বিষাক্ত বাঁধন পর্ব -০৮+৯

#বিষাক্ত_বাঁধন
#পর্ব_৮
#অনামিকা_জাহান_জাফরিন ।

আরিয়ান আর তুসি কে নিচে ডেকে পাঠালো রিমা।দুজনে নিচে এসে অবাক হয়ে গেলো তাসিন, রাজ একজন একজন হুজুর টাইপের লোক নিচে সোফায় বসে আছে।

ওরা নিচে নেমে আসলে রিমা বলে উঠলো,,নিন পাত্র আর কনে চলে আসল আপনারা আপনাদের কাজ শুরু করুন।

ভাবিমা কি করছ তুমি? সব কিছু জানা ছাড়া তুমি এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারনা।

আমি যা নিয়েছি ভেবে চিন্তে নিয়েছি।

তুমি যা ভাবছ তা নয় ভাবি।

হ্যাঁ, তো তুমি বল আমাকে কেমন।

উফফফ্ ভাবিমা ,,,

তোমাকে আমি জিজ্ঞেস করছি বল,,,

ইয়ে মানে ভাবি মা ও ,,,ও ,, ও হচ্ছে।

কি, হল বলতে পারছোনা তো পারবে কি করে আমি যা ভাবছি সেটাই ।নাহলে তুমি কেন বলছনা। তুমি আমার সম্পর্কে দেবর ঠিকি তবে আমি তোমাকে নিজের সন্তান এর চাইতে কোনোদিন কম চোখে দেখিনি।আর তুমি ভাবলে কি করে আমি তোমার এই অন্যায় কাজে সমর্থন করবো ।আমি তোমাকে এই শিক্ষা দিইনি।

আর কিছু শুনতে চায় না আমি। আজ এখনই হবে বিয়ে।

আরিয়ান আর কিছুই বলতে পারলনা ও সত্যিটা কিছুতেই বলতে পারবেনা।তাহলে আরো বেশি রাগ করবে ।সবার চোখের অগোচরে তুসির হাত চেপে ধরল ।তুসি চমকে উঠে আরিয়ান এর দিকে তাকাতে চাইলো কিন্তু আরিয়ান বাধা দিয়ে বলল,,
আমার দিকে তাকাতে হবে না।যা বলছি মন দিয়ে শুন, ভাবিকে কোনো কিছু বলবেনা।
সব বলে দেব আমি আপনি কত খারাপ।

বুঝেছি তুমি তাড়াতাড়ি যেতে চাওনা।

হ্যাঁ,,হ্যাঁ চাই তাড়াতাড়ি যেতে চাই আমি বাড়িতে।

তাহলে চুপ চাপ যা বলা হচ্ছে কর।কোনো ঝামেলা করার চেষ্টা করবেনা ।

আমি আপনাকে বিয়ে করবনা।

তাহলে আর কি করার তুমি কখন তোমার বাড়িতে আদও কি যেতে পারবে তার নিশ্চয়তা দিতে পারছিনা।

আপনি খুব খারাপ । একদিন আপনার সাথে অনেক খারাপ হবে।

সেটা অনেক আগে থেকেই হয়ে আসছে।যা বলেছি তাই কর ।আমার ভাবিমা যদি কিছু জানতে পারে তাহলে বাড়িতে যাওয়ার কথা ভুলে যাও।

দেখতে দেখতে একে একে ধর্মীয় প্রক্রিয়াই বিয়ে সম্পন্ন হলো।সবাই চলে গেছে।

তুসি থম মেরে এখনো বসে আছে ওই জায়গায়। ও ভাবতেও পারছেনা জীবনের এত বড় একটা সিদ্ধান্ত নিজের বাবা মাকে ছাড়া নিল।রিমা নিজের হাতে সবার জন্য রান্না করে টেবিলে সাজিয়ে রেখে সবাইকে ডাকছে।আরিয়ান গিয়ে বসল খেতে। তুসি থম মেরে বসে আছে দেখে রিমা ওর কাছে গিয়ে বসল,,বলল মা বাবা মানবেনা বিয়ে এই নিয়ে চিন্তা করছ? চিন্তা করোনা আমি বুঝিয়ে বলব।

আব,,না কিছু না।

আস খাবে।

তুসি কিছু না বলে টেবিলে গিয়ে বসে খাওয়া শুরু করল অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকায় প্রত্যেক দিনের তুলনায় একটু বেশি খেলো। আরিয়ান এর মনে একটু খারাপ লাগছে।মেয়েটার ক্ষিদে পেয়েছিল খাবার এর জন্য ডাকব তার আগে তো ভাবিমা চলে এলো।

রিমা সবকিছু লক্ষ করছে।

আরিয়ান হঠাৎ বলে ওঠে।ভাবিমা আমাদের প্রিন্স কোথায় দেখতে পারছিনা যে?

গাড়িতেই ঘুমিয়ে গিয়েছিল এনে শুইয়ে দিয়েছি।

সেকি ও খাবে না।

না ঘুমানোর আগে চকলেট ,চিপস্ এগুলো খেয়েছিল পেট ভরা এখন ডাকলেও আর খাবেনা।

আরিয়ান শুনো ,
,
বলেন।

একটু বাইরে যেতে পারবে একটা দরকারি জিনিস আনতে হবে।

হ্যাঁ যাবো। বল কি আনতে হবে।
ও আরিয়ান এর সামনে গিয়ে তুসি যাতে শুনতে না পায় সেভাবে আওয়াজ আস্তে করে জিজ্ঞেস করল,,নতুন বউ এর জন্য কি উপহার কিনেছ?

ক,,কি,,কিছু না

জানতাম আমি ,যাও ওর জন্য গোল্ড অথবা ডায়মন্ড এর কিছু কিনে নিয়ে এসো।

আচ্ছা ভাবিমা।
নতুন বউকে যে উপহার দিতে হয় সেটাও জানে না।
কি করে জানব আমি কি উপহার নিয়ে ঘুরি নাকি?আর কে জানত তুমি এসেই বিয়ের পিড়িতে বসিয়ে দেবে আমাকে।

হয়েছে যাও অনেক রাত হয়ে যাচ্ছে।

আচ্ছা যাচ্ছি ।

🌸🌸🌸

আশরাফ খান ঘরে প্রবেশ করতে করতে ডাকছে স্ত্রীকে ডাকছে।

রুকসানা,,রুকসানা কোথায় তুমি?
এই তো । কোনো খবর পেয়েছো?

হুম তুসি আজ ফোন করেছিলো

কি বলল ?কোথায় আছে ও? কখন আসবে?

শান্ত হও তুমি। বলছি।তুসি ফোন করেছিল কিন্তু বেশি কিছু বলতে পারেনি। ও ভালো আছে। কিডনাপাররা ওকে কোনো ক্ষতি করছে না। শুধু আটকে রাখছে এটাই । তবে খুব তাড়াতাড়ি ছেড়ে দেবে।

সত্যি বলছো?
কিন্তু তারা এমন কেন করেছে?কি চায় আমাাদের কাছে?

সেটা তো জানতে পারব। এখন তুমি খাবার খেয়ে ঔষধ খাবে আমার সামনে।

আচ্ছা ।

ছকিনা খাবার রেডি করো আমরা আসছি খেতে।

জি ভাইজান করতাছি।

🌸🌸🌸

তুসিকে সুন্দর করে সাজিয়ে বিছানার মাঝখানে বসিয়ে রেখে গেছে রিমা।সাথে আরো অনেক কথা বলে গেছে। তুসি সেগুলে মনে করার চেষ্টা করছে।রিমা বলেছে,,, শোন বিয়ে হচ্ছে একটা পবিত্র বন্ধন।নিজের স্বামীর খেয়াল রাখা, ওর কথা শুনে চলা,সম্মান করা ভালোবাসা,,সংসার সামলানো এগুশো একজন মেয়ের দায়িত্ব। এগুশো ভালোভাবে পালন করতে হবে। জানোতো আমি এইসবে বিশ্বাসী।

ইসলামে স্বামীকে সন্তুষ্ট করার কথা বলা হয়েছে।
আমি চাই তুমি আরিয়ান এর ভালোভাবে খেয়াল রাখো।ওর যত্ন নাও। আমি আরিয়ান কে সুখে দেখতে চাই।জীবনে অনেক কিছু হারিয়েছে ও ।অনেক কিছু। ও খুব একা জীবনে।এই যে গম্ভীর হাসে না ।এমন ও না ওর ভেতরে অন্য একটা আরিয়ান লুকিয়ে আছে।যেটা ও অনেক আগে নিজের ভেতরে চাপা দিয়ে রেখেছে।

কোন ক্লাসে পড় তুমি?

জি,,কলেজে ভর্তি হয়েছি।

কত বছর বয়স?

সতের শুরু হয়েছে।

কি বল? এত কম বয়স? আচ্ছা যা হওয়ার হয়ে গেছে এখন এইসব বলে লাভ নেই। মা বাবা কে নিয়ে চিন্তা করোনা আমি সামলে নেব ওনাদের।
এ ছাড়া ও তুসিকে আরো কিছু কথা বলে রামা চলে যায়।

তুসি বসে বসে অপেক্ষা করছে কখন আরিয়ান অসবে।রিমা বার বার করে বলে দিয়েছে আরিয়ান আসার আগে ঘুমানো যাবে না। ওকে সালাম করতে হবে।

আরও কিছুক্ষণ পরে দরজা খোলার শব্দ হলো। তাকিয়ে দেখলো আরিয়ান। রিমার কথামতো তুসি নেমে আরিয়ান কে সালাম করল।আরিয়ান হঠাৎ এমন হওয়াতে চমকে গেলো। বাধা দেওয়ার সুযোগই পেলোনা।ও বলল,,,,কি করছ?

ভাবি বলেছে এটা করতে হয়।

বাদ দাও এসব।এই বিয়েটাকে মানার চেষ্টা কোনো মানে নেই।ভাবির মন রক্ষা করার জন্য করেছি। এটা যাস্ট একটা এক্সিডেন্ট।বিয়ে হয়েছে সেটাও ভুলে যাও।
তুসি বিছানার দিকে এগিয়ে যেতে আরিয়ান আবার বলল, দাড়াও।এই নাও।

কি আছে এটাতে?
খুলে দেখো।
ওর কথামতো তুসি বাক্সটা খুলল।দেখতে পেলো ওতে ডায়মন্ড এর আংটি ।

অনেক সুন্দর। তুসি মনে মনে ভাবছে বিয়ে মানে না আবার বউয়ের জন্য বাসর রাতের উপহার নিয়ে এসেছে।

ঘুমিয়ে পড়।তুসি কিছু না ভেবে বিছানায় শুয়ে পড়ল। আরিয়ান বেলকনিতে গিয়ে ভাবছে আজকে অপ্রত্যাশিত ভাবে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো,,,
#বিষাক্ত_বাঁধন
# পর্ব _৯
#অনামিকা_জাহান_জাফরিন ।

আরিয়ান বেলকনিতে দাঁড়িয়ে ভাবছে আজকে ঘটে যাওয়া অপ্রত্যাশিত ঘটনাগুলো।
মেয়েটিকে ব্যবহার করে আমি আমার কাজ হাসিল করতে চেয়েছিলাম কিন্তু এতসব হয়ে যাবে ভাবতেই পারিনি।ভাবিমা এসে সব কিছু গোলমাল করে দিল। যত যাই হয়ে যাক না কেন আমি আশরাফ খান কে কখনো ছাড়বোনা। ওর অহংকার আমি মাটিতে নামিয়ে দেবো।অতীতে যা কিছু করেছ তার জন্য অবশ্যই পস্তাতে হবে।আরিয়ান এর মনে পড় গেলো সেই বিষাক্ত অতীতের কথা।,,,,
২০ বছর আগে দুজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল। একজন আশরাফ খান আর একজন আতিফ চৌধুরি। দুইজনের বন্ধুত্ব ছিল অনেক পুরনো। এক জন অন্য জনের জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত ছিল।

স্কুল থেকে আরিয়ান এসে দেখতে পেল তার আশরাফ আংকেল এসেছে দৌড়ে গিয়ে তার কাছে বসে জিজ্ঞেস করল আংকেল আমার চকলেট এনেছো?
আশরাফ মুচকি হেসে বলল হ্যাঁ বাবা এনেছি।আমি কি এই কথা কখনো ভুলতে পারি?
ওহহহ!ইউ আর গ্রেট আংকেল। তুমি অনেক ভালো।আচ্ছা মামনি আসেনি?

হ্যাঁ এসেছে যাও উপরে ।
হুররে মামনি এসেছে।বলেই দৌড়ে সিঁড়ি পার হয়ে উপরে যাচ্ছে আরিয়ান।

পেছন থেকে আশরাফ খান চিৎকার দিয়ে বলছে,,আস্তে আরিয়ান পড়ে যাবে বাবা।ছেলেটা এত ছোটাছুটি করে উফফফফ্

আতিফ এসে আশরাফ এর পাশে বসতে বসতে বলছে,,
তারপর কি খবর বন্ধু? ব্যাবসাটা ভালো ভাবে চলছে তো?

সেটা অর হলো কই? শুধু লস আর লস।

আরে চিন্তা করোনা প্রথম প্রথম এমন একটু হয় লাভ পাবে ইনশা আল্লাহ।

তাই যেনো হয়। তোমার তো ভালো চলছে তাই না?

হ্যাঁ। সবই আল্লাহর দান।

আমি তোমাকে একটা কথা বলবো ভাবছি।

বল ।
বলছি কি তাহির(আতিফ এর ছোট ভাই।ওর কোম্পানির ম্যানেজার। ) কে আমি তোমার বিরোধী কোম্পানির লোকের সাথে কথা বলতে দেখেছি।ওকে আমার সন্দেহ লাগে ।ওর উপর এতটাও ভরসা করোনা।যদিও এই কথাগুলো অনেক সময়ই বলেছি আমি তাও তুমি বিশ্বাস করনা।

আরে তুমি অযথাই ভাবছো।হয়তো ঝামেলা নিয়ে কথা বলেছে
তবুও সাবধান থাকবে।

আশরাফ তুই জানিস আমি ওকে নিজের আপন ভাই মনে করি তাহির ও আমাকে তাই মনে করে।ভাইয়ে ভাইয়ে সন্দেহ করা মানে ঝামেলা সৃষ্টি যা আমি একদমই পছন্দ করি না।

আমি তোকে সাবধান থাকার জন্য বলছি।এত টাকার ব্যপার । সতর্ক হওয়া দরকার।

আরে ছাড় তো ও আমার ভাই চিনি তো আমি এমন কিছুই করবেনা ও।

আমি আর কি বলব।যাই এখন রুকসানা এসো।

আরে এসো মানে কি ? থাক রাতে ডিনার করে যাবি।

আরে না।

না মানে । কোন কথা শুনতে চায় না আমি খেয়ে যাবি রাতে।

আচ্ছা আমি আর কি বলব।

রুমে রুকসানা আর রাইমা কথা বলছে।আরিয়ান গিয়ে রুকসানা কোলে উঠে বসল।আরিয়ান কে দেখে রুকসানা খুশি হয়ে বলল,আরে আমার সোনামনিটা কখন এসেছে ? আরিয়ান জবাবে বলে ,একটু আগে মামনি।তুমি আজকে থাকবে কিন্তু।
আচ্ছা রাতে যাবো ঠাক আছে?
হ্যাঁ ঠিক আছে।খুশি হয়ে বলল আরিয়ান।

ওদের কথার মাঝে রাইমা বলে ,হয়েছে এখন যাও ড্রেস চেঞ্জ করো যাও।

যাচ্ছি আম্মু। বলে আরিয়ান নিজের ঘরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হলো ।ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে রুকসানা আর বলছে ভাবি আল্লাহ্ আমার ওপর কেন এত নারাজ বলতে পারবেন? কি না করেছি যে যেই পদ্ধতি বলেছে তাই করেছি তবুও আল্লাহ্ আমার কোলে একটা বাচ্চা কেন দিচ্ছে না বলতে বলতে চোখের জল গড়িয়ে পড়লো ওনার।

রাইমা ওকে সান্ত্বনা দিচ্ছে,, ভাবি সবই আল্লাহর ইচ্ছা এখানে কারো কিছু করার নেই ।ওনার কাছে চান?

এত বছর ধরেইতো চাচ্ছি।

চাইতেই থাকেন আল্লাহ্ অবশ্যই একদিন না একদিন দেবে।

ইনশা -আল্লাহ্ সেই একদিনের অপেক্ষায় আছি আমি।সেটা হবে আমার জীবনের সবচেয় ভাল আর সুখের একটা দিন।

🌸🌸🌸

রাতে ডিনার করে আশরাফ খান আর রুকসানা নিজেদের বাসায় ফিরে এলো।

আতিফ উপন্যাস পড়ছেন ।রাইমা ছেলে ঘুমিয়েছে কিনা দেখতে গিয়েছেন। আরিয়ান কে ঠিকভাবে শুইয়ে দিয়ে গায়ে চাদর দিয়ে কপালে চুমু খেয়ে ফিরে এসেছিন।

রুমে ঢুকলে আতিফ বলেন,ঘুমিয়েছে ছেলে?

হ্যাঁ। আচ্ছা আশরাফ ভাই কি বলেছেন?

কই কিছু না।

আমি কিছুটা শুনেছি আতিফ।

যত যাই হোক আমাদের অবশ্যই নজর রাখা উচিত।এতে তো কারো ক্ষতি নেই।

আহহা তুমি কি শুরু করলে? ও আমার ভাই। আমার সব কথা শুনে।

তোমার।যা ইচ্ছে করো। গুড নাইট।

তুমি অনেক বেশি চিন্তা করছ।এখন বল আমার মামুনি ঘুমিয়েছে?

কি করে জানো তুমি ছেলে না মেয়ে?

আমি জানি আমার একটা মিষ্টি মামুনি আসবে ঠিক তোমার মতো ।

হয়েছে আর ঢং করতে হবে না। ঘুমাও।

🌸🌸🌸

পরের দিন অফিসে আতিফ এর টাকার হিসাব মিলছেনা।তাহির কে ডেকে পাঠিয়েছেন উনি। তাহির এসে বসতে বসতে বলছে ভাইজান আমাকে ডেকেছেন।

হ্যাঁ ডেকেছি। আমাদের টাকার কিছু হিসাব মিলছেনা ।

ম,,মা,,মানে,, কি হয়েছে আমি জানি নাতো।

অনেক টাকার গড়বড়, কি করে হয়েছে? তুমি ভালোভাবে হিসাব করে রাখোনি।

আমি ভালোভাবে হিসাব করেছি ভাইজান । কি করে এমন হলো তো বুঝতে পারছি না।

মানে কি বলছো তাহির তোমার আরো সতর্ক হওয়া উচিত ছিল। এতগুলো টাকার হিসাব মিলছে না । আচ্ছা যাও রফিক সাহেবের কাছে কম্পিউটারে সব চেক কর আসো।

আচ্ছা ভাইজান।

এইভাবে ছয় মাস ধরে আতিফ এর বিজনেস এ নানা ভাবে শুধু লস হচ্ছে। টাকার মিল পাচ্ছে না আতিফ।এ নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তায় থাকে ও রাইমার আট মাস চলছে আলতা করে জানতে পারল মেয়ে হবে। রাইমার সাথেও কথা বলে না আতিফ। একটা সময় ওর সাথে খারাপ আচরণ করতে শুরু করল। রাইমা প্রায় কাদঁতো আরিয়ান এর অগোচরে।তবে আরিয়ান লুকিয়ে লুকিয়ে সব দেখতো।সাত বছর বয়স ছিল ওর বেশি কিছু না বুঝলেও এইটা বুঝতে পারত যে ওর বাবা ওর মায়ের সাথে খারাপ আচরণ করে তার কারন ওদের ব্যাবসায় লস হওয়া ।
ও খুব কাঁদতো।

একদিন আতিফ চিন্তিত হয়ে অফিসে বসে আছে। এভন সময়ে তাহির হন্তদন্ত হয়ে ওর কাছে এসে বলল,ভাইজান একটা কথা ,,

বল।

আমাদের যে ডিলটা হয়েছিল সেটা ক্যানসেল হয়ে গেছে ।

মানে কি? আমরা অলরেডি সেটার কাজ শুরু করেছি।

কিন্তু ওনি ক্যানসেল করেছেন।ভাই আরেকটা কথা, আমি ওনাকে আশরাফ ভাইজান এর ম্যানেজার এর সাথে বহুবার কথা বলতে দেখেছি হয়ত,,,

থামো তাহির তুমি কি বলতে চাইছ আমি বুঝতে পেরেছি। কথা বাড়াতে চাচ্ছি না।যাও প্লিজ আমাকে একা থাকতে দাও।

তাহির চলে গেলো।

আতিফ এর ব্যাবসা দিন দিন আরো খারাপের পথে যাচ্ছে। ব্যাংক থেকে যে ঋন নিয়েছে তার পরিশোধের সময় হয়ে গেছে কিন্তু দিতে পারছেনা কি করবে সব জায়গায় শুধু লস আর লস।

পরের দিন আতিফ এর কাছে তাহির এসে জানালো ভাই আপনি তো আমার কথা বিশ্বাস করেন না নিজের কানেই শুনে নিন।

কি ?

চালু করছি আমি ।মনোযোগ দিয়ে শুনুন।

তাহির একটা রেকর্ড করা ভিডিও চালিয়েছে যেটাতে দেখা যাচ্ছে আশরাফ একটা লোকের সাথে আছে সে আর কেউ না যে আতিফ দের ডিল ক্যানসেল করেছে সেই লোক।

ওদের কথোপকথোপে শুনা যাচ্ছে আশরাফ বলছে,,,,

চলবে,,,
ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা করবেন।
চলবে,,,

ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা করবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here