প্রেম পাগলামি পর্ব ২০+২১

#প্রেম_পাগলামি
#নিহীন_রুবাইয়াত
#পর্ব:২০

পরের দিন সকালে ভার্সিটিতে যেয়েই মীরার রাতের বকবকানি শুরু হলো।বাধ্য হয়ে ওরে সব বললাম।আমার কথা শুনে ওউ বেশ অবাক হলো।
–দোস্ত আমার তো বিশ্বাস হচ্ছে না যে ওরা দুজন ভাই।আর তোর এই অপরিচিত আশিকটাই বা কে?যে তোর জন্য লুকিয়ে লুকিয়ে এত কিছু করছে?সত্যি নিহু তুই অনেক লাকি রে আমার কপালে এমন কেউ নাই কেন?

আমি মীরার দিকে আড়চোখে ভ্রু কুচকে তাকালাম।
–ওভাবে তাকিয়ে আছিস কেন?
–দেখছি তোরে
–কি দেখছিস আমায় আগে দেখোস নাই নাকি?
–না দেখছি কিন্তু ইদানিং তুমি বড্ড প্রেম প্রেম কথাবার্তা শুরু করেছো,বিয়ে করতেও মন চাই।আন্টিরে জানাবো নাকি?
মীরা চোখ বড়বড় করে আমার দিকে তাকাই,
–মার খাবি নিহু।
–হাহাহাহাহাহাহহহ..এখন মারবি কেন?খুব তো আফসোস করছিলি একটু আগে।

মীরা আমাকে হালকা হাতে মারতে থাকে আর আমি হেসেই চলেছি,
–নিহীন তোমার সাথে কিছু কথা ছিলো
শাওনের গলার আওয়াজে আমি আর মীরা ওর দিকে তাকাই,ওরে দেখেই আমার রাগটা বেড়ে যায়।আর মীরা সে তো রিতীমতো প্রশ্ন করেই যাচ্ছে শাওন এতোদিন কেন বলিনি যে সৌভিক ওর ভাই?আর ভাই হতেই পারে এতে লুকানোর কি আছে?মীরা নন্সটপ প্রশ্ন করাই শাওন কোনটার উত্তর দেবে হয়তো বুঝে উঠতে পারলো না।গোমড়া মুখ নিয়ে আমার দিকে তাকালো,
–নিহীন আসলে
–আসলে নকলে বাদ দাও আগে আমার প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও,নিহুর সাথে পরে কথা বলবা(মীরা শাওনের শার্টের কনুই এর দিকটা ধরে নিজের দিকে ঘুরিয়ে বলে)
মীরার এইভাবে জেরা করাতে শাওন ভয় পেয়ে গেলো কয়েকবার ঢোক গিললো মনে হলো কিন্তু শাওনের এই ভীত মুখটা দেখেও মীরা থামলো না।সে এখনো একেক পর প্রশ্ন ছুড়ে মারছে শাওনের দিকে।মীরাকে সি আই ডি অফিসার প্রাদ্যুউমান এর থেকে কম লাগছে না আমার কিন্তু ওর আশেপাশে দায়া নেই যাকে সে বলবে’দায়া পাতা লাগাও’ আর এদিকে শাওনকেউ চোর মনে হচ্ছে।এসব ভেবেই আমার খুব হাসি পেয়ে গেলো কিন্তু নিজেকে সামলে নিলাম।অন্যদিকে ঘুরে হাসিটা থামানোর চেষ্টা করে আবার রাগী ফেস করলাম।
–মীরা তুই থাম
–না নিহু আমি থামবো না আমার সব জানা লাগবে।
–মীইইইইইইইইরা আমি তোমাকে থামতে বলেছি।
খুবি গম্ভীর গলাই বললাম,মীরা থেমে গেলো।গম্ভীরভাবে এবার শাওনের দিকে তাকালাম।একটু আগে হাসি পেলেও এই মুহুর্তে আমি বেশ সিরিয়াস,এই কথাটা কেন লুকালো আমার জানা লাগবে।
–শাওন বলো এবার সত্যিটা।
–আসলে নিহীন,,,,,

শাওন আর কিছু বলতে পারলো না,সৌভিক ভাইয়া শাওনকে ঝাড়ি দিয়ে উঠলো,
–ক্লাস না করে এখানে দাড়িয়ে আড্ডা দেয়া হচ্ছে?
ওনার হটাত ধমকে ওঠাই শাওন ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়,
–কি রে কথা বলিস না কেন?পড়ালেখায় তো মন নেই বিন্দু মাত্র,ঠেলে ঠেলে চালাচ্ছি।জোর করে কি আর গাধাকে ঘোড়া বানানো যায়?ক্লাস না করে উনি আড্ডা দিচ্ছে গাছতলায়?বাহ!চমতকার।আজই বাবাকে বলবো যে তোর পড়াশুনার কোন দরকার নেই,ক্লাস করিস না কিছু ফেল করবি তো পরীক্ষায়।যেই আমি সব কিছুর পাশাপাশি রেজাল্টও ঠিক রেখেছি আর তার ভাই হয়ে নাকি তুই,,
–ভাই আ আম আমি তো
–চুপ বেয়াদব আর একটা কথাও বলবি না তুই,যা ক্লাসে যা।
ওনার ধমকে শাওন লাফ দিয়ে ওঠে,বোঝায় যাচ্ছে বেশ ভয় পায় এই অসভ্যটাকে।শাওন আবারো কিছু বলতে যায় কিন্তু অসভ্যটা বলতে দিলে তো।ষাড়ের মতো চিল্লিয়ে ওঠে।শাওন ব্যাগ নিয়ে চোখে মুখে রাগ নিয়ে চলে যায়।উনি এবার আমাদের দিকে তাকিয়ে বলেন,
–যতোসব ফাকি বাজের দল নিজেরা তো ফেল করবেই আমার ভাইটাকেও সাথে নেবে।হু!!

উনি মুখ ভাঙানোর ভঙ্গিতে মাথা নাড়িয়ে চলে যায়,এতোক্ষন আমি আর মীরা ওনার উড়ে এসে জুড়ে বসা না না উড়ে এস্ব জুড়ে বকাআআআআটা হাবলার মতো দেখছিলাম শুধু।আমি আর মীরা তো শাওনের থেকে সত্যি কেন লুকালো সেটা শুনছিলাম জাস্ট কিন্তু উনি কোথা থেকে উড়ে এসে ধমক দিয়ে গেলো।আমি আর মীরা একে অপরের দিকে তাকিয়ে ঠোট উল্টিয়েই দুজনে কিছু একটা ভেবে চোখ বড়বড় করে ফেলি।তারপর একসাথেই বলে উঠি,
-আমাদের ফাকিবাজ বললোওওও??
|
আমি:হাউ ডেয়ার হি!
মীরা:ফাও ফাও এতোগুলো কথা শুনিয়ে গেলো,কথাগুলো শাওনকে না আমাদের শুনিয়েছে নিহু
আমি:কত্ত বড় সাহস?ডাক দে ওনার আজকে একদিন তো আমার একদিন
–হুউউউ?আমি ডাক দেবো?(মীরা আমতা আমতা শুরু করলো?
–হ্যা দিবি?
–মাফ কর বোন,উনি যে রাগি আমি ডাকুম না।বলা যায় না তোর মতো আমাকেউ ঝপাৎ করে তুলে সপাৎ করে পুকুরে ছুড়ে মারবে।
–কিহ?শালা তুই এক্টা…হোয়াট এভার….
আমি মীরার দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে সামনের দিকে তাকালাম,উনি কই গেলো একটু আগেই তো ছিলো।ধুর এই মীরার সাথে বক বক করতে যেয়েই চলে গেলো।দাত খিটমিট করে মীরার দিকে তাকালাম ও আমাকে দেখে মুখ ভেঙচি দিলো।আমি দুই হাত ওর গলা টেপার স্টাইলে ধরে দাত খিটমিট করে দিলাম আবার।

ক্লাস শেষ করে বাসায় যাবো,একাই আছি কারন মীরার আম্মু এসে ওরে নিয়ে গেছে একটু আগেই।আমি ব্যাগ থেকে চিপ্স এর প্যাকেট বের করে চিপ্স খাচ্ছি আর ভাবছি আমাকে এতোদিন অন্ধকারে রাখলো ওরা?এসব ভাবতে ভাবতেই সকালের কথা মনে হলো।এখন চিপ্স খাচ্ছি আর ওই অসভ্যটাকে গালি দিচ্ছি মনে মনে আমাকে কেন বললো আমি ফাকিবাজ?আমি ফাকিবাজ হলে কি এখানে চান্স পাইতাম??শালা খাটাস একটা,কালকে কতো পিরিত দেখালো আর আজ??কি যে হয় বুঝিনা,নিশ্চয় ঘাড়ে জ্বীন ভুত আছে যা মাঝে মাঝে ভর করে বসে তাই ওরকম ত্যাড়ামি করে।আনমনে হাটছিলাম তাই খেয়াল করিনি সামনে লোক আছে তার সাথে ধাক্কা খেয়ে আমার হাত থেকে চিপ্সের প্যাকেটটা পড়ে যায়,কে আমাকে ধাক্কা দিলো দেখতে যাবো কিন্তু চোখের সামনে ইয়া লম্বা এক্ষান প্রানী,উল্টো দিকে ঘুরে ফোনে কথা বলছে,পিছন থেকেই যদিও আমি চিনেছি তাও উনি উল্টো ঘুরে ভ্রু কুঁচকে একবার তাকালো তারপর আবার ঘুরে ফোনে কথা বলতে লাগলো এমনভাব করলো যে আমাকে চেনেই না।আমি আঙুল দিয়ে ওনার পিঠে খোঁচাচ্ছি,কিন্তু বান্দার কোন হেলদোলি নেই।খুব রাগ হয়ে গেলো দিলাম এক ধাক্কা উনি ব্যালেন্স হারিয়ে একটু সামনে গিয়ে পড়লেন।চোখ মুখ শক্ত করে আমার দিকে তাকালেন,
–আমি পরে কথা বলছি আপনার সাথে প্লিজ ডোন্ট মাইন্ড।
–……….
–থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ,বাই।
উনি কান থেকে ফোন নামিয়েই পকেটে ফোন রাখতে রাখতে,
–কি সমস্যা?রাস্তার মাঝখানে এরকম অসভ্যতামি করছো কেন?
–অসভ্যতামি করছি না আমি।
–রাস্তার মাঝখানে সিনিয়রের পিঠে এভাবে খোচাচ্ছো তারপর ধাক্কাও দিলে এখন আবার গলা উচু করে কথা বলছো,এটা অসভ্যতামি ছাড়া কি?
–আপনি আমাকে ধাক্কা দিলেন কেন??আমার সব চিপ্স পড়ে গেলো(কাঁদো কাঁদো সুরে)
–আমি কখন তোমাকে ধাক্কা দিলাম নিজেই তো কানার মতো আমার ওপরে এসে পড়লে।
–মোটেও না,আপনি ইচ্ছা করে ধাক্কা দিয়েছেন।আপনি অসভ্য,বদমাস,খাটাস লোক।
–হাউ ডেয়ার ইউ টু টক টু মি লাইক দিছ?আমি অসভ্য,খাটাস??
–হ্যা হ্যা আপনি অসভ্য।
–নিজে কি?ঝগড়াটে,ফাকিবাজ একটা মেয়ে ক্লাস না করে আড্ডা দিয়ে বেড়ায়।
(ওনার মুখে ফাকিবাজ কথাটা শুনে তখনকার কথা মনে পড়ে গেলো।আমি তো ওনাকে এতক্ষন এই জন্যেই গালি দিচ্ছিলাম।দাড়া ব্যাটা এবার তোর হবে)
–এই আমি ফাকিবাজ?
–তা ছাড়া কি?
–ও হ্যালো মিস্টার অসভ্য আই এম নট এ ফাকিবাজ,আন্ডারস্ট্যান্ড?(আমি আঙুল ঝাকিয়ে বললাম)
–ও হ্যালো মিস ফাকিবাজ আই অলসো নট এ অসভ্য,আন্ডারস্ট্যান্ড?(উনিও আমার মতো আঙুল ঝাকিয়ে বললেন)
–ইউ আর এ বিগ বিগ অসভ্য।
–আর তুমি কি হ্যা?ফাকিবাজ একটা পড়াশুনা নাই খালি ঘুরে বেড়ানো।আমি বুঝি না এসব ফাকিবাজ ছেলেমেয়ে চান্স কেমনে পাই?নিশ্চয় ঘুষটুষ দিয়ে ভর্তি হয়েছে।
–কি এতো বড় কথা?আমি ঘুষ দিয়ে ভর্তি হয়েছি?নিজের যোগ্যতায় চান্স পেয়েছি।আপনি জানেন আমার এস.এস.সি,ইন্টারের রেজাল্ট??জি পি এ ৫ পেয়েছি দুইবারই।আমি জীবনে কোন দিন স্কুল পালাইনি।কলেজে দুবার সবার সাথে বাঙ্ক দিছি এই আর কি কিন্তু আমি খুব ভদ্র ছিলাম।
–হাহাহাহাহহহহহ…নরমাল জি পি এ ৫ পেয়ে এতো লাফালাফি?আমি গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি সাথে জেলা টপার।ভার্সিটিতে গত পনেরো বছরে আমার থেকে সিজিপিএ র‍্যাংকে কেউ ওপরে উঠতে পারিনি আর তুমি কিনা আমার সামনে আইছো পড়ালেখা নিয়ে ভাব মারতে?
(ওনার কথা শুনে শুকনো ঢোক গিললাম,সত্যিই তো ওনার সামনে রেজাল্ট নিয়ে কথা বলা মানে রেজাল্টকে অপমান করা।উনি তো আসলেই ভালো স্টুডেন্ট)
–এই যে মিস ফাকিবাজ কি ভাবছো?(উনি তুড়ি বাজাতে বাজাতে জিজ্ঞেস করলেন)
–কি কি কি ভাব্বো?কিছু ভাবছি না।কিন্তু হ্যা আমি ফাকিবাজ না।হতে পারেন আপনি অনেক ভালো স্টুডেন্ট কিন্তু আমিও খুব বেশি খারাপ না।
–হাহাহাহাহহাহাহাহহহহ…তুমি যে কেমন তা তোমার রেজাল্ট দেখলেই বোঝা যায়।ফার্স্ট ইয়ারে মিডটার্মে কি যেন রেজাল্ট ছিলো তোমার?৩.২২,ফাইনালে তো আরো বাজে অবস্থা ৩.১৩।এই রেজাল্ট মানুষের সামনে বলো কিভাবে? লজ্জা করে না?আমার রেজাল্ট কোনদিন ৩.৯০ এর নিচে নামেনি।
(ওনার মুখে নিজের খারাপ রেজাল্ট শুনে খুব হতাশ হলাম।সত্যিই তো এই রেজাল্ট মানুষের সামনে বলার মতো না)
–নিজে না হয় একটু ভালো পারেন কিন্তু আমাদের কমার্স ফ্যাকাল্টিতে পড়াও অতো সহজ না।অনেক হার্ড।
–হ্যা আর আমাদের ইঞ্জিনিয়ারিং তো পানি পানি তাই না?আমার কাছে তোমার ওই সাবজেক্ট চুনোপুঁটি।শুধু সাবজেক্ট কেন তুমি মানুষটাও একটা চুনোপুঁটি।
–কি আমি চুনোপুঁটি???
–হ্যা তুমি চুনোপুঁটি।আচ্ছা আমার কি খেয়ে দেয়ে কাজ নেই কোন তোমার মতো চুনোপুঁটির সাথে ঝগড়া করছি।ধুর!আমার এতোটা টাইম ওয়েস্ট করে দিলো।ইডিয়েট কোথাকার..
কথাটা বলেই উনি সানগ্লাস পরে নেন আর বাইকে উঠে বসেন,
–এই এই আমাকে এই ভাবে অপমান করে চলে যাচ্ছেন?দাড়ান দাড়ান বলছি।

কে শোনে কার কথা উনি তো চলে গেলেন।রাগে নিজের হিজাবকে চুল ভাবে ছেড়ার চেষ্টা করলাম।

বাসায় ঢুকে,,সোফায় চোখ বন্ধ করে বসে পড়লাম।
–মা লেবুর সরবত করে দাও তো একটু।
মা রান্না ঘর থেকে আওয়াজ দিলো সে এখন ব্যস্ত আপুকে বলতে।আপু আমার পাশেই বসে আছে দেখলাম।আমি ওর দিকে তাকালাম।ও দেখি আমার দিকে তাকিয়ে মিটমিট করে হাসছে।
–কি হয়েছে হাসছিস কেন ওরকম করে?
–নাহ কিছু হয়নিতো।
(ও একদম আমার গা ঘেষে বসলো এবার)
–উফফ!সর তো আমার গরম লাগছে।
আমার কথাই ওর কোন রিয়াকশন দেখলাম না।ও উল্টো আমাকে জড়িয়ে ধরলো।
–কি করছিস এটা??আজ এতো পিরিত দেখানোর মানে কি?
–পিরিত কি আর আমি দেখাচ্ছি??তোরে পিরিত করার লোকের অভাব নাই তো আমি না করলেও হবে।
–মানে?(ওর কথার আগা মাথা কিছুই বুঝলাম না)
–মানে মানকচু।
–আমাকে ছাড় আর পারলে একটু সরবত করে খাওয়া।
–তুমি একটুখানি বসো আমি তোমার জন্য স্পেশাল সরবত করে আনছি
আমার চোয়াল টেনে কথাটা বলেই ও দৌড় দিলো।আমি আবার আগের মতো চোখ বন্ধ করে হেলান দিয়ে বসলাম।কিচ্ছুক্ষন পর,,
–উহহুউহহু…
আপুর গলা ঝাড়াই বুঝলাম ও এসেছে।আমি না তাকিয়েই হাত বাড়িয়ে দিলাম,সরবতের গ্লাস নিবো তাই।কিন্তু ও হাতে দিলো একটা প্যাকেট।আমি সাথে সাথে চোখ খুললাম,হাতে দেখি একটা চিপ্সের প্যাকেট।
–চিপ্স?চিপ্স এনেছিস কেন তোরে আমি সরবত দিতে বলেছিলাম।আর তুই চিপ্স আনলি?
–না মানে ভাবলাম তোর পাগল তোরে এতোগুলো চিপ্স পাঠালো,এখন কি আর তোর অন্য কিছু মুখে রুঁচবে?
–আমার পাগল মানে?আর চিপ্স পাঠিয়েছে মানে কি এসবের?
–মানে টা তুমি ভালো জানো আমার পিয়ারি ছোটি বেহনা(ও লাফ দিয়ে আমার কোলে এসে বসলো।ও হাল্কা পাতলা মানুষ তাই আমার বেশি কষ্ট হলো না)বল না বল না ছেলেটা কে।আমি তোর বোন তাই না?আমাকে বলবি না তো কাকে বলবি??বল না।
–কোন ছেলে কিসের কি?আমি কিচ্ছু জানি না রে আপা।
–মিথ্যা বলিস না।তোর বয়ফ্রেন্ড হয়ছে যেটা আমরা কেউ জানি না।
–বয়ফ্রেন্ড!!!!
–হ্যা বয়ফ্রেন্ড।এত অবাক হওয়ার কি আছে?এমনভাব মারছিস যে কিছুই জানিস না?
–আমি সত্যিই কিছু জানি না।আর আমার কোন বয়ফ্রেন্ড ও নেই।
–নাটক মারো তুমি?বয়ফ্রেন্ড না থাকলে কে তোরে ২০১ টা চিপ্সের প্যাকেট পাঠাবে আমায় বল।
–মানে?২০১ টা চিপ্সের প্যাকেট পাঠাইছে??
–হ্যা,,২০১ টা।সত্যি করে বল নিহীন ছেলেটা কে তা না হলে এক্ষনি মাকে বলে দেবো যে তার আদরের ছোট মেয়ে প্রেম করছে।
–আমি সত্যি বলছি প্রেম করছি না।আর চিপ্সের ব্যাপারটাও আমি জানি না
–তুই জানিস না?
–নাআআআআ রে বাবা।
–ঠিক আছে তাহলে নিজের রুমে গিয়ে দেখ?
–আমার রুমে??
–হুম হুম তোর রুমে,যা

আমি ওর দিকে একবার তাকিয়ে রুমে চলে গেলাম।রুমে তো কিছুই নেই।ও এতোক্ষন কিসব ফালতুতু কথা বলছিলো তা শুনতে যাবো তার জন্য দরজার দিকে ঘুরতেই রুমের কোনাই চোখ গেল।কোনাই একটা বস্তা।আমার রুমে বস্তাটা কিভাবে আসলো।আমি বস্তাটার কাছে গেলাম।দেখে বেশ বড়সড়োই লাগছে।আমি কিছুক্ষন বাইরে থেকে পর্যবেক্ষন করলাম তারপর বস্তার মুখ খুলতেই আমি শকড ভিতরে চিপ্সের প্যাকেট।আমি একটা একটা করে বের করছি কিন্তু শেষ ই হয় না।না পেয়ে বস্তা ধরে ঢেলে দিলাম।চোখের সামনে এই দেড়শো/দুইশো চিপ্সের প্যাকেট দেখে আমার মাথা ঘুরে উঠলো।আমি চোখ ডলে কয়েকবার দেখলাম,এটা স্বপ্ন নাকি আমার চোখের ভুল?নিজেই নিজের হাতে এবার চিমটি দিলাম
–আহ…(চিমটি বেশ জোরেই লেগেছে)
কিন্তু এর থেকেও বেশি মাথা ঘুরছে আমার এতোগুলো চিপ্স কোথা থেকে আসলো।

আমি চিপ্সগুলোর দিকে তাকিয়ে আছি,আপু দররজাই দাড়িয়ে গলা ঝাড়া দিলো।আমি ওর দিকে তাকালাম…….

চলবে…….
(#প্রেম_পাগলামি
#নিহীন_রুবাইয়াত
#পর্ব:২১

আমি চিপ্সগুলোর দিকে তাকিয়ে আছি,আপু দররজাই দাড়িয়ে গলা ঝাড়া দিলো।আমি ওর দিকে তাকালাম।ও মিচকা শয়তানের মতো হাসি দিলো।
–কে সে কে সে?কে সে কে সে???হু ইজ হি???
–আই ডোন্ট নোওওওওওওওও
–নিহী মিথ্যা বলবি না তো বারবার।ভালো লাগে না একদম।
–সত্যি বলছি,গড প্রমিস…

আমার মুখে গড প্রমিস শুনে আপু থেমে গেলো কারন এতো বড় মিথ্যা কথা আমি বলবো না।ওউ এবার চিন্তিত হয়ে আমার কাছে আসলো,,
–আচ্ছা নিহী এমন কেউ না তো যে তোকে মনে মনে লাইক করে কিন্তু বলতে পারে না??
(আপুও কথা শুনে বিষম খেলাম,এরকম একজন তো আছে যে এই দেড় বছর ধরে আড়ালে আছে।না না আপুকে এখন বলা যাবে না এ কথা)
–কি যে বলিস না তুই?কেউ নেই এমন
–থাকতেও তো পারে।
তোর–না নেই।
আপুকে মা ডাক দিলো আপু চলে গেলো।

আমি মাথায় হাত দিয়ে ভাবছি এতো চিপ্স কে দিলো??
–আচ্ছা ওই লোকটা দিইনি তো?

বিকালে মীরার ডাকে ঘুম ভাংলো।
–মীরু তুই?আমার বাসায়?(চোখ ডলতে ডলতে)
–আমি মানে?তুই তো আসতে বললি?
–আমি কখন?
–নিহুউউউউউউউ(ও আমাকে ধরে ঝালমুড়ি মাখানোর মতো ঝাকালো।আমার হুশ ফিরলো)
–ও হ্যা হ্যা।
–তোরো ঘুম!বাবা রে বাবা।এবার বল কেন এত জরুরি তলোপ।

আমি বেলকনিতে নিয়ে যেয়ে ওরে বস্তাটা দেখায়।কেউ রুমে এসে দেখলে ঝামেলা হবে তাই বেলকনিতে রেখে দিয়েছি।এতো চিপ্স দেখে মীরার তো চোখ বেরিয়ে আসার মতো।ওরে সব ঘটনা বললাম।ওউ বোকার মতো তাকিয়ে থাকে।দুজন ঘরের দরজা লাগিয়ে বসে আছি,গালে হাত দিয়ে ভাবছি।
–দোস্ত এটা তোর ওই সিক্রেট আশিকেরই কাজ।
(আমি আড়চোখে তাকালাম)
–না তুই একবার ভাব যখনি তোর কোন বিপদ হয় বা কোন স্পেশাল ডে বা তুই কিছু আবদার করিস সেটা পুরন হয়ে যায়।আর বেশির ভাগ সময়েই যখনি সৌভিক ভাইয়ের সাথে ঝামেলা হয় তখন।
–উফফ!!আবার ওই ইডিয়েটটার কথা,একদম ওই অসভ্যটার কথা বলবি না।আজ ওই অসভ্য,বদমাসটার জন্য আমার চিপ্স পড়ে গেছে মাটিতে,শুধু কি তাই আমার রেজাল্ট নিয়েও কথা শুনাইছে।ব্যাটারে তো খুন করতে মন চাই আমার।
–ওয়েট ওয়েট।ওনার জন্য তোর চিপ্স পড়ে গেছে।
–হ্যা
–নিহুউউউউউউউউউ(চিল্লিয়ে ওঠে মীরা)
–কিক কি হয়েছে?(আমি লাফ দিয়ে উঠি)
–তোর সিক্রেট আশিক কে পেয়ে গেছি?
–কে কে??
–সৌভিক ভাআআআআআইইইইইইই..
–হোয়াট??
–হ্যা।
–ফাউ বকিস না
–ফাউ না সত্যি।তুই ভাব যখনি ওনার সাথে তোর ঝামেলা হয় তুই কষ্ট পাশ আর তখনি তোর সিক্রেট আশিক হাজির হয়।আই এম ড্যাম শিউর এটা ভাই ছাড়া আর কেউ না..
–তোর কি মাথা টাথা খারাপ হয়ে গেছে উনি কেন হবেন?উনি ক্যাম্পাসের ক্রাশ বয়।
–তো?ক্রাশ বয়রা কি প্রেমে পড়ে না।
–না তা না।
–তাইলে?
–প্রেমে পড়ে কিন্তু তাই বলে আমার প্রেমে?ইমপসিবল।হতেই পারে না
–কেন হতে পারে না?
–আমি বলছি তাই।তুই এত বেশি বুঝিস না তো।
–নিহু তুই মানিস বা না মানিস আমার সন্দেহ হচ্ছে।

আমি আর মীরা অনেকক্ষন তর্ক করলাম।মীরা যাওয়ার সময় মীরাকে চিপ্সের বস্তা টা দিয়ে দিই,ওর বাসায় রাখার জন্য।মা তো জিজ্ঞেস করছে এটার কিসের কি।মাকে মিথ্যা বললাম যে মীরার জিনিস।মা হয়তো বিশ্বাস করলো না।রাতে শুয়ে শুয়ে ভাবছি,মীরার কথাটা কি সত্যি?ওটা কি সত্যিই উনি?না না উনি কেন হবে?ওনাকে দেখে তো ওমন মনে হয় না।উনি তো একটা অসভ্য।আমার রেজাল্ট নিয়ে খোটা দিলো।ব্যাটা খাটাস।জীবনে বিয়ে হবে না তোর।

পরের দিন আমি আর মীরা চিপ্সগুলো নিয়ে মীরার ঘরে বসে আছি।ওর বাসায় কেউ নেই শুধু ও আর কাজের মহিলাটা তাই বস্তাটা নিয়ে কোন ঝামেলা হয়নি।কিন্তু করবো টা কি?২০০ টা চিপ্স কম না।আর কে না কে দিয়েছে আমি এটা খেতেও পারবো না।অবশেষে ঠিক করলাম গরিব কোন ব্যাক্তিকে দিয়ে দেবো।সে এগুল বিক্রি করে যে টাকা পাবে তারি লাভ হবে।যেমন ভাবা তেমন কাজ।এক অসহায় ব্যাক্তিকে দিয়ে দিলাম প্রথমে উনি বেশ অবাক হয়েছিলেন এরকম কেউ করে?কিন্তু পরে আর কিছু বলেনি।যাক চিপ্স গুলো বিদায় করে এখন খুব শান্তি লাগছে।আমি আর মীর পার্কে এসে বসলাম।দুজন হাওয়ায় মিঠাই খাচ্ছি আর গল্প করছি হটাত মীরা ইশারা করলো,,
–নিহু নিহু দেখ….
আমি ওর হাতের ইশারার দিকে তাকালাম,একটু দূরেই অসভ্যটা বসে আছে,ল্যাপটপে কি যেন করতেছে।ব্যাটারে দেখে কালকের কথা মনে পড়ে গেলো,শালা আমার রেজাল্ট নিয়ে খোটা দিছে।
–নিহু ওনার দিকে ওইভাবে রেগে তাকিয়ে আছিস কেন?
–…………..
–অরেঞ্জ টি-শার্ট আর থ্রিকোয়াটার প্যান্টে ওনাকে একদম আগুন লাগছে।বল?
–……………..
–কি রে কথা বলছিস না কেন??
–নিহু চল না ওনার কাছে যাই যেয়ে জিজ্ঞেস করি উনিই তোকে চিপ্সগুলো দিয়েছে কিনা?
–তার কোন দরকার নেই।
–আছে চল তো

মীরা আমার হাত টেনে হিচড়ে ওনার কাছে নিয়ে যায়।
–ভাইয়া কেমন আছেন?
উনি ল্যাপটপ থেকে চোখ উঠিয়ে মীরার দিকে একবার তাকিয়ে আবার ল্যাপটপের স্ক্রিনে তাকাই,
–তোমার সাথে পরে কথা হবে মিমি।বাই

উনি এবার ল্যাপটপটা রেখে মীরার দিকে তাকাই।
–আরে তোমরা এখানে?
–ভাইয়া আপনি কি নিহুর বাসায় চিপ্স পাঠিয়েছিলেন?
–কি?
–ভাইয়া আপনি নিজেই ওরে বলেন,আপনিই ওরে চিপ্সগুলো দিয়েছেন।আমি কাল ধরে বলছি কিন্তু ও আমার কথা বুঝতেই চাইছে না।
–মীরা আমিও তোমার কথা কিছু বুঝতে পারছি না।

মীরা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়।উনিও জিজ্ঞাসু ভাবে তাকিয়ে আছে।মীরা এবার সব টা বলে উনি হাসতে থাকে।
–আমি কিনা এই চুনোপুঁটি মানে তোমার বান্ধবিকে চিপ্স দেবো তাও আবার ওতো?হাহাহাহহাহহাহাহহাহহহহহ..আমার ওতো টাইম নাই যে ফালতু কাজে ওয়েস্ট করবো।

ওনার হাসি দেখে দেখে খুব রাগ হলো,
–নিজেকে কি মনে করেন আপনি?মানছি দেখতে ভালো,পড়াশুনাই ভালো তাই বলে কি অন্যকে মানুষ বলে গন্য করবেন না?
উনি আমার কথা শুনে হাসি থামিয়ে দিলেন,কিছু বলার আগেই আমি থামিয়ে দিই,
–চুপ একটা কথাও বলবেন না।আজ আমি বলব আর আপনি শুনবেন।আচ্ছা আপনি কেমন মানুষ বলেন তো?সবাই বলে আপনি নাকি অনেক ভালো একজন কিন্তু আসলেই কি ভালো?না আপনি একজন জঘন্য মানুষ,আপনি ভালো হতে পারেন না।আপনি যদি ভালো হতেন তাহলে আমার সাথে দিনের পর দিন এরকম খারাপ ব্যাবহার করতে পারতেন না।আরে ভাই ভুল তো মানুষ মাত্রই হয়,আমার ও হয়েছিলো কিন্তু তাই বলে আমাকে এভাবে শাস্তি দেয়া হবে?
–নিহীন তুমি…
–চুপ,একবার বললাম না আজ শুধু আমি বলবো।আপনি যা করেছেন তা কোন সভ্য মানুষে করে?আপনি খুবি নিচু মনের মানুষ,শয়তান পশু।আমার সাথে পশুর মতো আচারন করেছেন।
–নিহু তুই কি বলছিস এসব?
–মীরা তুই থাম,আমাকে বলতে দে।

–এই যে মিস্টার ক্রাশ বয় মেয়েদের কি ভাবেন হ্যা?তারা সব চুপচাপ মেনে নেবে?না মানবে না।আরে আপনার মুখ দেখলেও আমার ঘেন্না লাগে,একটা মানুষ কিভাবে এতোটা খারাপ হতে পারে?

ওনার চোখ টলমল করছে,এই বুঝি কেদে দেবে।ওনার ওই চোখে তাকানোর পর আমি আর কথা বলতে পারলাম না কেন জানি না।অনেক কিছু বলার আছে তাও আমি যেন ভাষায় খুজে পাচ্ছি না।শেষ পর্যন্ত মীরার হাত ধরে ওখান থেকে চলে আসতে যাবো।কিন্তু এক পা বাড়াতেই কেউ যেন হাতটা টেনে ধরলো,,আমি ঘুরে তাকিয়ে দেখি উনি হাত ধরে আছে।
–এক্টাবার আমার কথা শুনবে নিহীন?
–আমার হাত ছাড়ুন কোন কথা নেই আপনার সাথে।
–প্লিজ একটাবার।
–হাত ছাড়ুন
–নিহীন
–হাত ছাড়তে বলছি না।(আমি এবার বেশ জোরেই কথাটা বলে উঠলাম,আশেপাশের লোক তাকিয়ে পড়লো)
–নিহীন আমি যাস্ট একটা কথা বলবো
–হাত ছাড়ুন আমার।
–নিহীন আস্তে কথা বলো আশেপাশের সবাই তাকিয়ে আছে অন্যকিছু ভাববে তো।
–ভাবুক যে যা ভাবে ভাবুক,কেন কেউ কিছু ভাবলে বুঝি মি. আশহাদ আরিয়ান সৌভিকের ইমেজ নষ্ট হবে??
–সেটা না আসলে নিহীন,,

উনি কথা শেষ করতে পারে না তার আগেই একটা লোক ওনার টি-শার্টের কলার চেপে ধরে ওনার ডান গালে দেই এক থাপ্পড়।উনি আমার হাত ছেড়ে দিয়ে সোজা গিয়ে পড়ে মাটিতে,হটাত থাপ্পড় খাওয়ায় ব্যালেন্স ঠিক রাখতে পারিনি।ওনাকে কে থাপ্পড় মারল দেখার জন্য তাকাতেই দেখি আমাদের ঘিরে ১৫/১৬ জন লোক জড় হয়ে গেছে।উনি মুখ উচু করে তাকানোর আগেই আরেক জন ওনার কলার টেনে দাড় করাই,শক্ত করে চোয়াল ধরে বলে,
–এই যে হিরো,সুন্দরি মেয়ে দেখে ইভটিজিং হচ্ছে?
–কি? কি বলছেন এসব?ছাড়ুন আমায়,আমাকে মারলেন কেন?
(উনি লোকটার হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করে।তখনি যেই লোকটা আগে থাপ্পড় মেরেছিলো সে ওনার হাত ধরে)
–তোর মতো ছেলেগুলোর জন্যেই দেশে এতো রেপের কেস,নারী উত্তক্ত করিস?দেখে তো ভদ্র ঘরের ছেলে বলেই মনে হয়।বাপ মা শিক্ষা দেইনি?
–আরে আমি ভদ্র ঘরের ছেলেই।আপনারা কি উল্টা পাল্টা বলছেন?ছি!আমি কেন ওকে ডিস্টার্ব করতে যাবো?আমরা তো পরিচিত যাস্ট কথা বলছিলাম।নিহীন তুমিই বলো ওনারা যা ভাবছে তা ভুল।

উনি আমার দিকে তাকিয়ে বলেন কিন্তু আমি চুপ করে থাকি।ওই লোকগুলোও আমাকে জিজ্ঞেস করে আমি ওনাকে চিনি কিনা কিন্তু আমি এখনও চুপ।আমাকে চুপ দেখে ওনারা আবার সৌভিকরে ধরে,
–কি রে হিরো মেয়েটা নাকি তোর পরিচিত তা কথা বলে না কেন?
–আমি সত্যি বলছি আমরা একি ভার্সিটিতে পড়ি ইভেন ওর বোনের সাথে আমার ভাইয়ের বিয়ে হবে।
–সব জানা আছে,ধরা খাইলে কতো মিথ্যা কথায় বলে তোর মতো ছেলেরা।শালা লুইচ্চা,বা*****
–গালি দিবেন না।দেখুন আপনাদের এই ননন্সেস অনেক্ষন ধরে সহ্য করছি।আমি চাইলে কিন্তু উল্টা আপনাদের মেরে শুইয়ে ফেলতে পারি কিন্তু আমার বাবা মা আমাকে বড়দের গায়ে হাত দিয়ার শিক্ষা দেইনি।
উনি কথাটা শেষ করার সাথে সাথে ওনার গালে পড়ল এক থাপ্পড়,ওনার ঠোট কেটে রক্ত বের হয়ে গেলো
–কি?নিজে ইভটিজিং করে আমাদের মারার হুমকি দিশ?তোরে তো আজ মেরেই ফেলবো।

আর একজন ওনাকে থাপ্পড় দিতে যায় কিন্তু আমি লোক্টার হাত ধরে ফেলি।
–থামুন আপনারা।আমি চিনি ওনাকে আর উনি আমাকে ডিস্টার্ব করছেন না।দয়া করে ওনাকে মারা বন্ধ করেন।

আমার কথায় সবাই আমার দিকে তাকাই।লোকগুলো ওনার কলার ছেড়ে দেয়।
–কি চেনো তুমি ওরে?
–হ্যা চিনি।আমাদের নিজেদের মধ্যে একটু ঝগড়া হচ্ছিলো এই যা।
–তাহলে আগে বলোনি কেন?আর নিজেদের মধ্যে ঝামেলা বাড়িতে মিটাতে পারো না।পার্কের মাঝে এমন করলে লোকে তো উল্টা ভাববেই।যত্তোসব….

লোকগুলো কিছু কথা শুনিয়ে চলে গেল।আমি ওনার দিকে তাকালাম
–থ্যাঙ্কস নিহীন।তুমি যদি না বলতে আজ তো আমাকে রাম ধোলাই খেতে হতো

উনি একটু মুচকি হাসলেন।কিন্তু আমি এখনো রেগে আছি।
–মার খাওয়া থেকে বাঁচিয়েছি মানে এটা না আমি সব ভুলে গেছি।

আমি আর দাড়ালাম না চলে আসলাম উনি কয়েকবার ডাকলেন কিন্তু আমি তাকাইনি।বাসায় এসে খুব রাগ হলো আর কান্নাও পেলো।কেন কান্না পেল জানি না।শাওয়ার নিলাম খাটে এসে শুয়ে পড়লাম।ঘুম এসে গেলো।পরের দিন উঠলাম একেবারে ভার্সিটি যাওয়ার টাইমে।না খেয়ে ভার্সিটি তে চলে গেলাম।খুদা পেয়েছে কিন্তু রাগে খাওয়ার ইচ্ছা নেই তাও মীরার জোরাজুরি তে কিছু খেতেই হবে। ক্যান্টিনে আমি আর মীরা।মীরা বার্গার অর্ডার দিলো আমার জন্য।ক্যান্টিনে যে ছেলেটা কাজ করে সে আমার বার্গার দিয়ে গেলো।তবে আজকের বার্গারটার লুক একটু অন্যরকম।বার্গারের ওপরে স্মাইলি আকা।আমাদের ক্যন্টিনে এমন তো দেই না।বার্গার টা খাওয়ার জন্য হাতে নিতেই দেখি প্লেটে এক্টা ট্যিসু আর তাতে লেখা সরি।আমি তো আর এক রাউন্ড অবাক।ওয়াটারকে ডাকার জন্য চোখ তুলতেই দেখি সৌভিক ভাই দাড়িয়ে আছে।মুচকি একটা হাসি দিয়ে উনি আমার সামনের চেয়ারটাই বসে পড়েন
–কি হলো খাও,আমি স্পেশালি তোমার জন্য অর্ডার করেছি আর তুমি যেটা অর্ডার করেছিলে ওটা আমি খেয়ে নিয়েছি।

উনি ক্লোজ আপের এডের হাসিটা দিলেন।

চলবে………..

(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here