বিষাক্ত প্রেম পর্ব ৮+৯

পর্ব ৮+৯
#বিষাক্ত প্রেম ২

Urme prema (sajiana monir)

পার্ট: ৮

সেহের সকালে চোখ খুলতেই দেখে তার বেডের সরাসরি কেউ একজন বসে আছে প্রথমে তেমন ভাবে গুরুত্ব না দিলেও পরে আবার বেশ ভালো করে লক্ষ করে , দেখে আরহাম বসে আছে ।সেহের আরহামকে দেখে “আাাাাাাাা” করে বড় এক চিৎকার দেয় । আরহাম তারাতারি করে সেহেরের কাছে এসে তার মুখ চেপে ধরে ।
সেহের আরহামের দিকে রাগি দৃষ্টিতে বড় বড় চোখ করে আছে ।
আরহাম ধমকের স্বরে বলে উঠে

-“এতো চেচাঁনোর কি আছে ?
আমি কি বাঘ না ভাল্লুক !”

সেহের ইশারা করে তার মুখের উপর থেকে হাত সরাতে বলে ।আরহাম হাত সরাতেই সেহের রেকর্টারের মত একদমে বলতে শুরু করে

-“মানে আপনি নিজেকে কি মনে করেন ?
আপনি আমার রুমে কি করে আসলেন !
মানে কোন জ্ঞান বুদ্ধি আছে না কি ?
আর আপনি বাঘ ভাল্লুক কেন হতে যাবেন ? তার উপর যদি কিছু থাকে তাহলে আপনি ঐটা !”

আরহাম সেহেরের এসব কথায় নিজের মাথার চুল ছিড়তে ইচ্ছে করছে ।নিজের রাগ কে দমিয়ে মুখে হাসির রেখা টেনে বলল

-“এক্সকিউজমি !
এটা আমার বাড়ি আমার রুম আমার বেডের উপর তুমি এখন আছ ,তুমি কি তা ভুলে গেছ ?”

সেহের আশে পাশে তাকিয়ে চোখ বুলিয়ে দেখে নেয় সত্যিই তো কাল রাতেই আরহাম তাকে এখানে নিয়ে এসেছিলো সে এখন আরহামের বাড়িতে আছে ।কাল রাতেই তো তাকে এই শয়তান লোকটা থাপ্পর মেরেছিলো তা কি করে সে ভুললো !
সেহের আরহামের দিকে তাকিয়ে দেখে আরহাম তার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করছে ।সেহের আরহামের সামনে নিজের ভুল স্বিকার না করে উল্টো বলতে শুরু করে

-“তো আপনার রুম বলে কি আপনি একটা মেয়েকে ঘুমন্ত অবস্থায় এভাবে দেখবেন ।
আপনাকে এই অধিকার কে দিয়েছে হুমমম !”

অধিকারের বিষয়টা সেহের মজা করে বললে ও আরহাম তা বেশ সিরিয়াস ভাবে নিয়ে নেয়।সেহেরের এই ছোট্ট মজা করাটা আরহামের রাগ বাড়িয়ে দেয় ।আরহামের সে সেহেরের হাত ধরে নিজের কাছে টেনে এনে রক্তচক্ষু নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলতে লাগে

-“অধিকার ?
তোমার উপর আমার কতটা অধিকার আছে তা তোমারও জানা নেই !
তোমার উপর শুধু আমার অধিকার রয়েছে ,আমার এই অধিকারের মাঝে কেউ আসলে তাকে শেষ করে দিবো ।
মাইন্ড ইট !”

সেহের আরহামের কথায় বেশ ভয় পেয়ে যায় ।ভয়ে সেহেরের চোখ টলটল করছে যেন এখন গড়িয়ে জল পড়বে ।আরহাম তা বুঝতে পেরে সেহেরকে ছেড়ে দিয়ে শান্ত গলায় বলতে লাগে

-“ফ্রেশ হয়ে নিচে আসো সবাই তোমার অপেক্ষা করছে !”

বলেই হুরহুর করে রুম থেকে বেরিয়ে পরে ।সেহের আরহামের যাওয়ার দিকে ছল ছল চোখে তাকিয়ে থাকে এই লোককে সে কোন দিন বুঝে উঠতে পারবেনা ।এই লোক কি বলে ?কি চায় সে ? সবকিছুই যেন তার মাথার উপর দিয়ে যায় !

সেহের সিড়ি দিয়ে নিচে নামার সময় দেখে আরহাম তার বাবা মায়ের সাথে ব্রেকফাস্ট টেবিলে বসে আছে ।আরহাম আর তার বাবা কোন কিছু নিয়ে কথা বলছে আর আরহামের মা খাবার রেডি করছে ।
সেহের সিড়িতেই দাড়িয়ে আছে কেমন জানো একটা সংকোচ তার মনে কাজ করছে ।কাল সারারাত এখানে ছিলো না জানি কি মনে করবে ?
তাকে নিয়ে খারাপ কিছু ভাবেনা তো ?
এমন হাজারো প্রশ্ন তার মনে জাগছে ।
আরহামের মায়ের হঠাৎ সিড়ির দিকে চোখ যেতেই দেখে সেহের সেখানে দাড়িয়ে দাড়িয়ে কিছু একটা ভাবছে হয়তো সংকোচ বোধ করছে তা বুঝতে পেরে সেহেরের কাছে যেয়ে তাকে নিয়ে এসে চেয়ারে বসায় ।

আরহামের মা সেহেরের দিকে চায়ের কাপটা এগিয়ে দিতে দিতে বলল

-“এখন কেমন বোধ করছো মা ?
শরীর ঠি ক আছে তো !”

সেহের আলতো স্বরে নিচের দিকে তাকিয়ে বলল

-“জ্বি আন্টি এখন পুরোপুরি সুস্থ আছি ।
সরি আন্টি কাল আমার জন্য আপনাদের ঝামেলায় পড়তে হয়েছে ।”

আরহামের মা মুচকি হেসে বলতে লাগে

-“আরে এতে সরি বলার কি আছে ?
আরহাম আমাকে সবটা বলেছে তুমি কোন ভুল করোনি আর এটা তো তোমার বাড়িই আর আমরা তো তোমার আপনজন তো সরি ফিল করার কোন দরকার নেই !”

সেহের কথাগুলোর অর্থ না বুঝে শুধু মাথা দুলায় আরহামের দিকে তাকাতেই দেখে আরহাম তার দিকে তাকিয়ে আছে সেহের আরহামের এমন চাহনি দেখে আরহামকে বেটকি মেরে নাস্তা করতে লাগে ।নাস্তা শেষ করে সেহের আরহামের মায়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আরহামের সাথে বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দেয় ।প্রথমে সেহের একা যাওয়ার জন্য জিদ করলেও পরে আরহামের ধমকে তার সাথে যাওয়ার জন্য রাজি হয় ।

গাড়ি চলছে নিজ গতিতে আরহাম গাড়ি চালাচ্ছে পাশেই সেহের বসে আছে ।আরহাম গাড়ি চালানোর সাথে সাথে আড় চোখে সেহেরকেও দেখে নিচ্ছে যা সেহেরের চোখ এড়ায়নি ।
সেহের ও আরহামের দিকে তাকাচ্ছে ।গাড়ি তে রোমান্টিক গান বাজছে আর চারদিকের পরিবেশ ও বেশ রোমান্টিক ।
সেহেরের মন বেশ সময় ধরে খচখচ করছে সে কিছু একটা বলতে চাইছে ।কিন্তু বলবে কি না তা বুঝতে পারছেনা ।
আরহামের তা চোখ এড়ায়নি সেহেরের অস্থিরতা বুঝতে পেরে সামনের দিকে তাকিয়ে গাড়ি চালাতে চালাতে বলল

-“কিছু বলবে ?”

সেহের আরহামের দিকে অভাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে

-“আপনি কি করে বুঝলেন আমি কিছু বলতে চাইছি !”

আরহাম আগের মত সামনের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলে

-“তোমাকে আমার চেয়ে বেশি কেউ চেনে না আমি তোমার শিরা শিরা পর্যন্ত অবগত !”

সেহের মুখ ভেংচি দিয়ে বলতে লাগে

-“তাই বুঝি !
২ দিনের পরিচয়ে এতটা চিনে ফেলেছেন আমাকে ?”

-“উহু ৫ বছর ৭ মাস ৩ দিনে !”

-“হোয়ার্ট ?
আপনি আমার সাথে মজা করছেন তাই না ?”

আরহাম মুচকি হেসে বলে

-“তুমি যা ভেবে খুশি থাক তাই ভেবে নেও !
বায় দ্য ওয়ে তুমি কি জানো বলছিলে ?”

সেহের আমতা আমতা করে বলে

-“না মানে এই যে আপনি মেয়েদের সাথে ফ্লাট করেন আপনার গার্ল ফ্রেন্ড কি তা জানে ?”

আরহাম শব্দ করে হাসতে লাগে ।সেহের অবাক চোখে হা হয়ে তাকিয়ে আছে আরহামের দিকে ।ইসস এত সুন্দর হাসি কোন ছেলের হয় নাকি ? এই প্রথম সেহের আরহামকে মন খুলে হাসতে দেখেছে ।
আরহামের এই হাসিটা সেহেরের বুকে যেয়ে লাগলো ।মনে মনে ভাবতে লাগলো এত কেন সুন্দর এই লোকটা ? যে তার কাছ থেকে নজর সরানো দায় হয়ে যায় !
হঠাৎ আরহামের হাসির কারন মনে পড়তেই ভাবতে লাগে সে এমন কি বলেছে যে আরহাম এই ভাবে হাসছে সে এবার আরহামের দিকে বোকার মত তাকিয়ে আছে ।আরহাম সেহেরের চাহনি দেখে বলতে লাগে

-“এভাবে ঘুরিয়ে পেচিয়ে না বলে ,তুমি সরাসরি আমাকে জিগাসা করলেই পারতে যে আমার গার্ল ফ্রেন্ড আছে কি না !
আই ডোন্ট মাইন্ড “

সেহের এবার ও আরহামের কথায় হা হয়ে আছে মানে এই লোক কি মনের কথাও পড়তে জানে নাকি ?
কিন্তু সেহের কোন ভাবেই আরহামকে বুঝতে দিবেনা সে এটা জানার জন্যই প্রশ্নটা করেছে তাই ,পরক্ষনেই নিজেকে সামলিয়ে সেহের বলল

-“লিসেন ! আমি ঐ সব মেয়েদের মত না যে আপনার পিছু পিছু ঘুরবো ,বা আপনাকে পছন্দ হয়েছে তাই জিগাসা করবো ।
আমি জাস্ট এটা জানার জন্য জিগাসা করেছি যে সে আপনার এসব জানার পর আপনাকে কি করে সয্য করে !”

আরহাম মুচকি হেসে বলে

-”বাহ্ চোরের মন পুলিশ পুলিশ ।
আমি কি একবারো বলেছি যে তুমি আমার পিছু পিছু ঘুরো ? বা আমাকে পছন্দ করো ?
সব তো তুমিই বলে যাচ্ছ তবে কি সত্যি তোমার মনে আমার জন্য কিছু আছে ?”

সেহের মুখ বাকিয়ে বলে
-“ও প্লিজ এতটা ভুল ধারনা মনের মধ্যে কি করে পুষে রাখেন ?
আমার লাইফে এসব ছাড়াও আরো অন্য অনেক কিছু আছে ।”

আরহাম সেহেরের দিকে তাকিয়ে বলতে শুরু করে

-“তুমি জানতে চেয়ে ছিলেনা যে আমার জীবনে কেউ আছে কিনা ?
হ্যা আমার জীবনে কেউ আছে যে আমার মন প্রান আমার সবটা জুড়ে আছে যার জন্য হাজার বার মৃত্যুকে হেসে আলিঙ্গন করে নিবো ।
যার হাসির জন্য আমি নিজের সবটা উজাড় করে দিবো !
অনেক অনেক অনেক বেশি ভালোবাসি আমি আমার হুর কে ।”

সেহেরের যেন আরহামের প্রত্যেকটা কথা বুকে যেয়ে লাগলো কেমন জানো চিনচিন করে ব্যথা অনুভব করছে চোখ গুলো কেন জানো ভরে আসছে গলাটাও ধরে আসছে ।কিছু একটা হারানোর যন্ত্রনা সে অনুভব করছে ।
আচ্ছা সে তো আরহামকে পছন্দ করেনা তাহলে আরহামের মুখে অন্য কারো নাম শুনতে কেন এতটা কষ্ট হচ্ছে তার ?
কেন এমন মনে হচ্ছে যে তার খুব কাছের কিছু হারিয়ে যাচ্ছে !
তবে কি এর নাম জেলাসি ?
আরহামের মুখে অন্যকারো প্রসংশা শুনে তার জেলাস ফিল হচ্ছে ।আরহামের উপর কি নিজের অধিকার মানতে শুরু করে দিয়েছে কিন্তু এটা কি আদো উচিত ।এই অনুভূতিটা কি খানিকের ভালোলাগা নাকি ভালোবাসা ?

আরহাম সেহেরের দিকে তাকিয়ে দেখে সে বাহিরের দিকে চোখ দিয়ে আছে ।কিছুসময় আগের সেই হাসি উজ্জল চেহারাটা কালো মন মরা হয়ে আছে ।আরহাম বেশ এর কারন বুঝতে পারছে ।কিন্তু সেহেরেকে যে তার অনুভূতিগুলো বুঝতে হবে তাকে বুঝতে হবে !
আরহাম যে আর থাকতে পারছেনা তার হুর কে ছেড়ে ।নিজের এত কাছে থাকার পর ও তার উপর নিজের অধিকার খাটাতে পারছেনা সে এই যন্ত্রনা যে তাকে কুড়ে কুড়ে ভিতরে শেষ করে দিচ্ছে ।
বাড়ির সামনে গাড়ি থামতেই সেহের কিছু না বলে গাড়ি থেকে নেমে যেতে নেয় ।আরহাম তা দেখে সাথে সাথে পিছন থেকে তার হাত ধরে আটকায় তারপর দরজা লক করেই নিজের কাছে টেনে আনে ।সেহের শুধু অবাক চোখে আরহামকে দেখছে ।আরহাম তার ডান হাতে সেহেরের সামনের চুল ঠি ক করে দিতে দিতে বলে

-“নিজের খেয়াল রাখবে একদম বেখায়ালি করবেনা আর হ্যা বাড়ি থেকে একা কোথাও বের হবে না ।
বের হলে কাউকে সাথে নিয়ে বের হবে ।আর কালকের মত বোকামি আরকোন দিন করবেনা ।
বুঝেছো ?”

সেহেরের অনেক কিছু বলতে ইচ্ছে করছে কিন্তু কেন জানো কিছু বলতে পারলোনা ।এই সময়টাকে ধরে রাখতে ইচ্ছে করছে অনুভব করছে সে ।
আরহাম আলতো করে নিজের ঠোঁট জোড়া সেহেরের কপালে ছুয়েঁ দিচ্ছে ।সেহেরকে বেশ শক্ত করে জরিয়ে ধরে তার কপালে বেশ কিছু ভালোবাসার পরশ একেঁ দেয় !
বেশ কিছু সময় এভাবে অতিবাহীত হয় হঠাৎ সেহের কিছু ভেবে আরহাম থেকে দূরে সরে যায় ।আরহামকে কোন মতে বিদায় দিয়ে সে গাড়ি থেকে নেমে পড়ে ।

আরহাম মুচকি হেসে সিটে হেলান দিয়ে সেহেরের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে বলে

-“উফফ তোমার এই চাহনি ,একদম বুকে যেয়ে লাগে !
কবে যেন এই চাহনীতে খুন হই আমি ।
যতই পালাও না কেন সব জায়গায় আমাকেই খুঁজে পাবে তোমার ছায়া হয়ে সর্বদা তোমার পাশে থাকবো !
তোমাকে তো আমার হতেই হবে ।”

সেহের কিছু একটা ভাবতে ভাবতে বাড়িতে প্রবেশ করে ।হঠাৎই ৫ বছরের এক বাচ্চা মেয়ে ভিতর থেকে দৌড় দিয়ে এসে সেহেরকে “মিষ্টিমা “বলে জরিয়ে ধরে ।
সেহের অবাক হয়ে বাচ্চাটার দিকে তাকায় তাকিয়ে দেখে সেহেরের ভাইয়ের মেয়ে অনুশা ।মুহূর্তেই সেহেরের সব মন খারাপ দূর হয়ে যায় মুখে হাসি ফুটে উঠে ।সেহের তারাতারি করে অনুশাকে কোলে তুলে নিয়ে তার কপালে মুখে চুমুতে চুমুতে ভরিয়ে দেয় ।
সেহের অনুশা কে নিজের সাথে জরিয়ে ধরে তাকে জিগাসা করে

-“কেমন আছ মামুনি ?
তুমি জানো তোমার মিষ্টি মা তোমাকে কতওওওও মিস করেছে ?”

অনুশা সেহেরের দু গালে নিজের হাত স্পর্শ করে সেহেরের কপালে চুমু দিয়ে বলতে লাগে

-“ভালো ,তুমি কেমন আছ মিষ্টিমা ।
আই মিস ইউ টু মিষ্টিমা !”

-“আমিও ভালো আছি মামুনি !”

সেহের অনুশা কে কোলে নিয়ে তার সাথে খুনসুঁটি করতে ব্যস্থ হয়ে পড়ে ।হঠাৎ তার ভাবি মনিশার দিকে চোখ যেতেই অনুশা কে সেহেরের মায়ের কোলে দিয়ে ।তার ভাবী মনিশার কাছে যেয়ে তাকে জরিয়ে ধরে বলে

-“কেমন আছ ভাবী ?
ফাইনালি তুমি এই বাড়িতে আসলে !”

মনিশা সেহেরকে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে সেহেরের দিকে তাকিয়ে চেচিঁয়ে বলতে লাগে

-“সেহের তোমাকে কতবার বলেছি যে আমার জোর করে সম্পর্ক বানানো একদম পছন্দনা আমার তোমাকে ভালো লাগেনা !
তুমি কেন তা বুঝ না ?
তুমি আমার কাছে শুধু আমার মৃত স্বামীর বোন আর অনুশার ফুপি এর চেয়ে বেশি কিছুনা ।
ভালো হবে তুমি আমাকে এড়িয়ে চল আর আমি তোমাকে !
সত্যি বলতে তোমাকে দেখলে আমার পুরানো যখম তাজা হয়ে উঠে আমার তোমাকে সয্য হয়না ।”

বলেই তারাতারি করে সেখান থেকে চলে যায় সিড়ি বেয়ে নিজের রুমে যেয়ে দরজা বন্ধ করে দেয় ।
বাড়ির সবাই মনিশার এমন কাজে হা হয়ে আছে ।
সেহেরের চোখ থেকে টপটপ করে পানি ঝড়ছে ।এ তার কেমন জীবন যেখানে তার কাছের মানুষের তার প্রতি এত ঘৃনা এমন জীবন থাকার চেয়ে সেই দুর্ঘটনায় মরে যাওয়া তার ভালো ছিলো ।
৫ বছর আগে অতীতে এমন কি ঘটেছিল যার জন্য তার বর্তমানের কাছের মানুষ গুলোর চোখে তার জন্য এত ঘৃনা ?

পার্ট: ৯

সেদিন আরহামের বাড়ি থেকে ফিরার পর থেকে সেহের একদম চুপচাপ হয়ে গেছে ।এই দুদিন বেশ মন মরা হয়ে আছে তা সবার চোখেই কম বেশি পড়ছে কেউ এর কারন জিগাসা করলে সেহের প্রত্যেকবার এড়িয়ে যায় ।
সেদিন আরহাম কথাগুলো সেহেরকে উদ্দেশ্য করে বললেও সেহের তার কথাগুলো উল্টোভাবে নিয়ে নেয় ।বার বার আরহামের কথা গুলো মনে করে নিজে নিজে কষ্ট পাচ্ছিলো ।আরহামের সাথে তার দুদিনের পরিচয় হলেও তার কাছে মনে হচ্ছিলো যেন কত কালের চেনা যার সাথে গভীর কোন সম্পর্ক রয়েছে ।আর আরহামের সেদিনের কথাগুলো যেন তার বুকে ছুড়ি আঘাত করছিলো ।
পরবর্তীতে সেহের নিজেকে সামলিয়ে নিতে চেষ্টা করে এইভেবে যেহেতু আরহাম অন্যকাউকে পছন্দ করে তো তাদের মধ্যে সে নিজে তৃতীয় ব্যক্তি হয়ে আসবেনা ।আরহামের জীবনে থেকে দূরে থাকবে তাকে এড়িয়ে চলবে ।শুধু নিজের চোখের নেশায় খানিকের ‌অনুভূতির জন্য ভালোলাগার জন্য সারাজীবনের কষ্টের ভার সে নিতে পারবেনা ।এখন আরহামের প্রতি তার ভালোলাগা আছে এখন তার থেকে দূরে যেতে তেমন কষ্ট হবেনা যদি এই ভালোলাগা ভালোবাসার পর্যায় চলে যায় তবে সারাজীবন এই কষ্ট বয়ে বেড়াতে হবে !
সারাজীবনের কষ্টের চেয়ে খানিকের কষ্ট ভালো ।
এ দুদিনে সেহের নিজেকে বেশ শক্ত করে নিয়েছে সে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে সে আরহামকে পুরোপুরি ভাবে এড়িয়ে চলবে !

আজ খুব সকালেই সেহের ভার্সিটির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পরে কারন আজ সকালে কোচিং করে তারপর ক্লাসে যাবে ।
নিলাদ্রি আর আফিয়া ও সেহেরের সাথে বেরিয়ে পরে সেহের জানালার বাহিরে মন মরা হয়ে তাকিয়ে আছে মাত্রই শীতের আবছা ঠান্ডা পড়ছে ।প্রকৃতি নতুন রূপে অবতরন করে শীতকে বরন করে নিচ্ছে ।ব্যস্থ শহরটা এখনো পুরোপুরি জেগে উঠেনি ।
সেহের এই ব্যস্থ শহরের শান্ত পরিবেশ দেখতে ব্যস্থ ।গাড়ি নিজ গতিতে চলছে ।গাড়ি কোচিং সেন্টারের সামনে থামতেই সেহের নিলাদ্রি আফিয়া নেমে পড়ে ।কোচিং ক্লাস শেষ করে ভার্সিটিতে চলে যায় এখনো ক্লাস শুরু হতে অনেকটা সময় বাকি ।নিলাদ্রি আর আফিয়া সময় কাটানোর জন্য কেনটিনে যায় সেহেরকে যেতে জোর করলে সেহের জানায় তার কিছু বইয়ের প্রয়োজন তাই সে লাইব্রেরীতে যাবে ।নিলাদ্রি আর আফিয়া ও সেহেরকে আর জোর করে না এইভেবে যে হয়তো পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্থ থাকলে কিছুটা স্বাভাবীক হবে ।তারা কেনটিনে চলে যায় আর সেহের লাইব্রেরীতে ।সেহেরের লাইব্রেরীতে আসার একমাত্র কারন হলো সে আরহামের চোখাচোখি হতে চায় না ।

সেহের লাইব্রেরীতে বসে কানে হেডফোন গুজে গান শুনছে এই টাইমে তেমন কেউ নেই লাইব্রেরীতে পুরো খালি ।সেহের চোখ বন্ধ করে গান শুনছে শুনছে বললে হয়তো ভুল হবে গান অনুভব করছে ।গান শুনার মধ্যে আর অনুভব করার মধ্যে বেশ তফাত !
বেশ কিছুসময় এভাবে কাটার পর হঠাৎ গুলির বিকট শব্দে সেহের লাফ দিয়ে উঠে ।ভীত চোখে চারদিকে তাকায় তারাতারি করে কানের হেডফোন খুলে লাইব্রেরীর দরজার সামনে দাড়ায় ।দাড়িয়ে দেখে সবাই ছুটাছুটি করছে এর মধ্যে অনেকেই রক্তাক্ত পিছনে দুটা ছেলে দা নিয়ে তাদের পিছনে ছুটছে সেহের তা দেখে তারাতারি করে ভয়ে লাইব্রেরীর ভিতর চলে আসে ।পিছনের দিকে একটা বুকসেল্ফের পিছনে হাত পা গুটিয়ে বসে থাকে তার শরীর ভয়ংকর ভাবে কাপঁছে মুখ চেপে কান্না করছে ।
পাশেই জানালার দিকে তাকিয়ে দেখে কিছু ছেলেরা মাঠে মারামারি করছে তাদের হাতে ধারালো অস্র যাকে পাচ্ছে তাকেই তা দিয়ে আঘাত করছে ।সেহের তা দেখে তারাতারি করে জানালা লাগিয়ে দেয় উড়না দিয়ে মুখ চেপে কান্না করছে জীবনে কোন দিন সে এমন ভয়ংকর পরিস্থীতির সম্মখীন হয়নি আজ নিজের চোখের সামনে এসব দেখে সে ভয়ে কাপঁছে ।সেহের কান্না করতে করতে ফোন হাতে নিয়ে বার বার নিলাদ্রি কে ফোন করছে কিন্তু বার বারই ফোন ব্যস্থ বলছে ।

অন্যদিকে নিলাদ্রি আর আফিয়া ভার্সিটি থেকে ছুটে বের হতে হতে সেহেরকে ফোন দিচ্ছে ফোন ব্যস্থ বলছে ।গেটের সামনে দাড়িয়ে সেহেরের জন্য অপেক্ষা করছে সেহের কোথায় আছে ভিতরে না বাহিরে তা তারা জানেনা ।পুলিশ এসে তাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে তাদের জোর করে বাহিরে নিয়ে যেতে লাগে ।নিলাদ্রি কান্না করতে করতে পুলিশ অফিসারকে রিকোয়েস্ট করে

-“স্যার আমাদের বোন হয়তো ভিতরে আছে ,আমাদের এখান থাকতে দিন ।”

-“মেডাম আপনাদের এখানে থাকা রিস্ক আপনারা গেটের বাহিরে যান আমরা ভিতরে গিয়ে দেখছি আপনার বোন আছে কিনা !”

-“প্লিজ স্যার আমাদের এখানে থাকতে দিন “

-“সরি মেডাম আমরা এই অনুমতি দিতে পারবো না “

পুলিশ নিলাদ্রি আর আফিয়াকে বাহিরে পাঠিয়ে দেয় ।নিলাদ্রি আফিয়া বাড়িতে ফোন দিয়ে সবটা জানায় ।
গেটের সামনে দাড়িয়ে ভিতরের দিকে তাকিয়ে কান্না করছে ।পরিস্থীতি আস্তে আস্তে আরো খারাপ হচ্ছে পুলিশও কোন ভাবে পরিস্থিতী কন্ট্রোলে আনতে পারছেনা ।
আরহাম ভার্সিটির কমিটির সদস্য হওয়ায় এমন পরিস্থীতির কথা শুনে ভার্সিটির তে আসে দু দলের মিটমাট করে দেওয়ার জন্য ।ভার্সিটির ভিতরে প্রবেশ করার সময় গেটের সামনে নিলাদ্রি আফিয়াকে দেখে আরহাম বেশ চমকিয়ে যায় ।তাদের কাছে যেতেই আফিয়া আরহামকে দেখে কান্না করতে করতে বলে

-“ভাইয়া সেহের হয়তো ভিতরে আটকিয়ে আছে ওকে বাচাঁন ভাইয়া ।”

আরহামের মাথায় যেন বাজ পরে সে এক সেকেন্ডও আর দেরী না করে ভিতরে ছুটে যায় পুলিশ অনেক বার তাকে আটকানোর চেষ্টা করে কিন্তু আরহামকে আটকাতে পারেনা সে তাদের ঝারি দিয়ে ভিতরে চলে যায় ।

আরহাম সব জায়গায় সেহের কে খুজঁছে বার বার সেহেরের ফোনে ফোন দিচ্ছে কিন্তু রিসিভ করছে না ।বার বার ফোন করে যাচ্ছে আর তার সাথে আরহামের ভয় ও বাড়ছে ।পাগল পাগল হয়ে পুরো ভার্সিটি খুঁজছে ।এক ভবন থেকে অন্য ভবনে যাচ্ছে পাগলের মন ছুটাছুটা করছে ।
অন্যদিকে সেহের লাইব্রেরীতে সেল্ফের পিছনে ফোন সাইলেন্ট করে বসে আছে ।লাইব্রেরীর সামনেই কিছু ছেলে অস্র নিয়ে ঘুরঘুর করছে যাকে পাচ্ছে তাকেই আঘাত করছে ।তাই সেহের চুপ করে বসে আছে ফোন রিসিভ করে কথা বলতে পারছেনা শব্দ পেলেই তারা ধরে ফেলবে ।
সেহের উড়না দিয়ে মুখ চেপে কান্না করছে ।
লোকগুলো কিছুটা সামনে যেতেই সেহের সাথে সাথে নিজের ফোন রিসিভ করে ।‌অপর পাশ থেকে কারো অস্থীর চিন্তাজরীত কন্ঠ ভেসে আসে

-“সেহের তুমি ঠি-ক আছো তো !
তোমার কোন ক্ষতি হয়নি তো
তুমি এখন কোথায় আছো ?”

সেহের চোখবন্ধ স্বস্থির নিশ্বাস নেয় তার আর বুঝতে বাকি রইলো না এটা কে ।
সে কান্না হাউমাউ করে কান্না করতে করতে বলে

-“আ..রহাম আমাকে বাচাঁন ওদের হাতে ধারালো অস্র চারদিক রক্তে ছড়ানো আমার খুব ভয় করছে আমাকে মেরে ফেলবে আমাকে বাচাঁন ।”

বলেই সেহের আবার কান্না করতে লাগে আরহাম নিজেকে শান্ত করে বলল

-“শান্ত হও তোমার কিছু হবেনা আমি আছি তো ,তুমি কোথায় আছ আমাকে বলো “

-“আ…আমি হিসাববিজ্ঞান বিভাগের লাইব্রেরীতে আছি প্লিজ আমাকে এখান থেকে বের করেন ।
আমার খুব ভ..ভয় ক…”

সেহের আর কিছু বলার সুযোগ পায়না তার আগেই কেউ তার ফোন নিয়ে নেয় ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনে তাকিয়ে দেখে ৪?টা ছেলে মুখে হিংস্রতার আর ভোগ করার লালসার হাসি সেহের উঠে যেই দৌড় দিতে নিবে তার আগেই পিছন থেকে তার পা টেনে ধরে সেই হিংস্র জানোয়ার গুলো সেহের নিজের শরীরের সব শক্তি দিয়ে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে জোরে জোরে চিৎকার করছে সাহায্যের জন্য কিন্তু কারো কানে পৌছাচ্ছেনা ।সে গলা কাটা মুরগীর মত ছটফট করছে আর চিৎকার করে কান্না করছে সে যতটা চিৎকার করছে ঐ নরপশুদের হাসির শব্দ ততটা বাড়ছে ।একজন তার দু পা চেপে ধরে অন্যজন ফোন হাতে নিয়ে তা ভিডিও করছে আর দুজন তার দিকে এগিয়ে আসছে সেহের কান্না করতে করতে আকুতি মিনুতি করছে তাকে ছেড়ে দিতে কিন্তু কথাগুলো যেন তারা কানে নিচ্ছেনা সেহেরের এই ছটফট করাটা তারা উপভোগ করছে সেহের একসময় ধরেই নিয়েছে যে আজ তার হারাতে হবে তার সবচেয়ে বড় সম্পদ হারাতে হবে ।
নিজের চোখ বন্ধ করে শুধু উপরওয়ালার কাছে সাহায্য চাইছে ।এজন সেহেরের শরীর থেকে উড়না সজোরে টান দিয়ে দূরে ফেলে দেয় ।জামার সাথে উড়না পিন দিয়ে আটকিয়ে থাকার কারনে জামার কাধের কিছুটা অংশ ছিড়ে যায় ।

যেই নরপশু জানোয়ারটা সেহেরের উপর ঝাপিয়ে পড়বে তার আগেই কেউ লাথ্থি দিয়ে তাকে দূরে ফেলে দেয় ।সেহের তাকিয়ে দেখে আরহাম ভয়ংকর ভাবে রেগে আছে হাতে রড ।ছেলেগুলো সেহেরকে ছেড়ে আরহামের দিকে এগিয়ে আসতেই আরহাম এলোপাথাড়ি রড় দিয়ে বারি দিতে শুরু করে যতক্ষন পর্যন্ত না নিজের রাগ মিটছে ততক্ষন বাড়ি দিতে লাগে জোরে জোরে মাথায় রড় দিয়ে আঘাত করছে লাইব্রেরীর ফ্লোর রক্তে ভেসে যাচ্ছে সেহের আর এই রক্ত সয্য করতে পারছেনা সে দৌড় দিয়ে আরহামের কাছে যেয়ে তাকে আটকানোর চেষ্টা করছে ।কান্না করতে করতে বলে

-“আরহাম এই জানোয়ার গুলোকে ছেড়ে দিন আমাদের এখন এখান থেকে বের হতে হবে ।”

আরহাম রাগি কন্ঠে গর্জন করে উঠে চেচিয়েঁ বলতে লাগে

-“ধর্ষকের শাস্তি একটাই মৃত্যু ।
এদের বাচাঁর কোন অধিকার নেই এই সমাজে ধর্ষকের বেচেঁ থাকার কোন অধিকার নেই আমার আসতে আর একটু দেরী হলে এই কু** বাচ্চাগুলো তোমার সাথে কি করতে পারতো তোমার ধারনা আছে ?
না জানি কত মেয়ের জীবন নষ্ট করেছে এই জানোয়ারগুলো এদের মেরে ফেললেই সঠিক বিচার হবে ।”

বলেই আবার আরহাম মারতে শুরু করে ।সেহের ও আর আটকায় না ।ছেলে গুলোকে আধমরা করে আরহাম সেহেরের গায়ে উড়না জরিয়ে দিয়ে সেহেরের হাত ধরে লাইব্রেরী থেকে বের হয়ে যায় ।
ভবন থেকে বের হয়ে গেটের সামন যেতেই দেখে সেখানে দুপক্ষের মাঝে গোলাগোলি হচ্ছে এই অবস্থায় সেখান দিয়ে সেহেরকে নিয়ে বের হওয়া খুব বেশি রিস্ক ।তাই সেহেরকে নিয়ে পিছনের গেইট দিয়ে বের হয়ে যায়।গাড়ি নিয়ে সেখানে আর দেরী না করে রওনা দেয় ।

সেহের চোখ বন্ধ করে আছে আর বার বার ভাবছে আজ যদি আরহাম সঠিক সময় না আসতো তো কি হতে পারতো ।হঠাৎ ঐ জানোয়ার গুলোর সেই লালসার হাসি চোখের সামনে ভাসতেই সেহের ভয়ে চোখ খুলে বড় বড় নিশ্বাস নিতে থাকে ।আরহাম সেহেরের এই অস্থিরতা লক্ষ করে তার দিকে পানির বোতল এগিয়ে দিয়ে বলে

-“তুমি ঠি-ক আছো ?”

সেহের পানির বোতলটা হাতে নিয়ে ভয়ে হ্যা বোধক মাথা নাড়ায় ।আরহাম আবার গাড়ি ড্রাইভ করায় মন দেয় ।সেহের পানি শেষ করে সামনের দিকে তাকাতেই দেখে গাড়ি ‌তার বাড়ির রাস্থায় না অন্য রাস্তায় যাচ্ছে ।সেহের আশ্চর্য হয়ে আরহামের দিকে তাকিয়ে বলে

-“এটা তো আমার বাড়ির রাস্তা না !”

আরহাম সামনের দিকে তাকিয়ে উত্তর দেয়

-“হুম জানি ,আমরা বাড়ি যাচ্ছিনা ।“

-“তো আমরা কোথায় যাচ্ছি ?”

-“আমরা শহরের বাহিরে আমাদের ফার্ম হাউজে যাচ্ছি !”

-“কিন্তু কেন ?”

-“কারন শহরে ঝামেলা আরো বেড়ে গেছে এই ঝামেলা এখন শুধু ভার্সিটিতে না পুরো শহর জুড়ে চলছে বাহিরে সন্ত্রাসীরা হামলা করেছে তাই শহরে ডুকার মত আর কোন রাস্তা নেই বাড়িতে যাওয়ার সব রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ।
তাই আজ রাতটা ফার্মহাউজে কাটাতে হবে !”

-“ বাড়িতে সবাই চিন্তা করবে ।”

-“চিন্তা করোনা তোমার বাবার সাথে আমার কথা হয়েছে তিনিই বলেছেন কালকের আগে যেন শহরে প্রবেশ না করি “

সেহের আর কোন কথা বাড়ায় না চুপচাপ বাহিরের দিকে তাকিয়ে আছে দুপুর পেরিয়ে বিকাল হচ্ছে সূর্যটা আস্তে আস্তে পশ্চিমা আকাশে হেলে পড়ছে ।
কথায় আছেনা যে যেই জিনিস থেকে বেশি পালায় তাই তার পিছু ছাড়েনা ।সেহেরের সাথেও তাই হচ্ছে সে আরহাম থেকে যতদূরে যাওয়ার চেষ্টা করছে নিয়তী তাকে ততবার আরহামের সামনে এনে দাড়া করছে ।আরহামের মায়া পড়ে গেছে সে সেই মায়া থেকে সে বের হতে চেষ্টা করছে কিন্তু নিয়তী সেই আরহামের কাছে তাকে নিয়ে এসেছে ।আজ সে কি করে আরহাম কে উপেক্ষা করবে ?
কি ঘটবে সামনে ?

চলবে……❤️

সবাই সবার মতামত জানাবেন😊😊😊

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here