মনের মাধুরীতে তুমি পর্ব -০৩+৪

#মনের_মাধুরীতে_তুমি
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ৩
,
,
,
,
সকাল এ ঘুম ভাংগতেই সুখ অনুভব করলো তার চোখের পাতা খুব ভারি হয়ে আছে সাথে তার মাথাতেও শক্ত কিছু।চোখ যেনো খুলতেই চাচ্ছে না
অনেক কষ্টে অল্প একটু চোখ খুলতেই ঝাপসানো চোখে আহিয়ান এর মুখটা নিজের নিকটে দেখে হতবাক হয়ে গেলো।হঠাৎ মস্তিষ্ক কাজ করতে শুরু করলো দ্বিগুন গতিতে। সম্পূর্ণ চোখ মেলে তাকাতেই টের পেলো আহিয়ান এর এক হাত তার মাথার উপরে।চমকে উঠলো৷ ছেলেটাকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে বসে বসে ঘুমাতে তার কষ্ট হচ্ছে

—লোকটা টি সারারাত এভাবেই ছিলো।কিন্তু কেনো কাল রাতে আমি যখন ঘুমাই তখন তো ডাক্তার টা সোফাই শুয়ে ছিলো।তাহলে এখানে কেনো উনি

সুখ কথা গুলো নিজের মনে আওড়ালেও সেটা উচ্চারণ করার পূর্বেই তার মাথাই চিন চিন ব্যাথা অনুভব হয় চোখ বন্ধ করতেই মাঝ রাতের সৃতি ভেসে উঠে আভছা

—তারমানে আমাকে ঘুমের ইঞ্জেকশন পুস করেছিলেন।

নিজের হাত টা আহিয়ান এর হাত এর নিচ থেকে বের করতে নিলেই আহিয়ান এর ঘুম ভেংগে যায় সারারাত সুখের মাথার কাছে শুয়ে থেকে তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছিলো। কারন গভীর ঘুমের মাঝেই ফুফাচ্ছিলো।

—তুমি উঠে গেছো।মাথা ব্যাথা করছেনা তো

—আপনি সারারাত এই ভাবেই শুয়ে ছিলেন

আহিয়ান কিছু না বলে মৃদু হাসলো।

—চলো তোমাকে ফ্রেশ করায় দি

সুখ চমকে উঠে

—আ আপনি ফ্রেশ করাবেন মানে

—রিলেক্স যাস্ট মুখ টা মুছে দিবো নার্স দের উপর তোমার দ্বায়িত্ব ছাড়তে পারবোনা কারণ তাদের একটু অবহেলায় তোমার ক্ষতি হোক আমি চাইনা

সুখ অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো আহিয়ান এর মুখের দিকে। কিন্তু সেদিকে কোন ভাবান্তর নেই আহিয়ান এর সে তো সুখ কে নিচে নামাতে ব্যস্ত।

ফ্লোরে পা পড়তেই সুখ ব্যাথায় আহ করে উঠে।আহিয়ান আর সময় ব্যায় করেনা দ্রুত সুখ কে পাজাকোলে তুলে নেয়।

—কি করছেন নামান আমাকে পড়ে যাবো তো

—হুশ একটা শব্দ উচ্চারণ করলে ফেলে দিবো

—ওই সব ভয় আমি পাইনা ডাক্তার। এর চেয়ে বেশি উঁচু থেকে পড়েছি সেখানে এই টুকু উচ্চতা কিছুই না

—হায়রে মেয়ে মানুষ হাজার পেচ

—আমরা মেয়েরা যদি হাজার পেচ নিয়ে থাকতাম তাহলে কি অভিনয় আর সত্যির মধ্যে তফাৎ করতে ভুল করতাম বলুন তো

—বুঝলাম মহারানী এবার একটু ঝুকেন

সুখ তাকিয়ে দেখলো সে ওয়াসরুমে। আহিয়ান নিজ হাতে সুখ কে ব্রাশ করায় দিয়ে মুখ টা ধুয়ে দিলো। সুখ অবাক হয়ে চেয়েছিলো।সে ভাবেনি একজন ডাক্তার পেশেন্ট কে এতো কেয়ার করে।সুখের নিজের বাবার কথা মনে পড়ে গেলো এই ভাবেই ছোট বেলাই সুখ কে আগলে রাখতো।

—বাবাই আজ যদি তুমি আমার সাথে থাকতে।

সুখের ভিতর থেকে বেরিয়ে এলো বিষাদের শ্বাস।

_____

সুখের নানু কে দেখে সাথে সাথে তাকে জড়িয়ে ধরলো অভিরুপ চৌধুরী। চোখে তার সুখের অশ্রু। বৃদ্ধ লোকটি প্রথমে বুঝতে পারলেন না এইভাবে অজনা কেউ তাকে জড়িয়ে ধরলো কেনো।

—কেমন আছেন বাবা

অচেনা লোকের মুখে বাবা শুনে কিছু মহূর্তের জন্য থমকালো বৃদ্ধ লোক টি আচমকা কিছু একটা মনে পড়তেই কেপে উঠলো উনার সবাঙ্গ। সাথে সাথে কাপা কাপা হাত যেয়ে ঠেকলো অভিরুপ চৌধুরীর পিঠে

*রুপ*

অভিরুপ এবার কান্নারত স্বরে বলে উঠলো

—হ্যা বাবা আমি রুপ। আপনারা কই চলে গেছিলেন বাবা কতো খুজেছি আপনাকে ভাইয়াকে বোন কে কিন্তু পাইনি কাউকে। ছোট একটা ভুলের এতো বড় শাস্তি কেনো বাবা

—নারে বাবা শাস্তি না তোর বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর পর এই আমার হার্ট এট্যাক হয় সুখের বাবা আমাকে নিয়ে চলে যায় বিদেশ সেখানেই থাকি আমরা ৪ বছরের মতো তারপর একদিন সুখের বাবা মারা যায় আর আমরা দেশে।ঢাকাই চলে এসে নতুন করে সব শুরু করি।

(বুঝলেন না তো। আসলে সুখের মা আর অভিরুপ ভাই বোন। অভিরুপ বাবার ব্যাবসায় যোগ দিতে রাজি ছিলোনা কিন্তু সুখের নানু সেটা মানতে নারাজ। সেজন্য দুই বাবা ছেলের মাঝে তুমুল ঝগড়া লেগে যায় আর সেজন্য অভিরুপ নিজের পুরো পরিবার নিয়ে ময়মনসিংহ এ পারি জমাই।)

—কিন্তু বাবা তুমি হাসপাতালে

—হ্যা রে আমার নাত্রনি সুখের এক্সিডেন্ট হয়েছে

—মানে আমার পুচকির মেয়ে হয়েছে কই ও কোথায়

—ওর কেবিনের বাহিরেই তো দাঁড়িয়ে আছিস

অভিরুপ এর এখন মনে পড়লো কেন সুখ কে তার চেনা চেনা লাগছিলো কারন ওতো আর কেউ না ওত ওর বোনের ই অবিকল প্রতিচ্ছবি।অভিরুপ চৌধুরী আর সময় ব্যায় করেনা দৌড়ে ভিতরে প্রবেশ করে আধশোয়া অবস্থাই থাকা সুখ কে জড়ায় ধরলো।হঠাৎ এমন হওয়াই নার্স সহ সুখ সবাই অবাক। এদিকে ফ্রেশ হয়ে পুনরায় কেবিনে প্রবেশ করতেই।ভ্র কুচকে যায় আহিয়ান এর। একবার নিজের বাবার দিকে তাকায় তো একবার বৃদ্ধ টির অশ্রু ভরা মুখে দিকে।

—কি হয়েছে বাবা তুমি মিস সুখ কে ওইভাবে জরায় ধরে রেখেছো কেন

নিজের বাবার বিপরীতে কোন উত্তর না কেপে উঠলো তার মাথায় এলো হয়তো সুখ নিজের জীবন দেওয়ার চেষ্টা করেছে হাত সাথে সাথে মুষ্টিবদ্ধ করে ফেললো রাগে চোয়াল শক্ত হয়ে এলেও নিজেকে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক করে রেখেছে।

—সুখ পাখি তুমি ভুলের সংখ্যা বাড়িয়ে যাও আমিও শাস্তির সংখ্যা আর মেয়াদ দীর্ঘ করবো।তোমার প্রতি করা তোমার একেক টা আঘাতের হিসাব নিবো আমি একেক টা অশ্রুর মূল্য নিবো। খুব বড় ভুল করে ফেলেছো সুখ পাখি।আমার হ্যাপিনেস হওয়ার ভুল।

—কি হয়েছে স্যার সুখ কি কিছু করেছে নিজের সাথে উলটো পালটা

নিজেকে স্বাভাবিক করে সুখের নানুকে জিজ্ঞেস করে উঠে।

—না বাবা আজ নিজের আদরের বোনের মেয়েকে দেখে সামলাতে পারেনি আমার ছেলেটা

আহিয়ান বৃদ্ধের বলা কথাই চমকাই “আমার ছেলে”

—আমার ছেলে মানে তুমি আমার দাদু

বৃদ্ধ অবাক হয় তারমানে তার সামনে যে দাঁড়িয়ে রয়েছে সেটা তার ছেলের ছেলে।কাপা।কাপা হাতে আহিয়ানের সারা মুখে হাত বুলাই বৃদ্ধ

—তুই কে নাতি রায়হান নাকি আহিয়ান

—আমি আহিয়ান দাদু।

—তুই আমার আহি ভাই। চৌধুরীর সিংহ

আহিয়ান কিছু বলতে যাবে তার আগেই অভিরুপ সুখ কে ছেড়ে দিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়ায়

—তোমার সিংহ এখন ছোট বেলার সে তেজী রাগী নেই সে এখন শান্ত। তোমার সিংহ চৌধুরী তো রিহাব চৌধুরী তোমার ছোট নাতি

—রুপ আমি মানুষ চিনতে ভুল করিনা জানিনা আমার ছোট নাতি কেমন কিন্তু হ্যা এই হলো সিংহ। যার নজরেও চৌধুরীর জ্বলন্ত আগুন জ্বলে। যার শান্ত বানীও শত্রু পক্ষকে কাপাতে সক্ষম আমার বাঘ।

—এবার তুমি ভুল বাবা তুমি দেখে নিও।

—এখানে কি হচ্ছে কিছু বলবে কেউ আমাকে। ইয়াং ম্যান তুমি আঙ্কেল কে ছেলে আর আঙ্কেল কেন বা তোমাকে বাবা বলছে।

—আমি তোর আঙ্কেল না আমি তোর মামা৷

সুখ হা হয়ে যায়

—তুমি রুপ মামা। যার কথা নানীমা সবসময় বলে।

—হ্যা রে মা আমিই সে রুপ

ঃদাদী তোমাকে ভিষণ মিস করে

—আমার বোন বুঝি আমাকে মিস করেনা

সুখ কিছু বলতে যাবে তার আগেই তার নানা তাকে থামিয়ে দেয়

—সবাই তোকে খুব মনে করে কিন্তু মায়ের মন সবার থেকে একটু বেশিই কাদে।

—ক্ষমা করে দিও বাবা আমি তখন তোমাদের উপরে নিজের ক্যারিয়ার কে বেছে নিয়েছিলাম।

—যেটা হয়ে গেছে সেটা বাদ দে।

সবাই নিজেদের আলাপে ব্যস্ত থাকলেও একজনার ঈগলের নজর বন্দি ছিলো সুখের উপরে।

চলবে!#মনের_মাধুরীতে_তুমি
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ৪
,
,
,
,
সুখ দাঁড়িয়ে আছে চৌধুরী নিবাসের চৌকাঠে। দাঁড়িয়ে আছে বললে ভুল হবে কারন সে রীতিমতো আহিয়ান এর কোলে নিজের স্থান দখল করে রেখেছে।সুখের মুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে তার ভীষণ অস্বস্তি হচ্ছে এই ভাবে থাকতে। কিন্তু তাকে যে কলে তুলে রেখেছে তার সেদিকে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই সে এমন ভাব নিয়ে দাঁড়ায় আছে যেনো তার হাতে কিছুই নেই। ইতিমধ্যে সুখ হাজার বার এর উপরে বলে ফেলেছে আমাকে নামান কিন্তু সেটা কি আদৌ এই লাগাম হীন লাজ লজ্জা হীন ছেলে টির কানে গেছে।

—আপনি কি আমাকে নামাবেন ডাক্তার দেখুন যেকোন মহূর্তে মামু ইয়াং ম্যান, নানী আর আম্মুকে নিয়ে চলে আসবে। আর এদিকে মামনিও আসবে।

—তো সমস্যা কই

আহিয়ান এর এহেন কথা শুনে সুখের ইচ্ছা করলো দেওয়াল এ মাথা ঠুকতে।

—আপনার সমস্যা না থাকলেও আমার আছে নামান

—নরম চিকন ঠোঁট এর ফাক দিয়ে যদি আর একটা আওয়াজ বের হয় তাহলে আমি সিলাই করতে বেশি সময় লাগবেনা।
পায়ের ব্যান্ডেজ এখনো খুলেনি ফুলে আছে আর সে নাকি হেটে ঢুকবে

আহিয়ান শেষ এর কথা টা একটু উচু গলায় বললো যা বরণ থালা হায়ে নিয়ে আসা এক অত্যন্ত সুন্দরী রমনীর কানে পৌঁছে গেলো।

—আহি

কারো উঁচু স্বরে আহিয়ান আর সুখ দুইজনে সামনে তাকালো। রমনীর দিকে তাকাতেই সুখ এর মুখ একদম হা হয়ে গেলো আপন মনেই মুখ দিয়ে বেরিয়ে এলো

—মাশাল্লাহ

সুখ কথাটা আসতে বললেও আহিয়ান এর কানে ঠিক পৌছালো। সে মৃদু হাসলো।নিজের জন্মদাত্রীর দিকে মায়া দৃষ্টিতে তাকিয়ে মনে মনে বলে উঠলো

—আমার দেখা ১ম সুন্দরী সচ্ছ কোমল পবিত্র হৃদয়ের অধিকারী আমার জন্মদাত্রী মা যে আমাকে ১০ মাস ১০ দিন নিজের গর্ভে লালন করে বড় এতো সুন্দর পৃথিবী দেখার সুযোগ দিয়েছে।আর ২য় আর শেষ সুন্দর রমনী আমার কোলে থাকা আমার সুখ পাখি।এই দুই রমনীর মাঝেই আমার শান্তি।

—আহি তোমার সাহস কি করে হয় সুখ মামনির সাথে উঁচু গলায় কথা বলার।

আশ্চর্য হয়ে তাকিয়ে রইলো সুখ।কথা বলার সময় আলাদাই তেজ ফুটে উঠেছে রমনীটির মুখ জুড়ে আলাদা এক আত্নবিশ্বাস। মাধুর্যতা দিয়ে যেনো মোড়ানো এই রমনী টির আপদমস্তক।

—এই জন্য বুঝি ডাক্তার আহিয়ান এতো সুন্দর ঠিক তার মা এর মতো

—তো কি করবো মা পায়ের এই অবস্থা আর ওই নাকি হেটে যাবে।

—বড়দের সামনে তার ইতস্ত হয়ে বলতেই পারে তাই বলে তুমি কোন মেয়ের সাথে উঁচু গলায় কথা বলবে সেয়াতা উচিৎ নয়

—অন্যকোন মেয়ের সাথে এই ভুল করবোনা মা। তোমার ছেলের উপর এই বিশ্বাস রাখতে পারো।কিন্তু এর বেলায় সেটা সম্ভব না

সুখ হা হয়ে গেলো নম্র ভাষায় তর্ক না করেও কি সুন্দর তর্ক করে গেলো মিসেস চৌধুরী ছেলের কথার বিপরীতে কিছু বললেন না। সে যে জিনিস টা আচ করতে পারছেন সেটা সম্ভব না। কিন্তু এই ভাবে ছেলেকে বললে ছেলে বুঝবেনা। তিনি জানেন ছেলে উপরে নিজেকে যতোই শান্ত স্থির দেখনোর চেষ্টা করুক না কেন ছেলে তার ঘাড়ত্যাড়া আর রাগী।শান্ত মস্তিষ্কে কাউকে খু*ন করতেও দ্বিতীয় বার ভাববে না

মিসেস আরিফা চৌধুরী ভাগ্নিকে বরণ করে নিতে নিতেই বাড়িতে এসে৷ উপস্থিত হলো তার স্বামি শশুড় শাশুড়ী আর ননদ।তিনি তার শশুড় শাশুড়ী কে পা ধরে সালাম করে ননদ এর কাছে আসতেই আৎকে উঠলো

নাসরিন(সুখ এর মা)বেগম অভিরুপ এর বুকে মাথা ঠেকিয়ে নিশ্চুপে দাঁড়িয়ে আছে।চোখের নিচে কালি পড়ে গেছে চেহারার উজ্জ্বলতা হারিয়ে গেছে কোথাও।শরীরে যেনো হাড্ডি ছাড়া কিছুই না।কাপা কাপা হাতে আরিফা তার আদরের ননদের গাল ছুলেন।সাথে সাথে তার চোখ বেয়ে গরিয়ে পড়লো এক ফোটা অশ্রু। বয়সে তার থেকে ৩ বছরের ছোট তার ননোদ কিন্তু তাকে দেখে মনে হচ্ছে সে যেনো আরিফার থেকেও ৫ কিংবা ৬ বছরের বড়।

স্বামির কাছ থেকে ছাড়িয়ে জড়িয়ে ধরলেন নিজের সাথে।সাথে সাথে ফুপিয়ে উঠলেন তিনি।

—কি অবস্থা করেছিস তুই নিজের পিচ্চি।আমার পিচ্চি তো এমন ছিলোনা তাহলে কোন সাহসে তুই আমার পিচ্চির অযত্ন করেছিস বল।বলেছিলাম নাঁ আমার পিচ্চি যেনো ভালো থাকে খুব ভালো তাহলে তুই না তোর ভাবি মার কথা ফেলতে পারতিনা তো এবার কেন রাখলিনা।

আজ এতো বছর পরে হাউমাউ করে কেদে উঠলেন নাসরিন বেগম যেনো এই বুকটার ই অপক্ষাই ছিলেন এই ভরসার হাতের আদর মাখা স্নেহর অপেক্ষাই ছিলেন

—ভাবি মা সে চলে গেছে ভাবি মা আমাকে ছেড়ে। কিভাবে পারল সে আমাকে ঠকাতে। জানো ভাবিমা সে নিষ্ঠুর বড্ড নিষ্ঠুর। সে৷ জানে আমি তাকে ছাড়া বাচতে পারবোনা তবুও সে আমার কাছে ওয়াদা নিয়ে গেছে যতোক্ষন না তার মেয়ের দ্বায়িত্ব সম্পূর্ণ হচ্ছে ভরসাযোগ্য ঠায় না পাচ্ছে ততোদিনে তার কাছে যাওয়া আমার বারণ। কিন্তু সে কি করে ভুলে গেলো ভাবি মা তাকে ছাড়া যে তার প্রিয়দর্শিনী এক ধাপ ও চলতে পারেনা সেখানে কিভাবে আমি একা তার সুখ পাখির দ্বায়িত্ব নিবো তার মেয়ে যে তার প্রতিচ্ছবি।ভাবি মা তুমি তো আমাকে বুঝো দিয়ে আসোনা আমাকে তার কাছে দিয়ে আসো সে অন্ধকার ভয় পায় বড্ড ভয় পায়। কিভাবে এতো বছর সে ওই অন্ধকার কবরে শুয়ে আছে আমাকে তার কাছে দিয়ে আসোনা ভাবিমা

নাসরিন বেগমের করুন আর্তনাদ এ সবার চোখে পানি স্পষ্ট। কতোটা ব্যথা নিজের মনে চেপে রাখলেন এই ভাবে কাদা যায় বোধ গম্য হলোনা সুখের। সে নিশ্চুপ হয়ে মিশে রইলো আহিয়ান এর বুকে।আহিয়ান ও দুই হাতে শক্ত করে নিজের সাথে জড়িয়ে রাখলো

_______

চারিদিকে মাগরিব এর আজান দিচ্ছে। বারান্দার চেয়ারে বসে চোখ বন্ধ করে সময় টাকে উপভোগ করছে সুখ।সে জানে কিছু ক্ষন পর ই আহিয়ান এসে জোড়ে সোড়ে এক ধমক দিবে তাকে।কেন সে হাটলো।
মাঝে মধ্যে সুখের প্রচুর হাসি পাই। আহিয়ান তাকে এমন ভাবে ট্রিট করে যেনো সে ছোট বাচ্চা। বাকী মেয়েদের মতো একটুতেই ভেংগে গুড়িয়ে যাওয়ার মতো

—আপনি উপরের ক্ষত তো দেখে নিলেন ডাক্তার চিকিৎসাও করে দিলেন কিন্তু তার চেয়ে দ্বিগুন যন্ত্রণা দ্বিগুন ক্ষত মনের মাঝে আছে যা চাইলেও দেখাতে পারবোনা কাউকে না পারবো সেটা ভুলতে

জীবন টা বড্ড অদ্ভুত যার কাছে কারে তার কাছে তার সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে নিস্বেস করে দেয়। আবার কাউকে সব সুখ একেবারে দিয়ে দেয়।

—তৃতীয় ও আছে যাদের প্রথমে কষ্ট দিলেও পড়ে ঠিক সুখ এনে দেয়। আর যার নাম স্বয়ং সুখ তার কাছে সুখ ধরা দিবেনা তা কি সম্ভব।

পুরুষালী গভীর কন্ঠে পিছনে ফিরে তাকালো সুখ অবাক হলো তার পিছনে দাঁড়িয়ে আছে রায়হান চৌধুরী অভিরুপ চৌধুরীর বড় ছেলে।পেশায় ব্যবসায়ী।

—ভাইয়া আপনি কিছু বলবেন

—বোনের ঘরে বুঝি কাজ ছাড়া আসতে পারেনা ভাই অবশ্য বিনা অনুমতি তে আসার জন্য আই এম সরি বনু

—বোন এর ঘরে আসতে বুঝি আবার অনুমতি লাগে দা ভাই

—বাবা ঠিক ই বলেছিলো একদম তুই বড় দাদীর মতো।একদম মিষ্টি

—বড় দাদী কে

—দাদুর প্রথম স্ত্রী

—মানে নানীমা ইয়াংম্যান এর দ্বিতীয় স্ত্রী

—হুম

সুখ আর কিছু বলতে যাব তার আগেই পুরুষালী কন্ঠ শুনে দুইজনেই চমকে যায়,,,

চলবে!
অসুস্থ থাকার কারণে কাল দিতে পারি নাই

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here