প্রেমের রঙ পর্ব -০৭

#প্রেমের_রঙ
#পর্ব_০৭
#মোহনা_হক

‘পদ্মের রাতে গা কাঁপিয়ে জ্বর আসলো। ইজহান মেডিসিন দিয়েছে তাও জ্বর কমছেনা। এই গরমেও পদ্ম কাঁপছে। জ্বরে পদ্মের চোখ দিয়ে পানি পড়ছে৷ ইজহান টিস্যু দিয়ে কতোক্ষণ পর পর পদ্মের চোখের পানি মুছে দিচ্ছে। ইজহান আর সামলাতে না পেরে রুবিনা খাতুনকে ডাক দিলো। তিনি এসে তার মেয়ের পাশে বসলেন। অনেকক্ষণ জলপট্টি দিলেন তিনি। কিন্তু মনে মনে একটা ভয় কাজ করছে পদ্মকে নিয়ে। জলপট্টি দেওয়ার পর পদ্মের জ্বর অনেকটা কমেছে। রুবিনা খাতুন পদ্মের কাছে থাকতে চেয়েছিলো কিন্তু ইজহান ওনাকে বলেছে ‘এখন সে সব সামলাতে পারবে’ তাই রুবিনা খাতুন চলে এসেছেন। ইজহান পদ্মের পাশে শুয়েছে আজ কোনো দূরত্ব নেই তাদের মাঝে। তবুও একজন আরেক জনকে স্পর্শ করছেনা। পদ্ম জ্বরের ঘোরে কিছু বলছে। ইজহান খুব মনোযোগ দিয়ে পদ্মের কথা শুনে বুঝেছে ‘পদ্ম পানি খাবে’। ইজহান পদ্মকে পানি খাওয়ালো। কিছুক্ষণ পর আবার জ্বর আসলো পদ্মের। মেয়েটা কাঁপছে ইজহান আর অনুমতি নিলো না পদ্মকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে।’

‘সকাল ৭টা।’
‘পদ্মের মনেহচ্ছে তার গায়ের উপর কেউ পাথর ফেলে দিয়েছে। কি অসহ্য লাগছে। শরীরে এক ফোটা শক্তি নেই যে হাতটা সরাবে। চোখ খুলে পদ্ম তার ডানপাশে তাকিয়ে দেখে ইজহান ওকে এভাবে ধরে শুয়ে। পদ্ম হাত নাড়াচাড়া করতেই ইজহান উঠে গেলো।’

তড়িঘড়ি করে পদ্মকে জিগ্যেস করলো-‘
“কিছু লাগবে পদ্ম?”

‘তারপর পদ্মের মাথায় হাত দিয়ে চেইক করলো জ্বর আছে কিনা! জ্বর তখন ছিলোনা। পদ্ম ইজহানের দিকে তাকিয়ে বললো-‘
“কিছু লাগবেনা। আসলে আপনি যেভাবে হাত দিয়ে শুয়ে ছিলেন আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছিলাম না।”

‘কথাটা শুনে ইজহানের মুখটা ছোট হয়ে গেলো। ইজহান উঠে ফ্রেশ হতে চলে গেলো। ফ্রেশ হয়ে এসে পদ্মকে জিগ্যেস করলো-‘

“তুমি ফ্রেশ হবে না?”

‘পদ্ম মাথা নেড়ে বললো-‘
“জ্বী আসলে মা কে একটু ডেকে দিলে ভালো হয়।আমার একটুও শক্তি নেই একা একা হেঁটে যেতে পারবো না।”

‘ইজহান পদ্মের পাশে দাঁড়িয়ে হাত বাড়িয়ে দিলো। পদ্ম কিছু বুঝলো না। অবুঝের মতো শুধু তাকিয়ে রইলো। ইজহান পদ্মকে তার হাত ইশারা করে বললো-‘

“উঠে আসো। আমি ওয়াশরুমের দিয়ে আসবো।”

‘পদ্ম আস্তে আস্তে করে উঠছে। ইজহান পদ্মকে ধরে ধরে নিয়ে ওয়াশরুমে দিয়ে আসলো। যতোক্ষণ পদ্ম ওয়াশরুমে ছিলো ততক্ষণ ইজহান সেই দরজার বাহিরেই দাঁড়িয়ে ছিলো। পদ্মকে বেডে আধশোয়া করে রেখে বাহিরে আসলো। পুষ্প সোফায় বসে আছে। গ্রামে থাকলে এতোক্ষণ তার তিনবার খাওয়া হয়ে যেতো,আর এখানে এখনো একবারও সে খেতে পারছেনা বিরক্তিকর ব্যাপার। ইজহান কে রুম থেকে বের হতে দেখলো। পুষ্প ইজহানের সামনে দাঁড়ালো। ইজহান ভয়ে আছে আজ জানি আবার কি বলবে।’

“আপনাদের বাড়িতে আসলে কি মানুষকে খেতে দেন না?”

‘ইজহান বুঝেছে পুষ্প কি বলছে। পুষ্পের কথা শুনে লজ্জায় পড়ে গেলো। পদ্ম অসুস্থ তাই আজ নাস্তার কথা ভুলেই গিয়েছে সে। এখন যাচ্ছে নাস্তা আনার জন্য।’

‘ইজহান বিব্রতবোধ হাসি দিয়ে বললো-‘
“এইতো যাচ্ছি তোমার খাবার আনতে।”

‘ইজহান বেরিয়ে পড়লো। এই পুষ্প মেয়েটা ভালোই লজ্জা দিতে পারে। ইজহান রুবিনা খাতুন আর পুষ্পের সাথে নাস্তা করে, পদ্মের জন্য রুমে নিয়ে আসলো। তারপর নিজ হাতে খাইয়ে দিলো পদ্মকে। আজ আর হসপিটালে যাবেনা ইজহান।

‘ ইজহান এখনো হসপিটালে যাচ্ছে না দেখে পদ্ম ইজহানকে বললো-‘
“আপনি হাসপাতালে যাচ্ছেন না কেনো।”

‘ইজহান চুপচাপ পদ্মকে মেডিসিন খাইয়ে দিয়ে বললো-‘
“আমার বাসায় এক স্পেশাল রোগী আছে। যার কারণে আজ আর হসপিটালে যাবো না।”

‘পদ্ম হাসলো ইজহানের কথা শুনে। পদ্মের এইসময় হাসি দেখে ইজহান বললো-‘
“হাসছেন কেনো ম্যাডাম?”

‘ইজহানের এমন ম্যাডাম বলার কারণ পদ্ম জানেনা। সে ইজহানকে বললো-‘
“আপনি আমাকে ম্যাডাম বলেন কেনো?”

“ভালোবেসে বলি।”

‘পদ্ম অবাক হলো ইজহান তাকে ভালোবাসে শুনে।’
“আপনি আমাকে ভালোবাসেন?”

‘ইজহান তার চশমা পড়তে পড়তে বললো-‘
“অবশ্যই বউকে ভালোবাসবো না তো কাকে ভালোবাসবো। তুমি কি চাও আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি?”

‘পদ্ম সাথে সাথে উত্তর দিলো।’
“না না আমি সেটা চাই না।”

‘ইজহান পদ্মের কাছে ঘেঁষে বসলো। পদ্মের কাধ জড়িয়ে ধরে বললো-‘
“কেনো চাও না?”

“মজা করবেন না আমি এখন অসুস্থ কিন্তু।”

“হ্যাঁ তুমি অসুস্থ দেখেই তো কতো ইচ্ছা বিসর্জন দিচ্ছি।”

‘পদ্ম ইজহানের দিকে তাকালো। চোখ গুলো গোল্লা গোল্লা হয়ে গেলো তার।’
“কি ইচ্ছে বিসর্জন দিচ্ছেন আপনি?”

” কতোকিছুই। শুনো কিছুক্ষণ পর ডক্টর আসবে। আমার বেস্টফ্রেন্ডই বলতে পারো। তার সাথে স্বাভাবিক থেকো।”

“কেনো?”

‘ইজহান বিরক্ত হলো। এটাও প্রশ্ন করা লাগে!’
“তুমি যে অসুস্থ সেটা জানো? মাঝে মাঝে তোমার এসব বিরক্তিকর কথা শুনলে রাগ হয়।”

‘পদ্ম চুপসে গেলো। আর কথা বললো না সে। ইজহান ও কিছু বলছেনা। দু’জনেই নীরাবতা পালন করছে। ইজহান সেই ভাবেই পদ্মের সাথে ঘেঁষে বসে থাকলো। কিন্তু কেউ কথা বলছে না। অনেক সময় পর ক্রলিং বেল বাজলো। ইজহান তাড়াতাড়ি গিয়ে দরজা খুললো। ইজহান হাসি দিলো ব্যক্তিটি কে দেখে। ব্যক্তিটি হচ্ছে ইফফাত মেধা।’

‘মেধা হাসি দিয়ে বললো-‘
“কেমন আছিস সুদর্শন পুরুষ?”

‘ইজহানও হাসি দিয়ে বললো-‘
“ভালো আছি যুবতী নারী।”

‘ইজহান আর মেধা এক অপরকে খুব ভালো করে চিনে।সেই কলেজ থেকে দু’জনের যাএা শুরু হয়েছে, আজও একই সাথে আছে তারা। মেধা ভিতরে ঢুকতে ঢুকতে বললো-‘
“বিয়ের দাওয়াত দেসনি, আর বউ যেই অসুস্থ হয়ে পড়লো তখনই আমাকে দরকার পড়েছে।”

‘ইজহান মাথা চুলকাতে চুলকাতে বললো-‘
“কোন পরিস্থিতিতে বিয়েটা হয়েছে তোকে তো বললাম।”

“কোনো এক্সকিউজ শুনতে চাই না। ট্রিটটা দিয়ে দিস দয়া করে। এখন চল তোর বউকে দেখে আসি তার কি সমস্যা।”

‘ইজহান মেধাকে পদ্মের কাছে নিয়ে গেলো। পদ্মকে দেখে মেধার খুব ভালো লেগেছিলো। চেহারাটা সুন্দর। তবে জ্বরের কারণে চোখের নিচে লাল হয়ে আছে। মেধা পদ্মের পাশে বসলো। পদ্ম কে হাসি একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে বললো-‘

“কেমন আছো?”

‘পদ্ম একটু ঘাবড়ে গিয়ে বললো-‘
“ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন?”

“ভালো আছি। আমাকে চিনো?”

“জ্বী ওনি একটু আগে আপনার কথা বলেছিলেন।”

” ওহ বলে দিয়েছে! নাম কি তোমার?

‘পদ্ম আস্তে করে বললো-‘
“পদ্ম।”

‘মেধা হাসলো। কন্ঠ ও বেশ সুন্দর। তবে বেশ নিরিবিলি মেয়ে মনে হচ্ছে পদ্মকে।মেধা ইজহানের উদ্দেশ্যে বললো-‘

“আচ্ছা ইজহান তুই রুম থেকে যা।”

‘ইজহান অবাক হয়ে বললো-‘
“কেনো? আমি এখানে থাকলে কি সমস্যা?”

‘মেধা কথা বেশি বাড়ালো না। এককথায় বললো-‘
“কেনো রুম থেকে যেতে বলছি তুই পরে বুঝবি।”

‘মেধা পদ্মের শরীরের তাপমাত্রা চেইক করলো। মোটামুটি ভালোই জ্বর আছে। জ্বরের জন্য কিছু মেডিসিন লিখলো। তারপর পদ্মের চোখ গলা দেখলো। কোথাও সমস্যা নেই।’
‘মেধা পদ্মের প্রেশার মাপতে মাপতে বললো-‘
“তোমার এখন কেমন লাগছে?”

‘পদ্ম আস্তে করে উত্তর দিলো।’
“একটু জ্বর জ্বর লাগছে।”

“কিন্তু জ্বর তো একটু না শরীরে। আচ্ছা তোমার পি’রি’য়’ড ক্লিয়ার তো?”

‘পদ্ম লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে ফেললো। ইজহান সামনে দাঁড়িয়ে আছে। সে এখন কিভাবে উত্তর দিবে? ইজহানের কাছে নরমাল বিষয় এগুলো কিন্তু ইজহান বুঝছে পদ্ম লজ্জা পাচ্ছে তাই সে রুম থেকে চলে আসলো।’
‘মেধা আবারও বললো-‘
“পি’রি’য়’ড ক্লিয়ার?”

‘পদ্ম মাথা নাড়লো। মুখে কিছু বললো না।’
‘মেধা পদ্মকে বলছে-‘
“ইদানীং বিবাহিত মেয়েদের সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। এগুলো পরে মারাত্মক আকার ধারন করে। যাই হোক বয়স কতো তোমার।”

‘পদ্ম ঠোঁট ভিজিয়ে বললো-‘
“পনেরো।”

‘মেধা জানে পদ্মের বয়স। ইজহান সব খুলে বলেছে মেধাকে।’

‘মেধা পদ্মকে জিগ্যেস করলো-‘
“তুমি কেনো এই ইজহানের মতো ত্যা’ড়া কে বিয়ে করেছো। ও তো ঠিকই বুড়ো হয়ে যাবে। তখন তুমি কিশোরী বয়স পার করবে।”

‘পদ্ম মাথা নিচু করে বললো-‘
“আমার ভাগ্যে যা লিখা আছে,তাই হবে।

‘মেধা একটা ইঞ্জেকশন বের করলো। পদ্মের থেকে রক্ত নিবে। পদ্ম চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে। এটা দিয়ে কি করবে বোঝার চেষ্টা করছে। পদ্মের ভয় লাগা শুরু করেছে এখন।’

‘পদ্ম আমতা আমতা করে বললো-‘
“এটা দিয়ে কি করবেন?”

‘মেধা হেসে বললো-‘
“কিছু করবো না একটু জাস্ট ব্লা’ড নিবো।”

‘পদ্ম ছিটকে দূরে সরে গেলো। মেধা অবাক হয়ে গেলো। পদ্ম এটার সুই তার শরীরে ফোটাতে দিবে না। এসবে তার ভিষণ ভয় করে।’

“মেধা হেসে বললো-‘
” আরে এখানে আসো। কিছু করবো না আমি। বসো এখানে।”

‘পদ্ম ভয়ে ভয়ে বলছে-‘
“আপনিই তো একটু আগে বললেন রক্ত নিবেন।”

“এটুকু সুই কে ভয় পাচ্ছো। যখন কিছুদিন পর বাচ্চার মা হবা তখন তো আরও কষ্ট হবে। পর পর তোমার সামনেই তোমাকে বিভিন্ন রকমের ইঞ্জেকশন দেওয়া হবে। না বলার উপায় থাকবে না তখন। এখানে আসো তুমি।”

‘পদ্ম তাও আসলো না ভয়ে মুখ চেপে ধরে আছে। মনে হচ্ছে এখনই অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাবে। মেধা পদ্মের সাথে পেরে উঠছে না। তাই ইজহান কে ডাক দিলো। সাথে সাথে ইজহান রুমে আসলো।’

‘ইজহান তাড়াতাড়ি জিগ্যেস করলো-‘
“কি হয়েছে?”

‘মেধা ক্লান্ত চোখে ইজহানের দিকে তাকিয়ে বললো-‘
“আমি তোর বউয়ের সাথে পারছি না আর। আমার ব্লাড লাগবে একটু। তুই তো তোর বউকে হসপিটালে নিতে দিবি না তাই ব্লাড নিয়ে টেস্ট করিয়ে দেখবো কি সমস্যা। জ্বরে কোথাও সমস্যা হয়েছে বা আছে কিনা!”

‘ইজহান বুঝলো কথাটা। পদ্মকে পিছন দিক দিয়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরলো। তারপর মেধার সামনে নিয়ে আসলো। ভয়ে পদ্ম ইজহানের বক্ষে মুখটা লুকিয়ে রাখলো। ইজহান এক হাত দিয়ে পদ্মের মাথা চেপে ধরে আছে। মেয়েটা এতো ছটফট করছে। ব্লা’ড নেওয়ার সাথে সাথে পদ্মের শরীর একেবারে ছেড়ে দিলো। নিচে পড়ে যাওয়ার আগে ইজহান ধরে নিলো। মুলত পদ্মের শরীর এমনিতেও দুর্বল আরও একটা ইঞ্জেকশন ব্লা’ড নিয়েছে। যার কারণে পদ্ম সেন্সলেস হয়ে গিয়েছে। ইজহান পদ্মকে বেডে শুইয়ে দিলো।’

‘মেধা ইজহানের কাধে হাত দিয়ে বললো-‘
“শুন ইজহান মেয়েটা এখনো অনেক ছোট। এতো বেশি বুঝ জ্ঞানও হয়নি। কিছু করার আগে ভেবে চিন্তে কাজ করিস। ওর সাথে আগে ভালোমতো মিশতে শিখ তারপর অন্য কিছু ভাবিস। তুই একজন ডক্টর আশাকরি আমার কথাগুলোর মানে খুব ভালো করে বুঝতে পেরেছিস।”

‘ইজহান মাথা নাড়িয়ে বললো-‘
“হ্যাঁ বুঝেছি। আচ্ছা আর কোনো প্রবলেম আছে ওর?”

“কি জানি যতোটুকু বুঝেছি শরীর খুব দুর্বল। স্যালাইন দেওয়া লাগবে। তুই একটা কাজ করিস ওকে আমি যে হসপিটালে বসি ওইটাতে নিয়ে যাস। আমি কিছু টেস্ট দিবো।”

“সেটা তো আমিও দিতে পারি। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আমার হসপিটালের লোকেরা জানে না বিয়ে করেছি। যার জন্য পদ্মকে ওখানে নিতে পারছি না। তাই তোকে বাসায় আনা আরকি। যাই হোক ধন্যবাদ মেধা।”

‘মেধা হাসলো। এখন তার যাওয়ার সময় হয়েছে। ইজহান রুবিনা খাতুন কে বললো পদ্মের কাছে যাওয়ার জন্য। আর সে মেধাকে হসপিটালে দিয়ে আসতে গিয়েছে।’
‘ইজহান বাসায় আসার পর দেখলো পদ্মের জ্ঞান ফিরেছে। ইজহান পদ্মকে কে দুপুরের খাবার খাইয়ে দিলো। মেডিসিন দিয়েছে পদ্মকে। পদ্ম খেয়ে শুয়ে আছে ইজহানও তার পাশে শুয়ে পড়লো। পদ্ম ইজহানের দিকে তাকিয়ে আছে। মানুষটা খুব ভালো। তার খারাপ সময়ে পাশে থেকেছে। সেবা যত্ন করছে। পদ্ম হাসছে। ইজহান পদ্মের দিকে তাকালো।’

“তুমি হাসছো কেনো?”

“না এমনিই। আচ্ছা কাল তো বলেছিলেন ভালোবাসা দেখাবেন আর তো দেখাননি?”

“তাই!তুমি আমার ভালোবাসা দেখতে চাও?”

“কেনো চাইবো না?”

” আমার ভালোবাসা দেখার জন্য তোমাকে আগে সুস্থ হতে হবে।”

“ভালোবাসা দেখতে হলে সুস্থ হওয়া লাগে বুঝি?”

” হ্যাঁ তুমি তো এখনো অনেক ছোট।”

” জ্বী না। আমি এখন বড় হয়েছি।

‘ইজহান কথা বললো না। মেয়ে মানুষের কথায় বেশি একটা উত্তর দেয় না সে। তার মনেহয় তারা শুধু জিলাপির প্যাচ লাগিয়ে কথা বলে। ইজহান পদ্মের মাথায় হাত বুলাচ্ছে। এই জিনিসটা সব সময়ই পদ্মের ভালো লাগে। পদ্ম উঠে বসলো। তার আর ভালো লাগছেনা শুয়ে থাকতে। ইজহান ও পদ্মের সাথে বসলো।’

“কি হয়েছে তোমার? উঠে বসেছো কেনো?”

‘পদ্ম মুখ ওদিক রেখে বললো-‘
“সারাদিন শুয়ে ছিলাম ভালো লাগছে না।”

‘ইজহান পদ্মের কানে হালকা করে তার ওষ্ঠ ছুঁয়ে দিলো। হঠাৎ এরকম হওয়াতে পদ্ম বেশ লজ্জা পেলো। মনে হচ্ছে লজ্জায় সে ম’রেই যাবে এমন অবস্থা। ইজহান পদ্মের লজ্জা দেখে পদ্মের মাথাটা তার বক্ষে চেপে ধরলো।’

‘ইজহান পদ্মের উদ্দেশ্যে বললো-‘
“যখন তোমার খুব কষ্ট হবে, যন্ত্রনা হবে বা তুমি লজ্জা পাবে তখন তুমি আমার এই জায়গায় এসে মুখ লুকিয়ে ফেলো। এই জায়গাটা একান্তই তোমার পদ্মফুল।”

#চলবে….

[]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here