“ফেমাস_বর🙈 পার্ট_১২

#ফেমাস_বর🙈
#পার্ট_১২
#লেখিকা_রামিসা_মালিয়াত_তমা

দেখো আদনান,আর যাই করো না কেন বাবা!জোর করে তমাকে বিয়ে কইরো না।আমি জানি যে তুমি তমাকে সুখী রাখতে পারবে,কিন্তু তবুও জোর করে করলে মেয়েটার মনে একটা খোব থেকে যাবে।(কথাটা বললেন আফসানা হাসিব(আদনানের মা)

আদনান-আরেহ মম,আমি ওকে জোড় করব কেন?আমি ওর স্বেচ্ছাতেই ওকে বিয়ে করব,ইনশাল্লাহ!তোমরা সেটা নিয়ে ভেবো না।

আফসানা হাসিব-ইনশাল্লাহ!

এই বলে তিনি ঘর থেকে চলে গেলেন।

আদনান-আহ,এতোগুলোদিন তো শুধু এই দিনটার জন্যই অপেক্ষা করেছি।আমার ভালোবাসাকে আমি নতুন করে পূর্ণতা দেব।আর,তুই তো আমারই হবি তমু,মিসেস আদনান হাসিব!জাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ!

এদিকে তমা একা একা ঘরে শুয়ে আছে।তার কিছুই ভালো লাগছেনা।হাতে স্যালাইনের ক্যানোলা লাগানো,তাই চাইলেও সে কোথাও জেতে পারছেনা।

তমা-ধুর,ভাল্লাগেনা।কেউ একটু আমার রুমেও আসছেনা।সবাই রাগ করে বসে আসে।আর এদিকে যে আমাকে কতগুলা কথা শোনালো কই সেটার জন্য তো আমি রাগ করে বসে নেই।রাগ তো আমার করার দরকার ছিল।ধুর,মরে গেলেই ভালো হত…

তমা কথা শেষ করতে পারলনা।তার আগেই কেউ একজন বলে উঠল,

সামওয়ান-শ্যাট আপ,পাগল হয়ে গেসিস নাকি তুই তমা?এসব কি বলতেসিস?

এই সামওয়ানটা হচ্ছে আবরার।তমা ঘুরে দেখলো আবরার খাবারের ট্রে হাতে দাঁড়িয়ে আছে।

তমা-আরে,তুই দাঁড়িয়ে আছিস কেন?এসে বোস।

আবরার-বসবো তো বটেই।কিন্তু তার আগে তুই বলতো মাত্র এসব কী চিন্তা করতেসিলি?খবরদার তমা,আর ভুলেও যেন তোকে এসব না বনতে দেখি।

আদনান-বোঝা,বোঝা!এই ছাগলটাকে বোঝা।মাথায় তো বুদ্ধির “ব”ও নেই।

তমা-আদনান ভাইয়য়াাাাাাাাাাাাাা(রেগে গিয়ে)

আদনান-আবরার তোর সামনের ছাগলটাকে তারাতারি ট্রে এর খাবারগুলো খেয়ে নিতে বল।

আবরার-তোমার মক্কেল সো তুমিই খাওয়াও।আমি যাই,বাই!

এই বলে আবরার পালিয়ে গেল সেখান থেকে।আর তমা ভাবতে লাগল যে এখন তো সে শেষ।আদনান তো তাকে এক চুলও ছাড় দিবেনা।

আদনান-ট্রেয়ের খাবারগুলো খেয়ে নে জলদি।
তমা আর কথা না বাড়িতে খাবারগুলো খেতে লাগল।তমার খাওয়া শেষ হলে আদনান শার্টের হাতা উঠাতে উঠাতে আসতে লাগল।

তমা তো ভয়ে শেষ।আজ না জানি কী আছে তার কপালে।

তমা-আজকে তুই শেষ তমা,আজকে তুই শেষ।আদনান ভাইয়ের একটা চড়ই তোর জন্য যথেষ্টের চেয়েও বেশি।আল্লাহ বাঁচাও!(মনে মনে)

আদনান হাতা উঠাতে উঠাতে তমার একদম কাছে চলে আসলো।তমাকে মারার জন্য হাত উঠাতে নিলে তমা ভয়ে চোখ-মুখ খিঁচে ফেলল।কিন্তু আদনান মারার বদলে তমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলো।

আদনান-কেন তুই এমন করলি তমু?কেন এমন করলি?আজ যদি তোর কিছু হয়ে যেত তাহলে আমি কী নিয়ে বাঁচতাম?বল কী নিয়ে বাঁচতাম?(কাঁদতে কাঁদতে বলল)

তমা শুধু স্তব্ধ হয়ে গেছে আদনানের আচরণে।তমা নিজেও আদনানকে আলতো করে জড়িয়ে ধরল আর বলল,

তমা-সরি আদনান ভাই!আমি আসলে বুঝতে পারিনাই।আমাকে শুধু শুধু এতোগুলা কথা শুনতে হয়েছে দেখে সহ্য করতে পারিনি।তাই এমনটা….প্লিজ আপনি কাঁদবেন না।প্লিজ আদনান ভাই!

আদনান কান্না থামিয়ে তমাকে ছেড়ে দিল।

আদনান-কথা দে আর কখনো এমন করবিনা।কথা দে আমাকে ছেড়ে কখনও যাবিনা।বল,কথা দে!

তমু-কথা দিলাম,কখনো যাবোনা!

আদনান-গুড গার্ল!আচ্ছা তুই থাক,আমি যাই!অফিসে ব্যাক করতে হবে!রাতে আবার বাসায় ব্যাক করব!

আদনান যেতে নিলে তমা আদনানের হাত ধরে ফেলল।

তমা-সরি,আদনান ভাই!আমার জন্য আপনার অনেক প্যারা হলো আজ!

আদনান-ধুর পাগল,সেসব ভুলে যা।তুই রেস্ট নে,আমি যাই!আল্লাহ হাফেজ।

আদনান চলে গেল।আর তমা আদনানের যাওয়ার পানে চেয়ে রইলো।

“আদনানের অফিসে”,

আদনান-এসব কী পিউু?এই ফাইলটার এই অবস্হা কেন?দুটোদিন অফিসে ভালো মতোন কাজ করিনি দেখেই এই অবস্হা?আর তুমি এসব কী পরে আসছো,হ্যাঁ?কী পরে আসছো এসব?লিসেন পিউু,আ’ম ওয়ার্নিং ইউ ফর দ্যা লাস্ট টাইম,এসব অশালীন জামা-কাপড় পরে আর কোনোদিন অফিসে আসবানা।গট ইট?

পিউু-ইয়েস,স্যার!(ভয়ে ভয়ে)

আদনান-হুম,নাও এই ফাইলটা রাহমান সাহেবের থেকে সাইন করিয়ে নিয়ে আসো।গো ফাস্ট!

পিউু মুখ গোমড়া করে যেতে লাগল আর মনে মনে ভাবতে লাগল,

পিউু-উফ,এতোদিন ধরে এই অফিসে কাজ করছি।অফিসের সবাই আমার জন্য পাগল।কিন্তু কিছুতেই এই বসটাকে পটাতে পারছিনা।ধুর!

অন্যদিকে বাসায় সবাই তমাকে এক এক করে বকা দিচ্ছে।সবার বকা দেওয়া শেষ হলে হঠাৎ আয়েশা বলে উঠল,

আয়েশা-তমা জানো,আদনানের না বিয়ে!

(এটা আদনানের একটা প্ল্যান।সে দেখতে চায়,তমা তার বিয়ের কথা শুনে কী রিয়েকশন করে)

আদনানের বিয়ে শোনার সাথে সাথে অজান্তেই তমার বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠল।নিজের মধ্যে একটা চাপা কষ্ট অনুভব করলো সে!

তমা-ওহ,তো মেয়েটা কে?

সবাই তমার কথা শুনে মুখ টিপে হাসল।

আয়েশা-মামার এক কলিগের মেয়ে।

তমা-ওহ!

তমার খুবই খারাপ লাগছে আদনানের বিয়ের কথা শুনে।কিন্তু কেন খারাপ লাগছে তা তমা নিজেও জানেনা।

সবাই তমার মুখের দিকে তাকিয়ে রয়েছে।সবাই বুঝতে পেরেছে যে আদনানের বিয়ের কথা শুনে তমা মোটেই খুশি হইনি,উল্টা দু:খ পেয়েছে।তাই সবাই তমাকে একা ছেড়ে দিয়ে রুম থেকে চলে গেলো।কিন্তু তারা দরজার পাশে দাঁড়িয়ে রইল তমার রিয়েকশন দেখার জন্য।

তমার খুবই কষ্ট হচ্ছে।কান্না পাচ্ছে তমার।

তমা-আচ্ছা,আদনানের ভাইয়ের বিয়ের কথা শুনে আমার এতো খারাপ লাগছে কেন?উনি তো আমার ভাই!আর তাছাড়া,একদিন না একদিন তো উনার বিয়ে হবেই।তাহলে আমার এতো খারাপ লাগছে কেন?

তমা আর কিছু ভাবতে পারছেনা!তমার অজান্তেই ওর চোখ থেকে দু-ফোটা পানি পরল!

আর বাইরের সবাই সেটা দেখে একদম নিশ্চিত হয়ে গেল যে তমাও আদনানকে ভালোবাসে!

তমা ক্যানোলা হাতে নিয়েই বারান্দায় গেলো।

তমা-আমার কেন এতো খারাপ লাগতেসে আল্লাহ?কেনো আমার এতো খারাপ লাগতেসে?কখনও কারোর জন্য এমন খারাপ লাগেনি তো!আচ্ছা,আমি কী তাহলে?আমার দেখা স্বপ্ন কী তাহলে সত্যি?নাহ,এটা কখনোই সম্ভব নয়।আর যাই হোক,এটা কখনোই সম্ভব নয়।নাহ!

তমা আর কিছু ভাবতে পারছেনা।তার দম বন্ধ হয়ে আসছে!কী আছে তার কপালে?

অন্যদিকে,,,

বাকিরা-যাক বাবা,তাহলে অন্তত শিউর হওয়া গেলো যে তমাও আদনানকে ভালোবাসে!

আবরার-ইয়েস,আওয়ার প্ল্যান ইজ সাক্সেসফুল!

সবাই একসাথে হাত দিয়ে চিয়ারফুল সাউন্ড করলো!

তো পিছনে পিছনে এতোকিছু?(কেউ একজন তালি দিতে দিতে কথাটা বলে উঠল!

কারো আওয়াজ পেয়ে সবাই পিছনে তাকালো!

চলবে,,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here