,বাবাইকে সে ছোটবাবু ডাকে।
“তাই নাকি?ও আচ্ছা।’বলে মিতু।বুড়ী এবার গোসল শেষ করে তার ঘরে ঢুকেই বলা শুরু করে,”খালি একখান কথা শিখছোস ও আইচ্ছা।আমার ঘরে ঢুইকা তোর সওয়ামী কি করতো হেইডা তো শুনবিনা।’
“মিতু হাত ধুঁতে ধুঁতে জবাব দেয়,”শুনে হবেটা কি নানু।যা হবার তাতো হয়ে গেছে।’
নানু তার শাড়ীর কুচি গোছাতে গোছাতে ফের মুচকি হাসে।”ওরে বুবু আমি তো অহন বুড়া হয়ে গেসি।বাবুসোনা সারাদিন কাম শেষ কইরা,ঘরে আইসা একটু বুড়ীটার সাথে সুখদুঃখের কথা কইতো।আমার তহন কি আর ভালো লাগে?তাই তো তোরে বাবুসোনার সাথে বিয়া দিসি যাতে এইবার মন ভইরা বউ এর কোলে গপসপ করে….।’
আল্লাহতায়ালা বুড়ী নানুকে ভালো শক্তি দিয়েছেন,অবিরাম বকবক করতেই থাকেন।কোন ক্লান্তি নেই যেন তাতে?বন্ধন আহমেদ অর্থাৎ তার বাবুসোনার জন্য যেন তার চিন্তার শেষ নেই।তবে বিয়ের পর বন্ধন সাহেবকে খুব একটা নানুর রুমে যেতে দেখেনি মিতু।ঘরে এসেই রাতের খাবার খেয়ে নেন।যদিও খুব অল্প খান।ছেলের এর ঘরে যান।বেশীর ভাগ সময়ে বাবাই ঘুমিয়ে পড়ে বাবা আসার আগে।রাতে শাওয়ার নেন, রাতের নামাজ আদায় করেন।কখনো রাতে বাইরেও থাকতে হয় অফিসের কাজে।দেশের বাইরের টু্্যর থাকে উনার।তিনমাসে অবশ্য একবারই রাতে বাড়ীর বাইরে ছিলেন বন্ধন সাহেব।মিতুর সাথে সৌজন্য কথা।
“বাবাই স্কুলে গিয়েছিল?ও কি খেয়েছে না, না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে।নানুর শরীরের কি অবস্থা?নানু ওষুধ খাচ্ছেন ঠিকমতো।একটু ওদের দিকে খেয়াল রাখবেন কেমন।’সবশেষে,”আপনি খেয়েছেন তো?’
মিতু বেশীর ভাগ রাতের খাবার খেতে চায় না।অনেকসময় খানসামা থাকলে অনেক মজার মজার বিকেলের নাস্তা তৈরী থাকে।
পিজা,স্যান্ডউইচ, পাস্তা বাবাই এর অনেক পছন্দ।বন্ধন আহমেদই আর্মিদের বাবুর্চী বা খানসামাকে বলে রাখেন এসব খাবার বানিয়ে রাখতে বিকেলে বাসায়।মিতুর মনে হচ্ছে এসব ভারী নাস্তা খেয়ে খেয়ে মুটিয়ে যাচ্ছে সে।
আর যেদিন রাতে খাবে ঠিক করে সেদিন মিতু তার স্বামীর জন্য অপেক্ষা করে।উনি এলে একসাথেই খায়।
হঠাৎ কলিং বেল বেজে ওঠে।মিতু তার শাড়ীর আঁচল ঠিক করতে করতে দরজা খোলে।নানুর দুষ্টুমীর কারনে হাতের উপরেটায় সাবানের ফেনা লেগে ছিল।মিতু সেটা খেয়াল করেনি।আর শরীরটাও খানিকটা ভিজে যায় তার।তার উপর শাড়ীর আঁচল ঠিক করছিল মিতু,এই অবস্থায় দরজা খুলে দেখে তার ছোটবেলার বান্ধবী নিশা।
নিশা চমকে দিয়ে বান্ধবী বলে মিতুকে জড়িয়ে ধরে।নিশার সাথে আসে তার ছোট্ট মেয়ে ন্যান্সি।
নিশাও বান্ধবীর ঘরে ঢুকে শুরু করে দুষ্টুমী।
“কিরে এই অবস্থা কেন তোর?ভিজে আছিস।আমাকে দেখে আঁচল ঠিক করছিস।দুলাভাই কি বাসায়?রোমান্স করছিলি নাকি?’ বলে মাথা বাড়িয়ে উঁকি দিয়ে খোঁজে যেন বন্ধন সাহেবকে নিশা।
মিতু বেশ অবাক হয়, “তোর দুলাভাই বিমান নিয়ে কারবার করেন।ভোর পাঁচটায় ফজরের নামাজ পড়ে বের হোন এই অবেলায় উনার এত সময় নাই রোমান্স করার?’
ঘড়িতে তখন বাজে বেলা সাড়ে বারোটা।
নিশার মোবাইলটা বেজে ওঠে তার স্বামী ইমন ফোন করেছে।
এখনো দুজনের মধ্যে কত মিল!মিতু বিস্ময়ে লক্ষ্য করে তার বান্ধবী নিশা তার বরের ফোনে কত্ত খুশী।হ্যাসবেন্ড তার গ্রামের বাড়ীতে গিয়েছে কিন্তু নিশাকে নাকি খুব মিস করছে।মিতুর বেশ ভালো লাগে শুনে।নিশা এবার বলতে থাকে, “রাখি বাবু।আর বাবু শুনো বাইরের খোলা হাবিজাবি খাবার একদম খাবে না।আর তাড়াতাড়ি চলে আসবে কেমন।’
মিতু নিশাকে জিজ্ঞেস করে তুই ভাইয়াকে এখনো বাবু ডাকিস?
“হ্যা বাবু ডাকটা আসলেই অন্যরকম। শুনতেও খুব ভালো লাগে।’নিশার চোখেমুখে কত ফূর্তি!
“আচ্ছা ভাইয়া তোকে কি ডাকে?তুই কি ডাকিস?ভাইয়ার নামও তো বাবু?’
মিতু কি বলবে ভেবে পায় না।মাথা নীচু করে হাতের আঙুল কচকাতে থাকে।
নিশা এবার ভালো করে দেখে তার বান্ধবীকে,”কিরে তুই তো একটু মোটা হয়েছিস।গায়ের রঙটাও চকচক করছে।বুঝেছি দুলাভাই তোকে গোলগাল টমেটো ডাকে তাই না?’
“হুম তাই।’মিতু আর কিছু বলেনা মৃদু হাসে উদাস নয়নে তার মোবাইল টার দিকে তাকায় বারবার।বন্ধন সাহেব একবার
হলেও তাকে ফোন করেন।কিন্তু এখনো ফোন আসেনি বন্ধনের।(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here