পরানের দুলাভাই পর্ব -১২

#পরানের দুলাভাই”
#সেলিনা আক্তার শাহারা”
#পর্ব-১২.
—————
নিতু খাবার আনার সাথে সাথেই মুগ্ধ নিতুকে জরিয়ে ধরে , নিতুর এতে কোন হেলদোল নেই বললেই চলে, চোখদিয়ে শুধু অনবরত পানি ঝরছে,

মুগ্ধ এবার নিতুকে সামনে এনে বসিয়ে বলে নিতু তোমায় অনেক কথা বলার আছে তুমি অনেক সত্য থেকেই অজানা,

হুসসসসস কোন কথা নয় আগে খেয়ে নিন তার পর ( নিতু)

মুগ্ধ প্লেট থেকে ভাত নিয়ে নিতুর মুখের সামনে তুলে দেয়,কারন মুগ্ধ জানে নিতুরও খাওয়া হয় নি কাল থেকে।

নিতু হাত সরিয়ে বলে আপনি খান আমার খিদে নেই বলে অন্য দিক ফিরে থাকে।

ওহ তুমি যখন খাবেনা তাহলে আমারও খাওয়া হবে না বলেই হাত ধুয়ে ফেলে,( মুগ্ধ/ কারন সে জুরাজুরি পছন্দ করে না)

নিতু জানে মুগ্ধ যা বলে তাই করে তাই চুপ করে ভাত নিয়ে মুগ্ধর সামনে ধরে মুগ্ধও হাসি দিয়ে ভাত খেয়ে নেয়,আর নিতুকেও খাইয়ে দেয়,

খাওয়া শেষ হলেই নিতু উঠে চলে যেতে নেয়, কিন্তু মুগ্ধ নিতু হাত টেনে নিজের কাছে এনে ফেলে নিতুকে, আর বলতে থাকে শুনো নিতু তুমায় কিছু বলার আছে তুমি আমায় ভুল বুজছো,

আমি কিছু শুনতে চাই না দুলাভাই, আমি চাই আপনি আর মিতু আপু সুখি হন বাস( নিতু অন্য দিক ফিরে)

মুগ্ধ এবার রেগে যায় আর বলে উঠে এক চর দিয়ে তোর গাল লাল করে দিবো, দুলাভাই হুম কে তর দুলাভাই
আরেক বার জদি তোর মুখে দুলাভাই ডাক শুনি তোর গাল কে ডোল এর মত ফাটাবো,

নিতু এবার চুপ করে বসে পরে মুগ্ধর পাশে,

মুগ্ধ নিতুকে নিজের কাছে টেনে এনে বলে, শুনো নিতু আমি মিতুকে ভালোবাসতাম ঠিক ই কিন্তু ও কখনোই আমায় ভালোবাসেনি সে শুধু আমার টাকাকে ভালোবেসেছে, আমি ছারাও মিতুর অনে বয়ফ্রেন্ড ছিলো, সে একাধিক ছেলের সাথে ফোনে কথা বলতো আর দেখাও করতো, আমি সব জানতাম আর মিতুকে জিজ্ঞাস করলেই ভালোবাসার দুহাই দিয়ে কান্না করতো,

আর আমি বিশ্বাস করতাম কারন ভালোবাসায় সন্দেহ থাকতে নেই,
বিয়ের দিন মিতু আমার দেয়া টাকা ও গয়না নিয়ে পালিয়েছিলো কোন সপ্ন পূরন করতে নয়, বরং আমারই অফিস এর স্টাফ এর সাথে, তা আমি সেদিন রাতেই জানতে পারি, তাই বাসর ঘরে যেতে আমার বিলম্ব হয়েছিলো।

এখন হয়তো টাকা ফুরিয়েছে তাই ছেলেটা ওকে ছেরে দিয়েছে কারন ছেলেটা ভালো না আমি আগেই জানতাম,

আর বড় কথা হল মিতু আমার অতিত এখন বর্তমানে তুমি আমার সব তাই তোমায় আকরে ধরেই আমি বাচঁতে চাই প্লিজ তুমি আমায় ভুল বুঝোনা।

নিতু এতক্ষন মন দিয়ে সব শুনছিলো এবার একটা শ্বাস নিয়ে বলতে শুরু করলো মিতু আপু আপনার প্রথম ভালোবাসা,
আর প্রথম ভালোবাসা কখনও ভুলা জায় না, আর মিতু আপুকে ছারা আপনি সুখি হতেও পারবেন না।

মুগ্ধ এবার নিতুকে ছেরে দিয়ে বাকা ভাবে চেয়ে বললো ওহ তাই এখন ও তুমি জাইনকে ভুলতে পারোনি তাই আমার থেকে চলে জেতে চাইছো!!!!!

নিতু এবার হচকিয়ে উঠে বলে কি বলছেন এসব?

আমি তোমার আর জাইন এর ব্যাপারটা জানি , ( মুগ্ধ)

না ভুল জানেন জাইন ভাই আমায় পছন্দ করতো তা ঠিক কিন্তু কখনো সামনে এসে এমন কথা বলে নি, আর আমিও একটু দূর্বল ছিলাম উনার প্রতি, কিন্তু উনি আমার অতিত ছিলো বর্তমানে আমি আপনায় ছারা কারো কথা ভা– বলতে গিয়েও থেমে গেলো নিতু।

মুগ্ধ এবার হাসি দিয়ে বললো ওহ আচ্ছা আমি সব জানি নিতু তাই তোমায় কোন পশ্ন করিনি কখনও, তুমি সব ভুলতে পারলে আমি কেন পারব না,
চলেনা দুজন এ সব ভুলে নতুন করে শুরু করি, বলেই আবার নিতুকে জরিয়ে ধরে, আর বলে তুমি জদি আমায় ছেরে থাকতে চাও তাহলে সাদা শারি পরার অভ্যাস করে নিও, কারন তুমি বিহিন আমি মৃত,তোমায় আজ না পেলে আমি কিছু একটা করে বসতাম,

মুগ্ধর কথা শুনে নিতুর ভিতর টা কেমন মোচর দিয়ে উঠলো আর মুগ্ধ কে খুব শক্ত করেই জরিয়ে ধরেছে নিতুও,,

, নিতুর চোখ দিয়ে পানি ঝরছে কি করে মিতু আপুকে কষ্ট সে দিবে সেতো সে দিন হাত কেটে ফেলেছিলো আবার জদি অন্য কিছু করে বসে,

হঠাৎ করেই নিতু নিজের ভর মুগ্ধর উপর ছেরে দেয়,

মুগ্ধ তা বুঝতে পেরে তাকে সামনে এনে বলে নিতু এই নিতু কি হল বৌ এই নিতু শুনো না নিতু সেন্সলেস হয়ে গেছে,

মুগ্ধ এবার চিৎকার করে নিতু বলে,
বাড়ির সকলে চিৎকার শুনে মুগ্ধর রুমে চলে আসে মিতুও দরজার বাহিরে দারিয়ে আছে, নিতুর বাবা বললো বাবা গাড়ি বের করো, কিন্তু মুগ্ধ কেমন পাগল এর মত করছে তার দ্বারা গাড়ি চালানো হবে না,
।তাই নিতুর মা মিতুকে গাড়ি বের করতে বলে, মিতু গাড়ি চালাতে জানে তবে আজ চালাবেনা বলতেই তার মা অগ্নিদৃষ্টি করতেই মিতু দৌড়ে গাড়ি বের করে,

মুগ্ধ নিতুকে কোলে করে এনে গাড়িতে উঠে আবার নিতুকে কোলে তুলে নেয়, কোন মতেই সে নিতুকে ছারছেনা নিতুর মা শুুধু কান্নাই করছে,

মিতু সব দেখছে আর জ্বলছে কিছু বলতেও পারছেনা,

সকাল হয়ে এলো তারা হাসপাতালে পৌছে নিতুকে বেড শুইয়ে দিয়ে বাহিরে দারিয়ে আছে আর হাত ডলচে,কিছুক্ষন পর ডাক্তার এসে বললো উনার স্বামি কে!!

আ আমি কি! কি হয়েছে ( মুগ্ধ ব্যবাচেকা খেয়ে)

না কিছু হয় নি তবে হবে, মানে আপনি বাবা হতে চলেছেন, আপনার ওয়াইফ প্রেগনেন্ট বলেই হাসতে হাসতে ডাক্তার চলে গেলো,

মুগ্ধর মাথা কাজ করছেনা এদিক উদিক তাকাচ্ছে শুধু, আর জিব্বাহ দিয়ে ঠোর ভিজাচ্ছে।

নিতুর বাবা ও মা খুব খুশি।

মুগ্ধ সাত পাচ না ভেবে দৌড়ে রুম এ চলে গেলো,

মিতু এবার মনে মনে ভাবছে ওহ তলে তলে এত দূর এটা ঠিক কর নি মি. মুগ্ধ এর ফল ভালো হবে না, তুমি আমায় নিয়ে না থাকলে কাউকে এ জিবনে পাবে না, তার জন্য যদি নিজের বোন কেও শেষ করতে হয় তাই করব, আমি এটা করতে চাই নি তবে এবার বাধ্য করলে, ভেবেই সয়তানি হাসি দিলো,

রুমে গিয়ে দেখে নিতুর জ্ঞান ফিরেছে , মুগ্ধকে দেখেই নিতু হাত দিয়ে নিজের মুখ ঢেকে ফেলেছে লজ্জায়,

মুগ্ধ একটা হাসি দিয়ে নিতুকে বসিয়ে তাকে জরিয়ে ধরে বলে নিতু tnx এমন একটা উপহার দেয়ার জন্য, আমায় বাবা হওয়ার সৌভাগ্য দিয়েছো।

এ বার নিতুও মুগ্ধকে জোরে জাপটে ধরেছে, আর ভাবছে আমার এই মুগ্ধটার এক অংশ আমার গর্ভে আমাদের ভালোবাসার প্রতিক ভেবেই মুগ্ধকে আরো চেপে ধরেছে,

নিতু কাদঁতে কাদতে বললো তুমিও তো আমায় অনেক বড় জিনিস দিয়েছো, আমি মা হব এর চেয়ে আন্দের আর কি বলো।
নিতুর মুখে তুমি শুনে মুগ্ধ নিতুকে সামনে এনে চুমু দিতে থাকে নিতুর ও মুগ্ধর গালে কপালে অসার চুমু দিতে থাকে,

বাববাহ আজ আদর করা হচ্ছে নাকি আগেতো কাছে আসতে ঘন্টা লাগিয়েছো ( মুগ্ধ দূস্টু হাসি দিয়ে)

নিতু এবার মুগ্ধর কলার চেপে ধরে বললো তো আমি আমার বর কে আদর করছি তাতে তুমার কি।

মুগ্ধ এবার নিতু পেট এএ মাথা দিয়ে কান পেতে রয়েছে আর পেটে হাত বুলাচ্ছে,

নিতু চোখ বন্ধ করে নিয়েছে মুগৃধর ছোয়া

নিতুও মুগ্ধর মাথায় আল্ত করে হাত বুলাচ্ছে, আর ভাবছে না মুগ্ধ শুধুই আমার আর কারো না আমার বাচ্চার বাবা সে আমি কাউকে আমার বাচ্চার বাবাকে ছিনিয়ে নিতে দিব না, মিতু আপু মুগ্ধ কে ভালোবাসে না, আর মুগ্ধ ও শুধু আমায় ভালো বাসে, তাই মুগ্ধকে ছেরে দেয়ার পশ্নই আসেনা,
ভেবেই এক হাসি দিয়ে মুগ্ধর মাথায় চুমু দিলো,
আর সব টা জানার পর তো কখনোই নাহ।

একটু পর দরজায় আওয়াজ হল, নিতু মাথা উঠিয়ে, বলে উঠলো মিতু আপু তুমি!!!!

মুগ্ধ একবার মাথা উঠিয়ে মিতুর দিকে চেয়ে আবার নিতুর পেটএ মুখ লোকায়,

নিতু পরেছে মহা লজ্জায় বড় বোন বলে কথা, মুগ্ধকে টেনেও উঠানো জাচ্ছেনা,
উঠাতে গেলেই মুগ্ধ বলে কি হয়েছে আমি আমার বাচ্চার সাথে কথা বলছি ডিস্টাব করবে না।

নিতু লজ্জায় মাথা নত করে নিয়েছে।
মিতু রুমে ঢুকতে ঢুকতে বললো রোমান্স এর সময় লজ্জা হয় নি এখন লজ্জা বতি লতা হতে হবে না, আমিই তো সমস্যা নেই ওকে ওখানেই থাকতে দে।

বলেই নিতুর মাথায় হাত বুলায় মিতু,

এতে মুগ্ধ অবাক কারন মিতু এত সহজে ছেরে দেয়ার মেয়ে নয় তাহলে মিতুর আচরন এমন হল কেন???

চলবে—-

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here