ভালোবাসার পরিনতি পর্ব ১২+১৩

~~~১২+১৩~~~

#ভালোবাসার_পরিনতি
#লেখা_ইভানা
#পার্ট_১২

আজ আমার দ্বিতীয় বিয়ে হলো। বাসর ঘরে দুটো বাচ্চা নিয়ে বসে আছি। কোনোদিন এভাবে থাকতে হবে ভাবি নি। নতুন করে আবার বিশ্বাস করতে শুরু করবো, নতুন সংসারে লোকজনকে মানিয়ে নিয়ে কাজ করা। সবাই আমার চেনা মানুষ হলেও আমি তাদেরর বাড়ির বৌ। আমার অনেক দায়িত্ব আছে, সব কিছু সামলে জব করা কঠিন হবে তাও আমাকে পারতে হবে। পরনির্ভরশীল হয়ে জীবনে একবার ঠকেছি তাই এবার পরনির্ভরশীল হয়ে থাকতে চাই না। আমার সন্তানদের বুঝাতে হবে জীবনে সব কঠিন সময় তাদের মা হেরে যায় নি সাফল্য হয়ে দেখিয়েছে।
-এই যে ম্যাডাম
-ওহ্ হ্যাঁ, তুমি এসেছে আমি খেয়াল করি নি
-ভাবনার জগতে বাড়ি বানিয়ে রাখলে আমার বাড়িতে কে আছে না আছে তা দেখবে কি ভাবে????
-তেড়া বেঁকা কথা সব সময় থাকবেই।
-হুম তা একটু আছে
আমি তিহানকে সালাম করলাম। তিহান আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো,
-আমি কখনো তোমার বিশ্বাসের অমর্যাদা করবো না। তোমাকে সুখী রাখার জন্য যা করতে হবে সব করবো কিন্তু কোনোদিন আমাকে ছেড়ে চলে যেও না।

তিহানের স্পর্শ অস্তিত্ব লাগলো কেনো জানি তাকে মন থেকে মেনে নিতে পারলাম না তাই ওকে ছাড়িয়ে বললাম,
-শুধু আমার সন্তানদের বাবা ভালোবাসা দিলে খুশি হবো।
-আমার ভালোবাসার অভিযোগ করার সুযোগ করতে পারবে না কথা দিচ্ছি কিন্তু আমার একটা রিকুয়েষ্ট আছে রাখবে?
-চেষ্টা করবো রাখতে
-ফুলি, পুচকে আমার পরিচয় বড় হবে। কোনো খারাপ মানুষ ওদের বাবা ছিলো সে পরিচয়ে ওরা থাকবে না।

তিহানের কথা শুনে কেঁদে দিলাম। সে না চাইলে রোহানের সন্তান রোহানের পরিচয় থাকতো সারাজীবন ওরা খারাপ মানুষের পরিচয় নিয়ে থাকতো। তিহান সত্যি আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া।

-শুভদিনে কাঁদতে নেই। আমি যদি কিছু ভুল বলে থাকি তাহলে মাফ করো। আমি তোমাকে কষ্ট দিতে কিছু বলি নি।
-না তুমি যে ওদের বাবার পরিচয় দিবে তাতে আমি খুব খুশি হয়েছে
-তুমি আমার স্ত্রী তাই ওরাও তো আমার সন্তান।
-হুম
-পুচকেটা ঠিক করে শুইয়ে দিবে তো, দেখো কেমন কাঁধ হয়ে ঘুমিয়ে আছে। বলে তিহান ইশানকে ঠিক করে শুইয়ে দিলো। রাফিসা অনেক আগেই ঘুমিয়ে গেছে।
-ম্যাডাম আবার কোথায় হারিয়ে গেলেন?
-কোথাও না
-এখন ঘুমিয়ে পরো। খাট বড় আছে আমি কি এখানে ঘুমাতে পারি?
-অবশ্যই পারো।
-আমি জানি তুমি আমাকে মন থেকে স্বামী হিসেবে মানতে পারো নি তাই তুমি যতোদিন না চাইবে আমি জোড় করে স্বামীর অধিকার খাটাবো না।
-হুম ঘুমাও

তিহান আর আমার মাঝখানে রাফিসা, ইশান ঘুমিয়ে আছে। সারাদিনের ক্লান্তিতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে গেলাম।

এদিকে তিহানের চোখে ঘুম নেই। ভালোবাসার মানুষকে কাছে পেয়েও সে অনেক দূরে। কারো মনে ভালোবাসা তৈরি করতে অনেক সময় লাগে কিন্তু যতো সময় লাগার লাগুক আমি হাল ছেড়ে দিবো না। ইভাকে জীবন সঙ্গী করতে পেরেছি এটাই আমার জন্য অনেক কিছু।
রাফিসা ঘুম থেকে উঠে ইভাকে বললো,
-আম্মু আমি ওয়াস রুমে যাবো, আমাকে নিয়ে যাও।
আমি বললাম,
-আম্মুকে ডাকতে হবে না আমি আছি তো চলো তোমাকে নিয়ে যাই।
-আচ্ছা
রাফিসাকে ওয়াস রুমে নিয়ে গেলাম এর মধ্যে ইশান ঘুম থেকে জেগে উঠছে, ওকে কোলে নিয়ে হাঁটতে আবার ঘুমিয়ে গেলো। ইশান, রাফিসাকে মনে হয় ওরা আমার সন্তান। ওদের সাথে রক্তের সম্পর্ক আছে। কখন যে ঘুমিয়ে গেলাম বুঝতে পারি নি।

সকালে ইভা ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে ফুপির রুমে গেলো কিন্তু সে রুমে নেই তাই রান্না ঘরে গিয়ে দেখলো তরকারি কাটতে আছে।
-এখন থেকে তুমি কোনো কাজ করবে না সব দায়িত্ব আমার, রান্না ঘর থেকে যাও।
-আরে আমি তোকে একটু সাহায্য করে দেই, এখন একা এতো কাজ করা ঠিক না।
-ফুপি তুমি শুধু আমাকে বলে দেও কোথায় কি কি আছে তাহলে হবে।
-তুই আমাকে ফুপি ডাকবি না, আম্মা ডাকবি।
-আসতে আসতে অবভ্যাস করবো
-এখনই বল
-আম্মা জান
-হুম এখন হয়েছে।
ফুপি আর আমি দুজনে মিলে সকালের নাস্তা রেডি করলাম। তিহান ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে ডাইনিং টেবিলে নাস্তা করার জন্য আসে তখন কলিং বেলের আওয়াজ পেয়ে দরজা খুলে দেখে পাশের বাসার কয়েকজন আন্টিরা এসেছে,
-আসসালামু আলাইকুম, সবাই কেমন আছেন?
একজন উত্তর দিলো,
-ওয়ালাইকুম সালাম, আমরা ভালো আছে।
অন্য জন বললো
-আমরা নতুন বৌকে দেখতে এসেছি
-হ্যাঁ ভিতরে আসুন (তিহান)
-কই গো তিহানের মা, নতুন বৌকে নিয়ে আসো(আন্টি)
ফুপি আমাকে নিয়ে তাদের সামনে গিয়ে বললো,
-এই যে আমার ছেলের বৌ
-বৌ তো সুন্দরী আছে তাও স্বামীকে ধরে রাখতে পারলো না (আন্টি)
-তোমার এমন সুন্দর ছেলের সাথে শেষ পর্যন্ত ডিভোর্সি মেয়েকে বৌ করে আনলে, আমাকে বললে এর থেকে বেশি সুন্দরী মেয়ে খুঁজে দিতাম(অন্য একজন আন্টি)
-হ্যাঁ তাই তো আবার শুনেছি বাচ্চাও আছে (আন্টি)
-দেখো তোমার আমার প্রতিবেশি তাই বলে আমার ছেলের বৌ কে হবে এইসব নিয়ে তোমাদের সাথে আলোচনা করতে চাই না। (ফুপি)

তাদের কথা শুনে চোখ থেকে টপ টপ করে পানি পরছে। উনারা তো সত্যি বলেছে,আমি সুন্দরী হয়েও আমার স্বামীকে ধরে রাখতে পারি নি। তিহান তো আমাকে ডিজার্ভ করে না আমার থেকে ভালো মেয়ে ওর যোগ্য। তিহান আমার হাতটা শক্ত করে ধরে বললো,
-আপনারা বৌ দেখতে এসেছেন নাকি সার্টিফিকেট দিতে এসেছেন? ও কি আপনাদের কাছে কোনো পরীক্ষা দিয়েছে নাকি যে ওর সার্টিফিকেট আপনারা দিবেন? শুনেন আন্টিরা, আপনি একজন মেয়ে হয়ে অন্য মেয়ের কষ্ট বুঝেন না তাহলে আপনি কেমন মা? আপনার মেয়ের এরকম অবস্থা হলে কি তাকেও আপনি এসব বলবেন? আর ও কি আপনাদের বাসায় থাকবে নাকি আপনাদের টাকায় খাবে যে এতো মাথা ব্যাথা ওকে নিয়ে ? আপনাদের বাসায় কি হয় না হয় তা নিয়ে আমাদের বাসার কেউ কি কিছু বলতে যায় তাহলে আপনারা কেনো বলতে আসেন? বৌ দেখতে আসছেন ভালো কথা, মিষ্টি মুখ করে চলে যাবেন আপনাদের জ্ঞানের কোনো দরকার নেই। আর নিজেদের সংসার সামলান বলা তো যায় না কার জীবনে কখন কি হয়?সব থেকে বড় কথা হচ্ছে মানুষটা যেমনই হোক না কেনো তার সাথে সুখী হওয়া।
-আমাদের এভাবে অপমান না করলেও পারতে, চলো সবাই। (আন্ট)
-দাঁড়ান আমার বৌকে এতো সুন্দর সার্টিফিকেট দিয়েছেন তার বিনিময়ে আপনাদের কিছু দিবো না তা কি হয়? মা মিষ্টি নিয়ে এসো। আর হ্যাঁ অপমান কাকে বলে সেটা নিজের মনকে জিজ্ঞেস করে নিবেন। (তিহান)
ফুপি মিষ্টি নিয়ে এসে বললো,
-নেও সবাই মিষ্টি খাও
-এতে অপমানের পর আবার আসছো মিষ্টি নিয়ে। (আন্টি)
-চলো সবাই
উনারা সবাই চলে গেলো তারপর তিহান আমাকে বললো,
-আর কতো অপমান সহ্য করবে, একটু প্রতিবাদি হও
-মা রে তোকে কোনো কষ্ট পেতে দেখতে চাই না এবার থেকে তোকে কেউ কিছু বললে তার প্রতিবাদ করবি । আমরা তোর সাথে আছি (ফুপি)
ফুপিকে জড়িয়ে ধরে বললাম,
-হুম করবো।
-একটুও কাঁদবি না, চল নাস্তা খেয়ে নেই (ফুপি)

আমি, ফুপি, তিহান একসাথে বসে নাস্তা খেয়ে নিলাম। একটু পরে আমার বাড়ির লোকজন আসলো।

[আশেপাশের লোকজনের কথা শুনে কষ্ট পাওয়ার কোনো মানে নেই তারা আমাদের সার্টিফিকেট দেওয়ার কেউ না, আমাদের পরিবারের লোকজন আছে তারা বলতে পারে আমাদের খারাপ দিক এবং ভালো দিক তাই প্রতিবাদি হয়ে নিজেকে অপমানিত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।

গল্পটা কেমন হচ্ছে জানাতে ভুলবেন না ]

চলবে,,,,,

#ভালোবাসার_পরিনতি
#লেখা_ইভানা
#পার্ট_১৩

“ইভা আমার ব্লু কালার পাঞ্জাবিটা খাটের উপর রেখেছিলাম এখন পাচ্ছি না কেনো?”
“ধুয়ে দিয়েছি, ছাদে আছে ”
“কেনো? ওটা তো ভালো ছিলো, ধুয়ে দেওয়ার দরকার ছিলো না?”
“দরকার ছিলো, কেমন জানি গন্ধ আসে তাই ”
“এর মধ্যে এতো খেয়াল রাখো”
“হুম একটু তো রাখতেই হবে”
“হুম, শুনো? ”
তিহান আমার হাতটা ধরে বললো,
“আমার কাকা কাকিরা আজকে আসবে ওরা কোনো অপমানজনক কথা বললে কষ্ট পেয়েও না। প্রতিবাদ করবে বুঝলে।”
“উনার দু দিনের জন্য আসবে আবার তো চলে যাবে তাতে কি দরকার প্রতিবাদ করার আর সবাই তো সত্যি কথাই বলে”
“সবাই কি সত্যি কথা বলে বুঝাও আমাকে? তোমার সাথে রোহানের সংসার টেকে নি এটা তোমার দোষ? ”
“আহ্ রাগ করো না, বাসায় লোকজন আছে। ”
“রাগ করবো না তো কি আদর করবো তাহলে কাছে আসো”
“কি সব যে বলো, মাথা পুরা খারাপ হয়ে গেছে ”
“হ্যাঁ তোমার জন্য আগেই পাগল ছিলাম এখন তো কোনো কথাই নেই পুরা পাগল ”
“আমার কপালে এতো সুখ সইবে না ”
“আল্লাহ যা করে ভালোর জন্য করে, এখন আমি কোন পাঞ্জাবি পড়বো তা বেড় করে দেও”
“হুম দিচ্ছি ”
“তুমি বেগুনি রঙের শাড়িটা পরবে ”
“আচ্ছা পড়বো তাহলে তুমিও বেগুনি রঙের পাঞ্জাবিটা পড়ো”
“হুম”

তিহানকে পাঞ্জাবি বেড় করে দিয়ে আমি ফুপির কাছে গেলাম । আজকে বৌভাতের অনুষ্ঠান বাসায় হবে। তিহানের কয়েকজন ফ্রেন্ড আসবে আর ওর কাকা কাকি, কাজিনরা আসবে।
ফুপি বললো,
– তিহানের বাবা মারা যাওয়ার পর ওর চাচা আমাদের সাথে তেমন সম্পর্ক রাখে নি। বহু বছর পরে আজকে আমাদের বাসায় আসছে। শত হলেও ওরা আপনজন তাই বিয়ের দাওয়াত দিয়েছিলাম তখন বলে দিয়েছে আসবে না তারপর কালকে রাতে ফোন করে বললো আজকে আসবে।
-হ্যাঁ আপনজনেরা আসবে এটাই তো স্বাভাবিক
-আমার চিন্তা হচ্ছে তোকে নিয়ে, উনারা কখন কি বলবে।
-ওসব নিয়ে তোমার ভাবতে হবে না, আমি ঠিক সামলে নিবো৷
-জানি তুই কষ্ট সহ্য করতে পারিস কিন্তু আর কতো কষ্ট সহ্য করবি?
-তোমার আছো তো তাতে আমার সব কষ্ট ভুলে যাই।
-হুম আল্লাহ তোদের সুখী করুক এটাই চাই।
ছোট ভাবী এসে বললো,
-শ্বাশুড়ি, বৌ শুধু গল্প করলে কি হবে? আপনাদের রেডি হতে হবে সে খেয়াল কি আছে?
-আমার মিষ্টি বউরা আমাকে রেডি করিয়ে দিবে তাতে আমার আবার কিসের চিন্তা?
-হ্যাঁ তাহলে চলে শ্বাশুড়ি বউ মিলে রেডি হয়ে আসি (আমি).

ভাবীরা আমাকে সাজিয়ে দিলো। তিহান রেডি হয়ে বাচ্চাদের ও রেডি করিয়ে দিছে। তিহানের কয়েকজন ফ্রেন্ডরা এসেছে। তিহানের কাকা, কাকি, কাজিনরা এসেছে। ওর কাকা বলে ফেললো,
-একটা ডিভোর্সি মেয়েকে বউ করে এনেছো আবার আমাদের ঘটা করে দাওয়াত দেওয়ার কি দরকার ছিলো? এতো কষ্ট করে এই মেয়ের মুখ দেখতে এসেছি?
-আপনি তিহানের চাচা তাই এমন কিছু বলবেন যেনো আমার বউয়ের অপমান হয়। (ফুপি)
-তোমার ছেলের বউ এমন কোনো গুণ নেই যে প্রশংসায় পঞ্চমুখ হবো (কাকি)
-গুন না থাকলে না থাকবে কিন্তু কোনো অপমান করবেন না (ফুপি)

আমি চুপ করে তাদের কথাগুলো শুনছি আর ভাবছি এতো অপমানিত হওয়ার থেকে তিহানকে বিয়ে না করা ভালো ছিলো। আমার জন্য ফুপির সারাদিন অপমানিত হতে হতো না।

দুপুরে সবার খাওয়া দাওয়া শেষ তখন তিহানের কাকা বললো,
-বাচ্চা দুটো ইভার বাপের বাড়ি রেখে আসো, এতে সংসারের ঝামেলা কম হবে
-আমার বাবা মারা যাওয়ার পর কি আমাকে রেখে আমার মা চলে গিয়েছিলো নাকি? আপনারা আমাদের দুঃখের সময় কোথায় ছিলেন যে এখন এতো কথা বলছেন? (তিহান)
-ছেলেটাকে বেয়াদব বানিয়েছো তাই তো ডিভোর্সিকে বিয়ে করেছে (কাকা)
-আপনার মেয়েও তো পালিয়ে গিয়েছিলো তার ভালোবাসার মানুষের সাথে তারপরও তো সংসার টেকে নি আবার তো আপনারা ওর বিয়ে দিয়েছেন। আপনারা ভেবেছেন এসবের কিছুই আমরা জানি না তাই না? (ফুপি)
-শুনেন কাকা, আপনারা আমাদের দুঃখের সময় ছিলেন না তাই এখন সুখের সময় আপনাদের কোনো দরকার নেই তাই এরকম অপমান আমার বউ এবং আমার সন্তানদের করবেন না (তিহান)
-আমার মনে ছিলো না বাবা যে আমার মেয়ের এমন কোনো কাজ করছিলো তাই বলে ফেলেছি (কাকা)
-জানি, আপনারা বুঝতে পারেন নি যে আমরা আপনার মেয়ের কথা জানতে পারি তাই সুযোগ বুঝে অপমান করতে চেয়েছিলেন (তিহান)
-বয়স হয়েছে তো তাই সব কথা মনে থাকে না (কাকি)

উনাদের সাথে আর কোনো তর্কে জড়ালো না কারন যারা অন্যের দোষ নিয়ে পরে থাকে তাদের দোষ ধরিয়ে দিলে তারা তাদের দোষ এড়িয়ে যায়।

রাতে ঘুমানের সময় তিহান আমাকে বললো,
-আজকে যে তোমাদের বাসায় যাই নি তাতে কি রাগ করেছো?.
-নাহ্ রাগ করবো কেনো? কালকে তো আমাদের বাসায় যাওয়া হবে
-আমি ভেবেছি রাগ করছো,কাকা কাকি আজকে আমাদের বাসায় থেকেছে তাই যাওয়া হলো না।
-কোনো সমস্যা নেই। তুমি ঘুমাও।
-হুম তুমি ও

আজকে রাফিসা ফুপির কাছে ঘুমিয়েছে। তাই আমি মাঝখানে শুয়েছি। তিহান ঘুমিয়ে গেছে তারপর ওর ফোনে একটা কল আসে আমি ফোনটা হাতে নিয়ে দেখি নাম্বার সেইভ করা না তাই তিহানকে ডাক দিয়ে বললাম,
-তোমার ফোনে কে জানো কল দিয়েছে রিসিভ করো।
তিহান ঘুম চোখে ফোনটা আমার হাত থেকে নিতে গিয়ে আমার হাত ধরে টান দিলো, ওর বুকের উপর আমি পড়লাম। ফোন বেজে কেটে গিয়েছে।
-আমাকে ছাড়ো।
-না তুমি আমার বুকের উপর ঘুমাবে,
-উফফ ছাড়ো তো
-না চুপ করে থেকে ঘুমাও।
তিহানের আমার উপর অধিকার আছে তাই আর কিছু বললাম না ওর বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে গেলাম।

সকালে তিহানের আগে ঘুম ভেঙ্গেছে। ও দেখলো ইভার ওর বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে তাই ঘুম থেকে উঠলো না। ইভাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে শুয়ে থাকলো। কিছুক্ষণ পর ইভার ঘুম ভেঙ্গে দেখে তিহানের বুকে মাতা রেখে তাই তাড়াতাড়ি করে উঠে গেলো। কিছুটা লজ্জাও পেয়েছে ।

সকালে নাস্তা খেয়ে তিহানের কাকা কাকি চলে গিয়েছে। বিকেলে ইভাদের বাসায় সবাই গেলো।
এক সপ্তাহ খুব ভালো করে কেটেছে। একটা কল আসে তিহানের ফোনে। কল রিসিভ করায় তিহানের মুখ ফ্যাকাসে হয়ে যায়।

চলবে,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here