মায়াডোর পর্ব-২৪+২৫

মায়াডোর (২৪ পর্ব)
.
কল্প বৃষ্টিতে ভিজে বাজারে এসে বাসে উঠেছে। সিট ভিজে যাবে বলে হেল্পার বিরক্ত হয়ে বললো, ‘ভাই আপনে তো ভিজাইয়া দিবেন সবকিছু। দাঁড়াইয়া যাওন লাগবো আপনের।’

কল্প মাথা নাড়ে। ডান হাতে মাথার উপরের স্টিলের পাইপ শক্ত করে ধরে দাঁড়িয়ে থাকে। বাস চলতে শুরু করেছে। প্রায় এক ঘণ্টা এভাবেই দাঁড়িয়ে থেকে কল্প সিলেট আসে। ভেজা কাপড় কিছুটা শুকিয়েছে। তবুও শরীরে, পোশাকে তার ছাপ স্পষ্ট। রিকশা নিয়ে সোজা চলে এলো ইতিদের বাড়িতে। তখন বেলা প্রায় এগারোটা। ইতি কলেজে চলে গেছে। লতিফা তাকে দেখে বললো, ‘একি অবস্থা ভাইজান? কোথা থাইকা আইছেন?’

কল্প বারান্দায় গিয়ে হাসি হাসি চেহারায় বললো, ‘চলে এলাম। ভার্সিটি আছে তো আমার। তাছাড়া নিয়ন আর মিলনের পড়ালেখার ক্ষতি হচ্ছে।’

কথাগুলো বলে কল্প নিজের রুমের দিকে চলে যায়। ভেজা ব্যাগটা রাখে টেবিলে। কিছুটা শুকিয়ে গেলেও ভেতরের কাপড় ভেজা সে জানে। তবুও শুকোতে দিতে তার ভালো লাগছে না। শরীরজুড়ে কেমন অবসাদ আর ক্লান্তি। বিছানা যেন তাকে টেনে নিয়ে যায়। জুতোটা খুলেই গুটি-শুটি মে’রে শুয়ে পড়ে৷ শরীরে কেমন ‘ওম-ওম’ ভাব। কিছুটা ঠাণ্ডাও লাগছে। কম্বল নেই। একপাশের বিছানার চাদর টেনে নিজেকে ঢেকে নিল। এত আরাম। শুয়ে থাকতে এত আরাম লাগছে৷ নিজের উষ্ণ শ্বাস-প্রশ্বাস নিজের কাছেই ভালো লাগছে। ক্রমশই গভীর ঘুমে তলিয়ে গেল সে।

ইতি বিকেলে কলেজ থেকে ফিরেছে। টেবিলে বই রাখতেই নীলা এসে বললো, ‘ইতি কল্প আজ দুপুরে এসেছে, এসেই ঘুমোচ্ছে শুধু। লতিফা একবার ডেকে এসেছে, উঠেনি। তুই যা তো৷ কিছু কি খাবে না এত বেলা হয়েছে।’

ইতি বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে বললো, ‘কি? কল্প ভাইয়া এসেছে?’

– ‘হ্যাঁ, বুঝলাম না ওর না বিয়ের কথাবার্তা হচ্ছে। চলে এলো যে?’

– ‘কি জানি, তোমরা কিছু জিজ্ঞেস করোনি?’

– ‘না লতিফাকে বলেছে তার না-কি ভার্সিটি আছে। নিয়ন মিলনেরও পড়ালেখায় ক্ষতি হচ্ছে৷ তাই চলে এসেছে।’

ইতি আর কথা না বাড়িয়ে ছুটে গেল কল্পের রুমে। বিছানা চাদর গায়ে দিয়ে কুণ্ডলি পাকিয়ে ঘুমিয়ে আছে কল্প। ইতি চাদর উপর দিয়ে গায়ে হাত দিয়ে দেখে শরীর প্রচণ্ড গরম। জ্বর এলো না-কি? টেবিলে ব্যাগ দেখে গিয়ে হাত দেয়। ভেজা ভেজা লাগে। চেইন টেনে খুলে ভেতরে হাত দিয়ে দেখে কাপড়-চোপড় ভেজা। ইতি তাড়াতাড়ি ব্যাগ নিয়ে বাইরে যায়৷ রান্নাঘরে এসে বলে ‘মা, কল্প ভাইয়ার তো জ্বর মনে হচ্ছে। আর এই দেখো ব্যাগ ভেজা।’

হুস্না বেগম টেবিলে প্লেট রেখে অবাক হয়ে বললেন, ‘বলিস কিরে, ভিজে-টিজে এসেছে মনে হয়। এখন তো এমনিতেই চারদিকে জ্বর হচ্ছে মানুষের।’

– ‘কিন্তু একটা মানুষ দুপুর থেকে বিছানায় পড়ে আছে তোমরা খেয়াল করবে না? আমি গিয়ে দেখি বিছানার চাদর গায়ে দিয়ে ঘুমোচ্ছে।’

– ‘বলিস কিরে? লতিফাকে পাঠিয়েছিলাম। বললো শুধু ঘুমাচ্ছে। আমি তো আর যাইনি ওদিকে।’

ইতি রূঢ় গলায় বললো, ‘একটা কম্বল বার করো। আমি এগুলো শুকোতে দিয়ে আসি।’

ইতি ছাদে কাপড় শুকোতে দিয়ে এলো৷ হুস্না বেগম একটা পাতলা কমলা রঙের কম্বল দিয়ে বললেন, ‘ওকে তুলে বল কিছু খেয়ে ঘুমাতে। আর তোর বাবাকে কল দিয়ে বলবো রাতে ওষুধ নিয়ে ফিরতে।’

ইতি মাথা নেড়ে মায়ের হাত থেকে কম্বল নিয়ে কল্পের রুমে যায়। ইতি বিছানায় বসে আস্তে আস্তে বিছানা চাদর সরিয়ে দিতেই কল্প খানিক কেঁপে উঠে লাল টকটকে চোখে তাকায়। ইতি কপালে হাত দিয়ে বললো, ‘আপনার তো জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে। বৃষ্টিতে ভিজলেন কেন? এখন চারদিকে মানুষের জ্বর হচ্ছে জানেন না?’

কল্প সে কথার জবাব দিল না৷ উষ্ণ শ্বাস ছেড়ে বললো, ‘আমার গায়ে কম্বল দাও।’

ইতি তাড়াতাড়ি পুরো শরীরে কম্বল দিয়ে বললো, ‘উঠে আগে কিছু খেয়ে নিন।’

কল্প ঢোক গিলে বললো, ‘ইতি আগে দেখো কেউ আসছে কি-না।’

ইতি চারদিকে তাকিয়ে বললো, ‘কেউ নেই। কি বলবেন বলুন। এত ভয় পাই না আমি।’

কল্প দাঁত কটমট করে তাকিয়ে বললো, ‘বেশি বাড়াবাড়ি ভালো না৷ এখন আরও বেশি ভয় পাওয়া লাগবে। আজ থেকে তুমি এই রুমে আসবে না৷ আর আমার জ্বর থাকলেও প্রব্লেম নেই। তোমার দুই ভাইকে ডেইলি পড়তে পাঠাবে।’

ইতি ওর কপালে হাত রেখে ব্যগ্র গলায় বলে, ‘কি হয়েছে হঠাৎ বলুন তো?’

কল্প কপাল থেকে হাত সরিয়ে বললো, ‘যা বলেছি তাই করবে৷ আমি একটা চাকরি আর আলাদা থাকার ব্যবস্থা করার আগপর্যন্ত কোনো ঝামেলা চাইছি না।’

– ‘মানে কি এসবের?’

– ‘এত মানে মানে করো না। যা বলছি ভালোর জন্য বলেছি। এখন বের হয়ে যাও। আমার এখানে পাঠাবে লতিফা বা অন্য কাউকে৷ তুমি আসবে না।’

– ‘বুঝলাম না কি হয়েছে। মেসেঞ্জারেও তো বলেননি।’

মেসেঞ্জার শুনে কল্প পকেটে হাত দেয়। মোবাইল পকেট থেকে বের করে পাওয়ার বাটনে ক্লিক করে দেখে ডিসপ্লেতে সমস্যা এসে গেছে। ইতি অবাক হয়ে বললো, ‘এ কি অবস্থা? মোবাইল নষ্ট হলো কিভাবে?’

কল্প মোবাইল বালিশের পাশে রেখে বললো,

– ‘বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়ায় হয়তো। যাইহোক তুমি এখন যাও।’

ইতির চোখ ভিজে এলো৷ কল্পের গালে হাতটা রেখে বলে, ‘কি হয়েছে বলুন তো। আমার অনেক ভয় লাগছে।’

কল্প হাত ছাড়িয়ে নেয়। রূঢ় গলায় বলে, ‘ইতি কেউ এসে দেখলে কি হবে বুঝতে পারছো? আমাকে বিপদে ফেলবে না-কি? তুমি এখনই বের হয়ে যাও।’

ইতি ইতি-উতি করে উঠে চলে যায়। রান্নাঘরে যেতেই নীলা তাকে দেখে বললো, ‘কিরে উঠেছে কল্প?’

– ‘হ্যাঁ আন্টি। বলেছে খাবে।’

হুস্না বেগম এসে নাশতার ট্রে ইতির দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললেন, ‘যা দিয়ে আয়।’

– ‘অন্য কাউকে পাঠাও আমি খাব এখন। কলেজ থেকে এসে কিছুই খাইনি।’

হুস্না বেগম নিজেই নিয়ে গেলেন। টেবিলে ট্রে রেখে বললেন, ‘কল্প উঠো বাবা। খেয়ে নাও। তোমার মামাকে বলেছি ওষুধ নিয়ে আসবে রাতে।’

কল্প কম্বলের ভেতর থেকে মাথা বের করে হুস্না বেগমকে দেখে উঠে বসে। তারপর ম্লানমুখে মুচকি হেঁসে বলে, ‘একটু এখানে দিয়ে দেন মামী।’

হুস্না বেগম ট্রে নিয়ে রাখলেন তার বিছানায়। কল্প চায়ের কাপ নিয়ে এক চুমুক দিয়ে বললো, ‘কাল থেকে নিয়ন আর মিলনকে পড়তে পাঠাবেন। বাচ্চারা গ্যাপ পেলেই পড়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।’

– ‘তুমি আগে সুস্থ হও বাবা।’

– ‘ও কিছু না মামী, ওদের পাঠাবেন ডেইলি সকালে। বিকেলে আর সন্ধ্যায় অন্য টিউশনি আছে।’

– ‘আচ্ছা ঠিক আছে।’

– ‘মামী বাসায় কি জ্বরের ওষুধ নেই আগের? নাপা-টাপা কিছু।’

– ‘দেখতে হবে বাবা।’

– ‘একটু দেখুন তো কষ্ট করে।’

হুস্না বেগম চলে গেলেন। কল্পের হঠাৎ মনে পড়লো সে বাইরে যেহেতু যাচ্ছে কোনো ফার্মেসি থেকেও খেতে পারবে। অকারণ বলেছে। এখনই তার আগের দুইটা টিউশনির খবর নিতে হবে। মোবাইল নষ্ট, না হয় কল দিতে পারতো৷ ওরা কোনো নতুন স্যার রেখে দিল কি-না কে জানে৷ সে নাশতা করে ঠাণ্ডা থেকে বাঁচার জন্য পায়ে কেডস আর গায়ে ফুলহাতা শার্টের নিচে গাঢ় গেঞ্জি পরে নেয়৷ হুস্না বেগম এলেন নাপা নিয়ে। তাকে কাপড় পরতে দেখে বললেন, ‘এই জ্বর নিয়ে কোথায় যাচ্ছ বাবা?’

সে হাত বাড়িয়ে ওষুধ নিয়ে বললো, ‘টিউশনি আছে মামী। সমস্যা নেই। ঠাণ্ডা লাগবে না। যাচ্ছি আমি।’

কল্প ওষুধ খেয়ে বের হয়ে গেল। হুস্না বেগম ট্রে নিয়ে রান্নাঘরে গিয়ে নীলাকে দেখে বললেন, ‘এত জ্বর নিয়ে ছেলেটা টিউশনি পড়াতে চলে গেছে।’

ইতি আশেপাশেই ছিল। শুনে ‘চিনচিনে’ ব্যথা হয় বুকে। হঠাৎ কি হয়েছে মানুষটার কে জানে। মোবাইলটাও নষ্ট। মেসেজ দিয়ে জিজ্ঞেস করার কোনো সুযোগ নেই। ইতি ছাদে গিয়ে পিলারে মন খারাপ করে বসে থাকে।

রাত ন’টায় কল্প ফিরে আসে বাসায়৷ এসেই কম্বল গায়ে দিয়ে শুয়ে পড়ে সে। ইতি নিজেকে সামলে রাখতে না পেরে ইতস্তত করে তার রুমে চলে যায়। গিয়ে বসে বিছানায়। কপালে হাত দিয়ে দেখে প্রচণ্ড গরম। ব্যগ্র গলায় বলে, ‘এত জ্বর নিয়ে আপনি বাইরে গেলেন কেন?’

কল্প নাক টেনে বললো, ‘বিকেলে কমই মনে হয়েছিল। সন্ধ্যার পর থেকে বেড়ে গেছে।’

– ‘এই সিজনাল জ্বর আমার হয়ে গেছে৷ আমি জানি৷ রাতে বেড়ে যায়। আপনি দিনে জ্বর কম দেখেই বাইরে চলে যাবেন না প্লিজ। রেস্ট নিন কিছুদিন।’

– ‘ইতি তোমাকে কিন্তু নিষেধ করেছিলাম আমার রুমে আসতে।’

কল্পের হাতটা ধরে পরম মমতায় গালে চেপে ধরে ইতি। আরেক হাতে কল্পের চুলে হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে, ‘আচ্ছা যাচ্ছি।’

ইতি উঠে যাচ্ছিল। কল্প নাক টেনে বললো, ‘শোনো ইতি, আপাতত তুমি এসো না। বাট মনে রেখো৷ আমি তোমারই আছি, ওকে?’

ইতির চোখ ভিজে আসে৷ ভেজা গলায় বলে, ‘কিন্তু আসবো না কেন?’

– ‘এত কথা বলো না তো, যাও রুম থেকে। এখানে এইযে এসেছো। এসে যা করছো কেউ দেখলে কি হবে?’

ইতি চোখের পানি মুছে বলে, ‘আমি এসব ভয় পাই না। দেখলে আরও ভালো। আপনার সঙ্গে বিয়ে পড়িয়ে দেবে।’

– ‘দুনিয়া তোমার মতো এত সরল না ইতি। বিয়ে পরিয়ে দেবে না-কি আমাকে বের করে দেবে কে জানে! যা বলছি তাই করবে। এখানে আসবে না। আর এসে ভুলেও টাচ করবে না আমাকে।’

– ‘আমাকে আপনি দুনিয়া শেখাবেন না। আমার দুনিয়া শেখার ইচ্ছা নাই। আপনি সুস্থ হয়ে একটা চাকরি জোগাড় করে বিয়ে করে নিন। আমার আর কিছু চাই না।’

– ‘ইতি রুম থেকে বের হও প্লিজ।’

– ‘এত পাগল হচ্ছেন কেন? কেউ আসছে না তো এদিকে।’

– ‘তোমার এত সাহস কেন আমি বুঝি না। কেউ এখন আসছে না, হঠাৎ ঠিকই আসবে।’

ইতি রাগে ‘হন-হন’ করে বের হয়ে যায়। পরেরদিন একবারও ইতি তার রুমে এলো না। কলেজ থেকে ফিরে একা একা ভেতরে অস্থিরতা নিয়ে দিন কাটিয়ে দিল৷ কল্পও সারাদিন বাইরে ছিল৷ সন্ধ্যায় রুমে এসে শুয়ে থাকে। ইতি মাঝরাতে চুপিচুপি কল্পের রুমের দিকে যায়৷ প্রচণ্ড ভয় লাগে। হৃৎস্পন্দন বেড়ে যায়। দিনে সে যতবার যায় এর পেছনে যুক্তি থাকে, কারণ থাকে। তাই এত ভয় হয় না৷ রাতে ভয় লাগছে। কেউ দেখলেই সর্বনাশ। গলা শুকিয়ে আসে ইতির। চারদিকে সতর্ক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ভেতরে গিয়ে বিছানায় বসে৷ তারপর ইতস্তত করে আলগোছে কাঁপা কাঁপা হাতটা কল্পের কপালে রাখে। গায়ে প্রচণ্ড জ্বর। ইতির ভীষণ কষ্ট হয়। তবুও তাড়াতাড়ি রুম থেকে বের হয়ে নিঃশব্দে নিজের বিছানায় ফিরে আসে। এরকম বেশ কয়েকদিন চলে যায়। ইতি পুরোদিন আশেপাশে না গেলেও মাঝরাতে গিয়ে কপালে হাত দিয়ে জ্বর দেখে চলে আসে৷ রাতে কোনোভাবে নিজেকে সামলাতে পারে না। বিছানায় এপাশ-ওপাশ করে। একটা মানুষ, যাকে সে মনে-প্রাণে স্বামী হিসাবে গ্রহণ করে বসে আছে। যাকে পরিবারের পর সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে। সে পাশের রুমে জ্বরে কাতরালে ইতি না গিয়ে কিভাবে থাকবে? তাই রোজ রাতেই ইতি যায়। সবকিছু ঠিকঠাক মতো চলছিল। ইতি বুঝতে পারে কল্প অকূল সাগরে পড়ে গেছে৷ জ্বর নিয়ে সারাদিন ছুটাছুটি করে। রাতে জ্বর বেড়ে যায়। ইতি কল্পের কথামতোই আশেপাশে যায় না৷ রাতে সকলের অগোচরে গিয়ে ছুঁয়ে আসে প্রিয় মানুষটিকে৷ বিপত্তি সৃষ্টি হয়ে কয়েকদিন পর। অন্যদিনের তুলনায় কল্পের জ্বর বেড়েছে। সে গিয়েই কপালে হাত দিতেই কল্প ধরে ফেলে হাতটা। ইতির ভয়ে বুক কাঁপলেও মানুষটাকে ফেলে চলে আসতে পারে না। কল্প এক সময় কোলে মাথা রাখে। ইতির পৃথিবী ওলট-পালট হয়ে যায়। মনে হয় কল্প যেন কোনোদিন তাকে স্পর্শ করেনি। কোনোদিন এভাবে হাত ধরেনি৷ অথচ আজ মানুষটা কোলে মাথা রেখেছে। ইতির চোখ ভিজে যায়। পরম মমতায় চুলে আঙুল ডুবিয়ে দেয়। তখনই আচমকা রুমের বাতি জ্বলে যায়। মুজিব উদ্দিন বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে আছেন। ইতি পলকেই বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ায়।
__চলবে….
লেখা: জবরুল ইসলামমায়াডোর (২৫ পর্ব)
.
মুজিব উদ্দিন এগিয়ে যান। ইতি থুতনি বুকের সঙ্গে লাগিয়ে মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে থাকে।

– ‘এখান থেকে বের হয়ে যা।’

ইতি মাথা তুলে তাকায়। বাবার গলা খুবই শান্ত অথচ কি ভয়ংকর শোনাচ্ছে৷

– ‘জি বাবা?’

– ‘বলেছি চলে যেতে।’

ইতি ইতস্তত করে বের হয়ে যায়। কল্প বাবা-মেয়ের কথোপকথন শুনে বিছানায় ধড়ফড়িয়ে উঠে বসেছে। মুজিব উদ্দিন কোমরে হাত দিয়ে তার দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন। কল্পের জ্বর এবং নিন্দ্রা জনিত ঘোর কেটে শরীর এখন ক্রমশই ঘামতে শুরু করেছে। লজ্জায় মাথা তুলে মুজিব উদ্দিনের চোখের দিকে তাকাতে পারছে না৷ খানিক্ষণ নীরবতায় চলে যায়। নীরবতা মুজিব উদ্দিনই ভাঙেন,

– ‘গ*রুর বা*চ্চা, তোদের বংশটাই আসলে খারাপ। তোর মামা আমার বড়ো বোনের পিছু নিয়েছিল। তোর মা তোরে ফেলে পয়সাওয়ালা ব্যাটা দেখে বিয়ে বসে গেছে। ভেবেছিলাম তুই পড়ালেখা করে ভালো মানুষ হয়েছিস। এখন দেখি তুই একটা কা*লসা*প। আমার বাড়িতে থেকে, ফ্যামিলির মতো মিশে, আমার মেয়ের দিকে কু*নজর দিয়েছিস। কু*ত্তার বাচ্চা কাল ভোরে তুই আমার বাড়ি ছেড়ে বিদায় হবি। সবাইকে বলবি ভার্সিটি হলেই সিট পেয়েছিস তাই চলে যাবি।’

কল্প মাথা নীচু করে বসে রইল। মুজিব উদ্দিন নাক টান দিয়ে বললেন, ‘কি বলেছি কানে ঢুকেছে তো? আমার বাড়ির ত্রিসীমানায় তোরে আর দেখতে চাই না। কাল ভোরেই বিদায় হবি।’

কল্প কিছু বলতে যাচ্ছিল। মুজিব উদ্দিন হাত তুলে থামিয়ে বললেন, ‘মেজাজটা খারাপ করবি না কথা বলে। তোরে এখন টুকরো টুকরো করে কে*টে ফেললেও মাথা ঠাণ্ডা হবে না। আমার চোখের সামনেই দেখতে চাই না আর৷ যা বলেছি তাই করবি। সবাইকে বলবি হলে সিট পেয়েছিস।’

মুজিব উদ্দিন বের হয়ে গেলেন।লজ্জায়-অপমানে কল্পের কান দিয়ে যেন গরম ভাঁপ বেরুচ্ছে৷ দুইহাতে মুখ ঢেকে বসে থাকে সে। বিদায় নিয়ে আজই চলে যাবে কল্প। ক্লাসমেন্ট কয়েকটা মিলে একটা মেসে থাকে। সেখানে গিয়ে উঠতে পারবে চাইলেই। বাড়তি বেশকিছু টাকা লাগবে মাস শেষে। এটাই সমস্যা। মামার কাছে চাইতে পারবে না আর। চাচার মুখোমুখিই হতে পারবে না। মাথার ভেতর নানা ধরনের চিন্তার ঝড় বইছে। ভাবতে ভাবতে বসা অবস্থায় ঘুমিয়ে গেল সে। আবার ঘণ্টা খানেক পর যেন ঘুমের ভেতরেই দুশ্চিন্তা করে উঠে গেল৷ তখনই মাথায় এলো নিপার কথা। ওকে সবকিছু জানাবে। আপাতত মাস দুয়েক মেসে থাকার ব্যবস্থা হয়ে গেলেই চলবে। এর ভেতরে একটা চাকরি খুঁজে নিতে হবে। নিপাকে মেসেজ দিয়ে রাখা যায়। কাউকে দিয়ে বিকাশে টাকা পাঠাতে পারবে সে। মোবাইল হাতে নিতে যেতেই মনে পড়ে গেল নষ্ট। বিছানা থেকে নেমে খানিকক্ষণ পায়চারি করে রুমে। মাথা দপদপ করছে। গলা কেমন শুকিয়ে যাচ্ছে বারবার। টেবিল থেকে গ্লাসে পানি ঢেলে এক চুমুক খেল। বিস্বাদে চোখমুখ কুঁচকে যায় তার। জ্বরে মুখ তিতা হয়ে আছে। ধীরে ধীরে ব্যাগে সকল কাপড়-চোপড় ভরে নেয় সে। বই-পত্র বাঁধে একটা দড়ি দিয়ে। অস্থিরতার মাঝে রাত কেটে ভোর হয়ে যায়। সকালে ফরিদ সাহেব দরূদ পড়ে পড়ে তাকে ডাকতে আসেন৷ কল্প বের হয়।

– ‘কিরে ছোকরা জ্বর কি কমেছে?’

– ‘না, নানাভাই। জ্বর এখনও আছে।’

– ‘ও তাহলে বাইরে যাওয়ার দরকার নাই। রেস্ট নাও।’

– ‘নানাভাই একটা কথা।’

– ‘কি?’

– ‘আমি আজ চলে যাব।’

ফরিদ সাহেব অবাক হয়ে বললেন, ‘চলে যাব মানে? কোথায় চলে যাবে?’

– ‘হলে সিট পেয়েছি নানা৷ তাই চলে যাব।’

– ‘তাই না-কি?’

– ‘হ্যাঁ।’

– ‘তো হলে সিট পেলেই গিয়ে কি করবে। আমাদের বাড়িতে কি অসুবিধা?’

– ‘হলে থাকলে আমার জন্য অনেক সুবিধা হয় নানাভাই।’

– ‘তাই না-কি।’

– ‘হ্যাঁ।’

– ‘কবে যাচ্ছ?’

– ‘আজই।’

– ‘আশ্চর্য! কি হয়েছে বলো তো। কোনো সমস্যা?’

– ‘না কোনো সমস্যা নেই।’

ফরিদ সাহেব অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলেন। তারপর গেলেন ভেতর ঘরে। কোনো সমস্যা হয়েছে কি-না জানতে চাইলেন। কিন্তু কিছুই বুঝতে পারলেন না। হুস্না বেগম কল্পের যাওয়ার খবর শুনেও তার সঙ্গে দেখা করতে এলেন না। কল্প সাতটার দিকে কাঁধে ব্যাগ আর হাতে বইয়ের বান্ডিল নিয়ে বের হয়ে যায় উঠানে৷ গেইটের কাছে এসে একবার পিছু ফিরে তাকায়। বুকের ভেতর ‘চিনচিনে’ এক ব্যথা হয় তার। চোখ ঝাপসা হয়ে আসে জলে। বাইরে এসে রিকশার জন্য অপেক্ষা করে। খানিক পর একটা রিকশা এলে উঠে যায়। ঠিকানা বলে বন্ধুদের মেসের। মিনিট বিশেক পর চলে আসে গন্তব্যে। ভাড়া চুকিয়ে বাসার দোতলায় গিয়ে কলিং বেল চাপে। রুদ্র দরজা খুলে দেয়। অবাক হয় কল্পকে দেখে।

– ‘কিরে তুই ব্যাগ-প্যাক নিয়ে এলি যে?’

কল্প রূঢ় গলায় বললো, ‘আগে তো ভেতরে যেতে দিবি।’

রুদ্র পথ ছেড়ে দাঁড়ায়। কল্প ভেতরে আসে।

– ‘তোদের এখানে কি সিট খালি নাই?’

– ‘না গতকাল একজন উঠেছে নতুন।’

– ‘তাহলে তোর রুমে আমার ব্যাগ-প্যাক একটু রাখ দোস্ত। আমি নতুন মেস খুঁজে চলে যাব।’

রুদ্র তাকে নিয়ে নিজের রুমে গেল। একই রুমে দুইটা খাট। ভেতরে বোটকা গন্ধ। মশারি এখনও টাঙানো। দড়িতে কাপড়ের স্তুপ। রুদ্র তার ব্যাগ হাতে নিয়ে বললো,

– ‘হঠাৎ গৃহহীন হওয়ার কারণ কি?’

– ‘পরে বলবো। এখন যাই, আগে আমার মোবাইল ঠিক করিয়ে আনতে হবে। মোবাইল ছাড়া সবকিছু জটিল লাগছে।’

– ‘কিন্তু তোকে দেখে তো অসুস্থ বিধ্বস্ত মনে হচ্ছে।’

– ‘ওই সিজনাল জ্বর আরকি৷ এগুলো পাত্তা দিলে কি চলে। যাই আমি। মোবাইল ভিজে ডিসপ্লেতে মনে হয় সমস্যা এসেছে৷ কোথায় ঠিক হবে বলতো?’

– ‘করিম উল্লায়ই চলে যা। সেখানে অনেক দোকান পেয়ে যাবি।’

কল্প মাথা নেড়ে বাইরে চলে এলো। রিকশা একটা নিয়ে চলে গেল করিম উল্লাহ মার্কেটে৷ মোবাইল ঠিক করিয়ে বের হলো প্রায় দেড়টায়। আকাশে ঝকঝকে রোদ উঠেছে। রিকশা থেকে চোখ তুলে তাকানো যায় না। প্রচণ্ড ক্ষুধা লেগেছে। একটা কিছু খেয়ে নেয়া দরকার। অথচ ইচ্ছা করছে না। তবুও তো সুস্থ থাকার জন্য খেতে হয়। জিন্দা বাজার এসে রিকশা ছেড়ে দিল সে। একটা রেস্তোরাঁয় ঢুকে বিস্বাদ মুখে কোনোভাবে ভাত চালান করে দিল। খাবার খেয়ে হেঁটে-হেঁটে এলো চৌহাট্টা। ছাউনি খালি দেখে গিয়ে বসে। মোবাইল বের করে ডাটা অন করতেই প্রথমেই মেসেঞ্জারে টুংটাং করে ইতির মেসেজ এলো। সিন করে সে। টাইম দেখে বুঝতে পারে রাতেই দিয়েছিল এই মেসেজগুলো।
প্রথম মেসেজ, ‘হায় আল্লাহ এখন কি হবে? বাবা কি তোমাকে কিছু বলেছেন? আমার কারণে এটা হলো। স্যরি। প্লিজ রাগ করো না।’

দ্বিতীয় মেসেজ, ‘ও তোমার তো ফোনই নষ্ট।’

কল্প রিপ্লাই দিল, ‘আমি মোবাইল ঠিক করেছি। কিন্তু আপাতত তোমার মেসেঞ্জারে আমার সঙ্গে সকল চ্যাট ডিলিট দিয়ো।’

ইতি সিন করলো না। কল্প খানিক ভেবে আবার মেসেজ দেয়, ‘এখন তুমি বেশি মোবাইল ইউজ করতেও যেও না। তোমার ফোন ওরা কেড়ে নিতে পারে। কিছুদিন পড়ালেখায় মনযোগ দাও। ফোন হাতে কম নিয়ো। আর আমাকে মেসেজ দিবে না বেশি। দিলে প্রতিদিন চ্যাটগুলো ডিলিট দিবে। শেষে আর যোগাযোগ রাখারও কিছু থাকবে না৷ আর যা হয়েছে, তা হওয়ার ছিল। এগুলো নিয়ে ভেবে লাভ নেই। ভাবতে হয় আগে। ঘটনা ঘটে গেলে চিন্তা না করে সেটা সামাল দেয়ার ধান্ধায় থাকাই ভালো৷ আমি চলে এসেছি বলে পাগল হয়ে যেও না৷ খাওয়া-দাওয়া, পড়ালেখা, ঘুম সবকিছু ঠিকঠাক মতো যেন চলে। আমি খুব শিগগিরই সবকিছু গুছিয়ে নেব। তারপর দেখা যাক কি করা যায়। আপাতত কোনো বাড়াবাড়ি করবে না। আর তোমার মোবাইল ইতোমধ্যে কেড়ে নিয়েছে কি-না বুঝতে পারছি না। না নিলে মনে করবে ভাগ্য ভালো। মোবাইল একটা জায়গায় ফেলে রাখবে। হাতেই নিবে না বেশি। রাতে হঠাৎ মেসেজ দিলে দিয়ো।’

আর কিছু বলতে গেল না সে। এত কথা বলে এখন লাভ নেই। নিপার সঙ্গে যোগাযোগ করা দরকার। হোয়াটসঅ্যাপ কল দিল ওকে। দু’বার রিং হতেই রিসিভ করে।

– ‘হ্যালো।’

– ‘আমি কল্প।’

– ‘নাম্বার ছিল না। বাট ছবি দেখেই চিনতে পারছি। কি অবস্থা তোমার?

– ‘তুমি বুঝতে পারছো না?’

– ‘না, আমাকে কেউ কিছু বুঝতেও দিচ্ছে না৷’

কল্প বিস্তারিত সবকিছু খুলে বলে নিপাকে। মামার আর মায়ের রাগারাগি। এখানে এসে অপ্রীতিকর ঘটনা। সবকিছুই বিস্তারিত বলে। নিপার ভীষণ মন খারাপ হয়ে যায়। সে শান্ত গলায় বলে, ‘এসব নিয়ে ভেবো না। তোমাকে আমি আগেই বলেছিলাম বিয়ে না হলেও আমাকে পাশে পাবে। কিন্তু যোগাযোগ করোনি কেন? আমার কাছে নাম্বারও ছিল না। আর তোমার ভয়েজ শুনে তো অসুস্থ মনে হচ্ছে।’

– ‘হ্যাঁ বললাম না জ্বর ছিল। ইতি জ্বরের কারণেই রাত্রে দেখতে এসেছিল।’

নিপা খিলখিল করে হেঁসে বললো, ‘স্যরি এই অবস্থায় হেঁসে ফেলেছি। শোনো আমাকে বুঝাতে হবে না যে তোমরা আলাদা রুমে অন্যকিছু করোনি। একে অন্যকে ভালোবাসো। সুতরাং যাইই করো আমার কাছে স্বাভাবিক ব্যাপার। যাইহোক এখন তুমি বলো আমি কি করতে পারি।’

– ‘তুমি আমাকে দুই মাস মেসে থাকা-খাওয়ার টাকা দিতে পারবে? এক সঙ্গে না দিলেও হবে।’

– ‘কিন্তু কিভাবে পাঠাবো।’

– ‘কাজের ছেলেটাকে কাগজে আমার নাম্বার দিয়ে বলবে বিকাশ করতে বাজারে গিয়ে।’

– ‘একসঙ্গেই পাঠাই৷ কত পাঠাতে হবে?’

– ‘আট-দশ হাজার ছাড়লেই হবে। আমি চাকরি পেয়ে গেলে আর সমস্যা হবে না।’

– ‘চাকরি পেয়ে গেলেই ওই কিউট মেয়েটাকে বিয়ে করে নাও।’

– ‘না দেখেই কিউট বলছো।’

– ‘কেন যেন মনে হচ্ছে কিউট। শোনো, যখনই টাকার প্রব্লেম হয় বলবে। আর এখানে তোমার অনেক জায়গা-জমি আছে। এগুলো ছোট চাচা করেন শুনেছি। আমি ইংল্যান্ড ফিরে বাবাকে বলবো তোমার সবকিছু বুঝিয়ে দিতে।’

কল্প হেঁসে বললো, ‘তুমি জায়গা-জমির হিসাবও বুঝো?’

– ‘বললাম না আমরা বাংলাদেশিদের মতোই।’

– ‘ভালো।’

– ‘রাখি এখন। দেখি ওই ছেলেটা কোথায়৷’

কল্প কল কে*টে দিয়ে মেসে ফিরে আসে। বিকেলেই তার ফোনে টাকা এসে ঢুকে। সন্ধ্যায় ইতি উপুর্যুপরি মেসেজ দিতে থাকে।

– ‘আপনি ফোন ঠিক করে ভালো করেছেন। আমি কলেজে ছিলাম। সারাদিন কিযে চিন্তায় ছিলাম। এখন কি করছেন? কোথায় আছেন আপনি?’

কল্প রিপ্লাই দেয়, ‘আমি ভালো আছি। একটা মেসে এসে উঠেছি।’

– ‘আপনি চলে গেলেন কেন? বাবা চলে যেতে বলেছেন তাই না?’

– ‘হ্যাঁ।’

– ‘ইস স্যরি। আমার জন্য এতকিছু হয়েছে। আপনি ঝামেলায় পড়েছেন।’

– ‘এগুলো নিয়ে ভাবতে নিষেধ করেছি না। যা হওয়ার হয়ে গেছে। এখন মোবাইলটা নিয়ে নেওয়ার আগে সতর্ক হও।’

– ‘আমাদের কি আর দেখা হবে না?’

– ‘হবে না কেন? হবে। আমি আপাতত চাকরি খুঁজি।’

– ‘তারপর? বিয়ের আলাপ দিবে না-কি?’

– ‘সময় আসুক। আগে চাকরি ম্যানেজ করে দেখি। চাকরি একটা হলেই হবে।’

– ‘বিয়ের আলাপ দিলে যদি না দেয়।’

– ‘না দিলে যা করার করবো। আর দিবে না কেন? আমার বাড়িঘর জায়গা-সম্পত্তি সবকিছুই আছে। পড়ালেখা করছি। চাকরিও করবো। বিয়ে না দেওয়ার কি আছে? না দিলে পরের চিন্তা। বললাম না স্বাভাবিক থাকতে।’

– ‘আপনার অসুখ আজ বেড়েছিল। আর আজই এমনটা হলো। এখন কেমন আছেন?’

– ‘দিনে কমই ছিল এখন বাড়ছে একটু।’

– ‘ইস এখন আমি কি করবো? আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে।’

– ‘ইতি মোবাইলটা হাতছাড়া করবে।’

– ‘আচ্ছা এখনই রেখে দেবো মোবাইল। আপনাকে দেখতে ভীষণ ইচ্ছা করছে। কাল একবার দেখা করবেন?’

– ‘কালই? যদি কেউ দেখে তাহলে তোমার কলেজ যাওয়া বন্ধ হবে। ধরে কারও কাছে বিয়ে দিয়ে দেবে।’

– ‘আপনি এত আগে আগে ভাবেন কেন সবকিছু?’

– ‘শোনো ইতি, আমিও দেখা না করে থাকতে পারবো না। কয়েকদিন যাক। আমি দেখা করবো। এখন রাখো মোবাইল। পড়তে বসো।’

__চলবে…
লেখা: জবরুল ইসলাম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here