মারিয়া,পর্ব:৭

মারিয়া
পর্ব ০৭
কলমে: সায়ীদা নুহা।

ইয়াসিরের ভাবনা দু’ধরনের। একবার মনে ধরে, মেয়েটাকে মর্গানের মতো বিকৃত মস্তিষ্কের লোকের কাছ থেকে বাঁচিয়ে তার আপন নীড়ে ফিরিয়ে দিয়ে আসুক। আবার, কেন সে মারিয়ার রূপ ধরেছে? তার মারিয়ার পুরো চেহারাটা দখল করে বসে আছে সে। এ বিষয়টা একদমই পছন্দ নয় ইয়াসিরের। মেয়েটার প্রতি তার দুর্বলতাও যেমন কাজ করে, আবার জেদও ওঠে…

ইতোমধ্যে রাফি, রিমি দু’জনেরই ঘুম ভেঙেছে। ফ্রেশ হয়ে ডাইনিং এ আসতেই ইয়াসির বলল,
— “তোর আজ রুগী দেখা ভেস্তে গেল!”
চোখ কচলিয়ে রাফি উত্তর দেয়,
— “ওটা তো গেলই!”
বড়োসড়ো এক হাই তুলে চেয়ারে বসে পড়ে সে। রিমির চেয়ারটা টেনে নিজের কাছে আনে খানিক। ইয়াসির দু’জনকে বসতে দেখেই খোঁচা মেরে বলল,
— “তোরা না বলে আর খাবি না? বসলি কেন? তোদের খাবার তো রাঁধি নাই আমি।”
পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মারিয়ার চোখ দু’টো কুঁচকে যায়। এই লোকের সমস্যাটা কী? এভাবে কেউ বলে? তারা কী ভাববে?

রাফি ভাতের বাটিটা নিজের কাছে এনে বলল,
— “তোর ভাত রেঁধে খেয়ে নিস।”
ইয়াসির দাঁত খিলিয়ে হাসে। মারিয়ার চোখে সেটা আড়াল হয় না। সেও বিড়বিড় করতে ভুলে যায় না, “ইশ্, আমার সামনেই ব্যাটার যত ঢং!”

মারিয়াকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে রিমি তাকেও বসতে বলল। সে বসতেই ইয়াসির উঠে রান্নাঘরে যায়। বাটিতে করে সেই ভাজা ডিমটা মারিয়ার সামনে ধরে বলে,
— “টাকা কামানো সহজ কথা না। আর সেই টাকায় কেনা জিনিস যখন কেউ নষ্ট করে আমার গা জ্বলে। চুপচাপ এটা যে বানিয়েছে সেই খাবে।”
খুব কষ্টে ঢোক গিলে মারিয়া। রাফি উঁকি দিয়ে একবার বাটিটা দেখলো।
— “আ…এইটাতো ডিম। ডিম ভাজা, নষ্ট হলো কই?”
জবাবে ইয়াসিরের বলতে ইচ্ছে করে,
“এটা ডিম ভাজা না, এটা একটা অখাদ্য বানিয়েছে সে। না দিয়েছে তেল, আর না লবণ। এ নাকি আবার ডিম ভাজতে পারে। ওরে, একটা ছাগলও তো জানে তার খাবার কোনটা, সুন্দর চিবিয়ে চিবিয়ে ঘাস খায়। তাইলে তুই কেন ডিম ভাজতে পারিস না? তুই মেয়ে হইছিস কী করতে? তুই বাসায় বসে করিসটা কী! যত্ত সব ঢং! দুই আনা সৌন্দর্য পেয়ে ভাবে উড়ে শুধু, কাজের কাজ পারে না কিছু…মন চায়, দেই। দেই ধরে ঠাটায় একটা চড়। দিতে পারব না? কেন পারব না? এক্ষুণি একটা চড় দিব, আর ধপাস করে ফ্লোরে পড়ে যাবে।”

রাফি আর রিমি দু’জন দু’জনের দিকে কৌতূহলী দৃষ্টি নিবেদন করছে। ইয়াসির সেই কখন থেকে মারিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে, ডেকেও তার সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায় রাফি, ইয়াসিরের পাশে গিয়ে সজোরে তার শার্টের কলার ধরে দেয় হ্যাঁচকা টান। পড়িমরি করে কোনোমতে নিজেকে সামলায় ইয়াসির।
— “কী হইসে তোর? কখন থেকে ডাকছি?”
আমতা আমতা করে ইয়াসির। নিজের প্লেটে ভাত নিয়ে চুপচাপ খাওয়ায় মনোযোগ দেয়।

ডিমের বাটিটা থেকে এক চিমটি ডিম উঠিয়ে নেয় মারিয়া। মুখে দিতেই নিজের হাতে ভাজা ডিমটা কোনোরকম গলধঃকরণ করলো। খেতে কেমন লাগছে…এটা শুধু সেই জানে। ইয়াসির বারবার আড়চোখে মারিয়ার খাবারের দিকে তাকাচ্ছে। ডিমটা শেষ হয়েছে কিনা?
একটু খেয়েই মারিয়া আর সেটা খেতে পারে না। একপাশে রেখে দেয়। ইয়াসিরের নজর সরে না তখনও।

যাওয়ার আগে রাফি ইয়াসিরের সাথে তাদের প্ল্যানিং সম্পর্কে কিছু আলোচনা করে যায়। সব সামলে নিবে, বলে ইয়াসির তাদের বিদায় করে দিলো। তাদেরও তাড়া আছে বেশ!

দু’জন দু’রুমে রেস্ট নিতে চলে যায়। বিছানায় বসে মারিয়া অপেক্ষা করে কখন ইয়াসির একটা চিৎকার দিবে আর তার মনটা একটু শান্তি হবে। কিন্তু অপেক্ষা তো শেষ হয় না আর! কী ব্যাপার? ইয়াসির কি বালিশটা দেখেনি?

ভাবনায় থেকেই মারিয়া পা লম্বা করে বেশ আরামেই শুয়ে পড়ে। মাথার নরম বালিশটা আরেকটু চাপিয়ে সোজা শুয়ে রইলো সে। তখনই ইয়াসির ঐ রুম থেকে জোরে মারিয়াকে ডাক‌ দেয়। হুড়মুড় করে উঠে বসে মারিয়া। মাত্রই একটু আরাম করে বিছানায় গা এলিয়ে দিলো, আর এখনই তার ডাকতে হবে? সে কি ইয়াসিরের চাকর, যে তাকে ডাকবে আর সে চলে যাবে? ধুম মেরে বসে রইলো মারিয়া। ইয়াসির নিজে বালিশ নিয়ে এই রুমে আসবে। তখন যা কথা বলার বলা হবে।
একটু পরেই ইয়াসির দরজায় এসে নক্ করলো। ভিতরে ঢুকেই সে মারিয়ার দিকে শান্ত চোখে তাকায়। হাতে কেচিসহ বালিশটা মুমূর্ষ অবস্থায় ঝুলে আছে। মারিয়ার ভীষণ হাসি পাচ্ছে বটে! কিন্তু এই লোকটা রিয়েকশন দেখাচ্ছে না কেন?
মারিয়ার ধ্যান ভাঙে। ইয়াসির সুন্দর করে কেচিওয়ালা বালিশটা খাটে রেখে বাকি ছোটো বড়ো তিনটা বালিশই সঙ্গে করে নিয়ে গেল।
এ কী অবস্থা! এ তো দেখা যায়, নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারা।
___

অন্ধকার রুমে মারিয়া আটক। কাঠের শক্ত চেয়ারের সাথে তাকে রশ্মি দিয়ে বেঁধে রেখেছে কেউ। মারিয়ার চোখে কাপড় বাঁধা। মোচড়ামুচড়ি করার ফলে হাত দু’টো ক্রমশ অবশ হয়ে যাচ্ছে।

খানিকবাদে ঘরের ভিতর বুট জুতার আওয়াজ শুনতে পায় সে। ইন্দ্রিয় জানান দেয়, লোকটি সম্ভবত খুঁড়ে খুঁড়ে হাঁটছে, পা টেনে ধীরেসুস্থে হেঁটে আসছে। চিৎকার করতে পারছে না সে, মুখের ভেতর দলা পাকিয়ে কাপড় ঢুকিয়ে রাখা। গাল দু’টোও ব্যথা হয়ে গেল!
আ উ শব্দেই মারিয়া তাকে ছেড়ে দিতে অনুরোধ জানায়, কাজ হয় না। লোকটি সজোরে হাতের শাবল দিয়ে মারিয়ার ডানপাশ থেকে বাড়ি মারলো। চেয়ার নিয়েই মারিয়া একপাশে পড়ে যায়। মাথার আঘাতটা বেশ জোরেই লাগে! তাজা রক্ত নিমিষেই ফ্লোরে গড়িয়ে পড়ছে। শাবলের আঘাতে বাঁ হাতে বেশ খানিকটা কেটে যায়। রক্তাক্ত হাতটা চেয়ারের সাথেই লেগে আছে…
___

চোখেমুখে পানি পড়তেই হুড়মুড়িয়ে উঠে বসে মারিয়া। ভেজা মুখেই পরপর চোখের পলক ফেলে, চারপাশে নজর বুলিয়ে ফোঁস করে নিঃশ্বাস ছাড়লো সে। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ইয়াসির ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে ছিল, মারিয়াকে এভাবে হাঁপাতে দেখে বলল,
— “খারাপ স্বপ্ন দেখেছিলে?”
ইয়াসিরের দিকে ছলছল চোখে তাকায় মারিয়া। তাকে কুপোকাত করতে এইটুকু অস্থির দৃষ্টিই যথেষ্ট! চোখ সরিয়ে নেয় সে। নিজ থেকেই বলল,
— “ডাকছিলাম এতক্ষণ। হুট করে মনে হলো, কোনো সাড়া শব্দ নেই। মরে গেছে নাকি? তাই এভাবে এসে পানির ছিটা দিলাম।”
বলেই সে রুম থেকে বেরিয়ে যায়। যাওয়ার সময় ধড়াম করে দরজাটা বন্ধ করে দিলো। রাগটা অযথাই একটা প্রাণহীন বস্তুর উপর পড়লো!
___

মিষ্টার মর্গান দুপুরের গাড়ি ধরেই বাড়ি এসে পড়েছেন। এসেই দারোয়ান ও তার স্ত্রীর উপর নিজের রাগ ঝাড়ছেন। তারা যতই তাকে শান্ত করার চেষ্টা করছে ততই যেন সে বদমেজাজি হচ্ছে। একপর্যায়ে নিশ্চুপে দারোয়ান তার স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। থাকুক বুড়ো ব্যাটা একাই! তাদের কোনো যায় আসে না!

মিষ্টার মর্গান পরিকল্পনা করেন কীভাবে সে মারিয়াকে আবার ফেরত আনবেন। কিন্তু তার মস্তিষ্ক এতই অস্থির, সে কোনো কিছু ভাবতে পারছে না। রাগে মাথার সমস্ত রগ ফুলে উঠছে বুঝি!
___

সন্ধায়,

সোফায় বসে টিভি দেখছিল মারিয়া। আবার আগের মতো স্বাভাবিক সে। দেখে বুঝার উপায় নেই, সে যে কী ভয়ানক স্বপ্নটাই না দেখেছে!
টিভিতে টার্কিশ সিরিজ সুলতান সুলেমান পর্ব চলছে। আয়েশা বেশ আগ্রহ ভরে সিরিজটা দেখছে। মধ্যখান থেকে দেখা শুরু হলেও, সিরিজটা তার খুব ভালো লেগেছে।

কলিংবেল বেজে উঠে। ইয়াসির রুম থেকে বেরিয়ে এসে দরজা খুলে দেয়। ওপাশে রিমি আর রাফি দাঁড়িয়ে আছে। ইয়াসির জানতো না, তারা এখন আসবে। ওকে কিছুটা অবাক হতে দেখে রাফিই বলল,
— “রিমি বলছিল, তোরা দু’টো কী না কী করিস। আমরাও এসে একটু সময় দেই। আমাদেরও তো একটু আড্ডাটাড্ডা দিতে মন চায়, না কি?”

রাফির হাত থেকে বার্গার আর পিৎজা-র প্যাকেট নিয়ে টেবিলে রেখে আসে ইয়াসির। কফির মগ রেডি করে বন্ধুদের অ্যাপায়নে লেগে পড়ে।

সোফায় বসতেই রাফি জিজ্ঞেস করলো,
— “তো মারিয়া? কিছু ভেবেছ?”
টিভি অফ করে রাফির দিকে ঘুরে বসে মারিয়া। রাফির কথার উত্তর কী দিবে তার জানা নেই। একটু চুপ থেকেই বলল,
— “এইতো, চলে যাব কাল সকালেই।”

রান্নাঘর থেকে উঁকি দিয়ে মারিয়ার দিকে তাকায় ইয়াসির। রান্নাঘরটা কাছে হওয়ায় সে কথাটা শুনে ফেলেছে। মাথা বাঁকিয়ে মারিয়ার কথায় ভেংচি কাটে, বিড়বিড় করে বলে,
— “ভীতুর ডিম কোথাকার! রাতেরবেলা ভয় পায় দেখে সকালে যাবে। আমার ঘরের খাবার নষ্ট করতে বসে আছে এখনও!” আবারও মুখ বাঁকায় ইয়াসির। হাতের ট্রে’টা নিয়ে হলরুমে যায়।

আড্ডার একপর্যায়ে রিমি জিজ্ঞেস করলো,
— “মারিয়া, তুমি যে যাবে? তোমার ব্যাগপত্র? কাপড়? সব তো ঐ বাড়িতেই তাই না?”
মারিয়ার‌ও খেয়াল হলো। তাই তো! সে তো শুধু প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো এনেছিল। ওগুলো তো আর ফেলে রেখে আসা যায় না!
রাফি ইয়াসিরের পিঠ চাপড়ে বলল,
— “আয় এক কাজ করি। মর্গান তো এখনও আসেনি। আমরা কালকে ওর বাড়িতে যাই। সুযোগ বুঝে খালি বাড়িতে নাহয় ঢুকে গেলাম? পরে মারিয়া ওর জিনিসপত্র নিয়ে বের হয়ে গেল, আমরাও এসে পড়লাম?”

ইয়াসির আর রাফির প্ল্যান অন্যরকম। তারা মরগানের এগেইনস্টে প্রুফ জমা করতে ব্যস্ত! রাফির প্রস্তাবে ইয়াসির রাজি হয়ে যায়। এমনিই তো খালি বাড়ি, ঝামেলা হওয়ার কথা না। আর যদি কেউ থেকেও থাকে, তাকে রিমি সামলাবে। ব্যস, প্ল্যান রেডি!

রাতেরবেলা ঘুমোতে গিয়েও ঠিকমতো শুয়ে থাকতে পারছে না মারিয়া। তার পাশে রিমি একঘুমে, কিন্তু মারিয়া অনিচ্ছায়ও চোখ বুজতে পারছে না। চোখ বন্ধ করলেই বিকেলের স্বপ্নটা চোখের সামনে ভেসে উঠে। অগত্যা পাশের মেয়েটার ঘুমে যেন ব্যাঘাত না ঘটে, সে বিছানা ছেড়ে উঠে যায়। আস্তে করে গুটিগুটি পায়ে রুম থেকে বেরিয়ে পড়ে। বাহিরে আসতেই তার চোখ পড়ে ইয়াসিরের উপর। মুহূর্তেই মারিয়ার মাথা ধরে যায়। এই লোকের সমস্যা কী? যখনই দেখে তখনই তার মুখে সিগারেট থাকবেই। ঠোঁট দুইটার অবস্থাটা কী! কাইল্লার কাইল্যা! আপনমনেই ইয়াসিরকে গালি দেয় সে। কিন্তু সে কই যাবে?
লোকটা তো সোফা দখল করে বসে আছে, ও কী করবে এখন? ইয়াসির না থাকলে তো একটু টিভি দেখতে পারতো।

আর কিছু না ভেবে সামনেই এগোয় মারিয়া। বিপরীতমুখী সোফায় চুপ করে বসে পড়ে। ল্যাপটপের স্ক্রিন থেকে চোখ সরিয়ে মারিয়ার দিকে ফিরে ইয়াসির। পাশের ল্যাম্প জ্বালিয়ে রুমে হালকা আলোর সৃষ্টি করে দেয়। ভ্রু উঁচিয়ে মারিয়াকে ইশারা করে, “এখানে কী?”
মারিয়াও চোখেমুখে ইশারা দেয়,
“এমনিই!”
ইয়াসির এবার মাথা ঝাঁকিয়ে ইশারা করল,
“রুমে যাও, এখানে থাকা যাবে না।” মারিয়াও কম যায় না, চোখ পাকিয়ে দেখায়,
“সে এখানেই থাকবে।”
ল্যাপটপের চার্জার ধরে মারিয়ার দিকে ঢিল ছুঁড়বে দেখায় ইয়াসির, কিন্তু সেটা হাতেই ধরে রাখলো। চোখ কুঁচকে তাকায় মারিয়া। সোফার কুশন তুলে ইয়াসিরের গায়ে মেরে উঠে দাঁড়ায়, কপালে লেগে থাকা চুলগুলো হাতের আঙুলের সাহায্যে ঠিক করে ইয়াসিরের সামনে থেকে চলে যায়।
মারিয়া যেতেই ইয়াসির ঠোঁট উল্টে বলতে লাগলো,
— “ইশ’রে, ঢং কত! চুল সোজা করে আমার সামনে। মনে হচ্ছে, রূপের আগুনে জ্বলে পুড়ে ছারখার করে দিবে আশপাশ। দেখিয়ে দেখিয়ে চুল ঠিক করবে। ওরে বাবারে, যেই না লাউয়ের চুল, সেই চুল দিয়ে আবার ঢং দেখাতে আসে। তোর চুল আমি আয়রন মেশিন লাগায় পোড়াব দেখিস। পারলে তোর মুখটাই আমি ঝলসে দিতাম!”

বিড়বিড় থামিয়ে ইয়াসির এক মুহূর্তের জন্য শান্ত হওয়ার চেষ্টা করে। আজকাল সে কেমন যেন হয়ে যাচ্ছে, তার ভিতরে তো এইসব অভ্যাস ছিল না! কতদিন ধরে সে কারো সাথেই ঠিকমতো কথা বলেনি। মুখের হাসি তো সেটা উবেই গেছে বলতে! এই মেয়েটার প্রতিই কেন এরূপ ব্যবহার করছে সে?
প্রশ্নবিদ্ধ মনকে চুপ রাখতে ল্যাপটপ রেখে সোজা হয়ে শুয়ে পড়ে ইয়াসির। চোখ বুজলেই বিকেলে মারিয়ার ভেজা চোখ দু’টো সামনে ভাসে, কেমন ভয়ার্ত চোখে সে তাকিয়ে ছিল। ধ্যাত বলে উঠে বসে ইয়াসির। আবার উপুড় হয়ে শুয়ে মাথা চেপে রাখে। তাও তার ভাবনা কাটে না। আচ্ছা, মেয়েটা কী দেখেছিল স্বপ্নে? এরকম অস্থির ছিল কেন সে?
মাথা ঘুরিয়ে পাশ ফিরে শোয় ইয়াসির। কুশনটা বুকে চেপে শক্ত করে চোখ বুজে। কল্পনা করার চেষ্টা করে, তার মারিয়াটা কি তাকে ছেড়ে খুব ভালো আছে?
কল্পনায় ভাসে এক হাস্যোজ্বল চেহারার নারী…যার স্মিত হাসিতে বুঝি মুক্ত ঝরে পড়ছে!

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here